#অচেনা_শহর💖
#সিজন(২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:–[২৬]
ভয়ে আমার হাত পা কাপছে। কিন্তু লোকটা কথা বলছে না আমার দিকে তাকাচ্ছে ও না আমি জরোসরো হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কে এই লোকটা কোন শত্রু নাকি কপালে আমার ঘাম ছুটে গেছে হলুদের মাঝেই আমি হাত বাড়িয়ে দেখলাম।
আমি আবার বললাম,
“কে আপনি কথা বলছেন না কেন?”
এবার লোকটা আমার দিকে তাকালো শুধু তাকালো না এগিয়ে এসে আমার কোমর জড়িয়ে ধরলো। ভয়ে আমি চিৎকার করতে যাবে তখন মনে হলো স্পর্শ টা আমার খুব চেনা কারো। আমি চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলাম। এবার লোকটার মুখ দেখার জন্য তাকালাম। সাথে সাথে সমস্ত ভয় মূহুর্তে মাঝে শেষ হয়ে গেল। বিস্মিত হয়ে আদ্রর দিকে তাকিয়ে আছি আদ্রর ঠোঁটে দুষ্টু হাসি নিয়ে আমার ভীতু মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি বড় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রেগে তাকালাম,
“আপনি আমাকে এই ভাবে ভয় দেখালেন কেন?”
আদ্র অবাক হওয়ার ভান করে বললো,,
“ভয় কোথায় দেখালাম!”
“আবার অস্বীকার করছেন। কি অসভ্য লোক। ভয় দেখাননি বলছেন তাহলে ওইভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন? ডাকলেও সারা দেন না আমি কতো কিছু ভাবছিলাম জানেন?”
আদ্র এক হাত বাড়িয়ে আমার ছোট চুল গুলো কানের কাছে গুঁজে দিয়ে বলল,
“কি ভাবছিলে তোমাকে কেউ কিডন্যাপ করতে এসেছে?”
আমি বললাম, ” তা না কিন্তু ওই মাইশার বলা লোকটা ভাবছিলাম।”
“এতো ভয় পেয়না বাইরে গার্ড আছে। কিছু হবে না দেখ হবে ঠিক থাকবে। আমার স্নেহাকে আমার থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।”
আমি মুখ কালো করে বললাম,, ” আমার ভয় করছে খুব মনে হচ্ছে খারাপ কিছু ঘটবে। আপনাকে হারানোর ভয় পাচ্ছি। আমি আপনার থেকে আলাদা হলে এবার মরেই যাব আদ্র।”
বলতে বলতে আমার চোখ ভড়ে গেল জলে। আদ্র গম্ভীর হয়ে গেল সাথে সাথে ওর শক্ত চাহনি দেখতে পাচ্ছি অন্ধকার হলেও আবসা আলোতে হালকা বুঝা যায়।
চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে কন্ট্রোল করে বলল,
“তোমাকে কেউ আমার থেকে আলাদা করতে পারবে না। আর যদি সেই দুঃসাহস করে তো তার আমি এমন অবস্থা করতে সে নরক যন্ত্রণা কি দেখতে পাবে।”
দাঁতে দাঁত চেপে কঠিন গলায় বলল।
তারপর হাত বাড়িয়ে আমার গালের পানি মুছে দিয়ে মুখ স্বাভাবিক করে বলল,
“উফফ বউ কেঁদো না তো কোথায় লুকিয়ে এলাম রোমান্স করতে আদর খেতে তা না শুধু কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছো।”
এবার আমার টনক নড়লো,
“আপনি এখানে কিভাবে আসলেন? আজ তো আপনার ওইখানে থাকার কথা! ”
“তুমি এখানে আমি কি ওইখানে থাকতে পারি তাই তো চুরি করে এসে পরলাম। কি কপাল আমার নিজের বউ এর সাথে দেখা করতে আমাকে লুকিয়ে আসতে হচ্ছে।”
“কিন্তু আপনি আসলেন কেন? কাল তো আসতেই হতো এখন কেন আসলে ছারুন আমাকে আর ফিরে যান।”
