অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব-০৪

0
332

#অনুভূতির_কেন্দ্রবিন্দু_তুমি
#পর্বঃ০৪
#সুমাইয়া_সানজুম_ঐশী

স্মৃতি নামক ডাইরিটার কিছু পাতা জ্বা*লিয়ে দিলে হয়তো আমরা প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারতাম।

আঁধার এ কথা টা বলে ঘাসের উপর বসে পড়লো।

সন্ধ্যার কিছুক্ষন পর।আঁধার বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বারান্দা থেকে সেই স্মৃতি জোড়ানো ডাইরিটা নিয়েই বের হয়েছিল।মাগরিবের নামাজ শেষে সে এলো তার সেই পুরনো পছন্দের জায়গা টায়।অনেক দিন পর আবার আশা হলো এখানে।কতশত স্বপ্ন দেখেছিলো সে তার স্বর্ণলতা কে নিয়ে অথচ সব ভে*ঙে গেলো।তার স্বর্ণলতা গত একবছর ধরে অন্যের ঘর করছে। অথচ সে তাকে ভুলতে পারছে না। সে তার ডায়েরিটার লেখা গুলোতে ভীষণ ভাবে আকৃ*ষ্ট হয়েছিলো, সাথে অপরিচিত সেই মানবীর প্রতিও আকৃ*ষ্ট হয়েছিলো। তার মনে পড়লো কিভাবে সে স্বর্ণলতার ডাইরিটা পেয়েছিলো

ফ্ল্যাশব্যাক,

বছর দেড়েক আগে একদিন আঁধার সি.আর. বি তে ফ্রেন্ডসরা মিলে ঘুরতে গিয়েছিলো।সেখানে গিয়ে সে প্রচুর বিরক্ত হলো কারণ, সেখানে এতো জোড়ায় জোড়ায় জিএফ-বিএফ ছিলো বলার মতো না।সব স্কুল কলেজের ড্রেস-আপে। তবে কিছু সংখ্যক ফ্রেন্ড সার্কেলও ছিলো তারাও কলেজ ফাঁ*কি দিয়ে এখানে আড্ডা দেয়ার জন্য এসেছে।

আঁধার ও তার বন্ধুরা কিছুক্ষণ সেখানে কথা বলল, তারপর তারা আড্ডার অন্য আসর রেস্টুরেন্টে গিয়ে দিবে তাই সেখান থেকে সবাই বের হলো। আঁধার গাড়িতে উঠতে খেয়াল করলো তার পায়ের ধারে একটা ডায়েরি পড়া।সে এতটা পাত্তা না দিয়ে যাবে কিন্তু তার চোখ আটকে গেছে কয়েকটা অক্ষর দিয়ে গড়া একটি অ*স্পষ্ট নামের দিকে। সে কৌতূহ*লবশত ডাইরিটা হাতে নিয়ে নামের উপর পড়ে থাকা ধূলিকণা হাত দিয়ে ঝেড়ে ফেলতেই নামটা স্পষ্ট হলো। কেনো যেন সে ডাইরিটার প্রতি একটা আলাদা টান অনুভব করলো। তাই সে ডাইরিটা নিয়েই ড্রাইভিং সিটে বসলো। ডাইরিটা সোজা করে রাখায় নামটা পাশের সিটে তার ফ্রেন্ড আদি এর নজরে পড়ায় সে বললো,

-কিরে ভাই তুই কবে থেকে মেয়েদের জিনিস পত্র নিয়ে ঘোরা ফেরা করছিস?এই স্বর্ণলতাটা কে ভাই?এই তুই লুকিয়ে বিয়ে টিয়ে করে ফেলিস নি তো!আংকেল -আন্টি জানে বাসায়?ধ্রুব সিরিয়াসলি তুই তাদের কে ধো*কা দিচ্ছিস না তো?

