বেয়াইনের প্রেম পর্ব_০৬

0
869

#বেয়াইনের_প্রেম
পর্ব_০6
লেখাঃ নীল মাহমুদ (পিচ্চি পোলা)

৫ পার্টের পর থেকে।

কতটা ভিতু তা তো জানোই আজ আরো জানবে

তিশা কাওকে ভয় পায় না,, কি ই বা করবা তুমি

চলো চলো গেলেই বুঝবা

চলো দেখা যাক ভিতুর ডিম

তিশাকে সামনের সিটে বসিয়ে আমি গাড়ী চালানো শুরু করলাম। আমি কিছুক্ষণ পর পর তিশা কে দেখছি,, কি অপরুপ সুন্দরী মেয়ে,, গাড়ীর জানালা খোলা থাকায় বাতাসে ওর লাল কালো রেশমি চুলগুলো উড়ছে এলোমেলো হয়ে,,, হটাতই গাড়ী ব্রেক করলাম,,,

কি হলো,, গাড়ী থামালে কেন

তোমার সমস্যা কি বলোতো?? আমাকে ঠিকমত গাড়ীও চালাতে দিবা না??

আমি আবার কি করলাম শুনি

তোমার ওই উড়ুক্কু চুলের মায়ায় আমার গাড়ী চালাতে সমস্যা করছে,,,

হাহাহা,, আমাকে পটানোর চেষ্টা করে লাভ নেই

পটাবো কেন,, তুমি তো পটে বসে আছো

ওলে বাবালে তাই নাকি

হুমম সেটা তো প্রমান করলে আজ

কিভাবে শুনি

কেন সিমির কথা শুনে আম্মুকে ডেকে আনলে

ওহহহহ ওয়েট ওয়েট,,, ভুলেই গিয়েছিলাম এই সিমি টা কে?? সত্যি করে বলো

হবে কেউ একজন

আমি জানতে চাইছি সত্যি টা বলো,, তুমি কি সিমিকে ভালোবাসো

তাতে তোমার কি তুমি তো আর পটবে না নীলের কথায় তাইনা

কথাটা বলতে দেরী আছে কিন্তু তিশার তেড়ে এসে আমাকে চিমটি আর খামচি দিতে দেরী হলো না

তুমি না বললে আমি এখনই গাড়ী থেকে নেমে চলে যাব

আরে সিমিটা কে আমি নিজেও জানিনা,,, তোমার ওড়না দেখে রাগানোর জন্য তখন সিমি নামটা ধরে কথা বলেছিলাম হিহিহিহি

কি???????? আমাকে বোকা বানানো?? এত বড় সাহস,,, আমি যাব না তোমার সাথে,,,

তিশা গাড়ী থেকে নেমে দাড়ালো,, আমি ওর সামনে গিয়ে বললাম

এই যে ম্যাডাম এত রাগছেন কেন শুনি?? আপনি তো বলেছিলেন যাবেন না আমার সাথে আবার সিমির কথা শুনে আম্মুকে ডেকে আনলেন কেন?? কেন এমনটা করছেন তা কি আমি বুঝিনা ভাবছেন??

আমি বললাম বলে কি অন্য কারো সাথে যেতে হবে??

আজিব অন্য কেউ কি আছে নাকি??

থাক আমাকে বুঝাতে হবে না,, আজ হয়তো আমি ছিলাম নাহলে ঠিকই অন্য কারো সাথে যেতে তুমি

সবসময় উল্টা বুঝো কেন হুমম?? মেয়েদের স্বভাব টাই এমন

ঠিকই বুঝি যাও সিমির সাথে যাও তুমি,,, ( তিশা মনটা গোমরা করে মাথা নিচু করে আছে)

আমি তিশার থুতনিতে হাত রেখে মুখটা একটু উচু করে বললাম

একটা সুন্দরী রাগী ঝাল মেয়েকে জ্বালানোর জন্য এতটুকু করেছি সেজন্য তো জানতে পারলাম সে আমাকে কতটা ভালোবাসে

