ইস্ক সুফিয়ানা পর্ব-০৬

0
356

#ইস্ক_সুফিয়ানা
#পর্ব – ০৬
#লেখনীতে : #Aloñe_Asha (ছদ্ম নাম)
#Kazi_Meherin_Nesa

জুমার নামাজ পড়ে এসে চাচা আজ ওই বাড়িতে গেছে, তাদের আমায় দেওয়া জিনিস গুলো ফেরত দিতে..আমিও তৈরি হয়েছি আরমান স্যারের বাসায় যাওয়ার জন্য..তখন আমার চাচাতো বোন আসে রুমে

“কি গো আপু, আজ তৈরি হয়ে কোথায় যাচ্ছো? বন্ধুদের সাথে দেখা করতে?”

“না রে, সেটা আপাতত করতে পারছি না কারণ আজকেও আরমান স্যারের বাসায় ছুটতে হচ্ছে”

“সে কি, আজ না শুক্রবার, বাংলাদেশের সবার ছুটি শুধু তুমি বাদে! আজকেও যাবে ওখানে? তোমার বসকে না করে দিতে পারলে না?”

“আজকে ওনার মা যেতে বলেছেন আমাকে তাই যাচ্ছি, নাহলে যাওয়ার ইচ্ছে তো আমারও ছিলো না.. কোথায় ভেবেছিলাম একটু আরাম করবো বাড়ি বসে”

“কেনো? ওনার মা তোমায় কেনো ডাকে? তুমি ওনার মায়ের জন্যে কাজ করো নাকি, অদ্ভুত! ওনার ছেলে খাটায় এখন উনিও তোমায় খাটাবেন নাকি!”

নয়নার কথায় হেসে ফেললাম আমি, মেয়েটা আমাকে নিয়ে কত্তো ভাবে, ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে উঠে নয়নার গাল দুটো টিপে দিলাম

“ওরে আমার দাদি আম্মা, আমার মনে এতো ভাবতে হবে না তোকে!”

নয়না অভিমানী কণ্ঠে আমাকে বললো

“কেনো ভাববো না? আপু তুমি বন্ধের দিন বাড়ির সব কাজ করো, তারপর আমার সাথে একটু গল্প করার ও সময় পাও না”

“ওরে আমার বনু, এই ব্যাপার তাহলে? আচ্ছা আজ আমি জলদি চলে আসবো..এমনিতেও আজকে আমি ওয়ার্ক ডে তে তো যাচ্ছি না যে কিছু করাবে, গিয়ে একটু থেকে চলে আসবো.. যাই হোক বল কি আনবো তোর জন্যে?”

“একটা কিটক্যাট হলেই হবে”

“বেশ! তাই আনবো, আসি আমি এখন”

চাচীকে ইনফর্ম করে ব্যাগটা কাধে তুলে নিয়ে চললাম আরমান স্যারের বাড়িতে, মনটা বেশ খুশি খুশি লাগছে কারন আরমান স্যারের মা আমাকে অনেক স্নেহ করেন, আমার চাচীর থেকে যে আদর পাইনি সেটা উনি মাঝে মাঝে এভাবেই পুষিয়ে দেন! মাঝে মাঝে আরমান স্যারের ওপর হিংসে হয় আমার, আমি কিনা একটু আদর ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে মুখিয়ে থাকি উনি সেসব রোজ পান! পৌঁছে গেলাম ওনার বাড়িতে..আরমান স্যারের মা – বোন যেনো আমার অপেক্ষাতেই ছিলেন

“আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম”

“ওয়ালাইকুম আসসালাম! রুহি, এত্তো দেরি করলে কেনো? আমি তো ভেবেছিলাম সকালেই চলে আসবে, সকাল থেকেই অপেক্ষায় ছিলাম”

“সরি, আসলে বাড়িতে টুকটাক কাজ ছিলো আর আমি তো আরমান স্যারকে বলে দিয়েছিলাম যে এই সময় আসবো”

“আহা আবার ম্যাডাম কেনো বলছো? শুনতে বড্ড খারাপ লাগে! আগেও তো বলেছি অ্যান্টি বলে ডেকো!”

