গল্প:-#বিয়ের_বন্ধন পর্ব:-(০৫)
লেখা_মোহাম্মাদ_সৌরভ
!!!
বউ মা মাথা ঘুরে নিছে পড়ে গেছে। আর তুই এখানে না এসে ঐ দিকে কোথায় যাচ্ছিস? দেখ বউমার কি হয়ছে? (আব্বা)
আমি:- হ্যা আসতেছি, কাছে যেতেই তসিবাকে ইমরান বলতেছে,,,
ইমরান:- তসিবা তোমার কি হয়ছে কথা বলছো না কেনো? (তসিবা কোনো সারা শব্দ করছে না অজ্ঞান হয়ে গেছে।)
আব্বা:- দেখি বাবা দাও তো আমার বউমার কি হয়ছে আমি দেখি। (আব্বা তসিবার পাশে বসে আমাকে বলছে,,,) সৌরভ তসিবাকে কোলে নে। তারা তারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। আমি বসে ইমরানকে সরিয়ে তসিবাকে কোলে তুলে নিলাম।
তসিবার চেহারাটা শুকিয়ে গেছে একটু আগে মেয়েটা কত হাসি খুশি ছিলো। তসিবার হঠাত করে কি এমন হলো যে অজ্ঞান হয়ে গেছে। ইমরান আমাদের সাথে আসতেছে কিন্তু আমি চাইনা ইমরান হাসপাতালে যাক।
আমি:- আপনি আমাদের সাথে আসছেন কেনো? কে আপনি? (ইমরানকে আমি চিনেও না চিনার বান করতেছি)
ইমরান:- তসিবা আপনাকে কিছু বলেনি বাসর ঘরে।
আমি:- ও বুঝতে পারছি আচ্ছা এখন আপনি যান। আব্বা আম্মা জানলে অনেক সমস্যা তৈরি হবে। ইমরান আমার কথা শুনে দাঁড়িয়ে গেছে আমি তসিবাকে গাড়ীতে বসিয়েছি।
আব্বা:- সৌরভ তোর আম্মা সহ হাসপাতালে যা আমি অন্য গাড়ীতে আসতেছি।
আমি:- ঠিক আছে! আম্মা তসিবার মাথায় হাত ভুলিয়ে দিতেছে। লুকিং গ্লাস দিয়ে তসিবা চেহারাটা দেখছি। খুব খারাপ লাগছে তসিবার জন্য। ৩০ মিনিট পর হাসপাতালে পৌছালাম। তসিবাকে কোলে নিয়ে ভীতরে ঢুকেছি। একটা কেবিনে তসিবাকে নার্ছ এসে নিয়ে গেছে। ডাক্তার ঢুকে ২০ মিনিট পর বের হয়ে বলে,,,,
ডাক্তার:- আসলে তেমন কিছুই হয়নি মনে হয় কিছু দিন যাবত একটু বেশি চিন্তা করছে। যার ফলে পেশার বেরে গেছে তাই হঠাত করে অজ্ঞান হয়ে গেছে। তাও আমি কিছু টেস্ট দিয়েছি এই গুলির রিপুট আগামী কাল বের হবে। তখন আমি কিছু মেডিসিন দিয়ে দিবো আজকে আপদত তেমন কোনো মেডিসিন দিচ্ছি না।
আম্মা:- তাহলে কি আমরা বউ মাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো?
ডাক্তার:- ২ ঘন্টা পর নিয়ে যেতে পারবেন।
আমি:- ডাক্তার তসিবার সাথে দেখা করতে পারবো?
ডাক্তার:- হ্যা পারবেন।
আমি:- ধন্যবাদ আপনাকে, আমি আর আম্মা দুজনে কেবিন রুমে ঢুকছি। আমাদের দেখে তসিবা শুয়া থেকে উঠে বসেছে।
আম্মা:- মা তসিবা এখন কেমন লাগছে তোমার শরীর?
তসিবা:- জ্বি ভালো। সরি আম্মু আমার জন্য আজকে আপনাদের সবার অনেক কষ্ট হয়ছে।
আম্মা:- আরে কি যে বলোনা তুমি। তখনি আব্বা এসেছে,,,
আব্বা:- মা তসিবা তোমার কি হয়ছে হঠাত করে এমনটা হয়ে গেলো। আজ যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো তাহলে তোমার বাবা মার কাছে কি জবাব দিতাম আমি। ডক্তার বলছে তুমি নাকী কি একটা বিষয় নিয়ে খুব চিন্তায় আছো?
