#সাইকো বস
#নাহিদা ইসলাম
পর্ব ১৯
এই সুযোগ প্রতিশোধ নেওয়ার আমাকে নির্লজ্জ বলছো এখন বুঝবা কেমন লাগে,
—এই যে মা নিচে দেখে যাচ্ছে এখন বলি আমার সাথে চুরি করে দেখা করতে আসছেন যে।
আর কিছু না ভেবে দিলাম আমার শাশুড়ী মা কে ডাক, ডাকার সাথে সাথে শুভ্র উদাও। আড়ালে চলে গেলো। আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
—দেখে নিবো।
—আচ্ছা আমি ও কম না, দেখি কী করতে পারেন আপনি।
এটা বলে আমি নিচে যেতে লাগলাম আমাকে দেখে নিধি বললো,
—আপু তুমি এখানে, কথা শেষ আর শুভ্র ভাইয়া কোথায়।
—তোর এসব জানতে হবে না রুমে চল।
রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম, এমনি দেখলাম ইভান রুমের দিকে উঁকি মারতেছে।
—কী হলো ইভান এভাবে কাকে খুজতেছো।
আমাকে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে বললো,
—ভাবি তুমি এখানে।
—কেনো অন্য কেউ আসার কথা ছিলো নাকি।
— না ঠিক তা না।
—তাহলে কী??
—সবাই তো দেখছি বিয়ে করে ফেলছে তা আমার টা ও আমি খুজতেছিলাম।
—এই ছেলে কী বলে, তা আছে নাকি কেউ পছন্দের।
—হে আছে তো। তোমার পাশে ই দাড়িয়ে আছে। প্রথম দিন থেকে ই বলতে চাচ্ছিলাম।
নিধিকে দেখিয়ে বললো, নিধি ও দেখলাম বেশ লজ্জা পাচ্ছে। মিটমিট করে হাসতেছে।
বুঝতে আর বাকি রইলো না মেয়ে ও রাজি।
নিধিকে নিয়ে চলে আসলাম রুমে।
পরের দিনা মানে আমাদের হলুদ এর দিন,
আমি রেডি হচ্ছি পার্লারে যাবো। এমন সময় আম্মু এসে বলতেছে রনি ভাইয়াকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
—আম্মু পার্লারে ছেলেদের ডুকতে দেয় না।
— আরে রনি বাহিরে দাড়িয়ে থাকবে।
—টাইম লাগবে অনেক, এতোক্ষণ দাড়িয়ে থাকবে কেনো। আমি একা ই যেতে পারি।
—মায়ের কথা শোনতে হয় অহনা
—আচ্ছা ঠিক আছে।
চলে গেলাম রনি ভাইয়াকে নিয়ে পার্লারে। ভাইয়া আমার সাথে তেমন বেশি কথা বলছে না। আজকে কেমন জানি হাসিখুশি লাগছে। আমার সাথে কথা না বললে ও নিধির সাথে ঠিক ই কথা বলতেছে। ব্যাপার টা বুঝলাম না। এতো দিন তো অন্য রকম দেখলাম আর আজকে ই অন্যরকম।
সন্ধ্যার দিকে পার্লার থেকে আসার পর,
বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। পুরো বাড়ি লাইটিং করা। আমি দাড়িয়ে দেখছি সব কিছু। এসব দেখতে দেখতে রুমে গিয়ে বসলাম।
আম্মু আমার দিকে এসে কান্না করতে লাগলো,
আমার মেয়েটা অনেক বড় হয়েছে, কিন্তু আমার কাছে তো সেই ছোট্টটি ই আছিস। কী করে থাকবো তোকে আমি এখানে রেখে।
আম্মু কান্না দেখে আমার ও কান্না আসতেছে।
তাই আম্মু আমার ছোট খালামনি আম্মু নিয়ে গেলো।
কিছুক্ষন পর,
আমাকে হলুদের স্টইজে বসানো হলো, অপর পাশে শুভ্রকে বসানো হলো। শুভ্র আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সবাই এটা দেখে হাসতেছে। আমি লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।
নাবিলা কে দেখলাম বেশ সেজেছে,মনে হচ্ছে বিয়েটা আমার নয় নাবিলার ই। ভালো ই জমিয়েছে দেখলাম রনি ভাইয়ের সাথে। সারাক্ষণ ই দুজন কী কথা নিয়ে এতো ব্যস্ত ছিলো বুঝতে পারলাম না। আমাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নাবিলা আমার দিকে এগিয়ে আসলো,
—কী হলো অহনা এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো যে,
