সবটা অন্যরকম♥
#পর্ব_২৯
Writer-Afnan Lara
.
গোসল সেরে দিবা জলদি করে চুল না মুছেই ছুটে আসলো আহনাফকে দুপুরের খাবার দেবে বলে
আহনাফ তখন ডাইনিংয়ে বসে মিনির খাওয়া দেখছিল
দিবা ওদের দিকে এক নজর তাকিয়ে ছুটে গেলো রান্নাঘরে,সেখান থেকে তরকারি ভাতের পাতিল নিয়ে টেবিলে রেখে ফটাফট আহনাফের প্লেট রেডি করে বললো”নিন খাওয়া শুরু করে দিন”
.
আহনাফ মিনির থেকে চোখ সরিয়ে দিবার দিকে তাকালো এবার
সাদা রঙটা বড়ই অদ্ভুত,পরলে যে কোনো মানুষকেই অন্যরকম লাগে,তার উপর যদি সাত রঙের ফোটা ফোটা আড়ি ডিজাইন থাকে তাহলে সেই সাদার রুপ আরও বেড়ে যায়,আজ ঠিক সেরকম একটা জামা পরেছে দিবা
ভেজা কালো চুলগুলো এক পাশে ফেলে সে খাবারের আয়োজন করতে বড়ই ব্যস্ত
বিয়ের পরেরদিন নতুন বউদের যেমন লাগে ঠিক তেমন,শুধু শাড়ীটা পরনে নেই,মেয়েরা ভেজা চুলে কেন এত সুন্দর হয়
চুল তো মোছেইনি,সাথে মুখটাও না,আর তাই মুখ শুকাচ্ছেও না,চুলের পানির তেড়ে মুখটা ভেজাই রয়ে আছে তখন থেকে
আজকের দিনের রোদটা চলে যাচ্ছে,,তার শেষ রশ্নি জানালা দিয়ে এসে ওয়ালে পড়েছে,মানে এখন তার যাওয়ার পালা,দিবা ঠিক সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে বলে রোদটা তার মুখে পড়েছে
তার মধ্যে পানি পড়ে তার মুখের ঝলক দেখতে পাচ্ছি যেমনটা আমার কল্পনার সেই মেয়েটির মুখ ছিলো
.
দিবা হাত বাড়িয়ে আহনাফকে বলছে খাওয়ার জন্য অথচ দিবার হাত নড়াচড়া ছাড়া আর কিছুর দিকেই খেয়াল করতে পারছে না আহনাফ,দিবার কথা তার কানের কাছে এসে মিলিয়ে যাচ্ছে,কোনো এক নাম না জানা ঘোরের ভেতর ডুব দিয়েছে মন
আহনাফের সাড়া পেলো না বলে দিবা একাই খেতে বসলো,আহনাফের চোখ তাও ওর দিকেই,এখন কিন্তু রোদের শেষ ঝলক ওর মুখে নেই,আস্তে করে চোখের পলক পড়তেই হুস আসলো আহনাফের
একটু নড়েচড়ে বসে জিভ দিয়ে ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিলো সে
ভাবতেই লজ্জা লাগছে যে সে কি ভাবছিলো এতক্ষণ
চোখ বন্ধ করে ঘুরে বসে চোখ খুলে নিজের প্লেটটা নিজের কাছে নিয়ে আনলো সে
দিবা মিনির দিকে তাকিয়ে খাচ্ছে,,খালামণি ঘুম থেকে উঠেছেন সবে,,এসে দেখলেন ওরা সবেমাত্র খেতে বসেছে
.
মাথার চুলগুলো গুছিয়ে খোঁপা করতে করতে খালামণি বললেন”কিরে তোরা এখন খাচ্ছিস?”
.
চমকে যাওয়া মুখ নিয়ে তিনি এবার সোফায় এসে বসলেন,প্রশ্নের উত্তরের আশায় এখনও চেয়ে আছেন ওদের দিকে
দিবা দেখলো আহনাফ মিটমিট করে হাসছে আর তার প্লেটের ভাতের মাঝে আঙ্গুল দিয়ে গোল গোল করে ঘুরাচ্ছে,দিবা বুঝলো উত্তরটা তাকেই দিতে হবে,মুখের লোকমাটা শেষ করে একটু পানি খেয়ে সে বললো”আসলে আজ ভার্সিটি থেকে আসতে দেরি হয়ে গিয়েছিলো,আমাদের সাদাত স্যার অসুস্থ বলে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম আমরা,,আবার বাসায় ফেরার পর আদনান ভাইয়া এসেছিলো”
.
ওহ,,তোর জন্য জামাকাপড় এনেছে,কই দেখি?
.
