ভালোবেসে ফেলেছি পর্ব-২৬+২৭

0
2523

#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 26
writer : Mohona

.

দহন : হ্যালো বাপি…
দীপন : দহন…
দহন : তোমার কন্ঠ এমন লাগছে কেন? কি হয়েছে?
দীপন : বাসায় আসো।
দহন : বাসায়…. মামনি-মনি ঠিক আছে তো?
দীপন : হামম ঠিক আছি । তুমি বাসায় আসো।
দহন : আসছি…
দীপন কেটে দিলো ।
বহ্নি : কি হয়েছে ?
দহন : জানিনা…. বাপি বলল বাসায় ফিরতে। এখনই।
বহ্নি : তাহলে চলো… নিশ্চয়ই গুরুত্বপুর্ন কিছু হবে।
দহন : হামমম। বাপি বেশ চিন্তিত ছিলো । কিছু ১টা হয়েছে। কিন্তু কি?
বহ্নি : আচ্ছা এখন এতো টেনশন না নিয়ে গিয়ে দেখি কি কাহিনি।
দহন : হামম চলো।

.

ওরা বাসায় পৌছালো। আর বাসায় পৌছে যাকে দেখলো তাকে দেখে বহ্নির পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো । বহ্নি নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেনা।
বহ্নি : অঅঅহর্নব …
বহ্নিও ছুটে গেলো অর্নবের দিকে আর অর্নবও ছুটে এলো বহ্নির দিকে….
বহ্নি : তততুই…
অর্নব : বেচে আছি …
অর্নব বহ্নিকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। বহ্নিও কাদছে। দহন অবাক চোখে দেখছে ।
অর্নব বহ্নির কপালে চুমু দিলো। বহ্নি অর্নবের থেকে সরে এলো। অর্নব বহ্নির গালে হাত রাখতে গেলে বহ্নি হাতটা ধরে ফেলল।
বহ্নি : তুই কিভাবে … আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছিনা …
অর্নব : তোর টানেই ফিরেছিরে… তোকে যে বড্ড বেশি ভালোবাসি…

না দহনের পক্ষে আর মেনে নেয়া সম্ভবনা।
দহন : এক্সকিউজ মি… কি … কি প্রমান আছে যে আপনিই অর্নব ?
অর্নব : ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট ।
দহন : …
অর্নব : যেটা অলরেডি আমি ভাবি আর আপনার বাবাকে দেখিয়েছি…
দহন : বাট এটা তো কোনো ফিল্ম না… তাইনা যে আপনি হুট করে বেচে ফিরলেন …
অর্নব : হ্যা তা হয়তো নয়। কিন্তু এটাই সত্যি। ফ্যামিলি মেম্বার আর দুর্বৃত্তদের দেহগুলো যখন হসপিটালে যাচ্ছিলো তখন দুর্বৃত্তরা এসে ২টা দেহ নিয়ে যায়। নিতে এসেছিলো ১জনকে। বাট ২টা মুখ বিকৃত থাকায় ২জনকে নিয়ে যায়। ২জনের মধ্যে আমি ১জন।বহ্নি মনে আছে তোর… যখন গুলি খেয়েও আমি ১জনের পা ধরে আটকে রেখেছিলাম… আর সে তার পায়ের বুট দিয়ে আমার মুখে আঘাত করেছিলো।
বহ্নি : হামমম।
অর্নব : আমার মুখটা বিকৃত হয়ে যায়। যেই ফরেনসিক ডক্টর চেক করতে এসেছিলো সে বুঝেছিলো আমি জীবীত আছি। আমার পোশাকের রং আর ওদের পাঠানো কাজীর পোশাকের রং একই ছিলো। আর আমাদের ২জনের মুখই বিকৃত হয়েছিলো। ফরেনসিক ডক্টর অপরাধীদের সাথে মিলিত ছিলো। তাই সে লিডারকে জানায় যে ওদের দলের ১জন বেচে আছে। বিকৃত মুখ। বাট দুর্বৃত্তরা এসে ২টা বিকৃত মুখ পায়। তাই আমাদের ২জনকেই নিয়ে যায়। আর পুলিশ হেডের সাথেও তাদের সম্পর্ক থাকায় খবরটা গোপন থেকে যায়। যখন আমি একটু সুস্থ হই মানে জ্ঞান ফিরে তখনই আমি পালিয়ে যাই…
দহন : বাহ কি চমৎকার গল্প । তো মিস্টার আমাদের কি বোকা পেয়েছেন যে যা নয় তাই বলে বোকা বানাবেন… তা এতোদিন আপনি কোথায় ছিলেন?
অর্নব : বোকা বানানোর কি আছে? দরকার হলে আবার ডিএনএ টেস্ট করান। আমি যখন পালিয়ে যাই তখন খুব ১টা সুস্থ ছিলামনা। এতোদিন ট্রিটমেন্টের ওপর ছিলাম। আর তারথেকেও বড় কথা আপনি কে এতো প্রশ্ন করার?
আসলে দিনা অর্নবকে বহ্নির বিয়ের কথাটা বলেইনি যদিই মেনে নিতে না পারে…
বহ্নি : অর্নব ও আমার…
অর্নব : তুই এ বাসায় কি করছিস বল তো। চল বাসায় চল…
বলেই অর্নব বহ্নির হাত ধরলো। বহ্নি হাতটা ছারিয়ে নিলো।
বহ্নি : এখন এটাই আমার বাসা। আর ও আমার স্বামী…
অর্নব ১কদম পিছে চলে গেলো।

