বেলী ফুলের সুবাস পর্ব-২৯+৩০( ১৮+ এলার্ট)

0
516

#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব:২৯
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)

দেখতে দেখতে সময় চলে যায়।সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।সুবাস পুরো পুরি সুস্থ।সামিয়া নিজ জীবন নিয়ে ব্যাস্ত। নিহাল আর ফিহার বিয়ে ঢাকাতেই হবে।তাদের বিয়ের আর মাত্র সাত দিন বাকি।সামনে সপ্তাহে শুক্র বার তাদের বিয়ে।কাল রাতে ডক্টর ফারদিনের বাবা নিজাম আহমেদ আমজাদ হোসেনের কাছে ফোন দিয়েছেন।বলা চলে বিশেষ কারণে তিনি ফোন দিয়েছেন।কারণ হলো এতো দিনের বন্ধুত্ব কে তিনি সম্পর্কে রূপান্তর করতে চান।

তিনি ফারদিনের জন্য মেয়ে পছন্দ করেছেন তাও আবার আমজাদ হোসেনের পরিচিত মেয়ে।কিন্তু এ কথা বলতে হবে যে মেয়ে তিনি নয় স্বয়ং ফারদিন পছন্দ করেছে।মেয়ে আর কেউ না সাজিয়া।সাজিয়াকে নাকি মনে ধরেছে ফারদিনের।নিজাম আহমেদ আরো জানিয়েছেন সব কিছু ঠিক থাকলে আজ তারা আংটি পড়বেন আমজাদ হোসেন সরাসরি মিতু চৌধুরী কে ফোন দিয়ে বলেন এই ব্যাপারে।সাথে তিনি ছেলের গ্যারেন্টি দেন যে ছেলের মধ্যে কোনো ঝামেলা নেই পাশাপাশি ফ্যামিলি ভালো। মিতু চৌধুরী তাদের কে আসতে বললেন।সাথেই আমজাদ হোসেনকে পুরো পরিবার নিয়ে দাওয়াত দিলেন।

তাই আজ সকলে তাদের বাসায় যাবে।শুধু যাবে না সুবাস।তার নাকি ইম্পর্ট্যান্ট ডিল ফাইনাল করতে হবে পাশাপাশি ইয়াসিরের দিক টাও তাকে দেখতে হবে।কারণ সাজিয়ার বিশেষ দিনে ভাই হিসেবে ইয়াসিরের অফিসে থাকা মানান সই নয়।বেলী যাবে না কারণ কয়েক দিন পর ইয়ার ফাইনাল।এখনো অ্যাসাইন্মেন্ট কমপ্লিট করা হয় নি।কমপ্লিট করতে হবে।তাই বেলী যাবে না।অবশ্য এ নিয়ে সাজিয়া রাগ করেছিল কিন্তু সে তাকে মানিয়ে নিয়েছে।

-“রেডি হচ্ছেন?”

সুবাস আয়নার সামনে টাই বাঁধছিলো।বেলী চোখ খুলে সুবাসের দিকে তাকিয়ে বললো।বেলী ঘু’মু ঘু’মু চোখে সুবাসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।সুবাস কে জড়িয়ে ধরলো।এই লোককে আগে বেলীর সহ্য হতো না কিন্তু এখন কি হয় সে জানে না।শুধু লোকটার পাশাপাশি থাকতে মন চায়।বিনা কারণে ছুঁয়ে দিতে মন চায়।চোখের মায়ায় ডুব দিতে মন চায়।সারাদিন লোকটাকে পাশে পেতে মন চায়।লোকটাকে দু চোখ ভরে দেখতে মন চায়।

এ সব কিছু যে এক বিশেষ কারণে হচ্ছে তা বেলী ভালো করেই জানে।কারণ হচ্ছে ভালোবেসে ফেলেছে সে সুবাসকে।না ভালোবাসে না গভীর ভাবে ভালোবাসে।কথাগুলো ভেবে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো বেলী।

-”কি ব্যাপার বউ দেখি সকাল সকাল লজ্জা পাচ্ছে। তাও আবার রাতে কিছু না করতে।”

-” একটু জড়িয়ে ধিরেছি দেখে আপনি দেখি লজ্জা দিচ্ছেন।এমন করলে কিন্তু জড়িয়ে ধরবো না”

– “আচ্ছা রাগ করো না।তুমি কি আমার সাথে ভার্সিটি যাবে?”

