#অভিমানেই_আছো_তুমি💚
#Writer:—#TanjiL_Mim
#part:11
.
.
🍁
—–”কি ভাবছো এত…!!আচমকা আদিত্য জড়িয়ে ধরে কথাটা বলে উঠল আমায়’!!আদিত্যের প্রশ্নের উত্তরে বলে উঠলাম আমিঃ
———-“তেমন কিছু নয়!
———–“আচ্ছা তুমি আকাশের দিয়ে তাকিয়ে কি দেখো বলো তো……
————“তেমন কিছু নয়…….
———–“কিছু তো একটা আছেই ওই আকাশে যেটা তুমি খুব গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখো’!!বলো আমায়…..
“আদিত্যের কথা শুনে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলাম আমিঃ
———–‘তেমন কিছু নয়!খালি খালি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতেই ভালো লাগে’!!তবে হ্যা কিছু একটা আছে বলতে ওই যে আকাশে থাকা তারাগুলো আছে আর যে আছে সে হলো আল্লাহ’!!আকাশের দিকে তাকিয়ে খোদাকে ফিল করা যায়”!!ছোট বেলা থেকেই অভ্যাস আমার কখনো খুশি হলে বা কখনো কষ্ট পেলে আমি আকাশের দিয়ে তাকিয়ে থাকি’!!ভালো লাগে আমার’!!নিজেকে হালকা মনে হয়’!!
———–“ওহহ!!এমন কিছু…..
———–“হুম তুমি কখনো ফিল করো নি…..
———–“সত্যি বলতে আমি কখনো তোমার মতো এগুলো ভাবি নি….
———–“তা ভাববে কেন সারাদিন শুধু ছাইপাঁশ গিলে কষ্টকে দমিয়ে রাখবে’!!আজ থেকে ওইসব ছাইপাঁশ খাওয়া বন্ধ বলে দিলাম…..
~ বলতেই আদিত্য শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললঃ
———-“ঠিক আছে “ময়ূরীজান”….
———-“আচ্ছা এখন বলো তো এই মুহুর্তে তুমি কোনটায় আছো এইটা বলো….
———-“মানে……
———–“ওই যে তুমি বললে না তুমি খুব খুশি হলে অথবা খুব কষ্ট হলে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকো’!!তাহলে এখন কোন কারনে তাকিয়ে আছো আকাশের দিকে….
————“সত্যি বলবো!(আদিত্যের দিক ঘুরে)
———-“হুম…
“আদিত্যের গলা জড়িয়ে ধরে বলে উঠলাম আমিঃ
————“একটু খুশি, একটু কষ্ট, দুটো মিলিয়েই যে অস্পষ্ট”…..
————“মানে……
————“মানে হলো এই মুহুর্তে দুটোয় হচ্ছে আমার,খুশিও লাগছে আবার কষ্টও হচ্ছে…..
“আমার কথা শুনে আদিত্যও আমার গলা জড়িয়ে ধরে বললোঃ
————“খুশি লাগছে কেন আর কষ্টই বা হচ্ছে কেন???
————“খুশি লাগছে আমি আমার ভালোবাসার মানুষের সাথে আছি,,তাকে এওতো এওতো ভালোবাসি আর সেও আমায় ভালোবাসে…..
“হাসলো আদিত্য’!!তারপর বলে উঠলঃ
———–“খুশি হওয়ার কারনটা তো জানলাম এখন কষ্ট হওয়ার কারনটা…..
———–“কষ্ট যেটা হচ্ছে সেটা হলো আমার পরিবার’!!আমার আপন মানুষরা যে আমায় ঘৃনা করে প্রিয়’!!ছোট ভাইটাও যে আমায় ঘৃনা করে খুব’!!কতোদিন হয়ে গেল ওদের সাথে না দেখা হয়েছে আর না কথা হয়েছে’!!কেমন আছে ওরা ওটাও তো জানা হয় নি…..বলতে বলতে চোখে কোন বেয়ে দু-ফুটো পানি পড়ে গেল নিচে…….
