বৃষ্টিতে ভেজা সেই রাত
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
পর্বঃ ৫
আদ্রিতা কথা বলো প্লিজ হঠাৎ কী হয়ে গেলো তোমার আদ্রিতা কথা বলছো না কেনো আমার সাথে…..
।
।
আদ্রিতাকে এখনি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে কিন্তু হঠাৎ মেয়েটার কী হয়ে গেলো..
।
।
আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে ফুল স্পিডে গাড়ী চালাতে লাগলাম…
।
।
কিছু খনের মধ্যে সিটি হাসপাতালে নিয়ে এসেছি ….
।
।
ডাক্তার দেখুন না আদ্রিতা আমার সাথে কথা বলছেন আপনারা প্লিজ আমার আদ্রিতাকে ঠিক করে দিন…
।
।
ডাক্তারঃ আপনি প্লিজ আগে শান্ত হন আমরা দেখছি কী করা যায় নার্স দুরুত্ব আইসিও তে নাও রোগীর অবস্থা খুব খারাপ…
।
।
ডাক্তারা আদ্রিতাকে আইসিও তে নিয়ে চলো ঠিক হয়ে যাবে তো আমার আদ্রিতা আগের মতো কথা বলবে তো আমার সাথে…
।
।
কিছুই ভালো লাগতেছে আইসিওর বাইরে দাড়িয়ে আছি প্রায় ২ ঘন্টা যাবত…
।
ডাক্তাররা এখনো বেড় হচ্ছে কেনো কিছু হয়ে যায়নি তো আদ্রিতার ওমনি..
।
।
ডাক্তারঃ দেখুন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ বাচবে কী না তার গ্যারান্টি নেই..
আপনার রোগীকে দুধের সাথে যে বিষটা খাওয়ানো হয়েছে তাতে ৯৯% মানুষ মারা যায়…
।
।
২৪ ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে রোগীকে বাচানো সম্ভব হবে না এখন বাকিটা উপর ওয়ালার ইচ্ছে
।
।
না না এভাবে আমাকে একা রেখে কখনো আদ্রিতা যেতে পারে না…
।
।
সাঈদঃ আমি আদ্রিতার মা কথা রাখতে ব্যর্থ আমরা জন্যই আজ আদ্রিতা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে…
।
।
আমাকে ভিতরেও যেতে দিচ্ছে না নার্স গুলো…
।
।
কাচের মধ্যে দিয়ে আদ্রিতা মায়াবী মুখ দেখতে পাচ্ছি…
আমার মনে হচ্ছে আদ্রিতা আমাকে বলছে এইতো আমি তোমার সামনে দেখো আমি পুরো সুস্থ আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবা না…
।
।
এসব যে সত্যি নয় সব কিছু মনের ভুল..
।
।
।
।
মাঃ এত ক্ষণ হয়ে গেলো বিষটা এখনো কাজ করে নি বড় আজব বিষয় তো না এবার গিয়ে দেখতেই হয়
।
।
এক পা দু পা করে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম রুমের মধ্যে কেউ নেই..
।
।
কোথায় গেলো এরা..
যেখানেই যাক না কেনো ওই নষ্টা মেয়েকে তো মরতেই হবে…
।
।
।
সাঈদঃ রাত পেরিয়ে দিনের আলো ফুটলো এখনো আদ্রিতার জ্ঞান ফিরে নি এভাবে ২৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিট হতে চললো ডাক্তারা তো সব আশা ছেড়ে দিয়েছে…
।
কিন্তু আমার মন বলছে আদ্রিতার কিছু হবে না…
তখনি নার্স..
।
নার্সঃ স্যার ভিতরে আসুন রোগীর জ্ঞান ফিরেছে…
।
ডাক্তারঃ এটা কীভাবে সম্ভব… ২৪ ঘন্টা হয়ে গেছে ভিতরে গিয়ে দেখলাম সত্যি সত্যি রোগীর জ্ঞান ফিরেছে
।
।
কিছু খন পর..
।
ডাক্তারঃ আপনার রোগী এখন out of danger..
।
।
সাঈদঃ আমি দেখা করতে পারবো আদ্রিতার সঙ্গে…
।
।
ডাক্তারঃ হ্যা কিন্তু পেসেন্টের সঙ্গে বেশি কথা বলতে পারবেন না…
।
।
সাঈদঃ আচ্ছা এর পর ভিতরে গিয়ে…
।
।
আদ্রিতাঃ কী হয়েছে আমার আমি এটা কোথায় আর এভাবে শুয়ে রয়েছি কেনো…
।
।
সাঈদঃ সে অনেক বড় ঘন্টা অন্য সময় বলবো এখন কেমন লাগছে..
।
।
আদ্রিতাঃ মাথাটা হালকা ভারি ভারি লাগছে আর শরীরে মনে হচ্ছে এক ফোটাও শক্তি নেই..
।
।
সাঈদঃ মেয়েটার শরীরটা খুবি দুর্বল হয়ে গেছে…
।
আচ্ছা আমি এখনি আসছি তুমি তায় শুয়ে রেস্ট নাও…
।
।
আদ্রিতাঃ কোথায় যাচ্ছেন আপনি আমার একা একা ভয় লাগবে…
।
।
সাঈদঃ আমি এই যাবো এই আসবো বলেই রুম থেকে বেড় হয়ে আদ্রিতার জন্য সুপ কমলালেবুর জুস আরো কিছু পুষ্টি কর খাবার নিয়ে গেলাম…
।
।
সাঈদঃ একটু উঠে বসার চেষ্টা করবো..
