হঠাৎ তুমি এলে পর্ব-২১

0
505

#হঠাৎ_তুমি_এলে
#পর্ব_২১
#Sorna_Talukder(বৃন্দা)

হলরুমে দরজা লাগিয়ে বসে আছে শিহাব,প্রমা,আর উৎস।আরিফ উৎসর ওপর রেগে চলে গেছে।উৎস দুই হাতে মাথা চেপে ধরে বসে আছে। কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করার পর শিহাব রেগে উৎসকে বলতে থাকে,
— “শালা আবাল!আমরা তোর বেস্ট ফ্রেন্ড আর তুই কিনা আমাগো না জানায়া বিয়া করে ফেলছোস!কাম ডা ঠিক করলি না তুই।”
প্রমা শিহাবের কথা শুনে ঠিক করে হেসে দেয়।এতে শিহাব রাগে ফুসে ওঠে।প্রমা হাসতে হাসতেই বলে উঠে,
— “তুই কবে বিয়ে করেছিস সেটা তুই নিজেই জানিস না।লাইক সিরিয়াসলি!এই বল না কাকে বিয়ে করেছিস? প্লিজ প্লিজ বল!”
উৎস রাগী চোখে প্রমার দিকে তাকায়‌।প্রমা উৎসর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকানো দেখে একটা ঢোক গিলে।উৎস চিৎকার দিয়ে বলতে থাকে,
— “আরে তোরা কেন বুঝতে চাইছিস না যে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।আর এটা বাইরের মানুষের কাজ হতেই পারেনা।এটা ভার্সিটির কারোর ঐ কাজ।আর তোরা কিনা সেই কখন থেকেই এসব আছে বাজে কথা বলে যাচ্ছিস।আর আরিফ তো একটা বলদ!শিহাবের থেকেও বড় বলদ।আমার পুরো কথাবার্তা না শুনেই অযথা রেগে চলে গেল।ও ভেবেছে আমি বিয়ে করেছি অথচো তোদের সবাইকে জানাইনি।আরে আগে আমার কথাটা তো শুনতো।তা না করে আগে ভাগেই আরিফ রাগ করে চলে গেছে।এসব প্যাচাল আর আমার ভালো লাগছেনা।বাই এনি চান্স এই ফেক নিউজ টা যদি আম্মুর কাছে চলে যায় তাহলে কি হবে ভাবতে পারছিস?
এতক্ষন ধরে উৎসর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো শিহাব আর প্রমা। শিহাব কিছু একটা ভেবে দাঁত কেলানো হাসি দিয়ে বলতে শুরু করে,
— “তবে যাই হোক না কেন।আমি কিন্তু একটু হলেও বুঝতে পারছি যে কামডা কে করছে?”
শিহাবের কথায় চমকে উঠে উৎস আর প্রমা।উৎস শিহাবকে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,
— “কে সেই সন্দেহজনক ব্যাক্তি?”
শিহাব গলা খাঁকারি দিয়ে বলতে শুরু করে,
— “আচ্ছা এর আগে একটা প্রশ্ন করি তোকে উৎস?”
উৎস গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে,
— “কর।”
শিহাব একটা ঢোক গিলে উৎসকে জিজ্ঞেস করে,
— “না মানে আজকে তোর সাথে সামু আসেনি কেন?”
উৎসর স্পষ্ট জবাব,
— “সামু বলেছে সামুর পেট ব্যাথা তাই আজকে আসতে পারবেনা।তাই আমিও আর জোড় করিনি।বাট হঠাৎ এই কথা আস্ক করার কারণ টা কি বলতো?”
শিহাব দাঁত কেলিয়ে বলতে লাগলো,
— “তো আজকে যা ঘটলো আর সামুর ভার্সিটি না আসার কারণ,তারপর মিহু রুহিও আজকে আসেনি আমি দেখেছি।তোর কি মনে হয়না এর মধ্যে কোনো যোগসূত্র থাকলেও থাকতে পারে?”
প্রমা শিহাবের পিঠে একটা আস্তে করে কিল বসিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করে,