একটুও ভালোবাসি না তোমাকে তুমি খুব পচা

পচা ছেলের জন্যই তো এখন মন খারাপ করে আছো

তিশা আমার দিকে মুখটাকে মলিন করে তাকালো,, আমি আবার প্রেমে পড়ে গেলাম

এই পচা মেয়ে আমার দিকে এভাবে তাকাবে না,,, আমি তোমাকে আজ টাইট দিতে এনেছি এমন করে তাকালে আর টাইট দিতে পারব না,,

একথা শুনে তিশা হেসে দিলো,, মন খোলা হাসি
একপলকে দেখছি তাকিয়ে। তিশা গাড়ীতে গিয়ে বসলো। আমিও গেলাম

শুনো একটা কথা বলব

হুমম বলো

ধরো আজ আমি একা,, তুমি আমার কি ক্ষতি করতে চাও শুনি

কি আর করব

আচ্ছা তুমি যা ইচ্ছে হয় করতে পারো

তিশা,, তোমার ক্ষতি করার ইচ্ছে থাকলে তো বাসায় করতে পারি বাইরে এসে কেন করব?? আসলে তোমার সাথে খুনসুটি করতে খুব ভালো লাগে
জানো তুমি যেদিন আমার নাজেহাল অবস্থা করেছিলে সেদিন খুব হেসেছি সারারাত তোমার পাগলামির জন্য,,

কিন্তু তুমি কি জানো তুমি যেদিন আমাকে ওইটা দিলে সারারাত ঘুমাতে পারিনি আমি। প্রথম একটা ছেলে আমাকে এভাবে কিস করলো তাও আমার রুমে এসে।

কেমন লেগেছিল তখন

বলে হয়তো বুঝাতে পারব না তবে কিছু একটা হয়েছিল

কি হয়েছিল

তিশা আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,, হটাত আমার কলার টেনে ওর ঠোটগুলো আমার ঠোঁটে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে, আমি ও অবাক হয়ে চোখ বন্ধ করে ওর ঠোটে ভালবাসার রেখা খুজতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। বেশ কিছু সময় পর,,

তোমার এখন যেমন হচ্ছে ঠিক আমারও এমনটাই হয়েছিলো বেয়াই ( হাঁপাতে হাঁপাতে বললো)

এভাবে কিস করলে কিন্ত আজই বিয়ে করে ফেলব (হাঁপিয়ে বললাম)

আমার এত শখ নেই তোমার বাড়িতে এসে সংসার করার, একবাড়ি দুই বোনের সংসার হলে সমস্যা হবে।

মানে কিসের সমস্যা শুনি

বড়রা বলে

কচু হবে

খাও গিয়ে তুমি আমি বিয়ে করব না তোমাকে

তাহলে আমাকে এভাবে কিস করলে কেন

পাওনা মেটালাম

ওরে হারামি আজ তোমাকে ছাড়বো না

এখানেই থাকবা নাকি আমাকে একটু ঘুরাবা তোমার এলাকায়

ওকে ওকে চলো

তিশা জানালায় তাকিয়ে মুচকি হাসছে,,, আমি গাড়ী নিয়ে চলে এলাম একটা রেস্টুরেন্টে। ভিতরে গিয়ে ছোট একটা টেবিলে বসলাম আশেপাশে তেমন কেউ নেই, নিরিবিলি। আমি ফোন বের করে তিশার কিছু ছবি তুললাম। তারপর ওর পছন্দ মত সবকিছু অর্ডার করে খেয়ে বাইরে এলাম।

ওর জন্য কিছু গিফট কিনে ওকে দিলাম। একটা গোলাপি লিপস্টিক কিনে ওকে কানে কানে বললাম এটার স্বাদটা রাতে নিব,,, শুনেই আমাকে একটা চিমটি দিলো তিশা,,,

অনেক মজা করলাম দুজন,, হাসি ঠাট্টা খুনসুটি।। ওর চিমটি আর কিল খেতে খেতে শরীরটা বেথা হয়ে গেছে আমার। একটু পর ভাবীর ফোন এলো

