আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-২৩

0
4793

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:২৩

সিয়ামের সামনে রাহি বাঁশের লাঠি হাতে করে তাড়িয়ে আছে আর তখনি রিফাত রাহিকে বলে…
রিফাত: জানু তুমি বাঁশের লাঠি দিয়ে কি করবে।
রাহি: আমার এদের ইচ্ছা মতো মারতে মন চাইতাছে তাই এইটা দিয়ে মারবো।
রিফাত: আচ্ছা শুরু করো।
রিতা: দেখ রাহি এমন করিস না।
রাহি: আমার সাথে এতো কিছু করার সময় তোর মনে ছিলো না এসব।
সিয়াম: তোরা খুব বাড়াবাড়ি করছিস। একবার শুধু ছারা পাই তোদের দুজনকে দেখে নিবো।
সিয়ামের কথা শুনে রিফাতের রাগ ওঠে যায়। রিফাত রাহির কাছ থেকে লাঠি নিয়ে সিয়ামকে মারতে থাকে।
রিফাতের খালা: রিফাত তুই সিয়ামকে ছেরে দে না হলে আমি কিন্তু তোদের মেরে ফেলবো।
রাহি রিফাতের খালার গালে ঠাস করে চড় মেরে বলে…
রাহি: দেমাগ কমে নাই এখনো তাই না।
রিফাতের খালা: আমার গালে চড় মারস কোন সাহসে।
রাহি: শয়তান মহিলা তোরে মারার জন্য আবার সাহস লাগে নাকি, এমনিই মারা যায়।
রিফাত কিছু সময় সিফাতকে মেরে থেমে যায়।
রাহি: রিফাত জান শুনো একটু…
রিফাত: বলো কলিজা।
রাহি: এইভাবে শাস্তি দিয়ে আমি শান্তি পাইতাছি না। একটু আমার মতো করে শাস্তি দেয়।
রিফাত: তোমার যা ইচ্ছা করো।
কিছু সময় পর রাহি কিছু পানি, আর জুস নিয়ে আসে। জুস কেমন বিচ্ছরি দেখতে আর গন্ধটা ও বাজে।
রিফাত: তুমি ৪ জগ জুস নিয়ে এসেছো কেনো আবার তার এতো বাজে গন্ধ।
রাহি: ৪ শয়তানের জন্য ৪জগ জুস। সবাই সবটুকু জুস খাবে। না খেলে তাকে শুরশুড়ি দিবো আর কারেন্টের শক দিবো।
রিতা রাহির কথা শুনে রেগে বলে….
রিতা : একবার শুধু আমার সুযোগ আসুক তোকে খুন করে ফেলবো।
রাহি : সে সুযোগ তুই আর পাবি না।
এরপর রাহি তাদের লোকদের বলে সবার একহাত খুলে দিতে।
সবার এক হাত খুলে দেবার পর রাহি বলে তাড়াতাড়ি খাওয়া শুরু করো।
সবার রাগি চোখে রাহির দিকে তাকিয়ে আছে। কি বেপার শুরু করছো না কেনো।
তাও কেউ শুরু করছে না তাই রাহি তার হাত দিয়ে তাদের লোকদের ইশারা দেয় আর তারা পাখির পালক দিয়ে সবাইকে শুড়শুড়ি দিতে শুরু করে।
শুড়শুড়ির কারনে সবাই অনেক হাসতে থাকে। হাসতে হাসতে একসময় ক্লান্ত হয়ে সবাই রাহির লোকদের থামতে বলে।
রাহি: থামবে কিন্তু জুস খেতে হবে।
রিতা হাসতে হাসতে বলে…
রিতা: থামতে বল আমি জুস খাবো।
রাহি তার লোকদের থামতে বলে আর ওরা সবাই জুস খেতে শুরু করে।
জুস একবার মুখে নিয়ে সবার অবস্থা খারাপ। সবার প্রায় বমি করার অবস্থা।
রাহি : কেউ মুখ থেকে বের করলে তাকে কারেন্টের শক দিয়া হবে ।
সবাই কষ্ট করে এক চুমুক খায়। পরের বার সবাই খেতে গিয়ে দারোয়ান তা ফেলে দেয় তখনি রাহির লোক তাকে শক দেয়। শক দিয়া দেখে সবাই ভয় পেয়ে অনেক কষ্ট করে সবটুকু শেষ করে। জুস খেয়ে সবার অবস্থা নাজেহাল।
রাহি আর রিফাত সবাইকে দেখে হাসছে।
রাহি: কেমন লাগলো আমার করা জুস। আমি অনেক কিছু দিয়ে বানিয়েছিলামম যেমন: করলা,নিমপাতা,মরিচ,ডিম,আরো বিভিন্ন সবজি সাথে রান্নার তেল। কেমন হইছে?
রিফাতের খালা: ইচ্ছা করতাছে তোরে মেরে ফেলতে।
রাহি : হুমম ডাইনি।
রিফাত: তোমার শাস্তি দিয়া কি শেষ?
রাহি: দিতে তো মন চায় অনেক কিন্তু ওদের পিছনে আর সময় নষ্ট করতে চাই না।
রিফাত: অয়নকে বলি নিয়ে যাইতে।

