#শরতের_এক_সাঁঝবেলায়
#পর্বঃ১০
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি
বাচ্চাদের ছুটি দেওয়ার পর সবাই দৌড়াদৌড়ি করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেটের কাছে দৌড়ে আসতে লাগলো।এই দৌড়াদৌড়িতে একটা বাচ্চা মেয়ে নিচে পড়ে গেলো।পড়ার কারণে তার হাঁটু ছিঁ’ড়ে র’ক্ত পড়তে লাগলো।ভয়ে এবং ব্যথায় বাচ্চা মেয়েটি নাক-মুখ ফুলিয়ে ঠোঁট উল্টিয়ে কান্না করে দিলো।সেইসময় কাছে প্রিসা এবং অন্য একজন টিচার উপস্থিত ছিলো।অন্য টিচারটিকে বাকি বাচ্চাদের দেখতে বলে প্রিসা দ্রুত পায়ে এগিয়ে এলো।কান্নার শব্দে কয়েকটা বাচ্চা ছেলেমেয়ে ওই বাচ্চাটাকে ঘিড়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।প্রিসা বাকি বাচ্চাদের চলে যেতে বলে হাঁটু ভাঁজ করে নিচে বসলো।র’ক্ত হাঁটু থেকে নিচে পড়তে শুরু করেছে।মেয়েটার চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে গিয়েছে।
” কান্না করে না ইশিতা বাবু।তুমি না লক্ষি মেয়ে।এখুনি টিচার ঔষুধ লাগিয়ে দেবো।” প্রিসার এতো আদুরে মাখা কথা শুনে ইশিতা নামের বাচ্চাটি আরো জোড়ে কান্না করতে লাগলো।প্রিসা দাঁড়ালো ইশিতাকে কোলে নেওয়া জন্য কিন্তু তার আগেই কেউ তাকে কোলে তুলে নিলো।প্রিসা পাশ ফিরে নিহাদকে দেখতে পেলো।নিহাদ ব্যস্ত ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করলো,
” ফার্স্ট এইড বক্স কোন রুমে আছে?”
প্রিসা দ্রুত পায়ে একটা রুমে ঢুকে গেলো যেখানে বিভিন্ন মেডিসিন,মেয়ে টিচারদের প্রয়োজনীয় জিনিস সহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থাকে।ওখানে থাকা কর্মরত মাসিটি তাড়াতাড়ি ফার্স্ট এইড বক্স এসে টুলে রাখলো।তবে ইশিতা ঔষধ লাগাবেনা বলে আরো জোড়ে কান্না করছে।অনেক বুঝিয়েও তাকে মলম লাগানো যাচ্ছেনা।এবার নিহাদ এগিয়ে এলো।ইশিতার চোখ মুছে তার ফোলা ফোলা গায়ে নিঃশব্দে নিজের অধর দিয়ে একটা আদুরের স্পর্শ দিলো।এতে ইশিতার কান্না কিছুটা কমে এলো।পকেটে হাত দিয়ে নিহাদ একটা লাভ ক্যান্ডি বের করে ইশিতার হাতে দিলো এবং চকলেট পেতেই ইশিতার কান্না একদম বন্ধ হয়ে গেলো।চকলেট পেয়ে সে সবব্যথা যেন এক নিমেষে ভুলে গেলো।কথার মাঝে ভুলিয়ে নিহাদ যত্ন সহকারে রক্ত মুছে মলম লাগিয়ে তার পায়ে ব্যন্ডেজ করে দিলো।