কি গো দেবর আমার কোথায় তোমরা

এইতো ভাবী মার্কেটে আছি

আমার বোনটা কই ওকে একটু দাও

তিশার দিকে ফোনটা এগিয়ে দিলাম

হুমম আপু বলো

কি রে কি করছিস তোরা

তোমার দেবর তার সিমির জন্য কি কি গিফট কিনবে তাই আমাকে নিয়ে মার্কেটে এলো,, আজাইরা ঝামেলা একটা

শুনেই তিশাকে খোচাতে লাগলাম

ভালো তো আসবি কখন তোরা

এইতো হয়ে গেছে এখনি আসব

আচ্ছা সাবধানে আসিস

আচ্ছা আপু

ওই আমি সিমির জন্য কিনলাম এগুলো

তা তুমি জানো আমি কি করে বলব

চলো বাসায় তারপর বুঝাবো

কচু কইরো

তারপর দুজন গাড়ীতে গিয়ে বসলাম। তিশা আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,

কি দেখছো এভাবে

কিছু না

প্রেমে পড়লে এমন করেই দেখে সবাই

বয়েই গেছে আমার

কিছু সময় পর বাসায় এলাম গাড়ী থেকে নামার আগে তিশা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো

সারাজীবন পাশে থাকবে আমার

এই পাগলি,, ভালোবাসার মানুষকে কেউ ছেড়ে যায় নাকি,,, আমি সবসময় তোমার পাশে থাকব

জানো আজ তোমার সাথে কাটানো এই সময়টাতে আমার খুব ভালো লেগেছে খুব আনন্দে ছিলাম। একটা অজানা ভালো লাগা ছিল পুরো সময়টাতে। জানিনা তোমার মাঝে কি আছে, সত্যি পাগল করে দিছো আমাকে,, আমি বাসায় গেলে তোমাকে ছাড়া কি করে থাকবো জানিনা,,, অনেক কষ্ট হবে আমার।।

তিশার গলাটা ভারী হয়ে গেছে,, চোখে দুফোঁটা জল,,

তিশা,,, এভাবে বলছো কেন?? তোমার একার কষ্ট হবে আমার কি হবে না??

আমি কাছে না থাকলে অন্য কারো সাথে ঘুরতে যাবা নাতো??

ধুররর কি বলো এসব,, নীল শুধু তিশার হয়েই থাকবে অন্য কারো নয়

প্রমিজ করো

প্রমিজ,,, তিশার কপালে একটা চুমু দিয়ে কানে কানে বললাম

এবার আমাকে ছাড়ো,, বাসার সামনে আছি কেউ দেখলে কি হবে ভাবো একবার,,,

আগে একটা পাপ্পি দাও তারপর ছাড়বো

পারব না,, তোমার ওই পচা ঠোঁটে পাপ্পি দিব না

কি বললে তুমি?? আমার পচা ঠোট?? ওকে আমিও আর দিব না,,,

তিশা হনহনিয়ে চলে গেলো আমি হাসছি

গাড়ীটা গ্যারেজে রেখে একটু পর রুমে যেতেই ভাবী আর আম্মু এলো

কি রে কেমন ঘুরালি আমার মামনি কে নিয়ে

হুমমম অনেক জায়গায় ঘুরছি আমরা যা যা খেতে চাইছে সব খাওয়াইছি,, গিফট ও দিছি,,

যাক ভাল হইছে। ফ্রেশ হয়ে আয় এখন

আচ্ছা।

রাতে খাওয়ার পর তিশার রুমের সামনে যেতেই ধপাস করে দরজা বন্ধ করে দিলো রাগ করে। বেচারী এখনো রেগে আছে,,, আমি জানালার কাছে গিয়ে বললাম

তিশা রাগ করো না প্লিজ,, এমনি মজা করে বলেছিলাম তখন,,, দরজাটা খুলো প্লিজ

কোন কথা নাই তোমার সাথে যাও এখান থেকে

না যাব না

তিশা এবার জানালাটাও আটকে দিলো। কিছু সময় ডাকাডাকি করে ও কাজ হলো না। মন খারাপ করে চলে এলাম।

