বেস্টু পর্ব-১৬+১৭

0
1811

#বেস্টু
#পর্ব_১৬
#Ariyana_Nur

ডয়িং রুমে পিনপনতা নিরবতা বিরাজ করছে।কারো মুখে কোন কথা নেই।আহাদ বসে বসে কান্না করছে।এই ছেলেকে যত দেখি তত অবাক হই আমি।ছেলে মানুষ হয়ে এতো কান্না করতে পারে ভাবা যায়…
এ তো ছেলেদের মান সম্মান সব ধুলোয় মিশিয়ে দিবে।ওর কান্না দেখে আরো কয়েকটা ঠাটিয়ে চর দিতে মন চাচ্ছে।হাফ লেডিস একটা।

আহাদ অসুস্থ তাই ওকে না জানিয়ে এ বাড়িতে এসেছি ওর সাথে দেখা করার জন‍্য।আর এসে দেখি দরজা খোলা।দরজার সামনে আসতেই আহাদ আর উনার কথা শুনে থমকে দাড়াই।তাদের কথাই বুঝা যাচ্ছে তারা পূর্ব পরিচিত।তাতেই আমার মাথা গরম হয়ে যায়।আহাদ একটা বারের জন‍্য বলল না আমাকে ও মিঃ খচ্চর এর পরিচিত।তার উপর ও বলছে ও আমাকে ধোকা দিয়েছে।তাই নিজের রাগ দমন করে না পেরে রাগটা ওর উপর ঝেড়েই ফেললাম।

নিরবতা ভেঙ্গে আমিই বললাম….
—ঐ তোর কান্না থামা।আর বল কেন এমন করলি??তুই আগে থাকতেই তাকে চিনতি তার পরেও কেন বলিস নি??? আমার সাথে এমন করলি কেন???আর কেন বললি তুই আমাকে ধোকা দিয়েছিস???

আহাদ নিজেকে সামলিয়ে বলল….

—দেখ আমি তোকে কিছু বলতে পারবো না।তাই প্লিজ আমাকে কিছু জিগ্যেস করিস না।

ওর কথা শুনে মাথা আরো গরম হয়ে গেল।আমি এবার চিৎকার করে বললাম….

—বলতে পারবো না মানে কি???তোকে তো আমাকে বলতেই হবে???আমি জানি তুই যা করেছিস আমার ভালোর জন‍্যেই করছিস।তোর উপর আমার এতটুকু বিশ্বাস আছে।দেখ আমার মাথা গরম করিস না।তুই আমারে চিনিস আমি কি করতে পারি।তারাতারি বল তা না হলে আমি কিন্তু উল্টাপাল্টা কিছু করবো।

ও আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে।কিছুই বলছেনা।তাই আমি আবার বললাম….

—বলবিনা ঠিক আছে তাহলে আমি আমার সাথে যা করবো তার জন‍্য নিজেরে দোষারোপ দিস না।আমি চলে যেতে নিলেই মিঃ আরহাম রাগি শুরে বলল….

—আর এক পা নড়নে পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো।তুমি যা শুনতে চাও তা আমি বলছি।

তার ধমকে আমিও চুপ করে বসে রইলাম।

তিনি বলতে লাগলেন….

—তোমাকে আমার কথা আমিই বলতে মানা করেছিলাম।যাতে তোমাকে আমি ঘোল খাওয়াতে পারি।কিন্তু তুমি যেই মেয়ে…

