#ইচ্ছে_কথন
#writer_falak_moni
#পর্ব_১১
১১.
বিছানার এক কোনো গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে তরু।এত ছোট একটা বিছানা কিভাবে শেয়ার করা যায়।যেখানে সে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুমানোর মেয়ে।তার উপর আবার শীতকাল।এই শীতের মধ্যে যদি দুইটা লেপ এখানে রাখতে যায় তাহলে এই বেডে লেপেরই জায়গা হবে মানুষের জায়গা আর হবে না। প্রিয় রুমের মধ্যে এসে দেখলো তরু লেপ ছাড়াই শুয়ে আছে গুটিসুটি মেরে। প্রিয় একটু হাসলো। লেপটাকে তরুর গায়ে দিয়ে সে পাশে এসে শুয়ে পড়লো। এই প্রথম কোনো মেয়ের সাথে বেড শেয়ার করছে প্রিয়।এর আগে অনেকের সাথে বেড শেয়ার করলেও মেয়ের দিক থেকে তরুই ফাস্ট।প্রিয় তরুর পাশে শুতেই।তরু বুকের ভেতরটা কেমন যেন ছেত করে উঠলো।হয়তো তার জীবনের প্রথম অনুভূতি প্রকাশের কারন এই লোকটা। তাই তাকে পাশে ভাবতেই বুকের ভেতরটা অন্যরকম অনুভূতির আশংকা খুঁজে পাচ্ছে তরু।
ইশ এখন যদি এই লোকটার বুকের উপর একটু শুতে পারতাম। নিজেকে অনেক লাকি মনে করতাম।
কথাগুলো ভাবতেই তরু লজ্জায় একাকার হতে লাগলো। আরেকদিকে প্রিয় অন্যপাশে ফিরে ভাবছে মেয়েটা কি ঘুমিয়েছে নাকি এখনো সজাক। ভেবেই প্রিয় তরুর দিকে ফিরলো। ফিরতেই দুজনের চোখাচোখি হতেই তরু নিচের দিকে তাকিয়ে ফেলল, প্রিয় তরুর দিকে তাকিয়ে ব্রু নাচিয়ে ইশারা করলো,
কি হয়েছে?
তরু মাথা নাড়ালো,যার অর্থ কিছুনা। বলেই চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলল। ঘুমহীনতা হয়ে আছে দুজনেই। কারো চোখে কোনো ঘুম নেই। তরু চোখের পাঁজর দিয়ে হালকা ভাবে দেখতে লাগলো প্রিয় কি করে। তাকিয়ে দেখতে পেল,প্রিয় একই ভাবে এখনো তাকিয়ে আছে তার দিকে । তরু বুঝে উঠতে পারছে না। তাকে নিয়ে যদি কোনো অনুভূতি নাই থাকে তাহলে এভাবে তাকিয়ে থাকার মানে কি । এসব ভাবতে ভাবতেই তরুর চোখ দুটো লেগে আসে ঘুমের রাজ্যে। ঐদিকে প্রিয় এখনো তরুর ঘুমন্ত মুখটার দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে আছে। যেই মুখের দিকে তাকিয়ে হাজারো বছর পারি দেওয়া যায়। নাতাশার সময় এমনটা না হলেও এই মেয়ের ভেতর এক অজানা মায়া আছে যার কারনে এভাবে টানছে। যতই এড়িয়ে যেতে চাইছে ততোই যেন বাধা পড়ছে। কিসের বাঁধা সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না প্রিয়। অনুভূতিগুলোকে তো ৫বছর আগে পুতে ফেলা হয়েছে। তাহলে কেন এই মেয়েকে নিয়ে এমন ঝড় বইছে মনের ভেতর। যেখানে নাতাশাকে নিয়েই কোনো অনুভূতি কাজ করেনা। সেখানে এই মেয়েটা এভাবে টানছে কেন। তরু একটা হাত দিয়ে প্রিয়কে জরিয়ে ধরে ঘুম ঘুম চোখে বলতে লাগলো,
মা একটু জরিয়ে ধরো না আমাকে তোমার মেয়ের বড্ড শীত লাগছে যে।