তসিবা:- না আব্বু তেমন কিছু না। আসলে আজকে সকালে আর দুপুরবেলা তেমন খাওয়া দাওয়া হয়নি তো। তাই মাথাটা ঘুরে পড়ে গেছি।
আব্বা:- সৌরভ তোর কি কোনো দিন বুদ্ধি সুদ্ধি কিছু হবে না কী।
আমি:- কেনো আমি আবার কি করলাম?
আব্বা:- বউ খায়নি কেনো? নিশ্চয় তুই বউ মাকে বকা ঝকা করেছিস।
তসিবা:- আব্বা ওনার কোনো দূষ নেই। আসলে আমি ইচ্ছে করে খায়নি আমার খেতে ইচ্ছে করছে না।
আম্মা:- আচ্ছা আমরা তাহলে বাড়ীতে যায় তোমার দুজনে পরে আসো কেমন।
তসিবা:- ঠিক আছে! (আব্বা আম্মা দুজনে চলে গেছে) আপনি বসেন দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?
আমি:- তুমি ঠিক আছো তো?
তসিবা:- মরে গেলে ভালো হতো আপনি অন্য মেয়েকে বিয়ে করে সূখে সংসার করতে পারবেন। আচ্ছা শ্যালো মেয়েটা কে ওনি কি আপনার গ্রালফ্রেন্ড।
আমি:- আমি পছন্দ করতাম বাট শ্যালো আমাকে পছন্দ করেনি। বাদ দাও তুমি রেস্ট নাও আমি একটু বাহির থেকে আসতেছি। আমি উঠে আসবো পেছন থেকে তসিবা আমার হাতটা ধরে বলে,,,
তসিবা:- আমার একা থাকতে ভয় করে। আপনি কোথাও যাবেন না প্লিজ।
আমি:- ঠিক আছে! তসিবার পাশে বসে আছি দুজনে চুপ চাপ কোনো কথা বলছি না। দুজনে দুজনের দিকে চেয়ে আছি। তসিবার টানা টানা চোখ গুলো আমাকে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে কিন্তু আমি বুঝার চেস্টা করছি না। আচ্ছা তসিবা ইমরান তোমাকে অনেক ভালোবাসে তাইনা?
তসিবা:- হ্যা অনেক। তার জন্য তো আমার বিয়ে হয়ে গেছে তাও আমাকে ওর জীবনে মেনে নিতে চাইছে।
আমি:- তাই ভালো! আচ্ছা তুমি শুয়ে থাকো আমি ডাক্তারের কাছ থেকে আসতেছি। আমি ডাক্তারের কাছে এসে ডাক্তারকে বলে তসিবাকে রিলিজ করিয়ে নিলাম।
তসিবা:- কি এখন আমরা যেতে পারবো বাসায়।
আমি:- হ্যা পারবে। আসো তসিবাকে সাথে নিয়ে বাহিরে এসে গাড়ীতে বসেছি। তসিবা গাড়ীতে উঠে আমার বাম হাতটা ধরে বলে,,,
তসিবা:- আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে আমি আপনার হাতটা ধরে ঘুমাতে পারি।
আমি:- ঠিক আছে তুমি ঘুমাও। তসিবা ঘুমাচ্ছে আমি আস্তে আস্তে গাড়ী চালিয়ে এসেছি বাড়ীতে। গাড়ীটা থামিয়ে তসিবাকে ডাক দিবো দেখি তসিবা ঘুমিয়ে আছে। তসিবার ঘুম থেকে না উঠিয়ে আমি কোলে করে রুমে নিয়ে এসে খাঠের উপর শুয়িয়ে দিয়েছি।
আমি হাত মুখ দুয়ে এসে তসিবার পাশে শুয়ে পড়েছি আর কখন যে ঘুমিয়ে গেছি ঠিক মনে নেই। সকালে ঘুম ভাঙ্গছে কারো স্পর্শে চোখ মেলে দেখি তসিবা আমার বুকের উপর মাথা রেখে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে। আমি ওর চুল গুলা সরিয়ে ওর মুখটা বের করেছি। তখনি তসিবা চোখ মেলে দেখে আমার বুকের উপর শুয়ে আছে। নিজেকে এক জাটকায় ছাড়িয়ে নিয়ে একদম দাঁড়িয়ে গেছে।
তসিবা:- ছি ছি ছি আপনি এতটা খারাপ। আমি আপনাকে কতটা বিশ্বাস করতাম আর আপনি ছি ছি ছি।
আমি:- ছি ছি করছো কেনো?
