সাইকো লাভার পর্ব-০১

0
5815

#সাইকো লাভার❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ
#পর্ব- ১

রাত ১টা বেজে ১০মিনিট পরাপর ধারালো নাইফটা। একটা লোকের পেটে ঢুকিয়ে যাচ্ছে শুভ্র, লোকটার জিহ্বা বের হয়ে গিয়েছে। শুভ্রর মুখে পৈশাচিক হাসি ফুটে উঠেছে স্পষ্ট। ভীষণ ভাল লাগছে নিজের শএুকে মারতে পেরে। শুভ্র হঠাৎ চোখ মুখ শক্ত করে হিংস্র বাঘের মতো হুংকার ছেড়ে বললো।”

—-” তোকে আমি বারন করেছিলাম। আমার সাথে টক্কর দিস না, টক্কর দিস না। কিন্তুু না তুইতো শালা বহুত হারামী লোক। সেই আমাকে লুকিয়ে আমার অফিসে এসেছিস ফাইল চুরি করতে? এখন যা উপরে গিয়ে যত ইচ্ছে ফাইল চুরি কর ওকে?”

বলে কোমর থেকে পিস্তল বের করে। লোকটার ঠিক কপাল বরাবর দুটো গুলি চালালো। লোকটা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো শুভ্র ভাবুক ভাবে বললো,

—-” এত ইজি মৃত্যু দিলাম আমি একে? কামঅন শুভ্র এটা কি করলি তুই? ছাড় কোনো ব্যাপার না, ড্যানি!”

নাম নিতেই শুভ্রর বডিগার্ড ড্যানি বললো,

—-” আআআগেই এএএনেছি স্যার।”

ড্যানির কথায় শুভ্র বাঁকা হেসে বললো,

—-” দ্যাটস গ্রেড ড্যানি, আই লাইক ইট!”

বলে বাম হাত বাড়িয়ে দিলো। ড্যানি ঢোক গিলে একটা কৌটা দিলো। কৌটা হাতে নিয়ে শুভ্র পাগলের মতো হাসতে লাগলো। এরপর কৌটা খুলে সেটা থেকে গুড়া মরিচ নিয়ে। মৃত লোকটার আঘাতের জায়গা গুলোতে দিতে লাগলো। সেই সাথে রক্ত হিম করা ভয়ংকর হাসি। চারপাশে যত বডিগার্ড সবাই ভয়ে কাঁপছে। এটা দেখে শুভ্র জয়ের হাসি দিলো। এরপর উঠে বসে কোট ঝাড়তে ঝাড়তে বললো,

—-” ড্যানি এই ডাস্টবিনকে ডাস্টবিনে ফেলে দাও।”

ড্যানি কাঁপা গলায় বললো,

—-” জজজ্বি স্যার!”

শুভ্র ওখান থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো। কতক্ষণ পর গিয়ে নিজের বিশাল বাড়ির সামনে গিয়ে পৌছালো। পুরো বাড়িটা রক্তের মতো লাল কালার। তার উপর কালো মার্বেল বসানো। গাড়ি থেকে নেমে পিস্তল কোমর থেকে বের করতে করতে ভেতরে গেলো। শুভ্র ভেতরে ঢুকতেই সার্ভেন্টদের কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেলো,

—-” ভিতুর দল।”

বিরবির করে বলতে বলতে রুমে গেলো। পিস্তলটা কাবার্ডে রেখে তোয়ালে নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো। প্রায় ১ঘন্টা ধরে শাওয়ার নিচ্ছে শুভ্র। চোখদুটো বন্ধ করে রেখেছে কিছু চোখের সামনে ভেসে আসতেই। ধপ করে চোখ খুলে হাত মুঠ করে ফেললো শুভ্র। চোয়াল শক্ত হয়ে গিয়েছে শুভ্রর, দাতে দাত চেপে বললো,

—-” কাউকে ছাড়বো না আমি!”

ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে একটা ব্লাক টি শার্ট। ব্লাক প্যান্ট পড়ে এক বোতল ড্রিংক নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো। বেলকনিতে রাখা ইজি চেয়ারে বসে ড্রিংক করতে লাগলো। চোখগুলো ভীষন রকম লাল হয়ে আছে। হঠাৎ শুভ্র হাসতে, হাসতে বললো,

—-” হা হা হা শুভ্র চৌধুরী তোর একাই থাকতে হবে। তুই একা ছিলি, একা আছিস, একাই থাকবি। সারাজীবন তোর একা থাকতে হবে। ওপস নো নো কে বললো একা? আমার সাথে আছে না এই সো কল্ড ড্রিংক। আর যাইহোক এ জীবনে আমাকে ছেড়ে যাবেনা হা হা হা।”

শুভ্র চৌধুরী একজন মাফিয়া। বয়স ২৫ বছর মাফিয়া জগতে যার নাম শুনলে। বড় বড় মাফিয়ারাও ভয়ে থরথর করে কাঁপে। শুভ্র লম্বায় ৬.২” গায়ের রং একদম ফর্সা। চোখের মনি হালকা নীল যেটা খুব কম দেখা যায়। মাথায় এক বোঝা সিল্কি চুল, ডার্ক রেড ঠোট। সব মিলিয়ে মেয়েদের ক্রাশ মেয়েদের হার্টথ্রব শুভ্র। শুভ্র মাফিয়া এটা অনেকের অজানা। শুভ্র শুধু মাফিয়া না একজন বিজনেসম্যান। বাংলাদেশে টপ বিজনেসম্যানদের মধ্যে শুভ্র এক নাম্বারে আছে। তাছাড়া বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই শুভ্র সবথেকে এগিয়ে আছে। বাংলাদেশে অনেকে এটা না জানলেও যে শুভ্র একজন মাফিয়া। অন্য অন্য দেশে ঠিকই জানে তাই জোমের মত ভয় পায়। তেমন শুভ্রর শএুরও অভাব নেই। বাট এতে শুভ্রর একফোটাও মাথা ব্যথা নেই,

________________________________

সকালে শুভ্র রেডি হয়ে অফিসে গেলো। অফিস থেকে একটা ফোন কল পেয়ে ভার্সিটিতে গেলো। কারন শুভ্র ভার্সিটির ওনার ভার্সিটিতে আসতেই। মেয়েরা মৌমাছির মতো ভিমরি খেয়ে পড়লো!”

১ম মেয়েটা বললো,

—-” ওয়াও সো হট।”

২য় মেয়েটা বললো,

—-” হি ইজ ড্যাম কিউট, হ্যান্ডসাম!”

এবার আরেকটা মেয়ে বললো,

—-” ইস একে যদি নিজের করে পেতাম।”

শুভ্রর মেজাজ গরম হয়ে গেলো। শুভ্র রেগে চেঁচিয়ে বললো,

—-” স্টপ ইট!”

রেগে এবং চেঁচিয়ে জোড়েই বলে উঠলো উঠলো। সব মেয়েরা কাঁপাকাঁপি শুরু করে দিলো। শুভ্র দাতে দাত চেঁপে বললো,

—-” আউট জাস্ট গেট আউট।”

সবাই মানে মানে কেটে পড়লো। শুভ্র হনহন করে উপরের রুমে চলে গেলো। শুভ্রকে দেখেই প্রিন্সিপাল বললো,

—-” আসুন মিস্টার শুভ্র!”

শুভ্র অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো। প্রিন্সিপাল আমতা আমতা করে বললো।”

—-” সসসরি স্যার,

শুভ্র এবার বাঁকা হেসে বললো!”

—-” ফোন কেন করেছেন?”

প্রিন্সিপাল ভয়ে, ভয়ে বললো,

—-” স্যার প্লিজ রাগ করবেন না।”

শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বললো।”

—-” ২সেকেন্ডর মধ্যে রিজন না বললে। ২মিনিটে আপনার চাকরি চলে যাবে,

বলে চেয়ারে বসে পড়লো। প্রিন্সিপাল শুকনো ঢোক গিলে বললো!”

