আবার প্রেম হোক পর্ব-৮৭ এবং শেষ পর্ব

0
945

#আবার_প্রেম_হোক (১ম খন্ডের সমাপ্তি)
#নুসরাত_জাহান_মিম

অন্তিম পাতা~
‘বাংলাদেশের সনামধন্য কার্ডিয়াক সার্জন রুহায়ের প্রণয়কে শহীদুল্লাহ হলের পাশ থেকে সাবেক মেয়র অধিরাজ মোহাম্মদ শেখসহ আরও পাঁচজনের নির্ম!ম খু*নের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে’ সমস্ত খবরের চ্যানেলে একই শিরোনামে সাংবাদিকসহ নিউজ রিপোর্টারদের একই বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।বিক্ষুব্ধ হয়েছে ছাত্রসমাজ।এরকম ডাক্তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার রাখেনা বলেও দাবি অনেকের।তাকে যখন গ্রেফতার করা হয় সময়টা ছিলো ভোর ছয়টা।সবে আলো ফুটতে শুরু করেছিলো।এমতাবস্থায়ই হাত-পা সহ সমস্ত শরীরেই র*ক্তের ছড়াছড়ির দেখা মেলে প্রণয়ের গা জুড়ে।হাতে তার বিশাল বড় চাপাতিসহ আশেপাশে আরও অনেক ধা!রালো সরঞ্জামাদি,যেগুলো দিয়ে অনায়াসে মানুষ জ*বাই দেওয়াও কোনো বড় বিষয় নয়।পরণের শুভ্ররঙা এপ্রোণটা র*ক্তে রঞ্জিত হয়ে ছিলো।সেইসাথে র*ক্তাক্ত তার নিজের বাহুসহ বুকের কাছটায়ও।এপ্রোণের বাহু এবং বুকের কাছে শার্টটাও ছিড়ে গিয়েছে।ছিড়ে উন্মুক্ত বুকের কিছু অংশ হতে র*ক্তও গড়াচ্ছে।তবে সেদিকে তার তোয়াক্কা নেই।সে কেবল সামনে তাকিয়ে হাসছে।চোখেমুখে নেই কোনো অনুতাপের ছোয়া।তার বিড়ালাক্ষীজোড়া যে নিদারুন তৃপ্ত বোঝাই যাচ্ছে।গাল কে*টে সেখানে র*ক্তসমূহ শুকিয়ে গিয়েছে।ঠোটের কাছটায়ও কে!টে গিয়ে রক্ত জমাট বাধা।রেশম-কোমল কালচে চুলসমূহ উষ্কখুষ্কভাবে অযত্নে পড়ে আছে কপাল জুড়ে।সেই চুলের একপাশেও র*ক্ত জমে চুল চটচটে হয়ে আছে শুকিয়ে।আকস্মিক পুলিশদের সাথে হাটতে হাটতেই এক সাংবাদিকের প্রশ্ন,

“এতগুলো খু*ন করতে আপনার বিন্দুমাত্র হাত কাপলো না ডক্টর প্রণয়?”

হাটার গতি কমায় প্রণয়।বাকা চোখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সাংবাদিকের পানে দিতেই তার র*ক্তিম চোখের দিকে তাকিয়ে সাংবাদিক ঢোক গিলে।আর গম্ভীরকন্ঠে প্রণয় বলে,

“মোটেও কাপেনি,বরং বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলাম নরপিচাশদের র*ক্ত দিয়ে গোসল করে”

আরেক সাংবাদিকের প্রশ্ন,

“কী এমন করেছিলো তারা?যার জন্য এভাবে খু*ন করেছেন?এতটা নি!র্মম এতটা নিকৃষ্টভাবে?কি বিভ!ৎসকর সেই দৃশ্য!লা*শগুলোর দিকে তাকানো পর্যন্ত যাচ্ছেনা।কেউ কাউকে এভাবেও খু*ন করতে পারে?কোনো কারণ ছাড়াই?তাও আবার সাবেক মেয়র?বর্তমান মেয়রের বাবা?সেইসঙ্গে আপনারই মেডিকেলের ডাক্তার?”

“এর চেয়েও নিকৃ*ষ্টতম শাস্তি তাদের জন্য বিধাতা রেখেছেন বলেই আমি বিশ্বাস করি।তবে তা তারা পাবে,অবশ্যই পাবে এবং সেটা হবে পরকালে।কিন্তু আমার আফসোসের জায়গা কেবল একটাই মেইন কালপ্রিটকে নিজ হাতে শাস্তি দেবার সৌভাগ্য আমার জুটলোনা।এবং এও বিশ্বাস করি বিধাতা ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না।সেও তার নিকৃষ্টতম শাস্তিই পাবে।যদি সুযোগ পেতাম তার মৃ*ত্যুটা হতো অতি হৃদয় বিদারক এবং কলিজা চে!ড়ার ন্যায়।যা দিতাম স্বয়ং আমি।আপাতত আর কোনো কথা শুনতে অথবা বলতে চাচ্ছিনা।ডিসমিস অ্যান্ড লেট মি গো উইথ দেম”