দিবা আহনাফের দিকে তাকালো আবার,চোখ দিয়ে বুঝাতে চাইছে যে উত্তরটা এবার আপনাকেই দিতে হবে,কিন্তু নাহ,আহনাফ এখনও কিছুক্ষণ আগের সেই মুগ্ধতাকে মনে করতে গিয়ে হারিয়ে সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে চলে গেছে
.
খালামণি টিভি অন করে বললেন”এগুলো কি ঈদের জামা যে দেখালে পুরোনো হয়ে যাবে,দিবা তুই আস্ত একটা পাগল”
.
দিবা আহনাফের পাতে তরকারির ঝোল ঢেলে দিলো,,তারপরেও আহনাফ এখনও মিটমিট করে হাসছে
আশ্চর্য !এই লোকটা কি আবার মদ খেলো নাকি,এরকম করছে কেন!
.
এই যে ভাইয়া,,??
.
আহনাফ চমকে প্লেটের থেকে চোখ উঠিয়ে দিবার দিকে তাকিয়ে বললো”হ্যাঁ?কি হলো?”
.
কি হলো??খালামণি জিজ্ঞেস করছে আমি কেন আদনান ভাইয়ার থেকে জামাকাপড় নিই নাই
.
ওহ!মা আসলে আমি দিবাকে নিতে দি নাই
.
মা চোখ বড় করে বললেন”কেন?”
.
আমি দিবাকে কিনে দেবো,,দান খয়রাতের জিনিস দিবা কেন নেবে?তুমি ভেবে দেখো,দিবা আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে এখানে থাকছে,তো আমাদের উচিত ওকে কিনে দেওয়া,অন্যের দেওয়া জিনিস কেন ও রাখবে?
.
মা মুখটা ছোট করে বললেন”হুম,ঠিক বলেছিস,আমারও মাথায় আসছিল বিষয়টা,ভালো করে ভেবে দেখিনি বলে হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম,একদম নেক কাজ করেছিস,কাল তুই দিবাকে নিয়ে গিয়ে নতুন জামা কিনে দিস”
.
দিবা খাওয়া শেষ করে উঠে চলে গেছে রান্নাঘরের দিকে
আহনাফ ওর চলে যাওয়া দেখে মাথার চুলগুলোকে নাড়িয়ে নিজের প্লেটটা নিয়ে উঠে দাঁড়ালো
দিবা ভেসিনের কাছে এসে প্লেট ধুচ্ছে,আহনাফ আস্তে আস্তে এসে প্লেটটা সাইড করে রেখে দিয়ে কোনোরকমে চলে আসলো,দিবার দিকে আর তাকাবে না ঠিক করেছে
চুপচাপ রুমে এসে রেডি হচ্ছে সে এখন,পাঁচটার বেশি বাজে,আজ দেরি হয়ে গেলো,হাই স্পীড দিয়ে যেতে হবে
.
নেভি ভ্লু টিশার্টের উপর কালো জ্যাকেটটা পরে মাথার চুলে হাত বুলিয়ে আহনাফ আলমারি খুললো,সেখান থেকে মাস্ক আর চশমা নিয়ে পকেটে ঢুকিয়ে আইডিকার্ডটাও খুঁজে বের করলো সে,,হাতে লাগানো ট্যাটুটা ড্রয়ার থেকে বের করে সেটার কাগজ ফেলে হাতে লাগিয়ে নিলো,,যেকোনো সময়ে এই ট্যাটুটা উঠিয়ে ফেলা যায়,বারের কাজের জন্য এটা হাতে রাখে সে
বাসায় এসেই খুলে ফেলে আবার
অফিসের ব্যাগটা খুঁজে হাতে নিয়ে সে বের হলো রুম থেকে
দিবা খালামণির পাশে সোফায় বসে ছিল তখন,,দুজন মিলে টিভি দেখছে,,মিনি দিবার পাশেই চিটপটাং হয়ে শুয়ে আছে,এত ভালো খাওয়া দাওয়ার পর একটু ঘুম দরকার
আহনাফ যাওয়ার সময় ওদিকে এক নজর তাকিয়ে চোখটা আবার নামিয়ে নিয়ে বললো”মা,, যাই”
♣
আজ রাস্তায় জ্যাম ছিল না বলে বেশ তাড়াতাড়ি করেই আহনাফ বারে চলে এসেছে,ঢোকার সময় মাস্ক আর চশমাটা পরে নিলো সে,নাহিদ আগেই এসে পড়েছে,গালে হাত দিয়ে কিসের যেন হিসেব করছে সে
আহনাফ ওর পিঠে এক ঘা বসিয়ে দিয়ে ওর পাশে বসে বললো”কিরে,আজ দেখি আমার আগে আসলি!”
.
আরে হিসেব করতে দে,,দশ হাজার /বিশহাজার/ ত্রিশ হাজার
.
এ্যাহ!সেটা আবার কিসের হিসেব,এত টাকা তো তুই মাসেও পাস না
.