” এখন জ্বলছে বাবু?” মাথায় হাত রেখে জিজ্ঞেস করলো নিহাদ।মুখে চকলেট নিয়ে ইশিতা মাথা নাড়িয়ে না বোঝালো।এরই মধ্যে একজন মহিলা হন্তদন্ত হয়ে রুমের ভিতরে ঢুকলেন।যেহেতু ইশিতা প্রিসার ক্লাসে পড়ে তাই প্রিসা এক দেখাতেই চিনে ফেললো এটা ইশিতার মা।তিনি গিয়ে ইশিতাকে একটু বকাবকি করে জরিয়ে ধরলেন।মেয়ে ব্যথা পেয়েছে দেখে যে তিনিও খুবই কষ্ট পাচ্ছেন এটা উনার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।প্রিসার মনে পড়ে গেলো তার বাবা-মায়ের কথা।তাদের দু’বোনের একটু আঁ’চ’ড় লাগলেও তারা অস্থির হয়ে যেতেন।বাবা তো চলে গিয়েছে তবে তাদের মা এখনো তাদের কষ্টে ব্যথিত হন।ইশিতা পা খুলে হাঁটতে পারছেনা দেখে নিহাদ তাকে আবারো কোলে তুলে নিয়ে গেট পর্যন্ত গেলো।ইশিতার মা রিকশা নিয়ে এলে নিহাদ তাতে ইশিতাকে বসিয়ে দিলো।পেছন থেকে এসব কিছু লক্ষ্য করছে প্রিসা।প্রথমদিনই নিহাদের এতো ভালো গুণ দেখে প্রিসার খুবই ভালো লাগলো।নিহাদের সামনে না গিয়ে নিঃশব্দে সেখান থেকে সরে গেলো প্রিসা।
.
.
অফিস শেষ হওয়ার আর দু’ঘন্টার মতো আছে।পালক রাদের দেওয়া ফাইলটা জমা দিয়ে মাত্র টেবিলে মাথা রেখেছে।সেইসময় একটা ছেলে তার ডেস্ক সামনে এসে দাঁড়ালো।পালক মাথা তুলে দেখলো সাব্বিরকে।সাব্বিরও তার সাথেই চাকরিতে জয়েন করেছিলো।তবে তাদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত কোন কথা হয়নি।আজ হঠাৎ তাকে দেখে পালক কিছুটা অবাক হলো।সাব্বিরই প্রথমে বললো,
” তোমার শরীর কি খারাপ?”
” না না আমি ঠিক আছি।” তাড়াহুড়ো করে বললো পালক।
” ও আচ্ছা।আমি এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম,তখন দেখলাম তুমি মাথা নিচু করে আছো তাই ভাবলাম তোমার হয়তো শরীর খারাপ লাগছে।আমি সাব্বির।তোমার নাম তো পালক তাইনা?”
” জ্বি।”
” আমার ডেস্ক একদম তোমার পেছনে।আমি খেয়াল করি মাঝেমধ্যে তুমি কারো সাথে কাজের বাইরে কথা বলো না।এতো চুপচাপ থাকো কেন তুমি?” পালক কোন জবাব দিলো না।তার এটা ভেবে অস্তিত্ব হচ্ছে যে অপরিচিত কেউ তাকে তার অগোচরে খেয়াল করে।পালকে চুপ থাকতে দেখে সাব্বির আবারো বললো, ” রাদ স্যার মনে হয় তোমার সাথে একটু বেশিই ফ্রী।প্রায় দেখি তুমি তার কেবিন যাও।ওনার এসিস্ট্যান্ট বারবার তোমার খবর নিতে আসে।আমি মাঝে মাঝে গেলে কেমন কম কথা বলে থাকে।কাজের বাইরে তো কোন কথায় বলেনা।আর কোনদিন তো দেখলামও না ওখানে কেবিন থেকে বের হতে।সারাদিনই কি ওখানে বসে থাকে নাকি?” সাব্বির আর কিছু বলবে তার আগেই তাকে কেউ ডেকে নিয়ে গেলো।তবে সে চলে গেলেও তার বলা একটা কথা পালকের মাথায় ঘুরতে লাগলো।
” ওনার সমস্যাটাকি অফিসের কেউ জানে না?”
