আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-১৮

0
2537

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:১৮

রিফাত শুধু রাহির শেষের বলা কথাটুকু শুনে।
রাহি শেষে বলে এ বাসা থেকে আমাকে আগে বের হতে হবে। তখনি রিফাত রুমে আসে।
রিফাত: তুমি এ বাসা থেকে কখনো বের হতে পারবে না।
রাহি: কেনো?
রিফাত: #আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি তাই।
রাহি শান্ত গলায় বলে…
রাহি: আচ্ছা এতোই যদি আমাকে আপনার কাছে রাখতে চান,এতোই আমাকে ভালবাসেন তাহলে আমার সাথে এমন করলেন কেনো?
রাহির কথা শুনে রিফাত বলে…
রিফাত: কি করলাম তোমার সাথে..
রাহি: ও এখন কিছু মনে নেয়। অন্য মেয়েদের জীবন নষ্টের সাথে সাথে আমার জীবনটা নষ্ট করতে চেয়েছিলেন এখন সব ভুলে গেছেন।
রাহির কথা শুনে রিফাতের রাগ ওঠে যায় তাই জোরে বলে….
রিফাত: কি সব বাজে কথা বলছো? তোমার মাথা ঠিক আছে।
রাহি: আমার মাথা ঠিকই আছে। এখন এমন ভাব করতে হবে না আমি সব জানি।
রিফাত: তোর দোষ এখন আমাকে দিতেছিস। নিজে অন্যের জন্য ডির্ভোস চাইলি আর এখন আমাকে দোষী বলতাছিস।
রিফাতের কথা শুনে রাহির রাহ ওঠে…
রাহি: দেখ একদম মিথ্যা বলবি না।
রিফাত: তুই সিয়ামের সাথে থাকার জন্য আমার কাছে ডির্ভোস চাইছিলি।
এই কথা বলে রিফাত রাহির খুব কাছে গিয়ে তার মুখের কাছে নিজের মুখ নিয়ে আবার বলতে থাকে…
রিফাত: জানিস রাহি সে যখন আমাকে বলেছিলো যে তুই সিয়ামের সাথে থাকার জন্য আমার কাছে ডির্ভোস চাইবি। তুই জানিস রাহি আমি তার কথাটা বিশ্বাস করি নাই। আমার তর ওপর আমার ভালবাসার ওপর বিশ্বাস ছিলো। কিন্তু বাসায় আসার পর যখন তুই আমার কাছে ডির্ভোস চাইলি তুই জানিস আমার বিশ্বাসটা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিলো। আমার মনের ভিতর অনেক কষ্ট হয়েছিলো যা তোকে বুঝাতে পারবো না।
রিফাতের কথা শুনে রাহির আরো রাগ হয়…
রাহি: নিজের দোষ লুকানোর জন্য এখন আমাকে দোষী করতাছিস।
রিফাত: আমি কি করছি?
রাহি: বাহ্,নিজে মনে হয় কিছুই করোস নাই, অন্য মেয়েদের জীবন নষ্ট করিস আবার বলোস কিছুই করোস নাই।
রিফাত: তোকে কে বলছে এসব
রাহি: যে বলছে বলছেই আর আমি নিজ চোখে ও দেখছি।
রিফাত: দেখ রাহি মিথ্যা বলবি না।
রাহি: আমি মিথ্যা বলছি না। আচ্ছা তুই না বললি যে তোরে কেউ বলছে আমি সিয়ামের সাথে থাকার জন্য ডির্ভোস চাইবো।
রিফাত: হুমম।
রাহি: কে বলছিলো?
রিফাত : রিতা।
রিতার নাম শুনে রাহি অবাক হয়ে যায়।
রাহি: আমি বিশ্বাস করি না। রিতা এই কথা কখনো বলেনি। আপনি রিতার জীবন নষ্ট করছেন আবার এখন রিতার নাম বলছেন।
রিফাত: আমি রিতার জীবন নষ্ট করতে যাবো কেনো?
রাহি: মিথ্যা বলবি না, আমি জানি সব।
রিফাত: তোরে এসব বাজে কথা কে বলছে।
রাহি: এসব বাজে কথা না সব সত্যি কথা। আমাকে সব সত্যি রিতা বলছে।
রিফাত: সব কিছু মিথ্যা।
রাহি:একটা মেয়ে নিজের সম্মান নিয়ে এমন মিথ্যা বলবে না।
রিফাত: রাহি তুই তো আমার সাথে সংসার করেছিস,আমাকে চিনিস, তোর কি মনে হয় আমি এমন করতে পারি,আমার প্রতি তোর কোনো বিশ্বাস নেই।
রাহি: আমি ও,বিশ্বাস করে নি কিন্তু হোটেলে যে অন্য মেয়ের সাথে রুমে ছিলি শুয়ে তা আমি নিজের চোখ দিয়ে দেখছি। নিজের চোখে দিয়ে দেখা জিনিস কিভাবে অবিশ্বাস করি বল।
রিফাত: এসব কি বলছিস। তুই এসব কবে দেখলি। মিথ্যা তো ভালোই বলতে পারিস।
রাহি: মিথ্যা না, ভাগ্য ভাল যে রিতা আমাকে ফোন করে নিয়ে তোর ওই খারাপ চরিএের মুখোশটা দেখাই ছিলো।
রিফাত আবার রাহির মুখে রিতার নাম শুনে থ হয়ে যায়।
রিফাত: রাহি তুই রিতার কথা এসব আমার ব্যাপারে জেনে ডির্ভোস নিছোস।
রাহি: নিজের চোখেই তো দেখছি।
রাহির কথা শুনে রিফাত চুপ হয়ে যায়। কিছু সময় পর রিফাত রাহিকে বলে…
রিফাত: তুই থাক আমি তোকে কয়দিনের মধ্যেই প্রমান করে দিবো যে আমি কোনো খারাপ কিছু করেনি। তোর সব ভুল ধারনা আমি পরিষ্কার করে দিবো তারপর তুই চলে গেলে চলে যাস।
এই বলে রিফাত রুম থেকে বের হয়ে যায়।