“জ্বি, আসলে মাঝে মাঝে খেয়াল থাকে না, আর ভুল হবেনা..আচ্ছা তোমার বাড়ির সবাই কেমন আছেন? সবাই ভালো তো?”

“জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালো আছেন”

আন্টির সাথে টুকটাক কথা শেষ হতেই পাশ থেকে মিনাল বললো

“রুহি আপু, তুমি এত্তো সম্মান দিয়ে আরমান স্যার বলো কিভাবে বলোতো? আমার ভাইয়ের প্রতি আমার তো একটুও সম্মান আসে না..তুমি ওকে আরমান বললেই পারো”

মুচকি হাসলাম আমি, আরমান স্যার আর ওনার বোনের সম্পর্কটা যে টম অ্যান্ড জেরির মতো সেটা তো আমি জানি..মুখে যাই বলুক কিন্তু একে অপরকে খুব ভালোবাসে

“দুপুরের খাবারের সময় হয়ে এলো তো..ওরা বাবা ছেলেও ফিরবে, আমি বরং রান্নাঘরে গিয়ে খাবার গরম করি”

“আর রুহি আপু, তুমি আমার সাথে চলো আমার রুমে, আজকে অনেক গল্প করার আছে তোমার সাথে”

“হ্যা, আমি দরজাটা আটকে দিয়ে আসি..যাও তুমি

“আচ্ছা”

মিনাল ওর রুমে গেলো আর অ্যান্টি রান্নাঘরে..সদর দরজা খোলা ছিলো, তো আমি আটকে দিতে এগিয়ে দরজার সামনে আসতেই আরমান স্যারের প্রবেশ..থমকে গেলাম ওনাকে দেখে, অফ হোয়াইট কালারের একটা পাঞ্জাবি ওনার পরনে, মসজিদ থেকে ফিরলেন..ওনাকে দেখতে যেনো আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে, সুন্দর বলতে কিউট টাইপের! সামনাসামনি সেভাবে পাঞ্জাবিতে দেখিনি ওনাকে, ফটোশুটের ছবি দেখেছি..তবে বাস্তব আর ছবিতে দেখার মাঝে কিছুটা তো তফাৎ আছে তাইনা? কিজানি হলো আমার, ড্যাব ড্যাব করে ওনার দিকে তাকিয়ে স্ট্যাচুর মতো ওখানেই থেমে আছি..আমার এহেন কান্ড দেখে হুট করে বাকা হেসে উনি বলে উঠলেন

“আমাকে দেখতেই থাকবে নাকি! ভেতরে আসতে তো দাও, তারপর যতো নজর দিও!”

ওনার এমন বেখাপ্পা মার্কা কথায় মারাত্মক রকম লজ্জা পেয়ে সরে দাড়ালাম আমি..নিজেই নিজের মাথায় একটা চাটি দিলাম, কি করছিলাম আমি? ঈশ! আর উনিই বা কি বললেন? নজর দিচ্ছিলাম আমি? অবশ্য ভুল বলেননি কিছু! আমি ওখান থেকে পালিয়ে আসতে যাচ্ছিলাম তখন উনি বলে উঠলেন

“এসেছো তাহলে! কখন এলে?”

“মাত্র এলাম”

“গুড! আমি তো ভেবেছিলাম আসবে না, আমার আবার তোমাকে ফোন করে আনতে হবে”

“কোনোদিন কি আগে এমন হয়েছে যে আপনি বলেছেন আর আমি সময়মতো আসিনি?”

উনি মুচকি হাসলেন!

“ইয়েস, আমি বলি বলেই তো ছুটে চলে আসো, আই নো”

“আমি আজকে এখানে আপনার জন্যে আসিনি”

“ওহ! তো আমার জন্যে আসতে বললে বুঝি আসতে না?”