প্রিয় বুঝতে পেরেছে। মেয়েটা মাকে ভীষণ মিস করছে। প্রিয় যেই না ধরতে যাবে তার আগেই তরুর শক্ত করে জরিয়ে ধরলো তাকে। প্রিয় চোখ দুটো বন্ধ করে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলো। এ কেমন অনুভূতির শিহরন উলোটপালোট হতে চলেছে মেয়েটার প্রতি। তাহলে কি সে দুর্বল হতে চলেছে তরুর প্রতি। এসব ভাবতেই প্রিয়র পুরো শরীর দিয়ে অজস্র ঘামের পরিক্রমা দেখা যাচ্ছে। প্রিয় মুখেও কিছু বলতে পারছে না। আবার সহ্য করেও উঠতে পারছেনা। মেয়েটার এমন স্পর্শ যে তাকে নার্ভাস করে তুলছে সেটা কিভাবে বুঝাবে মেয়েটাকে।
গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় ভোর ৬টা বাজলো । তরু আজ অনেক খুশি কারন কাল রাতে যা হয়েছে সকালে সেটা তরু বুঝতে পেরেও না বুঝার মতো করে রইলো। সকালে চোখ খুলে যখন তরু তাকে প্রিয়র বাহুডোরে আবদ্ধ পায়।কুয়াকাটা সি বিচ সংলগ্ন গ্রামের নাম।। ইউনিয়নের নাম লতাচাপলী। থানা কলাপাড়া এবং জেলা পটুয়াখালী। বাস কলাপাড়া ঢুকতেই দূর থেকে সমুদ্রের গর্জন শোনা যাচ্ছিল।রাস্তা বেশি বড় না আবার ছোটও না। রাস্তার দুইধারে প্রচুর দোকানপাট।বেশিরভাগই খাবার হোটেল।মান তেমন ভালো মনে হলো না।বাস আগে থেকেই একটা আবাসিক হোটেলের সামনে এনে থামালো।পুরো হোটেলই তারা বুক করেছে। হোটেলের সামনে থেকেই সমুদ্র দেখা যাচ্ছে।। কিন্তু আসতে আসতে অনেক লেট হয়ে গেছে যার কারনে এখন কাউকেই সমুদ্রে যেতে দেয়া হচ্ছে না। হোটেলে আগে থেকেই খাবার অর্ডার দেওয়া ছিল। তাই বলা হয়েছে যে যার রুমে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে নিতে। খাবার খেয়ে ফ্রেশ হতে দুপুর ৪টা বেজে গেল। প্ সন্ধ্যা হতেই সি বিচ ঘুরাঘুরি করতে লাগলো যে যার মতো করে। কেউ কেউ তো সমুদ্রে দাপাদাপি করতে লাগলো। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমে এলো। নাতাশা রুমের ভেতর শুয়ে পড়লো লেপ মুড়ি দিয়ে। শীতের ভেতর ট্যুরে আসা বড্ড জামেলা।নাতাশা লেপ মুড়ি দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার গরম লাগতে শুরু করলো।এদিকে কল্পকে তো এই ঠান্ডার ভেতর লেপ ছাড়াই শুতে হয়েছে। কল্পের গায়ের উপর একটুখানি লেপও দেওয়া হয়নি। বেচারা জিম কেটে শুয়ে আছে। কিছু বলতেও পারছেনা। শুধু একটা কথাই বলে সেটা হলো,
এত কিছু আল্লাহ সহ্য করবে না।
নাতাশার গরম লাগায় গা থেকে লেপটাকে ফেলে এক পাশে রাখে । বিছানাটা বেশ বড় যার কারনে দুইজনই নির্ধার্মিক ভাবে শুয়ে থাকতে পারছে। নাতাশা লেপ সরাতেই ঘুমের মাঝে শাড়ির ফাকে তার গোলাপী মসৃণ পেটের কিছু অংশ ভেদ করে দেখা যাচ্ছে। কল্পের সেদিকে চোখ পড়তেই এক অন্য রকম নেশা বইতে লাগলো তার ভেতর। ল্যাম্প শিডের হালকা আলোয় ঝাপসা ঝাপসা দেখা যাচ্ছে। তাই কল্প উঠে রুমে আলো জ্বালালো।