#আপনিময়?তুমি [ An unexpected crazy love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 10……….
আনহা বার বার ওর কাছে ছুটে যায়। কিন্তু বার বার ধরা দিতে গিয়েও নিজেকে লুকিয়ে নেয় সে…. সে আনহার সাথে এক অন্যরকম লুকোচুরি খেলায় মেতেছে….. আর আনহা যেন একটা মরিচিকার পিছনে ছুটছে কিছুতেই তার নাগাল পাচ্ছে না………,
বর্তমান………
আনহা: ইহান…. ইহান….. আরে ওই Donkey….. আরে ওই গাধা কোথায় চলে গেলি…. [ শেষ মেষ ইহানের গলাটাই চেপে ধরে ]
এবার ইহানের ধ্যান ভাঙে…..অতীত থেকে বর্তমানে আসে……
ইহান: পাগল হয়ে গেছেন আপনি….এভাবে কেউ ধরে…. [ বেশ ঝাঝালো কন্ঠে ]
আনহা: ওই ছাগলের গোষ্ঠী. গরুর বংশধর… ??? কতক্ষন ধরে ডাকছি….. গাধার জাত….
ইহান: বলুন কি বলবেন…
আনহা: বলুন মানে তুই কি বাধ্য হয়ে শুনবি… ???
ইহান: আচ্ছা আমি যদি না শুনি তবে আপনি কি আমাকে ছাড়বেন….
আনহা: না……
ইহান: তাহলে আর কি বলে ফেলুন…
আনহা: আসলে আমি বলতে চেয়েছি??? বলতে চেয়েছি…. কি বলতে চেয়েছি… কি জানি বলতে চেয়েছি???
ইহান: মনে পরছে না তাইত…..
আনহা: আসলে…..
ইহান: মনে করুন…
কিছুক্ষন পর…..
আনহা: মনে পরছে….
ইহান: বলেন…. [ হাই তুলে ]
আনহা: কি জানি….
ইহান: মনে করুন আমি একটু আসছি….. [ বলে চলে গেল ]
আনহা: যাহ কি বলতে গেলাম তাই তো ভুলে গিচি থুরি গেছি……. কিন্তু বলতে কি চাইছিলাম…. ???
,
,
,
,
,
,,
তারপর প্রায় বিকেল গড়িয়ে যায়৷ একটু পর গোধুলি নামবে কিন্তু ইহানের আসার কোনো নাম নেই…… তখনি কলিং বেল বাজতে শুরু করে…. আনহা বেশ খুশি হয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খোলে। কিন্তু দরজা খুলতেই আনহার কলিজার পানি শুকিয়ে যায়….. কারন দরজার সামনে স্বয়ং দাঁড়িয়ে আছে…. মি. & মিসেস. আহমেদ ইহানের বাবা মা….. ছোট বেলা থেকেই এই মহিলাকে ভয় পায় আনহা। আর এখনো সেই…….
আনহা: আপনারা…..[ নিচু স্বরে ]
মা: এখন তোমার জন্য কি নিজের বাড়ি আসতে পারব না নাকি…..
আনহা: আসলে…..
মিসেস. আহমেদ: তোমার জন্য কি দরজার দাঁড়িয়ে থাকতে হবে? আর বাইরে থেকে কেউ আসলে ঘরে ঢুকতে বলতে হয়। এইটুকু ম্যানার কি নেই তোমার….. [ বেশ ঝাঝালো কন্ঠে ]
আনহা: ভিতরে আসুন…..
[ তারপর মি. & মিসেস আহমেদ ঘরে ঢুকে সোফায় বসেন….. আর আনহা গিয়ে ওনাদের নাস্তা আর পানি দেয়…….
মিসেস. আহমেদ: আমি ম্যানেজারের মুখে ইহানের বোকামির কথা শুনেছি….. ওর মত একটা ছেলে কিভাবে যে এরকম বোকার মত একটা কাজ করল তাই বুঝতে পারছি না…..
আনহা:……
এবার মিসেস আহমেদ আনহার দিকে তাকায়……
মিসেস. আহমেদ: ছেলেটাকে আর দোষ দিয়ে লাভ কি?? ছোটবেলা থেকেই তো এই মেয়েটা ওর মাথাটা খেয়েছ। আর বড় হয়ে কি জাদুটোনা করেছ যে নিজের থেকে ৫ বছরের বেশি একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে। সোসাইটিতে যখন সবটা জানা জানি হবে তখন আমাদের সন্মান কোথায় যাবে…..