“আসতে আমি বাধ্য, শত হোক আপনার বেতনভুক্ত কর্মচারী বলে কথা, আসতে তো হবেই আমাকে তবে এই বন্ধের দিন আসতাম না যদি অ্যান্টি না বলতো”

“আচ্ছা! আমার জন্যে যখন আসোনি তাহলে আমাকে দেখেই ঐরকম ফ্রিজড হয়ে গেছিলে কেনো? চোখ দুটো আলু হয়ে গেছিলো তোমার যখন দেখছিলে আমাকে”

লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছি আমি, কেনো যে এমন একটা কান্ড করে বসলাম, এবার তো উনি এই ব্যাপারটা নিয়ে সবসময় টিজ করবেন..তখনই উনি কিছুটা ভাব নিয়ে বললেন

“মসজিদ থেকে আসার সময়ও দেখলাম কতগুলো মেয়ে দেখছিলো আমাকে, ব্যাপার কি বলোতো! আজকে আমাকে একটু বেশিই হ্যান্ডসাম লাগছে নাকি?”

“ওইটা তো আমি এমনি, ধুর! আপনার সাথে কথা কেনো বলছি! যে কাজে এসেছি সেটা করি গিয়ে”

পালিয়ে চলে গেলাম মিনাল এর রুমে..ওখানে ওনার সামনে আর দু মিনিট থাকলে উনি যে আরো কি কি বলতেন আল্লাহ জানে! মিনাল আর আমি গল্প করছি, মেয়েটা অনেক মিশুক টাইপের, একদম আমার চাচাতো বোনের মতোই! একটু বাদেই দেখলাম গুটি গুটি পায়ে আরমান স্যার এলেন ওই রুমে, পাঞ্জাবি ছেড়ে এবার পেস্ট কালারের একটা টি শার্ট আর ট্রাউজার পড়েছেন..আমি আরচোখে ওনাকে দেখেছি, পুরোপুরি তাকানোর সাহস পাচ্ছি না

” হোয়াট ইজ গোয়িং অন হেয়ার?”

“কি হচ্ছে সেটা তোকে জানাবো কেনো? তাছাড়া তোর এখানে কি কাজ? দুমিনিট দেখি শান্তিতে থাকতে পারবো না তোর জন্যে”

উনি এবার কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বললেন

“তুই রুহিকে এই রুমের মধ্যে এনে বন্দী করে রেখেছিস কেনো? নাহলে তো আমাকে আর এখানে আসতে হয় না”

কি অদ্ভুত কথা বলছেন উনি এগুলো? মিনাল উত্তর দেবার আগেই আমি বলে উঠলাম

“ও আমাকে বন্দী করতে যাবে কেনো? গল্প করছিলাম আমরা দুজনে”

“তুমি কি এখানে ওর সাথে গল্প করতে এসেছো? এসে থেকেই দেখছি সবার জন্যে টাইম আছে তোমার শুধু আমার জন্যেই নেই”

“আপনার কোনো দরকার আছে নাকি? এতক্ষণ তো বললেন না.. তাহলে তো আমি”

“দরকার আর কাজ ছাড়া আমাকে টাইম দেওয়া যাবে না এটা কোন চুক্তিপত্রে লিখা আছে? আই অ্যাম নোটিসিং দ্যাট ইউ আর ইগ্নোরিং মি রুহি”

চমকে গেলাম ওনার কথা শুনে, এভাবে কথা বলছেন কেনো উনি হঠাৎ করে? মিনাল ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ওনার দিকে! বুঝলাম শুধু আমি না মিনাল ও ওনার এইরকম কথাবার্তা শুনে অবাক!

“মা খেতে ডাকছে তাই ডাকতে এসেছিলাম..চলো দুজনে!”

স্বাভাবিকভাবে কথাটা বলেই উনি চলে গেলেন, আমার ওনার এরূপ আচরণ দেখে কিছুটা চিন্তা হচ্ছে, কি হয়েছে ওনার? আগে তো এমন করেননি তাহলে এখন এমন করার কারণ কি? খেতে বসেছি সবাই একসাথে, মিনাল আর আমি পাশাপাশি বসেছি, হুট করে উনি এসে আমার মুখোমুখি চেয়ারটা আরেক পাশের চেয়ারটা দখল করে নিলেন! আমি জানি উনি ইচ্ছে করে ওখানে বসেছেন, ওখানে বসে উনি নানারকম এক্সপ্রেশন দেবেন আমার উদ্দেশে, আমি বাবা চোখ নামিয়ে রাখাটাই শ্রেয় মনে করলাম! অ্যান্টি সবাইকে খাবার বেড়ে দিলেন, ওনার বাবা নাকি বাইরে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেছেন, তাই লাঞ্চের সময় উনি উপস্থিত নেই..খাওয়ার এক পর্যায়ে অ্যান্টি আমাকে বললেন

“যদি কিছু মনে করো না রুহি, একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?”