তারপর এক নেশাগ্রস্ত চাহনিতে নাতাশার উম্মুক্ত পেটের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। মেয়েটাকে সে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছে যেটা সে বুঝেও না বুঝার মতো করে সাজিয়ে রেখেছে নিজের ভেতর। রুমে আলো জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে নাতাশাকে দেখতে লাগলো। মেয়েটাকে সেভাবে কখনো দেখাই হয়না। হোয়াইট কালার শাড়িতে মেয়েটাকে এক অপসরী থেকে কমও লাগছেনা। ঠোঁটে হালকা লাল লিপস্টিক। যেটা চেহারার সৌন্দর্যের বিস্তারিত প্রতীক স্বস্তিকা চিহ্ণতে বাড়িয়ে রেখেছে। কল্পের খুব ইচ্ছে করছে মেয়েটার ঐ আলতো নরম ঠোঁটের মিষ্টির স্বাদটা একটু নিতে। কিন্তু চাইলেই কি আর সব কিছু পারা যায়।
______________________
দরজা খোলা রেখে নীলিমা আর সিধু আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে আছে। তরু নীলিমাকে ডাকার জন্য ব্যস্ত। যেই না নীলিমার রুমের সামনে আসলো তাদের এমন অবস্থা দেখে আর দাড়ালো না সোজা চলে যেতে নিল।যেতে যেতেই প্রিয়র সাথে ধাক্কা খেল। দুজনের মাথা দুজন বারি খেলো। মাথায় ধরে তরু নিচের দিকে তাকিয়ে যেই না চলে যাবে তখনই প্রিয় তরুর হাতটা ধরে ফেলল,
#চলবে।
#ইচ্ছে_কথন
#writer_falak_moni
#পর্ব_১২
প্রিয় তরুর হাতটা ধরতেই তরু সেখানে থেমে গেল। প্রিয় তরুকে নিয়ে সোজা হাটতে লাগলো। তরু কিছুই বলছে না মাথাটাকে নিচু করে সোজা প্রিয়র সাথে হাটতে লাগলো। প্রিয় সমুদ্রের তীরে এনে দাড় করালো তরুকে।তরু এখনো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে । প্রিয়র এবার খুব রাগ হলো। কেননা মেয়েটার সাথে কখন থেকে সে নিজেই বক বক করে যাচ্ছে অথচ মেয়েটা কিছুই বলছেনা। প্রিয় বাধ্য হয়ে তরুর থুঁতনি ধরে উপরের দিকে ফেরালো। তরু প্রিয়র দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো। দুজনের চোখাচোখি হয়ে আছে। এক গভীরতা সস্নেহে জিগ্যেস করতে মন চাইছে তরুর কেন তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দিচ্ছে না প্রিয়।তরুর চোখ
জোড়া ভিজে উঠতে লাগলো বিষাক্ত নোনা জলে।প্রিয় শুধুই তরুকে দেখেই যাচ্ছে। সমুদ্রের ঢেউ আঁচড়ে এসে পড়েছে তার কুলে। সিন্ধুসভ্যতার মাতৃকামূর্তি মানব যেন এ ঢেউয়ের সাথে তলিয়ে যাওয়ার কথা। সমুদ্রের ঢেউয়ের আওয়াজে হৃদয়ক্ষরন হচ্ছে দুটি মন। অনুভূতিগুলো উচরে উঠতে ব্যস্ত ঢেউয়ের প্রবনতা৷ যে অনুভূতি গুলোর বহু দিন ধরে এক চাপ শান্ত হয়ে ছিল মনের ভেতর কোনো এক হৃদপিণ্ডতে। প্রিয় এখনো তরুকে দেখেই যাচ্ছে। তরুর এবার কিছুটা লজ্জা লাগতে শুরু করলো। এভাবে তাকিয়ে থাকলে পাশে থাকার লোকগুলো কি ভাববে। এগুলো ভাবতেই তরু একটু আলগা হতে লাগলো প্রিয়র থেকে। কিছুটা দূর দাড়িয়ে তরু বলতে লাগলো,,
আমাকে এখানে নিয়ে আসার মানেটা কি প্রিয় ভাইয়া,
প্রিয় কিছুই বলল না। তরু আবারো একই প্রশ্ন করলো।প্রিয় তরুর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
সমুদ্র দেখতে নিয়ে এসেছি।তরু মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে বির বির করে বলতে লাগলো,
ছাইপাস দেখার কোনো ইচ্ছা আমার নাই।তোমাকে দেখলেই হবে।
কি বললি??