বাবা: চেচামেচি না করে ঠান্ডা মাথায় দেখ ব্যাপার টা…….
মিসেস. আহমেদ: এই মেয়ে এদিকে এসো……
আনহা ওদের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়ায়।
মিসেস. আহমেদ: তোমার বিয়ে কেন ভেঙেছে???
আনহা:….. [ কি বলবে উওরটা আনহার নিজেরি অজানা…. ]
মিসেস. আহমেদ: কিহল…..
আনহা:……..
মিসেস. আহমেদ: শুনেছি তোমার নাকি বিয়ে হচ্ছিল না। দুবছর যাবত ট্রাই করার পর একটা বিয়ে ঠিল হয়েছে সেটাও বিয়ের দিন তোমাকে বিয়ে করবে না বলে পালিয়েছে। তোমার বাবা আমার ছেলেকে ইমোশনালি ব্লাকমেইল করে তোমার সাথে বিয়ে দিয়েছে আমার ছেলেটার…. বাবার আর একার দোষ কোথায় মেয়ে ও তো এর সাথে জড়িত….. তোমরা প্লান করে এসব করেছ…..
আনহা এবার আর নিজেকে সামলাতে পারল না মাথা নিচু করে অচিরেই কেদে দিল….
মিসেস. আহমেদ: এসব ন্যাকা কান্না করে আমার ছেলেটাকে ফাসিয়েছ….. আচ্ছা কি চাই তোমার আমার ছেলের থেকে….. কি চাই টাকা প্রর্পাটি কি চাই….?? কি হল আমার ছেলেটাকে মুক্তি দেবে….. যাকে কেউ বিয়ে করেনি সেই বোঝা আমার ছেলের কাধে চাপাতে লজ্জা করল না…..
আনহা:………
মিসেস. আহমেদ: যদি কেউ বিয়ে না করত তবে চিরকুমারী হয়ে থাকতে তাতেও লোক সমাজে কিছু সন্মান থাকত… নিজের চেয়ে ছোট একটা ছেলেকে বিয়ে করতে কি একটুও বিবেকে বাধল না……
আনহা দাড়িয়ে শুধু কেদেই যাচ্ছে.. ঠিকি তো বলেছে মিসেস. আহমেদ….. কিভাবে পারল ও ইহানকে বিয়ে করতে যতই ও বাধ্য হয়ে করুক অন্যায় তো ও করেছে…..
মিসেস আহমেদ: একদম ন্যাকা কান্না কাদবে না আমার সামনে…. যদি এতটাই ভালো হতে তাহলে ঠিকি বিয়ে হত। আর তোমার সাথে যার বিয়ে হয়েছে সে তোমাকে একা রেখে পালাত না।।।। হয়ত এমন কিছু জানতে পেরেছে যার কারনে কেউ তোমাকে বিয়ে করতে চাই নি…. আর এখন সেই পাপ আমার ছেলে ইহানের উপর দিয়ে কাটিয়ে দিতে চাইছ….
আনহা:……..
মিসেস আহমেদ: আচ্ছা ইহানকে ফাসানোর জন্যই কি এত সব কিছু করেছিলে নাকি…. না মানে বংশীয় পরিবারের ছেলে rich, established & handsome তাই আমার ছেলেকে হাতছাড়া করতে চাওনি তুমি আর তোমার পরিবার মিলে আমার ছেলেটার মাথাটা খেয়েছ…..
আনহা:…..
মিসেস আহমেদ: নাহলে তোমার মত একটা মেয়েকে আমার ছেলে কেন বিয়ে করতে যাবে….. যার না আছে রুপ না আছে গুন… আর বংশ মর্যাদার কথা নাহয় নাই বললাম। কোনো দিক দিয়ে তুমি আমার ছেলের যোগ্য নয়…. আর সমাজ তো মেনে নিবেই না….. এমন অনেক পরিবার আছে যারা ইহানের জন্য বিয়ের সমন্ধ করতে চায় যাদের নখের যোগ্য ও তুমি না……
আনহা:……….
মিসেস আহমেদ: এসব জানার পর কিভাবে তুমি ওর সাথে থাকতে চাও। তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে লজ্জায় সুইসাইড করত কিন্তু তুমি নির্লজ্জ বেহায়ার মত দাঁড়িয়ে আছো…….
আনহা আর সহ্য করতে পারল না। ও দৌড়ে রুমে গিয়ে বিছানায় উপর পরে কাদত লাগল….
