#অচেনা_শহর 💖
#সিজন (২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:–[১১]
সিগ্ধ বাসায় আসার পর থেকে বারান্দার চোখ বন্ধ করে বেলকনির দোলনায় বসে আছি। চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে আছে যার কোনা বেয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। ছেলে মানুষ এত সহজে কাঁদতে পারেনা।তাদের কষ্টে বুক ফেটে গেলে তা প্রকাশ করতে পারে না। ছেলেরা হয় কঠিন আসলে তা মন থেকে নয় উপরে যা বুঝায় তাদের কাঁদতে মানা। তারা শত কষ্টের মাঝেও মেয়েদের মতো চিৎকার করে কাঁদে না।
কিন্তু আজকে সিগ্ধ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে বুকটা ফেটে কান্না আসছে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু ওর কান্না বা ওর মন খারাপ দেখার মত এখানে কেউ নেই সবাই কে ও হারিয়ে ফেলেছি।লাখ লাখ টাকা পেয়েছে কিন্তু বিন্দুমাত্র ভালোবাসা পাইনি যেটা ওই ছোট্ট ঘরে নিজের বাবা মা বোন ঘিরে ছিল। তার ছেঁটে ফটাও এই বাসায় নাই এই বাসার সবাই শুধু টাকা চিনে।
নিজের বাবা মার সাথে যে অন্যায় করেছি আমি তার শাস্তি আমি প্রতি মুহূর্তে পাচ্ছি। আজকে সবচেয়ে বড় শাস্তি টা পেলাম না মায়ের শেষ দেখা পেয়েছিলাম আর না বাবার। সবাই আমার উপর অভিমান করে আমাকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেল। তাদের উপর বিরক্ত হয় এক সময় তাদের রেখে চলে এসেছিলাম ভেবেছিলাম টাকাই জীবনের সব। টাকা থাকলে আর কিছু লাগবে নাএখন টাকা পেয়েছি কিন্তু এখন আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি টাকা জীবনের সব টাকা জীবনের অভিশাপ। যে অভিশাপ এর জন্য আমি আমার সুখ শান্তি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।
সেদিন যখন মহুয়া ( সিগ্ধ স্নেহার ভাই আর মহুয়া সিগ্ধর বউ) মাকে নিয়ে অনেক কথা বলেছিল। আমি বিশ্বাস করে নিয়েছিলাম আসলে তখন আমি মহুয়াকে অন্ধ বিশ্বাস করতাম। ভালোবাসা আমি অন্ধ হয়ে গেছিলাম।তখন শুধু মহুয়াকে আমি নিজের আপন ভাবতাম আমি ভাবতাম বাবা-মা আমার ভালো চায় না বেশি। আমি মহুয়াকে একা বিয়ে করেছি বলে তারা মেনে নেয়নি আর তাই ওর উপর টর্চার করে। এইসব ভেবে আমি মাকে কথা শোনায়।তখন আমাকে মহুয়া এইখানে চলে আসার কথা বলে আর লোভ দেখায় টাকা-পয়সার।মহুয়ার বাবা আমাকে ফোন করে বলে আমি চলে গেলে নাকি আমাকে নিজের অফিসের বস করে দিবে।একটা ফ্ল্যাট দিবে আমি লোভে পড়ে যায় টাকার একটা লোভ। তখন আমার টাকা পয়সার প্রতি আকর্ষণ হয় বাবা-মা কে তুচ্ছ করে চলে আসি।সব সময় আমি চাইতাম আমার অনেক টাকা হবে তো সেটা হুট করে পাওয়ার আনন্দে আমি আর কোন দিক তাকাই নি। ছেড়ে এসে ছিলাম নিজের সমস্ত আনন্দ বিসর্জন দিয়ে। তখন বুঝতে পারিনি আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম। এরা আমাকে তাদের গোলাম বানিয়ে ফেলল। মায়ের মৃত্যুর কথা শুনে ছুটে গিয়েছিলাম ভেবেছিলাম আর এই নরকে ফিরে আসব না
বাবা তখন ত্যাজ্য করে বসল স্নেহা আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল। সবকিছুর জন আমাকে তাই হলো আমার মুখ দেখবে না। আমি ভেঙ্গে পড়লাম তখন মহুয়া আর ওর ফ্যামিলি আমাকে আবার বাবা আর স্নেহাকে নিয়ে ভুল বুজালো। আমি রেগে আর ওদের সাথে দেখা করি না ওদের খোঁজ নেইনা।আস্তে আস্তে বুঝতে পেলাম এই ফ্যামেলি সবাই আমাকে নিজেদের স্বার্থে রাখছে। স্বার্থটা হচ্ছে মহুয়ার কোন ভাই নাই। তো ভাই এর সমস্ত দায়িত্বটা আমাকেই দিয়ে করাবে যত খাটুনি সব আমার উপর দিয়েই যাবে। মহুয়ার বাবা তাইতো আমাকে ব্যবসায় ঢুকিয়ে দিয়ে নিজে ঘরে বসলো মাস শেষে সমস্ত টাকা নিজের নিয়ে নেয়। সারা মাস আমাকে খাটিয়ে শূন্যহাতে আমাকে বসে থাকতে হবে। অফিসের বস আমি ঠিক আছে কিন্তু টাকাপয়সা সবকিছুই নেওয়া দেওয়া চলে মহুয়ার বাবার হাত দিয়ে।