#বেস্টু
#Ariyana_Nur
#পর্ব_১১
রাত ১২.৪৫ বাজে বিছানায় শুয়ে শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি।চোখে ঘুমের ছিটে ফোটাও নেই।বার বার শুধু দুপুরের ঘটনার কথা মাথায় আসছে।ইস…কি লজ্জা টাই না পেয়েছিলাম।
মামুনিকে জরিয়ে ধরে ওসব কথা বলার পর সামনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া,ভাবি,নিহাদ ভাইয়া আর ঐ খচ্চর টা দাঁড়িয়ে আছে।আমার অবস্থা তখন হয়েছিল আল্লাহ্ জমিন ফাক করো ঢুকে যাই।আর সারাদিনতো তাহিয়া, আহাদ, নিহাদ ভাইয়ার আমাকে নিয়ে মজা করেছেই।
এসব ভাবছি এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল।এতো রাতে ফোন আসায় কিছুটা বিরক্ত হলাম।প্রথম বার রিং হয়ে কেটে যাওয়ার পর ২য় বার এই ভেবে ফোন ধরলাম যে,কোন দরকারি কল ও তো হতে পারে।ফোন রিসিভ করে কোন কথা না বলে কানে ধরে রাখলাম।একটু পরে ওপাষ থেকে একজন বলল….
—এতো রাত পযর্ন্ত জেগে জেগে কি তোমার না হওয়া জামাই এর সাথে কথা বলছ???
কন্ঠ শুনে বুঝে গেলাম এটা কে হতে পারে।আমি রাগি গলায় বললাম…
—মদ তদ খেয়ে আমাকে ফোন দেন নাই তো???এতো রাতে ফোন দিয়ে কি উল্টাপাল্টা বকছেন???
—তাহলে এতো রাত পযর্ন্ত জেগে আছো কেন???
—আমার ইচ্ছা আপনারে বলতে যাব কেন।আর আপনাকে কে বলল আমি জেগে আছি।এতো রাতে আমার ঘুমের ১৩টা বাজিয়ে আবার বড় বড় কথা বলছেন।
তিনি রাগি শুরে বললাম…
—আমি তোমার এই ফালতু কথা শুনার জন্য কল দেই নি বুঝলে।
—তাহলে কেন ফোন দিয়েছেন আপনার ফালতু কথা শুনাতে???
—স্টুপিট মুখটা একটু বন্ধ কর।তা না হলে আমি বলব কিভাবে।
তার কথা শুনে আমি চুপ করে রইলাম।তিনি আবার বললেন…
—তুমি যখন কাউকে পছন্দই কর তাহলে কেন আমাকে আগে বলনি???
তার কথা শুনে মনে হয় আমি আকাশ থেকে পরলাম।আমি অবাক হয়ে বললাম…
—আমি আবার কাকে পছন্দ করি!!!
তিনি একটু চুপ করে থেকে বললেন….
—তখন যে বললে….
যাই হোক… তার মানে তুমি তাকে পছন্দ কর।তা না হলে তো আর কাউকে এভাবেই জামাই বলতে না।
তার কথা শুনে আমি হাসতে লাগলাম।আমার হাসি শুনে উনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন…
—এ মেয়ে তুমি এমন হাসছো কেন???আমি হাসির কি বললাম???
তার ধমক খেয়ে আমি আমতা আমতা করে বললাম….
—আপনি ভুল ভাবছেন।আমি কাউকে পছন্দ করি না।আমি তো মামুনির ছেলেকে কখন দেখিও নি।
—তাহলে…
—আরে… আমি তো এমনিই মামুনিকে শাশুড়ি বলে ডাকি।মামুনি সব সময় বলেন আমাকে তার ছেলের বউ বানাবে।তাই আমিও তাকে শাশুড়ি বলে ডাকি।আমি শুধু এতটুকু জানি মামুনির একটা ছেলে আছে আর সে বাহিরে থাকে।আর কিছুই জানি না।
—কখন তাকে জিগ্গেস কর নি তার ছেলের ব্যপারে???
—না….
—কেন???
