#বেস্টু
#পর্ব_১৯
#Ariyana_Nur
কালেজ গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।কেননা আজ নিহাদ ভাইয়া আমাদের ঘুরতে নিয়ে যাবে সাথে ট্রিট দিবে।এমন তেমন ট্রিট না আনলিমিটেড ফুচকা ট্রিট🤣
আমরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে গল্প করছি একটুপর দেখি নিহাদ ভাইয়া বাইক নিয়ে আমাদের সামনে আসলো।ভাইয়াকে দেখেই আমার মেজাজ টা গরম হয়ে গেল।এমনি আমি একাই বাইকে বসতে পারি না।তার উপরে আবার আমরা দুইজন।আমি ভাইয়ার দিকে কটমট করে তাকিয়ে বললাম…..
—ঐ তোমার কি মাথা গেছে।তুমি বাইক নিয়ে এসেছো কেন???আমি তোমার এই খাটারা বাইকে যাব না।
ভাইয়া হেলমেট খুলে বলল…
—ঐ আমার বাইককে খাটারা বলবি না।আর আমার বাইকে তোর যেতেও হবে না।
—তাহলে আমি যাব কিভাবে???
ভাইয়া হাত দিয়ে ইশারা করে বলল….
—সামনে তাকিয়ে দেখ।
আমি তো সামনে তাকিয়ে পুরো হা হয়ে গেলাম।কেননা তিনি পুরো হিরো স্টাইলে বাইক নিয়ে আমাদের সামনে আসলেন।আমি এখনো হা করে চেয়ে আছি।দিনদিন মনে হচ্ছে তিনি আরো সুন্দর হয়ে যাচ্ছে।তিনি আমার সামনে এসে চুটকি বাজাতেই আমার হুস এল। আমি নিজেকে সামলিয়ে ভাইয়াকে বললাম….
—এতই যখন তোমার আমাকে নিতে সমস্যা ছিল তাহলে বললে কেন আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে???
ভাইয়া অবাক হয়ে বলল…
—মানে???
—এখন মানে মানে করছো কেন।নিজে না নিতে পারলে না করে দিবে আরেক জনকে ভারা করতে গেছো কেন??
—ঐ আরেক জন কই তোর জামাইরেই তো খবর দিছি।তুই যেমনে বলছিস মনে হচ্ছে আমি তোর জামাই রাইখা অন্য কারোর সাথে যেতে বলছি।
আমি মুখ গোমরা করে বললাম….
—আমি যাব না।তোমরা যাও।আ….
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে উনি বললেন…
—নিহাদ গিরগিটি চিনস???
নিহাদ ভাইয়া একটু ভেবে বলল…
—হুম চিনি তো।দুদিন আগেও ক্রিশ 3 সিনেমায় দেখলাম।মাইয়া টা যেই সুন্দর।আম…
তাহিয়া ভাইয়ার দিকে কটমট করে তাকাতেই ভাইয়া চুপ করে রইল।
উনি আবার বলল…
—আরে শালা আমি তো সিনেমার গিরগিটির কথা বলি নাই।সামনে থাকতে তুই আতো দুরে যাস কেন।গিরগিটি যেমন খনে খনে রং বদলায় তোর বোন হইল তেমন।দুদিন আগে কি দরদ আমার জন্য আর আজকে আমাকে চিনেইনা।
আমি তেড়ে গিয়ে বললাম….
—আমি গিরগিটি না???খনে খনে রং বদলাই তাহলে যান না ভালো যে তার কাছে যান।আমাকে নিয়ে যেতে হবে না।
আমি চলে যেতে নিলেই তাহিয়া আমার হাত ধরে বলল…
—প্লিজ…বেবি এমন করিস না।তুই না গেলে আমাদেরও যাওয়া হবে না।
—তোরা যা আমি যাব না।
ও কাদো কাদো হয়ে বলল….
—তুই এটা কোন কথা বললি।তোকে ছাড়া আমি কখন গিয়েছি যে আজ যাব।
—আতো ভাব নিয় না।ঐদিন কে গেছিল ভাইয়ার সাথে ফুচকা ঠুসতে আমি??
