অনুভবে তুমি পর্ব-১০

0
617

#অনুভবে তুমি
#পর্ব_১০
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ

আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া,কেমন আছেন?
–জ্বি ভালো।
–আপনি আমার থেকে যেনো কয় টাকা পান ভুলে গেছি!
–কিসের টাকা?
–কয়দিনের কথাই ভুলে গেছেন?ওই যে সেদিন আপনার বাইক ভেংগে গিয়েছিলো আমাকে বাঁচানোর জন্য?
–ও,,,,মনে পড়েছে।দিতে হবে না ঐ টাকা।
এই বলে ইভান চলে গেলো।সাথে তার কয়েকজন ফ্রেন্ডও আছে।

–আরে,,,?কই যাচ্ছেন?এই বলে অতশী ইভানের পিছু পিছু চলে গেলো।কিন্তু ইভান তার আগেই বাইকে চড়ে বাইক স্টার্ট দিলো।
–এই যে ভাইয়া কি হলো?পুরো কথা শুনে যান।
–টাইম নেই আমার।কাজ আছে।

অতশীর এমন সাহস দেখে ইভানের বন্ধুরা বেশ অবাক হলো।অতশী এমন ফ্রেন্ডলি ভাবে কথা বলছে কেনো ইভানের সাথে?

এদিকে অতশী একটা খাতা আর কলম বের করে বললো ভাইয়া প্লিজ এই কাগজে লিখে দিন একটু আপনি কত টাকা পান আমার কাছে?
সেই কথা শুনে ইভান গাড়ি থামালো আর বললো,বললাম তো লাগবে না।এক কথা বোঝো না?
অতশী তখন বললো আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে এটা লিখে দিন যে আমি অতশীর কাছে কোনো টাকা পাই না।সব টাকা মাফ করে দিয়েছি।
–আজব মেয়ে তো তুমি?তোমার আসলেই মাথা খারাপ।কি ভুলভাল বলছো?
–প্লিজ না করবেন না।তাছাড়া এই কয়টা টাকার জন্য আমি দোযখের আগুনে পুড়তে চাই না।সেজন্য সব দেনাপাওনা আজই মিটমাট করতে চাই।
ইভান তখন তার আরেক ফ্রেন্ড কে বললো,শুভ্র দে তো একটু লিখে।এসব পাগল যে কই থেকে আসে?
–না না উনি লিখলে হবে না।আমি কি ওনার বাইক ভেংগেছি?না উনি আমার থেকে টাকা পায়?
–তুমি তো আচ্ছা বেয়াদব মেয়ে!আমি তোমার ভার্সিটির বড় ভাই হই।তোমার ক্লাসমেট না।এভাবে জিদ করবা না আমার সাথে।
ইভানের বন্ধু শুভ্র এবার বাইক থেকে নেমে আসলো।আর ইভান কে বললো,কি ব্যাপার দোস্ত।এ মেয়েটা তোর সাথে এমন করছে কেনো?কি লিখার কথা বলছে?আর কিসের বাইক ভেংগেছে?কিসের টাকা পাস?
ইভান তখন বললো তুই আবার নেমে এলি কেনো।যা বাইক স্টার্ট দে।মাথার তার ছেড়া আছে এই মেয়ের।এই বলে ইভান নিজেও বাইক স্টার্ট দিলো।
অতশী তখন বললো আপনি এভাবে যেতে পারেন না।থামেন বলছি।
ইভান অতশীর কথায় কান না দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।

এদিকে অতশীকে এভাবে একটা ছেলের সাথে কথা বলতে দেখে অতশীর আম্মু এগিয়ে আসলো।কারন তিনি সেই থেকে ভার্সিটিতেই আছেন।
–কি রে অতশী?কি কথা বলছিলি ছেলেটার সাথে?
–কই কি?
–আমি স্পষ্ট দেখলাম তুই হাসতে হাসতে কথা বলছিস?
অতশী সেই কথা শুনে চুপ হয়ে গেলো।
অতশীর আম্মু তখন বললো তোর ভাই আছে জেলে আর তুই অন্য ছেলের সাথে এভাবে হাসাহাসি করছিস?তোর ভাই থাকলে এটা করতে পারতিস?তাহলে তো তোর ভাই জেলে থাকাতেই তোর ভালোই হইছে।যা মন চায় তাই করছিস?
–আম্মু?কি বলছো এসব?সামান্য একটু কথা বলেছি।তাতে কি হয়েছে?আর তুমি সেটা কতদূর পর্যন্ত নিয়ে গেলে?
–মুখে মুখে তর্ক না করে বাড়ি চল।এমনিতেই যে যে কান্ড করেছিস লজ্জায় নাক কান কাটা গিয়েছে। মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারছি না।