আমি কটমট করে তার দিকে তাকাতেই তিনি একটা ঢোক গিলে বললেন…

—যাই হোক তুমি সেদিন যেই ছেলেটার সাথে ঝামেলা করেছিলে সে হচ্ছে MCLকম্পানির মালিকের ছেলে।যে কিনা নিজের সার্থ‍্যের জন‍্য মানুষকে মারতেও ২য় বার ভাববে না।আর ওর তোমাদের কম্পানির উপর আগেই নজর পরেছিল।ও যে করেই হোক তোমাদের কম্পানি হাসিল করতে চেয়েছিল।তার উপরে আবার তুমি সেদিন রাস্তায় দাড়িয়ে ওকে অপমান করেছ।যেটা ওর ইগোতে লেগেছে।যেদিন জানতে পারে তুমি কে সেদিন থেকে ও তোমার পিছে লাগে।ও চেয়েছিল তোমাকে বিয়ে করে তোমাদের কম্পানি হাসিল করবে আর তোমার উপর বদলা নিবে।আর এই খবর জানার পরই আমরা সেদিন গিয়ে তোমাকে আংটি পরিয়ে দিয়ে আসি।কিন্তু তাতে ও শান্ত হয় নি।ও তোমাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করতে চেয়েছিল ।তাই তো….

এতটুকু বলে উনি থেমে গেলেন।আমি তাকে জিগ্গেস করলাম….

—তাই তো কি????

উনি একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললেন….
—তাই তো আমরা আহাদকে দিয়ে তোমার আর আমার রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করাই। তোমাকে হাজার বুঝালেও তো তুমি করতে না তাই।বিশ্বাস কর ও তোমার সাথে এমন করতে চায় নি।আমি নিহাদ মিলে ওকে অনেক কষ্টে রাজি করাই।আমরা ভেবেছিলাম তোমার বিয়ে হয়ে গেলে ও তোমার পিছু নিবে না।কিন্তু তারপরেও ওরা তোমার ক্ষতি করার জন‍্য উঠে পরে লেগেছে। আর আজ যা হল তাও ওদের প্লান ছিল তোমাকে মারার।ও তোমার ক্ষতি করতে চাচ্ছে।আমি বুঝিনা মানুষ নিজেদের ইগো আর সার্থ‍‍্যের জন‍্য এতো খারাপ কি করে হতে পারে।

আমার কান দিয়ে আর কোন কথাই মনে হচ্ছে ঢুকছে না।শুধু একটি কথাই ঘুরছে আমার বিয়ে হয়ে গেছে।

আমি থ মেরে কিছুক্ষন বসে রইলাম।তারপর আহাদের সামনে গিয়ে ওকে আরেকটা থাপ্পর লাগালাম।
আমি আহাদ কে থাপ্পর দিয়ে অঝরে কদতে লাগলাম।তারপর আমি কাদতে কাদতে কাপা কাপা গলায় বললাম….

—কে কেন… এমন করলি???

আহাদ এখনো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।ওর চোখ দিয়েও অঝরে পানি পরছে।

উনি আমার সামনে এসে বললেন….

—মানহা তুমি শান্ত হও।তুমি…

আমি চিৎকার দিয়ে বললাম….

—চুপ করুন….
আপনি আর একটাও কথা বলবেন না।আর আমি আপনার সাথে কথা বলছি না।
তারপর নিজের চোখের জল মুছে আবার আহাদকে জিগ্গেস করলাম…

কিরে বললিনা কেন এমন করলি???

আহাদ ওর চোখের পানি মুছে কাপা গলায় বলল…
—মা..নহা…

ওর মুখে আমার নাম শুনে আমি ওকে আরেকটা থাপ্পর মারলাম। আমি আমার চোখের জল মুছে বললাম…
—আমি আবার কবের থেকে তোর কাছে মানহা হয়ে গেলাম???

ও আমার দিকে জিগ্যেসু দৃষ্টিতে তাকাতেই আমি কাপা কাপা গলায় বললাম…

—আমি তোদের কাছে বেবি ছিলাম আছি আর থাকবো।কে কি বলবে তার জন‍্য আমার নাম ধরে ডাকতে হবে না।

ও কিছু না বলে হাটু গেড়ে বসে কাদতে লাগলো।আর বলতে লাগলো….
—আমাকে ক্ষমা করে দে।আমি পারিনি তোর বিশ্বাস রাখতে।আমি তোকে ধোকা দিয়েছি।প্লিজ….আমাকে ক্ষমা করে দে….