– “নাহ! একাই যেতে পরবো।”

-” আচ্ছা আমি যাচ্ছি তাহলে।”
সুবাস রুমের দরজার সামনে আসতেই শুনতে পেল
-”শুনুন”
বেলীর মতো করেই জবাব দিলো সুবাস
-”বলুন”

বেলী এগিয়ে এসে এবারও সুবাসকে জড়িয়ে ধরলো।সুবাসের গালে ও ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছোঁয়ালো।সুবাস তো কয়েক সেকেন্ড এর জন্য থমকে গেলো।বেলীর দিকে হা করে তাকিয়ে রইলো। গোল গোল চোখে বেলীকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।বেলী সুবাসকে ছেড়ে দিলো।

-”বউ কি চাচ্ছে না আমি অফিসে যাই?বউ কি রোমান্টিক মুডে আছে নাকি?নাকি লিটল বেলীকে আনতে চাইছে?বউ কে বলতে চাই এখন আমার অফিস যেতে হবে। এবার কিন্তু আমি নিয়ন্ত্রণ হারা হলে এই বেসা’মাল আমিকে বউ সামলাতে পারবে না।”

বেলীর বলতে ইচ্ছা করলো,আমি তো আপনার নিয়ন্ত্রণ হারা আলি’ঙ্গন চাই।আমি তো বেসা’মাল আপনাকে সামলাতে চাই।আপনার বেসামাল ভালোবাসা পেতে চাই।আপনার অবাধ্য ছোয়া পেতে চাই।কিন্তু না লজ্জার কারণে বলতে পড়লো না।নিজেকে সংযত রেখে বললো

-”আপনি কিন্তু আমায় আবার লজ্জা দিচ্ছেন।কথা নেই আপনার সাথে”

-”আচ্ছা রাগ করো না।আমি যাচ্ছি।”

বলেই সুবাস বেলীর কপালে চুমু খেয়ে বের হতে নিলেই শুনতে পেলো
-”শুনুন”

ফির বেলীর দিকে তাকালো সুবাস।মেয়েটা কি কিছু বলতে চাইছে?তার সঙ্গ চাচ্ছে?

-”সাবধানে যাবেন।তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন।”

-”হুম।আল্লাহ হাফেজ”
বলেই সুবাস চলে গেলো।

___________

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ায় সময় চলছে।সাজিয়াদের বাসায় সকলে উপস্থিত হলো। ফারদিন তার বাবা মা ও ছোট বোন এসেছে। বসার ঘরে সকলে বসে কথা বলছে।ইয়াসির বসে ফারদিনের সাথে কথা বলছে।হাজার হলেও বোনকে তো আর এভাবেই কারো হাতে তুলে দেয়া যায় না।আজীবনের ব্যাপার।তাইতো এটা সেটা জিজ্ঞাস করছে ফারদিনকে ইয়াসির।বড়রা নিজেদের মতো কথা বলছে।

বেশ কিছু ক্ষন পর সাজিয়াকে নিয়ে আসা হলো বসার ঘরে।পরনে মেরুন রঙের শাড়ি।হাতে চুড়ি।চুল গুলো হালকা খোঁপা করে মাথায় শাড়ির অচল টেনে দেয়া। চোখে কাজল।ঠোঁটে হালকা কালার লিপস্টিক।সাজিয়াকে বসানো হলো।সাজিয়ার বেশ অসস্তি হতে লাগলো।একেতো প্রথম এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলো। দ্বিতীয় এক জোড়া চোখ যে তাকে বেশ কিছু ক্ষন যাবৎ পলকহীন ভাবে দেখেই চলছে তাও বুঝতে পারলো।

সাজিয়ার পাশে ফারদিনের ছোট বোন নূপুর বসলো
-”ভাইয়ার কিন্তু সেই লেভেল এর চয়েস। ভাবি কিন্তু একদম পারফেক্ট।”

নূপুর কথা শুনে হেসে উঠলো সবাই।সাজিয়া লজ্জায় লাল হয়ে গেল। রিপা (ফারদিনের মা) বেশ কিছু ক্ষন কথা বললো সাজিয়ার সাথে।তাদেরকে কথা বলার জন্য আলাদা পাঠানো হলো।