এক্সাক্লি!মিশকাকে বিয়ে করলে ওর পিছনে কত টাকা যাবে সেসব হিসেব করছি সেই অনুযায়ী জব খুঁজবো আমি
.
হায় রে,এত পরিকল্পনা!
.
নাফি?
.
কিরে প্রিতম,আবার কি,আজ কিন্তু বিয়ার খাব না আমি
.
না সেটা না,বস ডাকছে তোকে
.
আহনাফ মাস্কটা থুতনির নিচে নামিয়ে নাহিদের দিকে তাকালো,নাহিদ ঢোক গিলে বললো”নে!মিশকা নালিশ করেছে হয়ত”
.
উফ!ভাই বিশ্বাস কর,এরকম বেতনের অন্য জব পেলে এটা এই মূহুর্তে ছেড়ে দিতাম আমি,আর পারবো না এত প্যারা নিতে
.
কি আর করবি
.
আহনাফ জ্যাকেটের হাতা একটু উঠিয়ে গেলো বসের রুমের দিকে
.
আসবো স্যার?
.
বস কাগজপত্র দেখছিলেন মনোযোগ দিয়ে,,ফাইলটা রেখে মুখ তুলে বললেন”নাফি যে,, আসো,আসো,,সেই কখন প্রিতমকে দিয়ে ডাকালাম,এখন আসলে তুমি”
.
সরি স্যার,আজ একটু লেট হয়ে গেলো
.
আরে সরি বলার কিছু নাই,বসো এখানে
.
বস উঠে দাঁড়িয়ে আহনাফকে একটা চেয়ার টেনে বসালেন,আহনাফ এর মানে বুঝলো না,বস একটা পেপার টেবিলের উপর থেকে নিয়ে ওর দিকে বাড়িয়ে ধরলেন
.
এটা কি স্যার
.
পড়ে দেখো
.
আহনাফ পেপারটা নিয়ে পড়ে দেখলো তার পদের উন্নতি হয়েছে,,সে এখন থেকে কন্ট্রোল রুমে বসবে মেইন হেড হিসেবে
.
আহনাফ খুশি হয়ে কিছু বলতে যাওয়ার আগেই বস ওর সামনে চেয়ার নিয়ে বসে বললেন”এটার জন্য মিশকাকে থ্যাংকস দেওয়া উচিত তোমার,কারণ ওর বাবার সুপারিশেই তোমার পদের উন্নতি হলো”
.
কথাটা শুনে আহনাফ কাগজ ফেলে চলে গেলো রিসিপশানে,ওখানে আসতেই সামনে পড়লো মিশকা
একটা থ্রি পিস পরে দাঁড়িয়ে আছে সে,আগের কার মিশকা আর এই মিশকার আকাশ পাতাল তফাৎ,,আহনাফ সাদামাটা পছন্দ করে শুনার পর মিশকা মূহুর্তেই নিজেকে পাল্টে ফেললো
আহনাফের চোখে মুখে রাগ দেখে সে মুচকি হেসে বললো”দেখো তোমার দিবার থেকেও সুন্দর লাগছে কিনা?”
.
আমার দিবা মানে.?
.
তোমার ফ্রেন্ড জিসান বললো দিবার সাথেই তোমার এঙ্গেজমেন্ট হয়েছে,বাট তুমি চমকালে কেন?নাকি তুমি নিজেই জানো না যে তোমার এঙ্গেজমেন্ট হয়েছে?
.
আহনাফ হালকা কেশে চেয়ারে বসলো,তার মানে জিসান এভাবে বাঁচালো আমাকে,বিষয়টা নিয়ে পরে দেখবো আপাতত এখন চুপ থাকাই ভালো
.
আমি বিশ্বাস করিনি একটুও,আমি জানি তুমি এখনও পিউর সিঙ্গেল,,আর তাই সেটাতে খুশি হয়ে আমি বাপিকে বলে তোমার পদ উন্নতি করে দিয়েছি,থ্যাংকস জানাবে না?”
.
আহনাফ স্বাভাবিক ভাবে বললো”আমি আজ এই চাকরি ছেড়ে দেবো,আমার কারোর দয়ার প্রয়োজন নেই”
.
মিশকা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে,তারপর একটু পিছিয়ে গিয়ে চিৎকার করে বললো”এই শেখর আঙ্কেল!এদিকে আসো
ওয়েটার!!তোমাদের বসকে ডাকো,এক্ষুনি”
.
প্রিতম ছুটে গেলো বসের রুমের দিকে,মিনিট পাঁচেক পর বস আসলো রুম থেকে বেরিয়ে,মিশকার কাছে এসে দাঁড়াতেই ও আহনাফ থেকে চোখ সরিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বললো”এর পদ উন্নতি করতে হবে না,ও যেমন আছে তেমন থাক,জাস্ট খেয়াল রাখবেন ও যেন চাকরি না ছাড়ে,ওকে?”
