রঙীন ফানুস পর্ব-২০ এবং শেষ পর্ব

0
3848

#রঙীন ফানুস
#আফরিন ইভা
#পর্ব-২০( শেষপর্ব)

—” রাতে খেতে চায় নি পরী , তবুও জোর করে খাইয়ে দিলো, পরীর শাশুড়ি।
বুকে কষ্ট থাকলেও মায়ের সাথে কি কষ্টের জোর খাটে। এমন একজন মাকেই তো চেয়েছিল পরী।”

” রুমে একাকী শুয়ে আছে পরী।
নিভু নিভু চোখে একবার পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিলো।
এ রুমে যে অনেক স্মৃতি পরীর।
প্রতিনিয়ত যেগুলো আমরা পাবোনা, পাওয়ার যোগ্য নয়, সে জিনিসগুলো পেতেই আমাদের তীব্র আকাঙ্খা জাগে।
তেমনি পরীরও ইচ্ছে করছে রাজ কে গিয়ে বলতে রাজ আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে।
আপনাকে ছাড়া সত্যি আমি মরে যাবো।
কিন্তু বিবেকের কাছে হাত-পা বাঁধা পরীর।
কি করবে পরী নিজের ধ্যান জ্ঞান কে তো আর বিসর্জন দিতে পারবে না। তাই রাজ কেও বলতে পারবে না।
এই জিনিসটাই যে প্রতিটা মানুষের অমূল্য সম্পদ যা চাইলেও বিসর্জন দিতে পারে না। ”

“রাতের তারা গুলো পরীকে ভীষণ টানে, মেঘলা আকাশটা চুপিচুপি কথা বলতে চায় পরীর সাথে, পরীর যে ওদের মতোই দশা হয়েছে, মনে মনে অনেক কিছু ভেবে রাখলেও পরী কিছু বলতে পারেনা কাউকে।”

“বারান্দায় গিয়ে পাতানো চেয়ার টায় ঠেস দিয়ে বসলো পরী।
মৃদু বাতাসটায় যেন আজ দুঃখের অনূভুতি।
চাঁদ তারকারাও যেনো বিদ্রূপ করছে পরী কে নিয়ে। ভিতরটা নাড়িয়ে দিচ্ছে দুঃখের কালো তপ্ত রাশিতে।
চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে গ্রিলের ফাঁকে মুখ গুঁজে বসলো পরী। নিচের বাগানটা থেকে শিউলি ফুলগুলো দেখা যাচ্ছে, আজ ভীষণ ভালো লাগাটা কেও যেন ভীষণ খারাপ লাগছে পরীর । অদম্য বাতাসটা কেও মনে হচ্ছে খুব বাড়াবাড়ি করছে। পরীর কাছে আজ সব এলোমেলো লাগছে, এলোমেলো বাতাসে উড়াল চুলগুলোর মতো।
যদি পারতো পরী আজ ডানা মেলে উড়ে যেতো। পরীর ইচ্ছে করছে সেই পুরনো থেকে নতুন করে আবার শুরু করতে রাজের হাত ধরে।
যে দিকে তাকায় পরী শুধু রাজের মধু মাখা স্মৃতি যা বুকের মাঝখানে হাহাকার বাড়ায়। ”

” পরী পারবে না কখনো পারবে না রাজ কে ভুলে থাকতে।
রাজ থেকে দূরে চলে গেলেও লুকিয়ে লুকিয়ে রাজকে দেখে রাখবে।
রাজের জন্য দূর থেকে দোয়া করবে, ইতু যেন রাজ কে ভালো রাখে এ-ই দোয়া টা-ই করলো পরী। ”

” রাজ থেকে যতটুকু পেয়েছে তাই অনেক।
পরী মনে মনে রাজকে নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা জানালো।
রাতটা আজ নির্ঘুমে কাটিয়ে দিলো পরী।”