অন্যদিকে
-হ্যালো রিতা,রাহি আর রিফাত সব কিছু দুজনকে বরে দিলো যে তুমি সব কিছু করছো,রাহি রিফাতের কথা বিশ্বাস করে নাই। কিন্তু রিফাত হয়তো কিছু সন্দেহ করছে। তুমি তাড়তাড়ি অন্য কোথাও চলে যাও। রিফাত জেরো তোমাকে ধরতে না পারে।
রিতা: আচ্ছা, আমাদের এখন অন্য প্ল্যান করতে হবে।
– তা পরে করবো এখন তোমার বাসা থেকে চলে যাও আমি এখন রাখি।
ফোন রেখে দেবার পর রিতা নিজে নিজেই বলে. ….
রিতা : মন বলছে রিফাত আর রাহিকে মেরে ফেলি। আমাদের এতো সুন্দর প্ল্যান নষ্ট করে দিলো।
এরপর রিতা তার জিনিস নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।

রিফাত রাহির সাথে কথা বলার পর রেগে বাসা থেকে বের হয় গাড়ি নিয়ে ।
রিফাত রিতার বাসার সামনে দাড়িয়ে আছে। রিতার বাসার কলিংবেল বাজায় কিন্তু কেউ দরজা খুলছে না। রিফাত ভাল করে তাকিয়ে দেখে দরজা তালা দিয়া।
দরজা তালা দিয়া দেখে রিফাতের রাগ মাথায় ওঠে যায়। দরজায় জোরে একটা লাথি মারে তারপর গাড়িতে গিয়ে বসে। কিছু সময় বসে থাকার পর রিফাত নিজের ফোন বের করে একজনকে ফোন দেয়.
রিফাত: হ্যালো,রিতার বিষয়ে সব কিছুর ডিটেল আমার চাই দুদিনের মধ্যে আর রিতা কোথায় গেছে তাকে তাড়তাড়ি খুজে বের করো।
এরপর রিফাত ফোন কেটে দেয়। রিফাত গাড়িতে বসে একা একা ভাবছে….
রিফাত: রাহি যে দিন ডির্ভোস চাই ছিলো সে দিন কি হয়েছিলো আমাকে জানতে হবে।

এদিকে রাহি….
রুমে বসে ভাবছে…
রাহি: রিফাত কি সত্যি বললো।আমার মন একবার বলছে রিফাত সত্যি কথা বলছে, সে তেমন কোনো কাজ করে নি, কিন্তু আমি তো নিজ চোখে তা দেখেছি। আমার নিজের চোখে দেখা জিনিস কিভাবে ভুল ভাবি। আমার মাথা আর কাজ করছে না, সব গোলমাল হয়ে যাচ্ছে। আমার আর কিছুই ভালো লাগছে না।

অন্যদিকে…
রিতা: আমি অন্য জায়গায় চলে আসছি। ওই বাসায় কি হয় সব আমাকে জানাবেন, রাহি – রিফাত কি করে তার দিকে বেশি খেয়াল রাখবেন। আমাদের প্ল্যান যেনো কোনো ভাবে নষ্ট হয়ে না যায়। তাহলে এতো বছরের সব কষ্ট জলে যাবে।
– আমি কা দেখে নিবো, সাবধানে থাইকো, কোনো ভাবে রিফাতের হাতে পরা যাবে না মনে থাকে যেনো।
রিতা: সে চিন্তা আপনার করতে হবে না। আপনাকে যা বলা হয়ছে তাই শুধু করেন। বাই।
রিতা ফোন কেটে দেয় আর একটা চেয়ারে বসে বলে…
রিতা: রাহি আর রিফাত তোদের আলাদা করার জন্য কতো কিছু করলাম কিন্তু আবার বিয়ে করে নিলি।আমি এবার আর তোদের এক হতে দেবো না দরকার হলে মরে ফেলবো..হা…হা..হা….

রিফাত অয়নের সামনে বসে আছে।
অয়ন: কি হয়ছে দোস্ত আমাকে বল।
রিফাত তারপর অয়নকে সব খুলে বলে।
অয়ন: তোর চিন্তা করতে হবে না। আমি দেখতাছি যাস্ট ২ দিন সময় দেয়।
রিফাত: আচ্ছা তুই দেখ।
অয়ন: তুই এখন বাসায় যা।
এরপর রিফাত বাসায় চলে আসে।
দুদিন পর….
চলবে….