অদ্ভুত তোমার নেশা পর্ব-১২

0
935

#অদ্ভুত_তোমার_নেশা
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পার্ট____________১২




হঠাৎ কুহুর কানে ফজরের আযানের ধ্বনি পৌছালো,কুহু বাহিরের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলো ভোর হয়ে গেছে, এখনো বাহিরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে, সারা টা রাত কুহু ঘুমাতে পারে নিই। কুহু ওয়াসরুমে গিয়ে ওজু করে ফজরের নামাজ পড়ে নিলো,তারপর কিচেনে গিয়ে বিভোরের জন্য ব্রেকফাস্ট বানাতে লাগল,কুহুর শরীর টা খারাপ লাগছে সারা রাত ঘুমায় নিই তাই হয় তো।কুহু কফি বানিয়ে বিভোরের রুমে গেল, রুমে গিয়ে কিছুটা অবাকই হলো, বিভোর হাতে ঘড়ি পড়ছে বুঝাই যাচ্ছে অফিসের জন্য রেডি হচ্ছে, কিন্তু এই সময় তো বিভোরের ঘুম থেকে উঠার কথা। কুহু বিভোরকে বলল,আপনি কোথায় যাচ্ছেন এখন।

বিভোর একবার তাকিয়ে আবার নিজের হাতের ঘড়ি ঠিক করতে করতে বলল,অফিসে।কুহু বলল,এত সকাল সকাল। বিভোর বলল,হুম।কুহু বলল,ঠিক আছে এই নিন কফি আর নিচে আসুন আমি ব্রেকফাস্ট বানিয়েছি।বিভোর বলল,প্রয়োজন নেই আমি বাহিরে খেয়ে নেব।
কুহু খানিকের মাঝে আবার নিশ্চুপ হয়ে গেল।তারপর আবার বলে উঠল, অল্প খেয়ে যান।
বিভোর বলল,না। বলেই কুহুকে পাশ কাটিয়ে বাহিরে চলে গেল,আর কুহু মূর্তির মতো এক জায়গায় দাড়িয়ে রইলো,কুহুর অজান্তেই কুহুর গাল বেড়ে এক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।

কিছুখন পরই বিভা আসলো, কুহুকে জেগে থাকতে দেখে অবাক হয়ে বলল,কুহু ছয়টাও তো বাজে নিই তুমি এখনি উঠে গেছো।কুহু বলল,হুম।বিভা কুহুক নিখুঁত ভাবে দেখতে লাগল তারপর বলল,কুহু মুখটা এমন শুকিয়ে আছে কেন আর চোখ লাল হয়ে আছে আবার অনেকটা ফুলেও গেছে তুমি কি কান্না করেছো।কুহু বলল,না। বিভা বলল,তাহলে।কুহু বলল,বাদ দাও না আপু ভার্সিটি যাব।বলে বেড়িয়ে পড়লো, কুহু হোল রুমে গেল তখনি কাজের খালা বলল,কুহু আম্মা আসো খাইয়া যাও।কুহু বলল,না খালা খাব না। বলেই হাটা দিল, বিভা বলল,কুহু কি হয়েছে মন খারাপ কিছু খেলে না কেন।কুহু বলল,আপু আজ তোমার ছুটি তুমি বাড়ি চলে যাও।

বিভা অবাক হয়ে বলল,কি হয়েছে কুহু।কুহু বলল,আপু তোমার ছুটি বললাম তো।বিভা বলল,ওহ আমাকে বিরক্ত লাগছে তাই না ওকে ফাইন আমি চলে যাচ্ছি। বিভার এমন রাগী লুক দেখে কুহু বিভার হাত টেনে ধরলো আর বলল,প্লিজ অনন্ত তুমি আমার উপর রাগ কর না। বিভা কুহুকে বলল,আর কে রাগ করে আছে।কুহু কাদু কাদু কন্ঠে বলল,আপু আমি তোমাকে জরিয়ে ধরি আমার না এখন একটা টাইট হাগ প্রয়োজন।বিভা মুচকি হেসে বলল,ধরো না কে না করেছে।কুহু বিভাকে জরিয়ে ধরলো, বিভাও কুহুকে জরিয়ে ধরলো,বিভা কুহুকে নিজের ছোট বোনের মতো ভালোবাসে,বিভা হেসে বলল,পাগলী। তখনি বিভা বুঝতে পারলো কুহু কান্না করছে, বিভা বিচলিত হয়ে বলল,কুহু এই কুহু তুমি কাদছো। কুহু কিছু না বলে কেদেই চলেছে।