আনহা: কেন করলি তুই এসব ইহান…..??? আমি তো তোকে বিয়ে করতে চাইনি। এমনকি ছেড়ে যেতে চেয়েছি তোকে কিন্তু তুই তা হতে দিলি না….. কিন্তু এতে আমার দোষটা কোথায়….
কিছুক্ষন পর……
আনহা: নাহহহ আমি আর থাকব না এখনে…. [ তারপর সব কিছু গুছিয়ে নেয় আনহা। তারপর আনহার চোখ যায় নিজের ব্যাগের আদ্রের ছবির দিকে…. ] আমার লাইফটা তো এমন হওয়ার কথা ছিল না আদ্র। তবে কেন সেদিন চলে গিয়েছিলে শুধু নিজের কথা ভেবে…. একটা বার ও আমাকে বলার প্রয়োজন পরেনি তোমার…… [ বলেই আবার কেদে দেয় ]
.
.
.
.
.
.
.
.
.
প্রায় সন্ধ্যার পর রাতের দিকে ইহান বাড়ি ফেরে….. বাড়ি ফিরে নিজের বাবা মাকে দেখে বেশ খানিকটা অবাক হয় ইহান। কারন ওনাদের এখন আসার কথা না। আর ওনাদের মুড আর বাড়ির অবস্থা দেখে বুঝতে বাকি থাকে না কি হতে পারে…..
ওনারা দুজনেই সোফায় বসে আছে…. ইহান গিয়ে ওনাদের পাশে বসে…….
বাবা: তোমার থেকে আমরা এরকম কিছু আশা করে নি অয়ন…. আমরা সব সময় তোমার চাওয়া পাওয়ার মুল্য দিয়েছি যখন যা চেয়েছ তাই দিয়েছি। তোমার যদি নিজের পছন্দে বিয়ে করার ছিলে তাতে তোমার কি মনে হয় আমরা না করতাম……..
ইহান:…… [ দুহাতের উপর থুতনি দিয়ে কথা শুনছে ]
বাবা: তোমার পছন্দে আমাদের পছন্দ। তুমি যেমন মেয়ে আনতে তাতেই আমরা খুশি থাকতাম কিন্তু তাই বলে তুমি নিজের থেকে বয়সে বড় একটা মেয়েকে বিয়ে করবে। তাও আবার ৫ বছরের বড় কোনো মেয়েকে…..
ইহান:…….
মা: ছোট বেলা থেকেই তুমি ম্যাচুরিটির সাথে সব কাছ করেছ। এমনকি তোমার কোনো কাজে আমরা ভুল ধরতে পারিনি। সবসময় ঠিক ভুল বিচার করে কাজ করেছ…. আর সেই তুমি কিভাবে এরকম একটা কাজ করলে……
ইহান: আনহাকে বিয়ে করা আপনাদের কাছে ভুল মনে হতে পারে কিন্তু আমার কাছে সেটা ভুল নয়। আমি জেনে বুঝেই ওনাকে বিয়ে করেছি…..
মা: ওই মেয়ে তোমাকে ইমোশনালি ফোর্স করেছে তাইনা….
ইহান: ভুল… ওনি আমাকে বিয়ে করতে চায়নি। বরং আমি নিজেই ওনার বাবার পায়ের কাছে পরেছিলাম ওনার মেয়ের হাত চাইতে৷ আর আমার দেওয়া চাপে আর ওর বাবার সন্মানের দিকে তাকিয়ে আনহা বিয়েতে সম্মতি দিয়েছে এখানে আনহার কি দোষ…..
মা: তুমি কি বলতে চাইছো আনহা নিরাপরাধ তাহলে যে ছেলে ওকে বিয়ে করতে এসেছিল সে কেন বিয়ে করেনি???
ইহান: সে অন্য কাউকে পছন্দ করত তাই সে আনহাকে না বিয়ে করে অন্য কারো সাথে বিয়ে করেছে এখানে আনহার কি দোষ……
মা: তুমি বলতে চাইছো আনহা নিদোর্ষ???
ইহান: আমি বলছি না ও নির্দোষ…..
মা: কিভাবে সংসার করবে নিজের চেয়ে বয়সে বড় কোনো মেয়ের সাথে… ভেবে দেখেছ….
ইহান: আমি যা করি ভেবে চিনতে করি। আর এমনটা কোথায় বলা হয়েছে যে নিজের চেয়ে বড় কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে নেই।
মা: কিন্তু সমাজে….
