#বেষ্ট_ফ্রেন্ড_নাকি_স্বামী?”
Written By Nilima Zabin Tanmona
আজ আমার বিয়ে। কিন্তু কোনো আয়োজন ছাড়াই। বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান আমি। আমরা দুই বোন। আমি ছোট। বড় আপুর বিয়ে হয়ে গেছে ৩ বছর আগে। আর এই বিয়েতে সবাই খুশি হলেও আমি খুশি হতে পারছি না। কারণ টা আমি নিজেই। আমি ৬ মাসের অন্তসত্বা। কি শুনে অনেক বেশি অবাক হচ্ছেন?? আসলেই তাই ৬ মাসের সন্তান রয়েছে আমার পেটে। আর এইটা জেনেও আমাকে বিয়ে করছে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড রাফি। এসব কিছুর পেছনে বিরাট এক ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাস মনে করলেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনা। একটু পরেই রাফি চলে আসবে। আমি ম্যাক্সি পরে আমার রুমে বসে আছি। আর বারবার আয়নার দিকে তাকাচ্ছি। নিজের অজান্তেই অনাগত সন্তানের কথা ভেবে কেঁদে দিচ্ছি। পারছি না কারো করুণা নিতে। একাই তো বাঁচতে চেয়েছিলাম। আমাকে দয়া দেখানোর জন্য রাফি কেন আমেরিকা থেকে ব্যাক করলো?? কেনই বা আমার সব জেনেও আমায় বিয়ে করছে? একটু পরেই দরজা খোলার আওয়াজ পেলো রিধীমা। পেছনে তাঁকিয়ে দেখে কাশফি আর তার স্বামীকে। কাশফি রিধীমার বড় বোন। তাদের দেখে রিধীমা চোখের পানি মুছে ফেলল। কাশফি এসে রিধীমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল।
-বোন সব ভুলে যা! রাফিকে নিয়ে তুই অনেক সুখি হবি দেখিস। তোকে আর কেউ খারাপ কথা বলতে পারবেনা। আমি জানি তুই কাঁদছিলি। বোন আর কাঁদবিনা তুই! তোর কান্নার দিন শেষ। আজ থেকে তুই নতুনভাবে পথ চলবি। (চোখের পানি মুছে দিয়ে)
-আপুরে রাফি যে কষ্ট পাবে। ওকে তো আমি স্বামী হিসেবে মানবো না রে আপু। এইটা আমি ওকে বলেছি কিন্তু ও হেসেছে আর কিছুই বলেনি।
-নিচে চল। রাফি আর রাফির বন্ধুরা চলে এসেছে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
(রাফির মা বাবা রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যায় ২ বছর আগে। আর রাফি তখন আমেরিকা চলে যায়। রাফি তার মা বাবার একমাত্র সন্তান)
এরপর রিধীমা কাশফির সাথে ড্রইং রুমে গেল। রিধীমা মাথা নিচু করে সেখানে বসে রইলো। রিধীমার মা বাবা রাফির সাথে কথা বলছে। আর রাফি এক দৃষ্টিতে রিধীমার দিকে তাঁকিয়ে আছে। রিধীমা তা বুঝতে পেরেছে কারণ দুইজন একদম পাশাপাশি বসা। রাফির বন্ধুরা রিধীমাকে অনেক রেসপেক্ট করে। রাফির বন্ধুরা রিধীমাকে হাসানোর অনেক ট্রাই করছে কিন্তু পারছেনা। তারপর রাফি হাত ইশারা করে ওদের থামতে বলে। কাজী আসলে বিয়ে পড়ানো ও হয়ে যায়। রেজিস্ট্রি খাতায় সাইন করার সময় রিধীমার চোখের এক ফোটা পানি রাফির হাতে পরলো। রাফি সাথে সাথে রিধীমার দিকে তাঁকায়। তখনও কোনো কথা বলেনি রিধীমার সাথে। সাইন করে রিধীমা উঠে চলে যায়। রিধীমাকে সবাই আটকাতে চাইলে রাফি নিষেধ করে। রাফি তার কিছুক্ষন পর রিধিমার ঘরে যায়। রিধীমা তখন স্ব জোরে কাঁদছে। চোখগুলো মরিচের মত লাল হয়ে গেছে। রাফি রিধীমার ঘাড়ে হাত দিয়ে বলে
-পাগলি? কাঁদছো কেন??
-রিধীমা অবাক হয়ে যায়। এই নামটা এতগুলো বছরেও রাফি ভুলেনি। তাহলে কি ও মন থেকেই আমাকে…. না না আমি এসব কি ভাবছি!!
-কি ভাবছো? ডাকনাম টা কেন ভুললাম না? (একটু হেসে)
-তুই কি আমায় করুণা করছিস না?? (রাফির দিকে তাঁকিয়ে)
-এখনো কি তুই বলবা?? আর করুণা যে করছিনা সেইটা আমার থেকে ভাল তুমি জানো আর খুব ভালো করেই জানো!!
-তুই কেন বাংলাদেশে আসলি?
-আগে তো নিজের স্বামীকে তুমি বল তারপর বাকি কথা।
-রাফি আমি কিচ্ছু শুনতে চাইনা। শুধু যা জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দে!
-রেডি হও। বাসায় যাবে।
-কার বাসায় যাব আমি?? (অনেক অবাক হয়ে)
-আমার বাসায়।
-মানে? তুই না আমেরিকাতে সেটেল??
-গত কালকে একটা বাড়ি কিনেছি এখানে। জানি না পছন্দ হবে নাকি তোমার? কিন্তু তোমার জন্যই কেনা। আর শুনো যদি বেশি কান্না কর তো খবর আছে। আমি চাইনা তোমার দুঃশ্চিনার জন্য আমার সন্তানের কোনো ক্ষতি হোক।
-তোর সন্তান??? (একটু চেঁচিয়ে আর অবাক হয়ে)
-হ্যাঁ আমার। বউটাও আমার আর সন্তান ও আমার। এখন তৈরি হও আমি কাশফি আপুকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
এই বলে রাফি ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। কিছুক্ষন পর কাশফি এসে রিধীমার সব কিছু গুছিয়ে দিল। শুধু জামাকাপড় ছাড়া। কেননা রাফি বলেছে পুরনো একটা জিনিস ও যাতে রিধীমার সাথে না যায়। শুধু মেডিসিন দিল কাশফি রিধীমার জন্য।
চলবে……
ভাল লাগলে অবশ্যই জানাবা সবাই।