ড্রাইভিং অফ করে আঁধার তাকিয়ে দেখে তার ফ্রেন্ডস রা সবাই শক*ড তাই কটমট দৃষ্টিতে বললো,

-আমি বিয়ে অনেক আগেই করেছি। আমার দশ হালি বাচ্চা-কাচ্চা আছে। তাদের নিয়ে মা-বাবাকে সারপ্রাইজ দিবো তাই জানাই নাই এখনো।এবার হ্যাপি?নাকি আরও কিছু অ্যাড করবো? ডা*ফার কোথাকার! এটা সি,আর,বি থেকে আসার সময় রাস্তায় পাইছি।নামটা ভালো লাগছে তাই ভাবলাম যার ডায়েরি তারে ফেরত দিবো।

-শুধু কি নাম ভালো লাগছে! নামের মালিককে ভালো লাগে নি?এটাও ভাবা যায় তোর তাও আবার কোনো মেয়ের প্রতি ভালোলাগা কাজ করছে!যে কিনা প্রেম এর নাম শুনলে দশ মাইল দূর দিয়ে হাটে!সিরিয়াসলি!
আদির কথাতে তে সবাই মিটিমিটি হাসছে । আঁধার তার ঠোঁটের কোণে হাসি রেখে আর কোনো প্রতি*ক্রি*য়া না দেখিয়ে ড্রাইভিং এ মন দিলো

সেদিন রাতে আঁধার নিজের সব কাজ ফেলে ডায়েরি টা নিয়ে বসলো।প্রথম কয়েকটা পেইজে কিছুটা বি*ষা*দময় ছন্দ লিখা।আরো কয়েকটি পাতা উল্টানোর পর সে একটি চিঠি লেখা দেখলো

প্রিয়,
আমার এখন পর্যন্ত না খুঁ*জে পাওয়া বর।অবাক হচ্ছেন এই সম্মোধন শুনে।হবারই কথা।কারণ আপনাকে আমি এখনো খুঁজেই পাইনি। আপনি হয়তো পিপিলিকার পিঠে সফর করে আমায় বউ করে নিতে আসছেন তাই তো তী*ব্র অপেক্ষায় আছি। শুনুন আমার না খুঁজে পাওয়া বর মশাই আপনার এই কা*লচে চেহারার বউটার কিন্ত অনেক শখ। আর এই শখগুলোকে বাস্তবে পরিণত আপনিই করবেন।যেখানে আমার বয়সি মেয়েরা প্রেম নিয়ে ব্য*স্ত সেখানে আমি আপনার অপেক্ষায় তি*ক্ত। জানেন,আমার না খুব ইচ্ছে বিয়ের পর বরের সাথে প্রেম করার তাই তো আপনার জন্য আজকের প্রোপোজটাও রিজেক্ট করলাম।এই যে এতো এতো অপেক্ষা করাচ্ছেন এটা কিন্তু ঠিক না বর মশাই।জানেন আজ আপনাকে আমার শখগুলো ভীষণ ভাবে জানাতে ইচ্ছে করছে, তাই জানিয়েই ফেলি।
আমার ব্যক্তিগত পুরুষ আপনি না আপনার রুমটা ব্লাক আর ব্লু সেইড এ সাজাবেন। বেড সাইডের টি টেবিলে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা রাখবেন যাতে তার সুবাস পুরো ঘরজুড়ে থাকে। আপনার বেলকনির সাথে অবশ্যই কাঠগোলাপ গাছ থাকবে।একটা বুকশেলফ রাখবেন যাতে আমি মন খারা*প কাটিয়ে উঠতে পারি।জানেন তো আজ না আমার মন ভীষণ খারাপ।একটা ব্যক্তিগত মানুষের ভীষণ অভাববোধ করছি।একটু ভালোথাকার, একটুখানি শান্তির খুব অভাবে আছি।
আপাতত আপনাকে আজ এতোটুকুই লিখলাম।

স্বর্ণলতা

আঁধার এরকম আরোও এগারোটা চিঠি পড়লো ডায়েরিতে। কেনো যেন তার সেই মেয়েটার শখ অনুযায়ী ঘর সাজাতে ইচ্ছে করছে,তার শখগুলো বাস্তবে পরিণত কর‍তে ইচ্ছে হচ্ছে।সেই লতাময়ী মানবীকে একপলক দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।তবে কি সে তার লেখার ভীষণভাবে প্রেমে পড়েছে! সে ডাইরিতে খুজে একটি নাম্বার পেল। ভাবলো ডায়েরি ফেরত দেওয়ার কথা। তাই সেই নাম্বার এ কল দিলো। পঞ্চমবারে কলটা রিসিভ হলো। ঘুম জোড়ানো কন্ঠে সেই সেই মানবী বলল,

-সায়মু,এতো কল দিচ্ছিস কেনো?আমি ঘুমাচ্ছি তো। সকালে কলেজ এ দেখা হবে তখন যা বলার বলিস বোন।যা ঘুমা।

