বিয়ে ঠিক হউয়ার পর থেকেই মেয়েটা আমাকে জ্বালাচ্ছে। আমি চাচ্ছি বিয়ে আটকাতে আর সে পারলে আজকেই আমাকে বিয়ে করে ফেলে। কিভাবে যে আটকাবো তাই বুঝতে পারছিনা। পাত্রী আম্মুর ছোট বেলার সই এর মেয়ে। মেয়ে দেখতে অসুন্দর ঠিক তা না। কিন্তু এমন গেছো টাইপ মেয়ে দেখলেই আমার কানের নিচে দিতে ইচ্ছা করে। ভাবতে ভাবতেই ফোন বেজে উঠলো
-হ্যালো
-এই ভদ্রলোক আপনার সমস্যা কি???? ফোন ধরেন না ক্যান?
-ভাষা ঠিক করো। এত্তো ছোট মেয়ে তুমি তোমার কয় বছরের বড় আমি জানো?
-তো? কি হয়েছে? বড় বলে কি জি হুজুর জি হুজুর করবো?
-ফোন করেছো ক্যানো?( তীক্ষ্ণ গলায়)
-ক্যানো মানে? প্রেম করতে ফোন দিলাম। দুই দিন পর বিয়ে আর কি প্রেম করা যাবে? বিয়ের আগের প্রেম এ অন্য এক আনন্দ আছে । বুঝলেন কাটখোট্টা?
-এই মেয়ে ফোন রাখো বলছি। বেয়াদব মেয়ে। ফোন দিবানা আর আমাকে?
-আচ্ছা রাগ হচ্ছেন কেন? আরে শোনেন না, বিয়ের পর আমায় কি ডাকবেন? জান নাকি পাখি? বলেই খিলখিলিয়ে হাসা শুরু করলো রুহি।
রাগে আর কিচ্ছু বলতে পারলো না আদি। ফোনের লাইন কেটে ঝিম মেরে বসে রইলো।
রুহি মোটামুটি লম্বা চিকন গরনের কোকড়ানো লম্বা চুল প্রচন্ড এক রোখা টাইপের মেয়ে। মাত্র ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পরে। নাকের ডগায় তার গার তিলের সাথে সাথে রাগ টা ও পাল্লা দিয়ে ছুটে। সারা দিন বাসায় হইচই নাচ গান নিয়ে মেতে থাকে। আর অন্যদিকে আদি! মোটা ফ্রেমের চশমা নিয়ে সারাদিন বইয়ে ডুবে থাকে। এই বয়সে সবাই আড্ডা প্রেম গান কবিতা নিয়ে থাকে অথচ এই ছেলে সারা দিন গম্ভীর হয়ে ভাবতে থাকে। আর এই গম্ভীর ছেলেটাকেই বিয়ে করবে বলে রুহি বায়না ধরে বসে আছে। আর যেই কথা রুহির মায়ের ও সেই কাজ। বান্ধবী কে বলার সাথে সাথেই আদির মা ও সেই কথায় নাচা শুরু করলো।
আদি মাত্র অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ছে। দেখতে গোলগাল। ভদ্র আর স্মার্ট। এ সময় বিয়ে মানেই তার জন্য ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন নস্ট। আর এমন চটাং চটাং টাইপের মেয়ে তো একেবারেই সহ্য সীমার বাইরে। নিতান্তই মায়ের বাধ্য ছেলে বলেই আদি রাজি হয়েছে। কথা ছিলো ও অনার্স পাস করে বিয়ে হবে। কিন্তু রুহি বিয়ে করবে বলে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে বসে রইলো। তাই ঠিক হলো ১ মাস পরেই বিয়ে। আর তাতে রুহির খুশি দেখে কে!!
দুপুর গড়িয়ে বিকেল কেবল হলো। দুপুরের ভাত ঘুমের পর উঠে ফ্রেশ হয়ে এসেই ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো আদি।
-তুমি? আমার ঘরে।
আসমানী রংয়ের শাড়ি পড়ে পা ঝুলিয়ে বসে বসে পেয়ারা খাচ্ছিলো রুহি। পা নাচাতে নাচাতেই উত্তর করলো,
কেনো গো? তোমার ঘরে কি অন্য কেউ থাকার কথা?
-আবল তাবল কম বকো আর প্লিজ আমার রুম থেকে যাও।
-যা আআআবো না। কি হবে শুনি?
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
মা মা চিত্কার করে ডাকতে লাগলো আদি। আসমা সুলতানা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো ছেলের ঘরে।
কি কি হয়েছে বাবা?
-মা এই গেছো টা কে যেতে বলো।
-গেছো কাকে বলছিস? ও তো তোর হবু বউ রুহি।
-মা প্লিজ। তোমাদের পাগলামির জন্য আমি কত টিজ শুনবো জানো? বন্ধু বান্ধব ইভেন বড় ভাইয়েরাও টিজ করে কথা বলবে। যেখানে পড়ালেখা নিয়ে সবাই বিজি সেখানে আমি বিয়ে করবো আবার এমন একটা গেছো মেয়ে কে , যার কথা বলার ধরন চাল চলন সবই উরনচন্ডী টাইপ। বিয়ে করতে রাজি হয়েছি যেই না তার অত্যাচার শুরু। বোঝে কিছু? তার প্রতি আমি কতটা বিরক্ত!
-আদি বাবা শোন, আসমা বেগম কিছু একটা বলার আগেই আদি চিৎকার করে বলে দিলো,
-প্লিজ দুই জন ই যাও এক্ষুনি। প্লিজ।
এত কথা শোনার প্রিপারেশন মোটেও রুহির ছিলো না। আজ দিন টা তার জন্য অনেক স্পেশাল। তাই আদির সাথে ঘুরতে যাবে বলেই আসলো। কিন্তু এত কথা শুনতে হবে কখনো ভাবেনি। চুপ চাপ রুম ত্যাগ করার সময় ছোট্ট করে সরি বলতেও ভুলেনি রুহি।
চলবে?
#ভালবাসা কেবল শুরু
#১ম পর্ব
#নীলকন্ঠী