অবশেষে তুমি আমার
পর্বঃ১৮
তাসনিম রাইসা
– অধরা কিছুক্ষণ পর শাওয়ার নিয়ে রুমে আসলে রাজ ওয়ারড্রপ থেকে একটা কালো পাড়ের নীল রঙা তাতের শাড়ি বের করে অধরার হাতে ধরিয়ে দেয়!
– রাজ বসে বসে গেম খেলছে। খেয়াল করলো, ‘ অধরার শাড়ি পরতে পারছে না। রাজ অধরাকে টান দিয়ে কাছে টেনে নিল। সুন্দর করে শাড়ির কুঁচি দিয়ে যখনি অধরার নাভির কাছে গুঁজে দিতে যায়। রাজের হাতের স্পর্শে অধরা কেঁপে ওঠে। অধরার সারা শরীর কাঁপছে। অজানা অনুভূতি তাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। অধরা রাজকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। রাজ টাল সামলাতে না পেয়ে সেও অধরাকে জড়িয়ে ধরলো। অধরার বুক ধড়ফড় করছে!
-রাজের খুব করে ইচ্ছে করছে অধরার ঠোঁটের উষ্ণ ছোঁয়া পেতে। কিন্তু কেন যেন পারছে না। দু’জন দু’জনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। এভাবে কিছুক্ষণ থাকার পর রাজ অধরাকে ছেড়ে দেয়। শাড়ি পরা শেষ করে অধরা আয়নায় সামনে গিয়ে বসে। রাজ অধরার পাশে বসে চুল গুলো আঁচড়ে নিজ হাতে অধরার আঁখি জোড়ায় কাজল লাগিয়ে দেয়!
– সবকিছু শেষে রাজ অধরার দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে যায়। সবকিছুর মাঝেও অধরার মাঝে কিসের যেন কমতি দেখা যায়। রাজ অধরার ললাটে ছোট্ট করে একটা চুমু এঁকে দেয়। এবং কপালের মাঝখানে বৃত্তস্বরূপ একটা টিপ পরিয়ে দেয়।
– অধরাকে পরিপূর্ণ লাগছে! মুখের দিকে তাকালেই কেমন যেন মায়া কাজ করে! রাজ অধরাকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে তার আন্টি আর ত্রিযামিনী বলে যায়। তারা অফিসের কাজে কক্সবাজার যাচ্ছে। আসতে কয়েকদিন লেট হবে।
– রাজের মুখে এ কথা শুনে ত্রিযামিনী রাগে ফুঁসতে থাকে কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারে না।
– অধরা বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ত্রিযামিনীর দিকে তাকিয়ে একটা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে বেরিয়ে যায়।
– সারা রাস্তা অধরা রাজের কাঁধে মাথা রেখে ঘুম পাড়তে পাড়তে কক্সবাজার যায়। কক্সবাজার গিয়ে রাজ একটা হোটেলে উঠে।
– হোটেলটা খুব সুন্দর সুইমিং পুল আছে ভেতরে। সবকিছু দেখে ভালোই লাগছে। সব চেয়ে বেশি ভালোলাগছে রাজের ভালোবাসা পেয়ে।
– রাজ রুমে প্রবেশ করেই অধরাকে বললো শাওয়ার নিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসতে।
-আচ্ছা যাচ্ছি! তুমি শাওয়ার নিবে না?
– হ্যাঁ নিবো। তুমি আগে যাও!
– অধরা শাওয়ার নিতে ঢুকলে কিছুক্ষণ পরেই রাজ দরজায় নক করে।
– কিছু বলবে?
– তুমি দরজা খুলো (রাজ)
-অধরা দরজা খুলতেই রাজ ভেতরে ঢুকলো।
– অধরা রাজকে দেখে লজ্জা পাচ্ছে। কারণ অধরা অর্ধনগ্ন অবস্থায়য় আছে।
– রাজ তুমি হঠাৎ রুমে আসলে কেনো?
– আমি শাওয়ার নিবো তাই আসলাম।
– কি বলছো এসব। আমার আর একটু সময় লাগবে পরে এসো।
– পরে কেন আসবো। দু’জন একসাথেই শাওয়ার নেই।
– রাজ তুমি পাগল হয়েছে? আমার লজ্জা করে না বুঝি?
– আমি না তোমার স্বামী। সো আমার সামনে লজ্জা পাওয়ার কি আছে?
– আল্লাহ! তাই বলে তোমার সামনে?
– রাজ অধরার মুখ চেপে ধরে কানে কানে বললো, ‘ চুপ আর একটা কথা বলবে না। ছোট্টবেলা তোমাকে কত গোসল করিয়ে দিয়েছি। তুমিও তো আমাকে দিয়েছ!
– ইশ! বলো না প্লিজ লজ্জা করছে।
– তাই বুঝি! আমার বউটা এতো লজ্জা কেন?