অর্নব : কককি বলললি… তততোর স্বামী…
বহ্নি : হামমম।
অর্নব দিনার দিকে তাকালো
দিনা : দেখো অর্নব তখন তোমার কন্ডিশনটা আমার ঠিক লাগেনি। তাই বলিনি…
অর্নব : তততুই পারলি আমি চলে যাওয়ার পর এতো তারাতারি কি করে কাউকে আপন করে নিলি… বল…
দহন : এই যে হ্যালো আপনি আসল নকল যে অর্নবই হন না কেন ১টা কথা বলি… অর্নব বহ্নির ভালোবাসা ছিলোনা। জাস্ট ফ্রেন্ড ছিলো। বেস্টফ্রেন্ড । তাই বিয়ে করাটা অস্বাভাবিক কিছুনা।
অর্নব : বহ্নি … আমি কি শুধুই তোর বেস্টফ্রেন্ড ছিলাম। আর কিছুনা…
বহ্নি : অর্নব … এটাই কিন্তু সত্যি…
অর্নব : তুই বোধহয় ভুলে যাচ্ছিস আমাদের বিয়ের দিনই ঘটনাটা ঘটেছিলো…
বহ্নি : তুই বোধহয় ভুলে গিয়েছিস যে আমি তখনও তোকে বন্ধুই ভাবতাম… আর এখনও। আর বিয়েতে রাজী হওয়ার কারনও তুই জানিস… বাবা বলেছিলো তাই…
অর্নব : তুই আমার সাথে এমন করতে পারিস না বহ্নি। তুই কেবল আমার…
বহ্নি : অর্নব… তোর শরীর ভালো নেই। তুই মাত্র ফিরেছিস। রেস্ট কর প্লিজ। এমন ভিত্তিহীন কথা নিয়ে এখন ডিসকাস করার কোনো প্রয়োজন নেই…
দিনা : হ্যা অর্নব। চলো বাসায় চলো।

অর্নব : এভাবে কিভাবে যাবো? আজজে ওর জন্মদিন… হ্যাপী বার্থডে।

ওরা চলে গেলো… দহন হনহন করে রুমে চলে গেলো।

.

নিশা বহ্নির সামনে এগিয়ে এলো।
নিশা : খুব সাবধানে থাকিসরে। যাই করবি ভেবে চিন্তে করিস। কেন যেন ভয় হচ্ছে। আমার ছেলেটা যে বড্ড রাগী… যাই হোক হ্যাপী বার্থডে।

বহ্নি ওপরে গেলো। দহন বারান্দায় দারিয়ে সিগারেট খাচ্ছে। বহ্নির ভীষন ভয় লাগছে । দহন তো ভীষন রেগে আছে। যদি দহন ওকে ভুল বোঝে…. দহন ভুল বুঝলে যে ও মরে যাবে। ও যে দহনকে খুব ভালোবাসে । দহন কি বিশ্বাস করবে যে অর্নবকে কেবল বন্ধুই ভাবে… দহনকে ডাকতেও ভয় পাচ্ছে।
বহ্নি : দহন…
দহন কিছু না বলে , পিছে না ঘুরে হাত দিয়ে ইশারা করে বহ্নিকে কাছে ডাকলো। বহ্নি গেলো । দহন সিগারেটটা ফেলে দিলো।
দহন : আমি তোমাকে ভুল বুঝিনি । সন্দেহও করিনি। তাই প্লিজ আমার বিশ্বাসটাকে ভেঙোনা। আমাকে কখনো ধোকা দিওনা। মেনে নিতে পারবোনা। আমি কিন্তু কাকনের স্বামি রকি নই যে বউ অন্যকারো হাত ধরে চলে যাবে আর তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো… যেতেও দিবোনা । মরবোও না , মারবোও না… অপরাধীদের মতো বন্দী করে রাখবো , শাস্তির দেয়ার মতো করে ভালোবাসবো , মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজের কাছেই রাখবো।
বহ্নি : …
দহন : বাট দ্যা ফ্যাক্ট ইজ…. আই ট্রাস্ট ইউ & আই লাভ ইউ।
বহ্নি : সরি…
দহন : আই লাভ ইউ বললে আই লাভ ইউ টু বলতে হয় … সরি বললা যে? আমার ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দিলে বুঝি? 😒😜।
বহ্নি : এমা না…
দহন বহ্নির কোমড় জরিয়ে ধরে
বলল : তাহলে আই লাভ ইউ বলো…
বহ্নি মাথা নিচু করে হাসি দিলো।
দহন : বলো …
বহ্নি : দেখো সারারাত ওয়েট করার সময় আমার নেই। আজকে আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসতে চাই… বলো আই লাভ ইউ…
বহ্নি : ভালোবাসি…

.