কিছু সময় পর…
অয়ন সবাইকে গাড়িতে ওঠায় জেলে নিয়ে যাবার জন্য।
রাহি: সবার কঠিন শাস্তি দিয়েন ভাইয়া।
সিয়াম: এরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। তুই আর রিফাত অপেক্ষা করতে থাক তোদের মৃত্যুর। খুব তাড়তাড়ি চলে আসবো তোদের মারতে।
এই কথা শুনার পর রাহি একটু ভয় পায়,।
রিফাত : ভয় পেয়ো না তো। যাও গাড়িতে গিয়ে বসো আমি আসছি।
রাহি বাসায় যাবার জন্য গাড়িতে গিয়ে বসে।
রিফাতের পাশ থেকে রাহি চলে যাবার পর রিফাত মুচকি হেসে আস্তে আস্তে বলে…
রিফাত: সিয়াম তুই এতো সময় আমার শাস্তি পাসনি এখন পাবি ।
এই বলে রিফাত অয়নকে ফোন দেয়।
রিফাত: যা বলছি তাই করিস।
অয়ন: আচ্ছা।
এরপর রিফাত ফোন কেটে দিয়ে মুচকি হাসি দেয়।

রাহি: এতো সময় লাগে। কখন থেকে গাড়িতে বসে আছি।
রিফাত: মাএ ২ মিনিট।
রাহি: ২মিনিট ও অনেক সময়। তাই তোমার শাস্তি হলো এখন কান ধরে স্যরি বলবা।
রিফাত রাহির কান ধরে বলে স্যরি।
রাহি: ওই ফাজিল ছেলে আমার কান ধরোস কা……
রিফাত: তুমি তো কান ধরতে বলছো তাই ধরছি।
রাহি রেগে বলে…
রাহি: আমার কান না তোর কান ধরতে বলছি ।
রিফাত: মিথ্যুক একটা তুই কারো নাম ধরে বলোস নাই।
রাহি আর কিছু বলতে না পেরে রাহে রিফাতের পিঠে কয়টা মাইর দেয়।
রাহি: ফাজিল ছেলে,বদের হাড্ডি,খাটাশ আরো অনেক কিছু।
রিফাত: হুররর রাক্ষসী।
রিফাত রাক্ষসী বলার কারনে রাহি রিফাতেরর কাছে গিয়ে কানে কামড় দেয়।
রিফাত: ওইযে রাক্ষসী কামড় দিলো।
রাহি: চুপচাপ গাড়ি চালিয়ে বাসায় চল, না হলে নাক টেনে ছিরে ফেলবো।
ঝগড়া করার পর দুজনে বাসায় যায়।
বাসা আসার পর রাহি আর রিফাত দুজনে বাসার ভিতরে যায়।
রিফাতের দাদু: তোমাদের মন খারাপ কেনো?
রাহি দাদুর কন্ঠ শুনে ন্যাকা কান্না করে তার ড্রামা শুরু করে দেয়।
রাহি: দাদু গো তোমার নাতি আমার সাথে ঝগড়া করছে আমারে রাক্ষসী বলছে, আরো কতো কি?
দাদু: তুমি কি করছো?
রাহি: আমি কিছুই করি নাই।
রিফাত রাহির কথা শুনে অবাক হয়ে বলে…
রিফাত: হায়রে ড্রামে বাজ,কি মিথ্যা বলে।
রাহি: তুই চুপ থাক ফাজিল ছেলে।
রিফাত: ফাজিল মেয়ে ড্রামা বন্ধ কর।
রাহি: তুই বদের হাড্ডি।
এই বলে নিজের রুমে চলে যায়।
রিফাত তা দেখে হাসতে থাকে।
দাদু: অনেক দিন পর তোর সেই আগের হাসি মুখটা দেখলাম আমার অনেক ভাল লাগছে।
রিফাত: আমার ও খুব ভাল লাগছে রাহির সাথে ঝগড়া করে। রাহির সব কিছুকে আমি ভালবাসি।

রাতে…..
মধ্যরাতে রাহি ঘুমিয়ে আছে। তখনি রিফাত রাহিকে ডাক দেয়।
রিফাত: রাহি ও রাহি….
রিফাতের ডাকে রাহির ঘুম ভাঙ্গে।
রাহি: এতো রাতে ডাকতাছো কেনো?আমাকে একটু ঘুমাতে দাও।
রিফাত: পরে ঘুমাবে এখন আমার সাথে চলো।
রাহি: কই যাবো…
রিফাত: আমার পিছু,পিছু আসো।
রাহি: ধুর…
এই বলে রাহি আবার শুয়ে পরে।
রিফাত জোর করে ওঠিয়ে টেনে বাসার বাহিরে নিয়ে আসে।
রাহি: এতো রাতে রাস্তায় কি করবো?
রিফাত: মধ্যরাতের নিরব রাস্তায় তোমার পাশে থেকে তোমার সাথে একটু পথ হাটতে চায়।
রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের মৃতু আলোয় তোমার সাথে আমার ভালবাসা মৃর্হুত্য কাটাতে যায়,।
চাঁদের জোৎসনার আলোয় আমার ভালবাসার সাথে তোমার ভালবাসার আদান -প্রদান করতে চায়।
রাহি: ওগো মোর কবি স্বামী আমি রাজি। তো চলো…
দুজনে নিরব রাস্তায় হাত ধরে পাশে পাশে হাটছে।তখন রিফাত বলে…
রিফাত: রাহি একটা কথা বলি…
রাহি রিফাতের দিকে তাকিয়ে বলে…
রাহি: বলো…
রিফাত: আচ্ছা আমাদের কি………
চলবে…..