তসিবা:- আমার নিজের উপর এতটা রাগ আর ঘৃনা করছে যে ইচ্ছে করছে নিজেকে শেষ করে দেয়।
আমি:- তোমার হয়ছেটা কি সেইটা তো বলবে?
তসিবা:- ঠাসস আমাকে জড়িয়ে ধরার সাহোস হলো কি করে আপনার। (তসিবা আমাকে থাপ্পড় দিবে আমি কল্পনাও করতে পারছি না) এই কয়দিন আপনার সাথে হেসে হেসে কথা বলছি তার জন্য আমাকে জড়িয়ে ধরবেন নাকী?
আমি:- তোমার সাহোস দেখে বাচিনা তুমি আমাকে থাপ্পড় দিলে।
তসিবা:- এখন তো থাপ্পড় দিয়েছি আমার উচিত ছিলো আপনাকে আরো কয়টা থাপ্পড় দিতে। আজকের পর যদি আমাকে ভূল স্পর্শ করেন তাহলে খবর করে ছেড়ে দিবো বলে দিলাম।
আমি:- তোমাকে স্পর্শ করবো আমি আমার মাথা খারাপ হয়ছে নাকী। আমার সামনে যদি তুমি মরেও যাও তাও তোমাকে স্পর্শ করবো না। আজকে পর তুমি তোমার মত আর আমি আমার মত করে থাকবো দেখি সরো।
তসিবা:- কথাটা যেনো মনে থাকে।
আমি:- হ্যা মনে থাকবে। আমি উঠে শাওয়ার নিতে চলে আসলাম। শাওয়ার শেষ করে দেখি তসিবা সাজু গুজু করছে। আমি দেখেও না দেখার বান করে রুম থেকে বেরিয়ে এসেছি। নাস্তা করে অফিসে সোজা অফিসে চলে এসেছি। অফিস শেষ করে তসিবা রিপুট গুলি আনতে হাসপাতালে গেছি। রিপুট চাইছি তখন বল,,,
তসিবা নামে রিপুট গুলি সে নিজেই নিয়ে গেছে।
আমি:- ঠিক আছে! বাড়ীতে এসে তসিবার সাথে তেমন কথা বলি না। বাড়ী আর অফিসের কাজে আগের মত মনোযোগী হয়ে গেলাম। দেখতে দেখতে ৪ মাস কেটে গেছে তসিবা আমার সাথে কথা বলতে চাই কিন্তু আমি বলি না। রাতে অফিস থেকে বাড়ীতে এসেছি আম্মা বলে,,,
আম্মা:- তোর আপু অনেক দিন ধরে বলছে ওদের বাসায় যেতে। তাই আমি আর তোর আব্বু আগামী কাল সকালে যাবো। তুই তসিবাকে দেখে রাখিস কেমন।
আমি:- ঠিক আছে। রুমে এসে দেখি তসিবা সাজতেছে। আমাকে দেখে বলে,,,,
তসিবা:- আমাকে একটা উপকার করতে হবে। (আমি শুনেও না শুনার বান করে শাওয়ার নিতে চলে যেতেছি) কানে কি কথা যাচ্ছে না বলছি যে আমাকে নিয়ে একটু বের হতে পারবেন।
আমি:- তোমার সমস্যা কি এমন করে চিল্লাচ্ছো কেনো?
তসিবা:- আপনি তো দেখছি আমার সাথে কথায় বলতে চান না। এই ৪ মাসে মনে হয় ১০ টা কথাও বলেন নি।
আমি:- কি বলতে চাচ্ছো সেইটা বলে দাও।
তসিবা:- আমার একটা বান্ধবীর আজকে গায়ের হলুদ আমাকে যেতে বলছে আপনি আমাকে একটু সাথে নিয়ে যাবেন। প্লিজ প্লিজ আমাকে নিয়ে চলেন।
আমি:- ঠিক আছে! তসিবাকে নিয়ে ওর বান্ধবীর বাড়ীতে এসেছি। আচ্ছা তুমি ভীতরে যাও তোমার হয়ে গেলে আমাকে কল করো।
তসিবা:- আপনিও চলেন আমার সাথে।
আমি:- যদি তোমার বান্ধবীরা জিজ্ঞেস করে আমি তোমার কি হয় তাহলে তুমি কি বলবে?
তসিবা:- কাজিন লাগেন বলে দিবো। তসিবা আমাকে জোর করে টেনে ভীতরে নিয়ে গেছে। আমাকে ওর সব বান্ধবীদের সাথে ওর কাজিন লাগি বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। তখনি একজন বলে তসিবা তোর স্বামিকে কাজিন বলতেছিস কেনো?
To be Continue