কই না তো।
তাহলে চল ঐদিকে যাই।
প্রিয় আর তরু হাটতে ব্যস্ত। তখনই পেছন থেকে নাতাশা আসলো।তরুর চুলের ক্লিপ খুলে দিয়ে দৌড়ে চলে গেল কল্পের দিকে। কল্পের কাছে যেতেই কল্প শক্ত করে নাতাশার হাতটা ধরে বলতে লাগলো,
তুমি তরুর চুল খুলে দিলে কেন?
নাতাশা হাসতে হাসতে বলতে লাগলো।
তরুর বর কিছুটা ইন্টারেস্ট হওয়ার জন্য।
কল্প এবার নাতাশার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
তরুর বরকে ইন্টারেস্ট করার জন্য ব্যস্ত এদিকে তোমার বরের যে আর তর সইছেনা সেদিকে কি খেয়াল আছে?
নাতাশা কল্পের কথা বুঝে হাসতে গড়াগড়ি খেত লাগলো কল্প ভাবছে মেয়েটা কি সামান্য একটা কথা বলছি এভাবে হাসার কি আছে। আমি যে সিরিয়াস সেটা কি সে বুঝেনা।
সমুদ্রের প্রান্তে হাটতে লাগলো প্রিয় আর তরু। চুলগুলো খুলে দিয়েছে নাতাশা সেটা তরু বুঝেও কোনো প্রতিক্রিয়াই জানায়নি সে । দক্ষিনা বাতাসের হাওয়া তীব্র গতিতে বেড়ে উঠছে। বাতাস যতই বাড়ছে তরুর চুলগুলো ততোই যেন আহামরি হয়ে উঠছে। বাতাসের প্রবনতা বইতে বইতে এক পর্যায়ে কিছু চুল গিয়ে প্রিয়র মুখের সামনে উচরে এসে পড়ে। তরু চুল মুখের উপর পড়তেই প্রিয়র বুকের ভেতর এক অন্য রকম ঝড় বয়ে যেতে লাগলো যে ঝড়ের সুভাসের সাথে দীর্ঘ দিন যাবতো সে পরিচিত নয়। প্রিয় তরুর চুলের যাদুকরা ঘ্রান নিতে ব্যস্ত।
___________________
রাতে সবাই ডিনার সেরে আলাপে বসলো।সমুদ্রের তীরে কিছু কাঠ যাবতীয় জিনিস দিয়ে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে লাগলো সবাই।তখন সিধু বলতে লাগলো,
আসো সবাই একটা গেমস খেলি।
সিধু কথাটা বলেই পাশে একটা খাতা আর কলম নিল।তারপর তাতে নানা রকমের লেখা লিখে একটা পাত্রে ভেতর রাখলো।পাত্রের ভেতর থেকে যে যেই কাগজটা তুলে তার ভেতর যেটা লিখা থাকে সেটা করে দেখাতে হবে।
সবাই খেলার জন্য প্রস্তুত। কল্প প্রিয় নাতাশা,তরু, সিধু আকাশ, সবাই এখন অপেক্ষায় আছে। পাত্রটাকে সিধু আগে চাল দিল। চাল দিতেই যে যার হাতে একটা করে চিরকুট নিল।চিরকুট নিতেই প্রথম জিজ্ঞেস করা হলো তরুকে। তরু চিরকুট খুলে দেখলো তাতে লিখা রয়েছে গান গেয়ে দেখাতে হবে। নাতাশা কল্পের কাছ থেকে উঠে এসে বলল,
তরু তুই তো ভালো গান গেতে পারিস। এখন শোনা।
না সোনা আপু এখন পারবো না।
নীলিমা বলতে লাগলো,
তুই তো কলেজও অনেক সুন্দর সুন্দর গান গাইতি এখন কেনো আপত্তি করছিস। গা না প্লিজ দোস্ত।
সবার রিকোয়েস্টের কাছে হার মেনে তরু গাইতে লাগলো,,
চলতি সময় থমকে দাড়ায়
জেগে জেগে স্বপ্ন দেখি হায়
তোমারই নাম ধরতে চায় ফাগুন হাওয়া,