” রাত গড়িয়ে সকাল হলো, কিন্তু পরীর চোখে ঘুম হলো না।
হবেই কি করে পরীর ঘুম গুলো যে রাজ কেড়ে নিয়েছে। কিছু স্বপ্ন দেখতে ঘুমতে হয়না, জেগেও দেখা যায়।
পরী আজ ভেবে রেখেছে রাজ কে আজ প্রাণভরে দেখবে।
যে চোখে থাকবে শুধু নেশা, যা শুধু প্রাণনেশা, ঘোর লাগা নেশা।”

“পরী ফ্রেশ হয়ে ধূসর রঙের একটা তাঁতের শাড়ি পড়ে নিলো।
জীবনটাই যে ধূসরে ছেয়ে গেছে পরীর, তাই রঙীন শাড়িগুলো পরিহার করলো আজ।
ভাঙা হৃদয়টা নিয়ে নিচে নামলো পরী।
পরী নিচে নেমে দেখলো বাসায় মেহমান ভর্তি। সবাই কেমন কেমন চোখে যেন তাকাচ্ছে পরীর পানে। ভাঙা হৃদয় টাকে আরো যেন নাড়িয়ে দিচ্ছে পরীর।
সবাই হয়তো ভাবছে আগের বউয়ের দূষ না থাকলে তাহলে রাজ কেন আবার বিয়ে করছে?
পরীর কি-ই বা করার আছে?
“রিক্ত হৃদয় নিয়ে সব সয়ে যাচ্ছে।”
.
.
.

” পরীর দু-চোখ আজ রাজকে খুঁজতে ব্যাস্ত। দু-চোখ বুলিয়ে নিলো চারিদিকে ।
কিন্তু না কোথাও রাজকে দেখতে পেলো
না পরী। কষ্টে পরীর বুক টা চ্যাত করে উঠলো।
বুক ভরা দুঃখ নিয়ে শ্বশুর -শাশুড়ির কাছে গেলো।
গিয়ে দুজনকেই সালাম করলো।
পরীর শ্বশুর মশাই পরীকে নিজের পাশে বসালো।
পরীর হাত চেপে ধরে বললো, মা আমি তোর মর্যাদা দিতে পারিনি, তোই তোর বুড়ো বাবা টাকে মাফ করে দিস। ”

” পরী আর থাকতে পারলোনা, ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো, বাবা কি বলছেন আপনি?
আমি ভীষণ ভালো আছি, আমার কাউকে দরকার নেই, এই বুড়ো দু’টো মানুষকেই চাই আমার। আপনাদের পায়ে একটু জায়গা দিবেন তাহলেই হবে।
কিছু স্বপ্ন পূরণ হতে নেই, নয়তো স্বপ্ন দেখতে যে সবাই ভুলে যাবে। ”

“পরীর শাশুড়ি পরী কে পা থেকে উঠিয়ে, বুকে জড়িয়ে ধরলো।
বোকা মেয়ে দিব থাপ্পড়।
মেয়ে হয়ে মা-বাবা থেকে কি অধিকার চেয়ে নিতে হয় বল।
তুই তো আমার মিষ্টি মেয়ে বুঝলি তো।
আর যদি কোন কাল থেকে থাকে আমিই তোর আপন মা হবো বুঝলি?”

” শাশুড়ির কথা শুনে পরী কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেলো ।
মা চলেন আমি আপনাকে শাড়ি পরিয়ে দেই। চিন্তা করবেন না আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।আল্লাহর প্রতি এটা পরীর বিশ্বাস । ”

“পরীর শাশুড়ি প্রথমে না করলেও পরীর কথায় ভরসা পেয়ে শাড়ি পরলো।”

“রুমের বাহিরে আসলো পরী ।
বাহিরে আসার সাথে সাথে সবাই কানা- গোসা করতে লাগলো।
পরী ঐ দিকে আর কর্ণপাত করেনি।
দু-চোখ আবারও রাজকে খুঁজতে ব্যাস্ত।”