—-” একচুয়েলি স্যার আআআপনার ওয়াইফ,

ওয়াইফ শুনে শুভ্র যেন টুপ করে আকাশ থেকে পড়লো। শুভ্র চেয়ার ছেড়ে উঠে বসে বললো।”

—-” আমার ওয়াইফ মানে?”

প্রিন্সিপাল এবার এক নিঃশ্বাসে বললো,

—-” আপনার ওয়াইফ আবার ফেল করেছে!”

শুভ্র এবার চেঁচিয়ে বললো,

—-” হোয়াট?”

প্রিন্সিপাল শুকনো ঢোক গিলে বললো।”

—-” আই নো স্যার আপনার রাগ লাগছে। বাট এটাই ঠিক আর আজই জানলাম মেয়েটা আপনার ওয়াইফ,

শুভ্র দাত কিড়মিড় করে বললো!”

—-“জাস্ট সাট আপ কার ওয়াইফ? আপনি এসব কি ফালতু কথা বলছেন? আমি বিয়ে করিনি গট ইট?”

প্রিন্সিপাল হা করে তাকিয়ে আছে,

শুভ্র বিরক্তি নিয়ে বললো।”

—-” আমাকে কি দেখছেন?”

প্রিন্সিপাল কিছু না বুঝে বললো,

—-” ওই মেয়েটা যে বললো?”

শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বললো!”

—-” কোন মেয়ে? ডাকুন তাকে ৩মিনিটে ডেকে আনবেন,

________________________________

প্রিন্সিপাল ঢোক গিলে চলে গেলো। এদিকে শুভ্র বসে বসে ভাবছে, কে হতে পারে?”

ভার্সিটির ক্যান্টিনে বসে গিলে যাচ্ছে রোজ। তারপাশে হা করে রোজকে দেখে যাচ্ছে মিম। মিম হচ্ছে রোজের ছোটবেলার ফ্রেন্ড। রোজ খেতে খেতে ভ্রু কুঁচকে বললো।”

—-” কিরে বাপের জন্মে খাসনি?আমার খাওয়ার দিকে নজর কেন দিচ্ছিস?”

মিম হা করে থেকে বললো,

—-” তুই এত কি করে খেতে পারিস? তার উপরে আজকে যে মিথ্যে বললি, ভয় লাগছে না তোর?”

রোজ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,

—-” কোন মিথ্যে? কিসের মিথ্যে? কখন বললাম?”

মিম অবাক হয়ে বললো!”

—-” তুই যে প্রিন্সিপাল স্যারকে বললি। যে তুই শুভ্র চৌধুরীর বউ ওটা কি ছিলো?”

রোজ ঢেক ছেড়ে বললো,

—-” ওহহহহহ ওটা? আরে ধুর ভয় পাওয়ার কি আছে?”

এরমাঝে প্রিন্সিপাল এসে বললো।”

—-” মিস রোজ আহমেদ,

রোজ একটা ভাব নিয়ে সামনে এসে বললো!”

—-” আমাকে ডাকছিলেন?”

প্রিন্সিপাল বিরক্তিকর চেহারা নিয়ে বললো,

—-” হ্যা অফিস রুমে চলো।”

রোজ স্যারের কথামতো হেলে দুলে গেলো। অফিস রুমের সামনে এসে শুভ্রকে বসা দেখে বললো,

—-” ওটা কে?”

প্রিন্সিপাল মুখ বাঁকিয়ে বললো!”

—-” তোমার হাসবেন্ড,

রোজ মিনমিন করে বললো।”

—-” মানে?”

প্রিন্সিপাল তাচ্ছিল্য হেসে বললো,

—-” উনি শুভ্র চৌধুরী!”