প্রত্যেকটা কথা বলার সময় কাটা ঠোট বেয়ে র*ক্ত গড়াচ্ছিলো প্রণয়ের।যার দরুন ভেতরের দাঁতসহ মাড়ি এবং জিহ্বা র*ক্তলাল বর্ণ ধারণ করে।ঠোটের দুইপাশ দিয়ে তার র*ক্ত গড়ায়।কি ভয়ংকর!কি বিধ্বস্ত সেই শুভ্ররঙা ফর্সা মুখশ্রীখানা!অতঃপর কথা শেষ করে হাতকড়া পরহিত দুই হাত সামনে রেখে বেশ স্বাভাবিক এবং গুরুগম্ভীর ভঙ্গিতে হেটে চলে প্রণয় ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার’ এর দিকে।

দুইদিন ধরে প্রণয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়েছিলো চাঁদ।অস্থির ভঙ্গিতে বারংবার প্রণয়ের নাম ধরে দুই রাতই ঘুমাতে গিয়ে চেচিয়ে উঠেছে।মাত্রাতিরিক্ত চিন্তার দরুন কয়েকবারই জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েছে সে।সেইসঙ্গে কোনোকিছু খেতে না পেরে র*ক্তবমিও করেছে বারকয়েক।বর্তমানে সে কপালে হাত রেখে শুয়েছিলো নিজের আর প্রণয়ের রুমে।অরণের সাথে রেখে এসেছিলো ফায়ানকে।অরণের খোঁজ নেয়া প্রয়োজন।ছেলেটার কি জ্ঞান ফিরলো?সে তো প্রণয়ের চিন্তায় চিন্তিত হয়ে নিজেকেই ভুলে বসেছে।তবে সবকিছুর পূর্বে বেশ কয়েকদিন ধরেই সে চিন্তা করছিলো কিছু জিনিসের গরমিল।অতঃপর শোয়া থেকে উঠে ওয়াশরুমের দিকে এগোয় সে।এবং মিনিট দশেক বাদে বেরও হয় বেশ উৎফুল্লতার সহিত।দ্রুত গতিতে সিড়ি ভেঙে নিচে নেমে আসে হলরুমের দিকে।এসে সকলকেই হলরুমের দেয়ালে টানানো বড়সড় মনিটরে কিয়ৎক্ষণ পূর্বের প্রণয়ের দেয়া স্টেটমেন্ট দেখে ধপ করেই হাত থেকে তার প্রেগন্যান্সি কীটটা ফ্লোরে পড়ে যায়।হাটুগেরে বসে পড়ে নিচে।টুপ করেই গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে বারিধারা।ঠোট কামড়ে অশ্রুবর্ষণ করতে করতেই ফের নজরে আসে লাল হয়ে আসা দুই দাগের প্রেগন্যান্সি কীট।কীটটাকে হাতে তুলে গালে লেগে থাকা পানিসমূহ মুছে উন্মাদের ন্যায় দৌড়ে চলে সদর দরজার পানে।তাকে আটকাবার প্রয়াস চালায় অনেকেই তবে কেউই আটকাতে পারেনা।যেনো অশরীরীর শক্তি এসে ভর করেছে সমস্ত শরীর জুড়ে।এক ঝটকায় সকলকে দূরে সরিয়ে ধ!স্তাধ!স্তি করে ক্ষীপ্র গতিতে ছুটে চলে সে বাড়ির বাইরে।চশমাখানাও খসে পড়ে মাটিতে।যা ভেঙে কাচদু’টো কয়েক টুকরায় পরিণত হয়।যার উপর দিয়েই চাঁদ হেটে চলে।র*ক্তাক্ত হয় তার পা,সেই র*ক্তাক্ত পা নিয়েই দৌড়ে চলে সে তার প্রাণের প্রিয় অর্ধাঙ্গ,প্রিয় সেই মানবের নিকট।হৃদয় চি!ড়ে যাচ্ছে।অশ্রুরা বাঁধ মানছেনা।তারা গড়িয়ে চলছে কোমল সেই কপোল বেয়ে।পিছু নেয় উজানসহ প্রণয়ের ভাইবোনেরাও।উদ্দেশ্য চাঁদকে বিপদ থেকে রক্ষা করা।

