আকাশ এখন মেঘলা পর্ব-০৪

0
74

#আকাশ_এখন_মেঘলা
চতুর্থ খন্ড

৪||
-” আমান ভাই তোকে দেখা করতে বলেছে।”

কথাটা শুনে চমকে উঠে ঘাড় ফেরালো গহনা। দুলিকে নির্বিকার দেখাচ্ছে। যেন কথাটা বলা ওর কাজ ছিলো, সে কাজ করেছে। বাকিটা গহনার ব্যপার।
গহনা প্রথমটায় থতমত খেয়ে গেলেও পরমুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে চেহারায় নির্বিকারত্ব আনার চেষ্টা করলো। দুলির চেয়েও উদাসীন ভঙ্গিতে বললো, ‘ আমান ভাই কে ? ”

-” ফাঁপর নেস ? ‘ দুলির চেহারায় এবার স্পষ্ট বিরক্তি। ‘আমান ভাই কে তুই চিনোস না ? ভাব তো এমন করছিস যেন রোজ ওরকম চারপাঁচটা আমান মিকদাদ তোর আগে পিছে পিছে ঘুরে।”

” বুঝলাম না। তুই হঠাৎ এভাবে কথা বলছিস কেন ? আমান ভাই কে এটা জিজ্ঞেস করে কী আমি কোন মহা অপরাধ করে ফেললাম ! নাকি আমার উনাকে চিনতেই হবে ? ” অভিমানে কণ্ঠ রোধ হয়ে এলেও নিজের মধ্যে কোন দুর্বলতা প্রকাশ পেতে দিলো না গহনা। সত্যি বলতে, চট করে আমান নামটা মগজে ধরতে পারেনি।

বিশেষ করে বিগত একটি সপ্তাহে যখন সময়টা নির্বিঘ্নে কেটে গিয়েছিলো তখন গহনা ধরেই নিয়েছিলো যে সেদিনের অপ্রীতিকর ভ্রমনটা নিয়ে আর কোন কাহিনী রচিত হবেনা। আর হয়েছেও তেমনটাই। কেননা এর পরেও দুলির সাথে ওর যতবার দেখা হয়েছে, স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে কিন্তু গাজীপুর প্রসঙ্গ নিয়ে আর কথা ওঠেনি। দুজনেই বিষয়টাকে সযত্নে এড়িয়ে গেছে। এমনকি মার্কসিটের কপি জমা দেবার সময়ও দুলির সাথে কোন বাড়তি কথা হয়নি গহনার। তাই আজ হঠাৎ দুলির এমনতর কথায় সে অবাক না হয়ে পারেনি। এর মানে হলো দুলি ব্যপারটা অন্যভাবে নিয়েছে এবং এতোদিন মনে মনে সেটাকে পুষে রেখেছে। যদিও ওর রাগের কারণটা জানে না গহনা।

দুলি এতক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়েছে। হয়তো এভাবে মনের উষ্মাটুকু প্রকাশ করতে চায়নি। মুখে সামান্য হাসি টেনে বললো, ” আরে না, ফান করলাম। আমি ভেবেছি তোর মনে আছে। আমাদের মার্কসিটের ব্যবস্থা করে দিলেন যে ভাইয়াটা। জাতীয় বিশ্ব…!”

” ওহ্, আচ্ছা। মনে পড়েছে। ওনার সাথে দেখা করতে হবে কেন ? ”

” তা জানিনা। তবে উনি বললেন আমাদের নাকি কোন পেপারে সই করা বাকি। ”

” এ আবার নতুন কী কথা। মার্কসিট নিতে হলে পেপারে সই করতে হয় বলে তো কখনও শুনিনি।”

” উনি বলছেন কাগজটা আমরা আনঅফিসিয়ালি নিয়েছি তাই ডক্যুমেন্ট থাকতে হবে নতুবা এটার জের পরবর্তীতে তার উপর আসতে পারে।”

” তারমানে কী আমাদেরকে আবার গাজিপুর যেতে হবে ? “গহনা বিরক্ত হলো।

” না, গাজিপুর যেতে হবেনা। কাল বিকেলে আমান ওর মাকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসবে। আম্মু দাওয়াত করেছে। তুই চাইলে বাসায় এসে ব্যপারটা ক্লোজ করতে পারিস। আর নয়তো ওনার অফিসে গিয়ে…!”

