বেলী ফুলের সুবাস পর্ব-১৭+১৮

0
716

#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব :১৭
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)

সময় চলমান।করো জন্য থেমে থাকে না।এই তো দেখতে দেখতে বেলীর পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে ভর্তি হয়ে গেলো।সাজিয়া তার সাথে ভর্তি হয়েছে।সামিয়া ভর্তি হয় নি।ভর্তি হয়ে কি করবে?বিয়ের পর তো শশুড় বাড়িতে থাকতে হবে তাই বড়রা ঠিক করেছে সিলেটের কোনো সুনামধন্য ভার্সিটিতে ভর্তি করে দিবে সামিয়াকে।

সন্ধ্যা সাতটা।আজ বেলী সুবাসকে তাড়াতাড়ি অফিসে থেকে আস্তে বলেছে।আজ বেলী বায়না ধরেছে পুরো শহর ঘুরবে তার সাথে।বেলী কালো পাড়ের কলা পাতা রঙের শাড়ি পরে আছে।হাতে কালো রঙের কাচের চুড়ি।কপালে টিপ।চুল গুলো বরাবরের মতো খোঁপা করা।সুবাসের আসার খবর নেই।অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রবেশ করলো সুবাস।
-সরি লেট হয়ে গেলো।
-সমস্যা নেই।রেডি হয়ে নিন।
-খানিক টা মন খারাপ করে বললো বেলী।

সুবাস বেলীর দিকে তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো ।মেয়েটাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে রেগে আছে।রেগে থাকবেই বা না কেনো বলেছিল পাঁচটার মধ্যে আসতে কিন্তু সুবাস আসলো সাতটায়।সুবাসের বা কি করার আজ অফিসে প্রচুর চাপ ছিল। নতুন ডিল ফাইনাল করতে হবে তো তাই।বেলীর গাল দুটো লাল হয়ে আছে।চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ ও দেখা যাচ্ছে।দেখতে পুরো মনে হচ্ছে ফুলে বেলুন হয়ে আছে। টোকা দিলেই ফেটে যাবে। তবে এই রেগে থাকা মেয়েটার রেগে লাল হয়ে থাকা ফেস টা দেখতে ভালোই লাগছে।মেয়েটাকে দেখলেই কেনো এত ভালোলাগে?হয়তো তার বউ বলে।ফ্রেশ হয়ে দুজনে বেরিয়ে গেলো অজানা উদ্দেশ্যে।বেলীর মুড এখন ভালো।সুবাসের যে কত বার সরি বলা লেগেছে তা হিসেবের বাইরে।তবুও প্রিয়সীর মুখে হাসি ফুটাতে সুবাস সব করতে পড়বে।আজ আর গাড়ি নিলো না।বেলী বায়না ধরেছে রিকশা দিয়ে ঘুরবে। সুবাসও আর আপত্তি করলো না।পরিবেশ টা ভালো লাগছে বেলীর।মৃদু বাতাস বইছে।রিকশা নিজ গতিতে চলছে।অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে।এই অনুভূতির সাথে পরিচিত নয় বেলী।তবে কেনো এমন অনুভুতি হচ্ছে?তবে কি সুবাস পাশে থাকায় বেলীর অন্যরকম লাগছে?নতুন কিছু অনুভব হচ্ছে?ভাবনার মাঝে বেলী লক্ষ্য করলো সুবাস তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।বেলী অসস্তি হতে লাগলো।

-আপনি কিছু বলবেন?
খানিকটা নিচু গলায় বলল বেলী।
সুবাসের কাজে বেঘাত ঘটলো।বেলীর কোমর জড়িয়ে আরো একটু কাছে নিয়ে এলো।বেলীর হাতের আঙ্গুলের ভাঁজে নিজের আঙ্গুল গুজে দিলো।বেলীর দু গালে লজ্জার আভা দেখা দিলো।এপাশ ওপাশ তাকিয়ে সুবাসের বহু জড়িয়ে কাঁধে মাথা রেখে সময় টা উপভোগ করতে লাগলো।সুবাস হাসলো বেলীর কান্ডে।

-আজ বুঝি আমার বউয়ের লজ্জা লাগছে না।
ঠাট্টার সুরে বললো সুবাস।

-আপনিও আমার সাথে এমন করেন।
বলেই সুবাসের হাত ছেড়ে দিতে নিলে সুবাস আরো শক্ত করে বেলীর হাত ধরলো।

-“একবার যখন এই হাত ধরেছি তবে শুনে রাখো কন্যা মৃত্যুর আগে আর ছাড়ছি না।তুমি ছাড়তে চাইলেও পারবে না।পাশে পাবে আমাকে এই জন্মে এবং জন্ম জন্মান্তরের জন্য।”
…………..

