#এই_মন_তোমারি [ ভালোবাসা নাকি ঘৃণা]
#পর্ব_২০
#লেখনীতে_নুজাইফা_নূন
-” রাত দশটার সময় শাফায়াত এসে কলিং বেল দিলে মাজেদা গিয়ে দরজা খুলে দেয়। শাফায়াত রুমে প্রবেশ করে দেখতে পায়, সূরা আজ সাজগোজ করেছে।বেশ অন্যরকম লাগছে তাকে। সে নিজের মতো করে পড়ছে। তাদের থেকে একটু দূরে নুজাইফা বসে এক ধ্যানে আরাবের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।আর আরাব এক রাশ মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে সূরার দিকে।যা দেখে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসে শাফায়াতের। শাফায়াত আরাবের দিকে এগিয়ে আসে।তাকে দেখে আরাব সালাম দিয়ে হ্যান্ডশেক করে জিজ্ঞেস করে , কেমন আছেন ভাইয়া?”
-“আরাব ছেলেটা কে পার্সোনালি ভালোই লাগে শাফায়াতের। ছেলেটা দেখতে যেমন মাশাআল্লাহ তেমনি অনেক ব্রিলিয়ান্ট ।আবার ব্যবহার ও খুব মিষ্টি। ভার্সিটি তে পড়াশোনা করে অথচ এ পর্যন্ত ছেলেটার নামে কোনো প্রকার বাজে কথা শোনা যায় নি।তার না আছে কোনো বাজে সঙ্গ ,আর না আছে কোনো বাজে নেশা। পড়াশোনার বাইরে ছেলেটা আর কিছুই চিনে না।সব মিলিয়ে অসাধারণ একটা ছেলে। কিন্তু সেই অসাধারণ বাচ্চা একটা ছেলেকে যেন আজ শাফায়াতের সহ্য হচ্ছে না। হিংসা হচ্ছে তার প্রতি।এক প্রকার বিরক্তি নিয়ে বললো, এই তো আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?”
-” আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ভাইয়া।”
-” পড়াশোনা কেমন চলছে তোমার?শুনেছি তুমি নাকি পড়াশোনা ছাড়া কিছুই বোঝো না।তা গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি?”
-” আরাব লজ্জা পেয়ে বললো, কি যে বলেন ভাইয়া।”
-” লজ্জা পাওয়ার কি আছে? বর্তমান ডিজিটাল যুগ, থাকতেই পারে। শাফায়াত মনে মনে চায়ছে আরাব বলুক আমার গার্লফ্রেন্ড আছে। কিন্তু তার ধারণা পাল্টে দিয়ে আরাব বললো, পড়াশোনার সুবাদে অনেক মেয়েদের সাথে পরিচয় হয়েছে। অনেক সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে প্রপোজ করছে। এমনকি তারা একান্তে ঘনিষ্ঠ মূহুর্ত কাটানোর ও আহ্বান করেছে। কিন্তু আমার কাছে তাদের কে বেহায়া ছাড়া আর কিছুই মনে হয় নি।আমি চেয়েছি একজন লজ্জাবতী নারী। লজ্জাবতী গাছের পাতায় যেমন সামান্য স্পর্শ পেলে ও নিজেকে গুটিয়ে নেয় ,আমি ও চেয়েছি আমার জীবনে এমন এক লজ্জাবতী আসুক।যে অন্য মেয়েদের মতো মর্ডান হয়ে শরীর দেখিয়ে ঘুরে বেড়াবে না, অন্য পুরুষের সাথে যার চলাফেরা থাকবে না।যার শরীরে শুধু মাত্র আমার স্পর্শ থাকবে। যে আমার সামান্য স্পর্শ পেলে লজ্জায় লাল হয়ে যাবে, আর আমি সেই লাজে রাঙা মুখের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবো।”
-” এখনো পাও নি বুঝি তোমার লজ্জাবতী কে?”
-“আরাব সূরার দিকে তাকিয়ে বললো, পাই নি।তবে খুব শ্রীঘ্রই পেয়ে যাবো।”
-” শাফায়াত ব্যাপার টা লক্ষ্য করলো।সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে বললো,এবার তো তোমার ফাইনাল ইয়ার তাই না? পরীক্ষা কবে ?”