শুভ্র চৌধুরী শুনে রোজ ঢোক গিলে বললো।”

—-” স্যার আমার পেটে ব্যথা করছে। আজকে আমি বাড়ি চলে যাই বাই,

বলে হাটা দিলো শুভ্র গিয়ে হাত ধরে বললো!”

—-” কোথায় যাচ্ছো ওয়াইফ?”

রোজ আল্লাহ, আল্লাহ করছে। শুভ্র এখনো রোজের মুখ দেখেনি। কারন রোজ আরেকদিকে ঘুরে আছে। শুভ্র দাতে দাত চেপে বললো,

—-” সাহস কি করে হয় মিথ্যে বলার?”

রোজ চোখ মুখ খিচে সামনে ঘুরে বললো।”

—-” আই এম সরি,

রোজকে দেখে আর রোজের ভয়েস শুনে। শুভ্রর সময় মনে হচ্ছে ওখানেই থেমে গিয়েছে। শুভ্র মুগ্ধ নয়নে রোজকে দেখে যাচ্ছে!”

রোজ চোখ বন্ধ রেখেই বললো,

—-” সরি আর বলবো না।”

শুভ্র রোজকে দেখতে ব্যস্ত। রোজ আহমেদ বয়স ১৮ লম্বায় ৫.৫” দুধে আলতা গায়ের রং। বড় বড় মায়াবী এক জোড়া চোখ। লিপস্টিক ছাড়াই হালকা লাল ঠোট। ঠোটের নিচে ঠিক ডান পাশে কালো মিচমিচে তিল। সবমিলিয়ে রোজকে এই মুহূর্তে শুভ্রর কাছে পরী লাগছে।”

রোজ আমতা, আমতা করে বললো,

—-” কি হলো আপনার?”

এবার হুশ এলো শুভ্রর!”

প্রিন্সিপাল শুভ্রকে বললো,

—-” রোজ মিথ্যে বলেছে স্যার?”

শুভ্র টেডি স্মাইল দিয়ে বললো।”

—-” আরে স্যার বলছেন কেন? আমিতো আপনার ছেলের মতো শুভ্র বলুন,

প্রিন্সিপাল হা করে তাকিয়ে আছে!”

শুভ্র হেসে বললো,

—-” আর হ্যা উনি মিথ্যে বলেছে।”

রোজ বিরবির করে বললো,

—-” এইরে রোজ তু তো গায়া। শুভ্র চৌধুরী যদি বলে দেয় আমি ওনার ওয়াইফ না। তাহলে এই প্রিন্সিপাল বাবার কাছে বলে দেবে সব, কি করি?”

প্রিন্সিপাল রেগে বললো!”

—-” আমি জানতাম মিথ্যুক মেয়ে,

শুভ্র মুচকি হেসে বললো।”

—-” ওয়েট সবটা শুনুন ও মিথ্যে বলেছে। ও বলেছে ও আমার ওয়াইফ একচুয়েলি সি ইজ নট মাই ওয়াইফ,

রোজ মনে, মনে বললো!”

—-” আমি শেষ,

শুভ্র রোজের দিকে তাকিয়ে বললো।”

—-” সি ইজ মাই উডবি ওয়াইফ,

বাঁকা হেসে রোজের দিকে তাকিয়ে বললো। আর রোজ হা করে তাকিয়ে আছে। প্রিন্সিপাল নিজেও কনফিউসড হয়ে ভেতরে গেলো। এদিকে শুভ্র মনে মনে বললো!”

—-” রোজ ওয়াও মাইন্ড ব্লোয়িং নেম। নিজেকে আমার ওয়াইফ বলেছো? ইন্টারেস্টিং ভেরী ইন্টারেস্টিং, সো রোজ বেবী ওপস রেড রোজ। তুমি নিজে আমার কাছে এসেছো। নিজেই নিজেকে আমার জালে বন্দী করেছো। এবারতো তোমাকে আমার হতে হবে। ইয়েস ইউআর অনলি মাইন। তোমাকে আমার হতেই হবে, তুমি চাও বা না চাও,

#চলবে…