শালিকা যখন বউ part_15+16

0
1518

শালিকা_যখন_বউ
#part_15+16
#Written_by_Adnan_Sami_Raj

মীমঃ আপনি কী জানেন ছেলেটা।

আমিঃ হুম ছেলেটার নাম সাজিদ। এবং নিশি আর সাজিদ একে অপর কে ভালোবাসে।

মীমঃ না আপনি যেটা জানেন সেটা সত্যি নয়। সত্যি টা আমি আপনাকে বলছি।

তারপর মীম আমাকে সাজিদ এর ব্যাপারে সব কথা গুলো বলল। যা শোনার পর নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছিল। মীম বলল যে।


মীমঃ আমি আর নিশি একি ভার্সিটি তে পড়তাম আর একি ডিপার্টমেন্ট এ। যার কারনে আমার আর ওর মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যাই। আমরা দুজন সবসময় এক সাথে থাকতাম। একদিন আম আর নিশি ভার্সিটি ক্যাম্পাস এ বসে ছিলাম তখন একটা ছেলে এসে নিশি প্রপোজ করে। কিন্তু নিশি তাকে না বলে দেয়। আমি এর কারন জানতে চাইলে নিশি জবাবে বলে যে তার ভালোবাসা শুধু তার বরের জন্য। তাই আমি নিশিকে আর কিছুই আস্ক করি না। ( এটুকু বলে মীম থামল)

আমিঃ তারপর কী হলো??

মীমঃ ওই ছেলেটির নামই ছিল সাজিদ। কিন্তু নিশির মানা করার পরেও সে নিশির পিছু ছাড়ে নাই। তাকে প্রতিদন বিরক্ত করতো,, কিন্তু নিশি কিছুই বলতো না। আর একদিন সাজিদ এস্ব হঠাৎ নিশির হাত চেপে ধরে এবং সেদিন নিশি আর সহ্য করতে না পেরে পুরো কলেজ এর সামনে সাজিদ করে মারে। কিন্তু সাজিদ সেদিন যাওয়ার আগে বলেছিল যে সে নিশিকে সুখে থাকতে দিবে না আর আজ দেখুন তার কথাই সত্যি হলো ( কান্না করতে করতে কথা গুলো বলল মীম)

আমি এখন কী করবো কিছুই বুঝতেছিলাম না। কারন আমার যে করার মত কিছুই নেই। আমি যে নিশির সাথে বড় অন্যায় করেছি।


মীম কান্না থামিয়ে আমাকে বলল।

মীমঃ আপনি কী জানেন আপনি যখন নিশিকে তাড়িয়ে দেন তখন তার পেটে আপনার সন্তান ছিল।

আমিঃ মানে কি বলছো তুমি ( অনেক অবাক হয়ে)

মীমঃ হ্যা আমি ঠিকই বলছি। আপনি যখন ওকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন তখন সে আপনার সন্তান এর মা হতে যাচ্ছিল। আর এটা নিয়ে সে কতটা খুশি ছিল সেটা আপনাকে বলে বোঝান যাবে না। সে আপনাকে বলার আগে আমায় ফোন দিয়েছিল আর বলেছিল যখন সে আপনাকে এই কথা টি বলবে তখন আপনার রিএকশন কেমন হবে। এটা ভেবেই সে অনেক খুশি ছিলো। কিন্তু সে আপনি কি করলেন( মীম আর কিছু বলতে পারল না তার আগেই কান্নাই ভেঙ্গে পড়ল)

আমিঃ মানে নিশির সন্তানের বাবা আমি। আর আমি তাকে কি না কি ভেবেছিলাম ( আমিও প্রচুর কান্না করছিলাম তখন মীম আমাকে বলল)

মীমঃ এখন কান্না করে কি হবে যা হওয়ার তা হয়েই গেছে এখন আর এগুলো ভেবে কি করবেন।

আমিঃ না এখনও কিছু হয় নাই ( তারপর আমি মীম কে নিশির কথা বললাম)

মীমঃ সত্যি বলছেন নিশি এখনও এই শহরেই থাকে।

আমিঃ হুম, কিন্তু তোমাকে আমার জন্য একটা কাজ করতে হবে যাতে আমি আবার নিশিকে ফিরে পাই।

মীমঃ কি করতে হবে আমায় বলুন।

তারপর আমি মীম কে আমার প্লান বলি আর সেও রাজি হয়ে যাই। তাই আমিও নিজের বাসাই চলে আসি।


বাসাই আসার পর আম্মু আমাকে বলে।

আম্মুঃ বাবা মেয়েকে কি তোর পছন্দ হয়েছে।

আমিঃ আম্মু আমি এই বিয়েটা করতে পারবো না।

আম্মুঃ তুই কিন্তু আমায় কথা দিয়েছিস।

আমিঃ আমি কেমন করে এই বিয়ে করবো বল।

আম্মুঃ কেন করবি না শুনি।

তারপর আমি নিশির কথা আর ওর আর আমার বাচ্চার কথা আম্মুকে বলি। তখন আম্মুও কান্না শুরু করেদেয় আর বলে।

আম্মুঃ আমার বউমা আর নাতিকে কবে আনবি বাবা।

আমিঃ খুব জলদি আনবো,তার আগে তোমায় একটা কাজ করতে হবে।

তারপর আমি আম্মুকে সব কিছু বুঝিয়ে ওপরে চলে আসি।


আমি রুমে এসে ভাবতে লাগি কীভাবে কি করবো। নিশি কি আমায় ক্ষমা করবে নাকি করবে না….

