বুকের ভিতর রাখবো তোকে?
#Part:07
#Writer: Doraemon(Ayesha)
।
পাখির বাবার কথা শোনার পর অরণ্য কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। এরপর অরণ্য পাখির বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলল
–আংকেল আপনার ধারণা হলো সব বড়লোকেরা বোধয় এক৷ কিন্তুু না আপনার এই ধারণাটা সম্পূর্ণই ভুল। হাতের পাঁচ আঙুল যেমন সমান হয় না ঠিক তেমনি সব মানুষও এক হয় না। আমি পাখিকে আমার জীবনের থেকেও বেশী ভালোবাসি। আর বিয়ের পরে পাখিকে ছুঁড়ে ফেলে দিব সেরকম মানুষ আমি নই। নিজের বউয়ের প্রতি ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ কিভাবে পালন করতে হয় তা আমার জানা আছে। বিয়ে করতে হলে আর কোনো মেয়েকেই নয় আমি শুধু পাখিকেই বিয়ে করব। আর আপনার ধারণাটাও একদিন ভুল প্রমাণিত হবে।
পাখির বাবা অরণ্যকে উদ্দেশ্য করে বলল
— তোমার এসব কথা বলে তুমি কি মনে করেছো যে আমার মেয়েকে তোমার সাথে বিয়ে দিব! কিছুতেই তা আমি হতে দিব না।
–আংকেল পারলে আমার আর পাখির বিয়ে আপনি আটকে দেখান। এমনিতেও আপনি অসুস্থ মানুষ বেশী রাগ আপনার সাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। আপনি হাজার চেষ্টা করলেও আমার থেকে পাখিকে আলাদা করতে পারবেন না।
পাখির বাবা আর কিছু বলল না। তিনি রাগে বুকে ব্যথা অনুভব করছেন। এবার পাখির বাবা পাখিকে উদ্দেশ্য করে বলল
–পাখি তুই কি এই ছেলেটাকে ভালোবাসিস?
–কি বলছো বাবা তুমি? আমি এই ছেলেটাকে ভালোবাসব। এই ছেলেটা আমাকে কৌশলে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে এতদিন গৃহ বন্ধি করে রেখেছিল। আমি তোমাকে কতক্ষণ ধরে তা বলার জন্য চেষ্টা করেছি কিন্তুু তুমি আমার কোনো কথা না শুনেই আমাকে মারলে। আমি এই ছেলেটাকে ভালোবাসি না। আমি তোমার আদর্শে বড় হয়েছি বাবা। আমি কোনো বড়লোক পরিবারের ছেলেকে ভালোবাসতে পারি না। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এরা একেকটা ঠকবাজ।
পাখির বাবা পাখির কথা শুনে ভীষণ খুশি। তিনি অরণ্যকে উদ্দেশ্য করে বলল
–দেখলে? আমার মেয়ে তোমাকে ভালোবাসে না। এসব বৃথা চেষ্টা না করে বাড়ি ফিরে যাও।
অরণ্য পাখির বাবার কথায় কোনো রাগ করে নি৷ কিন্তুু পাখির কথাগুলো অরণ্যের বুকের মধ্যে কাঁটার মতো লেগেছে। অরণ্য পাখির কথা একটুও সহ্য করতে পারে নি৷ তাই অরণ্য চেয়ার থেকে উঠেই সবার সামনে পাখির হাত ধরে ফেলল। এই ঘটনায় পাখির মা, বাবা, বোন অবাক।
–কি হলো আপনি এভাবে আমার হাত ধরছেন কেন?
অরণ্য পাখির কোনো কথা না শুনেই টানতে টানতে পাখির পাশের রুমটাতে নিয়ে গিয়ে খুব জোরে দরজা লাগিয়ে দেয়। পাখির মা বাবা দৌড়ে গিয়ে দরজা ধাক্কায়।কিন্তুু অরণ্য দরজা তো দরজা খুলল না বরং এখন পাখির দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। পাখি যে দরজাটা খুলবে তারও উপায় নেই।
পাখির ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। পাখির ঘরেই অরণ্য পাখিকে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল!
–তুমি যেন কি বলছিলে? আমাকে তুমি ভালোবাসো না। আমি ঠকবাজ। তো তোমাকে কোন জন্মে আমি ঠকিয়েছিলাম?
–না মানে স্যার আমি তো এমনি বলেছিলাম।
–কি এমনি বলেছিলে!
অরণ্য ধীরে ধীরে পাখির কাছে এগোতে লাগল আর পাখি ভয়ে পিছাতে লাগল। একসময় পাখির পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়। অরণ্য পাখির খুব কাছে চলে আসে। দেয়ালে দু হাত দিয়ে পাখির আরো কাছে চলে আসে অরণ্য। পাখির হৃদপিন্ড ভয়ে কাঁপাকাঁপি করছে।
–আমাকে ছেড়ে দিন স্যার।
–আমাকে এত ভয় পাও কেন তুমি পাখি? কেন বোঝনা যে আমি তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসি।
–স্যার প্লিজ আমাকে…
পাখি আর বলতে পারল না অরণ্য পাখির ঠোঁটে নিজের ঠোঁটে মিলিয়ে নিল। আবার এমন পরিস্থিতিতে পড়ে পাখির চোখ রসগোল্লা হয়ে গেল। পাখির পুরো শরীর এক অজানা অনুভূতিতে বরফ হয়ে গেল। অরণ্য পাখির ঠোঁট ছেড়ে আবারো পাখিকে বলল
–একবার বলো না পাখি তুমি আমাকে ভালোবাসো। কেন এত মিথ্যা কথা বলো তুমি পাখি।
এবার পাখি রাগী দৃষ্টিতে অরণ্যের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগল
–স্যার আপনি কিন্তুু সহ্যের সীমা…
এবারও পাখিকে অরণ্য কিছু বলতে দিল না। পাখির ঠোঁট জোড়া আবারও নিজের দখলে নিয়ে নিল। পাখি অরণ্যকে ধাক্কাচ্ছে, পিঠে কিল ঘুষি দিয়েই চলেছে কিন্তুু অরণ্যের তাতে কোনো হুঁশ নেই।
।
।
।
#চলবে?