—মন চায়নি তাই।আপনারে বলতে যাব কেন।আর আপনি আমার নাম্বার কই পাইছেন।এতো রাতে একটা মেয়েকে ফোন দিয়ে ডিস্টাব করছেন লজ্জা করে না।ফোন রাখেন…
তাকে কিছু বলতে না দিয়ে আমিই লাইন কেটে দিলাম।কপালে কি আছে আল্লাহ্য় জানে।
________________________
কলেজের মাঠে বসে আছি তিনজন।কথা বলছি এর একটু পর পর আমাদের সেলফি কুমারি সেলফি তুলছে।কথা কম আমরা মরামারি বেশি করছি।হঠাৎ করে আমাদের সামনে একটা মেয়ে এসে হাজির হল।আমরা একে ওপরের দিকে তাকিয়ে মেয়েটার দিকে তাকালাম।মেয়েটা কোন কথা না বলে আহাদের কলার ধরে দাড় করিয়ে বলল…
—মেয়ে মানুষ দেখলে মাথা তুলে তাকাতে পারো না।আর আমার সামনে তো কথাই বলতে পারো না।তাহলে এদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছ কেন???
মেয়েটার কথা শুনে আমি আর তাহিয়া দুজন দুজনের দিকে হা করে তাকিয়ে রইলাম।তাহিয়া মেয়েটাকে বলল…
—এই মেয়ে কে তুমি???আর ওর কলার ধরেছ কেন???
মেয়েটা রাগি গলায় বলল…
—আপনাকে কেন বলব আমি কে।মেয়েটা আহাদকে ধমক দিয়ে বলল…
—আর তুমি আমার ফোন দুদিন ধরে ধরছো না কেন???
আহাদ তো এখন হা করে তাকিয়ে আছে।বেচারা মনে হয় শকড খেয়েছে।আমি মেয়েটার হাত ওর কলার থেকে ছাড়িয়ে বললাম….
—এই মেয়ে কে তুমি???আর তুমি ওর সাথে এভাবে কথা বলছ কেন???দেখে তো ছোট বাচ্চা মনে হচ্ছে।
মেয়েটি কিছুক্ষণ ভেবে বিরক্ত শুরে বলল….
—আমি আপনার সব প্রশ্নের উওর দিব।তার আগে আপনি বলেন আপনি কে???
আমি আহাদের এক হাত জরিয়ে ধরে বললাম…
—আমি ওর গার্লফ্রেন্ড।
আমার কথা শুনে মেয়েটা আমাদের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে রইল।তারপর কাপা কাপা গলায় বলল…
—স..রি আপু…আমি আসলে জানতাম না যে ওর গার্লফ্রেন্ড আছে।
মেয়েটা চোখ মুছতে মুছতে বলল…
—মা..ফ করবেন।আপনাদের ডিস্টাব করার জন্য।এই বলে ও চলে যেতে নিলেই আমি ওর হাত ধরে বলল…
—আমরা কিন্তু আমাদের প্রশ্নের উওর পাই নি???
—আমি সুমাইয়া সুমা।
—আর….
মেয়েটা কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে।
জানু মেয়েটাকে বসিয়ে পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল…
—তুমি এই বান্দরকে পছন্দ কর???
ও কিছু না বলে মাথা নিচু করে রাখলো।
আহাদ ধমক দিয়ে বলল…
—ঐ তুই কি শুরু করেছিস।আর সুমু তুমি বাসায় যাও।
আহাদের কথা শুনে মেয়েটি আবার কাদতে লাগলো।আমি ওকে ধমক দিয়ে বললাম…
—চুপ শয়তান আর একটা কথাও বলবিনা।আর আমাদের মিস্টি ভাবির সাথে তো আরো আগে না।
আমার কথা শুনে মেয়েটি আমার দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো।আমি মিস্টি হেসে বললাম…
—আরে আমি তোমার শতীন না ননদ।আমরা ওর বেস্টফ্রেন্ড।
ও এখন আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।তাহিয়া মুচকি হেসে বলল…
—আমাদের আর কিছু বলতে হবে না।আমরা যা বুঝার বুঝে গেছি।আর আমি তাহিয়া আর ও মানহা।
মেয়েটি অবাক হয়ে আমাকে বলল…
—তুমি মানহা।মানে মানহা খান…
আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললাম।মেয়েটা আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে বলল…
—ভা…বি……
আমার সুইট কিউট ভাবি….
ভাইয়া যেমন বলেছে তার চেয়ে তুমি বাস্তবে দেখতে আরো বেশি সুন্দর।
সুমার কথা শুনে আমি হা করে রইলাম।আমি আবার ওর কোন কালের ভাবি হলাম!!!
_________________________
কেন্টিনে আমি আর তাহিয়া গালে,মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি।কি আর করবো একটু আগে সুমুর থেকে বেচারির পুরো লাভ স্টরি শুনেছি।সুমু মামুনির ছোট বোনের মেয়ে।সুমু আহাদ কে মামুনিদের বাসায় প্রথম দেখে আর সেখান থেকেই পরিচয়।সুমু কয়েক বার আহাদকে প্রপোজ করেছে কিন্তু ও বার বার সুমুকে ফিরিয়ে দিয়েছে।তার পরেও সুমু ওর পিছে আঠার মত লেগেই থাকতো।ওকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করতো আর বাড়িতে আসলে তো কোন কথাই নাই।কিন্তু এসবের কিছুই হারামিটা আমাদের জানায় নি।আর আরেকটা কথা মাথার মধ্যে বেশি ঘুরপাক খাচ্ছে ও আমাকে ভাবি বলল কেন???