মাঝরাস্তায় এসে সকলকিছু ঝাপসা দেখতে আরম্ভ করে চাঁদ।তবুও সে দৌড়াচ্ছে।প্রাণপনে দৌড়াচ্ছে।মনিটরে দেখা র*ক্তে রঞ্জিত বিধ্বস্ত প্রণয় তার সত্ত্বা নাড়িয়ে দিয়েছে,কলিজা উঠেছে মুচড়ে।মস্তিষ্ক হয়েছে চিন্তাশূন্য।চিন্তাশক্তি লোপ পেয়েছে চাঁদের।তবুও সে দৌড়াচ্ছে এবং!দৌড়াচ্ছে সেই র*ক্তাক্ত পা নিয়ে।অবশেষে আর না পেরে শরীরের সমস্ত শক্তি খুইয়ে এক সময়ে লুটিয়ে পড়ে রাস্তায়।চাঁদকে পড়ে যেতে দেখে দূর থেকে আসতে থাকা প্রণয়ের ভাইবোনেরা দৌড়ে আসে তার নিকট।এবং রায়হান চাঁদকে ধরতে নিলেই রুবা চাঁদের হাতে শক্ত করে ধরে রাখা প্রেগন্যান্সি কীট দেখে গম্ভীর কন্ঠে বলে,

“ভাই ভাবিকে হাসপাতালে নিয়ে চলো।অবস্থা বেশ খারাপ”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
দুই মাস এগারো দিনের অন্তঃসত্ত্বা চাঁদ।প্রণয়ের অংশ বেড়ে উঠছে তার গর্ভে।কথাটা জানামাত্র কেমন ভাবশূন্য হয়ে পড়েছে সে।এক ফোটা অশ্রু গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়তেই সাথে সাথে তা মুছে ফেলে পাশে বসে থাকা তার ননদদের উদ্দেশ্যে বেশ করুন কন্ঠে বলে,

“এক প্রহর আনন্দে কাটলে এক ঋতু কেটে যায় বিষন্নতায়,বাক্যটা নিশ্চয়ই আমার জন্যই বানানো হয়েছে তাইনা রুবা?”

চাঁদের আক্ষেপ শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুবা বলে,

“এই অবস্থায় এত টেনশন নেওয়া ঠিক হবেনা ভাবি।বাবুর উপরও প্রেশার যাবে”

মলিন হেসে চাঁদ বলে,

“আমার বাবুটা তার বাবার চেহারাটুকুও কি দেখতে পারবেনা রিদি?”

বলেই পেটে আলতো করে হাত রাখে চাঁদ।রিদির কাছে কোনো জবাব নেই।সে দাঁত দ্বারা ঠোট কামড়ে অশ্রু বিসর্জন দিয়ে উঠে পড়ে সেখান হতে।আর শিফা চাঁদের কাছে এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে ভরাট কন্ঠে বলে,

“ভাগ্যের উপর কোনোকিছু নেই ভাবি।কিন্তু প্রণয় ভাইয়া হঠাৎ এমন কাজ কেনো করলো কিছুই মাথায় আসছেনা।ভাইয়াকে ছাড়াবো কী করে?আদোতে ভাইয়াকে ছাড়ানো যাবেও?ছয় খু*নের শাস্তি আদালত…..”

শিফাকে থামিয়ে ভড়কে গিয়ে রুবা বলে,

“শাট আপ শিফা।কোথায় কী বলা লাগে মাথা থেকে বের হয়ে গেছে?”

বলেই চাঁদের পানে চেয়ে আবারও বলে,

“চিন্তা করোও না ভাবি”

হঠাৎ করেই বেশ উত্তেজিত হয়ে চাঁদ বলে,

“কী করে চিন্তা করবোনা রুবা?”

অতঃপর অস্থির ভঙ্গিতে বলে,

“আমার…..আমার প্রণয়কে ওরা ছাড়বেনা রুবা।আমাকে…..আমাকে প্লিজ প্রণয়ের কাছে নিয়ে চলো।আমি আমার প্রণয়কে কিচ্ছু হতে দেবোনা।তাড়াতাড়ি চলো”

বলেই স্যালাইন দিতে থাকা ক্যানোলা টান দিয়ে খুলতেই হাত থেকে গলগলিয়ে র*ক্ত ঝড়তে আরম্ভ করে।সঙ্গে সঙ্গে রুবা চাঁদের হাত চেপে ধরে রিদি আর শিফাকে ডেকে চাঁদকে সামলাতে ব্যস্ত হয়।কিন্তু কিছুতেই কিছু তারা করতে পারছেনা।চাঁদ নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে,

“কয়টা বাজে দেখোনা?বিকাল হয়ে গেছে।না জানি আমার প্রণয়ের সাথে ওরা কী করছে।প্লিজ আমাকে যেতে দাও।ছাড়ো তোমরা আমায়।প্লিজ রুবা!আমাকে ছাড়ো”