-”আপনাকে কিন্তু ভীষণ সুন্দর লাগছে মায়াপরি।”

ফারদিনের কথায় লজ্জায় লাল হয়ে গেল সাজিয়া।ঠোঁট অনবরত কাপতে লাগলো।কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে লাগলো।চেয়েও কিছু বলতে পারলো না সাজিয়া।

-”এই যে বারং বার আপনার রূপে কেউ একজন ভীষণ ভাবে ঘায়েল হচ্ছে তার কি খেয়াল রেখেছেন?”

ফারদিনের কথায় চোখ তুলে তাকালো সাজিয়া।ঠোঁটে ফুটে উঠলো এক চিলতে হাসি।

-”এই যে আপনার হাসিতে কেউ যে বার বার মুগ্ধ হচ্ছে তার খবর কি রাখছেন?”

পর পর এমন প্রশ্নে লজ্জায় লাল হয়ে গেল সাজিয়া।তার কাছে এই প্রশ্নেই কোনো উত্তর নেই।কিভাবে দিবে সে প্রশ্নের উত্তর যেখানে তার ঠোঁট দুটো কেপেই যাচ্ছে।হাঁটু গুলো বাজে ভাবে কাপছে।দাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।সাজিয়া সাভাবিক করার জন্য ফারদিন বললো

-”আমার দিকে তাকান মিস সাজিয়া”
সাজিয়া ফারদিনের দিকে তাকালো।এক পলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।ফারদিন হাসলো সাজিয়ার কাণ্ডে।

-”আপনি ভীষণ লাজুক সাজিয়া।এই লাজুকতায় আমি ভীষণ ভাবে তলিয়ে যাচ্ছি।নিজেকে ধরে রাখতে পারছি না।নিজেকে ধরে রাখা কষ্ট সাধ্য হয়ে যাচ্ছে।”

বলেই ফারদিন সামনের দিকে পা বাড়ালো।হঠাৎ পিছন ঘুরে বললো

-”তৈরি থাকবেন মিস সাজিয়া।খুব শীগ্রই আপনাকে নিয়ে যাবো আমি।আমাকে সামলানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।”

বলেই ফারদিন চলে গেলো। সাজিয়া গোল গোল চোখে তাকিয়ে রইলো ফারদিনের যাওয়ার পানে।ফির ফারদিনের বলা কথা ভেবে হাসলো।এই এতটুক সময়ের মধ্যে সাজিয়া বুঝে গিয়েছে লোকটার মধ্যে কিছু একটা আছে যা তাকে টানছে।লোকটার কথা বলার ধরন,তাকানো,চলা ফেরা সব কিছু ভীষণ ভাবে টানছে সজিয়াকে।
________

সুবাস আজ বাইরে থেকে ডিনার করে আসবে বলেছে।মিটিং আছে বলে সকলকে এক সাথে ডিনার করতে হবে।বেলীকে সুবাস অনেকে বার সরি বলেছে কিন্তু বেলী কিছু মনে করে নি।কাজ করতে গেলে এমন হবেই।এটাও আর আহামরি কিছু না।সামান্য ডিনার।এতে অবশ্য বেলীর জন্য ভালো হয়েছে যা করতে চাইছে তা সহজে করতে পারবে।

বাসায় ফিরলো সুবাস।চোখে মুখে ক্লান্তি স্পষ্ট।।বেশ কয়েকবার কর্নিং বেল দেয়ার পর যখন বেলী দরজা খুললো না তখন সুবাস চিন্তায় পড়ে গেল।পকেট থেকে চাবি নিয়ে দরজা খুলে সোজা রুমে গেলো। রূমে গিয়ে যা দেখলো তাতে বিস্ময়ে চোখ দুটো যেনো বের হয়ে আসবে সুবাসের।

চলবে……….?