সকালে…
দহন বহ্নিকে দেখছে।
দহন মনে মনে : আই ট্রাস্ট ইউ। বাট নট দ্যাট পার্সন । সবার আগে আমার এটা জানতে হবে যে ওটা আসলেই অর্নব কিনা… হলে ভালো না হলে আরও ভালো। এতোদিনে আমরা স্বাভাবিক হলাম আর এখন কোথায় থেকে উটকো ঝামেলা এলো… কাকন কি কম ছিলো যে এই অর্নব এসে জুটলো… যদি ও কেবল তোমার বন্ধু হয়েই থাকে তবে বেচে যাবে। কিন্তু যদি তোমার দিকে নজর দেয়… যদি তোমাকে আমার থেকে কেরে নিতে চায় তবে ওর সাথে যে আমি কি করবো নিজেও জানিনা। যদি ও সত্যিই অর্নব হয় তবে এই ব্যার্থ প্রেমিকের সাথে ব্যার্থ প্রেমিকা কাকনের বিয়ে দিয়ে দিবো। দারুন হবে… হুয়াট এভার… হ্যাপী বার্থডে মাই বেটারহাফ। আই লাভ ইউ… এখন থেকে রোজ আমি আগে উঠবো আর তোমাকে দেখবো…

দহন উঠে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে বসে আছে।
দহন : গুড মর্নিং…
বহ্নি : মর্নিং…
দহন : হ্যাপী বার্থডে।
বহ্নি : থ্যাংক ইউ। ডাক দাওনি কেন বলো তো… কতো বেলা হয়ে গিয়েছে…
দহন : 😒।
বহ্নি : এভাবে তাকানোর দরকার নেই। 😁।
বলেই বহ্নি ওয়াশরুমে চলে গেলো।

.

দহন-বহ্নি নিচে নামলো। বহ্নি দীপন-নিশা কে সালাম করলো। সবাই বহ্নিকে উইশ করলো। নিশা বহ্নির পছন্দের সব রান্না করেছে ।
বহ্নি : থ্যাংক ইউ মামনি।
দীপন : তোমাদের ফ্লাইট কখন?
দহন : বিকালে বাবা…
নিশা : প্যাকিং করা শেষ?
মনি : আমার লিস্টের ১টা কিছুও যেন বাদ না যায়।
দহন : ওকে…
বহ্নি : কিসের ফ্লাইট?কিসের প্যাকিং…?
নিশা : তোদের হানিমুনের…
বহ্নি অবাক হয়ে গেলো।
দীপন : 😒।
নিশা : এভাবে তাকাচ্ছো কেন ?
দীপন : তুমি এখন শাশুড়ি।
নিশা : তো? এই তোমার কি অলওয়েস এমন এ্যাংগরি ইয়াং ম্যান থুরি ওল্ড ম্যান হয়ে থাকতে ভালো লাগে? তোমার জন্যই না আমার ছেলেটা এমন রাগী হয়েছে।
দীপন : হয়েছে এবার থামো। আর দহন শোনো … রবির বিয়ের আগে কিন্তু ফিরে এসো।
দহন : হামম অবশ্যই।

