অল্প থেকে গল্প🍁
অরিত্রিকা আহানা
পর্ব:১২
ছবি চোখ বড় বড় করে শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে।
হতবম্ভ কন্ঠে বলল,
—কি বললেন আপনি?
—আমি কিছুই বলি নি।তুমি প্রশ্ন করেছো আমি তার উত্তর দিয়েছি ব্যস!
—আমার ঘরে সৎ মা আছে? আমার স্বামী আমাকে…
এটুকু বলে ঢোক গিললো ছবি।
—হুম,তারপর?
ছবি অনুযোগের সুরে বলল,
—আমি কিন্তু খাবো না বলে দিলাম?
শুদ্ধ বাচ্চাদের মত মুখে আঙ্গুল দিয়ে বলল,
—-ঠিক আছে আমি আর কিছু বলবো না।তুমি খাওয়া শুরু করো!
শুদ্ধ চুপচাপ ফোন স্ক্রল করছে।ছবি কাচুমাচু করছে,অস্বস্তি হচ্ছে ওর।শুদ্ধ ইশারায় জিজ্ঞেস করলো,
—কি হয়েছে?
ছবি দুদিকে মাথা নাড়িয়ে বলল,
—কিছু না।
—তাহলে খাচ্ছো না কেন?
ছবি হাত দুটো কচলে ইতস্তত করে বলল,
—আপনি সত্যিই খাবেন না?
—তুমি বললে খেতে পারি।
ছবি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো।মুখটা নিচু করে লাজুক গলায় বললো,
—আমি তো আপনাকে না করি নি।
শুদ্ধ নড়েচড়ে সোজা হয়ে বসলো।তারপর হাতদুটো মুঠো করে আড়াআড়িভাবে টেবিলের ওপর রাখলো। বললো,
—তারমানে তুমি চাচ্ছো আমি তোমার সাথে জয়েন করি তাই তো?
ছবি মাথা নিচু করে শুধু ঘাড়টা নাড়ালো।
শুদ্ধ দুষ্টু হেসে বলল,
—মুখে বলা যায় না?
ছবির চিবুকটা লজ্জায় বুকের সাথে মিশে এলো।শুদ্ধ বললো,
—তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে আমি তোমাকে তুলে নিয়ে ফার্স্ট নাইট সেলিব্রেট করার কথা বলেছি।এত লজ্জা পাচ্ছো কেন?
ছবি চোখবড় বড় করে শুদ্ধর দিকে তাকালো।শুদ্ধ কি বলছে এসব?নিউরোলজি পড়তে পড়তে ওর নিজের সেন্সরি নার্ভগুলো কি সব অকেজো হয়ে গেছে?
শুদ্ধ ওর এমন অবস্থা দেখে হেসে ফেললো,
বললো,
—রিলেক্স!আমি ওয়াজ জাস্ট কিডিং।এবার শুরু করো।মা আমাদের জন্য জেগে বসে আছেন।
—কিন্তু এত খাবার তো আমি একা খেতে পারবো না।
—খেতে হবে তোমাকে।না খেলে এখান থেকে উঠতে পারবে না।খাবারগুলো তো টাকা দিয়ে কেনা তাই না?
—আমি তো আপনাকে আগেই বলেছি এতখাবার ওর্ডার করার দরকার নেই।আপনিই তো শুনলেন না।
—বেশি কথা বলো তুমি।শুরু করতে বলেছি শুরু করো!এত কথা বলছো কেন?
—মানে কি আপনি কি আমাকে জোর করে খাওয়াবেন নাকি?
—ধরে নাও তাই।এটা হচ্ছে তোমার শাস্তি!
—কিসের শাস্তি।
—আমার গালে লিপবাম লাগানোর!
ছবি লজ্জায় আরক্তিম হয়ে গেলো।শুদ্ধ আর কতবার এই অস্বস্তিতে ওকে ফেলবে? চুপসে যাওয়া মুখ নিয়ে খাওয়া শুরু করলো সে।
শুদ্ধ বাটিতে স্যুপ নিতে নিতে বলল,
—আমি মজা করেছি।যতটুকু খেতে পারো খাও।আমি দুজনের জন্য অর্ডার করেছি।
ছবির খেতে ইচ্ছে করছে না।সুযোগ পেয়ে গেলো সে।কিছুক্ষন স্যুপ নিয়ে নাড়াচাড়া করে বলল,
—আমি আর খাবো না।
—তুমি তো কিছুই খাও নি?সবই তো রয়ে গেছে?
—আমার ক্ষিদে নেই।আর খাবো না।
—তোমার শাস্তি কিন্তু এখনো শেষ হয় নি?