#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব :৩০
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)(১৮+ এলার্ট)

সুবাস রুমে প্রবেশ করলো।পুরো রুম থেকে শুধু ফুলের ঘ্রাণ আসছে নাকে।পুরো শরীর হিম হয়ে যাচ্ছে সুবাসের।সুবাস লাইট অন করলো।পুরো রুম জুড়ে গোপাল ফুল ও হার্ট শেপ বেলুন দিয়ে সাজানো।পুরো রুম গ্ধনে মো মো করছে।বেডে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে বড়ো করে হার্ট শেপ আঁকা।এবার সুবাসের চোখ গেলো ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে থাকা বেলীর দিকে।বেলী তার দিকে পিঠ দিয়ে দাড়িয়ে আছে। পরনে পাতলা ফিনফিনে জর্জেটের লাল শাড়ি।চুল গুলো সামনের দিকে নিয়ে আসা। ব্লাউসের বড় গলা দিয়ে পুরো পিঠ চোখে ভেসে উঠছে।আয়নায় বেলীকে দেখা যাচ্ছে।চোখ দুটো বন্ধ। গাল জুড়ে লাল আভা।সুবাস সকাল থেকে একের পর এক চমক খাচ্ছে।প্রথমে নিজ থেকে বেলীর কাছে আশা।এখন আবার এতো কিছু।কেমন যেনো শিহরণ হচ্ছে সুবাসের শরীর জুড়ে।কেমন পুরুষালি হরমোন গুলো শরীর জুড়ে নেচে উঠছে। নিষিদ্ধ চাওয়া গুলো তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে।

সুবাস বেলীর দিকে এগিয়ে গেলো।বেলীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে পর পর কয়েকটা চুমু খেল।বেলী দু হাতে শাড়ি খামচে ধরলো।বেলীকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কপালে ঠোঁট ছোয়ালো।ঠোটের ভাঁজে ঠোঁট গুজে দিলো।
বেশ কিছু ক্ষণ পর বেলীর দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকলো।বেলী চোখ বন্ধ করে নিলো।এই চোখে তাকানোর সাহস বেলীর নেই।মনে হচ্ছে এই চোখে তাকালেই গভীর ভাবে তলিয়ে যাবে সে।এই চোখের ভাষা অন্য।চোখের ভাষা স্থির,শান্ত।কোনো কিছুর চাওয়া আছে এই চখে।যেনো কোনো কিছুর আকুল আবেদন।বেলীর কানের কাছে সুবাস নিজের ঠোট ছুইয়ে বললো

-”বেলী…….তোমার এই রূপ আমাকে নিয়ন্ত্রন হারা করে দিচ্ছে।নিজেকে ধরে রাখা কষ্ট সাধ্য হচ্ছে।নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছি না।নিষিদ্ধ চাইয়া গুলো মুক্ত আকাশের উড়ন্ত পাখি নেয় উড়তে চাইছে।শরীর জুড়ে নতুন অনুভুতি গুলো ছেয়ে যাচ্ছে।”

বেলীর শরীর সুবাসের কথায় যেনো হিম হয়ে যাচ্ছে।পেটের মধ্যে মোচড়া মচড়ি শুরু হচ্ছে। শ্বাস – প্রশ্বাস ঘন হচ্ছে।কেমন ঠান্ডা শির শির অনুভূতি হচ্ছে।।এই শির শির বেলীর শরীরে শিহরন জগতে যথেষ্ট।

-”বেলী তুমি কি আমাকে শুনতে পারছো?তোমাকে আমার আরো কাছে চাই বউ।তোমার শরীর জুড়ে মিশতে চাই।তোমাকে সবটা জুড়ে ভালোবাসতে চাই। নিজের করে পেতে চাই।”
……….

-”বেলী তোমাকে নিজের মাঝে বিলীন করতে চাই।তোমার রন্দ্রে রন্ধ্রে মিশতে চাই।তোমাকে ভালোবেসে সর্ব সুখ দিতে চাই।দেবে কি আমায় সেই সুযোগ?”