ঠিক তখনই কেবিনে প্রবেশ করে মির।মিরকে দেখে ফের উত্তেজিত হয়ে চাঁদ বলে,

“মির ভাইয়া?এই মির ভাইয়া?আমাকে প্লিজ প্রণয়ের কাছে নিয়ে চলো।দেখোনা প্রণয় আর আমার ছোট্ট একটা বাবু হবে।তাকে খুশির খবর টা দেবোনা?সে বাবা হবে এটা জানার অধিকার অবশ্যই তার আছে।আমাকে প্লিজ নিয়ে চলো।ওদের থেকে ছাড়াও আমায়”

মির ইশারা করে চাঁদকে ছেড়ে দিতে।মিরের কথানুযায়ী তিনজনই চাঁদকে ছেড়ে দেয়।আর চাঁদ দৌড়ে এসে মিরের বাহু ধরে অস্থির হয়ে বলে,

“চলো ভাইয়া চলো।তাড়াতাড়ি চলো”

বলেই তাকে টেনে নিতে গেলে একবিন্দু পরিমাণ সরাতে না পেরে মিরের পানে চেয়ে বলে,

“কী হয়েছে?”

চাঁদের দিকে করুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চাঁদকে ধরে বেডে বসিয়ে মির বলে,

“এখনই যেতে পারবোনা চাঁদ।প্রণয়ের সাথে কেউই আমাদের দেখা করতে দেবেনা।উশ্মি কোর্ট থেকে ফিরুক।কাগজপত্র সব নিয়ে আসুক।তারপর যাচ্ছি।আমি নিজেই তোমায় নিয়ে যাবো।কিন্তু ততক্ষণ তুমি শান্ত হয়ে বসো।এভাবে হাইপার হলে বাচ্চাটার ক্ষ*তি হবে।তুমি নিশ্চয়ই চাওনা তোমাদের বহু কষ্টের পর পাওয়া এই ছোট্ট অংশটার কোনো ক্ষ*তি হোক?”

মিরের পানে চেয়ে চাঁদ বলে,

“কিন্তু ভাইয়া ওরা প্রণয়কে?”

“কিচ্ছু করবেনা।প্রণয়তো সব স্বীকার করেছেই।স্বীকার না করলে রিমাইন্ডে নেয়”

বেশ অস্থির ভঙ্গিমায় চাঁদ বলে,

“তবুও তারা কিছুই করবেনা?আমি তাদের চিনি ভাইয়া।অধিরাজ শেখের লোকেরা অবশ্যই বসে থাকবেনা।তুমি প্লিজ আমায় নিয়ে চলো আমি আমার প্রণয়কে ওভাবে থাকতে দিতে পারিনা”

“তুমি গেলে কী হবে?ছেড়ে দেবে প্রণয়কে?নাকি তার কোনো শাস্তি হবেনা?অথবা তার সমস্ত শাস্তি মাফ করে দেবে কোনটা?মানুষ খু*ন করার শাস্তি জানোতো?একটা দু’টো নয় পুরো ছয় ছয়টা?তাও বেশ নিকৃষ্টভাবে!যা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কর‍তে পারেনা!চিন্তা করতে পারছো?কী হবে তার শাস….”

এবারে বেশ চেচিয়ে উঠে চাঁদ।মিরের কলার ধরে তাকে দেয়ালের সাথে চে!পে ধরে রুক্ষ কন্ঠে বলে,

“একদম চুপ!একদম চুপ!মে*রে ফেলবো একদম!আমার প্রণয়ের কিছু হবেনা।হতে পারেনা।আমি হতে দেবোনা।যে আমার প্রণয়ের সামনে আসবে তার জান নিয়ে নে…….”

বলতে বলতেই ঢলে পড়ে চাঁদ।ফ্লোরে পড়ার পূর্ব মুহুর্তে মির তাকে ধরে ফেলে।অতঃপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে ধরে এনে বেডে শুইয়ে দিয়ে রুবা আর শিফাকে দুই পাশে বসিয়ে একটা ইঞ্জেকশন চাঁদের হাতে পুশ করে রিদিকে ইশারায় বাইরে ডাকে।বাইরে আসতেই খানিক কেশে রিদিকে উদ্দেশ্য করে মির বলে,

“অবস্থা বেশ খারাপ।আমি জানিনা প্রণয় এটা কেনো করেছো।সবকিছুতো ঠিকই ছিলো হঠাৎ করে এমনকিছু করার কারণ উদঘাটিত করতে পারছিনা।কোনোভাবেই পারছিনা যেই পর্যন্ত না প্রণয় নিজে থেকে বলছে।তবে আমি জানিনা এমন একটা কাজের ভবিষ্যৎ কী।হয়তো ওর চাঁদের কথা ভাবাটা উচিত ছিলো।এখন আরেকটা প্রাণ ওর সাথে বাস করছে কী থেকে কী করবো বুঝতে পারছিনা।চাঁদকেতো আশ্বাস দিলাম রিমাইন্ডে নেবেনা।কিন্তু আমার নিজেরই ভয় লাগছে।লা*শগুলো সচক্ষে দেখে এসেছি।কি যে বিভ!ৎসকর!দেখলেই গা গুলিয়ে যায় রিদি”

বলেই চোখজোড়া বন্ধ করে মির।মিরের কথা শুনে মিরের পাশে দাঁড়িয়ে বাহুতে হাত রেখে রিদি বলে,

“চিন্তা করবেন না কথাটাও বলতে পারছিনা মির।আমার নিজেরই ভাইয়া,ভাবি আর বাবুর জন্য চিন্তা হচ্ছে।এত ঝামেলা এতকিছুর পর এরকম একটা পরিস্থিতি অথবা পরিণতি তারা না পেলেই কি হতোনা?”