কেন যে ওটা বলতে গেলাম,, একটা পাপ্পি দিলে কি এমন হতো?? ও নিজে থেকে ই তো চাইল তবুও দিলাম না,,, ভুল করে ফেলছি। মেয়েটা কষ্ট পেলো। কাল যে করেই হোক ওর রাগ ভাঙ্গাতে হবে।

এসব ভাবতে ভাবতে ঘুম এসে গেলো। গভীর রাতে হটাত কারো কোমল হাতের ছোয়া পেয়ে ধড়ফড়িয়ে উঠলাম..

মোবাইলে আলোটা জালাতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো,,,

তিশা তুমি আমার রুমে এত রাতে??

চুপপপপ একটা কথা বলবা না

কেউ দেখে ফেললে বিপদ হবে তো

দেখলে আমি চিতকার করে বলব তুমি জোর করে আমাকে ধরে নিয়ে আসছো

এএএএএএহহহ মানে কি এসবের?? আমি তো কিছু করিনি,,,, এসব কেন বলছো?? কোথায় আমি তোমাকে টাইট দিব তা না উল্টো তুমি আমাকে টাইট দিচ্ছো

চুপ করতে বলছি কিন্তু

আচ্ছা এই যে চুপ,,,

আবছা আলোয় তিশার মুখটা খুব মায়াবী লাগছিল চুলগুলো সামনে ঝুকে আছে,, আমি হাত দিয়ে চুল গুলো সরিয়ে দিলাম,,, ওর চোখে চোখ রেখে অপলক তাকিয়ে আছি,,, এমন পরিস্থিতি সামলে নিতে কষ্ট হবে জেনেও কেন জানি কিছু একটা মন চাইছে,,

হয়তো ভুল তবুও যেন ভুল নয়,,, একটা চাহিদা,, মনের ভেতর থেকে জেগে ওঠা চাহিদা যা পরে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। মন থেকে না চাইলে কি শরীরে যায়??

জানিনা এতসব ,, শুধু জানি ভালোবাসি,, একে অন্যকে চাই,, খুব কাছে,, নিভৃতে অনুভবে মিশে যেতে চাই।

মোবাইলে আলোটা নিভিয়ে দিলাম। তিশাকে একটানে আমার বুকের ওপর নিয়ে জড়িয়ে ধরে একজন আরেকজনের হার্টবিট শুনছি। এই অনুভুতি টা সত্যি সবকিছু থেকে আলাদা,, এতটা ভালোবাসা এভাবে থাকার বলে বুঝানো যাবে না। ।।

তিশা একটু পর আমার লোমওয়ালা বুকে একটা কিস করলো,,, কানের কাছে এসে বললো,,

নীল আজ আমি তোমার হতে চাই।

আমি তিশার কপালে চুমু দিয়ে বললাম

আমার করে নিয়েছি অনেক আগেই কিন্তু অধিকার খাটাবো বিয়ের পর এর আগে নয়।

আমি এতকিছু বুঝিনা,,, আজ আমি তোমার সাথে মিশে যেতে চাই

তিশা পাগলামি করো না,,, বুঝার চেষ্টা করো

আমি কিছু বুঝতে চাইনা,,, মুখে যতই দুষ্টামি ফাজলামি করি কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু করব না আমি।।

তিশা আমাকে জড়িয়ে ধরে লিপকিস করতে লাগলো আমিও এতটুকুই সাড়া দিলাম তবে এর বেশি নয়।

এরপর তিশার দিকে তাকিয়ে বললাম

এখন রুমে যাও প্লিজ কেউ দেখলে খারাপ ভাববে দুজনকে

তিশা হটাত বসে পড়লো আর চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু সময় পর,,,