বহ্নি ব্রেকফাস্ট করে রুমে গেলো। পিছে পিছে দহনও গেলো।

দহন : কেমন লাগলো সারপ্রাইজ বার্থডে গিফ্ট ?
বহ্নি : এটা কোনো কথা? ১বারও তো বললেনা…
দহন : উফফ… বললে সারপ্রাইজ কি করে হতো হামম? বলো বলো…
বহ্নি : দহন…
দহন বহ্নিকে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
দহন : বিয়ের এতোদিন হলো অথচ দহন আহমেদ তার সুন্দরি বউকে নিয়ে এখনও হানিমুনে গেলোনা। ভাবা যায়… তাই বাপিকে বলে দিলাম যে বাপি আমি হানিমুনে যাবো।
বহ্নি : আচ্ছা তোমার লজ্জা করলোনা বলতে?
দহন : কেন লজ্জা করবে কেন?
বহ্নি : আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে লজ্জা নামক বস্তুটা তোমার মধ্যে নেই ।
দহন : রাইট… জানো আমরা কোথায় যাচ্ছি?
বহ্নি : কোথায়?
দহন : সবথেকে রোমান্টিক দেশ সুইজারল্যান্ড।
বহ্নি : মানে বরফ আর বরফ। আল্লাহ আমার তো বাংলাদেশের শীতই সহ্য হয়না। এই সুইজারল্যান্ড না। গেলে অন্যকোথাও চলো। গরম কোনো দেশে মরুভূমির দেশে। দুবাই-কাতার…
দহনের ইচ্ছা করছে বহ্নির মাথাটাই ফাটিয়ে দিতে।
দহন : তুমি পৃথিবীর সবথেকে আনরোমান্টিক বউ।
বহ্নি : ত…
দহন : দেখো প্লিজ স্টুপিডের মতো কোনো কথা বলোনা। আমি চাইনা তোমার জন্মদিনের দিন তোমাকে বকাঝকা করি…
বহ্নি : পারোই তো কেবল রাগ দেখাতে… আগে বললে প্যাকিং তো করতাম। শীতের পোশাক তো বেশি করে নিতাম। এখন এই ২-৩ঘন্টার মধ্যে কিভাবে কমপ্লিট করবো?
দহন : জাস্ট এ মিনিট…
বলেই দহন ২টা ব্যাগ নিয়ে এলো।
বহ্নি : এই ব্যাগ ২টা এতো অল্প সময়ে কিভাবে গুছাবো?
দহন : এই যে ভীতু বউ… এগুলো গোছানো শেষ। দে আর ফুল।
বহ্নি : 😱।
দহন : এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই। দহন আহমেদ হলো অল ইন ওয়ান। ভালো তো বেসেছিলাম ১টা অকর্মের ঢেকি কে। তাই সব কাজ শিখেছিলাম। তাই ভাবলাম অ্যাপ্লাই করি..
বহ্নি : খুব ভালোবাসতে কাকনকে তাইনা?
দহন বহ্নিকে বেডে বসালো। এরপর বহ্নির কোলে মাথা রাখলো।
দহন : হামমম ভালোবাসতাম। কিন্তু এখন ও আমার অতীত। কিন্তু তুমি আমার বর্তমান আর ভবিষ্যৎ।
বহ্নি : ….
দহন : জানো সেদিন রাতে তোমাদের বাসা থেকে আসার সময় ১টা বারে যাই। সেখানে রকির সাথে দেখা হয় । ও মাতলামো করতে করতে সবটা বলে দেয়। আমি ভাবতেও পারিনি যে কাকন এতোটা জঘন্য । তাই ভাবলাম যে সত্যটা জানা দরকার। রকির মুখে শুনে খুব ক্ষেপে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ব্যাপারটা সত্য হলে কারনকে জানে মেরে ফেলবো। এরপর তুমি অসুস্থ হলে। তোমাকে বাসায় আনার পর যখন তুমি অজ্ঞান হলে তখন তোমাকে দেখে নিজের ওপর খুব রাগ হলো। অপরাধী মনে হচ্ছিলো নিজেকে। কারন কাকন তো এখন আমার কেউ না। তাহলে ওর ধোকা দেয়ার কথা জেনে আমি এতো রাগ করলাম কেন? ভাবলাম আমার মনে কি তবে আজও কোথাও কোনো কোনে কাকন আছে? আমি কি তোমাকে ধোকা দিচ্ছি…. ? এসব ভেবে মাথা ফেটে যাচ্ছিলো। কিন্তু রাতে যখন তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিলে.. আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমালে তখন আমি বুঝতে পারলাম যে না… কাকমের অতীত আমাকে রাগায়নি… আমিই রেগে ছিলাম। আমি নিজের ওপর রেগে ছিলাম। কারন তখন কেবল তোমার সাথে দুর্ব্যাবহার করে এসেছি… তোমার থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি… তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। আর তাই কাকনের কথা শুনে রেগে যাই। কিন্তু আমার রাগের কারন তুমি ছিলে… কাকন না। কারন এখন আমার মনের কোথাও কাকন নেই। কেবল তুমিই তুমি। এরপর সত্যিটা জানার পর খারাপ লেগেছিলো যে আমি ১জন ভুল মানুষকে ভালোবেসেছিলাম। আর আমার জন্য ১টা নিষ্পাপ জীবন পৃথিবীর আলোও দেখতে পারেনি । বাট ট্রাস্ট মি… রাগ আসেনি… কারন আমি তোমাকে #ভালোবেসে_ফেলেছি । আই লাভ ইউ।

দহনের মুখে কথাগুলো শুনে বহ্নির চোখে পানি চলে এলো।
বহ্নি : আমি সত্যিই অনেক ভাগ্যবতী…
দহন : আর আমি ভাগ্যবান…

.

দুপুরে খাওয়ার পর দহন-বহ্নি গেলো দিনা আর বাচ্চাদের সাথে দেখা করতে। দহন-বহ্নিকে পাশাপাশি দেখে অর্নবের খুব কষ্ট হলো। দহন খুব সহজেই অর্নবের চোখের ভাষা বুঝতে পারলো। মনে মনে হেসে নিলো। বহ্নি অর্নবের সামনে গিয়ে দারালো।
বহ্নি : কিরে আমাকে বার্থডে উইশ করবি না…
অর্নব : আমার উইশের কি প্রয়োজন আছে তোর?
বহ্নি : থাকবেনা কেন? তুই যে আমার বেস্টফ্রেন্ড।
অর্নব : হাসালিরে… যদি আমাকে আপনই ভাবতি তবে এতোদিন পর আমি ফিরেছি… তবুও তুই আমাকে ফেলে চলে যাচ্ছিস। তাও আজই।
দহনের মাথায় আগুন উঠে গেলো। ও কিছু বলবে তার আগেই বহ্নি
বলল : তোর সাথে জীবনের প্রায় ১৮টা জন্মদিন পালন করেছি। আর আমার স্বামীর সাথে এই প্রথম। তুই আমার বেস্টফ্রেন্ড। আর দহন আমার স্বামী। ভালোবাসা। ২জনের জায়গা ভিন্ন। ১জনকে অন্যজনের সাথে তুলনা করাও ভুল। তোর সাথে ১৮টা জন্মদিন পালন করেছি। এবার না হয় বহ্নি দহনের সাথে পালন করুক। পরের বছর থেকে তোদের ২জনের সাথে পালন করবো। কারন তোরা ২জনই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন।
অর্নব : যদি বলি আমি বেশি না দহন…
বহ্নি : আগেই বলেছি যে তোদের মধ্যে তুলনা করারও কোনো কারন নেই।
অর্নব : …
বহ্নি : আসছি। নিজের , ভাবির আর বাচ্চাদের দিকে খেয়াল রাখিস।
দহন-বহ্নি চলে গেলো।
.

