ভোরের_কুয়াশা
#পর্বঃ৫
#Misty Meye(মরিয়ম)
আর আমি তখন কেঁদেই দিলাম।আমার মাথা ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছে।ঠোট এ প্রচুর ব্যাথা করছে।আর ভাবছি থাপ্পড়টা দিলো কে?ভোরতো ঘুমায়।তাহলে,,,,,,,আরে আমিতো ব্যাগ নেওয়ার সময় ভোরকে বিছানায় দেখিনি।তারমানে ও জেগে ছিলো।ওরে আল্লাহগো,,,,,এবার আমার কি হবে,,,,,,এই ভেবে আরো কান্না আসছে।
আমি পিছনে ফিরে ভোরকে দেখে আরো ভয় পেয়ে যাই।চোখ মুখ লাল করে দাঁড়িয়ে আছে।কপালের রগও ফুলে গেছে।আর রাগান্বিত ভাবে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।
——-আপনি আমায় মারলেন?(কান্না করতে করতে বললাম)আমাকে আজ পর্যন্ত কেউ মারেনি।এমনকি আমার বাবাও না।
——–কেউ মারেনি তো কি হইছে। এখন থেকে আমি তোকে মারবো।আর পালাচ্ছিলিস কেনো তুই?আমি বলেছিলাম না।যে আমার থেকে পালানোর চেষ্টা করবিনা।(রেগে)
——–আপনি আমায় তুই করে বললেন,,,,,(অবাক হয়ে)।আপনি জানেন আমাকে কেউ তুই করে বলার সাহস পায়না।
——–তুই আমাকে সাহস দেখাচ্ছিস।তোকে ভালোই ভালোই বলছিলাম তোর কথা কানে যায়নি তাই না।
——–আমি একশোবার পালাবো। হাজারবার পালাবো।কি করবেনটা কি হ্যা।অসভ্য লোক,শয়তান লোক,আমাকে জোড় করে বিয়ে করছে আবার আমাকে রাগ দেখায়। হু,,,,,,,,(এবার আমি ও রেগে গিয়ে)
——–কি করবো,,,, তাই না।একটু আগের থাপ্পড়টা নিশ্চয় ভুলে যাসনি।তুই পালাবি না।দাড়া তোর পালানো বের করছি।
বলে আমার ব্যাগটা আর ফোন নিয়ে সব আলমারির ভিতর রেখে দিচ্ছে।আর আমি বলছি,,,
———আরে, আরে আমার ফোন, ব্যাগ আলমারিতে রাখছেন কেনো।কি আশ্চর্য। কি হইলো কথা কানে যায়না।দিয়ে দিন আমার জিনিসপত্র আমাকে।নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে।
———ও তাই নাকি,,,,খুব খারাপ হয়ে যাবে।তো ঠিক আছে দেখি কি খারাপ হতে পারে বলে আমার কাছে আসতে লাগল।
———আপনি আমার কাছে আসছেন কেনো।একদম আমাররর কাছেএএএএএ আসবেন নাাাাাাা বলে দিলাম।খুব খারাাাাপ হয়ে যাবে কিন্তু,,,,,,(আমি পিছচ্ছি আর ভোর এগোচ্ছে)
———তাই নাকি দেখি কি খারাপ হয় বলে একেবারে আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে বিছানায় বসালো।তারপর ও উঠে গিয়ে ড্রয়ার থেকে মেডিসিনের বাক্স নিয়ে এসে আমার পাশে বসলো। এরপর ও প্রথমে তুলো দিয়ে আস্তে আস্তে রক্ত মুছে দিয়ে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে একটা পেইনকিলার মেডিসিন খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
আমার মাথাব্যথা করায় আমি ও ঘুমিয়ে যাই।সকাল ভোরে আমাকে ঘুম থেকে টেনে তুলে বলে যাও।ফ্রেশ হয়ে এসো।
——-এতো সকালে কি করতে উঠবো।আর একটু ঘুমাইনা প্লিজ,,,,,
——-না।আর যদি ঘুমাও তো এখন আবার আর একটা থাপ্পড় খাবে তুমি,,,,,,,
——-নাাাাাাা।আমি আর থাপ্পড় খেতে চাইনা।আমি এখনি উঠছি। বলে এক লাফে খাট থেকে নেমে দাঁড়ালাম।
——-হুম এবার যাও।
——-কোথায়,,,,আমার বাসায়? চলুন যাই।
——-জ্বী না।এখন তুমি অজু করতে যাবা।যাও।
——-কি অজু কেনো?