___________________________________________
আজকে মামাবাড়িতে পালকদের শেষ দিন।ফারিয়া আর তার হাসবেন্ড বিকেলেই চলে গিয়েছে।কাল সকালে পালকরা চলে যাবে।সবাই হালকা কথা বলছে আর খাবার খাচ্ছে।
” আরে তুমি এতো কম খাচ্ছো কেন?কিরকম যেন শুকিয়ে যাচ্ছো।আরেকটু মাংস নাও তো,কম নেই অনেক আছে।” মূলত কথাগুলো দীপ্তি অয়নকে বলছে।খাবার টেবিলে বসার পর থেকে দীপ্তি অয়নের কাজগুলো পালকের বিরক্ত লাগছে।দীপ্তি জোড় করে অয়নের পাতে খাবার তুলে দিচ্ছে।সবাই ভাবছে নতুন দম্পতিদের সুখকর মূহুর্ত তবে পালকের কাছে কেন যেন এগুলো সব নকল মনে হচ্ছে।যাকে বলে আলগা পিরিত।দু’জনের হাবভাবেই যেন একটা মিথ্যের আস্তরণ দিয়ে ঢাকা।মনে হচ্ছে সবাইকে দেখার জন্যই দু’জনেই অভিনয় করছে।বিরক্ত লাগছে পালকের তবে প্রিসার এতে কোন হেলদোল নেই।সে স্বাভাবিক ভাবে খেয়ে চলেছে এবং মামাদের সাথে হালকা কথা বলছে।
খাবার শেষে বসার ঘরে বসে আছে বড়রা সবাই।সব কাজিনরা ঘুমাতে চলে গেলেও অয়ন আর দীপ্তি এখানেই আছে।অন্তিম সাহেব সবাইকে বসতে বলেছেন।রাদিয়া বেগম ইশারায় উনাকে কিছু একটা বলতে বলছেন।অনেক ইতস্তত নিয়ে অন্তিম সাহেব বোনকে বললেন,
” আপা আসলে তোকে একটা কথা বলার ছিলো।”
” কি কথা ভাই?এতো ইতস্তত লাগছে কেন?কোন সমস্যা হলে বল।”
অন্তিম সাহেব আরেকবার রাদিয়া বেগমের দিকে তাকালেন।
” আসলে আপা বউমার মানে দীপ্তির একজন খালাতো ভাই আছে নাম করিম।ছেলে মোটামুটি ভালো।নিজেদের একটা ফ্যাক্টরি আছে সেখানে মাঝে মাঝে যায়।টাকা পয়সাও ভালো আছে।”
” হুম তা না হয় বুঝতে পারলাম কিন্তু এসব তুই আমাকে বলছিস কেন?”
” আসলে আপা দীপ্তি নাকি প্রিসা মায়ের কথা ওর খালাকে বলেছে।উনি নাকি করিম এর সাথে প্রিসার বিয়ে দিতে চাই।ছেলে ভালো তবে…… ”
” তবে কি?”
” আসলে বয়সটা একটু বেশি।” মাথানিচু করে বললেন অন্তিম সাহেব।তিনি মোটেও বোনকে বলতে চাননি,রাদিয়া বেগমের কথায় বলতে বাধ্য হলেন।
” বয়স কত?” ভ্রু-কুচকে জিজ্ঞেস করলেন অনিলা বেগম।
” আপা বয়স মোটেও বেশি নয়।মাত্র ৪৫ বছর।আপনার ভাই একটু বেশিই ভাবে।ছেলেদের অনেক টাকা।বলছি কি পাত্র ভালো আছে বিয়েটা দিয়ে দিন।”