বেলীর চুলে ঠোঁট ছুঁইয়ে বললো সুবাস।বেলী হাসলো সুবাসের কথায়।আজকাল সুবাসের কথা গুলো বেশ ভালো লাগে শুনতে ।হৃদয় শান্তি লাগে।অনুভুতি গুলো প্রজাপতির মত ডানা মেলে। তবে কি সে সুবাসকে ভালোবাসতে শুরু করেছে?নিজের প্রশ্নে নিজেই আটকে গেলো বেলী।নাহ এতো কিছু ভাবলে চলবে না।তার ভাবনার মাঝে রিকশা থামিয়ে দিলো সুবাস। চট জলদি ফুলের দোকান থেকে বেলী ফুলের মালা আর এক গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে এলো।বেলী ফুলের মালা বেলীর হাতে পরিয়ে হাতে চুমু খেলো।গোলাপের গুচ্ছ বেলীর হাতে দিলো।এই গুচ্ছ থেকে একটা গোলাপ নিয়ে বেলীর কানে গুজে দিলো।

– “হাতে চুরি
কানে ফুল
তুমি আমার বেলী ফুল”
বেলী মুচকি হাসলো সুবাসের কথায়।এই হাসিতে আছে লাজ,লজ্জা,ভালোলাগ,অন্যরকম এক মিশ্র অনুভুতি।

বিকাল বেলা ছাদে দাঁড়িয়ে আছে সামিয়া।সেই দিনের পর আর ইয়াসিরের সাথে দেখা হয় নি।লোকটা নিজে থেকেই তার থেকে দূরে দূরে আছে।সামিয়া অনেক ম্যাসেজ, কল করেছে কিন্তু লোকটা কোনো কিছুর রিপ্লে দেয় নাই।হয়তো এটাই তার ভাগ্য।হয়তো সব কিছু তাকে মেনে নিতে হবে।আকাশের পানে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছে সামিয়া।

-এভাবে আর কত দিন মন খারাপ করে থাকবি ?(বেলী)

-এখন আর মন খারাপ হয় না।সব কিছু মেনে নিয়েছি।(সামিয়া)

-তাহলে কেনো এতো বিষন্নতা?(বেলী)

-বিষন্নতা আমার মাঝে মিশে গেছে।ভালোবাসার মানুষকে না পাওয়ার বিষন্নতা।(সামিয়া)

-জীবন কখনো করো জন্য থেমে থাকে না।ইয়াসির ভাইয়া তোকে ভালোবাসে না। আর একতরফা ভালোবাসা বেশি দিন স্থায়ী হয় না।নিহাল ভাইয়া ভালো।নিয়তিকে মেনে নেয় বোন। তোর জন্য হয়তো নিহাল ভাইয়া উত্তম তাই সৃষ্টি কর্তা তোকে তার নামে লিখে রেখেছেন।

-হুম
বেলী আর কথা বাড়ালো না।কিছু সময় সামিয়াকে একা থাকতে দেয়া উচিৎ।একা থাকলে যদি বুকের যন্ত্রণা কমে তবে খারাপ কি।