” প্রথমটাই তো মনে হয় সহজ কিন্তু এরকম পারিবারিক সিম্পোজিয়ামে…!” গহনা ইতস্তত করলো খানিকক্ষণ। ” থাক, কষ্ট হলেও আমি নাহয় গাজিপুরেই যাই, তুই কী বলিস।” অনিশ্চয়তার সুর গহনার কথায়। দুলি দ্রুত বলে উঠলো।

” কী দরকার অত কষ্ট করার। আমাদের বাড়িতে কী তুই নতুন নাকি যে ঢং দেখাচ্ছিস ? বাড়িতেই আয়। ব্যাটা কী চায় দেখি।” বলতে গিয়ে চাপা ক্ষোভ ঝরে পড়লো দুলির গলায়। গহনা বিস্মিত চোখে দুলিকে দেখলো। ওর চাপা অস্বস্তি আর ছলছলে চোখ বলে দিচ্ছে সবকিছু ঠিক নেই। সমস্যাটা কী আসলে ?

গহনা ওর কাঁধে হাত রাখলো, ” কী হয়েছে রে ? কাল ওনারা আসছে, কোথায় তোর খুশি হবার কথা। তা নয়, কেমন রেগে রেগে কথা বলছিস। কোন সমস্যা ? ”

দুলি আর পারলো না। বন্ধুর উষ্ণ স্পর্শে গলে গেলো অভিমানের জমাটবাঁধা কঠিন বরফ। দুহাতে মুখ ঢেকে বলে ফুঁপিয়ে উঠলো সে। গহনা বিষয়টা বুঝতে না পেরে দুলিকে ছুঁয়ে বসে রইলো। ওকে শান্ত হবার সুযোগ দিলো। একটু পর দুলি নিজেই চোখ মুছে বলতে লাগলো, ” আসলে ভুলটা আমারই। আমার আর আমানের মাঝখানে আমিই তোকে এনেছি। সব দোষ আমার। ”

” আমি মাঝখানে এসেছি মানে ? আমি কখন তোদের মাঝখানে গেলাম? ” বিস্ময়ে পলক পড়ছেনা গহনার।

” তুই হয়তো যাসনি কিন্তু আমান তোকে টেনে এনেছে। সম্ভবত সে তোকে পছন্দ করেছে, আমাকে নয়। ” বলে টিস্যু চোখে চাপলো দুলি। গহনা হতবিহ্বল হয়ে বসে রইলো। প্রশ্ন করার সাহস হারিয়ে ফেলেছে সে। দুলি কান্নাভেজা কণ্ঠে বললো, ” আমি আমানকে না দেখেই বাতিলের লিস্টে ফেলেছিলাম। ওর পোস্ট প্রফেশন কোনটাই আমার কাছে ততটা প্রেজেন্টেবল মনে হয়নি। তারপর সেদিন সাবের ভাইয়া ওর ছবি দেখালো। পুরোপুরি না করতে পারিনি। আনঅফিশ্যালি দেখা করতে রাজি হয়েছিলাম। আমি নিশ্চিত ছিলাম সে আমাকে দেখামাত্রই পছন্দ করে ফেলবে। তাই আমি তোকে সাথে নিয়েছিলাম। একা অতটা পথ জার্ণি করতে সাহস পাচ্ছিলাম না তাই…। কিন্তু আমার করা এই ছোট্ট ভুলটাই যে আমার বিপরীতে চলে যাবে বুঝতে পারিনি। সাবের ভাইয়াও এটা নিয়ে বকেছে। ”

-” আমি তোর কথা এখনও বুঝতে পারছিনা দুলি। ধরে নিলাম তুই আমাকে সাথে নেয়াতে তার মনে একটা বাড়তি অপশন তৈরী হয়ে গেছে। কিন্তু তুই এটা কেমন করে ধরে নিলি যে এটা শোনামাত্রই আমি ওনার পছন্দসই হবার আনন্দে কী দারুণ কী আনন্দ বলে লাফিয়ে উঠবো ? মনে মনে অপেক্ষায় থাকবো তিনি কখন টস করবেন, দুলি না কালি…। তারপর এই আশায থাকবো যে, উনি নির্ঘাত আমাকে চয়েস করবেন আর তুই বাদ পড়ে যাবি। এই আনন্দে আমি আমার ঘুম হারাম করবো। বাহ্, আমার কোন চয়েস থাকতে নেই তাই তো ? উনি বড় অফিসার হলেই আমাকে বর্তে যেতে হবে ? ” গহনা এবার কিছুটা রেগে গেলো। দুলি কোন জবাব দিলোনা।

গহনা এবার কিছুটা অসহিষ্ণু বললো, ” আচ্ছা, এসব কথা কী উনি নিজে তোকে বলেছেন ? ”

-” না, তার মা বলেছে আমার মাকে।” দুলি দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাথা নাড়লো। “উনি সেদিন ফোন করেছিলেন। আম্মুর সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়েছে তার।”