“হয়তো এটাই ভাগ্য!তবে শোনো রিহা বলেছে আরেকটু তীব্র গতিতে দৌড়ালে বাচ্চার অনেক ক্ষ*তি হয়ে যেতো।ক্ষ*তি যে হয়নি তারও নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছেনা।চাঁদকে বেশ সাবধানে রাখা লাগবে।আশা করছি তোমরা পারবে।আমি তোমার উপর বিশ্বাস করে চাঁদকে রেখে যাচ্ছি।যেই ইঞ্জেকশনটা দিয়েছি বারো ঘন্টা পর্যন্ত চলবে।তারপর একই ইঞ্জেকশন আবার দেবে যদি দেখো পাগলামি করছে”

“কিন্তু এতে ভাবির বা বাবুর?”

“ততক্ষণে আমি এসে পড়বো আশা করছি।তবুও তোমায় বলে গেলাম”

বলেই পা সামনের দিকে এগোতে নিলেই রিদি করুন কন্ঠে বলে,

“কিন্তু মির এরইমাঝে প্রণয় ভাইয়ার যদি কিছু!……”

দীর্ঘশ্বাস ফেলে মির বলে,

“গ্যারান্টি তো দিতে পারছিনা।তবে দেখি কী হয়!”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
পরেরদিন সকালে,
প্রণয়ের সাথে দেখা করতে এসেছে উশ্মিসহ মির এবং চৈত্র।উশ্মি ভেতরে এবং মির,চৈত্র বাইরে।অ্যাডভোকেট ছাড়া আর কাউকেই ভেতরে যেতে দেওয়ার অনুমতি নেই।তাই মিরই শুরুতে বলে,

“শোন!তুই ওর সাথে দেখা করতে চাস নি বলে আমি চাঁদকে ইঞ্জেকশনের উপরই রেখেছি।কিন্তু মেয়েটা বড্ড উন্মাদ হয়ে গেছে প্রণয়!তোকে ছাড়া কিছুই বুঝছেনা আর তোদের!…..”

সঙ্গে সঙ্গেই চৈত্র হাত চেপে ধরে মিরের।অতঃপর চোখ দিয়ে কিছু একটা ইশারা করতেই থেমে যায় মির।প্রণয় উশ্মির সাথে কথা বলছিলো তাই বিশেষ একটা খেয়াল না করে গম্ভীরভাবে বলে,

“আমি চাইনা আমার কোমল হৃদয়ের চন্দ্র প্রণয়ের অন্য আরেক রূপ দেখুক।তার ধ্বংসাত্মক তাণ্ডব দেখে ভালোবাসা মূর্ছে যাক!”

তখনই শোনা যায় চৈত্রের গম্ভীর কন্ঠস্বর,

“কে বলেছে আমার ছোটি কোমল হৃদয়ের?আপনার মতো শান্ত এবং গম্ভীর ছেলের হৃদয় যদি পাষাণের হতে পারে তবে ওর হৃদয়ও ব!র্বরের তুলনায় কম কিছু হবেনা।শুধুমাত্র নারী বলে কোমল হৃদয়ের অধিকারী হতে হয় এমনটা নয়।হ্যা,আমার বোন অবশ্যই কোমল হৃদয়ের অধিকারী তবে সত্যের জন্য যে কঠিন হৃদয় ধারণ করতে পারে সে অবশ্যই তার ভালোবাসার জন্য দুনিয়া ওলোট পালোট করে দেবে প্রণয়।আর ভালোবাসা কখনোই মূর্ছে যায়না।ভালোবাসা যদি মূর্ছানোরই ছিলো আপনি ওর সাথে যা যা করেছেন তারপরই মূর্ছে যেতো।কিন্তু আমি আমার বোনের চোখে অপরিমিত ভালোবাসা দেখেছি কেবল আপনার এবং আপনারই জন্য”

চৈত্র থামতেই ঠান্ডাস্বরে বেশ করুন কন্ঠে প্রণয় বলে,

“তবে আমার আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই ভাইয়া।আমি যখন এই ডিসিশন নেই তখনই এর পরিণতি জানতাম।তবুও পিছু হটা সম্ভব হয়নি।আপনিতো সবটা জানেন,আপনারই বোন।আপনি নিশ্চয়ই আমার অবস্থানটা বুঝবেন”