ইহান: যদি সমাজের কথা বলেন তো আমি পুরো সমাজের সামনে আনহাকে স্ত্রীর অধিকার দিয়েছি…… আর এইটা সমাজ মেনে নিয়েছে……
মা: সিরিয়াসলি বলছ তো আনহার সাথে সংসার করতে পারবে….
ইহান: আপনি আপনার ছেলেকে চেনেন… আমি যা করি ভেবে চিনতে করি। আর ওনাকে বিয়েটা আমি আবেগে নয় ভেবে চিনতে করেছি।
মা: মেনে নিলাম… কিন্তু আমি বুঝলাম না তুমি অন্য ভাবেও ওকে সাহায্য করতে পারতে বিয়ে করতে কেন গেলে???
ইহান:……… [ কিছুক্ষন নিরব থাকে ]
মা: কিহল কিছু বলো…. এভাবে সাহায্য করার মানে কি???
ইহান: আমি ওনাকে সাহায্য করার জন্য বিয়ে করিনি। আর নাই বা দয়া বা করুনা করতে….
মা: তাহলে……
ইহান: ভালোবাসি তাই বিয়েটা করেছি…. [ ডিরেক্টলি বলে ইহান ]
ছেলের মুখের এমন কথা শুনে মি.&মিসেস. আহমেদ একে অপরের মুখের দিকে তাকায়…. আর ইহান মাথা নিচু করে বলে….
ইহান: একটু বেমানান হলেও এইটাই সত্যি আমি আনহাকে ভালোবেসে বিয়েটা করেছি। আর বিয়েতে আনহার কোনো দোষ নেই। আমি একরকম ফোর্স করি ওনাকে। নিজের দোষ ঢাকতে আমি আরেকজনের উপর তা চাপাতে পারি না। আপনাদের যদি ওনাকে নিয়ে সমস্যা হয় তবে আমি ওনাকে নিয়ে চলে যাব….. এখন আসি…..
মা আর বাবা কিছুক্ষন ভেবে নেয়….
মা: লাইফ তোমার কোনোদিন তোমায় কিছুর জন্য বাধা দেয়নি। যাতে তুমি সুখি তাতেই আমরা। এমনিতে আমাদের থাকা হয় না একসাথে তাই কোথাও যাওয়ার দরকার নেই…. তুমি যদি ওর সাথে ভালো থাক তাতেই হবে….
ইহান: ধন্যবাদ…… [ চলে আসে ]
.
.
.
.
.
.
..
.
ইহান ওর বাবা-মায়ের সাথ কথা বলে দ্রুত রুমে আসে। কারন ও খুব ভালো করে আনহার খবর। ও কারো কথা সহ্য করতে পারে না।
ইহান রুমে ঢুকতেই বড় রকমের শকড খায়। কারন আনহা মেঝেতে বসে পাগলের মত কাদছে আর নিজের চুল টেনে টেনে ছিড়ছে…… আনহার কোনো হুশ নেই। এটা দেখে ইহান দ্রুত গিয়ে বসা অবস্থায় আনহাকে বুকে জড়িয়ে নেয়। খুব শক্ত করে ধরে নিজের বাহু বন্ধনে আবদ্ধ করে….
ইহান: আনহা প্লিজ শান্ত হন….
আনহা ইচ্ছেমতো ইহানের বুকে কিল ঘুশি মারতে থাকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য কিন্তু ইহান ওকে ছাড়ার বদলে আরো শক্ত করে আকড়ে ধরে…..
আনহা: কেন করলি তুই এটা??? কেন বিয়ে করলি আমাকে… আমি আর কত সহ্য করব?? কে তোকে আমার উপর করুনা করতে বলেছিল???? [ অঝোরে কান্না করে ]
ইহান:….. [ ইহান চুপচাপ ভাবে দাঁড়িয়ে আনহাকে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে আছে ]
আনহা: আমি কি তোকে বিয়ে করতে বলেছিলাম। বলেছিলাম নিজের জীবন টা নষ্ট করতে আমি তো তোকে বারন করেছিলাম কিন্তু তুই তো বাবাকে বলে বিয়েটা করেছিস। আর আমি বিয়ে করতে চাইনি বাধ্য হয়েই বিয়েটা করেছি…. এতে আমার দোষ কই……..
ইহান: আপনার কোনো দোষ নেই আনহা। আপনি নিরাপরাধ….[ যা দোষ সব আমি করেছি। আপনাকে ভালোবেসে আর আপনাকে জোর করে বিয়ে করে। তাহলে আপনি কেন নিজেকে দোষী ভাববেন…. ]
তারপর আনহা ইহানকে ছাড়িয়ে নাক মুছতে মুছতে বলে…..