— আমি আপনার কথা শুনবো কেন? কেন?কে আপনি?
মুহূর্তেই শুদ্ধর চেহারার রঙ বদলে গেলো।ছবি নিজেও হতবম্ভ হয়ে গেলো? কি বলে ফেলেছে সে? হাতটা অটোমেটিক মুখের কাছে চলে গেলো!ও তো ইচ্ছে করে বলে নি।হঠাৎ মুখ ফস্কে বেরিয়ে গেছে!
ততক্ষনে টিস্যুতে হাত মুছে গম্ভীরভাবে উঠে দাঁড়িয়েছে শুদ্ধ।মোবাইলটা পকেটে ঢুকিয়ে ওয়েটার কে ডাক দিয়ে বিল পে করে দিলো। বাইকের চাবিটা তুলে নিয়ে বলল,
—এসো!
ঘটনার আকস্মিকতায় ছবি হতবাক হয়ে গেছে।স্বচ্ছ কাঁচের দরজা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে শুদ্ধ বাইক স্টার্ট দিয়ে ফেলেছে।ছবি আর দেরী না করে ব্যাগ নিয়ে দৌঁড়ে বেরিয়ে গেল।
বাইকে উঠেই শুদ্ধ কাধে হাত রাখতে গিয়েও রাখলো না সে।ভয়ে হাত সরিয়ে নিলো।শুদ্ধ ওকে সরে বসতে দেখে বললো,
—ধরে বসো।নাহলে পড়ে যাবে।
—সরি।
—ঠিক করে ধরে বসো!
ছবির ভীষণ কান্না পাচ্ছে।হঠাৎ করে ওর মুখ দিয়ে কি করে এমন কথা বেরলো সে নিজেও জানে না।লজ্জায় অনুশোচনায় ওর নিজের চুল ছিঁড়তে মন চাইছে।
নিজেকে শান্ত করার চেষ্টায় চুপচাপ বসে রইলো সে।কিন্তু একটুপর পর বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠছে।
লুকিং গ্লাসে শুদ্ধকে দেখলো।শুদ্ধর দৃষ্টি সামনের দিকে।
ছবি কান্না চেপে রাখতে পারলো না।দুহাতে শুদ্ধর গলা জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে উঠল,
—আমি সত্যি ইচ্ছে করে বলি নি মুখ ফস্কে বেরিয়ে গেছে।বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে বলি নি!
শুদ্ধ ওর আচমকা কান্নায় বাইক থামিয়ে ফেললো।ওর গলা জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা এলিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে ছবি।ওর চোখের পানিতে শুদ্ধর শার্ট কাধের কাছে খানিকটা ভিজে গেছে।
—আমি সরি বলেছি তো।আমি ইচ্ছে করে বলি নি!
শুদ্ধ মোলায়েম কণ্ঠে বলল,
—ঠিক আছে আমি বুঝতে পেরেছি তুমি ইচ্ছে করে বলো নি।এবার কান্না থামাও!
ছবির কান্না থামলো না।দ্বিগুন বেড়ে গেলো।
—আপনি আমার ওপর রাগ করে আছেন।
—কে বলেছে তোমাকে আমি তোমার ওপর রাগ করে আছি?আমি তোমার ওপর রাগ করি নি।
—তাহলে এমন করছেন কেন?
—কী করেছি আমি?
—এই যে চুপচাপ বসে আছেন?
—গাড়ি চালানোর সময় কথা বলা উচিৎ নয় তাই চুপ করে ছিলাম।
—না আপনি চুপ করে থাকবেন না!
—তো কি করবো?
—আপনার যা খুশি করুন।কিন্তু দয়া করে এমন চুপচাপ থাকবেন না।
শুদ্ধ হেসে উঠে বলল,
—আচ্ছা,ঠিক আছে।
রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা।শুনশান নিরবতা। শুদ্ধ হঠাৎ বাইকের গতি বাড়িয়ে দিলো।ছবির কান্না থেমে গেলো। ভয়ে চেঁচিয়ে উঠে বললো,
—এত স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছেন কেন?
—তুমিই তো বললে আমার যা খুশি করার জন্য।
—তাই বলে আপনি স্পিড এত বাড়িয়ে দেবেন।দয়া করে স্পিডটা একটু কমান না হলে নির্ঘাত কোন দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।
—ভয় পেয়ো না।এদিকে গাড়িঘোড়া তেমন নেই।হাইওয়ে তে উঠলে স্পিড কমিয়ে দেবো।
—আপনি আমার ওপর রেগে নেই তো?