ও আবল তাবল বিলাপ করছে আর অঝরে কাদছে।আমি ওর সামনে বসে বললাম….

—এতোদিনে তুই এই চিনলি আমাকে????
কিছু একটু শুনবো আর তাতেই খেয়ালি পুলাউ বানিয়ে তোকে অবিশ্বাস করবো।আমি জানি তুই কেমন।আমার তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড+ভাই এর উপর পুরো বিশ্বাস আছে।তুই আর যাই করিস না কেন আমাকে কখনো ধোকা দিতে পারিস না।তুই যা করেছিস আমার ভালোর জন‍্য করেছিস।আমি নাক টেনে আবার বলতে লাগলাম….
আমার কস্ট হচ্ছে আমাকে না জানিয়ে তোরা আমার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিস।কিন্তু তার থেকে বেশি কস্ট হচ্ছে এটা যেনে যে তুই আমার জন‍্য মরতে মরতে বেচেছিস।তোর যদি কিছু হয়ে যেত জীবনেও আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না।

ও আমার দিকে কিছুক্ষন ছলছল চোখে তাকিয়ে থেকে আমাকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো।

#চলবে

#বেস্টু
#পর্ব_১৭
#Ariyana_Nur

“ছোট” এই একটা শব্দ আমার জীবনটা ভাজা ভাজা করে দিয়েছে।যেখানেই যেতে চাই,যাই করি বা করতে চাই সবার মুখে শুধু একটা কথাই তুই “ছোট”।তাদের মুখে এই ছোট ছোট শুনতে শুনতে মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আল্লাহ্ মনে হয় আমারে ভুল করে বড় বানিয়ে ফেলেছে।কিন্তু আজ এই ছোট শব্দটা আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লাগছে কেননা আমাদের বাড়িতে আমার ছোট একজন অতিথি আসছে।যার সাথে আমি মন প্রান খুলে আদর,ঝগড়া আর দুষ্টোমি করতে পারবো।ভাবতেই আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসছে।মানুষ নাকি বেশি খুশি হলে কাদে আজ তার প্রমান পেয়ে গেলাম।

“ভাবি প্রেগনেন্ট” কথাটা শুনার পর থেকে আমার খুশি আর দেখে কে।আমার খুশির কাছে সবার খুশি ফিকে পরে গেছে।আমার তো খুশিতে ভাবিকে নিয়ে নাচতে মন চাচ্ছে।কিন্তু ভাবিকে নিয়ে তো আর নাচতে পারবো না।😔

কলিং বেলের শব্দে তারাতারি দরজা খুলে সামনে মানুষটিকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগলাম….

—জানো আমি আজ অনেক অনেক খুশি হয়েছি।যা তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না।আমাকে কেউ ছোট ছোট হাত দিয়ে ছুবে।আমার সাথে আদো আদো গলায় ঝগড়া করবে।আমার সাথে খাবে,ঘুমাবে,খেলবে ইত‍্যাদি ইত‍্যাদি।আমার ভাবতেই চোখে পানি চলে আসছে।আর শুনো আমার বেবি কিন্তু আমাকে ঐ আন্টি ফান্টি বলে ডাকবে না।আমাকে মাম্মাম বলে ডাকবে।

আমি তাকে জরিয়ে ধরেই আবোল তাবোল বলেই যাচ্ছি।আমি যে কি বলছি তা আমি নিজেই জানি না।তার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে বললাম….
—ভাইয়া তুমি খুশি হও নি।কিছু বলছো না কেন।

—তুমি আমাকে যেই শক দিয়েছ আমি তো নিজেই কথা বলতে ভুলে গেছি।আর আমি তোমার ভাইয়া না সাইয়া…

তার ফিসফিসিয়ে কথা শুনে অমি ঝট করে তাকে ছেড়ে দিয়ে হা করে রইলাম।কেননা আমি ভাইয়া মনে করে যাকে জরিয়ে ধরেছিলাম সে ভাইয়া না মিঃ খচ্চর।আমি তো
তখন খুশির ঠেলায় নিজের মধ্যেই ছিলাম না।কালো কোট দেখেই ভাইয়া মনে করে জরিয়ে ধরেছি।চেহারাও দেখিনি।আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে পিছন থেকে নিহাদ ভাইয়া বলল….

