বিয়ের বন্ধন পর্ব:- ০২

0
2807

গল্প:- #বিয়ের_বন্ধন পর্ব:- ০২
#লেখা_মোহাম্মাদ_সৌরভ
!!!
বিয়ের প্রথম রাতে অর্থাৎ বাসর ঘরে যেই মেয়ে তার স্বামীকে বলে,,, বর হিসাবে মেনে নিতে কত দিন লাগবে সে তা ঠিক করে বলতে পারবে না। তার হৃদয় জুড়ে শুধু তার বয়ফ্রেন্ড ইমরান থাকবে। আর যাই হোক তার সাথে জীবন কাটানো আমার পক্ষে সম্বভ নয়। আমি তসিবাকে কথা গুলি বলে রুম থেকে বেড়িয়ে আসবো। তখনি তসিবার কান্না শুনে আব্বা আম্মা সহ সবাই দৌরে রুমে সামনে এসে গেছে। সবাইকে দেখে তসিবার চিৎকারের আওয়াজ আরো বেড়ে গেছে। মনে হচ্ছে ইচ্ছে করে তসিবা কান্না করতেছে আমাকে ফাসাতে।

আম্মা:- কিরে সৌরভ বউ মা নিছে পড়ে আছে কেনো?

আমি:- আমি কি করে বলবো?

আব্বা:- তাহলে বলবে টা কে শুনি?

আমি:- যে পড়ে আছে তাকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে তো হবে।

আম্মা:- বিয়ের প্রথম দিনে এমন কথা বাত্রা বলছিস কেনো? বউ মা তুমি নিছে পড়লে কি করে?
(আমি ভাবছি কিছু একটা বলে কাটিয়ে দিবে কিন্তু তসিবা এমন কথা বলছে সবাই আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।)

তসিবা:- আম্মা ওনি আমাকে কোলে নিতে চাইছে।

আব্বা:- হ্যা তারপর? (তসিবার কথা গুলা সবাই এমন মনোযোগ দিয়ে শুনছে মনে হচ্ছে জীবনের শেষ কথা শুনছে।)

আম্মা:- আহা তুমি বউমাকে বলতে তো দিবে?

আব্বা:- আমি মুখ চেপে ধরে রাখছি নাকী?

আম্মা:- মা তসিবা তুমি সবটা বলতো?

তসিবা:- হ্যা তারপর আমি না করেছি বলে ইচ্ছে করে কোলের উপর থেকে ফেলে দিয়েছে। ও মা আমার কোমরটা বুঝি গেছে, মা, ও মা গু, আমাকে বাচাও, বলে জুড়ে জুড়ে চিৎকার দিতে লাগলো।

(আরে এই মেয়ে তো অনেক ডেঞ্জারাস এর থেকে যত দূরে থাকা যাবে ততই ভালো থাকতে পারবো।)

আব্বা:- হারাম জাদা তুই তো তোর নিজের বার নিয়ে চলতে পারিস না। আবার গেছিস বউ মাকে কোলে নিতে। ফের যদি আর কোনো দিন কোলে নেস তাহলে তোর খবর করে ছাড়বো।

আম্মা:- আরে তুমি কি বলছো এসব? সৌরভের বউকে সৌরভ কোলে নিবে না তো কে নিবে? (আব্বা আম্মার কথা শুনে দুলাভাই আর আপু দুজনে হাসতে হাসতে চলে গেছে সাথে আব্বা ও গেছে।)

আমি:- আম্মা আপনারা পারেন বটে। আমি বেড় হলাম আমার বন্ধুদের সাথে একটু দেখা করে আসি। (আমি রুম থেকে বেড় হবো তখনি তসিবা আবার চিৎকার দিতে লাগলো।) এই তোমার সমস্যা কি এমন করছো কেনো?

তসিবা:- কোমরে ব্যথ্যাটা তো আমি পায়ছি তাই এমন করছি। কোথায় আমাকে টেনে তুলবে তা না করে ওনি চলে যাচ্ছে।

আম্মা:- হ্যা সৌরভ বউ মাকে কোলে তুলে খাঠের উপর শুয়ে দিয়ে যা।

আমি:- ( সত্যিটা যখন জানতে পারবে তখন বুঝবে?)
দেখি হাত দাও আমি তসিবার দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিয়েছি। তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে হাতটা ধরেছে। তসিবাকে কোলে নিয়ে খাটের উপর শুয়ে দিবো তখনি,,,,

তসিবা:- আমাকে নিছে ফেলার কি পরিনিতি হয়ছে দেখছেন? আর যদি আমার সাথে পাঙ্গা নিতে আসেন তাহলে এর পরিনিতি কিন্তু ভালো হবে না।

আমি:- আম্মা তোমার বউ মা কি বলছে শুনবে? (তখনি তসিবার মুখটা ভয়ে একদম ছোট হয়ে গেছে)

আম্মা:- কি বলছে?