“হ্যা বলুন”

“আরমান বললো তোমার বিয়েটা নাকি ভেঙে গেছে, কি হয়েছিলো”

নিরব হয়ে গেলাম আমি, কি বলবো আন্টিকে? এত্তো ঘটনা যে হয়ে গেলো সেগুলোর সব তো বলা সম্ভব নয় আর আমি চাইও না আমার চাচীর করা কু কীর্তি কারো সামনে প্রকাশ করতে

“জ্বি আসলে”

আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে আরমান স্যার উত্তর দিয়ে দিলেন

“ভেঙে যায়নি মা, ছেলেটা রুহির যোগ্য ছিলো না তাই ওর আঙ্কেল নিজে ভেঙে দিয়েছেন, আমি মনে করি উনি ঠিক কাজটাই করেছেন”

অবাক চোখে তাকালাম আমি ওনার পানে, আমি তো ওনাকে একবারও বলিনি আমার চাচা বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন তাহলে উনি কিভাবে জানলেন এটা? তারমানে কি উনিই আমার চাচাকে বলেছিলেন এমন করতে?

“যাক! তাহলে তো ভালোই হয়েছে, তুমি একটা ভালো ছেলে ডিসার্ভ করো,এরপর তোমার ফ্যামিলিকে বলে দেবে তোমার জন্যে ছেলে খোজার ব্যাপারে যেনো সতর্ক থাকে”

“একদম! তাছাড়া রুহি আপুর বিয়ে যতো দেরিতে হবে ততো ভালো, বিয়ের পর যদি আপুকে আর এই চাকরি করতে না দেয় তাহলে তো আমাদের দেখাই হবেনা আর”

আমি কোনো উত্তর দিলাম না, আসলে বিয়ে করার ইচ্ছেটাই যেনো আমার মন থেকে মরে গেছে

“আমি আছি কি করতে? দরকার হলে আমি রুহির জন্যে ছেলে চুজ করবো.. যে ওর যোগ্য হবে আর ওকে রেসপেক্ট করতে পারবে”

“তুই নিজের চিন্তা কর আগে ভাইয়া, নিজের জন্যে তো মেয়ে খুঁজতে পারিস না আবার এসেছে রুহি আপুর জন্যে ছেলে খুঁজতে”

ওনারা দুই ভাইবোন আবার ছোটখাটো একটা কথার লড়াই করে নিলো আর আমি খাওয়া বাদ দিয়ে ওনাকে দেখছি! যতো দেখছি যতো ওনার কথা শুনছি ততো অবাক হচ্ছি..কেনো যেনো আমার মনে হচ্ছে উনি ইদানিং আমাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, আমার সাথে জড়িয়ে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছেন যেগুলো আগে কোনোদিন করতে দেখিনি.. আরোসব অদ্ভুত অদ্ভুত ভাবনারা আমার মস্তিষ্ক ঘিরে ধরেছে, আমি যেটা ভাবছি সেটা কি ঠিক? নাকি মনের ভুল?

আমি, অ্যান্টি আর মিনাল মিলে কিছুক্ষণ গল্প করলাম..অ্যান্টি তিন রকমের পিঠে বানিয়েছেন সেগুলো স্বযত্নে খাওয়ালেন আমাকে, সত্যি বলতে মন ভরে গেছে আমার, খাওয়ার জন্য নয় বরং ওনার স্নেহ আর ভালোবাসা দেখে..খাওয়া শেষে আমি গেলাম ওনার ঘরে, ঠিক করেছি আজকে ওনার এই ভালো এক খারাপ আচরণের রহস্য উদঘাটন করেই ছাড়বো..নক করে ঢুকলাম ওনার রুমে, উনি তখন ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত..আমাকে একবার তাকিয়ে দেখে উনি আবার ল্যাপটপে মুখ গুজলেন

“কি ব্যাপার! তোমার তো আজকে আমার কাছে কোনো কাজ নেই..তাহলে সাডেনলি এখানে কেনো?”