বিভোর নিজের কেবিনে বসে ল্যাপ্টবের দিকে তাকিয়ে আছে ওর কাজে মনই বসছে না। শুধু কুহুর কথা মনে পড়ছে, তখন খেতে না করার পর কুহুর মুখটা ছোট হয়ে গিয়েছিল,বিভোর ভাবতে লাগল,মেয়েটার চোখ গুলো ফুলে লাল হয়ে ছিল ও কান্না করেছে দ্যত আমার হয়েছেটা কি আমি কেন এত রাগ দেখাচ্ছি ওর সাথে।

কুহুর কথা শুনে বিভা অবাক হয়ে বলল,বাবা এইটুকুর জন্য তুমি এত কান্না করছো আরে সব ঠিক হয়ে যাবে স্যার রাগ করেছে কারণ উনার টেনশন হচ্ছিল তোমার জন্য ঠিক হয়ে যাবে তাই বলে তুমি খাওয়া বন্ধ করে দেবে এটা কোনো কথা। কুহু বলল,আমি যখন বলেছি আজ সারা দিন কিছু খাব না তো খাব না ব্যসসস।বিভা বলল,কুহু এটা কেমন বাচ্চামো। কুহু বলল,আপু তুমি খাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলবে না আমাকে। বিভা কিছু বলতে গেল তার আগেই কুহু বলল,না আপু আমি শুনবো না।

অফিস টাইমে কুহু নিজের টেবিলে বসে আনমনে কি যেন ভেবে চলেছে, হঠাৎ রেহান এসে বলল,কুহু।কুহু বলল,
– হুম
– তুমি ঠিক আছো কখন থেকে দেখছি মন খারাপ
– না ঠিক আছি
– তাহলে তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন
– ওই শরীরটা বেশী একটা ভালো লাগছে না তাই
– ও তাহলে ছুটি নিয়ে নেও
– না দরকার নেই এমনি কিছুখন পর ছুটি হয়ে যাবে আমার কিছু কাজ বাকি আছে এগুলো শেষ করে স্যারের কেবিনে দিয়ে আসতে হবে
– ওকে কাজ কর

রেহান চলে গেল, বিভা কুহুকে বলল,কুহু রাত হয়ে গেল তো প্রায় কিছু তো খেয়ে নেও অনন্ত পানি খাও।কুহু বলল,না। বিভা বলল,দেখো তোমার মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে এক দিনে। কুহু বলল, না ইচ্ছে করছে না তুমি বসো আমি এই ফাইল গুলো স্যারকে দিয়ে আসি।কুহু বিভোরের ক্যাবিনে গিয়ে ফাইল গুলো টেবিলে রেখে বলল,ফাইল গুলো দেখে নিন।বিভোর বলল,ওকে আচ্ছা শোনো মিস্টার খানদের সাথে মিটিং ছিল ওইটা আকাশকে বল ক্যান্সেল করে দিতে।কুহু বলল,ঠিক আ,আছে।বলেই কুহু হঠাৎ কাশতে লাগলো আর কাশিটা বেড়েই চলল,বিভোর তাড়াতাড়ি এক গ্লাস পানি কুহুর হাতে দিয়ে বলল,পানি খেয়ে নেও তাড়াতাড়ি। কুহু কাশতে কাশতে পানির গ্লাসটা মুখের সামনে নিয়েও খেল না রেখে দিল।বিভোর অবাক হয়ে বলল, কি হলো পানি টা খেয়ে নেও ব্যাটার ফিল করবে।কুহু ইশারায় বলল,না বলেই ক্যাবিন থেকে বেড়িয়ে গেল,বিভোর অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।

বাড়ী ফিরে কুহু ফ্রেশ হয়ে কিচেনে গেল, গিয়ে কাজের খালাকে বলল,খালা তুমি বাড়ী চলে যাও রাতের খাবার আমি বানাবো আর তোমার ছোট মেয়েটা বলে অসুস্থ ঝড় আসতে পারে।
উনি বললেন,
– কি বল আম্মা তোমার কিছু করতে হইবো না তুমি যাও
– না আমি খাবার বানাবো তুমি বাড়ী চলে যাও
– তোমার মুখচোখ দেখে এমনি তোমাকে অনেক অসুস্থ দেখাইতাসে তুমি রেশট করগা।
– না আমি ঠিক আছি তুমি যাও তো
– সত্যি চইলা যাব
– হ্যা হ্যা যাও
– আচ্ছা সাবধানে থাইকো
– হুম