চলবে…..

শালিকা_যখন_বউ
#part_16
#Written_by_Adnan_Sami_Raj

রুমে এসে নানান চিন্তা আমার মাথাই ঘুরপাক খাই। বিশেষ করে নিশির কথা। সে কি আমায় ক্ষমা করবে নাকি করবে না।


তখন আমার সাজিদ এর কথা মাথাই আসে। কেন সাজিদ এমন টা করলো সেটা তো আমার জানা দরকার তাই আমি আমার ফ্রেন্ড দের ফোন দিই আর বলি এখুনি আমার সাথে দেখা করতে। আর আমিও বেরিয়ে পড়ি।

মামুনঃ কিরে এত জলদি দেখা করতে বললি কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি( মামুন আমার বন্ধু)

আমিঃ হুম বলছি তার আগে রবি আর মিজান কে আসতে দে।

কিছুক্ষন পড়ে রবি আর মিজান চলে আসে আর আমি ওদের কে মীমের বলা সকল কথা ওদের খুলে বলি। সব শোনার পরে ওরা বলে।

রবিঃ ভাবিকে কি রাজি করাতে পারবি বলে মনে হয় না।

আমিঃ হুম হইতো বা কিন্তু হাল ছাড়লে তো চলবে না। আর শোন তোদের একটা কাজ করতে হবে।

ওরাঃ হুম,, কি কাজ বল।

আমিঃ সাজিদ কে যে ভাবেই হোক তোদের খুজে বার করতে হবে। আর এই নে সাজিদ এর ছবি ( তারপর আমি ওদের কে সাজিদ এর একটা ছবি দিই )

ওরাঃ ওকে তোর কাজ হয়ে যাবে। তার আগে তুই ভাব ভাবিকে কি ভাবে ম্যানেজ করবি।

আমিঃ ঠিক বলেছিস, কিছু তো একটা করতেই হবে। আচ্ছা তোরা এখন থাক আমি এক জায়গা থেকে আসছিল।

ওদের থেকে বিদায় নিয়ে আমি সোজা অফিস এ চলে আসি। অবশ্য অফিস এ আসার মূল উদ্দেশ্য হলো নিশির বাড়ির ঠিকানা টা নেওয়া, কারন আমি ওর বাসার ঠিকানা জানি না। অফিস এ আসার পরে আমি ম্যানেজার কে ফোন দিই আর অফিস এ আসতে বলি। কিছুক্ষন পরে ম্যানেজার অফিস এ আসে আর বলে।

ম্যানেজারঃ স্যার কোনো দরকারি কাজ আছে নাকি।

আমিঃ না তেমন কিছু দরকারি কাজ না আমি শুধু নিশির বাসার ঠিকান নেওয়ার জন্যই অফিস এ এসেছি।

ম্যানেজারঃ ওকে স্যার একটু ওয়েট করেন আমি নিয়ে আসছি।

তারপর ম্যানেজার আমাকে নিশির ঠিকানাটা দেই আর আমি সেটা নিয়ে বেরিয়ে পরি।


প্রায় আধা ঘন্টা ড্রাইভ করার পরে আমি নিশির বাসাই পৌছাই। then আমি ওর বাসার কলিং বেল এ চাপ দিই কিছুক্ষন পরে নিশি এসে দরজা খুলে দেই। আর আমি নিশি কে দেখেই হেসে ফেলি কারন সে সাড়া গায়ে ময়দা মেখে আছে। তখন নিশি বলে।

নিশিঃ ওই আপনি পাগলের মতো হাসছেন কেন। আর এখানেই বা কি করছেন হুম( বেশ রেগেই কথা টি নিশি বলল)

আমিঃ বাহ রে নিজের বউ এর বাসাই আসতে আবার কারো পারমিশন লাগে নাকি।

নিশিঃ মানে কে আপনার বউ আর এসব কি বলছেন ( আবাক হয়ে)

আমিঃ আমার সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে সেই আমার বউ বুঝেছেন। আর দেখি সাইড দেন আমি ভেতরে ডুকবো।

নিশিঃ আইছে আমি কারো বউ,, আর ১ বছর আগেই আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে( কথা বলার সময় ওর গলাটা ভারি হয়ে আসে)

আমিঃ তো কি হয়েছে আমি আবার বিয়ে করবো ( কথা বলতে বলতে বাড়ির ভিতরে ডুকে যাই আর তখুনি দেখি একটা ফুটফুটে বাবু শুয়ে আছে হইতো এটাই আমার বাবু হবে। ওকে দেখার সাথেসাথেই আমার চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে আসে)

নিশিঃ কিক,কি বলছেন কি আপনি।

আমি এর কথার জবাব না দিয়ে বাচ্চার দিকে এগোতে থাকি আর যখুনি আমি বাচ্চা টিকে স্পর্শ করতে যাবো তখুনি নিশি আমাকে ধাক্কা দেই আর বলে উঠে।

নিশিঃ একদম আমার বাচ্চা ধরার চেষ্টা করবেন না তাহলে কিন্তু আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না।

আমিঃ ও কি শুধুই তোমার বাচ্চা।

নিশিঃ হ্যা ও শুধুই আমার আর কারো না…..

চলবে…..