“পাগল নাকি এতো কষ্ট করে আসলাম যার জন্য তা না করেই চলে যাব।”
আমি অবাক হয়ে বললাম,
” কি জন্য এতো কষ্ট করে এসেছেন শুনি।”
“সবাই তোমাকে হলুদ দিবে আর আমি কিনা দিতে পারবো না এটা কি হতে পারে।”
এই লোকটা নির্ঘাত পাগল হয়েছে।
তার মানে।
আদ্র ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো। আর নিজের মুখ আমার দিকে এগিয়ে আনতে লাগলো।নিজের গালে হলুদ আমার দুগালে লাগিয়ে থামলো আমি পাথর হয়ে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
হাত বাড়িয়ে আমার গলায় ও লাগিয়ে দিলো আমি চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি।
আমার কপালে চুমু দিলো।
কাজ শেষ।
আদ্রর কথা শুনে চোখ মেলে তাকালাম। রেগে
আমি কিছু বলবো তার আগেই ছাদ থেকে লাফিয়ে পরলো আদ্র আমি ভয়ে ছুটে এসে আদ্রর ধরার ট্রাই করলাম।
আর সাথে চিৎকার করে উঠলাম আদ্র।
রেলিং ধরে নিচের দিকে ঝুঁকে আছি এটা কি করলো আদ্র কিছু মাথায় ঢুকছে না।
নিচে তাকিয়ে দেখি আশিক দাঁড়িয়ে আছে একটা দরি ধরে আদ্র সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার চিন্তিত মুখ দেখে বলল,
বউ আমি ঠিক আছি। এটা আমার করাই ছিলো এতো ভয় পাও কেন? বাই এইদিককে আমাকে খুঁজে পাগল হচ্ছে সবাই বাই।টেক কেয়ার। পৌঁছে কল করবো।
বলেই চলে গেল আমি আদ্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আমার চিৎকার শুনে দৌড়ে এসেছে অনেক এসে জিজ্ঞেস করতে লাগলো কি হয়েছে চিৎকার কেন করলাম।আমি আমতা আমতা করছি কি বলবো ভাবছি।
তারপর বললাম অন্ধকারে এ ভয় পেয়েছি সবাই এটা শুনে বকলো একা এখানে কেন এসেছি।
সব চেন্জ করে বিছানায় শুয়ে পরলাম। অন্তরার দিকে তাকিয়ে বলল,
তোর এই অবস্থা আমার ভালো লাগছে না। হৃদয় কে একবার হাতের কাছে পাই কি যে করবো আমি আমার বোনকে কষ্ট দেওয়া তাই না।
ওকে কোথায় পাবি।
মেসেজ করবো নাম্বার দে।
দরকার নেই।
আছে।
আমি জোর করে নাম্বার নিয়ে মেসেজ করলাম।
‘ভাইয়া কাল আমার বিয়ে আর আপনি আসবেন না এটা কিন্তু ঠিক না তাহলে আমিও কিন্তু আপনাদের বিয়েতে যাবনা।’
লিখে পাঠিয়ে দিলাম।
“কয়েকদিন ধরে ও আমাকে ইগনোর করছে। ”
অন্তরার কথায় থমকালাম। তারপর বললাম,
“ওইখানে কাজে বিজি তাই হয়তো।”
“এর আগে থেকেই।
“মানে। অবাক হয়ে বললাম।
“সেদিন তো বলল, আমাকে নাকি বিয়ে করবে না।
“মানে কি সব বলছিস?
“হুম। ফোন করলে ডিসটাব ফিল করে। দেখা করে না তাই আমি ওর বাসায় চলে গেছিলাম তখন ও আমাকে এসব বলেছে আর,
বলেই ডুকরে উঠলো।
আমি হতদম্ব হয়ে ওর কথা শুনছি।
সেদিন আর কি?
ও আমাকে মেরেছে জানিস। আমার গায়ে হাত তুলেছে।
আমি হতবাক হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে।
আমি কাউকে বলতেও পারছি না সইতে ও পারছিনা বাবা মাকে কি করে এসব বলবো আমি। নিজের পছন্দ করেছি ওকে আমি।
ও কেন এমন করছে ?
জানি না কিছু। কিন্তু আমার মনে হয় আমি ওর মনে থেকে উঠে গেছি তার জন্য ওইটাই কারণ…
কি?