“আদিত্য আমায় শক্ত করে তার বুকে জড়িয়ে ধরে বললোঃ
———–“চিন্তা করো না “ময়ূরীজান” সব ঠিক করে দিবো খুব তাড়াতাড়ি…..
“বিনিময়ে আরুশি কিছু বললো না’!!আদিত্যের বুকে মাথা দিয়ে জড়িয়ে ধরল তাকে……
______________
“কিছুক্ষন পর…..
“হুট করে আদিত্য কোলে তুলে নিলো আরুশিকে’!!তারপর বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজেও ঘুমিয়ে পরল….
||
“সূর্যের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙল আমার’!!পাশে আদিত্যকে দেখে অবাক হলাম আমি’!!ঘড়ির কাঁটায় সাতটা বাজে’!!এতো তাড়াতাড়ি আদিত্য গেল কোথায়…….
“বেশি কিছু না ভেবে বিছানা থেকে উঠে বসলাম আমি’!!চারদিকে তাকিয়ে বিছানা থেকে নেমে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম’!!
_____________________________________
_______________________
“আরুশির বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন ধরনের খাবার নিয়ে ঢুকছে আদিত্যের লোকেরা……
তাদের এমন কাজ আরুশির আম্মি আর তার ছোট ভাই দু-জনেই অবাক হলো’!!এমন সময় সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছিল আরুশির বাবা’!!এতো লোককে একসাথে ঢুকতে দেখে অবাক হয়ে বললো সেঃ
———–“সেসব কি হচ্ছে… আর তোমরা কারা এগুলো নিয়ে কোথায় যাচ্ছো…..
“বিনিময়ে লোকগুলো কোনো উওর না দিয়ে তাদের মতো তারা তাদের কাজ করতে লাগলো!!এদিকে আরুশির বাবা রেগেমেগে বলে উঠলঃ
———–“কি হলো তোমরা কথা বলছো না কেন??কে পাঠিয়েছে এগুলো……
“এমন সময় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে আদিত্য বলে উঠলঃ
————“চাপ নিবেন না শশুড় মশাই এগুলো আমি নিয়ে আসছি বলতে বলতে সোফায় বসে পরল আদিত্য……
“আদিত্যকে দেখে বাবা রেগে গিয়ে বলে উঠলঃ
———–“তুমি…..
————“হ্যাঁ আমি!কি ভেবেছিলেন আপনার জামাই কখনো আসবে না আপনাদের বাড়িতে, দশটা না পাঁচটা একমাএ জামাই আপনার এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে নাকি শশুরমশাই !
————“তোমার ফালতু কথা বাদ দিয়ে আগে বলো এখানে কেন এসেছো,আর একা আসছো নাকি……
————“কেন মেয়েকে আনলে খুশি হতেন বুঝি…..
~ “এইবলে আদিত্য তার চোখের কালো চশমাটা খুলে সামনের টেবিলে রাখলো!
“এমন সময় আদিত্য আনা লোকদের মধ্যে একজন বলে উঠলঃ
————“ভাই সবকিছু রাখা হয়ে গেছে…..
————–“ঠিক আছে এখন তাহলে তোরা যা বাকিটা আমি একাই শশুর মশাই সাথে বুঝে নিবো,তাই না শশুরমশাই…..
————-“ঠিক আছে ভাই……
————“হুম!
“বলেই আদিত্যের লোকেরা চলে গেল বাহিরে!!আদিত্যের লোকেরা চলে যেতেই আদিত্য আরুশির বাবাকে বলে উঠলঃ
————“কি হলো শশুর মশাই দাঁড়িয়ে আছেন কেন বসুন না…….