” অবশেষে রাজ কে দেখতে পেয়ে পরীর দু-চোখ যেন শান্ত হয়েছে।
রাজ গোল্ডেন কালারের একটা পাঞ্জাবি পড়ে সবার সাথে হেঁসে হেঁসে কুশল বিনিময় করছে। রাজ কে দেখেই বুঝা যাচ্ছে রাজ বিয়েটায় কতটা হ্যাপি। পরীর
কাছে রাজ কে আজ দেখতে খুব বেশি মসৃণ লাগছে।
খোঁচা খোঁচা দাড়ি, মায়াবী ভ্রু জোড়া, তীর্যক কালো রঙের চোখের মনি, রক্তিম ঠোঁট,ঠোঁটের উপরের কালো তিলে যেন মায়ার ছড়াছড়ি রাজের মুখে।
যে কারো বুকে উত্তাপ বাড়াতে যেন বদ্ধপরিকর। ”

“পরীর বুকে উথাল পাথাল ঢেউ যেনো দ্রুত বেগে খেলে যাচ্ছে। পরীর দু-চোখ যেন আজ সার্থকতা জানাচ্ছে এমন প্রেমিক পুরুষ দেখে।
বহুকষ্টে পরীর উত্তপ্ত হৃদয় শান্ত করে রাখলো।
অন্য কাজে ধ্যান দিলো পরী।
আজ কাজে কাজে নিজেকে ডুবিয়ে রাখবে পরী। অন্যদিকে মন যেতে দিবেনা আজ। বিভিন্ন কাজে ডুবিয়ে রাখছে মনকে তবুও বেখেয়ালি মন বার-বার খুঁজে নিষিদ্ধ মানুষটিকে।”

” ইতু কে সাজিয়ে আনা হলো।
পরী ইতু কে বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো।
ইতু বেশ সুন্দরী কোথাও কোন খুঁত নেই যেনো।
সেজন্যই রাজ ইতু কে পছন্দ করেছে হয়তো।
পরী মনে মনে বললো, বাহ আমার রাজের পছন্দ আছে বলতে হবে। দু-চোখ অশ্রুজলে ভরে গেলো পরীর। ”

“রাজের সামনে দিয়ে পরী অনেকবার আসা যাওয়া করছে কিন্তু রাজ ভুল করেও পরীর দিকে তাকায়নি।
আসলে তাকাবেই বা কেন?
পরী তো সমাজের ঘৃণিত কৃট।”

” পরী একবার রাজের দিকে আরেকবার ইতুর দিকে তাকিয়ে দেখলো ইতুও রাজ দু’জনই বেশ খুশি। পরীও বেশ খুশি এটা ভেবে রাজ নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছে। ”

” কাজী সাহেব আসলো, বিয়ে পড়াবে বলে।
দু’জনকে একসাথে বসানো হলো।”

” এগুলো দেখার মতো পরীর আর সহ্যক্ষমতা রইল না।
পরী দৌড়ে উপরে চলে গেলো।
নিজের রুমে গিয়ে উপুড় হয়ে কাঁদতে লাগলো। দুঃখগুলো যেন সব আজ উথলে উঠেছে।
পরী পারবে না রাজের কাছাকাছি থেকে এগুলো দেখতে।
পরী চলে যাবে, হারিয়ে যাবে কোন এক নতুন ঠিকানায়। দূরে গিয়ে নিজেকে আড়াল করে রাখবে বলে ঠিক করেছে।
ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিলো পরী।
এক হাতে চোখের জল মুছছে আরেক হাতে ব্যাগ গুছাচ্ছে।
পরী আর পারছেনা কাঁদতে।
ক্লান্ত দেহ নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।
দুপুর গড়িয়ে রাত ৮.০০ টা ছুঁইছুঁই।
নিজেকে এক রুমে আবদ্ধ করে রেখেছে।
সুযোগ পেলেই নতুন ঠিকানায় হারিয়ে যাবে রাজ থেকে বহুদূরে। ”

” হঠাৎ কাঁধে কারো স্পর্শ পেলো। চমকে উঠলো পরী।
পেছন ফিরে যাকে দেখলো পরী শিহরিত।
নিভু নিভু চোখে তাকালো পরী।
কি ব্যাপার আপনি?

” আমি হবো নাতো কে হবে তোমার নতুন বর বুঝি?”

–” অভিমানী চোখে তাকিয়ে পরী বললো কেন আপনার নতুন বউ ইতু মনি। ”

–” ইতু মনি না তেতু মনি।
আমি আমার মিষ্টি বউকে রেখে ঐ তেতু কে বউ করবো ভাবলে কি করে?”