চলবে…

#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 27
writer : Mohona

.

দহন-বহ্নি চলে গেলো।
অর্নব : তোর কথা হয়তো ঠিক… কিন্তু আমি যে তোকে বড্ড বেশিই ভালোবাসি…
দিনা অর্নবের সামনে এলো।
দিনা: আমি জানি তুমি বহ্নিকে ভালোবাসো। সম্মানও করি তোমার ভালোবাসার। কিন্তু… আসলে কি ভাগ্য জিনিসটা সকল নাটের গুরু। ভাগ্যের ওপর কারো জোর খাটেনা। আল্লাহ যার সাথে যার জোরা লিখেছে তারসাথেই তার মিল হবে। তা না হলে কি দহন-বহ্নির বিয়ে হয়? যারা কিনা পরস্পর বিপরীত ধর্মী…
অর্নব : …
দিনা : তোমার ভাগ্যেও নিশ্চয়ই কেউ না কেউ আছে। যে তোমার জন্য পারফেক্ট হবে…
অর্নব কিছু না বলে রুমে চলে গেলো।
দিনা : আল্লাহ যেন কোনো ঝামেলা না হয়… অর্নব যেন ভুলটা না বোঝে।

.

৭দিনপর…
দহন-বহ্নি দেশে ফিরলো। ওরা ফিরতেই মনি রাজ্যের গল্প জুরে দিলো। আর নিজের দেয়া লিস্টের সাথে সবকিছু মিলিয়ে দেখতে লাগলো।
দীপন : মনি… ভাইয়া-ভাবি তো কেবল ফিরলো। ফ্রেশ হতে দাও … রেস্ট নিতে দাও পরে আড্ডা মেরো…
মনি : ওকে।
বহ্নি : থাক বাপি অসুবিধা নেই। ফিরলাম সবাই মিলে কিছুক্ষন কথা বলি… পরে রেস্ট করি…
নিশা : এই পাজি মেয়েটার আবদার পূরন করার জন্য দহন বাবু কি কম ছিলো… এখন আবার তুইও শুরু করলি…
বহ্নি : মামনি… আমার নয়নমনি কিন্তু মোটেও পাজি নয়। অনেক ভালো। মিষ্টি ননদিনী আমার…
নিশা : মরিচের মতো মিষ্টি…
মনি : 😒।
সবাই : হাহাহা…
কিছুক্ষন আড্ডা মেরে ২জন ফ্রেশ হতে গেলো।

.

দহন : আমি আগে…
বহ্নি : আচ্ছা।
দহন : আচ্ছা?
বহ্নি : হামম।
দহন : ধ্যাত ধ্যাত ধ্যাত…
বহ্নি : কি হলো?
দহন : মুডটাই নষ্ট হয়ে গেলো।
বহ্নি : কেন কি হয়েছে?
দহন : কি হয়েছে মানে? কি হয়নি বলো… ভাবলাম ওয়াশরুমে যাওয়া নিয়ে যদি বলি যে আমি আগে যাবো তো তুমিও বলবে যে না আমি আগে যাবো… এই আগে যাওয়া নিয়ে ঝগড়া হবে… এরপর আমরা ঝগড়াওয়ালা রোম্যান্স করবো… আহা কি রোমান্টিক আমি… আর তুমি… ধ্যাত।
বহ্নি : মাথায় রোম্যান্স ছারা আর কিছু ঘোরেনা না?
দহন : না… আর কেনই বা ঘুরবে বলোতো… আমার তো এই এততোগুলো বেবি চাই। এদিক দিয়ে এ ট্যা করবে ওদিক দিয়ে সে প্যা করবে… ১জন বাবা ডাকবে , ১জন বাপি ডাকবে , ১জন ড্যাড ডাকবে , ১জন পাপা ডাকবে , ১জন আব্বি ডাকবে , ১জন আব্বা ডাকবে , ১জন আব্বু ডাকবে , ১জন…
বহ্নি : তুমি ভাবতে থাকো আমি ফ্রেশ হতে গেলাম।
বলেই বহ্নি ওয়াশরুমে ঢুকে ধপাশ করে দরজা লাগিয়ে দিলো। দহন দরজায় টোকা দিয়ে
বলল : এই যে এটা কি হলো?
বহ্নি : যেটা দেখলে সেটাই হলো…
দহন : তোমাকে না বললাম যে আমি আগে যাবো…
বহ্নি : তো না এসে বকবক শুরু করলা কেন?
দহন : দোষটা কি আমার ছিলো?
বহ্নি : তো কার শুনি?
দহন : অবশ্যই তোমার। তুমি ঝগড়া করলে তো আর এমনটা হতোনা।
বহ্নি : আচ্ছা আমি অত্যন্ত দুঃখিত যে তখন ঝগড়া করিনি। চলো এখন ঝগড়া করি… 😁…
দহন : মজা করো আমাক সাথে…
বহ্নি : সত্যিই আমি ঝগড়া করতে চাই ।
দহন : এখন ঝগড়া করে কি লাভ? রোম্যান্স তো আর করতে পারবোনা…
বহ্নি : তুমি ১নাম্বার পাগল।
দহন : আই নো। হুহ…