কাজের খালা চলে গেল,কুহু রান্না করতে লাগল,কুহু অনেকটা আনন্দিত হয়ে রান্না করছে, বিভোর আসলে দুজন এক সাথে খাবে, কুহু সব রান্না করে টেবিলে সাজিয়ে বসে পড়লো, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১০ টা বেজে ৪৫ মিনিট এখনো বিভোরের আসার কোনো নাম নেই,কুহু বসে টিভি দেখতে লাগল হঠাৎ শুরু হলো ঝড় হাওয়া আর তীব্র বৃষ্টিপাত,কিছুখন পর পর অনেক জোরে জোরে বজ্রপাত শুরু হলো ভয়ে কুহুর আত্তা বেড়িয়ে যাচ্ছে, কুহু বিভোরকে কল করলো কিন্তু বিভোরের ফোন বন্ধ বলছে।আস্তে আস্তে ঝড় কমে গেল, কিন্তু বাতাসটা এখনো জোরে বইছে।

বিভোর নিজের ক্যাবিনে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছে ওর মনে নেই চোখ খুলে দেখে ঘড়িতে ১২ টা বাজে বিভোর তাড়াতাড়ি বাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখে বাহিরে খুব জোরে বাতাস বইছে আর বৃষ্টিও হচ্ছে, হঠাৎ খুব জোরে বজ্রপাত হলো,বিভোর এর খেয়াল হলো কুহু বাড়ীতে একা মেয়েটা এমনও একা থাকতে ভয় পায় তার উপর এখন এত রাত হয়ে গেছে আর এমন ঝড়ের রাতে, বিভোর নিজের ফোনটা খুজতে লাগল দেখলো ফ্লোরে পড়ে আছে কিন্তু ফোন অফ অন করে দেখলো কুহুর অনেক গুলো মিস কল।বিভোর তাড়াতাড়ি অফিসে থেকে বের হলো বাড়ী ফিরার উদ্দেশ্যে, অফিস গেটের দারোয়ান বলল,স্যার এত ঝড়ো হাওয়াতে কোথায় যান।বিভোর বলল,বাড়ীতে যাচ্ছি। দারোয়ান বলল,এখন কেন আর একটু পরে যান অনেক বাতাস তো গাড়ি চালাইতে অসুবিধা হইবো।বিভোর বলল,না আর এক মিনিটও দেরি করা যাবে না।

বিভোরের গাড়ি চালাতে অনেক প্রবলেম হচ্ছে, ২০ মিনিটের রাস্তায় ৩০ মিনিটের বেশী হয়ে গেছে, বিভোর অবশেষে বাড়ীরর কাছে গিয়ে পৌছালো,গাড়ি পার্ক করে তাড়াতাড়ি বাড়ীর দরজার সামনে এসে কলিংবেল না দিয়েই নিজের কাছে থাকা এক্সরা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো।বিভোর খেয়াল করে দেখলো কুহু সোফায় জোড়োসোড়ো হয়ে মুখ গুজে বসে আছে, বিভোর কুহুর সামনে গিয়ে বলল,কুহু।কুহু চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলো বিভোর ওর সামনে, কুহু এক সেকেন্ড ও দেরি না করে বিভোরকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কেদে দিল।বিভোর পুরো হতভম্ব হয়ে গেল।কুহু কান্না করতে করতে ভাঙ্গা গলায় বলল, আ,আ,আপনি কোথায় ছিলেন আমার কত টেনশন হচ্ছিল। বিভোর কুহুর মাথায় দিয়ে বলল,আরে কাদছো কেন এখন তো চলে এসেছি।

কুহু বিভোরকে ছেড়ে দিল ভয়ের কারণে কিছুখন আগে বিভোর কে জরিয়ে ধরলেও এখন ওর ভিশন লজ্জা করছে।বিভোর বলল,আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।বিভোর দশ মিনিটের মাঝে ফ্রেশ হয়ে আসলো, তারপর সোফায় বসে কুহুকে বলল,আজ অনেক কাজ ছিল করতে করতে কখন যে অফিসে ঘুমিয়ে পড়লাম বলতেই পারি না ।কুহু বলল,ওহ একটা কথা ছিল।বিভোর বলল,হুম বল।কুহু বলল,আসলে আমার খুব খিদে লেগেছে আর তৃষ্ণা ও পেয়েছে সারাদিন তো পানিও খাই নিই।বিভোর অবাক হয়ে বলল,কি??????কেন?????