এমন আকুল আবেদন কি ফিরিরে দেয়া যায়?নাহ দেয়া যায় না।বেলী ফিরিয়ে দিতে চায় না। এই চাওয়া কে ফিরিয়ে দেয়া বেলীর জন্য কষ্টসাধ্য।তবে বেলী চেয়ে ও নিজের মুখ দিয়ে কথা বের করতে পারছে না।কেমন যেনো গলায় সব কথা আটকে যাচ্ছে।বেলীকে চুপ থাকতে দেখে সুবাস বেলীকে ছেড়ে দিলো।হাতের বাধন হালকা হলো।সুবাস উল্টো দিকে ঘুরতে নিলেই বেলী সুবাসের পিঠে মাথা ঠেকিয়ে জড়িয়ে দিলো।অতি কষ্টে উচ্চারণ করলো

-”সুবাস”

এই প্রথম বেলীর মুখে নিজের নাম শুনে বেশ অবাক হলো সুবাস।ঠোঁট জুড়ে হাসি ফুটে উঠলো।নতুন শিহরণ হলো প্রেয়সীর মুখে নিজের নাম শুনে।

-”আমি আপনার ভালোবাসা পেতে চাই।আপনাকে গভীর ভাবে অনুভব করতে চাই।”

বেশ সুবাসের যা বুঝার বুঝে গেলো।প্রেয়সীকে কোলে তুলে নিলো।বেলীকে বেডে শুইয়ে নিজের ভর বেলীর উপড় ছেরে দিলো।বেলীর গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো।সর্ব সুখে বিলীন হলো দুটি মানুষ।এক হলো তাদের হৃদয়।তলিয়ে গেল ভালবাসায় নতুন রূপে।তাদের ভালোবাসার সাক্ষী হলো এই চার দেয়াল,আকাশের চাঁদ এবং তারা দুজন।
__________

ফারদিনরা সন্ধার পর চলে গিয়েছে। সামিয়াদের পুরো পরিবার সবাই আজ সাজিয়ার বাসায় থাকবে।রাতে খাবার শেষ করে সাজিয়ার রূমে শুয়ে পড়লো সামিয়া।কিছু ক্ষন আগের ঘটনায় ডুব দিলো

সবাই বসার ঘরে বসে বিয়ের কথা বলছিলো। যেহুতু সামনের শুক্র বারে নিহাল ও ফিহার বিয়ে হবে তাই ঠিক করা হলো সেই দিনই সাজিয়া ও ফারদিনের বিয়ে হবে।যে কনভেনশন সেন্টারে বুক করা হয়েছে সেখানে হবে।এটা মিতু চৌধুরী আপত্তি করলে বিলকিস বগমের কথায় রাজি হতে হয়েছে।সাজিয়া তার নাতনি।তাই তিনি চান এক সাথে এক সেন্টারে যেনো বিয়ে হয়।তাদের কথার মাঝে মিতু চৌধুরী বিলে উঠেন।

-”আসলে আম্মা আমি একটা কথা বলতে চাই আপনাদের।আপনারা কেউ আমাকে ভুল বুঝবেন না দয়া করে।”
বিলকিস বেগমকে উদ্দেশ করে বলেন তিনি।মা নেই বলে তিনি বিলকিস বেগমকে আম্মা বলে ডাকেন।

-”বলো কি বলবা তুমি।”

-”আমি আমার ইয়াসিরের জন্য সামিয়াকে চাচ্ছিলাম আম্মা।রাজিয়া আপা আমি সামিয়াকে আমার ছেলের জন্য চাচ্ছিলাম।”

তার কথা শুনে সবাই অবাক হলো।বিশেষ করে সামিয়া।বরাবর বসে থাকা ইয়াসিরের দিকে তাকালো।লোকটা তার দিকে কেমন নির্লজ্জ মতো তাকিয়ে আছে। কেউ দেখলে কি হবে?ভাগ্যিস কেউ এই দিকটায় তাকাচ্ছে না।

-”আমি রাজি মিতু।তোমার পোলার লগে আমগো সামিয়ারে বেশ মানাইবো।”
বিলকিস বেগম বলে উঠলেন

-”আমি রাজি মিতু আপা।তবে এবার আমি আমার মেয়ের মতামত নিতে চাই।আমি চাই সামিয়া ও ইয়াসির নিজেদের মতো করে কথা বলে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাক।”

রাজিয়া বেগমের কোথায় সামিয়া ও ইয়াসির কে আলাদা রুমে পাঠানো হলো।

-”আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই না ইয়াসির ভাই।”

সামিয়ার কণ্ঠে স্পস্ট অভিমানের চাপ।সামিয়ার কথায় ইয়াসির হাসলো।

-”কেনো বিয়ে করবে না?এতো দিন তো বিয়ের জন্য লাফালাফি করতে।তবে এখন কেনো না বলছো?”