।
।
আদ্রিতাঃ পারছি না…
।
।
সাঈদঃ দাড়াও আমি উঠিয়ে দিচ্ছি আস্সে করে আদ্রিতাকে তুলে বেডে বসিয়ে দিলাম…
।
।
এবার মুখটা হা করো…
।
।
আদ্রিতাঃ কী এটা
।
।
সাঈদঃ সুপ তোমার শরীরটা এখন খুব দুর্বল এসব পুষ্টি কর খাবার না খেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে কীভাবে.
।
।
আদ্রিতাঃ এই মানুষট কত ভালো পৃথিবীতে এনার মতো মানুষ মনে হয় একটাই রয়েছেন..
।
যেদিন থেকে প্রথম পরিচয় সে দিন থেকে কতটা খেয়াল রাখছেন আমার…
।
।
সাঈদঃ কী হলো মুখটা খুলে খাবার গুলো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো…
।
।
আদ্রিতাঃ আপনি খেয়েছেন আমার তো মনে হচ্ছে আপনি কিছুই খান নি..
।
।
সাঈদঃ আগে তুমি খেয়ে নাও তার পর আমি খেয়ে নিচ্ছি এর পর মেয়েটাকে খাবার খাইয়ে দিয়ে নার্স কিছু ঔষধ দিয়ে গেছিলো সে গুলো খাইয়ে দিলাম…
।
।
সাঈদঃ এখন তুমি রেস্ট করো আমি এখানেই বসে রয়েছি…
।
।
আদ্রিতাঃ একা রেখে আবার চলে যাবেন না তো…
।
।
সাঈদঃ আরে না এর কিছু পরেই আদ্রিতা ঘুমিয়ে পড়লো..
।
।
এর ফাঁকে আমিও কিছু খেয়ে নিলাম তার পর হাসপাতালের সব বিল পরিশোধ করে দিলাম..
।
।
ডাক্তারঃ আপনি চাইলে পেসেন্টকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন…
।
।
পরে দিন সকাল বেলা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে…
।
।
আদ্রিতাঃ কোথায় যাচ্ছি আমরা এখন…
।
।
সাঈদঃ আমাদের নতুন বাসায় যেখানে তোমার আমার মাঝে কেউ আসবে না..
।
।
আমি সব বুঝতে পেরেছি সব কিছু মায়ে এ করেছে ছিঃ মা হয়ে কীভাবে এমন একটা কাজ করতে পারলো আমি ওনাকে কোনোদিন ও ক্ষমা করতে পারবো না…
।
।
।
আজ সকাল. বেলা নতুন একটা ফ্লাট ভাড়া নিয়েছি…
।
।
যেখানে কেউ আমাদের মাঝে আসতে পারবে না..
।
।
।
অপর দিকে…
।
।
তামান্নার বাবাঃ আমার একটা ভুলের জন্য আমার আজ এই অবস্থা একটা বার জানতেও চাইলাম না যে সে আসলেই ওমন করেছিলো কী না…
।
।
একটা মাসুম ছেলেকে না জেনেই কতটা আঘাত করে ফেলেছি…
।
।
উপর ওয়ালাও মনে হয় কখনো মাফ করবে না আমায়….
।
।
অন্য দিকে..
।
তামান্নাঃ আন্টিকে যেভাবে হোক এই কাজে সাঈদ এর সাইন করিয়ে নিতে পারলেই কাজ শেষ…
।
কিন্তু কীভাবে করবো এই সাইন…
।
।
।
সাঈদঃ কিছু খন পরেই নতুন ফ্লাটে চলে আসলাম…
।
কেমন লাগছে এই বাসাটা…
।
।
আদ্রিতাঃ খুব সুন্দর…
।
কিন্তু আমি কী আপনার এই ঝ্রণ পরিশোধ করতে পারবো ..
।
।
সাঈদঃ আমি কী কখনো পরিশোধ করতে বলেছি …..
।
।
তুমি যদি আমাকে… বলতে যেও বলতে পারলাম না…
।
।
আদ্রিতাঃ কী বলতে বলতে থেকে গেলেন কেনো…
।
।
সাঈদঃ ও কিছু না আচ্ছা তুমি রেস্ট আমি বাইরে থেকে আসছি…
।
।
আদ্রিতাঃ আমিও যাবো…
।
।
সাঈদঃ না… তোমার শরীরটা দুর্বল ঠিক মতো তো হাটতেও পারছো না.
আজ মা সাথে শেষ দিন তিনি আজকের পর থেকে আমার আর আদ্রিতার চাইলেও কোনো যোগাযোগ করতে পারবে না
।
।
আদ্রিতাঃ ওনার অসমাপ্ত কথাটা কী ছিলো…
এই কয়েক দিনে মনে হয় তার প্রেমে পড়ে গেছি…
এই রকম মানুষের প্রেমে না পড়ে থাকাও যায় না আচ্ছা ওনিও কী ভালোবাসে আমায়…
।
।
চলবে..