গহনা বাকরুদ্ধ প্রায় কণ্ঠে বললো, ” আমার ব্যপারে কী বলেছেন জানতে পারি ? ”

-” জেনে কী করবি। শুধু এটুকু জেনে রাখ, আমান ভাইয়ের মা বিশেষ করে জানতে চেয়েছেন কাল সাবের ভাইয়ের অনুষ্ঠানে তুই থাকবি কিনা। তার নাকি তোর সাথে কি দরকার আছে।”

-” আর তোরা ধরে নিলি তিনি তার ছেলের জন্য আমাকে খুঁজছেন ? ব্যপারটা কেমন খাপছাড়া হয়ে গেলো না ? ”

” খাপছাড়া হবে কেন ? আমান ভাই নিশ্চয়ই তোর কথা তার মাকে বলেছে। নইলে উনি কেন সরাসরি তোর কথা জানতে চাইবেন ? ”

” উনি তোদের কাছে আমার ব্যপারে জানতে চাওয়ার তো একটাই মানে দেখি আমি। আর সেটা হলো তিনি তার অন্য কোন আত্মীয়ের জন্য আমাকে সিলেক্ট করার কথা ভাবছেন। কারণ পাত্র তোর সেই আমান ভাই হলে উনি মনে হয়না তোদের বলতেন, সরাসরি আমাকেই ফোন দিতেন। এমনটা কী হতে পারেনা ? বরং এমনটা হওয়াই তো যুক্তিযুক্ত নইলে তোর মাধ্যমে আমাকে তলব করার মানে কী ? মানে তো একটাই , তোর মাধ্যমে আমার সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা। তোর কী এটা একবারও মনে হয়নি ? ” গহনার কথায় থমকে গেলো দুলি।

” জানি না, আমি এভাবে ভাবিনি আসলে।”

-” ভাবা উচিত ছিলো। তো কাল উনি তোর বাসায় কেন আসছেন ? আবার আমাকেও ডাকছেন। তারমানে সই এর ব্যপারটা বাহানা। দেখা যাবে সাথে করে সেই আত্মীয়াকেও ধরে আনবেন। ” গহনা হালকা স্বরে বললো।

” না বাহানা না। আমি খোঁজ নিয়েছি। আরো যারা মার্কসিট তুলতে পেরেছে সবাই সই করেই নিয়েছে। আর কালকের আয়োজনটাও তাদের না, আমার আম্মার করা। সাবের ভাইয়ার এনগেজমেন্ট উপলক্ষে আমান ভাইয়ের আম্মাকে ডেকেছেন আম্মু। আম্মুর ইচ্ছে আছে কাল একই অনুষ্ঠানে আমারও এনগেজমেন্ট হয়ে যাক। এটা আগেভাগে বলবে না আম্মু। হুট করে আমানকে আংটি পরিয়ে দেবে। ”

” বাহ্, তাহলে তো খুবই ভালো। এতো সুন্দর পরিকল্পনার পরেও তুই এতো ভয় পাচ্ছিস কিসের জন্য বলবি ? ”

দুলি শব্দ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,” আমি ঠিক ভয় পাচ্ছিনা। তবে একেবারে স্বস্তিও পাচ্ছিনা। আমার একটা কথা রাখবি গহনা ? ” দুলির অনুরোধটা আর্তির মতো শোনালো। গহনা সেদিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মাথা ঝাঁকালো। মুচকিও হাসলো এবার।
” তোকে বলতে হবেনা। আমি কাল এবং আগামী কয়েক সপ্তাহ তোর বাড়িমুখো হচ্ছিনা, এমনকি গাজিপুর তো নয়ই। সই পরে করলেও চলবে। ”

” হম, আর ধর যদি তোকে সরাসরি ফোন দেয় আমান বা ইসমাত আন্টি ? ”

” দুলি আমার খুব বিরক্ত লাগছে। কিছুটা অপমানিতও বোধ করছি। তারা ফোন দিলেই কী ? আমি ধেই ধেই করে রাজি হয়ে যাবো ? আমার বড় দুই বোনের এখনও বিয়ে হয়নি। তাদের বিয়ের আগে আমার বিয়ের কথা বাড়ীতে কেউ ভাববে না। ঐদিকে তোর আমান ভাইয়ের বয়সও বসে নেই। তুই খামোকা এতো চিন্তা করছিস। ”

-” রাগ করিস না রে। লোকটাকে ভালোবেসে ফেলেছি। এতো এট্রাকটিভ পার্সোনালিটি…!”