.

পরদিন…
সকালে…
দহন বহ্নির মুখ দেখে বুঝতে পারলো যে বহ্নি কিছু বলতে চায়। দহন বহ্নিকে কোলে বসালো। এরপর ওর ঘাড়ে মাথা রাখলো।
দহন : বলো কি বলবে?
বহ্নি : না মানে ভাবি আর বাচ্চাদের জন্য যে গিফ্ট এনেছি ওগুলো কি ড্রাইভার কাকাকে দিয়ে পাঠাবো? না কি আমি নিয়ে যাবো?
দহন : আমরা নিয়ে যাবো।
বহ্নি : হামমম।
দহন : নিজের নামটা বললে না কেন?
বহ্নি : তুমি যদি রাগ করো… তাই…
দহন : রাগ করবো কেন?
বহ্নি : না আসলে অর্নব আছে তো। তাই যদি তুমি কিছু মনে করো আমি যেতে চাইলে…
দহন : ঘাড়টি ঘুরিয়ে তাকাও তো আমার দিকে…
বহ্নি তাকালো। দহন হুট করে বহ্নির চোখে কিস করে
বলল : আই ট্রাস্ট ইউ। আগেই তো বলেছি যে আমি তোমাকে বিশ্বাস করি । আর এবার আমি এমন ১জনকে বিশ্বাস করেছি যে কিনা কখনো আমার বিশ্বাস ভাঙবেনা।
বহ্নি : …
দহন : আজকে তো তোমার ক্লাস নেই। বিকালবেলা তুমি আর মনি রেডি হয়ে থেকো। আমি অফিস থেকে এসে নিয়ে যাবো। ওকে?
বহ্নি : হামমম।
দহন : লাভ ইউ কলিজাপাখিটা…

.

বিকালে…
বহ্নি আর মনি রেডি হয়েই ছিলো। দহন এসে ওদের পিক করে নিলো। ওই বাসায় পৌছালো। সবাই কথা বলতে লাগলো। রিদি আর মনি ভোরকে নিয়ে খেলায় ব্যাস্ত হয়ে পরলো।

অর্নব : আই অ্যাম রিয়েলি ভেরি সরি… আমি ওভারিয়্যাক্ট করেছিলাম। বহ্নি আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দে। আর দহন প্লিজ… তুমিও আমাকে ক্ষমা করে দাও। আসলে আমি… দেখো তুমিও তো কখনো ভালোবেসেছিলে কাউকে। তাই আশা করি বুঝতে পারবে আমার দিকটা।
দহন : ১মিনিট ১মিনিট… ভালোবেসেছিলাম মানে কি… এখন কি ভালোবাসিনা.. তখন ছিলো অন্য ১জন। সে কেবল আমার ভালোবাসা না… সে আমার ভুল ভালোবাসা ছিলো। আর বহ্নি… ও আমার বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ ভালোবাসা । যা কখনো পাল্টাবে না… কারন ও আমার জীবনসাথী । আমার অর্ধাঙ্গিনী।
অর্নব : …
দহন : আর হ্যা মনে রেখে আল্লাহ কোথাও না কোথাও তোমার জন্য কাউকে না কাউকে নিশ্চয়ই সৃষ্টি করেছে। আমিও কোনোদিন কল্পনা করিনি যে কাকন ছারা কেউ আমার জীবনে আসবে বা আমি আসতে দিবো… বাট দেখো… বহ্নি এখন আমার জীবনে। আর সারাজীবন থাকবে। বহ্নিকে ছারা আমি নিজেকে ভাবতেও পারিনা…
অর্নব : ১টা কথা বলি…
দহন : বলো…
অর্নব : তুমি এখন যেমন বহ্নিকে ছারা নিজেকে ভাবতে পারোনা… ১টা সময় তো কাকনকে ছারাও নিজেকে ভাবতে পারতে না… তো ভবিষ্যতে যে অন্য কেউ হবেনা তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে?
অর্নবের কথাটা শুনে দহনের চোখের রং মুহুর্তেই পাল্টে গেলো।
বহ্নি : অ…
অর্নব : 😂😂😂।।।। হাহাহা।।।
দহন-বহ্নি অবাক হলো।
অর্নব : তোমাদের ২জনের চেহারা না দেখার মতো হয়েছে…. হাহাহা। আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম। চলেন জামাইবাবু চা-নাস্তা করবেন…
বহ্নি : তুই না ১নাম্বারের শয়তান।
অর্নব : আমি জানি।

অর্নব যে মজা করে বলেনি সিরিয়লি কথাটা বলেছে সেটা বহ্নি না বুঝলেও দহন ঠিকই বুঝতে পেরেছে।

দিনা : সবাই আসো আসো… বসো। ইটস পাস্তা টাইম।।

.