“আদিত্যের কথা শুনে আরুশির বাবা বসলো না যা দেখে আদিত্য বলে উঠলঃ
————-“আহা শশুড় মশাই দাঁড়িয়েই থাকবেন তাহলে……বসবেন না…..
“আদিত্যের কোনো হেলদোল হলো না আরুশির বাবার’!!যা দেখে আদিত্য রেগেমেগে চেঁচিয়ে বলে উঠলঃ
————”আপনি কি আমার বাংলা কথা বুঝতে পারছেন না’!!বলেই সজোরে হাতের পিস্তল দিয়ে টেবিলের উপর একটা বারি মারলো…….
“সাথে সাথে বাড়ির সবাই পুরো কেঁপে উঠল’!!আদিত্য আবারো বলে উঠলঃ
————“বসুন(দমক দিয়ে)
“সাথে সাথে আরুশির বাবা বসে পরলো সোফায়’!!উনি বসতেই আদিত্য জোরে জোরে দুবার শ্বাস ফেলে নিজের রাগকে কন্ট্রোল করে শান্ত গলায় বলে উঠলঃ
————-“দেখুন এখানে আমি না কোনো ঝগড়া করতে এসেছি না কোনো ঝামেলা করতে,আমি চাই আপনাদের আর আরুশির মধ্যে যে ভুল বুঝাবুঝিটা হয়েছে সেটা সংশোধন করতে’!!তাই আমি হাত জোর করে অনুরোধ করছি আমায় রাগাবেন না’!!আর কথাটাকে থ্রেট হিসেবে নিবেন না অনুরোধ হিসেবে নিবেন…….
————-“তুমি কি আমায় ভয় দেখাচ্ছো…..
————“এই যে শশুর মশাই এই মাএ বললাম থ্রেট হিসেবে নিয়ে নিবেন না তারপরও…….
“আদিত্য কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠলঃ
———–“দেখুন শশুর মশাই যেটা হয়েছে সেটার জন্য আরুশির কোনো দোষ নেই,যা করেছি সব আমি করেছি,,তাই প্লিজ আরুশির উপর আর রাগ করে থাকবেন না’!!ও যে আপনাদের ছাড়া ভালো নেই’!!আমি জানি আপনারাও আরুশিকে ছাড়া ভালো নেই তাই আমি আপনাদের কাছে হাত জড়ো করে বলছি প্লিজ আর রাগ করে থাকবেন না’!!আপনার সব রাগ তো আমার উপর প্লিজ তার শাস্তি আরুশিকে দিবেন না’!!এই কয়েক দিনে এমন দিন নেই যেদিন আরুশি আপনাদের কথা ভেবে কাঁদে নি’!!প্লিজ ওকে কাঁদাবেন না’!!প্লিজ সব ভুলে গিয়ে আবার আগের মতো করে আরুশিকে আপন করে নিন’!!প্লিজ শশুর মশাই…….
“আরুশির বাবা আদিত্যের কথাগুলো চুপচাপ শুনে কিছুক্ষন পর বলে উঠলঃ
———–“তুমি কি চাচ্ছো আমি তোমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবো…….
“আদিত্য আরুশির বাবার কথা শুনে ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে বলে উঠলঃ
————“আমি জানি আমায় আপনি কোনোদিনও মেনে নিবেন না,কারন আমার কাজ,আমার কাজ সম্পর্কে এতটুকু বলবো আমি যেটা করি সেটা লোকেদের ভালোর জন্য যারা গরীবদের টাকা ক্ষমতার জোরে কেড়ে নেয় তাদের আমি শাস্তি দেই’!!আর এটা যদি অপরাধ হয় তাহলে আমি অপরাধী’!!আপনাকে আমায় মেনে নিতে হবে না শশুর মশাই আরুশিকে মেনে নিলেই হবে’!!তবে মেনে নিবেন মানে এটা নয় আমায় ছেড়ে দিয়ে…….