কুহু বলল, আপনাকে তো বলে ছিলাম খেয়ে নিতে কিন্তু আপনি তো খেলেন না তাই।বলার আগেই বিভোর অবাক হয়ে কিছুটা রেগে বলল,তাই বলে কিছু খাবে না তুমি কি এখনো বাচ্চা উফফ।কুহু বলল,বকছেন কেন আমাকে।বিভোর বলল,তো কি করব তোমার থেকে একটা ছোট বাচ্চাও ভালো। কুহু কাদু কাদু ফেস করে বলল,আপনি আবার বকছেন আমাকে।বিভোর বলল,ঠিক আছে চল খাবার খাবে আর কখনো এমন করবে না। কুহু গাল ফুলিয়ে বলল,সব তো আপনারই দোষ। বিভোর ভ্রু কুচকে বলল,আমার দোষ মানে।কুহু বলল,হুম আপনার এত জেদ কেন। বিভোর বলল,আমার জেদ চোখে পড়লো, নিজে কি করেছো, জেদ করে সারা দিন কিছু খাও নিই আমি তো ভেবে ছিলাম কাল রাতে তুমি এমনি এমনি বলেছো। কুহু বলল,আমি এমন না যা বলি তাই করি।বিভোর বলল,ঠিক আছে এখন খেয়ে নেও।কুহু বলল,আপনিও সাথে খাবেন নইলে খাবো না।বিভোর বলল,ওকে চল।কুহু আবার বলল,আরেকটা কথা।বিভোর বলল, কি। কুহু বলল,আবারও বলছি আমি খুব দুঃখিত আর কখন এমন করব না প্রমিস আমাকে মাফ করে দিয়েছেন তো।বিভোর বলল,ঠিক আছে কিন্তু কোথাও গেলে আমাকে জানাবে। কুহু বলল,জ্বি স্যার মনে থাকবে।বিভোর মুচকি হেসে বলল,হুম এবার খাও।

তারপর দুজন মিলে খেতে বসলো, বিভোর খেতে খেতে বলল,খালা তো খুব ভালো রান্না করছে আজকে। কুহু বলল,, আপনার ভালো লেগেছে।বিভোর ভ্রু কুচকে বলল,তুমি এতো খুশি হচ্ছো কেন তুমি রান্না করেছো নাকি।কুহু মুখে একটা মিষ্টি হাসি বজায় রেখে শুধু মাথা নাড়ালো।বিভোর বলল,বাবা খুব ভালো। কুহু মিষ্টি করে হেসে বলল,থ্যাংক ইউ।বলেই আবার খেতে লাগল,আর বিভোর সামান্য হেসে কুহুর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।

জীবনের অনেক কিছু মাঝে মাঝে থমকে যায়, অনেক কিছুই চাইলেই মানুষ আটকে রাখতে পারে। কিন্তু সময় চাইলেই আটকে রাখা যায় না, সময় চলতে থাকে তার গতিতে ভালো মন্দ সাথে নিয়ে, দেখতে দেখতে আকাশ আর বিভার বিয়ে কাছাকাছি চলে আসলো,বিয়ে নিয়ে সবাই খুব মেতে আছে, আর এই বিয়ের জন্য বিভা আকাশের পর সবচেয়ে আনন্দে আছে কুহু,কুহু কিছু দিনের জন্য অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে সারাক্ষণ বিভার সাথে থাকে, বিয়ের পর তো আর বিভা কুহুর সাথে সারাক্ষণ থাকতে পারবে না।,তাই এই কিছু দিন কুহু এক মুহূর্ত ও বিভার থেকে আলাদা হচ্ছে না,আজ মেহেদির অনুষ্ঠান শেষ হলো, সবাই যে যার বাড়ীতে চলে গেছে, বিভোর বিভার বাড়ীতে যাচ্ছে কুহুকে নিয়ে আসতে, আজ সারা দিন একটু ও দেখে নিই বিভোর কুহুকে, ওর চোখ গুলো খুব তৃষ্ণার্ত, কুহুকে এক পলক দেখার জন্য বিভোরের চোখ গুলো আর তোড় সইছে না কিন্তু কেন তা বিভোর নিজেও জানে না শুধু এইটুকুই জানে সে কুহুকে দেখতে চায়।