– রাজের কথা শুনে অধরার মুখ লজ্জায় সূর্যের আভার মতে হয়ে যাচ্ছে। রাজ অধরার কপালে ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দেয়। অধরা লজ্জায় লজ্জাবতী হয়ে রাজের বুকে মুখ লুকায়। শাওয়ারের পানি বৃষ্টির ফোঁটার মতো তাদের উপরে পড়ছে। মনে হচ্ছে এ সময়টা যদি যুগ যুগ থাকতো। তাহলে কতই না ভালো হতো। দু’জনেই চোখ বন্ধ করে আছে।
– এদিকে দু’জনেই শাওয়ার নিয়ে রুম থেকে বের হয়।
– অধরা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুল গুলো তোয়ালে দিয়ে মুছছে এমন সময় কারো স্পর্শে চমকে উঠলো। কিছু বুঝে উঠার আগেই রাজ অধরার চুলগুলো সরিয়ে গারে কিস করলো! অধরার কাছে মনে হচ্ছে সে এক পৃথিবী সুখ মেয়ে গেছে। রাজ এতটা রোমান্টিক সে কল্পনাও করতে পারছে না। অধরা কাপড় পরে নিলে। রাজ যা যা অর্ডার করেছিল সেসব একটা মেয়ে রুমে দিয়ে যায়।
– রাজ অধরাকে সবকিছু নিজের হাতে খাইয়ে দিয়ে বলে, চলো এখন একটু ঘুমাই। কাল আবার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাবো। অধরা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিল।
– অধরা শুয়ে পড়লে রাজ অধরার পাশ থেকে বালিশটা সরিয়ে অধরার বুকে মাথা রেখে বললো,’ তোমার বুকটা কি সারাজীবন বালিশ হিসেবে পাবো?
– অধরা রাজের মাথাটা বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বললো,’ এই বুকটা যে শুধু তোমারি। সারাজীবন তুমি রাখবে আমার বুকে মাথা? আমার আর কিছু চায় না। অধরা রাজের কপালে চুমু খেয়ে বললো।
– রাজ অধরার বুকে মুখ লুকিয়ে বললো। হুম সারাজীবন তোমার বুকেই থাকবো। এখন ঘুম পাড়িয়ে দাও না গো নিব্বি!
– অধরা রাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মনের মাঝে এক সুখের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। রাজের দেওয়া কষ্টগুলো এক নিমিষেই অধরা ভুলে যায়। বহুদিন পর আজকের রাতটা তার শান্তিতে ঘুম হয়।
সকালে অধরার ঘুম ভাঙতেই দেখে সে কারো বুকে ঘুমিয়ে আছে। তারার মতো মিটিমিটি করে চোখ খুলতেই দেখে রাজ তাকে তার বুকের রেখেছে!
বুকের কাপড় ঠিক নাই। অধরা মুচকি হেসে ভাবে নিশ্চয় পাগলটা রাতে দুষ্টমি করেছে। এই ভেবে অদ্ভূত এক ভালো লাগা কাজ করে। রাজের কপালে বড় করে একটা পাপ্পি দিয়ে ঘুম থেকে উঠে শাওয়ার নিয়ে এসে দেখে রাজ এখনো ঘুমিয়ে আছে। অধরা তার ভেজা চুলগুলো রাজের মুখের উপর ছেড়ে দেয়। অধরার ভেজা চুলের মুগ্ধ করা সুভাসে! সিগ্ধ স্পর্শে রাজের ঘুম ভেঙে যায়। রাজের ঘুম ভাঙতেই দেখে অধরা তার লম্বা চুলগুলো তার মুখের উপর ছেড়ে রেখেছে! চুলের মাতাল করা গন্ধে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারে না।
– এদিকে সকালে ব্রেকফাস্ট করে রাজ আর অধরা সমুদ্রে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। হঠাৎ একটা মেয়ে রাজ বলে চিৎকার দিয়ে রাজকে জড়িয়ে ধরে।
– অধরা এ দৃশ্য সহ্য করতে পারে না। মেয়েটাকে হেচকা টান দিয়ে রাজের বুক থেকে ছাড়িয়ে কষে একটা থাপ্পর বসিয়ে দেয়। আর বলে এই মেয়ে দুনিয়াতে কি ছেলের অভাব পড়ছে? আমার স্বামীকেই জড়িয়ে ধরতে হয়!
– অধরার কথা শেষ হওয়ার আগেই রাজ অধরাকে কষে একটা থাপ্পর দিয়ে বলে, ‘ আনিশা আমার কে জানিস?
– তোর কি করে সাহস হয় ওর গায়ে হাত তুলতে? আর কিসের স্বামী আমি তোর?
– আনিশা তোমাকে বলছিলাম না পার্টির জন্য একটা মেয়ে আনছি। এই সেই মেয়ে ””
””’ চলবে