নীল,, আমি তোমাকে আজ এখানে পরীক্ষা করতে এসেছিলাম,, একটা মেয়েকে রাতের আঁধারে পেয়ে তার কোন ক্ষতি তুমি করোনি,, তোমার চিন্তা ভাবনাটা আলাদা,,, আমি সত্যি খুব লাকি তোমার মত কাওকে পেয়েছি। এখন আমি আস্থা রাখতে পারি,, তুমি কোন মেয়ের সাথে কখনো এসব কিছু করবে না একা পেলেও। এটাই বিশ্বাস।

এটা বলেই তিশা আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি ও জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি।

বেশ কিছু সময় এভাবে থাকার পর কখন যে ঘুমিয়ে গেছি কেউই জানিনা।

ফজরের আযানের সময় আম্মু উঠে ওযু করতে গিয়ে আমার রুমের সামনে এসে দেখে তিশা আমার বুকের ওপর জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। আম্মু তো অবাক হয়ে গেছে এমন কিছু দেখে। আজ মনে হয় আমার রক্ষা নেই। আস্তে করে আমার রুমে ঢুকে তিশা আর আমাকে ডাকতেই হুশ ফিরলো। আম্মু র সামনে এখন কি বলব কি করব কিছু ই বুঝতে পারছিনা।

এসব কি হচ্ছে নীল

আম্মু বিশ্বাস করো আমরা এমন কিছু করিনি যার জন্য মানসম্মান নষ্ট হবে। আমি তিশাকে খুব ভালোবাসি ও রাতে এসেছিল কথা বলবে বলে তার পর ঘুমায় গেছি দুজনে।

আম্মু আর কোন কথা না বলে তিশাকে নিয়ে গেলো,, আমি তো টেনশনে শেষ।

সকালে খাবার টেবিলে যেতেই ভাবী যেন কেমন কেমন করে তাকাচ্ছে। আম্মুও মুখটা গোমড়া করে আছে। কিছুই ভালো লাগছে না। তিশাও চুপ করে আছে আমার দিকে তাকাচ্ছে না। আম্মু কি যেন বলেছে হয়তো বকা দিছে। কোনরকম কিছু খেয়ে আম্মু কে গিয়ে বললাম

আম্মু তুমি রাগ করে থেকো না প্লিজ

হটাত তিশাও এলো আম্মু র রুমে

আম্মু কে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলাম

সাথে তিশাও শুরু করলো

সে এক মহামারী পরিস্থিতি। আম্মু ঠাসস করে এক থাপ্পড় বসিয়ে বললো

আমার ছেলে কোনদিন কোনকিছু লুকায়না সবকথা বলে আর ছেলে আমার প্রেম করছে এত ভাল কথাটাই আমি জানলাম না। বাহহহহ,, এজন্যই বলে ছেলেদের জীবনে কোন মেয়ে এলেই মায়ের মুল্য কমে যায়।

একথা শুনে আমার খুব খারাপ লাগলো

আম্মু আমি তোমাকে সব বলতাম আজ কিন্তু তার আগেই তুমি জেনে গেছো। তোমার স্থান সবার ওপরে কারো জন্য তোমার অমর্যাদা করব না। আর তিশা তো এমন মেয়ে নয়। আমাকে ক্ষমা করে দাও।

আম্মুর পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চাইলাম। সাথে তিশাও।

আম্মু দুজনকে উঠিয়ে বুকে টেনে নিলো।

আমার পাগলগুলো খুব ভয় পেয়ে গেছে আমি জানি। আমি রাগ করিনি,, তোর আব্বু কে কালই বলেছিলাম তিশার বেপারে। আজ সকালে গিয়ে দেখি প্রেম করতে করতে ঘুমিয়ে গেছে দুজন। হায়রে পাগল