——-কারন এখন তুমি আর আমি এক সাথে নামাজ পড়বো।
——–কিইইইইই,,,,,,
———কি,,,না জ্বী।যাও এবার,,,,,,
———কিন্তু,,,,,,
——— কোন কিন্তু না।যাও,,,,,,,(ধমক দিয়ে)
——–ধমকাচ্ছেন কেনো?যাচ্ছিতো।
তারপর আমি গিয়ে অজু করে এসে ভোরের পাশে গিয়ে নামাজ শেষ করে নিয়ে আবার ঘুমাতে যাবো তখনই ভোর বলে,,,,,
——–আবার ঘুমাতে যাচ্ছো যে,,,,,,
——–তাহলে কি করবোটা কি আমি,,,,,,
——–নাশতা বানাও যেয়ে।
——–কি নাশতা।আমি,,,,আমি জিবনেও এক গ্লাস পানি নিয়ে খাইনি।আর আমি বানাবো নাশতা।
——–হুম বানাবে।যাও।আর না গেলে কিন্তু,,,
——–উফঃ আপনি খালি থাপ্পড়ের ভয় দেখান কেনো।থাপ্পড় ছাড়া কি কিছু নাই দুনিয়াতে,,,,
———আছে। থাকবে না কেনো।পিটানি, পিটানি খাইবা তুমি,,,,,,বল,,,,,
———উফঃ অসহ্য,,,,,,,,(রেগে)
এরপর আমি নাশতা বানাতে কিচেনে যাই।কিচেনে গিয়ে আমি চিন্তা করছি কি রান্না করবো।সবইতো নতুন নতুন লাগে।দুই একটা জিনিস বাদে কিছুই তেমন চিনি না।তখন চোখ যায় নুডুলস এর প্যাকেটের দিকে।ঝটপট রান্না করতে নুডুলসটাই বেস্ট।প্যাকেট থেকে প্রস্তুত প্রণালিটা থেকে দেখে রান্না করছি।তখন মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো,,,,
দাড়া শয়তান লোক আমাকে দিয়ে রান্না করানো।খাওয়াচ্ছি তোকে নাশতা।এবার দেখ কুয়াশার হাতের নাশতা কেমন লাগে বলে,,,,,এতোগুলা মরিচের গুড়া মিশিয়ে রান্না করে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখলাম।আর কফিতে এতোগুলা লবন মিশিয়ে দিয়ে ডাইনিং টেবিলে সাজিয়ে রাখলাম।আর ডাকতে লাগলাম,,,,
——কই আপনি।আপনার নাশতা তৈরি।নিচে আসুন।তাড়াতাড়ি।
তারপর ভোর নিচে এসে টেবিলে বসল।
আমিতো মনে মনে সেই খুশি।ঝাল খেয়ে কান্না করবে আর আমি দেখবো।কালকে আমারে থাপ্পড় দিছে।আমি আজকে তার প্রতিশোধ নিবো। ইয়াহু,,,,,, অসভ্য লোক আজকে বুঝবো মজা।হাহাহুহুহিহি,,,,,,
ভোর আমাকে বলল কি ব্যাপার কুয়াশা। একজনের খাবার কেনো।আমরাতো দুইজন।
——আমি পরে খাবো।আপনি খান। আমি রান্না করছি।শুধুমাত্র আপনার জন্য।খুব টেস্ট।
——-না থাক।এইটা তুমি খাও আমি পরে খাবো।
——-নাাাাাাা।না মানে আপনি তো আমার স্বামী। তাই আপনি না খেলে আমি কেমনে খাই।
——-নাহ,,,,,এইটা তুমি খাবা।খাও বলছি,,,,,
——-না বলছিতো আপনি খান।
——-আমি বলছি তুমি খাও। খাও…….(রেগে)
——-আমি ভয় পেয়ে কষ্টে সৃষ্টে সব খাচ্ছি।কফি খেয়ে বমি চলে আসছে।আর নুডুলস খেয়ে ঝালে মরে যেতে ইচ্ছা করছে।তবুও বুঝতে দেইনি আমি কি কান্ড করেছি।সব শেষ করে দৌড়ে উপরে গিয়ে জগের সবটুকু পানি খেয়ে ফেলি।তবুও ঝাল কমেনা।চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।
পিছন থেকে…………….
চলবে………..