মুখ চেপে ধরে কাঁদছে অন্তরা ওর কান্না দেখে আমার ভেতরটা ও কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। আমি ওকে জরিয়ে ধরলাম।
কাদিস না হয়তো মন খারাপ ছিলো তাই। হৃদয় তো তোকে খুব ভালোবাসে কতো কিছু করেছে তোর জন্য মনে নেয় ওই তো তোর পেছনে ঘুরেছে।
আমার সব শেষ হয়ে গেল ও যদি আমাকে বিয়ে না করে আমার কি হবে ওকে আমি খুব ভালোবাসি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না আমি। কেন এমন করছে কি করেছি আমি বলনা।
আমার বুকের ভেতরে কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। ওকে আমার কাছে এনে দে না কতো কল করেছি দেখ একবার ও রিসিভ করেনি।
অন্তরার সব কথা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে আছি। হৃদয় এমন কেন করছে জানতেই হবে।
কাঁদিস না সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস। কাঁদিস না।
বলেই ওর চোখের জল মুছে দিলাম। আদ্র কল করেছে কখন থেকে বাজছে অন্তরাকে রেখে ফোন কানে নিলাম।
আদ্র কে বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু এখন না বলাটাই বেটার কাল বলবো নি। হৃদয় এর সাথে কথা বলতে হবে। এমন করছে কেন যেখানে ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। তাও এমন কেন করছে সে তো অন্তরাকে ভালোবাসে তাহলে কষ্ট কেন দিচ্ছে।
পরদিন বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলো সবাই। আমি সব কিছুর মাঝেও অন্তরার জন্য ভাবলাম কিন্তু কিছু করার নেই।
আদ্র আমাকে খালি কল করেই যাচ্ছে ধরছি তো ধরছি না। পার্লার থেকে লোক এসেছে আমাকে সাজাতে সাজানো হচ্ছে তখন একটা হাসি মুখে রুমে এসে ঢুকলো তাকে দেখে আমি বসা থেকে থমকে দাঁড়িয়ে পরলাম।
~~চলবে~~
#অচেনা_শহর💖
#সিজন(২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#এক্সটা পর্ব
হাসি মুখে মাইশা এগিয়ে এলো আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বলল,
“বাব্বাহ রাস্তায় থেকে একদম রাজরানী হয়ে গেলি। তোর কপাল আছে।”
ব্যঙ্গ করে তাকিয়ে বলল। এগিয়ে এসে আমার ড্রেস তুলে ধরলো। তারপর আমাকে দেখে বলল,
“এতো খুশি হস না স্নেহা তোকে আমি খুশি হতে দেবো না। এখন আমি কিছু করতে পারছি না কিন্তু ও তোকে আদ্রর থেকে আলাদা করবেই দেখিস। তার আদ্র শুধু আমার হবে। আজকে তোর জীবনের সব চেয়ে খারাপ দিন হবে দেখিস।”
বলেই ভাব করে চলে গেলো। আমি কিছু বলার সুযোগই পেলাম না। কিন্তু আমার মাথায় আসছে না। মাইশা আপু এখানে কি করছে তাকে কে ইনভাইট করলো?
“ম্যাম বসুন।”
পার্লারের মেয়ের কথায় বসে পরলাম। কিন্তু আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে মাইশার কথাগুলো।
ভয়ে আঁতকে বসে রইলাম থ মেরে। আচমকা আমার বুকের ভেতরটা ধুক করে উঠলো আমি কি সত্যি আদ্রকে হারিয়ে ফেলবো।
ম্যাম কাঁদছেন কেন কাজল ছরিয়ে যাচ্ছে তো।
উনারা বিরক্ত হয়ে সাজাতে লাগলো।
কিন্তু আমি নিজেকে থামাতে পারছিনা। আমার ভয় করছে খুব বেশি ভয় করছে।
রানী এলো লাফালাফি করতে করতে। গোলাপি রঙের লেহেঙ্গা পরেছে। খুব সুন্দর লাগছে এসেই আমার পাশে দাঁড়িয়ে সাজ দেখতে লাগলো।
_______________
সাজ কম্পিলিট হতে তিনঘন্টা লাগছে।এতো আটাময়দা দিয়েছে যে মুখে নিজের কালার নাই।
অস্বস্থি লাগছে এভাবে থাকতে কিন্তু বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে।
আমার পাশে বসে আছে অলি। ওর হাতে আমার ফোন যেটাতে আদ্রকে কল করছে কিন্তু আদ্র রিসিভ করছে না।
আমি চিন্তিত হয়ে ভাবছি সব আদ্রকে বলবো কিন্তু সে তো রিসিভ ই করছে না।
আপু রিসিভ করছে না।
আচ্ছা আর দিতে হবে না।
অলি মাথা নেড়ে ফোন রাখতে যায় তখন মেসেজ আসে টোন করে।আমি সেদিকে তাকায়।
অলি ফোনটা দাও তো।
হুম।
আদ্র মেসেজ করেছে।
“বউ রাগ করো না ফোন রিসিভ করতে পারছি না বলে। শয়তানের দল আমাকে ফোন ধরতে দিচ্ছে না। আমরা রওনা হচ্ছি এসে কথা বলবো কেমন।”
মেসেজ দেখে ফোন রেখে দিলাম। রায়া ছুটে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
আন্টি তোমাকে কতো সুন্দর লাগছে।
আমি হেসে বললাম,, তাই।
হুম। লাল টুকটুকে বউ তোমার গাল ধরি।
বলেই আমার গাল স্পর্শ করতে আসবে তখন রানী এসে ওকে ধরে বললো,
ওই আপুর গাল ধরছিস কেন?