অতশী তার আম্মুর কথা শুনে কেঁদে ফেললো।সে আর কথা বাড়ালো না।কারন কথা বাড়ালেই তার আম্মু আরো বেশি কথা শোনাবে।তবে অতশীর এটা ভেবে খারাপ লাগছে যে আম্মু কি করে বাকি সবার মতো কথা বললো?সে কি নিজের ইচ্ছাই এসব কান্ড ঘটাইছে?

অতশী আর তার আম্মু বাসে উঠেছে।কারন তানিমের বাসা থেকে ভার্সিটি কিছুটা দূরে।অতশী জানালার কাছে বসে আছে।এখনো বাস ছাড়ছে না।লোকাল বাস তো কানায় কানায় পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ছাড়বে না।সেজন্য সে মন খারাপ করে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ একটা ছোট্ট মেয়ে অতশীর আম্মুকে বললো,আন্টি একটা ফুল নেন প্লিজ।
–ফুল?ফুল কি করবো আমি?
–নেন প্লিজ।আমার ভীষণ টাকার প্রয়োজন।আজ একটা ফুলও বিক্রি হয় নি।
–না লাগবে না ফুল।
অতশী তখন বললো আম্মু দাও না দশটা টাকা।

অতশীর আম্মু তখন বললো সে টাকা আমি কই পাবো?আমার কাছে কি কোনো এক্সট্রা টাকা আছে?অয়ন যে কোথায় টাকা রেখে গেছে সেটাও তো জানি না।আমার কাছে যে টাকা আছে সেটা দিয়ে আজকাল চলবে।তারপর যে কিভাবে চলবো উপরওয়ালাই ভালো জানে।

মেয়েটি তখন বললো আচ্ছা ঠিক আছে ফুল না নিলেন ফুলের তোড়া টি অন্তত ধরুন।আমি যাবো আর আসবো।এই বলে মেয়েটি দিলো এক দৌঁড়।
–এই মেয়ে শোনো,এই দাঁড়াও,,,,,
কিন্তু মেয়েটি আর দাঁড়ালো না।
সেজন্য অতশীর আম্মু ফুলের তোড়াটি তার হাতেই রাখলো।আর অতশীর সাথে গল্প করতে লাগলো।
–আমি ঠিক করেছি কাল একবার জেলে যাবো।অয়নের সাথে কথা বলতে হবে।আমরা এখন কিভাবে চলবো?কই টাকা পাবো সেগুলো শুনতে হবে।এই বলে অতশীর আম্মু অনর্গল কথা বলেই যাচ্ছে।

অতশী তখন বললো,আম্মু প্লিজ তুমি ভাইয়াকে এসব বলো না।ও খুব টেনশন করবে।দেখি আমি কিছু করতে পারি কিনা?
–তুই কি করবি?
–কি আর করবো?টিউশনি করবো।আমাদের বিথী আন্টি কতদিন বলেছে ওনার মেয়ে রুহিকে প্রাইভেট পড়াতে।ভাইয়ার ভয়ে পড়ায় নি।যতদিন ভাইয়া আসে নি ততোদিন পড়াবো।
–তাহলে না আমাদের কে বাসায় যেতে হবে।
–হ্যাঁ বাসাতেই যাবো।এভাবে তানিম ভাইয়াদের বাসায় থাকা টা ঠিক মনে হচ্ছে না আমার।আর কতদিন থাকবো ওনাদের ওখানে?
–হ্যাঁ আমি আর তোর দাদী ও সেটাই ভেবেছি।মানুষ জন কি মনে করে কে জানে?এ নিয়ে কথা বলতে হবে ওদের সাথে।