কি মায়ায় কোন সে নেশায় বারে বারে মন
ছুতে চায়,
চেনা মুখ ঘোরপাক খায় চোখের পাতায়,
আমি বার বার বহুবার তোমাকে চাই,
আমি বার বার হাজার বার তোমাকে চাই।
তরু গান গাইতেই সবায় হাত তালি দিতে লাগলো। শুধু একজন বাদে সে এক জন আর কেউ নয় প্রিয়।প্রিয় মুগ্ধ হয়ে তরুর গান শুনতে লাগলো। আসলেই মেয়েটার কন্ঠ তো খুব মিষ্টি। কল্প প্রিয়কে এমন ভাবে দেখে বলতে লাগলো,
কি হল প্রিয় তুমি তো দেখি তরুর গানের ফিদা হয়ে গেছ।
প্রিয় কিছুই বলল না শুধু একটু মুচকি হাসি দিল।গানের প্রতিটা লাইনে যে তরু তাকে অনুসরন করে গাইছে সেটা প্রিয় ডের বুঝতে পেরেছে। মেয়েটার ভেতর এত আবেগ আসে কই থেকে।
পরবর্তী চিরকুট সিধু মেলল, তাতে লিখা বউকে সবার সামনে লিপ কিস করে দেখাতে হবে। বেচারা সেটা দেখে চিরকুট মুখে দিয়ে গিলে ফেলে বলতে লাগলো,
আমারটার ভেতর কিছুই নাই। পেটে ভীষন খিদা লাগছে তাই গিলে ফেলছি।
সিধুর এমন কান্ড দেখে সবাই হাসতে লাগলো।
এবার ধরা হলো কল্পকে চিরকুট খুলে দেখাতে। কল্পের চিরকুট সিধু হাত থেকে নিয়ে নিল। তারপর সবার সামনে বলতে লাগলো,
চিরকুটে কল্পকে ক্যানভাসারদের মতো করে অভিনয় করতে বলা হয়েছে।
বলেই সিধু একটা চোখ মারলো কল্পের দিকে তাকিয়ে। কল্প সেটা বুঝতে পেরে দাড়িয়ে সিধুকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো,
আমি জানি সিধু আমার সাথে এখানে বাটপারি করা হয়েছে। কিন্তু তরা তো জানিস কল্প কোনো কিছুতেই হারতে রাজি নয়। এটা তো আমার বা হাতের খেল বলে কল্প নাতাশার গায়ে শালটা টান মেরে নিয়ে গলায় পেচালো। তারপর ক্যানভাসারদের মতো করে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে বলতে লাগলো,
রানের চিপায় চিপায় শরীরের সব খানে চুলকানি।
চুলকানি চুলকানি চুলকানি হায়রে মরার চুলকানি।
হাটে বাজারে বাচ্চা কাচ্চারে কোলে লইতে হগ্গল জায়গায় চুলকানি হায়রে মরার চুলকানি।
রাইতে যখন যাই বৌয়ের পাশে ঘুমাইতে। বউ কয় সমস্যা কি।আমি বলি চুলকানি হায়রে মরার চুলকানি।
একটুকু বলতেই সবায় হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে একে অপরের উপর। নাতাশা তো মাটিতে পড়ে লুটুপুটি খাচ্ছে। কল্প নিজের হাসি বজায় রেখে আবারো বলতে লাগলো,
নো টেনশন ডু ফর থিং। আমার কাছে আছে আকাশ ক্যমিকেল নতুন ঔষধ। যা এক বার রানের চিপায় দিলে চুলকানি থেকে পেয়ে যাবেন মুক্তি। বউরে দিবেন শান্তি। আপনে পাইবেন শান্তি।
কল্পর অভিনয় শেষ হতে আকাশ তেরে আসলো তার দিকে এসে বলতে লাগলো,
কল্প ভাই তুমি কি আর কোনো ক্যামিকেল পাইলা না। শেষ পর্যন্ত আমাকে।
#চলবে