আমাদের নিরবতা ভেংগে তাহিয়া কাদো কাদো শুরে বলল….
—বইন আমার জীবনে কি করলাম বলতো????
আমিও ওর মত করে বললাম….
—কি করুম বল!!!আমাদের কপালটাই খারাপ!!! জীবনে একটা গরুরেও তো নাকে দড়ি দিয়া ঘুরাইতে পারলাম না।
তাহিয়া আফসোস করে বলল….
—আরে…তুই তো তারপরেও একজন পাইছস নাকে দড়ি নিয়া ঘুরানোর।কিন্তু আমার কি হবে…
হায়…এই জীবন থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।(অভিনয় করে)
আমি ওর মাথায় একটা গাট্টা মেরে বললাম….
—যেইটারে পাইছি তারে আমি নাকে দড়ি দিয়া ঘুরাম না।উল্টো সেই আমারে নাকে দড়ি দিয়া ঘুরাইবো।তার পরে ওরে রাতের সব কথা বললাম।
আমার কথা শুনে ও হাসতে লাগলো।ওর হাসি দেখে আমি রেগে বললাম…
—ঐ এমন দাত দেখাইতাছোস কেন???তোর দাত যে হলুদ হইয়া রইছে তা মানুষরে দেখাইতে মন চাচ্ছে।
আমার কথা শেষ হতে না হতেই ও আমার পিঠে তাল ফালাতে লাগলো।আর সাথে তো বকা ফ্রি….
__________________________
হাসতে খেলতে কেটে গেছে কয়েক দিন।ঐ দিনের পর থেকে একদিন ও ঐ খচ্চরটা আমাকে একবার ফোন দেয়নি।আমারও ভালোই হয়েছে আমার আর কস্ট করে তাকে উল্টো পাল্টো কথা শুনাতে হয়নি।আর এই কয়দিনে আমি একটা নতুন রহস্য রহস্য গন্ধ পাচ্ছি।আর তা হল…..🤔
থাক ভুলে গেছি পরে বলব।😊
খাটে পা ঝুলিয়ে বসে এসব ভাবছি আর ললিপপ খাচ্ছি।এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল।তাকিয়ে দেখি জানু ফোন দিয়েছে।আমি কলটা রিসিভ করে বললাম…
—হ্যা জানু বল….
অপর পাশের মানুষের কথা শুনে আমার হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেল।আমার সারা দুনিয়া ঘুরতে লাগল।বসে থাকার শক্তিটুকু মনে হচ্ছে আমি পাচ্ছিনা।
#চলবে
#বেস্টু
#পর্ব_১২
#Ariyana_Nur
রাস্তা দিয়ে পাগলের মত দৌড়াচ্ছি।আশে পাশে সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।সেদিকে আমার কোন ভুক্ষেপ নাই।আমার একটাই চিন্তা কতক্ষনে আমি আমার গন্তব্যে পৌচ্ছাব।
তখন তাহিয়ার নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে আহাদ জানিয়েছে,তাহিয়া নাকি সুইসাইড করেছে।এটা শুনার পর আমার হাত থেকে মোবাইল পরে গিয়েছে।তারপর কাপা কাপা হাতে ফোন উঠিয়ে ওকে আবার ফোন দিয়ে জানতে পারি ও বাসাই আছে।
এটা শুনার পর আমি দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাই।আমার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে ও ঠিক আছে তো।
____________________________
তাহিয়াদের বাসা আমাদের বাসার সামনেই।১০মিনিটের মধ্যে ওদের বাসায় পৌচ্ছে গেলাম।আসার পর কলিং বেল বাজানোর পর তাহিয়া দরজা খুলে বলে সারপ্রাইজ…..
আমার কানে কোন কথাই ঢুকছেনা আমি ওকে জরিয়ে ধরে বললাম….