খেতে মহুয়ার অবশ্য কিছুই যায় আসে না সেতো প্রতিমাসে ডোলা রে ডোলা টাকা পায়। আর তা দিয়ে সে তার পার্টি করে বেড়ায়। আমার দিকে তার সময় কোথায়। মাঝে মাঝে ভাবি মহুয়া কি সত্যি আমাকে ভালোবাসে? ভালবাসলে আমার সাথে এই ব্যাবহারটা করতে পারত কখনো আমার ভালো-মন্দ খোঁজ নেয় না। সকালে আমি অফিসে চলে যায় তখন বেঘোর ঘুমায় একদিন ডেকেছিলাম তা নিয়ে কত কথাই না শুনালো ছোটলোকের বাচ্চা বলে। পরে আবার ধরে পা ধরে মাফ চেয়েছে। কিন্তু সেই দিনের পর আমি আর মহুয়া কে কোনভাবে ডাকাডাকি করিনি। কেন জানি মহুয়াকে আমার অচেনা লাগে। আগের সেই মহুয়াকে দেখতে পারেনা যে আমাকে ভালোবাসতো। সত্যি কি ভালোবাসো নাকি নাটক করতো?
রাতে বাসায় ফিরে মহুয়াকে বাসার বাইরে পায়। 12 টা 1 টা না বাজলে বাসায় ফিরে না। আমি অবশ্য জিজ্ঞেস করি না।নিরবে সহ্য করে কারন একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম তাতে বলেছে,
তুমি তো ছিলে গ্রামে ছোট্ট ঘরে।একটা জব করার জন্য এসেছিলে ঢাকায় তুমি কি বুঝবে এইসবে? এইসব হচ্ছে ফ্যাশন?
সেদিন আমিও রেগে বলেছিলাম, তাহলে আমাকে কেন ভালবেসেছিলে বিয়ে করেছিলে সবার অমতে।
সেটাই আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল তোমাকে আমি কি দেখে ভালবাসলাম? তুমি কি আমার সাথে যাও বল আসলে তোমার এই মুখটা তোমার এই সৌন্দর্যের প্রেমে পড়েছিলাম আমি। এখনো তুমি যথেষ্ট সুইট দেখতে কিন্তু একদমই আনস্মার্ট।তোমাকে তো আমি এসব করতে চেয়েছিলাম তুমি তো করলে না তোমার তো আবার পার্টি ফার্টি ভালো লাগেনা। তো ব্যবসা সামলাও এইসব দেখ।আমাকে ডিস্টার্ব করো না আমি আমার মতো থাকি তুমি তোমার মতো।
সেই দিনে আমাদের মনে হয় শেষ কথা হয়েছিল। তারপর আর আমাদের মুখোমুখি হয়নি।
রাতের অন্ধকারে দুজন দুজনায় শুয়ে থাকা হয়েছে এর থেকে বেশি কিছু না।
এক ঘন্টার মতো ওই ভাবেই নিজের স্মৃতিচারণ করে সিগ্ধ।
বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব নিজের বোনের চোখে আজ মৃত্যু ।আমার মত হতভাগা ভাই বোধহয় পৃথিবীতে আর দুটো নেই। আর আমার মত খারাপ ভাই খারাপ ছেলেও আর হয়তো নেই।
পর কখনো আপন হয় না মহুয়ার বাবা মা বোন, সবাই সব সময় আমাকে বাজে কথা বলে।তারা এখন আমাকে সহ্য করতে পারে না শুধু স্বার্থের জন্য রেখেছে তাদের গোলামী করে যাচ্ছে যে এজন্য।
নিজেকে নিজে ধিক্কার দিতে দিতে ওর রুমে এসে আয়নার সামনে দাড়ালো,
শেষবার মহুয়া বলেছিল। ও নাকি আমার এই রূপের প্রেমে পড়েছিল রূপের মোহেই আটকে গিয়েছিল না হলে নাকি আমার মত ছেলে ও কখনো ভালোবাসতো না আর না বিয়ে করে নিজের জীবনটা নষ্ট করত।
নিজের দিকে তাকিয়ে হাসল সিগ্ধ মেয়েরা ও ছেলেদের রূপের প্রেমে পড়ে। যেটা সব সময় ছেলেদের ক্ষেত্রে হয়। মহুয়া অবশ্যই আমাকে আগে প্রপোজ করেছিল না হলে আমি অত ধনী ঘরের মেয়ের সাথে প্রেম করার স্বপ্ন দেখতাম না।যখন চাঁদ নিজে এসে ধরা দিতে চায় তাকে না ধরতে চায়। কিন্তু সেইটা ধরা যে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ভুল। ভুল করে পস্তাতে হচ্ছে।
আমি আয়নার দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিচ্ছি নিজের পরিনীতি দেখে। চোখের কোনায় জল জমে গেছে। তখনই হন্তদন্ত হয়ে মহুয়া রুমে আসলো,
মহুয়া আমাকে ডাকতে ডাকতে আসছিল। আমি এই সময় ওর ডাক শুনে চমকে ওঠি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে কেবল এগারোটা বাজে এই সময় কিভাবে আসলো?