.
ওকে ম্যাম,,চিন্তা করবেন না,কিছু খাবেন?এই প্রিতম ম্যামের জন্য জুস নিয়ে আয়
.
মিশকা হনহনিয়ে বেরিয়ে চলে গেলো বার থেকে,ওখানে দাঁড়ালো না আর
বস ওর চলে যাওয়া দেখে বললেন”নাফি??এত বড় সুযোগ কেন যেচে হাত ছাড়া করছো?তোমাকে কি সুখে থাকতে ভূতে কিলায়?”
.
না স্যার,আমাকে কিছু কিলায় না,জাস্ট এসব মানুষদের থেকে বিরত থাকতে চাই,বরং ওদের ভূতে কিলায়,এত এত ইগনরের পরেও পিছু ছাড়ে না,কতটা চিপ হতে পারে
.
নাহিদ ব্রু কুঁচকে বললো”আমার ক্রাশকে চিপ কবি না একদম”
.
স্যার নাহিদকে দেখুন,,রঙে ও আমার থেকেও সুন্দর,তাহলে কেন আমার পিছনে লেগে আছে
.
বস তার দুহাত টেবিলের উপর রেখে একটু ঝুঁকে বললেন”রঙ তো ঠিক আছে,তবে নাহিদের কি তোমার মতন এ্যাটিটিউড আছে??বড় লোকের কিছু কিছু মেয়েরা তাকেই পছন্দ করে যে প্রথম প্রথম খুব ভাব দেখায়,যার মধ্যে এ্যাটিটিউডে ভর্তি,এসব কিছু ওদের আকর্ষিত করে,আর তোমার আর নাহিদের কথা কি বলবো,এসবের বেলায় নাহিদ জিরো আর তুমি একশোতে দুইশো প্লাস”
.
বস মুচকি হেসে চলে গেলেন,আহনাফ কপালে হাত দিয়ে চুপ করে আছে,নাহিদ অসহায় লুক নিয়ে বললো”বুঝলাম না আমার মধ্যে এ্যাটিটিউড আসে না তো আমি কি করতে পারি,আমার দিল নরম রে ভাই,শক্ত করতে পারি না তো”.।
.
ডেইলি এই রিকশা এসে আমার কাজে জ্যাম লাগাই চলে যায়,একটু শান্তি নাই আমার
♣
দিবা আজ আবার আহনাফের রুমে এসে হাজির,খালামণি নামাজ পড়তে গেছে,এ সময়টা কাজে লাগাতে হবে
মিনি আহনাফের বিছানায় বসে দিবার ব্যস্ততা দেখছে
একবার টেবিলে,একবার টেবিলের ড্রয়ারে,আলমারিতে,সব জায়গায় খুঁজছে দিবা কিন্তু আহনাফ কি চাকরি করে তার কেনো ক্লু পেলো না সে
মন খারাপ করে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো দিবা তারপর রাগ করে আলমারিতে একটা বাড়ি দিয়ে দিলো দুম করে
বাড়ি দেওয়ার পর মনে আসলো আলমারির উপরে একটা ব্যাগ দেখা যায় খয়েরী রঙের ট্রাভেল ব্যাগ
জলদি করে চেয়ার টেনে চেয়ারে উঠে ব্যাগটা নামালো সে আলমারি থেকে
চেইন খুলে পুরোনো জামাকাপড় দেখতে পেলো সব
দিবার মেজাজটাই গেলো খারাপ হয়ে,আজব তো,কিসের চাকরি করে তার বুঝি কোনো ঠিকানাও থাকে না রুমে
একটা হলুদ টিশার্ট নিয়ে ঝাঁকালো দিবা কারন টিশার্টের ভেতর কিছু আছে তা বোঝা যাচ্ছিলো,ঝাঁকাতেই কতগুলো ছবি এলোমেলো হয়ে পড়লো ফ্লোরে
দিবা একটা ছবি হাতে নিলো,সেটাতে পাঁচছয়টা ছেলে একজন আরেকজনের কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে
সবার গায়ে একই জ্যাকেট এবং জ্যাকেটে বড় করে লেখা আছে বারের নাম”হোয়াইটলকস্ বার”
সবার মুখ স্পষ্ট বোঝা গেলেও মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটার মুখে মাস্ক এবং চোখে চশমা থাকায় দিবা এখন তাকেই দেখছে,বাকিদের কাউকে না চিনলেও এই চশমা পরা লোকটাকে দেখে কেন যেন চেনা চেনা লাগছে
বাকি ছবিগুলো হাতিয়ে যা ছবি পেলো দিবা সব গুলোই ঐ বারে তোলা,সবগুলোতেই সেই ছেলেগুলো,এবং সেই মাস্ক- চশমা পরা লোকটা,আসলে লোকটা কে,এত চেনা লাগে কেন
একটা ছবিতেও তো আহনাফকে দেখলাম না
তাহলে এই ছবিগুলো এত যত্ন করে লুকিয়ে রেখেছেন কেন উনি, রহস্যের পর রহস্য সামনে আসছে
চলবে♥
সবটা অন্যরকম♥
#পর্ব_৩০
Writer-Afnan Lara
.