—জানু তুই ঠিক আছিস???তোর কিছু হয় নি তো??কেন সুইসাইড করেছিলি??কোন সমস্যা হলে আমাকে বলতি আমি সমাধান করে দিতাম।
আমি ওকে জরিয়ে ধরেই পাগলের মত এটা ওটা বলতেই আছি আর কান্না করছি।আমি যে কি বলছি তা আমি নিজেও জানি না।
আসলে আমাদের কাছের মানুষের কোন বিপদ হয়েছে শুনলে আমরা আমাদের হিতাহিত বিবেক বুদ্ধি হারিয়ে ফেলি।
তাহিয়া আমাকে ওর থেকে ছাড়িয়ে জোরে ধমক দিয়ে বলল….
—চুপ…
আর একটা কথা বললে লাগাবো একটা।ভালোভাবে চেয়ে দেখ আমি ঠিক আছি।
এতক্ষনে আমার হুস হল।ও যদি সুইসাইড করে তাহলে ও আমার সামনে কেন??আমি কাপা কাপা গলায় বললাম…
—তুই ঠিক আছিস!!তখন যে আহাদ বলল…..
আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি ওর উওর শুনার জন্য।ও কাচুমাচু করে বলল…
—আসলে আজ আমাদের সাথে আহাদের বন্ধুত্তের ৫বছর পূর্ণ হল।তাই আহাদ তকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ঐ কথা বলে এখানে এনেছে।তুই যে….
ও আর কিছু বলার আগেই ওর গালে একটা থাপ্পড় মারলাম।ও চুপ করে দাড়িয়ে আছে।আহাদ আমার সামনে এসে বলল…
—বেবি তুই….
ওকে আর কিছু বলতে না দিয়ে চিৎকার করে বললাম…
—চুপ…
কেউ আর একটাও কথা বলবিনা।কি মনে করিস তোরা আমাকে হ্যা…কি মনে করিস???
তোদের কোন ধারনা আছে ঐ কথাটা শুনার পর আমার অবস্থা কেমন হয়েছিল???যদি তোদের বিন্দু মাএ ধারনা থাকতো…
তাহিয়া আমার সামনে এসে বলল…
—বেবি তুই এতো হাইপার হচ্ছিস কেন???আরে আমরা তো মজা করছিলাম???
এই বলে আমার হাত ধরতে গেলে আমি সরে গেলাম।তারপর আবার চিৎকার করে বললাম…
—ছুবিনা আমায়।তুই আমাকে জিগ্গেস করছিস আমি কেন হাইপার হচ্ছি।হাহ্…তোদের তো আমাকে মানুষ মনে হয় না।আমি সবসময় তোকে বোনের চোখে দেখিছি।তুই আমার বেস্টু সাথে বোনও।আর সেই তুই আমার সাথে এমন করতে পারলি।তোর সুইসাইড এর কথা শুনে…
আমি একটু থেমে আবার বললাম….
—কি দেখতে চেয়েছিলি???বল কি দেখতে চেয়েছিলি???
তোর মরার খবর শুনে আমি নাচতে নাচতে আসবো তোদের বাড়িতে।তারপরে মেলোড্রামা করে একটু কাদবো।এটাইতো মনে করেছিলি না তোরা।তোদের যদি একবার আমার জায়গায় দাড় করাতে পারতাম তখন বুঝতি আমার তখন কেমন লেগেছিল।আমা….
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।আমার হাত পা কাপছে।মাথা ঘুরছে।আমি নিজের বেলেন্স আর রাখতে পারলাম না।মাথা ঘুরে পরে গেলাম।
জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে বিছানায় পাই।এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি ভাইয়া, নিহাদ ভাইয়া,ভাবি বসে আছে।আমাকে উঠে বসতে দেখে ভাবি আমার সামনে এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল…
—এখন কেমন লাগছে তোমার???
আমি আস্তে করে বললাম…
—ভালো।
ভাইয়া ভাবিকে বলল…
—নিধু যাও ওর জন্য কিছু খাবার নিয়ে আস।
ভাবি চলে যেতে নিলেই আমি বললাম….
—আমি খাব না।
আমার কথা শুনে ভাবি থেমে গেলেন।ভাইয়ার দিকে অসহায় ফেস করে তাকালেন।ভাইয়া চোখ দিয়ে ইশারা করে খাবার আনতে যেতে বলল।
_________________________
একটু আগে ভাইয়া আমায় জোর করে খাবার খাইয়ে দিয়েছে।খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে আমি ভাইয়াকে বললাম….
—ভাইয়া বাসায় যাবো।
ভাইয়া একটা লম্বা নিশ্বাস নিয়ে আমাকে বলল…
—তুই তো অবুঝ না বুড়ি মাফ করে দেনা ওদের।কতক্ষন ধরেই তো তোকে বলতেছি।
ভাবি আমার পাশে বসতে বসতে বলল…
—একদম মাফ করবেনা।এসব নিয়ে কেউ মজা করে।
ভাইয়া ভাবির দিকে তাকিয়ে বলল…
—তোমার আবার কি হল???কেন তুমি আবার আগুনে ঘৃ ঢালছো??