— পরী অবাক হয়ে, মানে বলে হা হয়ে তাকিয়ে রইলো রাজের পানে।”

–” এই বউ মশা ঢুকবে তো হা বন্ধ করো, রাজ দুষ্টু ভঙ্গিতে কথাটা বললো।”

” পরীর হা যেন বন্ধই হচ্ছে না, রাজ চেপে ধরে হা বন্ধ করলো পরীর ।
পরী বাকরুদ্ধ আজ রাজের কথা শুনে।”

” এত আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই পরী।
ইতু কে কখনো ভালোবাসিনি আমি।
ইতু কে আমার এক ফ্রেন্ড ভালোবাসে নাম তাঁর আবির মাহমুদ।
ইতুও ভাসতো কিন্তু একসময় কি না কি ভেবে আবিরকে ছেড়ে দেয়। মাঝে আবির ডিপ্রেশনে চলে যায়। আর আমিও সুযোগ হাতছাড়া করিনি আবিরের সাথে ইতুর বিয়ে টা দিয়ে দেই, আমার আর ইতুর বিয়ের নাটক সাজিয়ে। ইতু আমার নাটকটা বুঝতে পারে নি।
রাজ দম নিয়ে আবার বলতে শুরু করলো, ইতু আমার আর তোমার মাঝে ভিলেন হয়ে এন্ট্রি নিচ্ছিল ব্যাপারটা আমি খুব করেই বুঝতে পেরেছি।”

–” রাজের কথাগুলো পরীর কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে। স্বপ্নের ঘোর লাগার মতোই।
পরী বুঝতে পারছে না তাই বলে এতো রহস্য পাকাতে হবে রাজকে।”

” রাজ শীতল চাহনিতে পরীর চোখে তাকিয়ে বললো,আর আমি নাটক করবোই না কেন, আমার পরী যে আমাকে উপদেশ দিয়েছে, আরেকটা বিয়ে করতে, তাহলে তুমিই বলো ওর কথা অমান্য করি কিভাবে।”

.
.
.
পরী নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনি।
রাজ কে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলো। পরী রাজের শার্ট খামচে ধরে বলতে লাগলো
আপনি বাজে খুব বাজে এতোটা বাজে পৃথিবীর সর্বোত্তম বাজে।
আপনি আমাকে এতোটা কষ্ট দিতে পারলেন বুঝি? কি করে বলুন?”

” পরীর কথাগুলো রাজের বুকে গিয়ে লাগছে খুব লাগছে একদম তীরের মতো লাগছে।
পরী তুমি কিভাবে ভাবলে এ কয়েকটা দিন তোমাকে না দেখে ছিলাম, আমি এ-ই ঘরে সিসি ফুটেজ লাগিয়ে রেখেছি বুঝলে?

” এই কথা শুনে পরী শান্ত চাহনিতে রাজের দিকে তাকালো। আজ যেন অবাকের ঘোর কাটতেই চাইছে না পরীর।”

” রাজ আবারও বলতে লাগলো,তোমার আকাশে যতোগুলো চাঁদ উঠেছে ঠিক আমার বুকেও ততোখানা।তুমি যতোটা আঘাত পেয়েছো আমিও যে পেয়েছি পরী।
এটা কি বলো…..?

” পরী তাকিয়ে দেখলো রাজের হাতে পরীর লেখা সেই চিঠিটা যার খামে লেখা
#রঙীন ফানুস।”

” পরী ভয়ার্ত চোখে নিচে তাকিয়ে রইলো।
রাজের দিকে তাকানোর কোন সাহস নেই পরীর।”

” ঠিক আছে পরী তাকাতে হবে না চলো আমার সাথে চলো….”

” পরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো কোথায়?”