ও মাসুম চেহারা বানিয়ে বলল….
—আরে ওটা তো এমনি একটু।প্লিজ চল।আর না করিস না।
ওর ওই মাসুম চেহারা দেখে আমি গলে গেলাম।আমি বিরক্ত হয়ে বললাম….
—ঠিক আছে যাব।কিন্তু আমি ভাইয়ার সাথে বসব।
উনি আমার দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে বলল…
—কোন কথা না বলে তারাতারি বাইকে উঠো।তানা হলে….
আমিও তার ধমকে সুরসুর করে তার তার বাইকে উঠে গেলাম।এই লোকটার রাগি চেহারা দেখলে কেন যে এতো ভয় পাই।আর যাই হোক পানিতে নেমে তো কুমিরের সাথে পারবো না।
______________________________
বিছানায় শুয়ে শুয়ে আজকের দিনের কথা মনে করছি।কেমন সব কিছু আমার জীবনে সপ্নের মত হয়ে গেল।মিস থেকে কিভাবে যে মিসেস হয়ে গেলাম তা বুঝতেই পারলাম না।আজ সারাদিন আমরা অনেক ঘুরাঘুরি করেছি। রাতে ভাইয়া আর উনি আমাকে বাসায় পৌছিয়ে দিয়ে গেছে।এতো হাসি খুশি এতো সুখ আল্লাহ্ আমার কপালে রেখেছেন এসব সইবে তো।ঘুরে ফিরে আমার সেই সপ্নের কথা মনে হয়।জানিনা ভাগ্যে আল্লাহ্ কি লিখেছেন।সবাই বলে বেশি হাসলে নাকি কাদতে হয়।আসলেই কি কথাটা সত্য????
____________________________
রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছি।একটু পর আহাদ হাপাতে হাপাতে সামনে এসে বলল….
—সরিরে..সুমুকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে আসতে গিয়ে দেরি হয়ে গেল।
—কোন সম্যসা নেই।এতোক্ষন জানু ছিল।ঐ ডাইরিয়ার রুগির সরীর অসুস্থ লাগছে তাই আমিই চলে যেতে বলছি।
ও হাসতে হাসতে বলল…
—হা হা হা তুই পারিস ও বটে।বেচারিরে ডাইবেডিসের রুগির থেকে ডাইরিয়ার রুগি বানিয়ে দিলি।
—আচ্ছা শোন…ভালোই তো আমার ননদীর সাথে ঘুরছো।কেউ যদি দেখে ফেলে তখন???
.
—বাহ্ বাহ্ আমার ভাইকে পাত্তা দেয় না আবার আসছে ননদী বলতে।
—হুহ বয়েই গেছে উনাকে পাত্তা দিতে।হুহ…
—ও…তাই….আর শুনেন মাই ডিয়ার ভাবীজী আপনার উনি না আমার আর সুমুর কথা জানে।আর তার পারমিসন পেয়েই আমি সুমুর সাথে যোগাযোগ রাখছি।
—বাহ্ বাহ্ কি সুন্দর কাহিনী।এমন ভাই তো ঘরে ঘরে থাকা দরকার।
ও ভাব নিয়ে বলল….
—আরে দেখতে হবে না ভাইটা কার।
ও কথা বলে দুজনি হাসতে লাগলাম।
আমরা কথা বলছি আর রাস্তা দিয়ে হাটছি।হঠাৎ করে আহাদ আমাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার অপর পাশে ফেলে দিল।আমি তাল সামলাতে না পেরে পরে গেলেম।সামনে তাকিয়ে যা দেখলাম তাতে আমার পুরো দুনিয়া ঘুরতে লাগলো।সামনে তাকিয়ে দেখি আহাদ মাটিতে রক্তাত্ব অবস্থায় পরে আছে।আমি কিছুক্ষন থ মেরে বসে থেকে চিৎকার দিয়ে বললাম….
—মনু…..
#চলবে