না না এভাবে এটাকে ছেড়ে রাখা যাবে না কিছুতেই
দিবা তোকে ভাবতে হবে অন্নেককককক
আপাতত এগুলো এখানে থাকুক,উনি তো আসবেন রাতের বারোটায়,আমি বরং গিয়ে চা বসাই,খালামণি নামাজ পড়ে এসে দিদি নাম্বার ওয়ান দেখবে আর চা বিসকুট খাবে
মিনি চল!এই মিনি?কিরে
.
মিনি আহনাফের বিছানার নরম কোমল উষ্ণতায় ঘুমিয়ে পগারপার হয়ে গেছে
দিবা ভাবলো উনার আসতে যেহেতু দেরি তখন ও ঘুমাচ্ছে ঘুমাক,আমি যাই আমার কাজে
.
দিবা ওড়না কোমড়ে গুজে গেলো রান্নাঘরের দিকে
.
আহনাফ কাগজে কাস্টমারদের নাম লিখে ফেলেছে এবার বসে বসে সেগুলো কম্পিউটারে টাইপ করে উঠাচ্ছে
নাহিদ কন্ট্রোল রুমের দিকে গেছে কিছুক্ষন আগেই
কাস্টমারদের নাম উঠানো শেষে আহনাফ একটু হেলান দিয়ে বসলো চেয়ারে,সেসময়ে প্রিতম এসে বললো”বস নাকি ওকে আবারও ডাকছে”
.
উফ!এই মেয়েটা মনে হয় আবার কি না কি বলেছে,আগে তো বছরেও বস ডেকে পাঠাতো না আমায় আর এখন দিনে দুবার ডাকে
.
আহনাফ জ্যাকেট টেনেটুনে ঠিক করতে করতে বসের রুমের দিকে গেলো
.
আসবো স্যার?
.
বস তখন ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছিলেন,কান থেকে ফোনটা হালকা সরিয়ে বললেন”হুম,কাম ইন”
.
আহনাফ চুপচাপ এক কোণায় এসে দাঁড়িয়েছে,,বসের কথা শেষ হলো আরও দু মিনিট পর,ততক্ষণ আহনাফ বসের রুমে থাকা গ্লাসটা দিয়ে পুরো বার টাকে দেখছিল
এই জায়গা দিয়ে পুরো বারটাকে একত্রে দেখতে পাওয়া যায়
যাই হোক ফোনটা এক পাশ করে রেখে বস আহনাফের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলেন
এটা পদউন্নতি নাকি পদ কমানোর কাগজ তাই ভেবেই আহনাফের গলা শুকিয়ে গেছে
বস ওর দিকে না তাকিয়েই আরেকটা সাদা কাগজে কিসব লিখতে লিখতে বললেন”নাফি এগুলো কম্পিউটারে টাইপ করে প্রিন্ট করে রাখবা,কোনোমতেই যেন না হারায়,দরকার হলে কয়েক কপি করিয়ে রাখবে”
.
আহনাফ বুঝলো এগুলো বারেরই কাজ,,মুচকি হেসে কাগজটা মেলে ধরলো সে,সব নামিদামি মানুষদের নাম লেখা আছে ওখানে
আহনাফ কাগজটা উল্টে বললো”নতুন কোনো অনুষ্ঠান হবে নাকি স্যার?তাহলে তো ভাম্ফার ফলন”
.
স্যার মুচকি হেসে বললেন”তা বলতে পারো,মিশকার বাবার চেয়েও ধনী ব্যাক্তি আসতে চলেছে,লিস্টের কাস্টমারদের নাম দেখলেই বোঝা যায়,উনি আজ রাতে নয়টার সময় আসবেন বারটা চেক করতে,উনার পছন্দ হলে উনি সাইন করে চেক দিয়ে যাবেন,তার বিবাহবার্ষিকী এখানে পালন করতে চান,বুঝলে?”
.
ওকে স্যার,বাট যদি পছন্দ না হয়?
.
উনি করলে আমাদের বারেই করবেন,তাই তো লিস্ট আগে থেকেই দিয়ে দিলো,কিন্তু যদি পছন্দ না হয় তবে উনি আমাদের রিনোবেশন করতে বলবেন কিছু কিছু,যেহেতু পরশুদিন অনুষ্ঠান সেহেতু আমার মনে হয় আমরা রিনোবেশনটা করে ফেলতে পারবো,নয়টার সময় রেডি থাকবা,আমি চাই না তোমাদের কারোর মিসবিহেভে উনি অসন্তুষ্ট হোন
.