দীর্ঘশ্বাস ফেলে চৈত্র বলে,

“জানি তবে আপাতত জানিনা আমার কী করা অথবা বলা উচিত”

প্রণয় এগিয়ে আসে হাজতের ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা চৈত্র আর মিরের পানে।অতঃপর তাদের সামনে এসে লোহার শিকে হাত রেখে বলে,

“শুধু এতটুকুই জানুন যে এখন থেকে আপনাকেই আমার চন্দ্রময়ী এবং আপনার ছোটিকে সামলাতে হবে।আরও একবার সে ভেঙে গুড়িয়ে যাওয়ার পূর্বেই তাকে গুছিয়ে নিতে হবে”

“আদোতে তা সম্ভব প্রণয়?”

গম্ভীর কন্ঠে প্রণয় বলে,

“মানুষ অমর নয় ভাইয়া।সকলকেই মৃ*ত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।হয় আজ,নয়তো কাল একদিন আমায় মর…..”

প্রণয়ের ঠোটজোড়ায় মিরের হাত পড়তেই থেমে যায় প্রণয়।অতঃপর মিরের পানে চাইতেই তার লাল হয়ে আসা নেত্রদ্বয় দেখে কিঞ্চিৎ ঠোট বাকা করতেই দাঁত খিচে ধরে প্রণয়।জ্বালাপো*ড়া করছে শরীরের সমস্ত ব্যথিত অঙ্গসমূহ তবুও নিজেকে বেশ কঠোরভাবেই উপস্থাপন করে প্রণয়।মিরের পানে চেয়ে শান্ত কন্ঠে বলে,

“কী হয়েছে তোর?তুইতো দুর্বল নস!”

মির আকস্মিক শিকের ভেতর দিয়েই হাত দিয়ে প্রণয়কে জাপটে ধরার চেষ্টা করে।প্রণয়ও তা বুঝতে পেরে বুকের কাটা অংশের ব্যথায় দাঁত খিচে নিজেও মিরকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে।তবে সে ব্যর্থ।কাটা বাহুতে শিকের সাথে লেগে ফের ব্যথা টনটন করে উঠে তার।নিজেকে সামলে সে কেবল মিরের পিঠে হাত রেখে বলে,

“তুই কাদছিস মির?তাও আমার জন্য?আমি না তোর প্রেমের দুশমন?”

“চুপ থাক!”

“তুই চুপ থাক।ছেলেদের চোখে পানি সাজেনা মির।তোর চোখেতো একদমই না।আমি বলেছি থাম”

মির আর প্রণয়কে দেখে অশ্রুসিক্ত হয় চৈত্র এবং উশ্মির চোখও।উশ্মি মনে মনে বলে,

“তোমার মতো প্রেমিক সবার কপালে জুটুক ভাইয়া!”

অতঃপর খানিক থেমে আবারও বলে,

“তোমায় আমি বেশ ভুল বুঝে ফেলেছি।আমি ভুলে গিয়েছিলাম নিজের ভালোবাসাকে অন্যের সাথে দেখা কারো পক্ষেই সম্ভব না।আমায় মাফ করো,মাফ করো!”

কথাগুলো মনে মনে আওড়াতে আওড়াতেই শুনতে পায় প্রণয়ের গম্ভীর কন্ঠস্বর।সে গায়ের র*ক্তে পরিপূর্ণ এপ্রোণটা খুলে মিরের নিকট দিয়ে বলে,

“এটা আমার চন্দ্রময়ীকে দিবি”

বিকাল তিনটা বেজে নয় মিনিট,
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বেশ শান্ত ভঙ্গিতেই প্রণয় জজকে বলছে,

“ডাক্তারী যা করার এ জীবনে অনেক করে ফেলেছি ইওর অনার।এ নিয়ে আর আফসোস নেই”

“তোমার ডাক্তারী সকল ডিগ্রিসমূহ বাতিল হবে।আর কখনো ডাক্তার পদবী তোমার থাকবেনা জেনেও এত বড় পদক্ষেপ কেনো নিয়েছো প্রণয়?”

“সেটা নাহয় আমার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকুক।খু*ন করেছি,স্বীকারও করেছি।শাস্তি দেওয়ার তবে দিন।আমি সাদরে মৃ*ত্যুকে আলিঙ্গন করে নেবো”

প্রণয়ের প্রতিটা কথাই জজ শুনেছেন প্রণয়ের পানে পলকহীন চেয়ে।এতবছরের অভিজ্ঞতায় এরকম আসামী তিনি কখনোই দেখেননি।তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে প্রণয়ের পানে চেয়ে তিনি বলেন,

“তোমার পক্ষে কেউ নেই?সময় নিতে চাচ্ছো?”