—বুড়ি…আমার ভাইটারে আর নজর লাগাস না।এমনেই আমার ভাইয়ের উপর এক পেত্নীর নজর লাগছে যার জন‍্য আমার ভাই দিন দিন কেমন হইয়া যাইতাছে।

আমি ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে থেকে দরজা থেকে সরে আসলাম।

একটু পর নিহাদ,তাহিয়া আসতেই আমি তাহিয়াকে ধরে ঘুরতে লাগলাম।আর চিৎকার করতে লাগলাম।আমাদের খুশি দেখে কে।আমরা তিনজন তো ছোট বেবির খুশিতে নিজেরাই বেবি হয়ে গেছি।

ডয়িং রুমে বড়রা বসে সবাই গল্প করছে।আর আমরা সবাই আমার রুমে বসে আছি।গল্প করছি বললে ভুল হবে।সবাই আমাদের বকব বকর শুনছে।আমরা আমাদের কথার ঝুলি খুলে বসেছি।বেবির নাম কি রাখবো,ঘর কিভাবে সাজাবো কি কি লাগবে ইত‍্যাদি।

আমাদের কথার মাঝেই নিহাদ ভাইয়া বললেন….

—আরে থাম এবার।আমাদের কান আর পচাইস না।

আমি ভেংচি কেটে বললাম….
—ঐ তোমার সমস‍্যা হলে তুমি সরে যাও।

নিহাদ ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে বলল….
—তুই থামবি নাকি তখন যা করছিলি তা সবাইকে বলুম।

আমি তার দিকে কটমট করে তাকিয়ে থেকে বললাম…
—তোমার কষ্ট করে বলতে হবে না ধন‍্যবাদ।আর তোমার তাহুপাখিরে আমি তোমার গুনকির্তন শুনাই তা কি তুমি চাও???

নিহাদ ভাইয়া হাত জোর করে বলল…
—মাফ কর বইন তোর মত বদ,বাদর,বজ্জাত এর সাথে আমি পারুম না।আর লাগতেও যামু না।

আমি ভেংচি কেটে বললাম….
—মনে যেনো থাকে।

_____________________________

সাদের এক কোনায় দাড়িয়ে আছি।আমার সামনে হাত ভাজ করে দাড়িয়ে আছেন উনি।কারো মুখেই কোন কথা নেই।তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন….

—মানুষ জীবিত থাকতে মানুষের কদর থাকে না।তাই না….

তার কথার মর্ম আমি ঠিকই বুজতে পারলাম তারপরেও চুপ করে রইলাম।
কেননা সেদিন তাদের বাসার থেকে আসার পর তার সাথে আমি একটা বারের জন‍্য ও কথা বলি নি।
আমাকে চুপ থাকতে দেখে তিনি আবার বললেন…

—জ্বালিয়ে নেও আমাকে। বেশি করে জ্বালিয়ে নেও।যখন জ্বালানোর জন‍্য মানুষটাই থাকবে না তখন বুঝবে।

আমি কথাটা না বুঝে তার দিকে জিগ্যেসু দৃষ্টিতে তাকাতেই তিনি একটা মিস্টি হাসি দিয়ে চলে গেল।

আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কথাটা মনে মনে বলতে লাগলাম।তারপর আটোমেটিক আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল।আচ্ছা আমি কি বেশি বেশি করে ফেলছি???

নিহাদ আর তাহিয়া পাশাপাশি বসে আছে।
—তোমার কি মনে হয় আমরা যা করেছি বুড়ির সাথে তা ভুল করেছি????