পরদিন…
অর্নব : তুমি আমাকে এখানে ডেকেছো… কারনটা কি?
দহন : কারন আছে বলেই তো ডেকেছি।
অর্নব : বলো।
দহন : দেখো আমার মতো বাকা মানুষ কমই আছে। তাই তোমার বাকা কথা বহ্নি হয়তো বোঝেনি কিন্তু আমি কিন্তু ঠিকই বুঝেছি। সেটা মোটেও তোমার মজা ছিলোনা। তুমি সিরিয়াসলি বলেছো।
অর্নব : হ্যা আমি সিরিয়াসলিই বলেছি… আমার মনে হয় ঠিকই বলেছি। এতো গভীর ভালোবাসা কাকনকে ভুলে বহ্নিকে ভালোবাসতে পারলে… তাও এতো তারাতারি… এতোদিনের ভালোবাসা ভুলে গেলে ।।। সেখানে কি বহ্নি কে ভোলা কি স্বাভাবিক আর সহজ নয়…
দহন ওর হাতে থাকা গ্লাসটা ভেঙে ফেলল।
দহন : আরো কিছু?
অর্নব : দেখো তোমার কাকনের মতো আমার ব..
দহন : কুয়াইট। জাস্ট কুয়াইট…. না তো কাকন আমার আর না বহ্নি তোমার। বহ্নি কেবল আর কেবল আমার। বহ্নি দহনের । সো নেক্সট টাইম বহ্নিকে আমার বহ্নি বললে কথা বলার জন্য জিহ্বাটা আর থাকবেনা … টান দিয়ে ধরে ছিরে ফেলবো।
অর্নব : তোমার হাত থেকে কিন্তু রক্ত পরছে…
দহন : তোমার কথাগুলো শোনার জন্য এটা জরুরী… কথা শেষ করো।
অর্নব : বহ্নি কাকনের মতো নয়। বহ্নিকে খুব কাছ থেকে চিনি। সেই ছোটথেকেই … আর তোমাকে চিনিনা। বাট যতোটুকু জানি সেটা হলো এই যে … তুমি খুব রাগী। তোমার সাথে বহ্নির যায়না। আমি এটাও ভালো মতো জানি যে তোমার সাথে থেকে বহ্নি পদে পদে কষ্ট পাবে…
দহন : তো তুমি কি বলতে চাও? আমি বহ্নিকে ছেরে দেই?
অর্নব : আমার চাওয়ার ওপর কিছুই নির্ভর করেনা। তবে ১টা কথা বলতে পারি… তোমার মতো মানুষ কখনোই বহ্নির মনের মানুষ হতে পারেনা… বহ্নির সত্যিকারের ভালোবাসা হতে পারেনা। এমন রাগী-বদমেজাজী মানুষ বরাবরই বহ্নির অপছন্দের ছিলো।
দহন : অপছন্দের ছিলোনা। আজও অপছন্দ করে। কিন্তু বহ্নি আমাকে ভালোবাসে। যাই হোক আমি আমার কথাগুলো পরে বলছি… আগে তুমি তোমার মনের ভাব প্রকাশ করো। তবে ছোট্ট ১টা জবাব দাও প্লিজ। তোমার মতে বহ্নির অপছন্দের তালিকায় আমি… আর বহ্নির পছন্দের সবগুন তোমার মধ্যে আছে… তবে বহ্নি তোমাকে কেন ভালোবাসেনি?
অর্নব : …
দহন : তোমার নিরবতা বলছে যে তোমার বলা শেষ… নাও ইটস মাই টার্ন… ওয়েটার ওয়ান বোতল হুইসকি প্লিজ। ফাস্ট …
ওয়েটার তারাতারি নিয়ে এলো।
অর্নব : বহ্নি মদ জিনিসটাকে ঘৃণা করে…
দহন বোতলটার মাথা খুলে ওর কাটা হাতে ঢালতে ঢালতে
বলল : আই নো দ্যাট … আর তাই আমি এখন গিভ আপ করেছি।। বাই দ্যা ওয়ে শাট ইউর মাউথ আপ… তোমাকে বলার সুযোগ দিয়েছিলাম… তোমার বলার সময় শেষ…
দহন হাতটা মুছে রুমালটা পেচিয়ে নিলো…
দহন : তুমি এতোগুলো কথা বললে তবুও এখনো আমার সামনে ঠিকঠাক বেচে আছো এর ২টা কারন আছে। প্রথমটা হলো এই যে তুমি আসল অর্নব। নকল নও। আর ২য় কারন হলো এই যে… তুমি কিভাবে ফিরে এলে…? কেন যেন আমার মনে হচ্ছে যে তুমি সেই অপরাধীদের সাথে যুক্ত । আর তাই ফিরতে পেরেছো….
অর্নব : কি যা তা ব…
দহন : বলেছি না চুপ… দোয়া করো যেন আমি তোমার বিরুদ্ধে কোনোন প্রমান না পাই। ইভেন আমিও চাইনা। কারন যদি আমার সন্দেহ সত্যি হয়… তবে বহ্নি পুরোপুরি ভেঙে পরবে… আসছি। আশা করি খুব তারাতারিই দেখা হবে…
বলেই দহন চলে গেলো।

.