বিয়ের আর মাত্র দশ দিন বাকি।বেশ তোর ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে।আজ সকলে মিলে ঠিক করেছে শপিং করতে যাবে।মিতা ফুপু নিজ পরিবারের সাথে ঢাকায় চলে এসেছেন।বিয়ে ঢাকাতেই হবে।বেলী,সুবাস,সামিয়া,নিহাল,নিশি,মিহির সাজিয়া,রিদিতা,সায়েম সকলে এক সাথে শপিং করতে বের হলো।শুধু আসে নি ইয়াসির।কি যেনো ইম্পর্টেন্ট কাজ আছে।তাই আর কেউ তাকে জোর করলো না। শপিং মলে এসে আগেই বর কনের জন্য ম্যাচিং করে শাড়ি আর পাঞ্জাবি কিনে নিলো। অবশ্য অনেক খুঁজো খুঁজির পর পছন্দ হলো ড্রেস।আর বাকিদের জন্য সেম লাল পাড়ের বাসন্তী শাড়ি আর ছেলেদের জন্য বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবি কিনে নিলো হলুদের জন্য।মেয়েরা মিলে আরো কিছু শপিং করে করে নিলো।বিয়ের শপিং করে নিলো একেবারে।সকলে একটা ক্যাফেতে বসে পড়লো।বিয়ের শপিং বলে কথা। এতো হাটা হাটি করার পর সকলের মুখে ক্লান্তির ছাপ।
-যাক তাহলে নিহাল ও আমাদের দলে চলে আসবে কিছু দিন পর(সায়েম)
-তখন বুঝবে বিয়ে করার কি মজা(সুবাস)
হাসতে হাসতে বললো সুবাস।
-কেনো আপনারা কি বিয়ে করে অশান্তিতে আছেন?এমন ভাবে বলছেন না জানি কত টর্চার করা হয় আপনাদের। হুহ(বেলী)
খানিকটা রাগী গলায় বললো বেলী।
– নাহ পুরান হয়ে গেলে কি আর ভালো লাগে নাকি?তখন ভালোবাসার কথা বললেও বিষ লাগে বিষ।তখন তো নতুন কেউকে পাশে পেতে মন চায় (রিদিতা)
– এর জন্য তো শুধু চার বিয়ে করার হাদীস বাদে আর কোনো হদিস জানে না (বেলী)
– হুম আমিও ভাবলাম আরেকটা বিয়ে করবো।সামিয়ার বিয়ে টা হয়ে গেলেই করে নিবো।(সুবাস)
সুবাসের কথা শুনে বেলীর মুখ বাংলা পাঁচের মতো হয়ে গেলো।বেলী আর কোনো কথা বললো না। অন্য সবাই নানা বিষয় কথা বললেও বেলীর মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বের হলো না।সুবাস ও ভাবলো হয়তো একটু বেশি বলে ফেলেছে।যাইহোক, খাবার চলে এলো।যে যার মতো খাবার খেয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা দিলো।

হ্যাপি রিডিং

#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব :১৮
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)

রাত এগারোটা সকলে জেগে আছে কারণ প্রথমত বিয়ে বাড়ি তার উপর আবার বেলীর জন্মদিন। বেলীকে সারপ্রাইজ দিবে বলে ঠিক করেছে তারা।রাত বারোটা হুড়মুড়িয়ে সকলে বেলীর ঘরে যেয়ে তাকে উইশ করলো।বসার ঘরেকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।বেলী কেক কাটলো।সকলের মুখে তুলে কেক খাইয়ে দিলেও সুবাসের দিকে একবার তাকালো না পর্যন্ত।সুবাস কারণটাও বুজতে পারলো।তার প্রেয়সী যে তার উপর প্রচণ্ড ক্ষেপে আছে তা বুঝাই যাচ্ছে।যাক প্রেয়সী তাহলে তার প্রতি কিছু অনুভব করছে।রূমে এসে শুয়ে পড়লো বেলী। তা দেখে সুবাস বেলীকে ধরে টেনে বসিয়ে দিলো।
-আমি জানি তুমি তখনকার ঘটনার জন্য রেগে আছো।
…..
-আরে বাবা আমি কেনো বিয়ে করবো?যেখানে তুমি আছো।আমি তো শুধু মজা করেছিলাম।আচ্ছা আই এম সরি বউ।প্লীজ বউ রাগ করো না।
….
– আই আম রেলি ভেরি সরি। প্লিজ মাফ করে দাও।নেক্সট টাইম থেকে আর বলবো না।প্লীজ আমার সাথে কথা বলো।আমার দিকে তাকাও বউ

এবার বেলী কেঁদে দিলো।দু চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরলো।সুবাস ভীষণ অবাক হলো।কান্না করছে কেনো এই মেয়ে?
-তুমি কান্না করো না প্লীজ। আই এম সরি।আর বলবো না এমন কথা।

-আপনি জানেন আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আপনি এভাবে বলতে পারলেন এমন কথা? আমি কি আপনার বউ না?আমি কি আপনার কেউ না?আমাকে কি একটুও ভালো লাগে না? আপনি আমাকে একটুও ভালোবাসেন না।যদি ভালোবাসতেন তাহলে এমন কথা বলতেন না।মানুষ সত্যি বলে বউ পুরনো হয়ে গেলে ছেলেরা বিয়ে করতে চায়। বউকে তখন ভালো লাগে না।তখন নতুন কেউ কে ভালো লাগে।ওই যে বলে না পুরনো হয়ে গেলে গুরুত্ব কমে যায়।এক কাজ করেন আমাকে ডি*ভোর্স দিয়ে…..