— “আরিব্বাস!তুই তো দেখি বুদ্ধিমান হয়ে গেছিস রে।বাহ!কত সহজে হিসেবটা মিলিয়ে নিলি।”
উৎস চিৎকার করে শিহাব আর প্রমাকে বলে,
— “স্টপ!”
শিহাব আর প্রমা দুজনেই মুখে আঙুল দিয়ে দেয়।উৎস কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাসি দেয়। তারপর বলতে লাগে,
— “ওকে ফাইন!যা বোঝার আমি বুঝে গেছি।এখন যা করার আমিই করবো তবে তার আগে ক্যান্টিনের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে হবে।তোরা আমার সঙ্গে যাবি নাকি আমি নিজেই যাবো?”
শিহাব আর প্রমা একসাথেই বলে,
— “হ্যা হ্যা যাবো।নিয়ে চল আমাদের।”
উৎস দাঁড়িয়ে পড়ে আর সানগ্লাস চোখে দিয়ে শিহাব আর প্রমাকে বলে উঠে,
— “ওকে ফলো মি!”
উৎস এগিয়ে যেতে থাকে আর উৎসর পিছন পিছন শিহাব আর প্রমাও যেতে থাকে।
________________________________
সারা রুমে পাইচারি করছে সামু।ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই সারা রুমে পাইচারি করছে সামু।সামু কিছুক্ষণ পাইচারি করার পর ফোন হাতে নিয়ে রুহিকে কল করে।কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর ওপাশ থেকে রুহি ফোন ধরে বলতে থাকে,
— “কিরে টেনশনে আছিস মনে হয়!আমিও অনেক টেনশনে আছি রে।সব তোর জন্য হয়েছে হু।”(রুহি)
— “আরে রাখ তুই দোষারোপ করার কথা।এখন কথা হলো আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে আমি বোধহয় ধরা পড়ে যাবো রে।”(সামু)
— “তাহলে এখন আমার আর মিহুর কি হবে?উৎস ভাইয়া তো তোর মামণির ছেলে।তুই তো কোনোরকমে বেঁচে গেলি! কিন্তু আমাদের কি হবে রে?আমাদের যদি ভার্সিটি থেকে রাস্টিগেট করে করে দেয়?তখন কি হবে আমার আর মিহুর?এ্যাএ্যা!”(রুহি)
— “কান্না থামা গাধী।এমন কিছুই হবেনা।আর তুই বলছিস যে উৎস ভাইয়া মামণির ছেলে হওয়ায় আমি বেঁচে গেছি।এই ধারনা একেবারেই ভুল।
কারণ মামণি কিছু কাজে গ্ৰামের বাড়িতে গেছে।মামণি তো ১ সপ্তাহ কি বলছি ২ সপ্তাহের আগে ফিরতে পারবেনা।এখন আমার কি হবে ভাবতে পারছিস?”(সামু)
— “হুম তাও তো ঠিক। আচ্ছা শোন এর থেকে বাঁচার কি কোনো রাস্তা নেই?”(রুহি)
— “না কোনো রাস্তাই খোলা নেই।এই ওয়েট ওয়েট আছে একটা রাস্তা।এই আমি ফোনটা রাখছি কেমন!বাই পরে কথা হবে।”(সামু)
রুহিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সামু ফোন রেখে দেয়।তারপর সামু খাতা আর পেন নিয়ে কিছু একটা লিখতে বসে পরে। কিছুক্ষণ পর লেখা শেষ হলে সেগুলো পড়তে থাকে।
_______________________
বাড়িতে চলে আসে উৎস।ইশু দরজা খুলে দেওয়ার পরপরই ঝড়ের গতিতে বাড়িতে ঢুকেই ইশুকে প্রশ্ন করে উৎস,
— “সামু কোথায় রে?আমি দেখা করবো ওর সাথে।”
ইশু উৎসর প্রশ্নে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।কি বলবে বুঝতে পারছেনা।সামু কড়া আদেশ জাড়ি করেছে ইশুর ওপর যাতে ইশু কোনোভাবেই সামুর কথা উৎসকে না বলে।
চলবে……….