-”আগে অন্য ব্যাপার ছিল।এখন ব্যাপার অন্য। এখন আপনি আমার উপর দয়া দেখিয়ে বিয়ে করতে চাচ্ছেন।”

-” ওয়েট ওয়েট!কিসের দয়া?”

-”এই যে আমার বিয়ে ভেঙেছে।আমার সাথে খারাপ কিছু ঘটেছে।এখন তো আমাকে কেউ বিয়ে করবে না।আমার কোনো সম্মান নেই।আমার গায়ে ধ*র্ষিতার ট্যাগ।আমি এখন ফেলানো জিনিস।আমার কোনো দাম নেই।তাই আপনি আমাকে বিয়ে করে দিয়া দেখবেন।আপনার দয়া আমার চাই না।

-”কি সব বলছো তুমি? কেনো এমন ভাবে কথা বলছো?তোমার সাথে খারাপ কিছু হিয় নি। যা হয়েছে সব অ্যাকসিডেন্ট।আমি তোমাকে দয়া দেখাচ্ছি না।আমি তোমাকে সত্যি বিয়ে করতে চাই।আমি তোমাকে বিয়ে করবো।”

-“আমি আপনাকে বিয়ে করবো না।আমার মত না থাকলে কেউ আমাকে বিয়ে দিবে না।আমি মরে যাবো তাও আপনার কাছে বিয়ে বসবো না।”

কথাটা শুনা মাত্র ইয়াসির ঘরের দরজা লাগিয়ে দিলো।সামিয়াকে বেডে সাথে চেপে ধরে গলায় মুখ গুজে পর পর কয়েকটা চুমু খেল।ঘটনা গুলো এত তাড়াতাড়ি হলো যে সামিয়ার বুঝতে সময় লাগলো।শরীর জুড়ে কেমন অনুভূতি হলো।দু চোখ বন্ধ করে নিলো।ইয়াসিরের গায়ের গন্ধ নাকে লাগায় কেমন যেনো হচ্ছে।সামিয়া কাপতে লাগলো।

সামিয়াকে ছেড়ে দিয়ে দিলো ইয়াসির।নিজ কোলে বসিয়ে কোমর চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।কপালে চুমু খেয়ে বললো

-”আর যদি কখনো মরার কথা বলে তবে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। আর বিয়ে তো তোমাকে আমার কাছেই বসতে হবে।তুমি চাও বা না চাও।তাই চুপ চাপ নিচে গিয়ে হুম বলে দিবে বিয়ের জন্য।বাড়াবাড়ি করলে খারাপ হবে।”
……..

-বি রেডী মাই ফিউচার ওয়াইফ ফর টেকিং মাই রোমান্টিক টর্চার।”

বলেই সামিয়ার গালে চুমু খেয়ে চলে গেলো সে।
সামিয়া পলক ঝাঁপিয়ে বার কয়েক ইয়াসিরকে দেখলো। এ কোন ইয়াসির দেখছে সে।হাত আপনা আপনি গালে চলে গেলো।অতপর নিচে চলে গেলো।সকলের প্রশ্নের উত্তরে হুম বললো অর্থাৎ সে বিয়েতে রাজি।তাই ঠিক করা হলো একই দিনে একই জায়গায়,সামিয়া – ইয়াসির,নিহাল – ফিহা,সাজিয়া – ফারদিনের বিয়ে হবে। সবার মুখে খুশির আমেজ।

সামিয়ার ভাবনার মাঝে সাজিয়া তাকে ধাক্কা দিলো
-”কি এতো ভাবছেন ভাবি জি?”

-”আমি কিভাবে তোর ভাবি হই?তোর ভাইয়ের সাথে আমার এখনও বিয়ে হয় নাই।”

– “আরে ভাবি রাগ করছেন কেনো?আপনি কয়দিন পর শুধু আমার ভাইয়ের বউ না আমার ভাইয়ের বাচ্চার মা হবেন।”
বলেই হাসতে লাগলো সাজিয়া।বেশ কিছু ক্ষন কথা বলে তারা ঘুমিয়ে গেলো।

চলবে……….?