“এতটুকু বলে থামলো আদিত্য’!!তারপর আবারো বলে উঠলঃ
———-“ছোট বেলা থেকেই আমি একা বেঁচে আছি’!!কখনো বাবা মার ভালোবাসা পায় নি’!!আর না পেয়েছি কোনোদিন ভাই বোনের ভালোবাসা’!!এই ভালোবাসার অভাবে এমন হয় গেছি আমি’!!তারপর হর্ঠাৎ আরুশি আসলো আমায় ভালোবাসলো’!!তখন বুঝলাম ভালোবাসার আসল মানে’!!কিন্তু যতক্ষণে বুঝতে পেরেছি ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে তাই এমনটা করতে হলো’!!সত্যি বলতে মা বাবার ভালোবাসা পেতে তো আমারও খুব পেতে ইচ্ছে হয় শশুর মশাই’!!কিন্তু কি করার ভাগ্যে নেই আমার’!!তাই আমি চাই না আমার জন্য কেউ বাবা মার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হোক’!!তাই অনুরোধ শশুর মশাই আর আরুশিকে কষ্ট দিয়েন না!!এই বলে আদিত্য থেমে গেলো’!!হয়তো আর কিছুক্ষন কথা বললেই তার চোখ ভেসে আসতো…..
||
“এদিকে দূর থেকে আরুশির মা আদিত্যের কথা শুনে ওনার খারাপ লাগলো’!ছোট বেলা থেকে ছেলেটা বাবা-মার জন্য কষ্ট পাচ্ছে’!!আরুশির কথা ভেবেও কষ্ট পাচ্ছে সে…..
||
“এদিকে আরুশির বাবা চুপ করে বসে আছে কিছু বলছে না’!!এমনটা নয় যে সে আরুশির জন্য কষ্ট পাচ্ছে না’!!আরুশিকে ভালোবাসে তো খুব’!!কিন্তু তার এই চাপা কষ্ট কাউকে বুঝতে দেয় নি আরুশির বাবা………..
________
“বেশকিছুক্ষন পর আদিত্য বলে উঠলঃ
———–“কি হলো শশুড় মশাই কিছু বলবেন না…..
“আদিত্যের কথায় আরুশির বাবা তার ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসল’!!তারপর বলে উঠলঃ
————–“তোমার বলা শেষ হয়েছে তাহলে তুমি এখন আসতে পারো…..
“এতক্ষণ পর আরুশির বাবার মুখে এমন কথা হা হয়ে গেল আদিত্য’!!তারপর বলে উঠলঃ
———–“প্লিজ শশুর মশাই…..
————“তোমার আর কোনো কথা শুনতে চাই না এই বলে আরুশির বাবা সোফা থেকে উঠে সোজা উপরে চলে গেলেন…..
“এদিকে আদিত্য মাথা নিচু করে বসে রইল সোফায়…..!!এমন সময় আদিত্যের সামনে এসে বসলো আরুশির আম্মু’!!আদিত্যের মাথায় হাত দিয়ে বললোঃ
———–“চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে’!!কেমন আছে আমার মেয়েটা…..
————“আপনাদের ছাড়া ভালো নেই শাশুড়ি মা……
“বিনিময়ে আরুশির মা কিছু না বললো না’!!আদিত্য আর কিছু বলে চুপচাপ বেরিয়ে আসলো বাড়ি থেকে’!!গাড়িতে ঢুকতে গিয়ে আরেকবার পিছন ঘুরে আরুশির বাড়ির দিকে তাকিয়ে চলে গেল সে মন খারাপ করে’!!তারপর গাড়ি করে চলে গেল আদিত্য…….
_____________________________________
_______________________
“কলিংবেল বাজতেই গিয়ে দরজা খুলে দিলাম আমি’!!সামনের ব্যক্তিদের দেখে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার…….
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………
🥰❤️❤️❤️[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!]❤️❤️❤️🙃
#TanjiL_Mim♥️