দরজা লাগানোর শব্দ পেয়ে বহ্নি পিছে ঘুরলো। দেখলো দহন দারিয়ে আছে। হাতে ব্যান্ডেজ…
বহ্নি : একি তোমার হাতে ব্যান্ডেজ কেন? কি হয়েছে?
দহন চুপ…
বহ্নি ছুটে দহনের কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করলো।
বহ্নি : কি হয়েছে তোমার হাতে? ব্যান্ডেজ কেন? কেটে গিয়েছে? কিছু বলছো কেন ? ত…
দহন বহ্নির ঠোটের মাঝে আঙ্গুল রাখলো।
দহন : ডু ইউ ট্রাস্ট মি?
বহ্নি : এটা আমার প্রশ্নের উত্তর নয় ।
দহন : বলোনা। বিশ্বাস করো আমায়?
বহ্নি : হ্যা অবশ্যই … এখন তো ব…
দহন আর কিছু না বহ্নিকে কাধে তুলে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিলো। এরপর দহন বহ্নির গলায় মুখ গুজলো।…

পরদিন সবাই সিলেট পৌছালো রবির বিয়ের উপলক্ষে।

.

বহ্নি : জায়গাটা ভীষন সুন্দর । মন ভালো করার মতো একেবার। জাস্ট দারুন।
দহন : সুইজারল্যান্ডের থেকেও সুন্দর ?
বহ্নি : দহন…. ওমনি তুলনা করা শুরু করলে? কোনোকিছুর সাথেই কোনোকিছুর তুলনা চলেনা। ১জন ব্যাক্তির সাথে যেমন অন্য ১জন ব্যাক্তির তুলনা করা ভুল তেমনি ১টা জায়গার সাথেও অন্য জায়গার তুলনা করা ভুল। প্রতিটা জায়গারই ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য আছে ।
দহন : হামমম হয়তো।
রবি-রনক : এইযে লাভবার্ডস …
দহন-বহ্নি পিছে ঘুরলো।
রবি : এই যে মিস্টার দহন আহমেদ আপনি বোধহয় ভুলে গিয়েছেন যে আমরা আপনার সেকেন্ড হানিমুনে আসিনি। আমার বিয়ের জন্য এসেছি।
দহন : অফ কোর্স। আমার হানিমুনে তোদের মতো হনুমানের কোনো জায়গা নেই.. 😜…
রবি-রনক : আমরা হনুমান!!! এতো বড় অপমান…
বহ্নি : এই যে হ্যালো মিস্টার… আমার ভাইয়াদের একদম হনুমান ডাকবেনা। ভাইয়ারা যদি হনুমান হয় তবে তুমি তো ডাকাত মার্কা দানব।
দহন : কি বললা ?
বহ্নি : যেটা শুনলা…
রবি-রনক : লাভ ইউ মিষ্টি ভাবি।
দহন : 😒।
রবি : ভাবি… আমার বউ মানে হবু বউটা তোমার সাথে পরিচিত হবে বলে ওই যে ওখানে দারিয়ে আছে। যদি তুমি…
বহ্নি : আমি যাচ্ছি… আচ্ছা তোমরা কি কফি খাবে ?
দহন : হ্যা ভালোই হয়।
বহ্নি : ওকে।
বহ্নি চলে গেলো।

.

রনক : কেন যেন তোর মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে তুই কিছু ১টা উল্টাপাল্টা ছক করছিস।
দহন : হামমম।
রবি : তুই যা খুশি কর। বাট এটা তো বল তুই কেন কাকনকে ইনভাইট করতে বলল? আমি তো বাবাকে রাজি করিয়েই ফেলেছিলাম যেন কাকনকে ইনভাইট না করে। তো?
দহন : দেখ আমরা সবাই কাকনকে চিনি। যদি জানতো যে আমি এসেছি তবে ইনভাইট না করলেও হাজির হতো।
রনক : লজিক আছে…
দহন : আর তাছারাও কাকন না এলে ও উচিত শিক্ষা পাবে কি করে? রবি তোর কাছ থেকে ১টা কার্ড চেয়েনিয়েছিলাম না… বলেছিলাম না যে বিশেষ কাউকে ইনভাইট করবো।
রবি : হ্যা। কে সে?
দহন : রকি।
রবি-রনক : কে রকি?
দহন : কাকনের এক্স হাজবেন্ড।

চলবে…