আন্টি তোমার নাকবোচা শয়তান ছেলে আমাকে ছাড়েনি আমি চলে আসতে চাইছিলাম।

আমি তিশাকে চিমটি দিতে দিতে বললাম

মিথ্যা কথা বলবা না আমি যেতে বলছিলাম তুমিই যাওনি।

আচ্ছা থাক আর ঝগড়া করতে হবে না। আমি আজই তিশার আম্মু আব্বু কে আসতে বলব।

খুশিতে দুজন আম্মুকে চুমু দিলাম।

আম্মু চলে গেলো,,, তিশার দিকে তাকিয়ে আছি আমি

আচ্ছা আজই বিয়ে দিবে নাকি আমাদের

পাগল নাকি কিসের বিয়ে,, আমি এখন বিয়ে করব না,, ৫ বছর পর বিয়ে করব

এতদিন কি আঙ্গুল চুষব নাকি

পারলে তাই করো,, আমার পড়াশোনা শেষ করে তারপর এসব।

তাহলে প্রতিদিন একটা করে পাপ্পি দিও

সেটা পরে দেখা যাবে। এখন যাও আমার সামনে থেকে,, লজ্জা শরম কি কিছু নাই নাকি

তোমার ই তো নাই,, আবার আমাকে বলে

সব তোমার দোষ

তোমার জন্য আম্মু আমাকে এভাবে বললো

হইছে হইছে সরো

আজ রাতেও আইসো তাহলে,, আম্মু তো জেনেই গেছে

আহারে কত শখ লুচ্চা একটা

লুচ্চামি কি করছি নাকি?? আর তুমি আমাকে এটা বলতে পারলে?? ঠিক আছে যাও তোমার সামনেই আর আসব না।।

চলে এলাম ওর থেকে,,, তিশাকে একটু রাগানোর জন্য বাসা থেকে বের হলাম আর বিকেলে বাসায় এলাম,, অনেকবার কল দিছে একবারও ধরিনি,,,

যখন বাসায় এলাম ভাবী তো রেগে আগুন হয়ে আছে

আমার পিচ্চি বোনটাকে কাদানোর ফল ভালো হবে না,, সারাদিন কেঁদেছে তাড়াতাড়ি যাও আগে রাগ ভাঙ্গাও

আমি কাচুমাচু হয়ে বললাম

যাচ্ছি যাচ্ছি

তিশার রুমের সামনে গিয়ে দেখি বিছানায় উল্টো হয়ে শুয়ে বালিশে মুখ গুজে কাদছে ফুপিয়ে ফুপিয়ে
ওর পাশে গিয়ে বসলাম

তিশা,,, তিশা,,,

আমার ডাক শুনেই তিশা মুখ ঘুরিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যেতে চাইলো,, আমি ওর হাতটা ধরে জোরে টান দিয়ে আমার বুকের ওপর জড়িয়ে রাখলাম,, কানের কাছে ফিসফিস করে বললাম

পাগলিটা কে রাগাতে একটু অভিমান করলাম আর সে সারাদিন কেদে কেদে চোখমুখ ফুলিয়ে ফেলছে,, সরি সুইটহার্ট,, আর কখনো কষ্ট দিব না।

তুমি শুধু আমাকে কষ্ট দাও,, কি এমন বলেছি যার জন্য সারাদিন এভাবে অবহেলা করলে?? কতবার ফোন দিছি একটাবার কথা বললে না,,, তোমার কাছে আমার কোন মুল্যই নাই।

এইযে তোমার কান ধরে বলছি আর এমন হবে না

শয়তান উল্লুক নিজের কান ধরো আমারটা কেন

আমি মানেই তো তুমি তাই তোমার টাই ধরলাম
I love u so much…

I Hate u hate u..

তিশার চোখের পানি পড়ছে,, আমি ওর চোখটা মুছে দিয়ে বললাম

তোমার চোখের পানি আমার জন্য অভিশাপ হয়ে যাবে প্লিজ আর কেদোনা। আমি আর কষ্ট দিব না।

সত্যি তো

হুমম পাগলি।

তাহলে পাপ্পি দাও

তিশাকে বিছানার উপর রেখে ওর কপালে চুমু দিলাম,,,

হটাত রুমে ভাবী এসে দেখে এ দৃশ্য,,

খকখক করে কাশি দিয়ে বললো

আর কয়টাদিন কি সবুর করা যায় না???

….. #চলবে