আর কিছু বলার আগেই বেলীর ঠোটের মাঝে সুবাস নিজের ঠোট গুজে দিলো।এত দ্রুত ঘটনায় বেলী চমকে গেলো।বেলী দু হাতে সুবাসের চুল খামচে ধরলো।সুবাসের হাত বিচরণ করছে বেলীর পিঠ জুড়ে।বেলীর পুরো শরীরে বিদ্যুৎ গতিতে শিহরণ খেলে গেলো।সুবাস হাতের স্পর্শ অবাধ্য থেকে অবাধ্য হতে লাগলো।বেলী বাচ্চাদের মতো ছুটো ছুটি করতে শুরু করলো।সুবাস আরো বেলীকে নিজের সাথে চেপে ধরলো।বেশ কয়েক মিনিট পর ছেড়ে দিলো।বেলী হাঁপাতে লাগলো।বেলীর গাল লজ্জায় পুরো লাল হয়ে আছে।লজ্জায় সুবাসকে জড়িয়ে ধরলো বেলী।সুবাস বেলীর মুখ নিজের দিকে তুললো।বেলী এখনো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।সুবাস বেলীর কপালে চুমু খেয়ে বললো
-গিফট নিবে না?
বেলী চোখ তুলে তাকালো।সুবাস বেলীকে ছেড়ে দিয়ে আলমারি থেকে একটা শপিং ব্যাগ বেলীর হাতে দিলো।

-রেডি হয়ে ম্যাসেজ দিও।আমি বারেন্দায় আছি।

বলেই সুবাস বারান্দায় চলে গেলো।বেলী ব্যাগ খুলে দেখলো কালো রঙের জামদানি শাড়ি।ম্যাচিং করে সব কিছু আছে।বেলী তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিলো।রেডি তো হলো ঠিক আছে কিন্তু এখন লজ্জা লাগছে। কিভাবে ম্যাসেজ দিবে ?
– তুমি কি রেডি হয়েছো?
সুবাসের ম্যাসেজ এলো।
-হুম।
বেলী শুধু এতটুকু উত্তর দিলো।
সুবাস ঘরে এলো।বেলীর দিকে তাকালো।কি সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে।কি সুন্দর লাগছে।ফর্সা দেহে কালো রং কি সুন্দর মানিয়েছে।বেলীর চোখে মুখে লজ্জার ছাপ।নিচের দিকে তাকিয়ে আছে বেলী।বেলীর কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ালো সুবাস।চোখ দুটো বেলীতে নিবদ্ধ।

-খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।একদম পরী মনে হচ্ছে।
বেলী চোখ তুলে তাকালো না।লজ্জায় চোখ তুলতে পারছে না বেলী।কেমন যেন সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে।বুকের ভিতর দুক দুক করছে।সুবাস তাদের দূরত্ব কমিয়ে আরো কাছে এলো বেলীর।এক হাতের বেলীর কোমর জড়িয়ে ধরলো।অন্য হাতে বেলীর থুতনী উচু করে মুখ তুললো।
-আমার দিকে তাকাও বেলী
এবার বেলী তাকালো ।এই কন্ঠ কে উপেক্ষা করার সাধ্য নেই বেলীর ।কেমন ঠান্ডা স্বর।কিছু একটা আছে এই স্বরে।এই কন্ঠ যেনো বেলীর পুরো ব’দ’ন নিস্তব্ধ করে দিচ্ছে। বেলী সুবাসের চোখে চোখ রাখলো।চোখের ভাষা গভীর।এই চোখের ভাষা পড়ার সাধ্য নেই বেলীর।সুবাস বেলীর কপালে চু’মু খেলো। বেলীকে নিজের সাথে আরো একটু নিবিড় করে নিলো।বেলীর গালে পর পর কয়েকটা চু’মু খেলো।বেলীর কানে নিজের ওষ্ঠ ছুঁইয়ে বললো।

-”আমার হৃদয়ে ঝড় তোলার জন্য এই দায় কে নেবে কন্যা?আপনি নিবেন?শান্ত করতে পারবেন এই ঝড়?এই ঝড়ে নিজেকে বিলীন করতে পারবেন?”
……….