মহুয়া এসে নিজের পার্সটা বিছানায় ডিল মেরে আমার শার্টের কলার শক্ত করে ধরল আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম,
তোমার সাহস কী করে হল তোমার ঐ সো কল বোনকে ডেকে নিয়ে আমাদের অফিসে কথা বলার।
মহুয়ার কথায় আমি শকড ও জানলো কিভাবে আমি স্নেহা সাথে দেখা করেছি?
আমি অবাক দৃষ্টীতে দিকে তাকিয়ে আছি।
কি হলো অ্যানসার মী তুমি তোমার বোনকে আমাদের অফিসের জব দিচ্ছ। তোমার এত বড় সাহস তুমি ওর সাথে যোগাযোগ রেখেছো। আর সেইসব বলার প্রয়োজন বোধ আমাকে করনি।তোমার সাহস কী করে হল তোমার ওই অসভ্য বোনকে আমার অফিসে কাজ দেওয়ার।তারমানে তুমি ওদের সাথে আগে থেকে যোগাযোগ রেখেছো আর আমাকে কিছু জানাও নি তারমানে টাকাও দিয়েছ ওদের আমার বাপির টাকা তুমি তোমার বাপ বোনকে খাইয়েছো তোমার সাহস তো কম না চুরি করলা শেষমেষ। আমাদের দয়ায় থাকছো খাচ্ছ আবার এইসব টাকা এভাবে নষ্ট করছো?
মহুয়া চিৎকারও করতে করতে আমাকে কথাগুলো বলছে। ওর পিছনে ওর বাবা-মা দুজনেই রুমে উপস্থিত। তাদের সামনে মহুয়া আমার কলার ধরে চিৎকার করে আমাকে শাসাচ্ছে, আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। মহুয়া বাজে বাজে কথা বলে যাচ্ছে। আমি ঘাড় উঁচু করে একবার আমার বাবা মার দিকে তাকিয়ে দেখি তারা রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি বুঝতে পারছি না এরা জানলো কিভাবে এসব? তারমানে অফিস থেকে কেউ এসব জানিয়েছে।
কি হল কথা বলছো না কেন? তোমার সাহস কি করে হল তুমি এইসব করেছ?নিজেতো মুরাদ 91 টাকা কামানোর অন্যের টাকায় চলো আবার সেই গুলো নিজের সকল বাবা বোনকে দিচ্ছ।এত যেত তাদের দায়িত্ব নেয়ার শখ তাহলে নিজে উপার্জন করে তাদের দাও।তোমার বোনকে বলিহারি লজ্জা নাই নিলজ্জা মেয়ে একটা।কোন সাহসে তোমার কাছে হাত পাততে আসলো তখন তো খুব চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলেছিল।বাবাকে উস্কে দিয়ে তোমাকে ত্যাজ্য করেছিল। ও মন নিচু, বেহায়া…
মহুয়া আজেবাজে কথা বলে যাচ্ছে রাগে আমার হাত মুষ্টিবদ্ধ হচ্ছে।আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না নিজের গলা থেকে ওর হাত সরিয়ে মহুয়ার গালে চড় মেরে বসলাম।আমি তো এক টাকাও দেয়নি আর না ওকে কাজে দিয়েছি আমি তো নিজেই জানতাম না যে আমাদের অফিসে আছে।আজ জানতে পারলাম তা সে আমাকে ভাই বলে মানেনা আর না আমার দয়া নিবে।আমার বাবাকে নিয়ে এত বাজে কথা বল যেখানে সে এখন বেঁচে নেই। এই মেয়েটার জন্য সব হয়েছে আর তার থেকে এত সব কথা শুনতে হচ্ছে যার জন্য আমি সবাইকে ছেড়ে চলে এসেছিলাম। সে আমাকে বারবার খোটা দিলো।
মহুয়া আমার হাতের চর খেয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে গালে হাত দিয়ে।
এদিকে মহুয়ার বাবা মা এসব দেখে ক্রোধে ফেটে পড়ছে মহুয়ার বাবা তো চিৎকার করে উঠলো,
শুয়োরের বাচ্চা তোর সাহস কী করে হল আমার মেয়ের গায়ে হাত তোলার তোকে তো আমি খুন করে ফেলবো!