অতশী আর তার আম্মু গল্প করতেই আছে।এদিকে গাড়িও স্টার্ট দিলো।হঠাৎ অতশীর ফুলের তোড়াটির উপর চোখ গেলো। অতশী এক মুহুর্তও দেরী না করে ফুলের তোড়াটি হাতে নিয়ে বাসের দরজায় গিয়ে খুঁজতে লাগলো মেয়েটিকে।কিন্তু মেয়েটিকে আর খুঁজে পেলো না।সেজন্য সে ফুলগুলি নিয়ে আবার তার সীটে এসে বসলো।আর মেয়েটির জন্য আফসোস করতে লাগলো।ইশঃ মেয়েটির কত বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।
অতশী আরো ভেবেছিলো মেয়েটি যখন ফুলের তোড়াটি নিতে আসবে তখন সে তার কাছের ১০ টা টাকা দিয়ে দেবে কিন্তু মেয়েটি কই?এখনো আসছে না কেনো?
মেয়েটি আর এলো না।

এজন্য অতশী ফুলের তোড়া টি হাতে নিয়েই তানিমদের বাসার ভিতর প্রবেশ করলো। তানিম ডাইনিং রুমেই বসে ছিলো।অতশীর হাতে এতোগুলো ফুল দেখে বললো,আজ কি ভার্সিটিতে কোনো প্রোগ্রাম ছিলো?
–প্রোগ্রাম?না তো?
–তাহলে ফুল পেলে কোথায়?
–গাড়ির ভিতর এক পিচ্চি ফুলওয়ালী ভুল করে রেখে গেছে।সেজন্য নিয়ে আসলাম।
–গোলাপ তোমার ভালো লাগে?
অতশী তা শুনে কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকলো।তখন তানিম তার কাছে এসে বললো,কি হলো?চুপ হয়ে গেলে যে?উত্তর দাও।
ঠিক তখনি অতশীর আম্মু প্রবেশ করলো বাসায়।উনি এতোক্ষন বাহিরেই ছিলেন।তানিম কে দেখামাত্র বললো,অফিস থেকে ফিরেছো কখন?
–এই তো কিছুক্ষন আগে।
–আমার অয়ন থাকলে সেও এই সময়ে বাসায় আসতো।বাসাই এসেই চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিতো,আম্মু ভাত দাও তাড়াতাড়ি, দেরী হয়ে যাচ্ছে।এই বলেই অতশীর আম্মু কান্না শুরু করে দিলো।তানিম তখন এগিয়ে এসে বললো,আন্টি কাঁদবেন না প্লিজ।খুব শীঘ্রই অয়ন ছাড়া পাবে।আমি উকিলের সাথে কথা বলেছি।
অতশীর আম্মু তখন বললো,এই দুঃসময়ে তুমি আমাদের অনেক উপকার করছো বাবা।
তোমার ঋণ সত্যি ভোলার মতো না।

এদিকে অতশী রুমে চলে গেলো।সে ফুলের তোড়া টি টেবিলের উপর রাখলো।তারপর ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে চলে গেলো।কিন্তু সে যখন ওয়াশরুম থেকে রুমে চলে এলো তখন আর ফুলের তোড়াটি দেখতে পেলো না।অতশী ভাবলো হয় তো তার দাদী সরিয়ে রেখেছে সেজন্য আর জিজ্ঞেস করলো না এ ব্যাপারে।
অতশী তার দাদী আসার অপেক্ষা তে রইলো।আর তিনি রুমে আসতেই অতশী জিজ্ঞেস করলো দাদী ফুলের তোড়াটি কই রেখেছো?
–ফুলের তোড়া?কিসের ফুলের তোড়া?আমি দেখি নি কোনো ফুলের তোড়া?
–তাহলে কে নিলো?এই বলে অতশী সারাঘর তন্নতন্ন করে খুঁজলো।কিন্তু সে আর ফুলের তোড়াটি খুঁজে পেলো না।অতশী চিৎকার করে তার আম্মুকেও ডাকতে লাগলো।অতশীর আম্মু অতশীর ডাক শুনে দৌঁড়ে চলে এলেন।
–এভাবে চিৎকার করছিস কেনো?এটা কি তোর নিজের বাড়ি নাকি।মানুষের বাড়িতে কেউ এভাবে চিল্লাচিল্লি করে?
অতশী তখন শান্ত হয়ে বললো,আম্মু আমার ফুলের তোড়াটি দেখেছো?টেবিলের উপর রেখেছিলাম
–না দেখি নি।সামান্য একটা তোড়ার জন্য কেউ এভাবে চিল্লায়?