” হ্যাঁ আন্টি আমার ভাইয়ের মোটেও বয়স বেশি নয়।আর আপনার মেয়েরও তো বয়স কম নয় এর থেকে আর কম বয়সী পাত্র আপনি পাবেন নাকি।” তুচ্ছ তাচ্ছিল্য নিয়ে কথাটি বললো দীপ্তি।
” এ্যাঁ….নিজে একটা তাগড়া যুবক ছেলে পিটিয়ে বিয়ে করে আমার বোনের জন্য ধরে নিয়ে এসেছে এক আধবুড়োকে।যেখানে সে আমার বোনের থেকে বয়সে বড় আবার বলে কিনা পাত্র পাবেনা।যত্তসব।” বিড়বিড় করে বললো পালক।
” আপা আর কত মেয়েকে ঘরে বসিয়ে রাখবেন?বয়স তো কম হলো না,পঁচিশ হতে চললো বলে।আর বেশি দেরি করলে সারাজীবন বিয়ে না করে থাকতে হবে নয়তো দাদার বয়সী কাউকে বিয়ে করতে হবে।আর ছোটটারও তো কুড়ি পার হয়ে গিয়েছে,তাকেও তো বিয়ে দিতে হবে।তাই যত তাড়াতাড়ি বড়টাকে বিয়ে দিতে পারবেন তত তাড়াতাড়ি ছোটটারও একটা কূল করতে পারবেন।তারপর আপনার বোঝা কমবে।মানুষের কোন বিশ্বাস নেই।মেয়েদের বিয়ে না দেখে যদি আপনি চলে যান,তাই সময় থাকতে কারো কারে তুলে দিয়ে ভার মুক্ত হয়ে যান তাড়াতাড়ি।এছাড়াও আপনাদের তো টানাটানির সংসার।বিয়ে দিয়ে দিলে একটা মানুষের খরচ অন্তত কমবে।তারউপর বাবা হারা মেয়ে।এখন খানিকটা রুপ,যৌবন আছে কয়েকদিন পর সেটাও থাকবে না।তখন তো বিয়ের কোন আশাই থাকবে না।তারউপর দু’টোর স্বাস্থ্যও তো ভালো না।বিয়ে দিয়ে দিন দেখবেন একদম মোটাতাজা হয়ে যাবে।”
এবার পালক আর চুপ থাকতে পারলো না।উঠে দাঁড়িয়ে গেলো সে।
” কেন মামি শশুড় বাড়ি কি হাসপাতাল নাকি যে ঔষধ খাইয়ে মোটা বানিয়ে দেবে?মামি আমাদের জন্য আপনার এতো চিন্তা দেখে ভালে লাগলো তবে বেশি চিন্তা করবেন না।আমাদের বাবা নেই,আমাদের টানাটানির সংসার তবে এতোটাও না।আমি আর আপু চাকরি করে মাস শেষে মোটামুটি ভালোই বেতন পেয়ে থাকি।মাও হাতের কাজ করে টাকা জমিয়ে থাকেন।এগুলো দিয়ে হাসিখুশি ভাবে চলে যায় আমাদের দিন।আর আমরা মানুষ কোন চা’হি’দা মেটানোর য’ন্ত্র নয় যে রুপ দিয়ে অন্যকে ব’শে করে বিয়ে করবো।আর এই যে তোমাকে কে বলেছে আমার বোনের জন্য পাত্র খুঁজতে তোমাকে কি কেউ দায়িত্ব দিয়েছে?আগ বাড়িয়ে আমাদের পরিবারের নাক কে ঢুকাতে বলেছে?”