শুদ্ধ হেসে উঠে বলল,
—কেন রেগে থাকলে কি আবার কাঁদবে?
ছবিও হেসে ফেললো।শুদ্ধ দুষ্টু গলায় বলল,
—এবার আমার গলাটা ছাড়ো!যেভাবে চেপে ধরেছো আরেকটু হলে দমবন্ধ হয়ে মারা যাবো।
ছবি লজ্জা হাত সরিয়ে ফেললো।কিন্তু শরীরের ব্যালেন্স সামলাতে না পেরে বলল,
—আপনি প্লিজ স্পিড কমান আমার ভয়ে করছে।শুদ্ধ বাইকের গতি কমিয়ে দিয়ে বলল,
—শক্ত করে চেপে বসে থাকো!
বাসার কাছাকাছি পৌঁছাতেই শুদ্ধ ফোন বেজে উঠলো।বাইকটাকে রাস্তার পাশে দাড় করিয়ে কথা বলছে সে।ছবি বাইকের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে শুদ্ধর দিকে চেয়ে আছে।
ল্যাম্পপোস্টর হলুদ আলোতে শুদ্ধকে ভীষণ শুদ্ধ লাগছে!
ছবি মুগ্ধ হয়ে ওকে দেখছে।এই মানুষটাকে যত দেখে ততই মুগ্ধ হয় সে।মুগ্ধতার সকল সীমা বোধহয় অতিক্রম করে ফেলেছে সে।তবুও ছবি বারবার মুগ্ধ হয়।কেন?কেন এত মুগ্ধ হয় সে? কেন উনার আশেপাশে থাকতে ছবির এত ভালো লাগে? কেন উনাকে দেখলে ছবির সমস্ত শরীর অবশ হয়ে আসে।সারা পৃথিবী আলোকিত মনে হয়?
বাতাসে শুদ্ধর খোলা শার্টের আস্তিন উঠছে।শার্টের ভেতর কালো একটা গেঞ্জি পরেছে।
ছবির ভীষণ ইচ্ছে করছে শুদ্ধর হাতে হাত রেখে গাইতে,
—যাবো না যাবো না যাবো না ঘরে
বাহির করেছে পাগলও মোরে
যাবো না যাবো না যাবো না ঘরে
আকাশের দু তীরে দুবেলা
আলোকও লোক করে হলি খেলা
আমার পরানে লেগেছে রঙ
কালোরও পরে
যাবো না যাবো না যাবো না ঘরে
বাহির করেছে পাগলও মোরে।
খুব ইচ্ছে করছে দুজন খালি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে পুরো শহর ভ্রমন করে বেড়াবে।শুদ্ধর ডাকে ওর ঘোর ভাংলো।
শুদ্ধ ওর চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বললো,
—এই যে লিলিপুট কোথায় হারিয়ে গেলে?
ছবি চোখগরম করে শুদ্ধর দিকে তাকালো।শুদ্ধ হাসছে।অনুর বিয়ের সময় প্রথম যেদিন শুদ্ধর সাথে ওর দেখা হয়েছিলো সেদিন শুদ্ধ এই নামেই ওকে ডেকেছিলো।স্পষ্ট মনে আছে তার।
শুদ্ধ ছবিদের ড্রয়িংরুমের সোফার ওপর বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো।ছবি ফুলের ডালা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিলো।শুদ্ধ হঠাৎ ওকে ডাক দিয়ে বলল,
—এই যে মিস লিলিপুট আমাকে একগ্লাস পানি দিয়ে যাও তো।ঠান্ডা পানি আনবে ঠিক আছে?
ছবি অগ্নিদৃষ্টিতে শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে ছিলো।শুদ্ধ সেদিকে পাত্তা না দিয়ে মিটমিট করে হাসতে হাসতে বললো,
—কি হলো দাঁড়িয়ে আছো কেন?রাগ করেছো?পিচ্চিদের কিন্তু এত রাগ ভালো না।
ছবি পানি এনেছিলো ঠিকই কিন্তু সেটা শুদ্ধকে খাওয়ানোর জন্য নয়।পানিটা সোজা শুদ্ধর মুখ বরাবর ছুঁড়ে মেরেছিলো।শুদ্ধ কিছুক্ষন হতবাক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।ওর চশমার ভেতর দিয়ে চোখে পানি ঢুকে গেছিলো।শুদ্ধ চশমা খুলে পাঞ্জাবী কোনা দিয়ে মুছতে মুছতে বললো,
—পানি তো খেতে চেয়েছিলাম লিলিপুট,গোসল করতে নয়!