অতশী বুঝতে পারলো না তোড়া টি এভাবে কই হাওয়া হয়ে গেলো?সে তখন তানিম দের ডাইনিং রুম,গেস্ট রুম এমনকি কিচেন রুমও বাদ রাখলো না।সবখানে খুঁজলো।তবুও সে আর তোড়াটি খুঁজে পেলো না।
তানিম ভাই কে কি জিজ্ঞেস করবো?উনি যদি আবার নিয়ে যান?এই ভেবে অতশী তানিমের রুমে প্রবেশ করলো।
রুমে ঢুকেই সে বললো,সরি সরি।আসলে তাড়াহুড়ো তে নক করতে ভুলে গিয়েছিলাম।
তানিম সবেমাত্র গোসল করে তোয়ালে দিয়ে তার মাথা মুছতে মুছতে বের হইছে।
অতশী তানিম কে এমন খোলামেলা দেখে এক মিনিটও দেরী করলো না।তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
তানিম তখন বললো অতশী?যাচ্ছো যে?কেনো এসেছিলে?কিছু বলবে?
অতশী তখন দাঁড়িয়ে গেলো।আর বললো না মানে টেবিলের উপর ফুলের তোড়াটি রেখেছিলাম।সেটি খুঁজে পাচ্ছি না।
–আমি তোমার ফুলের তোড়া নিয়ে কি করবো?
–না,না,নেওয়ার কথা বলছি না।কেউ যদি ভুল করে এনে থাকে এই রুমে।
–কে আনবে?বাসায় তো কোনো ছোট বাচ্চাও নাই।
–সরি ভাইয়া।আমি বুঝতে পারি নি।ভুল হয়ে গেছে আমার।
এই বলে অতশী চলে গেলো।

তানিম বুঝতে পারলো অতশী ফুল খুব পছন্দ করে।সেজন্য সে অফিস থেকে ফেরার সময় অনেকগুলো ফুলের তোড়া কিনলো।একদম তাজা তাজা লাল গোলাপ।

বিকেলবেলা অতশী তানিমদের বাসার ছাদে একটু ঘোরাঘুরি করছিলো। ইদানীং তাকে খুব বেশি চিন্তাভাবনা করতে দেখা যায়।সে ছাদের উপর দাঁড়িয়ে দূরের ঐ বিল্ডিং গুলোর দিকে দেখছে।তানিম দের বাসা একদম শহরের মধ্যে।ছাদে দাঁড়িয়ে থেকেই পুরো শহরটাকে দেখা যায়।গাড়ির হর্নে কানটা একদম ঝালাপালা হয়ে যায়।এক সেকেন্ডের জন্যও একটু শান্ত হয় না শহরটা।শুধু গভীর রাতে একটু নিরব হয়।

হঠাৎ তানিম ফুলের তোড়া গুলো এনে অতশীর হাতে দিলো।অতশী এতোগুলো ফুল হাতে পেয়েও একটুও খুশি হলো না।সে শুধু বললো,
এতোগুলো ফুল?কেনো এনেছেন?
–তখন দেখলাম ছোট্র একটা ফুলের তোড়ার জন্য পুরো বাড়ি মাথায় তুলেছিলে।সেজন্য ভাবলাম নিয়ে যায়।এই বলে তানিম ছাদ থেকে চলে যেতে ধরলো।

কিন্তু অতশী তখন বললো, ভাইয়া,এসেই যাচ্ছেন যে?একটু বসেন।গল্প করি।একা একা ভালো লাগছে না।
তানিম সেই কথা শুনে বললো দশ মিনিট অপেক্ষা করো প্লিজ।আমি একটু ফ্রেশ হয়েই আসছি।মাত্র ফিরলাম অফিস থেকে।

–ওকে।আমি অপেক্ষা করছি।

তানিম তাড়াতাড়ি করে বাসার ভিতর চলে গেলো।আর ফ্রেশ হয়ে নিলো।সে ডিপ ব্রাউন কালারের একটা টি শার্ট আর ছাই কালারের টাউজার পড়লো।তাকে ভীষণ খুশি খুশি লাগছিলো।সে ভেবেছে অতশী ফুলগুলো পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছে।সেজন্য খুশির ঠেলায় তার সাথে গল্প করতে চাচ্ছে।তানিম ছাদে যাওয়ার সময় তার আম্মুকে বললো লিনার হাতে দুই মগ কফি আর পাকোড়া পাঠিয়ে দিও। আমি আর অতশী ছাদে আছি।