ডোন্ট ওয়ারি,আই উইল ম্যানেজ
.
ইয়েস আই নো,বাট বাকিদের নিয়ে বললাম
.
সেটাও আমি দেখবো,, আপনি নিশ্চিন্তে এক গ্লাস ঠাণ্ডা লেবুর শরবত খান,আমি প্রিতমকে দিয়ে পাঠাচ্ছি
.
আহনাফ চলে যেতেই স্যার মুচকি হাসলেন,এই একটা ছেলেই আছে বারে যে সব দিকের খেয়াল রাখে
মিশকার বাবা কত কথা শুনানোর পরেও তিনি আহনাফকে বের করে দেননি,মিশকার বাবা বলেছিলো নাফিকে বের করে দিতে
এমনি এমনিতেই মিশকার মাথা থেকে নাফির ভূত নেমে যাবে তারপর তিনি তার বন্ধুর ছেলের সাথে ওর বিয়ে দেবেন,এসবের কথা মিশকা জানে না কিছুঔ
কিন্তু তার পরেও নানা বাহানা দিয়ে উনি নাফিকে বারে ধরে রেখেছেন,কারণ নাফির ওয়ার্কিং স্কিল অনেক ভালো
.
আহনাফ রিসিপশানে এসে দুম করে বসে পড়ে মাথার চুল টানছে চুপচাপ,কদিন বাদেই বিরাট বড় ক্লাইন্ট আসে আর কাজের চাপ বাড়ায়
—
দিবা খালামণিকে চায়ের কাপ ধরিয়ে নিজে আবার আসতে চেয়েছিলো আহনাফের রুমে কিন্তু খালামণি এক হাতে কাপ নিয়ে আরেক হাতে দিবার হাত ধরে বললেন পাশে বসতে
দিবা আর কি করবে,খালামনির পাশেই বসলো,,খালামণি আজ গল্প শুনাবেন ওকে,সাদাত আর মৌসুমীর গল্প
দিবা প্রথমে শুনতে চাচ্ছিলো না কারণ ওর মাথায় আহনাফের চাকরির রহস্য ভেদ করার ভূত ঘুরছিলো কিন্তু যখন শুনলো সাদাত আর মৌসুীর গল্প তখন সে বাকিসব ভুলো সোফায় পা ভাঁজ করে বসে খালামনির দিকে ফিরে তাকালো
খালামণি চায়ে চুমুক দিয়ে শুরু করলেন কথা
.
অনেক বছর আগের ঘটনা,মানে যখন সবেমাত্র তার আর আহনাফের আব্বুর বিয়েটা হয়েছিলো,নতুন নতুন তারা বেড়াতে এসেছিলো বাসায়,,মানে তার বাপের বাড়ি
মৌসুমী তখন ইন্টার শেষ করে আরামসে ফ্রি দিন কাটাচ্ছে,বোনকে দেখে তার খুশি আরও বেড়ে গেলো,,কয়েকদিন যেতে না যেতেই পরিবারের সবাই খেয়াল করলো ইদানিং সে বারান্দায় বেশি সময় কাটায়,,বোন এসেছপ,বোনের জামাই এসেছে তাও সে বারান্দায় থাকে সারাক্ষণ
মা মৌকে মানে আমাকে বললেন যে বিষয়টা খতিয়ে দেখতে
তো হাজার হোক আমি ওর বড় বোন হই,আমার থেকে তো আর লুকাবে না
কিন্তু সে প্রথমে লুকিয়েছিলো
আহনাফের বাবা অফিস থেকে আসতে দেরি হচ্ছিলো বলে আমি সেদিন ওর সাথে শুয়েছিলাম,রাত দশটার দিকে দেখি সে বারান্দায় গিয়ে কার সাথে যেন কথা বলছে
ওর কাছে ফোন ছিলো না,তাহলে কি করে কথা বলছে
আমি আস্তে করে বিছানা থেকে নেমে গিয়ে দেখি ফাঁকা রোডে একজন যুবক দাঁড়িয়ে,আমাকে মৌসুমীও দেখেনি আর সেই যুবক ও না,মানে সাদাত ও না
সাদাতকে সেদিন প্রথম দেখেছিলাম আমি,তবপ অন্ধকারের কারনে ভালোমতন দেখলাম না,খালি হাইট টাই মনে আছে
সেদিন হাতেনাতে ধরার পর মৌসুমী বাধ্য হয়েই আমাকে ওর কথাটা বলে,এবং ছবিও দেখায় সাদাতের
তোর যদি তোর বাবাকে দেখতে মন চায় তো নিজেকে আয়নায় দেখিস,কারন তুই একদম তোর বাবার মতন হয়েছিস
সাদাতের চেহারা আমার এখনও মনে আছে স্পষ্ট,কারণ মৌসুমী আমাকে হাজারটা ছবি দেখিয়েছে সাদাতের