আমি:- বলছে চিন্তা না করতে তসিবা খুব তাড়া তাড়ি ঠিক হয়ে যাবে। আচ্ছা তসিবা তুমি এখন রেস্ট নাও আমি একটু বাহির থেকে ঘুরে আসি কেমন।

তসিবা:- ঠিক আছে। আর শুনেন তাড়া তাড়ি আসবেন।

আমি:- কেনো?

তসিবা:- বিকালে আমাদের বাড়ী যেতে হবে তাই।

আমি:- তোমার বাড়ী আমি যেতে পারবো না। আম্মা আমি বেড় হলাম বলে রুম থেকে বেড়িয়ে সোজা বাড়ী থেকে বেড় হয়ে এসেছি। বিয়ের আগে অনেক ভালো ছিলো এখন বিয়ে করে পুরা মসিবতে আছি। দূর রানাকে কল করি যেই কথা সেই কাজ। রানাকে কল করে বলছি ব্রিজে আসতে। ব্রিজে একা একা বসে আছি কিছুক্ষণ পর রানা এসেছে,,,,

রানা:- কিরে তুই এখানে আসতে বলছিস কেনো?

আমি:- কেনো এখানে আসা কি বারন আছে নাকী?

রানা:- বাদ দে বল তোদের বাসর কেমন কাটলো?

আমি:- হ্যা অনেক ভালো (আমি তো ঘুমায়ছি আর বউ আমার মোবাইলে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছে। মনে মনে কথা গুলা বলতেছি)

রানা:- কিরে চুপ চাপ হয়ে গেলি যে?

আমি:- তেমন কিছু না। বল তোর কি অবস্তা?

রানা:- এই চলছে। (দুজনে গল্প করে ২ ঘন্টা পার করে দিলাম। সকালে নাস্তা না করে বের হয়ছি যার কারনে পেট খিদায় চু চু করছে।)

আমি:- রানা চল যাওয়া যাক একটু পর যোহরের আজান দিবে নামায পড়ে বাড়ীতে যাবো। দুই দোস্ত মিলে যোহরের নামায পড়ে নিলাম। নামায শেষে রানা ওর বাড়ীতে চলে গেছে আর আমি বাড়ীতে এসেছি।

আব্বা:- সৌরভ তুই কোথায় ছিলি?

আমি:- কেনো মসজিদে নামায পড়তে গেছিলাম।

আব্বা:- কিন্তু আমি তো মসজিদে ছিলাম তোকে দেখিনি কেনো? (এই জন্য আব্বার উপর মেজাজ ৩৬০ ডিগ্রী হয়ে যায়।)

আমি:- কি হয়ছে সেইটা বলেন?

আব্বা:- তোর আজকে শ্বশুড় বাড়ীতে যাওয়ার কথা আর তুই কি না ওদাও হয়ে গেলি সকাল থেকে। যা গিয়ে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নে,,,

আমি:- যাচ্ছি! তরি গরি করে রুমের সামনে গেলাম। দরজায় ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে গেছে ভীতরে ঢুকে দেখি কেও নেই। আমি টাওয়াল নিয়ে শাওয়ার নিতে চলে গেলাম। শাওয়ার শেষ করে দরজা খুলতে যাবো দেখি দরজা বন্ধ। আরে দরজাটা কে বন্ধ করছে? তখনি রুম থেকে তসিবা বলতেছে,,,

তসিবা:- দরজাটা আমি বন্ধ করেছি। যদি আমার কথা মত চলেন তাহলে দরজাটা খুলে দিবো।

আমি:- দেখো ফাজলামুর একটা সিমা থাকা দরকার। ভালোই ভালোই দরজাটা খুলো বলছি। তা না হলে দরজা ভেঙ্গে ফেলবো আর দরজা ভাঙ্গলে তোমার অবস্থা কেমন হবে একটু চিন্তা করে দেখছো?

তসিবা:- আগে আমার কথা গুলি শুনেন তারপর যা বলবেন তাই হবে।

আমি:- (রাগ কন্ট্রোল করে বলছি) আচ্ছা বলো কি কথা বলবে?