ছবি রাগে কটমট করে বললো,
—আপনার ভাগ্য ভালো যে পানির সাথে মরিচ মিশিয়ে আনি নি।তাহলে আপনার চারচোখই অকেজো হয়ে যেত।
তারপর শুদ্ধকে কিছু বলার সুযোগ একদৌঁড়ে সেখান থেকে চলে এসেছিলো।
আজকে শুদ্ধর মুখে লিলিপুট ডাকটা শুনে ওর সেইদিনের কথাটা মনে পড়ে গেলো।চোখ পাকিয়ে বলল,
—আমি মোটেও লিলিপুট নই।
ওকে রাগতে দেখে শুদ্ধ আরো বেশি মজা পেলো।ও হাসতে হাসতে বললো,
—তুমি এখনো লিলিপুটই আছো!
ছবির মুখ বাঁকালো।একটু নাহয় খাটোই ছিলো তখন তাই বলে লিলিপুট বলবে?নিজে লম্বা বলে সবাইকে লিলিপুট ডাকবে? ছবি চোখ পাকিয়ে বলল,
—নিজে লম্বা বলে আপনার খুব ডাঁট তাই না?
শুদ্ধ এবার হো হো করে হেসে ফেললো।
—লিলিপুট!
—আমার হাইট পাচফুট তিন!
—সত্যি?
ছবি আবার চোখ পাকালো।শুদ্ধ হাত তুলে বলল,
—আচ্ছা ঠিক আছে!..তো এখন বলো কি ভাবছিলে তুমি?
—কিছু না!
—আমার কথা ভাবছিলে?
ছবি বজ্রপাতে চমকে উঠার মত আহত দৃষ্টিতে শুদ্ধর দিকে তাকালো।শুদ্ধ জানে না মজার ছলে সে সত্যিটাই বলে দিয়েছে।ছবির মাথাটা ঝিমঝিম করে উঠলো।বুক ধড়ফড় করছে!এমন কেন উনি? সত্যিই সব বুঝেন নাকি আদৌ কিছু বুঝতে পারেন না? শুদ্ধ রহস্যজনক হাসি হাসলো।ছবি বোকার মত চেয়ে আছে।হি ইজ মোর মিস্টেরিয়াস দ্যান দ্যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল!
বাসায় পৌঁছে কলিংবেল দিতেই বুয়া এসে দরজা খুলে দিলো।ছবি ওর ঘরে চলে গেলো।
আনোয়ারা বেগম নামাজ পড়ছিলেন।শুদ্ধকে খাটের ওপর শুয়ে থাকতে দেখে সালাম ফিরিয়ে বললেন,
—তোর ভাবির কি অবস্থা?
—ভালো আছে।
শুদ্ধ পকেট থেকে ফোন বের করে বললো,
— বাবুর ছবি দেখবে?
—দেখা না!
শুদ্ধ উপলকে ভিডিও কল দিয়ে বললো,
—বাবুর কাছে ধরো ভাইয়া,মা দেখবে।
উপল মেয়ের কাছে ফোন ধরতেই আনোয়ারা বেগমের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো।শুদ্ধ আনোয়ারা বেগমের হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বললো,
—তোমার কথা বলা শেষ হলে বুয়াকে দিয়ে আমার ঘরে পাঠিয়ে দিও।
রাত দেড়টার দিকে ছবি পানি খেতে এসে দেখলো শুদ্ধর ঘরে আলো জ্বলছে।তার মানে শুদ্ধ এখনো জেগে আছে!
দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে উঁকি দিলো ছবি।শুদ্ধ খাটের ওপর হেলান দিয়ে শুয়ে বই পড়ছে।টেবিলে ওপর খালি কফির মগ!নিজে বানিয়ে খেয়েছে সে।ছবি তাড়াতাড়ি কিচেনে ঢুকে আরেকমগ কফি বানিয়ে নিলো।
কফি নিয়ে শুদ্ধর ঘরের দরজায় টোকা দিলো। শুদ্ধ সাড়া দিলো না।ছবি পরপর আরো দুবার টোকা দিলো।এবার ভেতর থেকে সাড়া এলো,
–কাম ইন।
ছবি ভেতরে ঢুকে দেখলো শুদ্ধ বই নিয়ে বিভোর হয়ে আছে,যেন ওর উপস্থিতি টেরই পায় নি।ছবি বিড়বিড় করে বললো,সারাক্ষণ এতো কি বই পড়েন আপনি? দু একটা ভালোবাসার চ্যাপ্টারও তো পড়তে পারেন, কি হয় পড়লে?এমন কেন আপনি?
.
.
চলবে
অল্প থেকে গল্প🍁
অরিত্রিকা আহানা
পর্ব:১৩
—তোমার পড়াশোনা নেই?