আঁধার কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সেই মানবী কল কেটে দিলো।আঁধার এর ইচ্ছে হলো সেই মানবী কে পাশে বসিয়ে তার কন্ঠ আজীবন ধরে শুনতে।নেশালো কন্ঠ তার একদম ডাইরির লিখা গুলোর মতো ।আঁধারের ও আর ইচ্ছে করলো না সেই মানবীর ঘুম ভাং*তে। তাই সে এসএমএস করলো সেই নাম্বারে,

-এতো সুমধুর কন্ঠ শুনিয়ে অন্যের ঘুম কে-ড়ে নেওয়া ঠিক নয়।এটা কিন্তু ভ*য়াবহ অ*পরাধ, স্বর্ণলতা।আপনার কন্ঠ ঠিক আপনার ডাইরির প্রতি পৃষ্ঠার মতো বিমোহিত কর।আপনার লেখা পত্র গুলোর প্রাপক হওয়ার স্বাদ জেগেছে মনে।একপলক দেখার তৃষ্ণা জেগেছে চোখের। ভেবেছিলাম ডায়রি ফেরত দিবো কিন্তু এখন তো সেই ইচ্ছে রংবদল করেছে।কি করি, বলেন তো?

আঁধারের করা এসএমএসের উত্তর সকল বেলায় পেয়েছে সে,

-কারো পারমিশন ছাড়া তার ব্যক্তিগত জিনিস পড়া ঠিক নয়।আই হোপ আপনি আমার ডায়েরি টা ফেরত দিবেন।আমার খুব যত্নের জিনিস এটা।ফেরত পেলে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

আঁধার রিপ্লাই দিলো,

-যদি না দেই?

পরবর্তীতে আঁধারের কাছে আবার রিপ্লাই এলো-

-আপনি প্লিজ ক*ষ্ট করে আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে ২টার মধ্যে নাসিরাবাদ মহিলা কলেজ এর গেইটের সামনে ডাইরি টা নিয়ে আসবেন। তারপর দারোয়ান চাচার কাছে ডাইরিটা রেখে কল দিয়েন আমি নিয়ে নিবো।

-ওকে…শিওর আপনি আসবেন?

-হ্যা

আঁধার মনে মনে ভীষণ অস্থির কারণ সে আগামীকাল সেই মানবীর দেখা পাবে।তাদের পরিচয় হবে। ধীরে ধীরে সে কালচে চেহারার মানবীর মনে জায়গা করে নিবে। এসব ভাবতে ভাবতেই সে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রেডি হলো।

সেদিন সকালে আঁধার কলেজ এর সামনে গিয়েছিল।কিন্তু সে দারোয়ান এর কাছে ডাইরিটা দেয় নি। গেইটের পাশে দাড়িয়ে ছিল সেই মানবীকে একপলক দেখার জন্য। কল দেওয়ার পর, সে শুনলো একটি মেয়ে এসে গেইটে দারোয়ান এর কাছে ডাইরির ব্যাপার এ জিজ্ঞেস করছে। সে মেয়েটাকে ভালো করে লক্ষ্য করলো কিন্তু স্বর্ণলতার সাথে তার কোনো মিল পেল না। কারণ মেয়েটা এতোটাই ফর্সা ছিলো যে তার চেহারায় কালচে ভাবের কোনো প্র*তিফলন দেখা যায় নি।

আঁধার সেদিন আবারও তার সঙ্গে ডায়েরিটা নিয়েই বাড়ি ফিরলো। সন্ধ্যায় তার ফোন এ সেই নাম্বার থেকে পুনরায় একটা এসএমএস আসলো..

চলবে 🙂

#অনুভূতির_কেন্দ্রবিন্দু_তুমি
#পর্বঃ০৫
#সুমাইয়া_সানজুম_ঐশী

-“কিছু মানুষ আমাদের আ*শ্বাস দেয়,কিন্তু কাজের বেলায় শু*ন্য”,
কথাটা আজ আপনার সাথে মিলে গেলো।আমি হয়তো ভু*ল মানুষের কাছে প্রত্যাশা করেছিলাম!কথা দিয়ে কথা রাখায় ভালো মান*সিকতার প্রকাশ পায়।আপনার উচিত ছিলো আমার জিনিস ফেরত দেয়া।

আঁধার মেসেজটা পড়ে মুচকি হেসে রিপ্লাই দিলো,

-কথাতো আপনিও রাখেন নি। আমি তো আপনাকে অনুক*রণ করলাম মাত্র।আপনি নিজে আসেননি। তাই আমিও দেই নি।একদিক থেকে আমরা দুইজনই সমান অপ*রাধী, স্বর্ণলতা।