তসিবা:- যতদিন না আমাদের ডির্ভোস হচ্ছে ততদিন এই বর বউ অভিনয়টা করে যেতে হবে। আর আমাদের বাড়ীতে আব্বু আম্মুর সামনে আমার সাথে সব সময় সুন্দর করে কথা বলতে হবে। আর আমি আপনাদের বাড়ীতে ৯ মাস না আমি ১০ মাস থাকবো। এরপর আপনাকে ডির্ডোস দিয়ে আমি ইমরানের কাছে চলে যাবো বলেন আমার সব কথায় রাজি আছেন?

আমি:- (এখন রাজি হয়ে দরজাটা খুলায় এর পর যা হবার হবে।) ঠিক আছে আমি রাজি এবার লক্ষী মেয়ের মত দরজাটা খুলে দাও।

তসিবা:- ঠিক আছে। (তসিবা দরজাটা খুলে রুম থেকে দৌরে বেড় হয়ে গেছে। যদি এখন রুমে পায়তাম ঠিক গালে উপর পাঁচ আঙ্গোলের ছাপ বসিয়ে দিতাম। ফ্রেস হয়ে বাহিরে গিয়ে দেখি তাসলি আর তাবু মানে তসিবার ছোট দুই বোন আর ওর চাচা আব্বু সহ ১০ জনের মত লোক আসছে আমাদের নিতে। ওনাদের সবাইকে এক সাথে সালাম দিয়ে কুশুল বিনিমিয় করে নিলাম।

আব্বা:- সৌরভ সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে যা ওদের সবার সাথে বসে লাঞ্চ করে নে।

আমি:- জ্বি করতেছি। সবার সাথে বসে লাঞ্চ করে নিলাম। তাবু আর তাসলি দুই শালী আমার দুই হাত ধরে রাখছে। দুই শালী আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ীতে বসিয়েছে।

তাবু:- আপু তোর বর দেখি চুপ চাপ কোনো কিছুই বলে না।

তসিবা:- ওর মাথা ব্যথাটা কাল রাত থেকে বেড়ে গেছে তাই। সবাই চুপ চাপ বসে আছে ১ ঘন্টা পর শ্বশুড় বাড়ীতে এসে পৌছালাম।

শ্বাশুড়ি আমাদের বরন করে নিয়েছে। কিছুক্ষণ নিছে বসে সবার সাথে কথা বলে ডিনার করে নিলাম। ডিনার শেষে তাবু আমাকে তসিবার রুমে এনে দিয়ে সোজা বের হয়ে গেছে। আমি রুমে ঢুকে দেখি রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো। তবে যে খাট তার উপর দুই জন প্রকৃত স্বামী স্ত্রী থাকা যাবে। কিন্ত আমাদের মত স্বামী স্ত্রী থাকা মানে যুদ্ধ করা সমান হবে। তসিবা গরম এক গ্লাস দুধ হাতে রুমে ঢুকেই বলে,,,,

তসিবা:- নেন দুধটা খেয়ে নেন আম্মু আপনার জন্য পাঠিয়েছে।

আমি:- আমি দুধ খায় না আপনি খেয়ে নেন।

তসিবা:- বুঝতে পারছি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। আচ্ছা তাহলে আমি নিজেই খেয়ে নেয়।

আমি:- আচ্ছা তুমি ঘুমাবে কোথায়?

তসিবা:- খাঠের উপর।

আমি:- তাহলে আমি কোথায় ঘুমাবো?

তসিবা:- খাঠের উপর। কেনো আপনার বান্ধবী মানা করছে আমার সাথে ঘুমাতে?

আমি:- বাজে কথা বলবে না আমার কোনো বান্ধবী নেয়।

তসিবা:- থাকবে কি করে এমন হাদা রামের মত ছেলেকে কোন মেয়ে পছন্দ করবে শুনি?

আমি:- একটা নয় অনেক মেয়ের সাথে লাইন মারতে পারি বুঝলে? আচ্ছা রাত অনেক হয়ছে আমি ঘুমায়।

তসিবা:- ঠিক আছে ঘুমান। তসিবা এসে পাশে শুয়ে পড়ছে আমি ঘুমের বান করে তসিবাকে জড়িয়ে ধরেছি। তসিবা আমার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে। কিছুক্ষণ পর দেখি তসিবা শুয়া থেকে উঠে দরজাটা খুলে বাহিরের দিকে গেছে আমিও উঠে তসিবার পিছু নিতে লাগলাম। তাকিয়ে দেখি তসিবা শিড়ি দিয়ে উপরের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু তসিবা এত রাতে ছাদের দিকে যাচ্ছে কেনো? To be continue