—” রাজ কটাক্ষ করে বললো,আমার সাথে মহাকাশে বলে পরী কে কোলে নিয়ে নিলো।”

“” পরী ভীষণ অবাক ছাদে এসে।
ছাদটা এতো এতো সুসজ্জিত করা হয়েছে যে কারো মনই প্রেমে অসীম হয়ে সসীমে হারিয়ে যাবে।
চারদিকে হাজারো মোমবাতি, জ্বলছে, চাঁদ তারকারাও মিটমিটিয়ে জ্বলছে।

” রাজ পরীর হাত ধরে ছাদের কোণে নিয়ে এসে বললো নাও এটা ধরো।

” পরী আশ্চর্য চোখে তাকিয়ে দেখলো
রঙীন ফানুস।”

” হুম পরী শীঘ্রই তোমার চিকিৎসার জন্য আমরা আমেরিকা যাবো দুজন। আর সাথে হানিমুন টাও।
আমার পরিচিত এক ফ্রেন্ডের মাধ্যমে কথা হয়েছে। উনারা বলেছে তোমার অসুখটা যেহেতু জন্মগত নয়, তাই ভালো হওয়ার চান্স ৯৫%।

” রাজের কথা শুনে পরীর চোখমুখ খুশিতে মুক্তোর মতো জ্বলজ্বল করে উঠলো।
পরীও অন্য নারীদের মতো প্রেমের স্বাদ গ্রহণ করবে ভাবতেই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছে।
ভয়ে পরীর হাত – পা কাঁপছে।”

“” রাজ পরীর ভয় দেখে বললো,” ভয় পেয়ো না পরী, ভালো, খারাপ সব আল্লাহর হাতে। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের নিরাশ করবেন না।
এখন ধরো, এই রঙীন ফানুসে সকল দুঃখ মুড়িয়ে রঙীন আকাশে উড়িয়ে দাও। তোমার জীবনকে রঙীন করে তুলো।”

“পরী রাজের হাত চেপে ধরে, রঙীন ফানুস টি দুজন মিলে দূর আকাশে উড়িয়ে দিলো।পরীর দুঃখগুলো উড়ে যাক ঐ নীল আকাশে।”

” পরী চারদিকে তাকিয়ে দেখলো, ছাঁদে তাবু টাঙানো। ”

রাজ পরী কে টেনে নিয়ে তাঁবুর ভেতরে নিয়ে বসালো।

“পরীর গালে আলতো করে হাত রেখে বললো, পরী প্লিজ কথা দাও কখনো ছেড়ে যাবে না? তুমি সুস্থ হও না হও, তুমি শুধু আমারই স্বপ্নের পরী।
তোমার এই প্রবলেমের কথা কেউ জানবে না কেউ বুঝবে না। শুধু জানব আমি তুমি।
পরী… এই পরী শুনছো,,?

” হু ”

“রাজ পরীর কোলে শুয়ে পরলো।”

“পরী রাজের মাথায় আদরমাখা হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।”

” পরী আমাদের তীর্যক মিলন নাই বা যদি হয়, চোখের ভালোবাসার কমতি হবে না। দুজনে একে অপরের পাশে থেকে,সুখে দুঃখে সাথী, হয়েই থাকবো। পৃথিবীর সব প্রেমিক, প্রেমিকারা কী ওদের প্রিয় মানুষটাকে ছুঁয়ে দিতে পারে বলো?
পারে না আমরা না হয় আমাদের মতো করেই ভালোবাসবো দু’জনকে। ”

“হৃদয়ের পরশে পরী আজ কম্পিত।”

” মুগ্ধ কন্ঠে রাজ আবার বলতে শুরু করলো আমরা একটা বাবু দত্তক নিবো বুঝলে পরী। বাবু টা তোমায় পরী মা বলেই ডাকবে। তুমি হচ্ছ সত্যিকারের পরী। দু’জন বাবা মা হবো, আর পবিত্র মক্কায় গিয়ে হজ্জ পালন করব।”

“আজ একটু ভালোবাসবো , রাজ পরীর কানে কানে হিসহিসিয়ে বললো, ঠিক একটু খানি। ”

” পরী লজ্জা পেয়ে মুখ ঢাকলো।

” ঐ নিস্তব্ধ আকাশের চাঁদ,তাঁরা সাক্ষী হয়ে রইলো দুজনের নিরব ভালোবাসার। ”

#সমাপ্ত