বেসব সাবলীলভাবে প্রণয় বলে,

“নো ইওর অনার।ভুলের পক্ষে কেউ থাকেনা।তবে আমি ভুল নই আবার সঠিকও নই।সময় নেওয়ার কিছু নেই।যেখানে আমি নিজেই স্বীকার করছি সেখানে পক্ষে কেউ থেকে আর কীই বা প্রমাণ করবে?যে আমি খু*নগুলো করিনি?তাহলে আমি বলবো তাদের দুনিয়া থেকে বিতাড়িত করতে পেরে আমার আত্মা পরিতৃপ্ত।এবার আপনি আপনার রায় দিন।কেউ বাঁধা দেবেনা।দিলেও আমি তা মানবোনা”

তখনই কোর্টের দরজা দিয়ে হাপাতে হাপাতে সমুদ্রকে টেনে জজের সামনে এনে দাঁড়িয়ে ঘনঘন শ্বাস নিয়ে চাঁদ বলে,

“ইওর….ইওর অনার!এই যে প্রণয়ের পক্ষের ব্যারিস্টার।ব্যারিস্টার সমুদ্র চৌধুরী।আপনি নিশ্চয়ই তাকে চেনেন?”

গম্ভীর কন্ঠে জজ বলেন,

“চিনি তবে প্রণয় তার পক্ষে কাউকে নিতে রাজি নয়।তুমি অযথাই কোর্টের সময় অপচয় করবেনা”

জজের কথা শুনে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রণয়ের পানে চায় চাঁদ।তাকায় প্রণয়ও।অতঃপর দৃষ্টিমিলিত হয় দুজনের।কি করুন সেই চাহনী!কি মলিন সেই দৃষ্টি!এতটা কাছে থেকেও কতটা দূরত্ব!এ দূরত্ব আদোতে ঘুচবে কখনো?নাকি আজন্মের জন্য তৈরি হলো তা?একে অপরের বিধ্বস্ততা দেখে হৃদয় কেদে উঠলো।হাহাকার করে উঠলো ভেতরটা।লম্বা শ্বাস ফেলে প্রণয়ের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে চাঁদ জজের পানে চেয়ে বলে,

“দয়া করে সময় দিন ইওর অনার।হয়তো এটা প্রমাণ করতে পারবোনা যে সে খু*নগুলো করেনি তবে….. ”

বেশ রুক্ষ কন্ঠে জজ বলেন,

“তাহলে কী প্রমাণ করবে?কী করবে?তোমার স্বামী খু*ন করার পরেও বেশ গর্ব করে বলে যে সে খু*ন করেছে।তাকে আর কী সময় দেবো?অযথা সময় নষ্ট করবেনা।নাহয় তোমার ডিগ্রিও….”

এবারে বেশ ঠান্ডাস্বরে প্রণয় বলে,

“তার ডিগ্রি বাতিল করার অধিকার আপনার নেই ইওর অনার।তার বিরুদ্ধে আপনি কোনো একশন নিতে পারেন না।শি ডাজেন্ট হ্যাভ অ্যানি ক্রাইম হিস্টোরি”

বলেই চাঁদের পানে চেয়ে বেশ করুন কন্ঠে বলে,

“থামুন চাঁদ।আমার সময় ফুরিয়ে গেছে”

অতঃপর সমুদ্রকে কিছু একটা ইশারা করতেই চাঁদকে নিয়ে বেঞ্চে বসায় সে।আর মিনিট পাঁচেকের মাঝেই জজ তার রায় ঘোষণা করেন,

“অর্ডার!অর্ডার!ডক্টর রুহায়ের প্রণয়ের সমস্ত ডাক্তারী ডিগ্রি বাতিল করাসহ আগামী শুক্রবার বাদ জুমা তার ফাসি কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হলো।দ্যা কোর্ট ইজ অ্যাডজার্ন!”

জজের রায় শেষে প্রণয় কাঠগড়া থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে বাইরে আসতে নিলে হঠাৎ করেই প্রণয়ের কাছে দৌড়ে আসে চাঁদ।আষ্টেপৃষ্টে তাকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে উঠে বলে,

“আমা…..আমাকে ছেড়ে যাবেন না!যাবেন না প্রণয়।আমি ম*রে….”

চাঁদকে থামিয়ে দিয়ে প্রণয় বলে,

“হিশ!ভাগ্যের উপর কোনো জোর নেই চন্দ্র।আমার সমাপ্তি এভাবেই লেখা ছিলো।এভাবেই হচ্ছে।এবং আমি তাতে পরিতৃপ্ত”

প্রণয়ের থেকে দূরত্ব সৃষ্টি করে তার চোখে চোখ রাখতেই একে অপরের লালচে দৃষ্টি দেখে শ্বাস দ্রুত গতিতে উঠানামা করে।আর চাঁদ প্রণয়ের হাতকড়া পরহিত হাত নিজের পেটে রেখে লম্বা শ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে বলে,

“আপনি এই পরিসমাপ্তিতে তৃপ্ত হলে আমার আর আমাদের বাবুর কী হবে?সে বাবা কাকে ডাকবে প্রণয়?”