শুদ্ধর গলা শুনে চমকে উঠলো ছবি।বিরক্ত ভঙ্গিতে বলল,
—কি হবে পড়াশোনা করে? আমি সংসার করবো!
ছবির বিড়বিড় করে বলা কথাগুলো শুনেছে শুদ্ধ।ছবিকে একটু টাইট দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করলো সে। হাতের বইটা বিছানার ওপর রেখে হাত দুটো বাড়িয়ে দিলো ছবির দিকে।বলল,
—আসো সংসার করি!
ছবির চোখ কপালে চলে গেছে।কন্ঠে একরাশ বিস্ময় নিয়ে বলল,
—মানে?
—মানে তুমি না সংসার করবে বললে? সংসার করবে কাকে নিয়ে? বাচ্চা লাগবে না?
শুদ্ধ খাট থেকে নেমে ছবির সামনে এসে দাঁড়ালো।ছবির হাতের কফির মগটা দুলছে ভয়ে।শুদ্ধ কি করতে চাইছে? বাচ্চা? ও আল্লাহ!.না! আজকে সকালে অনুর চিৎকারের কথা মনে পড়লে এখনো ওর গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে।হাতপাঁ ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে!শুদ্ধ ঠোঁট কামড়ে বলল,
—তোমার আঠারো হয়েছে না?
—হ্যাঁ?
—হয়েছে? তাহলে আসো!পড়াশোনা যখন করবে না তখন বাচ্চা পালো!
শুদ্ধ আরেকটু কাছে এগোলো।ছবি আর একসেকেন্ডও দেরী করে নি।কফি মগটা টেবিলের ওপর রেখে একছুটে নিজের ঘরে!শুদ্ধ নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষন হো হো করে হাসলো।
ছবি নিজের ঘরে ঢুকে বড়বড় দম নিচ্ছে।কানে ধরছে সে!আর জীবনেও শুদ্ধর সামনে এমন কথা বলবে না।তওবা!তওবা!
তিনদিন বাদে অনুকে বাসায় নিয়ে আসা হলো। দুদিন খুব ধুমধাম চললো।তারপর আবার স্বাভাবিক ভাবেই সব কিছু চলতে শুরু করলো।শুদ্ধর ট্রেনিং পড়ে গেলো দশদিনের জন্য।সে চলে গেলো ময়মনসিংহ!ছবির কোচিং মডেলটেস্ট চলছে নিয়মিত।সে তার পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত!উপলকে যথারীতি অফিসে যেতে হয়!আনোয়ারা বেগম এখন আর বিরক্তি অনুভব করেন না।নাতনীকে নিয়ে তার সময় কেটে যায়।কিন্তু অনু? অনু প্রায়ই মুখ কালো করে বসে থাকে।বাচ্চাটার প্রতিও ইদানীং অনিহা তার।
উপল অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে এলো। মেয়েকে না দেখলে ওর শান্তি লাগে না।একটুপর পরই ভিডিও কল দিয়ে মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করে।অনু গতকাল খুব রেগে গেছিলো।তাই আজকে আর ওকে ফোন করার রিস্ক নেয় নি সে।
সোজা বাসায় চলে এসেছে।ঘরে ঢুকেই দেখলো বিছানায় অনুপলা হাতপাঁ ছুড়ে কাঁদছে।গলাফাটিয়ে চিৎকার করছে।অনু নির্বিকার ভাবে বারান্দায় বসে আছে।মেয়েকে কোলে নিয়ে উপল অনুর কাছে গেলো।
—কি হলো অনু তুমি দেখছো না অনুপলা কাঁদছে?
অনু জবাব না দিয়ে বারান্দা থেকে উঠে ড্রেসিংটেবিলের সামনে চলে গেলো।চুলে তেল দিতে বসে গেলো সে।
—মেয়ে কাঁদছে।তোমার চুলে তেল দেওয়াটা এখন বেশি হয়ে গেলো?
অনু তেলের কৌটা ঠাস করে টেবিলের ওপর রেখে বলল,
—সামনে থেকে সরো!আমার ক্ষিদে পেয়েছে।
—অনুপলা কাঁদছে তুমি শুনতে পাও নি?
—আমার সামনে থেকে সরো বলছি!
—অনু আমি তোমার কাছে কিছু জানতে চেয়েছি?
—আমি তোমার কোন প্রশ্নের উত্তর দেবো না।
—আশ্চর্য!তুমি না মা?..মেয়ে ক্ষিদের যন্ত্রনায় গলা ফাটিয়ে কাঁদছে আর তোমার কোন বিকার নেই? কেমন মা তুমি?তোমার মনে দয়ামায়া বলে কিছু নেই?