প্রেমিক প্রেমিকা কাদের বলে তা ওদের দেখে শেখা যেতো,আমি তো ভেবেই নিয়েছিলাম বাবা ওদের না মানলে নির্ঘাত ওরা পালাবে
আর সেটাই হলো তবপ একটু উল্টোভাবে ,সাদাত চাকরি পেয়েছে তখন কিন্তু বাবা রাজি হোননি প্রথমে,,বাবা সাদাতের চেয়েও বড়লোক দেখে একটা ছেলে খুঁজে বের করলেন মৌসুমীর জন্য,বেতনে হাজার বেশি পায় সে
তার পরেও অনেক মনমালিন্য করে বাবা রাজি হলেন কিন্তু হলো আরেক বিপত্তি, রাজি হলেন না সাদাতের মা
কারণ মৌসুমীর গায়ের রঙ ফকফকা ফর্সা ছিলো না,তিনি তার কলিজার টুকরো ছেলের জন্য গায়ের রঙ ফর্সা দেখে একটা মেয়েকে বউ করে আনতে চেয়েছিলেন,তোর মা ভালোই ফর্সা তবে একটুখানি কম আর কি
কিন্তু ওর যে রঙ ছিলো তাতেই সাদাত পাগলপ্রায়
তার পরেও তিনি রাজি হলেন না,বাবা যখন শুনলেন সাদাতের মা রাজি নন তখন তিনি তার পছন্দের একটা ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করলেন মৌসুমীর
কিন্তু সাদাত আর মৌসুমী থেমে থাকে নি,সুযোগ বুঝে পালিয়ে গেলো তারা,কিন্তু এর পরে মাত্র দুইদিনে কি এমন হলো য সাদাত নিজে তোর মাকে বের করে দিলো খালি হাতে তাও তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে
সাদাত তো এমন না,মৌসুমীর কাছে আমি যা শুনেছিলাম ওকে নিয়ে তাতে আমার মনে হতো সাদাতের চেয়ে ভালো মানুষ বুঝি আর দুটি নেই
তাহলে কি এমন পরিস্থিতি হলো যে সে এমনটা করলো তোর মায়ের সাথে?সাদাতের মা মেনে নিয়েছেন নাকি নেননি?এটাই কি তার কারণ?
নাকি অন্য কারণ ছিলো,যদি উনি না মেনে নিতেন তাহলে তো আর সাদাত দুইদিন ধরে তোর মাকে বাড়িতে নিয়ে রাখতো পারতো না
আসলে সব ঘুরপাক খাচ্ছে,ঠিক কি হয়েছিলো তা খোলসা করে মৌসুমী বলছে না,, সাদাত তো আর কি বলবে,ওকে তো এরপর আর কখনও দেখিনি
মৌসুমী বাড়ি ফিরে মূর্তির মতন হয়ে গিয়েছিলো,কারোর কোনে প্রশ্নের জবাব সে দেয়নি,বাবা চুপচাপ অন্য একটা ছেলে খুঁজে মানে জসিমকে খুঁজে বিয়েটা দিয়ে দিলেন
.
দিবা চোখ মুছে বললো”মা বলতে পারবে সব,তবে মা বলবে না
এত জঘন্য অতীত মা মনে করতে চান না”
.
হুম,,তবে তোর মা কম কষ্ট করেনি,নিজপর ভালোবাসার মানুষকে নিজের সবটা দেওয়ার পরেও তাকে নিজের করে পেলো না,নিজে হয়ে গেলো অন্য কারোর
বাবা জোর করে ওকে জসিমের সাথে বিয়ে দিয়েছিলো,এই অভিমান ও আজ পর্যন্ত ভোলেনি,কবে ভুলবে কে জানে
যখন ওর কোলে ইতি আসে,,তখন আমার আহনাফ ক্লাস সেভেনে পড়তো,,তখন তো তুইও ছোট ছিলি হয়ত,তোকে তে জীবনেও ভিডিও কলে দেখাতো না,জানতেই দেয়নি ওর পেটের আরেকটা সন্তান আছে,যার সাথে আমাদের রক্তের সম্পর্ক আছে
.
দিবার মনটাই গেলো খারাপ হয়ে
খালামণি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলেন খালুর কাছে,খালু তখন থেকে ডাকছিলো তার কিসের যেন জামা পাচ্ছে না খুঁজে
দিবা ঘড়ির দিকে তাকালো,,আটটা বাজে
উর্মি ম্যাডামের একটা এসাইনমেন্ট বাকি আছে
সেটা করতে হবে তারপর নাহয় উনার রুমে হামলা করবো
উনি তো আর এখন আসছেন না
.