বলেই দাঁত কামড়ে অশ্রু বিসর্জন করে চাঁদ।শ্বাস তার রুদ্ধ হয়ে আসে।দম বন্ধকর পরিস্থিতি!নিজেকে যথেষ্ট সামলানোর চেষ্টা করেও পারছেনা।প্রণয়ের বুকে ফের হামলে পড়ে শব্দ করেই হাউমাউ করে উঠে বলে,

“আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচবোনা,বাঁচবোনা প্রণয়।কেনো বিধাতা আমার কপালে সুখ লেখেন না?সুখ কেড়ে নেবারই হলে কেনো বারংবার দিয়ে তা ছিনিয়ে নেন?আমি যে আর পারিনা।আমাকে আপনার সাথে নিয়ে চলুন প্রণয়।এখন আর বাঁচার কোনো ইচ্ছে নেই।আমিও মৃ*……”

সঙ্গে সঙ্গে চাঁদের কপালের মাঝ বরাবর গাঢ় করে চুম্বন এঁকে প্রণয় বলে,

“হিশ!আপনাকে বাঁচতে হবে।বাঁচতে হবে চন্দ্র।আমাদের ছোট্ট সোনার জন্য আপনাকে বাঁচতে হবে।তাকে কঠিন বাস্তবতা শেখানোর জন্য আপনাকে বাঁচতে হবে।আমাদের শেষাংশকে বাঁচাতে আপনাকে বাঁচতে হবে।সর্বোপরি আমার জন্য আপনাকে বাঁচতে হবে।আপনার বেঁচে থাকার মাঝেই আমি আমার সুখ খুঁজে পাবো চন্দ্র”

অতঃপর অরিনের দিকে চেয়ে বলে,

“হাতকড়াটা খুলে দাও।আমি পালাবোনা।শেষবারের ন্যায় আমার চন্দ্রকে একটু বুকে নেই?”

প্রণয়ের কথা শুনে সেখানে উপস্থিত প্রায় সকলের চোখই অশ্রুসিক্ত হলো।অরিন নিজেও ঘনঘন শ্বাস নিয়ে কান্না আটকাবার প্রয়াস করে প্রণয়ের হাতকড়া খুলে দিতেই প্রণয় চাঁদকে বুকের মাঝে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,

“আমি আমার ছোট্ট অংশের মাঝেই বেঁচে থাকবো চন্দ্র।প্রণয়ের সমাপ্তি হয়তো এখানেই চন্দ্রময়ী।সমাপ্তির মাঝেও আমি সূচনা খুঁজতে চাই।আমি চাই,বারংবার চাই আমাদের ‘আবার প্রেম হোক’ চন্দ্রময়ী।আমাদের আবার প্রেম হোক,বারবার প্রেম হোক,হাজারবার প্রেম হোক।মরণের পরেও আবার আমাদের প্রেম হোক!আমি আপনাকে ভালোবাসি”

সমাপ্ত…..

[বিঃদ্রঃআসসালামু আলাইকুম!শুরুতেই বলে নিচ্ছি কোনো মানুষই পার্ফেক্ট নয়।তেমনিভাবে কোনোকিছুই পার্ফেক্টভাবে হয়না।ভুলত্রুটির মিশ্রণেই মানুষ এবং মানুষের কর্ম।গল্পটা যখন আমি শুরু করি তখনই ভাবা ছিলো ১ম খন্ডের এভাবেই সমাপ্তি টানবো।এবং টানলাম।জানিনা কার কাছে কেমন লেগেছে।ভালো,খারাপের সংমিশ্রণেইতো সবটা।সেহেতু আলোচনা হবে সমালোচনা।এবং মানুষ কিন্তু ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়।ভুলসমূহ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।আর আবারও বলছি এটা ছিলো ১ম খন্ডের সমাপ্তি।২য় খন্ড তিন-চারদিন অথবা চার-পাঁচদিনের মধ্যে আনবো।সেটাতে বেশি পর্ব হবেনা।বড়জোর দশ পর্ব হবে অথবা কম হলে ছয় থেকে সাত।আর রেগুলার দিয়ে সেটাও শেষ করে দেবো।তার জন্য চার-পাঁচদিনের রিফ্রেশমেন্ট দরকার।গল্পটাকে যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোবাসা দিয়েছেন তাদের জন্যও আমার তরফ থেকে ভালোবাসা রইলো।আমার জন্য দুআ করবেন আর ভালো থাকবেন সকলে।আর হ্যা পুরোটাই ছিলো আমার কাল্পনিকতার কলমে ফোটানো রূপ।তাই বাস্তবতার সঙ্গে দয়া করে না গুলানোর আন্তরিক অনুরোধ]