-” কচু। ”

” মানে? ”

” মানে আবার কী ? যে লোক পাত্রীকে দেখতে গিয়ে তার বান্ধবীকে পছন্দ করে ফেলে আবার সেই কথা না লুকিয়ে ঐ পাত্রীর পরিবারকেই বলে বেড়ায়। সেই লোক তো তোরই উপযুক্ত না, আমার তো পরে। আমি মনে করি তোর নিজেরই একে রিজেক্ট করা উচিত। তাহলে যদি আকল ঠিকানায় আসে।”

” নাহ্ বাসায় সবাই মানসিকভাবে তৈরী। আম্মু আব্বু সাবের ভাই তো ফুল প্রিপারেশন নিয়ে রেখেছে। কালই এনগেজমেন্ট করিয়ে দেবে। সাবের ভাই তো কাজি ডাকার কথাও ভাবছে। ”

” কী সুন্দর ইভেন্ট।”

” হম, শুধু ইসমাত আন্টির ঐ প্রশ্নগুলোই অস্বস্তি দিচ্ছে নইলে বাকি সব ঠিক আছে। ”

” তোর টেনশনটা একদম বেকার দুলি। দেখবি এরা আকদ করার পরও আমার কথা জিজ্ঞেস করছে। নির্ঘাৎ আমাকে তাদের কোন আধাবুড়ো আত্মীয়ের গলায় ঝুলাবে তাই। আমি তো আমার জন্য এরচে ভালো আশাই করিনা। দোয়া করি তোর সব ভালোয় ভালোয় হয়ে যাক। ”

” তোকে থাকতে বলতে পারছিনা সেজন্য স্যরি গহনা।”

” বাট আই এ্যাম নট স্যরি। তোর আমান ভাইকে আমার একটুও পছন্দ হয়নি, বিশ্বাস কর।” বলে হাসতে হাসতে চলে এলো গহনা। বলতে পারলোনা গত কয়েকদিন ধরেই দুলির আমান ভাই ওকে ফোনে ট্রাই করছেন। শেষ পর্যন্ত গহনার তাকে ব্ল্যাকলিস্টেড করতে হয়েছে।

পরদিন গহনা কলেজে গেলোনা। এমনকি ফোনও বন্ধ রাখলো সারাদিন। সৌভাগ্যবশত এর তৃতীয় দিনের দিন গহনার বড়বোন রেহানার বিয়ের সমন্ধ স্থির হয়ে গেলো। গহনা পারিবারিকভাবে এতোটাই ব্যস্ত হয়ে পড়লো যে কোনদিকে মন দেবার সুযোগই পেলোনা। এর ঠিক দুই সপ্তাহ পরে কলেজে দুলির সাথে দেখা হলো। দুলি ওকে না দেখার ভান করে এড়িয়ে গেলো । গহনা নিজেও আর কিছু জানার মুডে নেই। এমনিতে দুলির কানে গলায় স্বর্ণের দুল আর চিকন চেইন ওর অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছে। কাজেই দুলির আচরণ ওর কাছে মোটেও অস্বাভাবিক মনে হয়নি। যে, হবু বর পাত্রী দেখতে এসে অন্যজনকে পছন্দ করে ফেলে তাকে কী সানন্দে ঐ বান্ধবীর সামনে নেয়া সম্ভব ? ভেতর থেকে একটা ভয় তো কাজ করেই। দুলিকে মনে মনে সমর্থন জানিয়ে গহনা নিজেও সরে গেলো এবার।

সে বছরই গহনার বাবা মারা গেলেন। গহনারা পুরোনো বাসা ছেড়ে দিয়ে নতুন বাসায় উঠে গেলো। ইচ্ছে করেই দুলিকে ঠিকানাটা জানালো না গহনা। বছর শেষে কোনরকমে মাস্টার্স পরীক্ষাটা দিয়েই একটা কিন্ডারগার্টেনে চাকরীতে ঢুকে যেতে হলো গহনাকে । পাশাপাশি একটা নাইট কলেজে ভর্তি হলো বিএড করার জন্য। এর প্রায় বছর তিনেকের মাথায় প্রাথমিক শিক্ষক পরীক্ষায় পাশ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে একটা সরকারী চাকরী পেয়ে গেলো গহনা।

দুঃখের বিষয় একটাই, গহনার প্রথম দফার পোস্টিংটাই হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম এর প্রত্যন্ত অঞ্চলে । শহরটা গহনার পছন্দের হলেও এলাকাটা একেবারে ভেতরে।

শেষপর্যন্ত বাসা থেকে এবার রাতারাতি বিয়ে দেবার পাঁয়তারা শুরু হলো। গহনার মনে এখন অন্য চিন্তা। কোনভাবে ঢাকায় বদলী হওয়া। তবে বদলীরও নিয়ম আছে। গহনাকে আগে চাকরীতে জয়েন করতে হবে তারপর বদলী।

চলবে।