বেলী কোনো কথা বললো না।একেতো এমন ঘোর লাগানো কন্ঠ তার উপর আবার আপনি সম্বোধন।বেলীর মুখ দিয়ে চেয়েও কিছু বের হচ্ছে না।বেলীকে পাঁজা কোলে তুলে নিলো সুবাস।বারান্দায় ডিভানে বসিয়ে নিজে পাশে বসলো।
-জানো আমার অনেক শখ ছিল নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ নিয়ে চাঁদ দেখবো।
-ব্যক্তিগত সম্পদ?
-আমার বউ।আমার একান্ত ব্যক্তিগত সম্পদ।
বেলী হাসলো কি বলে এই লোক।বউ নাকি সম্পদ।বেলী নাকি তার সম্পদ।বেলী মিহি কণ্ঠে বললো।
– ওহ তাই
– মানুষ মুগ্ধ হয় চাঁদ দেখে আর আমি বারংবার,প্রতিবার,হাজার বার ,শতবার তোমায় দেখে মুগ্ধ হই প্রেয়সী।এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তোমাতেই মুগ্ধ ও নিবদ্ধ থাকতে চাই।

বেলী হাসলো।বেলীর হাসি দেখে হাসলো সুবাস। পকেট থেকে একটা ছোট্ট বক্স বের করলো।একটা ডায়মন্ডের রিং। সুবাস যত্ন সহকারে বেলীর অনামিকা আঙ্গুলে রিং পরিয়ে চু’মু খেলো।বেলী শুধু সুবাসের কাণ্ড দেখছে।কি করছে এই লোক?বেলী যতো এই লোককে দেখছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে।আগের সুবাসের সাথে এই সুবাসের খুব বেশি পার্থক্য।
-বিয়েটা এমন ভাবে হয়েছে যে কিছুই করা হয় নি।তাই আজ রিং পরিয়ে দিলাম যাতে সকলে বুজতে পারে তুমি সুবাসের বেলী। সুবাসের নামে লিখিত সুবাসের বউ।
বেলী আবার হাসলো।বেলী সুবাসের কাধে মাথা রাখলো।আগে এই লোককে একটুও ভালো লাগতো না ।এখন এই লোকের সাথে থাকলে প্রশান্তি অনুভব হয়।সময় কত জলদি সবকিছু বদলে দেয় তাই না?সব কিছু কত সুন্দর করে সাজিয়ে দেয় সময়।একটা অপরিপক্ক, নড়বড়ে,নিস্তেজ সম্পর্ক কে কত সুন্দর পরিপক্ক,সতেজ,প্রাণবন্ত করে দেয় সময় তাই না?
-কি ভাবছো বেলী
-নাহ কিছু না তো
চলো ঘুমাবো
বলেই বেলীকে কোলে তুলে নিলো সুবাস।বেলীকে বেডে শুইয়ে নিজের সম্পূর্ণ ভার বেলীর উপর ছেড়ে দিলো। বেলীর ঠোটের কাছে নিজের ঠোট নিতেই বেলী চোখ বন্ধ করে নিলো।বেলীর এই সুবাসকে দেখার সাহস নেই বেলীর ঠোঁট জোড়া কাপছে।সুবাস হাসলো।বেলীর কানের কাছে নিয়ে মিহি কণ্ঠে বললো

-শুনো কন্যা, তোমার অনুমতি ব্যতীত আমি কিছু করবো না।যতদিন না বেলী নিজেকে তৈরি করছে সুবাসকে আগলে নিতে ততদিন এই সুবাস নিজেকে ধরে রাখবে।

বলেই বেলীর গলায় মুখ গুজে দিল সুবাস।নিজের ঠোটের বিচরণ বেলীর গলায় চালিয়ে বেলীকে জড়িয়ে ধরে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো সুবাস।বেলী সুবাসের দিকে তাকিয়ে হাসলো।সুবাসের দিকে তাকিয়ে এই প্রথম সুবাসের গালে চুমু খেল বেলী।নিজের কাজে নিজেই লজ্জা পেলো।কি সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে।দেখতে এতো স্নিগ্ধ লাগছে কেন?কে বলবে এই লোক বেলীর থেকে নয় বছরের বড়?মুখে চাপ দাড়ি, জোড়া ভ্রু, সরু নাক সব কিছু পারফেক্ট। আটাশ বছরের এক যুবক। এসব ভাবতে ভাবতে কিছুক্ষণ পর বেলী ও গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো।

চলবে……?
হ্যাপি রিডিং