– আমার জিনিস আমাকেই ফেরত দিবেন তাহলে এতো শ*র্ত কিসের,জনাব?আপনি কিন্তু অ*ন্যায় করছেন এটা।

আধার এবার রিপ্লাই দিলো,

-আমি ডাইরির মালিকানা তার আসল মালিককেই হস্তা*ন্ত*র করতে চাই।এতটা যত্ন করে রেখেছি এই কয়দিন সো তার মালিক দেখার প্রত্যাশা তো আমারও ছিলো। আপনি তো সেই প্রত্যাশায় এক বস্তা গো*বর ডেলে দিলেন আপনার জায়গায় অন্যকে পাঠিয়ে।

-ওকে আমিই আসবো নিতে, দয়া করে আবার আসিয়েন।

আঁধার এবার কিছু একটা ভেবে লিখলো

-না,আমি কলেজ এ যাবো না। আপনার কলেজ এর পাশে খুলশী টাউন সেন্টারের কফি শপে থাকবো।সেইম টাইমে,আপনি আসবেন।
আই হোপ নিজের প্রিয় জিনিস এর জন্য এতোটুকু ক*ষ্ট অন্তত করতে পারবেন।

-ওকে, কিন্তু আপনাকে চিনবো কিভাবে(সেই মেয়ে)

-যাক,,, আপনার সাথে দেখা হচ্ছে তবে!আমার টেবিলে আপনার ডাইরি থাকবে,তা দেখে চিনতে পারবেন আদারওয়াইজ এসে জাস্ট একটা কল দিবেন অথবা মেসেজ দিবেন। কিন্তু শিওরলি আপনি আসবেন তো? নাকি ওই দিন এর মতো চা*লাকি করবেন!তাহলে কিন্তু আর ফেরত পাবেন না।

মেয়েটির রিপ্লাই আসলো,

-আমি সেদিন কলেজ যেতে পারি নি, তাই আমার ফ্রেন্ডকে বলেছিলাম কালেক্ট করতে। আমি আগামীকাল তাকে নিয়েই যাবো কফি শপে। প্রমি*জ করছি।এটা আমার কাছে অনেক মূল্য*বান.. প্লিজ… আমার জিনিস আমায় ফেরত দিয়েন।

পরের দিন আঁধার ঠিক সময় এ পৌছালেও, পৌছায়নি সেই মানবী। অনেক অপেক্ষা করেছিলো আঁধার কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।হাজারটা কল দিয়েছিল সেই নাম্বারে কিন্তু প্রত্যেক বারই নাম্বার সুইচড অফ বলছে।সেদিন অনেক্ক্ষণ কলেজ এর সামনে দাড়িয়ে ছিল কিন্তু সেদিন মেয়েটিকেও সে দেখতে পায় নি। অতঃপর সে এসএমএস করলো, যাতে ফোন ওপেন করলে কল দেয় অথবা এসএমএসের রিপ্লাই দেয়।কিন্তু সেদিন এর পর প্রায় ২মাস চলে গেছে সেই নাম্বার ওপেন হয়নি।আঁধার প্রায় সময়ই সেই কলেজ গেইটে দাঁড়িয়ে থাকতো কিন্তু ওই মেয়েটার দেখাও সে পায়নি। একপর্যায়ে সে দারোয়ান কে জিজ্ঞেস পর্যন্ত করেছে কিন্তু সফল হয় নি। প্রায় ৩মাস পর সেই নাম্বারে আঁধারের কল রিসিভ হয়। আঁধার তখন অনেক বেশি এক্সাইটেড ছিলো। কিন্তু আঁধারের মুখের হাসি বেশি সময় টিকে নি। কারণ কলটা একজন পুরুষ রিসিভ করেছিলো। আশা*হত হলো আঁধার তারপরও ভাবলো হয়তো সেই মানবীর ভাই হবে কিন্তু তার সেই ভাবনাও বি*ফলে গেল পুরুষ মানুষ টির উত্তর শুনে,

-আপনি যার নাম্বারে কল করেছেন আমি তার হাসবেন্ড। সে ছাদে গেছে। আপনি পনেরো মিনিট পর কল করুন।

নিরাশ হলো আঁধার। আবারও জিজ্ঞেস করলো,

্আপনার স্ত্রী কবে থেকে মোবাইলটা ফোনটা উইজ করছে?আপনাদের বিয়ে কবে হয়েছে?