কেন কি হয়েছে?
রায়া গোমড়া মুখ করে।
আপুর সাজ নষ্ট হয়ে যাবে ধরিস না দেখ শুধু।
মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। আমি ওর গাল টেনে দিলাম।
ভাইয়া এলো রুমে আমি গিয়ে ভাইয়া ধরে নিয়ে এলাম।
ভাইয়া আমার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে।
তারপর মাথা হাত দিয়ে বলল,
আমার ছোট বোনটা কতো বড় হয়ে গেল আজ তার বিয়ে। কি মিষ্টি লাগছে তোকে
আমি আরো আগেই বড় হয়েছি বিয়ে তো আরো আগে হয়েছে।
ভাইয়ার কথাটা শুনে হাসলো। তারপরই মুখ কালো করে বলল,
আমি যদি থাকতাম তাহলে ওইভাবে তোর বিয়ে হতো না। আর না বাবা মা ওইভাবে।
ভাইয়া আর এসব ভেবো না আমাদের কপাল টাই এমন ছিলো। তাই নিজেকে আর দোষ দিও না।
ভাইয়ার চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছে। আমি বললাম,
এখন তুমি কাঁদলে কিন্তু আমিও কেদবো।
আমার কথা শুনে ভাইয়া চোখ বন্ধ দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তারপর চোখ মুছে নিয়ে আমাকে বলল,
না একদম না। তাহলে তোর সাজ নষ্ট হয়ে পেত্নি হয়ে যাবে।
__________________
বর এসেছে বলে সবাই চেঁচামেচি করতে লাগলো। আমার কাছে অন্তরা ও রানী ছিলো বর এসেছে শুনেই সবাই চলে গেল দৌড়ে আমাকে রুমে একা রেখে। আমাদের বিয়ে আগেই হয়ে গেছে তাই আজকে শুধু আমাকে আর আদ্রকে স্টেজে বসাবে। মজা খাওয়া দাওয়া পিকচার তুলে সন্ধ্যায় ওইবাসায় যাব।
আমিও আদ্রকে দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না তাই তো লেহেঙ্গার দুই হাতে ধরে বেলকনিতে গিয়ে দেখার জন্য আদ্রকে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে বেলকনির কাজে যেতেই আমার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠল। আদ্র হাসি ফুটে দাঁড়িয়ে আছে।
বিয়ের শেরোয়ানি পরে দাঁত বের করে হাসছে। আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি এই মানুষটি শুধু আমার শুধুই তখনি মনে হলো দরজা খুলে কেউ ভেতরে এলো। তার পায়ের আওয়াজ আমার কানে আসছে সবাই গেটের কাছে আদ্রদের কাছে অন্তরা অলি রানী রায়া সবাই তাহলে এখানে কে এলো অজানা ভয়ে আমার বুক ধক করে উঠল। চমকে ভেতরে আসতেই একটা মুখ দেখলাম কিছু বলার আগেই তিনি আমার মুখে স্পে করে দিলো সাথে সাথে আমি জ্ঞান হারিয়ে পরে যেতে নিলো সে আমাকে নিজের বাহুডরে আবদ্ধ করে নেয়।
স্নেহা বেবি এবার তুমি শুধুই আমার। কেউ তোমাকে আমার থেকে নিতে পারবে না। আর না আদ্র পারবে। বেচারা তোমার সুখে না পাগল হয়ে যায়।
লোকটা ঘাড় বাঁকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে আদ্রর দিকে তাকালো বেলকনি দিয়ে যেখানে আদ্রর হাসিমাখা মুখ দেখা যাচ্ছে।
এই হাসি একটু পরই বিলিন হয়ে যাব। জাস্ট একটু সময়।
বলেই বাঁকা হাসলো লোকটা।