—না নেই।তোমার মেয়ে তুমি সামলাও।সারাদিন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে,আমার মাথা ধরিয়ে দিয়েছে। ইচ্ছে করছে গলা টিপে মেরে ফেলি।
উপল হতবম্ভ হয়ে গেলো।অনু কি বলছে এসব?
চোখমুখ শক্ত করে অনুর দিকে তাকালো সে।অনু ওর রাগের বিন্দুমাত্র ধার ধারলো না।গটগট করে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।
উপল রাগে ক্ষোভে চেঁচিয়ে উঠে বলল,
—তুমি মা নামের কলঙ্ক!লজ্জা হওয়া উচিৎ তোমার!
মেয়েকে কোলে নিয়েই রান্নাঘরে দুধ গরম করতে গেলো সে।ছবি কোচিংয়ে গেছে।আনোয়ারা বেগম তার বোনের বাসায়।রাগে মাথার চাঁদি ফেটে যাচ্ছে উপলের।সে না এলেই নিশ্চই এই মাসুম বাচ্চাটাকে অনু সারাদিন না খাইয়ে রাখতো।অনুর কাছে একা বাচ্চাটাকে রেখে যেতেও ভয় করছে তার।
ওয়াশরুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হুহু করে কেঁদে উঠলো অনু।নিজের দিকে তাকিয়ে তার ঘেন্না হচ্ছে তার।বাচ্চা হওয়ার ফলে বুড়িয়ে গেছে সে!চেহারায় ডার্ক সার্কেল পড়ে গেছে,চামড়ার ইলাস্টিসিটি নষ্ট হয়ে গেছে,শরীরে মেদ জমেছে।মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না,কেমন বুড়ি বুড়ি লাগে।লজ্জায়,দুঃখে মরে যেতে ইচ্ছে করছে তার!
উপল দুধ গরম করে ফিডারে করে খাইয়ে দিচ্ছে মেয়েকে।অনু ওকে অবাক করে দিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে সোজা ডাইনিং টেবিলে গিয়ে খেতে বসে গেলো।খাওয়া শেষে চুপচাপ বিছানায় এসে শুয়ে পড়লো সে।রাগে,দুঃখে বাক্যহারা হয়ে গেলো উপল।মেয়েকে কোলে নিয়ে নির্বাক হয়ে বসে রইলো সে।
সপ্তাহ খানেকবাদে একদিন হঠাৎ উপল অফিস থেকে ফিরতেই আনোয়ারা বেগম চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দিলেন।ছবি ভয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
আনোয়ারা বেগম রাগে গজগজ করতে করতে বললেন,
— আমার এত বছর বয়সে এই কারবার আমি দেখি নাই।আপন মা কি করে এমন ডাকাত হয়!
—কি হয়েছে মা? অনুপলা ঠিক আছে?
—সেটা তোর বউকেই জিজ্ঞেস কর!
উপল দ্রুত পায়ে ঘরে গেলো।অনুপলা ঘুমাচ্ছে।তাহলে মা এমন চিৎকার চেঁচামেচি করছে কেন?
অনু টিভি দেখছে।উপল শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
—কি হয়েছে অনু?মা এত চিৎকার চেঁচামেচি করছেন কেন?
অনু জবাব দিলো না।খাটের ওপর বসে পা দোলাচ্ছে সে।উপল টিভির সুইচ অফ করে দিয়ে সামনে এসে দাঁড়ালো!
—আমি তোমার কাছে কিছু জানতে চাইছি অনু!
—আমি কি করে বলবো তোমার মা কেন চিৎকার করছেন?
—তুমি জানো না?
—না!
উপল বামহাতটা কপালে চেপে ধরে বড়করে নিশ্বাস নিলো।রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে সে।
—তুমি কি আমাকে শান্তিতে থাকতে দেবে না? কি অন্যায় করেছি আমি?
—অন্যায় তুমি করো নি।অন্যায় আমি করেছি।তোমার বাচ্চার মা হয়ে!
—অনু?
ঘর কাঁপিয়ে ধমক লাগালো উপল।তাতেও অনুর কিচ্ছু এসে গেলো না।রাগে চেঁচিয়ে উঠে বলল,
—কি করবে গায়ে হাত তুলবে? তোলো!দেখি কত ক্ষমতা তোমার?