আনহা: আমি চলে যাব…. এমনি ছয় মাস পর ডির্বোস হবে আমাদের তারচেয়ে বরং এখনি আমি চলে যাই…. আর যাই হোক আমাকে অপমান সহ্য করতে হবে না…..
আনহার মুখে এমন কথা শুনে ইহান মুহূর্তে চুপসে যায়…. ও আবার আনহাকে বুকে টেনে নেয়…..
ইহান: আপনি কোনো অন্যায় করেনি আনহা। তাই আপনি কোথাও যাবেন না। আমি সব ঠিক করে দেব। সবটা ঠিক করে দেব। আমাকে শুধু কিছুটা সময় দিন…..[ আনহাকে শক্ত করে বুকে ধরে নিজেও কান্না করে দেয় ]
ইহানের কথা শুনে আনহা ভেজা চোখে ওর দিকে তাকায়…..
ইহান: হুমম আনহা কোথাও যেতে হবে না আপনাকে আমি সব ঠিক করে দেব। [ আনহার চোখ মুছিয়ে দিয়ে খাটে শুইয়ে আনহার মাথাটা নিজের কোলে রাখে তারপর ওর মাথায় বিলি কেটে দেয়৷ আর আনহা ইহানের পা জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে ]
..
.
.
.
.
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে আনহা দেখে আনহা ইহানকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। আর ইহান ওকে বুকে জড়িয়ে আছে…. এইটা দেখে আনহা ইহানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতেই ইহান ঘুমের ঘোরে আনহাকে আবার জড়িয়ে ধরে….. আনহা ওকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেই ইহানের ঘুম ভেঙে যায়….
ইহান: কি হলো তোমার ঘুমের মধ্যেও লাফালাফি করতে হবে….. [ আনহাকে জড়িয়ে ধরে ]
আনহা: এই তুই গাজা টাজা খেয়েছিস??
এইটা শুনে ইহানের ঘুম ভাঙে… মানে ও এতক্ষন স্বপ্ন দেখছিল…..
ইহান: [ হায়রে আমারে ঘুমের মধ্যেও একটু স্বামী হয়ে তুমি ডাকতে দেয় না ??? ]
আনহা: ওই তোর হইছে কি মুখটা এমন করছোস কেন???
ইহান: সেইটা আপনি বুঝলে সমস্যাই মিটে যেত….
আনহা: মানে…???
ইহান: কিছুনা…. ???
আনহা: এই পোলার মাথা পুরাই গেছে….
,
,
,
,
,
,
ইহান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে….. আনহা সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছে….
ইহান: এসব কি???
আনহা: আমি বাড়ি যাব…
কিছুক্ষন ভেবে…..
ইহান: আনহা রেডি হয়ে নিন….
আনহা: কেন???
ইহান: আপনাকে আজ আপনার বাড়িতে নিয়ে যাব…..
আনহা: সত্যি…. ???
ইহান: হুমম……. [ আপনাকে কিছুদিনের জন্য নিজের স্পেস দেওয়া দরকার ]
তারপর ওরা রেডি হয়ে আনহার বাড়ি যায়। রাস্তায় আনহা ইহানকে গাড়ি থামাতে বলে….
আনহা: গাড়ি থামা…..
ইহান: কি হলো আপনার….
আনহা কিছু না বলে নেমে যায়…..
ইহান: কিহল….
আনহা: আইসক্রিম খাব…
ইহান: একদম না।???
আনহা: তুই না করার কে রে???
ইহান: দেখুন এই শীতের মধ্যে যদি আপনি আইসক্রিম খান কি হবে ভাবতে পারছেন…..
আনহা: যা হবার হবে আমি খাবই….
ইহান: কিন্তু……৷
আনহা ইহানের কোনো কথা না শুনে গুটিকয়েক আইসক্রিম খেলো ইহানের উপর রাগ করে। ইহান আর কিছু বলল না…..
ইহান: [ এই আইসক্রিম খাওয়া না আপনার কাল হয়ে দাঁড়ায়।…… মাথা নেড়ে ]
তারপর ওরা বাড়িতে গেল। বাড়িতে গিয়ে আনহা তো খুশিতে গদগদ…. ছাগলের ছানার মত ছুটোছুটি করতে থাকে। আর তা দেখে ইহান হাসে……
ইহান: এখন আমি আসি। অফিসে কিছু কাজ আছে….. ফিরতে রাত হবে…..
আনহা: না ফিরলেও সমস্যা নাই…..