লোক টি বললো,

-এটা তার নিজের ফোন। আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় আড়াই মাস।বিয়ের আগে। ফোনটা যেহেতু তার তাই নিশ্চয়ই সে অনেক আগে থেকেই ব্যবহার করছে। কিন্তু আপনি কে হন তার?

আঁধার কোনো উত্তর না দিয়েই ফোনটা কেটে দিলো। এছাড়া তার কাছে আর কোনো উপায় নেই। মরী*চিকার পিছনে ছুটছিল সে। দো*ষ তো তার নিজেরই। একতরফা সে নিজেই অনু*ভূতি পু*ষিয়ে রেখেছিল। কিন্তু মেয়েটাকে তো সে বুঝাতে চেয়েছিলো। হয়তো সে বুঝাতে পারেনি।তারপরও তার বিশ্বা*স হচ্ছিলো না তাই সে এতদিন পর্যন্ত খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। কোনো শিওরিটি পায় নি।

বর্তমান

আঁধার তার ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে। আজ সকালে সেই কলেজ এর সামনে দিয়ে ড্রাইভিং করে যাওয়ার সময় সে সেদিন এর মেয়ে টাকে দেখতে পায় যে ওই দিন দারোয়ান এর কাছ থেকে ডাইরি নিতে গিয়েছিল। আঁধার গাড়ি থামিয়ে তাড়াতাড়ি সেই মেয়েটার কাছে যায়। মেয়েটার একটু তাড়া ছিলো তারপরও সে আঁধারের ডাকে পিছনে ফিরে।আঁধার জিজ্ঞেস করলো,

-আপু স*রি এভাবে রাস্তায় ডি*স্টার্ব করার জন্য, একটা প্রশ্ন করার ছিলো,

-একটু তাড়াতাড়ি বলুন ভাইয়া, আমার আরজেন্ট কাজ আছে। মেয়েটি বললো

-আপু আপনি আরও ২ বছর আগে এই কলেজ এর দারোয়ান এর কাছ থেকে একটি ডাইরি নিতে এসেছিলেন। আপনার বান্ধুবি পাঠিয়েছিলো। আমি তার জিনিসটা ফেরত দিতে চাই।

মেয়েটি অনেক চিন্তা করে বললো,

-মনে পড়েছে। কিন্তু ভাইয়া ওর তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আমার সাথে যোগাযোগ হয় না ওর।আর আমি ওর ক্লোজ ফ্রেন্ড না। আমাদের কলেজ এ পরিচয় হয়েছে। তাই আমি একচুয়ালি আপনার কোনো সাহায্য করতে পারছি না।দুঃ*খিত।

এ কথা বলে মেয়েটা চলে গেলো। আঁধার আজ পুরোপুরি নিশ্চিত হলো যে তার স্বর্নলতা আর কোনো দিন ও তার হবে না। সে গত দেড় বছর ধরে অন্যের স্ত্রী। তার কথা মনে করেই সে গতকাল রাতে ঐশীকে অনেক কথা শুনিয়েছে। আবার সকাল বেলায়ও অনি*চ্ছাকৃত ভাবে মেয়েটার হাতে কফি পড়ে গেছে,তারপরও সে মেয়েটার সাথে ভীষণ খা*রাপ আচরণ করেছে।এতটা খা*রাপ আচ*রণ সে কখনো কোনো মেয়ের সাথে করে নি। সে অ*ন্যায় করেছে মেয়েটার সাথে। ক্ষ*মা চাওয়া উচিত তার।

এসব কথা চিন্তার মাঝেই তার নাম্বারে কল আসে,তার মা কল করেছে। আঁধার রিসিভ করে জানিয়ে দেয় সে আধা ঘণ্টার ভিতর বাসায় ফিরছে।

আঁধার বাসায় ফিরে দেখে ড্রইং রুমে সবাই মিলে আলোচনা করছে।আঁধার সেখানে গেলে তার বাবা বলে,

-তোমাদের রিসিপশনের কথা আলোচনা করছি অথচ তোমরা দুটোই গায়ে*ব। বসো এখানে।

ঘন্টা খানেক সেখানে আলোচনা করার পর সবাই নিজ রুমে চলে গেলেন।

আঁধার রুমে গিয়ে ঐশীকে পেলো না।বললো, এ আবার কোথায় গেলো!হয়তো আলোর রুমে গেছে আর কিছু না ভেবে তার ডিভানে ল্যাপটপ নিয়ে যে কাজ গুলো বাকি আছে তা শেষ করতে বসলো।

#চলবে,,,,, 🙂