ভাবি রেগে বলল….
—কি…অমি আগুনে ঘৃ ঢালছি।ওরা যা করেছে তা তো খুব ভালো করেছে।
ভাইয়া ভাবিকে ইশারা করে চুপ থাকতে বলল।যা আমার চোখ থেকে এড়ালো না।একটু পর ভাইয়া আর ভাবি রুম থেকে বের হয়ে গেল।
তারা বের হওয়ার পর আমি বেড থেকে নামতে নিলেই নিহাদ ভাইয়া বলল…
—খবরদার বেড থেকে নামবিনা।যদি বেড থেকে নামিস তাহলে তোর জামাইর একদিন আর আমার যে কয়দিন লাগে।
আমি ওর কথা না শুনে বেড থেকে নেমে দরজার দিকে যেতে নিয়ে আবার মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলেই একজন ধরে ফেলে।আমি ভাইয়া মনে করে কথা না বলেই হাত সরাতে নিলেই খেলাম এক রাম ধমক।তিনি বললেন…
—একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাক স্টুপিট।সব সময় শুধু ঘাস ফড়িং এর মত ফরফর করে।
আমার আর বুঝতে সমস্যা হল না কে এটা।আমি সোজা হয়ে দাড়িয়ে নিহাদ ভাইয়ার দিকে রাগি চোখে তাকাতেই ভাইয়া একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল…
—বাহ্ কেয়া সিন হায়।আগে ফ্লিলমে দেখতাম হিরোইন পরে যাওয়ার আগে হিরো এসে ধরে ফেলে এখন তো বাস্তবে দেখতে পারছি।
উনি ভাইয়ার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলল…
—তোর জোকস শেষ হয়েছে এবার যা ভাগ এখান থেকে।
—ঐ শালা আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছিস কেন।তুই আবার আমার বো….
উনি ভাইয়ার দিকে রাগি লুকে তাকাতেই ভাইয়া থেমে গিয়ে একটা শুকনো ঢোক বলল…
—যাচ্ছি তো ভয় দেখাস কেন।বাচ্চা কা জান লেগা কেয়া।
উনি বিরবির করে বললেন…
—ড্রামাবাজ।যেমন ভাই তেমন বোন।
আমি শুনেও না শুনার ভান করে দাড়িয়ে রইলাম।আসলে এখন আমার কোন কথা বলার বিন্দু মাএ ইচ্ছা নাই।আর তার সাথে তো আমার কথার থেকে ঝগড়া বেশি হয়।
উনি আমাকে বেডে বসিয়ে দিয়ে আমার পাশে বসলেন।আমি তো ভিতরে ভিতরে দোয়া দুরুদ পরছি।তার যেই রাগ।কখন নাকি আমাকে উওম মধ্যম ধোলাই দেয়।তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে নরম সুরে বললেন…
—দেখ…ওরা যা করেছে আমি মানছি ওরা ভুল করেছে।ওরা তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আবেগের বসে এমন ভুল একটা কাজ করে ফেলেছে।অনেক সময় আমরা কাছের লোকদের মুখে হাসি ফুটাতে গিয়ে আমরা ভুল করে তাদের মনে আরো কষ্ট দিয়ে ফেলি।আমরা মনে করি তারা খুশি হবে।কিন্তু না…তাতে তারা আরো বেশি কষ্ট পায়।
ওরা পায় এক সপ্তাহ ধরে কিভাবে কি করবে তার প্লান করছে।তোমার পছন্দ মত সবকিছু ওরা সাজিয়েছে।এই সব কিছু করেছে তোমাকে খুশি করার জন্য।তুমি ওদের যতোটা ভালোবাসো আমার মনে হয় ওরাও তোমায় ততটা ভালোবাসে।আজ কাল সবাই মুখে মুখেই ফ্রেন্ড হয়।তোমাদের মত ফ্রেন্ডসিপ খুব কম দেখা যায়।তুমি জানো তুমি অজ্ঞান হওয়ার পর তাহিয়া কি পাগলামিটা করেছে।হাত কেটেছে ।ভাগ্য ভালো নিহাদ দেখে ফেলার কারনে বেশি কাটে নি।ওরা তো তোমার প্রিয়জন তুমি ওদের মাফ করে দাও।
আমি চোখ মুছে তার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বললাম….
—আমি যদি আপনার সাথে এমন মজা করতাম তখন আপনি কি করতেন???
তিনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
#চলবে
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ)