মিশে আছি তোমাতে পর্ব-১২

0
4410

#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_12
.
.
.
.

তিশা ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে আবির রেডি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য….

তিশা : একি আপনি ফ্রেস হবেন না…..

আবির : ফ্রেস হয়ে নিয়েছি অন্য ওয়াসরুম থেকে…..

তিশা : ওও আচ্ছা আমাকে কলেজে একটু দিয়ে আসবেন…. গতকাল তো কলেজে যেতেই পারি নি…..

আবির : এই কি আমি শুনলাম তুমি আমাকে বলছো তোমায় কলেজে দিয়ে আসার জন্য…. আমি সত্যি শুনেছি নাকি স্বপ্ন দেখছি( অভিনয় করে)

তিশা : শুনুন এত অভিনয় করবেন না কলেজে আমাকে দিয়ে আসতে পারবেন কি না আমাকে সেটা বলেন…..

আবির : আচ্ছা বাবা সরি তোমাকে আমি কলেজে দিয়ে আসবো…. তুমি রেডি হয়ে নিচে আসো…..

আবির হাতে করে কোর্ট নিয়ে ঘর থেকে চলে যায় ……. তিশা রেডি হয়ে নিচে যায় আর সবাই ব্রেকফাস্ট করে বের হয়…… আবির ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসে নিরব পিছনের সিটে বসে তিশা পিছে বসতে যাবে তা দেখে আবির রাগে বলে ওঠে……

আবির : আমি কি তদের ড্রাইভ নাকি যে সবাই পিছনে গিয়ে বসছিস…..

নিরব : ভাইয়া তুমি এটা কি বলছো তুমি ড্রাইভ হতে যাবে কেন??

আবির : তাহলে দুজনেই পিছনে গিয়ে বসেছিস কেন???

নিরব : ওওও আচ্ছা এই‌ ব্যাপার…… ভাবি তুমি ভাইয়ার পাশে গিয়ে বসো আমি এখানে বসছি….

তিশা : ঠিক আছে….

তিশা আবিরের পাশে এসে বসে…… আবির লক্ষ্য তিশা সিট বেল্ট লাগাই নি তার জন্য আবির তিশার কাছে যায় আবির তিশার কাছে যাওয়ার সাথে সাথে তিশা নিজের দু চোখ বন্ধ করে ফেলে….. তিশা চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে আবির সিট বেল্ট লাগিয়ে দিছে…..

আবির : সিট বেল্টটা লাগিয়ে দিলাম….

তিশা জোরে নিশ্বাস ছাড়ে……

তিশা : ( উফফ তিশা তুই যে সবসময় কি যে ভাবিস ধ্যাত তর মাথাটাই গেছে পুরা)

নিরব : ভাবি তুমি তো কলেজে যাবে তাই তো..

তিশা : হে নিরব…. তুমি কোথায় যাচ্ছ অফিসে??

নিরব : হে ভাবি মাএ দেশে ফিরেছি আর ভাইয়া এখনেই অফিসে বসিয়ে দিছে আমাকে…….

তিশা : আহারে কি বেচারা….

আবির তিশার কলেজে এসে গাড়ি থামায়‌…..

আবির : কলেজ এসে‌ গেছে নামো…..

তিশা : ধন্যবাদ….

আবির : কলেজে ছুটির পর আমি তোমাকে নিতে আসবো আমি যতক্ষন না আসবো ততক্ষন তুমি কলেজ থেকে বের হবে না….

তিশা : ঠিক আছে….. আমি আসি

তিশা যতক্ষন না কলেজের ভিতরে না ডুকেছে ততক্ষন আবির কলেজের সামনে থেকে যায় নি….. নিরব পিছনের সিট‌ থেকে এসে সামনের সিটে বসে…… আবির আর নিরব অফিসে চলে যায়

তিশা কলেজে ডুকার সাথে সাথে কেউ ওকে ডাক দেয় তিশা তাকিয়ে দেখে ওর ফ্রেন্ড রিয়া….

রিয়া : দোস্ত কেমন আছিস???

তিশা : ভালো…..

রিয়া : আচ্ছা চল ওই খানে গিয়ে বসি…

তিশা : ক্লাসে যাবি না….

রিয়া : আজকে ক্লাস হবে না…..

তিশা : কেন???

রিয়া : দুদিন পরে কলেজে সাংস্কৃতি অনুষ্টান তার জন্য….

তিশা : ওও আচ্ছা…

রিয়া : দোস্ত তুই কি এখনও আবির রহমানের সাথেই থাকিস??

তিশা : হুম….

রিয়া : আঙ্গেল আন্টি কি বিয়েটা মেনে নিয়েছে….

তিশা : না…..

রিয়া : তাহলে তুই চলে আসছিস না কেন ওখান থেকে???

তিশা : আমি বাধা পরে গেছি রে তাই ওখান থেকে আমি আর কোনো দিন বের হতে পারবো না….

রিয়া : বাধা পরে গেছিস মানে…..

তিশা রিয়াকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার ঘটনাটা খুল বলে…..

রিয়া : তুই এরকম শর্ত কেন রাখলি???

তিশা : তাহলে আমি কি করতাম বল আমি ভেবেছিলাম আমি ওই বাড়ি থেকে বের হতে পারবো কিন্তু বের হতে পারি নি…. তবে মানুষটা ভালো

রিয়া : ও মা তাই নাকি প্রেমে পড়ে গেলি নাকি অবশ্য প্রেমে পড়ারেই কথা তর জামাই যা সুন্দর হ্যান্ডসাম দেখতে যেকোনো মেয়ে দেখলেই‌ প্রেমে পড়ে যাবে….

তিশা : উফফ বাধ দে তো এসব কথা….

রিয়া : ঠিক‌ আছে….. দোস্ত হাতের আংটিটা কিন্তু জোস বুঝলি তর জামাইয়ের পছন্দ আছে বলতে হবে…..

তিশার চোখ যায় কলেজের গেইটের দিকে গেইটের পাশ দিয়ে ওর বাবা ইকবাল ইসলাম হেটে চলে গেছে তিশা ওর বাবাকে দেখে দৌড় দিয়ে কলেজ থেকে বের হয়ে পড়ে…. পিছন পিছন রিয়াও যায়…. তিশা দৌড়ে গিয়ে ওর বাবার সামনে দাড়ায়…..

তিশা : বাবা…..

ইকবাল ইসলাম তিশাকে দেখেও কোনো কথা না বলে হাটা শুরু করে….

তিশা : বাবা প্লিজ তুমি আমার কথাটা একটু শুনো….

ইকবাল ইসলাম : কে তর বাবা আমি তর বাবা না দুরে সরে যা আমার কাছ থেকে আর একবার যদি তুই আমাকে তর ওই‌ মুখ দিয়ে বাবা ডাকিস তাহলে তুই আমার মরা মুখ দেখবি…..

তিশা : না বাবা প্লিজ এমম কথা বলো না প্লিজ…..

ইকবাল ইসলাম : চুপ একদম চুপ তর মতো মেয়ের বাবা যেন আর কেউ না হয় আমি এই দোয়া করি আল্লাহর কাছে…..

ইকবাল ইসলাম এই কথাটা বলে রিকশাতে উঠে বসে….

রিয়া : তিশা কি হলো এভাবে দৌড়ে বের হয়ে গেলি কেন???

তিশা : বাবা আমাকে এভাবে বলতে পারলো এই কথা গুলো…. ( কান্না করতে করতে)

রিয়া : দোস্ত তুই শান্ত হ সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে…..

তিশা : কিছু ঠিক হবে আজকে ওই লোকটার জন্য আমার জীবনটা ধ্বংস হয়ে গেছে…… প্লিজ রিয়া তুই আমাকে ছাড় আমার ভালো লাগছে না…..

তিশা রিকশাতে উঠে বসে রিয়াকে ফেলে দিয়ে……

রিয়া : তিশা তুই কোথায় যাচ্ছিস??? তিশা আমার কথাটা শুন….

এদিকে আবির নিরবকে নিরবের কোম্পানিতে এমডি বানিয়ে দিয়ে তিশার কলেজের উদ্দেশ্য রওয়ানা হয় আবির তিশার কলেজের সামনে এসে তিশাকে ফোন করে কিন্তু তিশা ফোন তুলছেই না বেজেই যাচ্ছে তিশার ফোন…. আবির অনেক বার তিশাকে ফোন করে কিন্তু তিশা ফোন তুলছে না……

আবির খুব চিন্তায় পড়ে যায় তিশা ফোন না ধরাতে…. আবির কলেজে ডুকে সারা কলেজে ভালো করে খুজে কিন্তু তিশাকে কোথায় দেখতে পায় না…..আবিরের নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছে…
আবির তাড়াতাড়ি করে নিরবকে ফোন করে….

নিরব : হে ভাইয়া বলো…..

আবির : তিশাকে পাওয়া যাচ্ছে না নিরব….

নিরব : কি বলছো কি তুমি ভাইয়া ভাবি কলেজে নেই….

আবির : না আর ও ফোনও ধরছে না…. আমি কি করবো কিছু বুঝতে পারছি‌ না…..

নিরব : ভাইয়া তুমি শান্ত হও আমি ও ভাবিকে খুজতে বের হচ্ছি….. ভাইয়া ওই রবিন কিছু করে নি তো….

আবির : রবিন তিশাকে যদি কিছু করে তাহলে আজকে ওকে আমি মাটিতে পুতেই ফেলবো….

নিরব : ভাইয়া তুমি আমার কথাটা শুনো….. আজকে তো কিছু একটা হবেই আমাকে এখনেই বের হতে হবে….

আবির ফোন কেটে গাড়িতে উঠে জোরে গাড়ি ড্রাইভ করা শুরু করে আবির রবিনের অফিসে এসে গাড়ি ব্রেক করে……আবির গাড়ি থেকে বের হবে এমন সময় নিরবের কল আসে…. আবির ফোনটা রিসিভ করে….

নিরব : ভাইয়া ভাবিকে পাওয়া গেছে…

আবির : কোথায়??

নিরব : বাড়িতে মাএ এসেছে ফোন করে বললো সোহেল….

আবির : ঠিক আছে আমি এখনেই আসছি….

আবির গাড়ির সিটে মাথাটা হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে জোরে শ্বাস ফেলে আবির গাড়ি ড্রাইভ করে বাড়িতে ডুকে সোজা ঘরে যায় ঘরে গিয়ে দেখে……..

#চলবে