” আমি তো তোমাদের ভালোর জন্যই করেছি।” গমগম কন্ঠে বললো দীপ্তি।
” তোমার ভালো তো’মা’র কাছে রাখো।দরকার নেই আমাদের এতো ভালোর।তুমি আমাদের কেউ হওনা।বাইরের লোক,বাইরের লোকের মতো থাকো।বেশি অধিকার খাঁটানোর চেষ্টা করবে না।”
” পালক থামো তুমি।”
” মা……. ”
” আমি বলেছিতো থামো।বসো শান্ত হয়ে।”
মায়ের কথা শুনে পালক বসে পড়লো।মাথায় হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো।অনিলা বেগম উঠে দাঁড়ালেন।রাদিয়া বেগমের চোখে চোখ রেখে বলতে লাগলেন,
” আমার মেয়েদের আমি মোটেও বো’ঝা মনে করিনা যে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে বোঝা হালকা করবো।আমাদের যা আয় আছে তাতেই আমরা ভালো আছি।তাদের যখন ইচ্ছে হবে তারা বিয়ে করবে।আমার মেয়েদের আমি যথেষ্ট শিক্ষিত করেছি।আমি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেও তাদের অন্যের দ্বারস্থ হতে হবে না।আমার ভরসা তারা দু’বোন একে অন্যের খুঁটি হবে।আর চিন্তা করো না আমরা মা-মেয়েরা ভালোই আছি,ওনাকে মনে রেখে চলে যাচ্ছে আমাদের দিন।তোমরা চিন্তা করো না আর যাইহোক অন্তত তোমাদের বাড়িতে এসে উঠবো না,তোমাদের সাহায্য চাইবো না,হবো না তোমাদের বোঝা।উনি চলে গেলেও আমাদের মনে সাহস,শক্তির বীজ বপন করে গিয়েছেন।একা এই সমাজের সাথে লড়াই করে আমরা টিকে থাকতে পারবো।বিপদে পড়ে অন্তত তোমাদের বাড়িতে এসে ঠায় নেবো না এটা নিশ্চিত থাকো।
” আপা তুমি….. ”
” অন্তিম।” বড় ভাই আহিল খন্দকার এর কথা শুনে অন্তিম সাহেব চুপ হয়ে গেলেন।ভাসুরের কথা শুনে রাদিয়া বেগমও কিছু বলতে চেয়েও বললেন না।
” তোমাদের দায়িত্ব ছিলো বলার তোমরা বলেছো।বউমা তোমাকে এই কাজটা করতে কেউ বলেনি কিন্তু তুমি করেছো ভালো হয়েছে।তবে এরপর থেকে তুমি অন্যদের ব্যপারে অনুমতি ব্যতিত কোন কাজ করবে না।তোমরা বলেছে এবার সিদ্ধান্ত তাদের উপর ছেড়ে দাও।মা-মেয়েরা মিলে ভেবে দেখুক তারপর ইচ্ছে হলে রাজি হবেনা হলে নয়।এটা তাদের ব্যপার তাই জোড় করবেনা কেউ।এবার সবাই ঘুমাতে যাও আর কেউ এই বিষয় কথা বলবে না।”
আহিল সাহেব এর কথা শুনে সবাই চুপচাপ চলে গেলো ঘুমাতে।বিয়ের কথা শুনে অয়ন মনে মনে বিদ্রুপের হাসি হেঁসেছে কিছুক্ষণ।
” প্রিসারাণী তোমার কপালে এই ধরণের আধবুড়োই জুটবে।হাহাহা……।কোন রাজপুত্র নেই তোমার কপালে।জুটলেও আমি সেটাকে বেশিদিন স্থায়ী হতে দেবো না। ”
এই সবের মধ্যে প্রিসা ছিলো একদম নিশ্চুপ।কারণ তার কথা বলার প্রয়োজনই হয়নি।তার মা আর বোন মিলেই যখন সব বলে দিয়েছে তখন আর কথা না বাড়ানোই ভালো।
এখন প্রায় রাত একটা বাজছে।একটা গোপন মিটিং শেষ করে নিজ গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরছেন কাদের আলী।রাস্তা ফাঁকা তাই কাদের আলী দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন।আচমকাই একটা গাড়ি তার সামনে এসে রাস্তা ব্লক করে দিলো।কয়েকবার হর্ণ বাজানোর পরেও যখন গাড়িটি সরলো না তখন কাদের আলী কথা শোনাতে লাগলেন।
” কিরে গাড়ি সরা।রাস্তা আটকে রেখেছিন কেন?খেয়ে নে’শা’য় ডুবে আছিস নাকি?গাড়ি সরা শা*লা,নয়তো পি’শে দেবো একেবারে।” কথা বলতে বলতে কখন যে কাদের আলী বাইরে বেরিয়ে এসেছে সেটা তিনি নিজেও খেয়াল করেননি।হুট করেই পেছন থেকে কেউ তার ঘাড়ে কিছু একটা ঢুকিয়ে দিলো।কয়েক মিনিটের মধ্যেই কাদের আলী রাস্তায় পড়ে গেলেন।মুখোশের আড়ালে জয়ের হাসি হাসলো পেছনে থাকা মানুষটি।
চলবে…….