এইটা শুনে ইহান কিছু বলল না। শুধু আনহার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়…..
আনহা: আমি বলতে চাইছি তুই আর এখানে এসে কি করবি। কিছুদিন পর তো আমি এমনিতেই এইখানে থাকব…..
ইহান: হমম… [ একটা শুকনো হাশি দিয়ে ]
আনহা: তোর আর আসতে হবে না। তুই বাসায় চলে যাস। আমি বাবাকে বলব তোর কাজ আছে…. আর এমনিতেও আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডির্বোসের জন্য আপ্লিকেশন করে দিব। তোর কষ্ট করতে হবে না।
ইহান:……..
আনহা: কিরে তুই শুনছিস….
ইহান: আপনি এখানে ১ দিনের জন্য আছেন আনহা কাল আপনি আমার সাথে ফিরছেন। আর ডির্বোস আপনাকে আমি আমার বাড়ি থেকেই দেব……. এখন আসি…. আর হ্যা একটু গরম পানি খেয়ে নিন নাহলে গলা বসে ঠান্ডা লেগে যাবে……. [ চলে আসে ]
আনহা: ইহান….. [ কিন্তু চলে গেল আনহার কথা শোনার আর শক্তি রইল না ইহানের মনে…. ]
,
,
,,,
,
,
,
,
,
খুব দ্রুত ড্রাইভ করছে ইহান… আনহার কথা ইহানের কানে না বুকে গিয়ে বিধেছে…..বুকের ভিতর রক্ত ক্ষরন হচ্ছে….. ইহানের চোখের কোন দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে। এই প্রথম ইহান কাদছে নিজের অজান্তেই…..
ইহান: আপনি কি কোনদিন আমাকে বুঝবেন না আনহা। আমি সবার বিরুদ্ধে গিয়ে আপনাকে নিজের করে নিতে চেয়েছি কিন্তু আপনি কি করছেন।। আপনি কি কোনোদিন নিজের হাসবেন্ড এর জায়গা আমাকে দিতে পারবেন না।
,
,
,
,
,,
,
,
,
,
,
,,
রাতে আর ইহান বাড়ি ফেরে না। আনহাও ইহানের মোবাইলে কল দেয় না। কারন ইহান ওর কথায় কষ্ট পেয়েছে বুঝতে পেরেছে…..
,
,
,সকালে ইহানের ঘুম ভাঙে.. ও নিজের গাড়িতে শুয়ে ছিল…… ঘুম ভাঙে রিংটোনে… মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে আনহা কল দিয়েছে। মুহূর্তে একটা হাসির রেখা ফোটে….. কল ধরে….
ইহান: হ্যালো……
আনহা: হ্যাচ্চো…….. ????? [ বিশাল এক হাচি ] আমার…. ??? অনেক???
ইহান: বুঝতে পেরেছি…. আগেই বলেছি এত আইসক্রিম খাবেন না…. কিন্তু আপনি…
আনহা: এখন কি করব তাই বল….???
ইহান: আমার ব্যাগে একটা শিশি আছে ওইখান থেকে এক চামচ ওষুধ খাবেন……আর হ্যা বিকেলে দিকে নিতে আসব… আর হ্যা……
আনহা: আচ্ছা……???
ইহান: আরে শুনুন শুধু এক চামচ নাইলে…. [ টুট টুট ] যা কেটে দিল………
,
,
,
,
,
,
,
,
আনহার যদিও যাওয়ার ইচ্ছে নেই। কিন্তু বাবার কথা ভেবে যেতে হবে। সারাদিন আনহার সাথে ইহানের কথা হয় না। ….. বিকেলের দিকে আনহার মোবাইলে একটা কল আসে। আনহা বেশ খুশি হয়েই মোবাইলের কাছে যায়। গিয়ে দেখে আননোন নাম্বার….. মোবাইলে কলটা ধরে….
আনহা: হ্যালো…….
ওইপাশে: কেমন আছো অর্নি…….
ওইপাশে থাকা লোকটার কথা শুনে আনহার বুকের ভিতর মোচর দিয়ে উঠে। এই কন্ঠোটা আনহার খুব পরিচিত…… মুহুর্তে আনহার দুনিয়া উলট পালট হয়ে যায়। কন্ঠোটা ভেঙে আসে কান্নায়…. ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করে দেয় আনহা। নিজের মুখে অস্পষ্ট ভাবে বলে উঠে….
আনহা: আদ্র………….. [ কান্না জড়িত কন্ঠে ]
,