উপলের চিৎকারে শুনে আনোয়ারা বেগম ভেতরে এসে ঢুকলেন।ছেলেকে টেনে বের করে নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন।
—মাথা ঠান্ডা কর বাবা!আমার বয়স হয়েছে,মাথা ঠিক রাখতে পারি না তাই চিৎকার চেঁচামেচি করি।তোরা তো আমার মত না।পড়ালেখা করে বড় চাকরীবাকরী করছিস। তোরা এভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করলে মানুষ কি বলবে?
—তুমি দেখেছো মা ও কি বলেছে?
আনোয়ারা বেগম জবাব দিলেন না।আজকে দুপুরে উনি যেই ঘটনা দেখেছেন তা শুনলে তো উপল লঙ্কাকাণ্ড বাধিয়ে দেবে।চেপে গেলেন তিনি।ছেলের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
—তুই মাথা গরম করিস না বাবা।বউমা কেন এমন করছে তাকে জিজ্ঞেস কর!
—আমি জিজ্ঞেস করতে করতে বিরক্ত হয়ে গেছি।একটা কথারও জবাব দেয় না।মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকে।আমি অসহ্য হয়ে গেছি।
আনোয়ারা বেগম অসহায়ভাবে ছেলের মুখের দিকে চেয়ে আছেন।উপল অসহায় কন্ঠে বলল,
—আজকে কি হয়েছে মা?
আনোয়ারা বেগম থতমত খেয়ে গেলেন।কি বলবেন তিনি?
—কিছু না!
উপল উনার হাত চেপে ধরে কাঁদোকাঁদো গলায় বলল,
—প্লিজ মা!আমার মেয়েটার জন্য হলেও আমাকে বলো আজকে কি হয়েছে? ইদানীং ওকে অনুর কাছে রেখে যেতে আমার ভয় লাগে!
আনোয়ারা বেগম দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন।বলবেন কি বলবেন না?উপল অধৈর্য কন্ঠে বলল,
—প্লিজ মা!
—দুপুরের দিকে আমি নামাজ পড়ছিলাম। অনুপলার চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি সালাম ফিরিয়ে তোদের ঘরে যাই।গিয়ে দেখি দেখি অনুপলা কাঁদছে।
একটু বলেই ভয়ে আনোয়ারা বেগম চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো।ঢোক গিললেন,বললেন,
—অনু বিরক্ত হয়ে টাটকা গরম পানি নিয়ে এসেছে ওকে খাওয়ানোর জন্য!ভয়ে আমার কলিজা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসছিলো।কোনরকমে দৌঁড়ে গিয়ে ওকে আটকাই।
উপল হতবম্ভ হয়ে তাকিয়ে আছে।কি শুনছে সে এসব?মুহূর্তেই ওর কপালের রগ ফুলে উঠলো।তাতে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হয়েছে।চোয়াল শক্ত করে বলল,
—এতবড় ঘটনা তুমি আমার কাছ থেকে চেপে যাচ্ছিলে? কি করে মা? মেয়েটার যদি কিছু হয়ে যেত? অনেক হয়েছে অনুর এসব পাগলামি আর না।আজকে এর একটা বিহিত আমি করেই ছাড়বো।কি পেয়েছি কি ও?
আনোয়ারা বেগম ছেলের হাত চেপে ধরলেন।নরম গলায় বললেন,
—আমি দুপুরে অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছি।তুই আর এখন কিছু বলিস না বাবা!শান্ত হ!
—মা?..এতকিছুর পরেও তুমি কি করে আমাকে শান্ত থাকতে বলছো?
—সবাই একসাথে রেগে গেলে সংসার চলবে কেমন করে? ধৈর্য ধর আল্লাহ ভরসা!আনুপলাকে রাতে আমার ঘরে দিয়ে যাস।তুই ঠান্ডা মাথায় আবার একবার বউমার সাথে কথা বল!
উপল হতাশ কন্ঠ বলল,
—আর কোন কথাবার্তা বলে লাভ হবে না মা।ও আলোচনার উর্ধে চলে গেছে।ওর সাথে কথা বলা মানেই ঝগড়া হওয়া!
আনোয়ারা বেগম অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে ছেলেকে ঠান্ডা করলেন।দুদিন ধরে অনুর সাথে কথাবার্তা বন্ধ করে দিয়েছে উপল।অনুপলাকে দিনে ছবি আর আনোয়ারা বেগম সামলান,রাতে উপল।
দুদিন বাদে বিকেলে শুদ্ধ বাসায় ফিরলো।রাতে খাবার টেবিলে অনু এলো না।উপলও রাগে খেতে ডাকে নি ওকে।
শুদ্ধ যখন জিজ্ঞেস করলো,
—ভাবী খাবে না?