দিবা তাই গেলো হোমওয়ার্কটা সারতে,,মিনি ঘুম থেকে উঠে আহনাফের আলমারির দরজা একটু ফাঁক পেয়ে সেটার ভেতর ঢুকে তুলকালাম করছে এখন তাও কেনো শব্দ না করে
♣
আহনাফ রেডি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজকের ক্লাইন্টের জন্য,
,নয়টা বাজতে চললো কবে আসবে লোকটা,এদিকে হাতে সময় ও নেই রিনোবেশনের,আসতে দেরি করলে কতক্ষনে কি করবো আমরা?
.
কিরে এত টেনসড কেন?
.
হুমম রে নাহিদ,এবার যিনি আসবেন তার মনমতন করে বার সাজাতে হবে
.
বাহ তাহলে তো ভালোই,বারের এই একই ডিজাইন দেখতে দেখতে ক্লান্ত,,,নে ধর তোর শার্ট
.
কে দিলো?
.
বস বললো সবাইকে বারের শার্টটা পরে থাকতে,মানে আমরা সবাই হোয়াইটলকস্ বার টিম হিসেবে ক্লাইন্টকে ওয়েলকাম জানাবো একসাথে,কোনো মতেই যাতে উনি আমাদের ব্যবহার নিয়ে কিছু বলতে না পারেন
.
আহনাফ জ্যাকেট খুলে তার গায়ের টিশার্টের উপর দিয়ে বারের টিশার্টটা পরে নিলো তারপর জ্যাকেটটা পরতে যেতেই নাহিদ বললো”একদিন তোর বডি দেখাইস,,আমিও তো দেখি আর কি কি বাকি আছে তোর”
.
আহনাফ মুচকি হেসে বললো”জিম করার টাকা নাই আমার,,সাধারন বাঙালী ছেলেদের মতন আমার ও একটু আকটু ভূড়ি আছে”
.
হাহা!!যাক তাহলে স্বীকার করলি,ঐ মনে হয়ে এসে গেছে
.
আহনাফ আর নাহিদ এগিয়ে গেলো,,বিরাট একটা কার থেকে নামলেন মিঃজহির,,,কার যত বড় তার উচ্চতা ঠিক ততটাই ছোট
আহনাফ আর নাহিদ প্রথমে উপরে তাকালেও পরে তাকে উপরে দেখতে না পেয়ে নিচে তাকালো,উনি নিচে,,নাহিদ ভাবলো মিঃ জহিরের বাচ্চা হবে হয়ত
কিন্তু পরে যখন উনি আহনাফের হাতের সাথে হ্যান্ডশেক করে বললেন”হাই মিঃ নাফি,আই এম মিঃজহির চৌধুরী,,
ওনার অফ জহির’স ইন্ডাস্ট্রি”
.
আহনাফ দাঁত কেলিয়ে হাত ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বললো’নাইস টু মিট ইউ,প্লিস কাম”
.
নাহিদ চোখ বড় করে পিছু পিছু আসছে,কত বড় ঝটকা লাগলো তার
বারের বস শেখর স্যার এগিয়ে এসে মিঃজহিরকে দেখে টাসকি খেয়ে গেলেন কিন্তু সেটা বুঝতে দেওয়া যাবে না,
আগে কখনও তাকে দেখেননি বলে টাসকিত হয়ে গেছেন প্রথমেই
মিঃ জহির ঘুরেঘুরে সব দেখে বললেন”সবই ঠিক আছে তবে রঙটা পাল্টাতে হবে,এখন ব্ল্যাক আছে,সেটা পাল্টে পার্পল করতে হবে,আহনাফ দাঁড়িয়ে থেকে লিস্ট করছে কি কি বদলানোর কথা উনি বলছেন
বস বললো রঙ শুকাতে সময় লাগবে আর স্মেল যেতেও
তাই এখনি রঙ করিয়ে নিতে হবে,নাহিদকে দিয়ে রঙ করার লোকদের খবর দেওয়ালেন তিনি
নয়টা দশ বাজে এখন,আজ সবার ছুটি,রঙ করার সময় তো আর বার চলবে না
আহনাফ মিঃ জহিরকে বিদায় দিয়ে নিজের অফিস ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো
পরনের হোয়াইটলকস্ বারের শার্টটা খুলতে ভুলে গেলো সে
এদিকে দিবা হোমওয়ার্ক শেষ করে মাত্র ঢুকেছে আহনাফের রুমে,কাজটা সারতে হবে জলদি জলদি
মিনি আহনাফের জামাকাপড় সব মিলিয়ে টর্নেডো করে ফেলেছে আহনাফের রুম জুড়ে
আলমারি খালি আর আলমারির সব জামাকাপড় ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে আছে আর মিঃমিনি এখন পর্দার আড়ালে গিয়ে চুপটি করে আছেন,আজ শুধু আহনাফ নয় বরং দিবার থেকেও তাকে লুকিয়ে থাকতে হবে,তার এই কার্যকলাপ দিবা দেখলে খুব করে কেলাবে
চলবে♥