কুহু দুই হাত ভর্তি মেহেদি দিয়ে বসে আছে পড়নে একটা কলাপাতা কালারের শাড়ি, খোলা চুল আর হালকা সাজ,কুহুর পাশেই বিভা বসা। কুহু বলল,আপু কাল তোমার গায়ে হলুদ তারপরের দিনই তোমার বিয়ে। বিভা লাজুক হেসে বলল,হুম আজ অনেক রাত হয়েছে কুহু তুমি এখানেই থেকে যাও। কুহু বলল,না সারা বাড়ীতে মেহমান আছে তা ছাড়া। বলতে গিয়েও বলল না,বিভা বলল,তাছাড়া কি। কুহু বলল,উনি আসছেন ফোন করে ছিল।হঠাৎ বিভার ছোট ভাই বিশাল এসে বলল,আপু বিভোর ভাইয়া এসেছে।কথাটা শুনে কুহুর ঠোঁটের কোণে বিরাট এক হাসি বিরাজ করলো,বিভা বলল,স্যার এসেছে তোমাকে নিতে।কুহু বলল,হুম আমি বাহিরে গেলাম।

কুহু বিভার রুম থেকে বেড়িয়ে হোল রুমে গেল, মেহমানরা অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েছে, বিভোর কুহুকে দেখে মনে মনে প্রশান্তি অনুভব করলো, সারা টা দিন পর পাগলিটাকে দেখতে পেল,বিভোর এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, কলাপাতা রঙের শাড়িতে অপরুপ লাগছে কুহুকে,কুহু বিভোরকে দেখে ঠোটে এক রাজ্য হাসি নিয়ে এগিয়ে গেল বিভোরের দিকে,বিভোর কাছে আসতে গিয়ে হঠাৎ কুহুর শাড়ির কুচি গুলো পায়ে টান লেগে সব খুলে গেল,বিভোর এটা দেখে সাথে সাথে অন্য দিকে ফিরে গেল, আর কুহু পুরো লজ্জায় জর্জরিত জায়গায়ই থো হয়ে দাড়িয়ে রইলো হঠাৎ মেইন ডোর দিয়ে কয়েক জন লোক ভিতরে ঢুকতে দেখে বিভোর কুহুর কাছে গিয়ে কুহুকে টেনে বিভার রুমে নিয়ে গেল।

কিন্তু রুমে বিভা নেই, বিভোর বলল,তুমিও না কিভাবে যে চলাফেরা কর। কুহু কাদু কাদু ফেস করে বলল, আমি কি করব যদি এই বাজি কুচি গুলো পায়ে টান লেগে খুলে যায়।বিভোর বলল,হয়েছে আর গাল ফুলাতে হবে না শাড়িটা ঠিক কর বাড়ি ফিরতে হবে অনেকটা রাত হয়ে গেছে। কুহু দুই হাত উচু করে বিভোরকে দেখিয়ে বলল,আমার হাতে মেহেদী কিভাবে করব।

বিভোর বলল,বিভা কোথায়।কুহু বলল,আপু তো এখানেই ছিল কোথায় গেল কে জানে। বিভোর বলল,কিন্তু শাড়ি ঠিক করতে হবে দাও আমি ঠিক করে দিচ্ছি। কুহু অবাক হয়ে বলল,কি আপনি পারবেন।বিভোর বলল,হুম চেষ্টা করি৷বিভোর এক হাটু ভেঙ্গে বসে কুচি গুলো হাতে নিয়ে ঠিক করতে লাগল,আর কুহু অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো বিভোরের দিকে।
ওয়াসরুমের দরজা খুলে বিভা বের হতে গিয়ে থমকে গেল ভিতরে দৃশ্য দেখে,বিভা মুচকি হেসে নিজে নিজেকে বলল,এখন আমার বাহিরে যাওয়া ঠিক হবে না। বিভা আবার ওয়াসরুমে ঢুকে পড়লো।

চলবে………
ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 💙