উপল থমথমে কন্ঠে জবাব দিলো,
—ওর ক্ষিদে নেই।
—ক্ষিদে না থাকলেও তো খেতে হবে। মেজর অপারেশন এর পর খাওয়া দাওয়া অনিয়ম করা তো ঠিক না।
—যার ব্যাপার সে না বুঝলে আমি কি করবো?
শুদ্ধ খাওয়া থামিয়ে দিলো।সন্দিগ্ধ কন্ঠে বলল,
—কি হয়েছে ভাইয়া?
—কিছু হয় নি!
উপল চুপচাপ খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।শুদ্ধর খটকা লাগছে!উপল এভাবে কেন কথা বলছে?
—কোন সমস্যা ভাইয়া?
—নারে!
উপল আধখাওয়া প্লেট রেখে উঠে গেলো।শুদ্ধ প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকালো।উনি কপাল চাপড়ে বললেন,
—সব আমার কপালের দোষ বাবা!
শুদ্ধ নিজের ঘরে সবে বই নিয়ে পড়তে বসছিলো এমন সময় উপল বাইরে থেকে নক করলো,
—আসবো?
শুদ্ধ হাতের বইটা রেখে বলল,
—এসো ভাইয়া।
উপল ভেতরে ঢুকে শুকনো মুখে খাটের ওপর বসলো।
এখন বাজে সাড়ে বারোটা।কোন বিশেষ কাজ ছাড়া উপল এত রাত অব্দি জেগে থাকে না।শুদ্ধ ভাইয়ের চেহারার দিকে তাকিয়ে আন্দাজ করে নিলো কিছু একটা হয়েছে।
—কফি খাবে ভাইয়া?
—কে বানাবে তুই?
—হুম!
—ঠিক আছে বানা।
শুদ্ধ কফি বানাতে কিচেনে ঢুকলো। ছবির ঘর থেকে ওর পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে।শব্দ করে ঢুলেঢুলে পড়ে ছবি।শুদ্ধ মনে মনে হাসলো।যাক সেদিনের ডোজ তাহলে কাজে দিয়েছে!
শুদ্ধ চট করে চুলায় গরম পানি বসিয়ে মগে কফির গুঁড়ো ঢেলে নিলো।পানি গরম হয়ে এলে মগে ঢেলে নিলো ব্যস!শেষ কফি বানানো।উপলের মগে অবশ্য হালকা দুধ চিনি দিলো।কফি নিয়ে বেরোতে যাবে এমন সময় দেখলো কিচেনের দরজায় ছবি দাঁড়িয়ে আছে।শুদ্ধর হাতে দুমগ কফি!
—আপনি এখনো ঘুমান নি?
—না।তুমি উঠে এসেছো কেন?
—কিচেন থেকে আওয়াজ শুনলাম তাই।
শুদ্ধর হাতে দুইটা মগ দেখে বলল,
—দুইমগ কেন?..আমার জন্য?
ছবি উৎসাহী দৃষ্টিতে চেয়ে আছে শুদ্ধর দিকে।শুদ্ধ মুচকি হাসলো।বলল,
—হ্যাঁ!ভাবলাম তুমি পড়ছো তাই!
—কিন্তু আমি তো চিনিছাড়া কফি খাই না।
—দুধ চিনি দেওয়া আছে।
ছবির খুশি হয়ে শুদ্ধর হাত থেকে কফির মগ নিয়ে বলল,
—থ্যাংক ইউ!
—পড়া শেষ?
—না!আরো অনেক পড়া বাকি।সমুদ্রের মত সিলেবাস!আমি ডুবে যাচ্ছি পড়তে পড়তে!এত পড়া আমি জীবনেও পড়ি নি
শুদ্ধ হাসলো।ছবি মুখ কালো করে বলল,
—হাসছেন যে?আপনার কি মনে হয় আমি মিথ্যে কথা বলছি?
—নাতো!
—তাহলে?
—তাহলে আর কি আমি বুঝতে পেরেছি আপনি প্রচুউউর পড়াশোনা করেন।তো এখন আমাকে বলুন চুলে তেল দেন নি কেন? চুল তো পাখির বাসা হয়ে আছে।
ছবি দুইসেকেন্ডের জন্য কোন কথা বলতে পারলো না।ফ্যালফ্যাল করে শুদ্ধর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।তারপর বিড়বিড় করে বলল,
—আপু অসুস্থ তাই!
—চুলে তেল দিতে আবার আপুকে লাগে? আপু এখন অসুস্থ!নিজের কাজ নিজে করবেন!ঠিক আছে?
ছবি বাধ্য ছাত্রীর মত ঘাড় বাঁকালো।
—এবার যাও!
.
.
চলবে