নিহাদের কথা শুনে তাহিয়া ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলল…
—তোমরা তাই করেছ যা তোমাদের ঠিক মনে হয়েছে।আমাকে বার বার এক কথা কেন জিগ্গেস কর।

—তুমি কি রেগে আছো আমার উপর???

—রাগ করার কিছু নেই।যা হবার তা হয়েই গেলে।আমার কষ্ট লাগছে বেবির জন‍্য না জানি ও কত কষ্ট পেয়েছে।কিন্তু আমার বিশ্বাস সব কিছুই বেবি খুব তারাতারিই মেনে নিবে।

আহাদ দেখলো তাহিয়ার মন খারাপ করে বসে আছে।যতবার মানহার কথা বলেছে ততবারি তাহিয়া মন খারাপ করে থাকে।কেননা তাহিয়া কেন যেন মানহার সাথে এমন করা মেনে নিতে পারছে না।

তাহিয়া সব সময়ই মানহাকে আগলে রেখেছে নিজের ছোট বোনের মত।মানহাকে কেউ কষ্ট দিলে বা কটু কথা শুনালে তাদের ডিটারজেন ছাড়া এমনেই ধুয়ে দেয়।

আহাদ তাহিয়াকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল…
—বাদ দাও ও সব কথা।আল্লাহ যা করে ভালোর জন‍্যই করে।এবার বল তুমি তোমার ঔষধ ঠিক মত খাচ্ছ কিনা।

—হুম খাচ্ছি।

আহাদ তাহিয়ার মন ভালো করার জন‍্য বলল….
—আমার না আজ তোমাকে নিয়ে ফুচকা খেতে মন চাচ্ছে যাবে????

তাহিয়া খুশি হয়ে বলল…
— সত্যি….

—হুম…

—তাহলে বসে আছো কেন।তারাতারি চল।

নিহাদ মুচকি হেসে বলল..
—চল…

_________________________________

দুপুর বেলা ডয়িং রুমে বসে বসে টম এন্ড জেরি কাটুন দেখছি। কলিং বেলের শব্দ পেয়ে উঠে গিয়ে আমি দরজা খুলে দিলাম।দরজা খুলতেই আমি দেখি উনি রক্তাত্ব আবস্থায় পরে আছে।আমি তারাতারি বসে তার মাথাটা আমার কোলের মধ্যে নিয়ে তাকে জিগ্গেস করলাম….

—কি হয়েছে আপনার???আপনার এই অবস্থা হল কি করে???

তিনি কোন কথা না বলে এক ধ‍্যানে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি অঝরে কান্না করছি আর সবাইকে ডাকছি।

তিনি তার রক্তাত্ব হাতে আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললেন….

—কাদছো কেন তুমি???যখন সুস্থ ছিলাম তখন তো কথাই বলতে না।আর এখন মরার আগে আমার জন‍্য কাদছো।তুমি তো….

আমি তাকে কাদতে কাদতে ধমক দিয়ে বললাম….
—চুপ করুন আর একটাও উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না।কিচ্ছু হবে না আপনার।

তিনি মুচকি হেসে বললেন….
—মিথ‍্যা সান্ত্বনা দিও না মাহু।তুমি ভালো থেকো।আর প্লিজ আমাকে ভুলে যেও।আর একটা কথা যেটা বলা হয় নি।

—আপনি চুপ করুন আপনার কিছু হবে না।আমি আবার চিৎকার করে সবাইকে ডাকছি।কিন্তু আশ্চর্য ব‍্যপার আমার ডাকে কেউ আমার সামনে আসছে না।

তিনি তার কাপা কাপা হাত আমার গালে রেখে বললেন….
—মাহু আ…ই লা…লাভ….

তিনি আর কিছু বলতে পারলেন না।তার আগেই তার হাত আমার গাল থেকে পরে গেলো।

আমি চিৎকার দিয়ে বললাম….
—আরহাম…..

#চলবে

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন‍্যবাদ)