—আপনাকে দেখছি আপু। আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে, মনে হচ্ছে বিয়ে টা আপনার ই।
—বলা তো যায় না বিয়েটা আমার ও হতে পারে যাই গো অহনা নিজের খেয়াল রাইখো।
আমি অবাক হয়ে গেলাম নাবিলার লাস্ট কথাগুলো শোনে কী বললো, বিয়ে হতেও পারে।তার মানে কী বুঝাতে চাচ্ছে। আবার কী কোনো ক্ষতি করার চিন্তা মাথায় ঘুরছে নাকি।
অনুষ্ঠান শেষের দিকে,আমার মনটা তখন থেকে ই খারাপ নাবিলার কথাগুলো শোনে,রাত অনেক হয়েছে আমার বড্ড ঘুম পাচ্ছে। তাই রুমে নিয়ে যেতে বললাম ছোট খালামনিকে। খালামনি নিধি কে ডেকে আমাকে নিয়ে যেতে বললো,
—কী রে নিধি রিমি আপু কোথায় দেখলাম না তো,
—আমি যতো দূর জানি রিমি আপু চায় না তোদের বিয়ে হক। রিমি আপুর শাশুড়ী মনে হয় তোকে নিয়ে অনেক কথা শোনার রিমি আপুকে যা সহ্য করতে না পেরে তোদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। হয়তো আজকে সেই অপরাধ বোধ নিয়ে ই রুমে নিজেকে আটকে নিয়েছে।
—বলিস কী আগে বলবি না। আমি আম্মু কে বলতাম আপুকে নিয়ে আসতো।
— জানো ই তো আপুর শাশুড়ী অন্য রকম। আজকে আমি গিয়েছিলাম কিন্তু আপু ই আসতে চাইলো না।
দুজন হেটে রুমের যাচ্ছিলাম অমনি কেউ টেনে অন্ধকার একটা রুমে নিয়ে যায়, আমি জোড়ে চিৎকার করতে নিলে শুভ্র মুখ চেপে ধরে।
—আরে আমি তুমি চিল্লাচ্ছো কেনো।
—এই আপনি এখানে আসলেন কেনো।
—তোমাকে দেখতে আসছি দূর থেকে ভালো করে দেখা যায় না।
—কী বলেন এসব, এই অন্ধকারের মধ্যে আমাকে দেখবেন কী করে।
বলার সাথে সাথে লাইট অন করে, লাইট অন রোবটের মতো করে এসে আমাকে জরিয়ে ধরে।
—এই হচ্ছে টা কী ছাড়ুন আমাকে।এখানে কেউ চলে আসবে। আর নিধি তো আমাকে খুজবে।
—এতো কথা বলো কেনো বলো তো নিধি সব জানে আর কেউ তোমাকে খুজতে আসবে না নিধি সব সামলে নিবে।
মিষ্টি করে আমার কপালে চুমু খেয় নেয়। উনি বসে আমার পেটে অনেকটুকু বের হয়ে ছিলো, পেটে গভীর ভাবে চুমু খেয়ে শাড়িতে সুন্দর করে পিন লাগিয়ে দিলো, যেনো কোনো অংশ দেখা না যায়।
—আর যেনো কখনো এমন ভাবে শাড়ি পরতে দেখি না। তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।
—আমি মাথা নাড়ালাম। কিছু না বলে ই চলে আসলাম রুমে।
নিধিকে নিয়ে রুমে গেলাম, ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম।
বিয়ের দুপুরে,
দুপুর বললে ভুল হবে প্রায় বিকেল হতে চললো, কিন্তু অহনার কোনো খুজ নাই। পার্লারে যাওয়ার পর ও শুভ্র সাথে কথা হয়েছে কিন্তু কিছুক্ষন আগে থেকে ফোন বন্ধ।
সাথে শুধু নিধি।
বেশকিছু ফোন বন্ধ আর অহনা ও আসছে না সব মিলিয়ে বাসার সবার অনেক চিন্তা হচ্ছে।
রিমির শাশুড়ী এসে বলতে শুরু করলো,
—দেখো মাইয়া কোনো ছেলের সাথে চলে গেলো নাকি, এসব মাইয়ার সাথে বিশ্বাস নাই।
—চুপ করো ছোটো আম্মু। আমার বউ এমন নাহ। হয়তো ফোনের চার্জ শেষ। কেউ অহনাকে নিয়ে একটা বাজে কথা ও বলবা না।
নাবিলার মা ও বলতে শুরু করলো
—কত জনের মুখ বন্ধ করবি বল সবাই এক ই কথা বলবে।
অহনার আম্মু কান্না করতেছে অনেক। সবাই মেয়েকে নানা বাজে কথা বলতে কান্না করাই কথা।
অন্য দিকে রনি।
—হাসতেছে আর বলতেছে। আমাকে এতোদিন বড্ড জ্বালিয়েছো অহনা। তুমি আমার না তো কারো ই না।
চলবে