__________
আমি আদ্রর সামনে দাঁড়িয়ে থরথর করে কাঁপছি।আদ্র আমার দিকে এগিয়ে এসে দু কাঁধে হাত রেখে রেগে বলল,
কে এই ছেলে তার সাথে তুমি কি কথা বলছিলে তুমি যে আমার কথার উত্তর না দিয়ে তার নাম শোনা মাত্রই ছুটে চলে আসলে তাকে ফোন করার জন্য? হু ইজ শি কিসের এত কথা বলছিলে তার সাথে?
আদ্র রাগী কণ্ঠ রাগী মুখ দেখে আমি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম। ভয়ে আমার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না।আদ্র আমার মুখ থেকে কথা বের করতে না পেরে আরো রেগে উঠলো,
আমি কথা বললেই তোমার সমস্ত কথা অফ হয়ে যায় তাই না।আর এমনিতেও সবার সাথেই খুব হেসে খেলে কথা বলতে পারো। তখন তোমার মুখে কথার খই ফোটে।
আমি ভয়ে শুকনো একটা ঢোক গিলে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,,,
পা–নি খা–ব
আসলে আমার গলা শুকিয়ে গেছে ভয়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে গলা শুকিয়ে। আমার কথা শুনে আদ্র বোকা বনে গেলো,,
হোয়াট?
পানি দেন না। গলা শুকিয়ে মরে যাবো তো এত ভয় দেখান কেন?
কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললাম। আদ্র আমার দিটে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে থেকে বিরক্ত হয়ে আমাকে ছেড়ে দিল।
ছাড়া পেয়ে আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে গ্লাস ভর্তি করে পানি খেলাম।পানি খেয়ে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।
তুমি খুব চালাক হয়ে গেছো?
আমি আদ্র দিকে তাকিয়ে আফসোস করে বললাম,,
ইস আমার ফোনটা গেল।
এখনো তুমি ফোনের চিন্তা করছো?
বিশ্মিত হয়ে।
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,,তো করবো না এটা আমার বর কিনে দিয়েছিল।আর আপনি সত্যি জেলাস আচ্ছা আপনার কি মনে হয় আমি নিশাতের সাথে প্রেম করি? আচ্ছা আপনার কি সত্যি বিশ্বাস আমি কারো সাথে প্রেম করতে পারি।
আদ্র আমার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে আছে।
আমি জানি আপনি বিশ্বাস করেন না এটা
তাহলে আমার ফোনটা কেন ভাঙলেন।
আরেকটা কথা কথা আমি শুনতে চাই না যাও ডিনার রেডি করো।
না আগে বলেন ফোন কেন ভাঙলেন?
শুনতে চাও কেন ভাঙছি?
আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম।
আমার হ্যাঁ শুনা মাত্র আদ্র আমার বাম হাত ধরে টেনে কোমড় জড়িয়ে ধরলো, আচমকা কাজে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। বড় বড় চোখ করে আদ্রর দিকে তাকালাম,
আদ্র ঠোঁট কামড়ে ধরে আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। আমি ছোট চেষ্টা করতে করতে বললাম,
কি করছেন ছাড়ুন?
আদ্র আমার কথা কানেও নিলো না।
উল্টো মাথা নিচের দিকে ঝুকিয়ে আমার মুখের দিকে আসতে লাগলো, আমি হকচকিয়ে সাথে সাথে মাথা পিছিয়ে নিলাম।
আদ্র আমার ঘাড়ে শক্ত করে হাত দিয়ে ধরে সোজা করে নিল। তারপর নিজের আমার কাছে আনতে লাগলো মুখ আমি ভয়ার্ত চোখে আদ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি আদ্র মুখ কানের কাছে নিয়ে গেল আর ফিসফিস করে বলতে লাগল,
আমি চাই আমি তোমার কাছে থাকলে তোমার সমস্ত খেয়াল শুধু আমার উপরেই থাকবে। পৃথিবীতে যায় ঘটে যাক তুমি শুধু আমার আমাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তোমার সমস্ত চিন্তা-ভাবনা ভালোবাসা সব আমাকে ঘিরে থাকবে।
আদ্র ফিসফিসানি কথায় ওর গরম নিশ্বাস আমার ঘাড়ে আছড়ে পরছে। আমার সারা শরীর কাঁটা দিয়ে উঠছে।আদ্রর এত কাছে আসাতে আমার বুকের ধুকপুকানি দ্রুতগতিতে লাফাচ্ছে। আমি চোখ বন্ধ করে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
~~চলবে~~