________________
আদ্রর অস্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সবাই ওকে নিয়ে হাসি তামাশা করছে। আদ্রর সেদিকে খেয়াল নেই ও আছে স্নেহার চিন্তায় আজকে একবার ও স্নেহাকে দেখে নি তাকে বউ সাজে দেখার জন্য ছটফট করছে।অনেক দিনের ইচ্ছে এটা স্নেহাকে বউ সাজে দেখবে। যে ওর জন্য লাল টুকটুকে বউ সেজে ওর অপেক্ষায় বসে থাকবে। ব্যাকুল হয়ে উঠছে।
রাহাতের দিকে তাকিয়ে বলল,
ভাই একটু তারাতাড়ি কর।
রাহাত বলল,, একটু তোর সইছে না। তাহলে দিয়ে দে সব টাকা।
পঞ্চাশ হাজার টাকা চেয়েছে গেটের জন্য আদ্র তাই দিয়ে দিলো। স্টেজে নিয়ে আদ্রদের বসানো হলো। ওর পাশে স্নেহার চেয়ার খালি। পাশে দাঁড়িয়ে আশে ওর ফ্রেন্ডরা।
অন্তরা নিচে স্নেহাকে আনতে গেছে।
অন্তরা নিচে এসে দেখে রুম ফাঁকা স্নেহা নাই। স্নেহা কে ডাকতে লাগে কিন্তু নো রেসপন্স ভয় পেয়ে যায় অন্যান্য রুমে খুজতে লাগে শেষে না পেয়ে ছুটে ছাদে চলে আসে।
অন্তরাকে হাঁপাতে হাঁপাতে আস্তে দেখে সবাই অবাক হয় সাথে রুনা বলে,
কিরে একা কেন স্নেহা কই। আর এমন হাপাচ্ছিস কেন?
আপা স্নেহা তো রুমে নেই।
মানে। রুমে নেই অন্য রুমে দেখেছিস।
অবাক হয়ে।
হুম কোথাও নেই আমি কতো ডাকলাম কোন সারা শব্দ নেই। কোথায় গেল ও।
আদ্র সোফায় থেকে দেখতে পাচ্ছে অন্তরা কান্না গলায় কিছু বলছে। অন্তরা তো স্নেহা কে আনতে গেছিলো তাহলে ও একা কেন আর কি বলছে দুজনের মুখে এতো চিন্তা দেখা যাচ্ছে কেন?
স্নেহার কিছু হয়নি তো কথাটা মাথায় আসতেই সোফা থেকে উঠে পরলো।
কি রে কোথায় যাচ্ছিস?
আমার মনে হয় কোন গন্ডগুল হয়েছে। ওই দেখ।
বলেই অন্তরাদের দেখালো।
আশিক বলল, তুই উঠিস না সবাই কি ভাবে। আমি দেখ আসছি।
আদ্র দেখলো নতুন জামাইয়ের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে তাই উঠলো না।
কিন্তু একটু পর যা শুনলো তাতে ওর পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেল।অলি রানি কে বলছে,
স্নেহা আপুকে পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই খুঁজছে কোথায় গেল বলতো।সবাই চিন্তা করছে অনেক।
স্নেহাকে পাওয়া যাচ্ছে না মানে কি কি হয়েছে ওর। কোন বিপদ বুকে ব্যাথা অনুভব করছে আদ্র আর কোন দিক না তাকিয়ে স্টেজে থেকে দৌড়ে নেমে এলো সবাই জামাইয়ের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
সেদিন খেয়াল নেই আদ্রর ওর মাথায় শুধু স্নেহা এখন। মনে হচ্ছে ওর কাছ থেকে কেউ ওর আত্না নিয়ে গেছে।
আদ্র পাগলের মতো সারা বাসা তন্ন তন্ন করে ও স্নেহার মুখ দেখতে পেল না।পাগলের মত বিহেভ করছে কেউ সামলাতে পারছে না।
রাহাত অন্তরার থেকে জানতে পারলো সকালে মাইশা এসেছিলো এটা শুনেই ও সিউল হয়ে গেছে এর পেছনে ওর হাত আছে। আদ্রকে বলতে হবে কিন্তু আগে ওকে শান্ত করতে হবে।
__________________
~~চলবে~~