“আমার কিছু জিজ্ঞাসা করার আছে আপনাকে”

“বলো”

“আপনার কি হয়েছে? দুদিন ধরে দেখছি কেমন যেনো করছেন, আগের মতো নেই আপনি..এই রেগে যান আমার ওপর আবার এই এত্তো সুইট বিহেভ করেন..এই আজকেও তো এমন করলেন..ব্যাপারটা কি খুলে বলুনতো আমাকে”

উনি একটু চুপ থেকে দু কথায় উত্তর দিলেন

“কিছু হয়নি”

“রাগ করেছেন আপনি আমার ওপর!”

“তোমার ওপর রাগ কেনো করতে যাবো আমি? যা খুশি তাই বলো না”

“বললেই হলো? আপনাকে আমি চিনি, কোনো কারণ ছাড়া এমন করার মানুষ আপনি নন..বলুন না কি হয়েছে, কোনো দোষ করেছি আমি?”

উনি ল্যাপটপ বন্ধ করে মাথা তুলে তাকালেন আমার দিকে

“যদি বলি করেছো তাহলে কি করবে?”

“নিজের ভুল শোধরানোর চেষ্টা করবো”

উনি একটু চুপ থেকে কিছু একটা ভাবলেন, হুট করেই ওনার মুখে বাকা হাসিটা ফুটে উঠলো, এটা দেখে তো এখন আবার আমার চিন্তা হচ্ছে, কারণ যখন যখন উনি এই রহস্যজনক হাসি দেন তখনই উদ্ভট কিছু করেন

“ওকে! পরে তোমাকে বলবো কিভাবে তুমি নিজের ভুল শোধরাতে পারবে.. রিমেম্বার আমি যা বলবো তাই করতে হবে..কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না..রাজি?”

আমি কিছু না জেনেশুনেই হ্যা সূচক মাথা নেড়ে রাজি হয়ে গেলাম, কোনো প্রশ্ন করলাম না, উনি এতে খুশি হলেন..উনি কি যে বলছেন, কি করতে চাইছেন কিছুই না জেনে রাজি হলাম? পরে ভেবে দেখলাম এখন শুধু ওনার না, মনে হয় আমারও কিছু একটা হয়ে গেছে! মারাত্মক কিছু একটা হচ্ছে আমার সাথে, যেটা বোধহয় এখনও বোঝার সময় আসেনি! আরমান স্যারের বাড়ি থেকে বেরোতে বেরোতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো, অ্যান্টি আমার জন্যে পিঠেও প্যাক করে দিয়েছেন যাতে বাড়ি এসেও খেতে পারি..আসার সময় রাস্তায় আরমান স্যারের বাবার সাথে দেখা হয়েছিলো, আমি সালাম দিতেই যাচ্ছিলাম তখন উনি গম্ভীর কণ্ঠে প্রশ্ন করে বসেন

“আজকেও আরমান তোমাকে আসতে বলেছিলো?”

“জ্বি..আসলে অ্যান্টি”

“ঠিক আছে, সাবধানে যেও”

উনি আমার পুরো কথা না শুনেই চলে গেলেন, আমি জানি উনি আমাকে বিশেষ পছন্দ করেন না..মিনাল এর মুখেও শুনেছি আর ওনার আমার সাথে কথা বলার ভঙ্গি দেখেও অনেকটা নিশ্চিত হয়েছি এই ব্যাপারে..আমিও এটাকে স্বাভাবিক ভেবেই নিয়েছি..ওই বাড়ির সবাইকে আমাকে পছন্দ করতেই হবে তার তো কোনো বাধা নিয়ম নেই!

চলবে….

[ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন..!!]