অতশী আজ ব্লাক কালারের জামা পড়েছে।সাথে ম্যাচিং করে পিংক কালারের ওড়না আর পায়জামা।অতশী সবসময় মাথায় কাপড় দিয়েই থাকে।শুধুমাত্র তার নিজের রুমে থাকলে মাথায় কাপড় দেয় না।
তানিমদের বাসার ছাদ টা বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।পাঁচ মিনিট এখানে একটু বসে থাকলে এমনিতেই মন ভালো হয়ে যায়।রোদ যাতে না লাগে সেজন্য বিশাল আকৃতির একটা ছাতা আছে।আর তার নিচে রয়েছে বসার জন্য চেয়ার আর টেবিল।
দুপুরবেলা রোদ থাকলেও বিকালবেলা একদমই রোদ নাই।সেজন্য অতশী ছাতার নিচে বসে না থেকে ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে সেই আগের মতোই দূরের ঐ বিল্ডিং গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে।

–সরি অতশী।তোমাকে এভাবে অপেক্ষা করোনোর জন্য।
এই বলে তানিম অতশীর কাছে এসে দাঁড়ালো।
–সমস্যা নেই।
–ফুলগুলো পছন্দ হইছে?
–জ্বি।
কিছুক্ষন দুইজনই চুপচাপ থাকলো।তানিম ও বুঝতে পারছে না কি বলবে?আর অতশীও বুঝতে পারছে না কিভাবে শুরু করবে?

হঠাৎ সেখানে লিনা আসলো কফি নিয়ে।আর একটা পাকোড়ার প্লেট।তানিম ভাইয়া এগুলো টেবিলে রেখে গেলাম।এই বলে লিনা চলে গেলো।

তানিম তখন বললো অতশী এইদিকে আসো।তা না হলে কফি ঠান্ডা হয়ে যাবে।অতশী সেই কথা শুনে চেয়ারে গিয়ে বসলো।আর কফির মগে একটা চুমুক দিয়ে বললো,আমাকে পাঠানো চিরকুট গুলো খুবই সুন্দর ছিলো।প্রত্যেক টা লেখা একদম মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো।ভীষণ ভালো লাগতো আমার।
–ও তাই?ধন্যবাদ।
–এগুলো কি আপনি লিখতেন?
অতশীর কথা শুনে তানিম কফির মগ টা টেবিলে রাখলো আর বললো, আসলে অতশী কথাগুলো একদম আমার মনের কথা।আমি সত্যি তোমাকে অনেক বেশি পছন্দ করি।
–আমি তো জিজ্ঞেস করলাম লেখাগুলো কার হাতের?
–কার আবার?আমার?তুমি যদি চাও তাহলে রোজ রোজ এমন চিরকুট লিখতে রাজি আছি।
–তাই?থাক লিখতে হবে না আর?আসলে আগের চিরকুট গুলোর সাথে সেদিনের চিরকুটের হাতের লেখার মিল ছিলো না।সেজন্য বললাম।
তানিম তখন হাসতে হাসতে বললো,ও তাই বলো।আসলে আমার লেখা খুব বাজে।সেজন্য অন্য জনের হাতে লিখে নিয়েছি। তবে কথাগুলো সম্পূর্ণ আমার মনের কথা।
অতশী তখন বললো ভাইয়া আজ তাহলে উঠি।এভাবে দুইজন কে একসাথে দেখলে বাসার সবাই অন্য কিছু ভাববে।
তানিম সেই কথা শুনে হঠাৎ অতশীর হাত টেনে ধরলো আর বললো,অতশী সবাই কে অন্য কিছু ভাবার সুযোগ কেনো দিচ্ছো?সারাদিন সারারাত একসাথে থাকলেও যাতে কেউ কিছু না বলতে পারে সে ব্যবস্থা করলেই তো হয়।শুধু তুমি যদি একবার হ্যাঁ বলো।প্লিজ আজ অন্তত কিছু বলো।
অতশী তখন তানিমের হাত সরিয়ে দিয়ে বললো,ভাইয়া আমাকে যেতে দিন এখন।আম্মু আর দাদী যদি একসাথে দেখে তাহলে আমাকে ভীষণ বকবে।এই বলে অতশী চলে গেলো।

#চলবে,,,,