-” হ্যাঁ ভাইয়া। পরীক্ষার কথা শিওর বলতে পারছি না। নির্বাচনের আগেও হতে পারে আবার পরেও হতে পারে।”
-” গ্ৰাজুয়েশন শেষ করে পরবর্তী প্ল্যান কি?”
-” বিসিএস দেওয়ার ইচ্ছা আছে ভাইয়া।”
-” মন দিয়ে পড়াশোনা করো। অল দ্যা বেস্ট। অতঃপর শাফায়াত সূরার দিকে তাকিয়ে বললো, আমার রুমে আসো তো।”
-” আমি তো পড়ছি পুলিশ।”
-” আজকের মতো আর পড়া লাগবে না।একদিন পড়ে বিসিএস ক্যাডার হয়ে যাবে নাকি?”
-” আরাব লক্ষ্য শাফায়াত কেমন রেগে রেগে কথা বলছে।এক পর্যায়ে আরাব বললো, সূরা! ভাইয়া কি বলে শুনে এসো। সমস্যা নেই ,আমি অপেক্ষা করছি।”
-” আরাবের কথা শুনে শাফায়াত বললো, তোমার কিছুদিন পর ফাইনাল পরীক্ষা। তুমি বরং আজ চলে যাও। আমি বাকিটা ওকে দেখিয়ে দিবো।”
-” না না ভাইয়া।এটা আমার ডিউটি।আমি আন্টিকে কথা দিয়েছি, সূরা কে আমার সবটুকু দিয়ে শেখাবো। তুমি যাও সূরা । আমি অপেক্ষা করছি।”
-” শাফায়াত কিছু বলতে যাবে তার আগেই নুজাইফা বই খাতা নিয়ে এসে বললো, আরাব ভাইয়া! সূরা যতোক্ষণ পর্যন্ত না আসে আপনি বরং আমাকে এই ম্যাথ টা বুঝিয়ে দিন।”
-” ঠিক আছে।বসো।”
__________________________________
-” শাফায়াত রুমে এসে দরজায় লাথি মেরে বললো,এসব কি হচ্ছে আমার সাথে? মেয়েটা কে তো আমি আমার স্ত্রী হিসেবে মানি না। তবু ও কেনো মেয়েটার প্রতি আরাবের দূর্বলতা আমার হৃদয়ে ব্যাথার সৃষ্টি করছে? কেন আমার ইচ্ছে গুলো অবাধ্য হয়ে উঠছে? কেনো দিন দিন আমি লাগামহীন ঘোড়ার মতো বেশামাল হয়ে উঠছি? আমি কি দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছি? একটা বাচ্চা ছেলের সাথে আজ কেমন অমানুষের মতো আচরণ করলাম আমি? তবু ও রাগ কমছে না।মনে হচ্ছে ছেলেটা কে দু চার ঘা দিতে পারলে শান্তি লাগতো।এসব কিছু হয়েছে ঐ বেয়াদব অ’স’ভ্য মেয়েটার জন্য। মেয়েটা আমাকে দুদণ্ড শান্তি তে থাকতে দিচ্ছে না। শাফায়াত এসির মধ্যে ও ঘেমে একাকার হয়ে গেছে। সে নিজের গাঁয়ের শার্ট , গেঞ্জি খুলে নিচে ছুড়ে ফেলে দিলো।আর তখনি সূরা রুমে প্রবেশ করলো। শাফায়াত কে এই অবস্থায় দেখে যেন সূরার সারা শরীরে অদ্ভুত এক নাম না জানা শিহরণ বয়ে গেল।যার সাথে সূরার পূর্ব পরিচয় নেই। অদ্ভুত এক ভালোলাগায় জেঁকে বসে তার সারা শরীরে। সূরা লজ্জায় দু হাতে নিজের মুখ ঢেকে নিলো। সূরা কে দেখা মাত্র শাফায়াত তাকে টেনে রুমের মধ্যে নিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে দিয়ে সূরা কে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো, এতো সাজগোজ করেছো কেনো?নায়িকা সাজার শখ জেগেছে বুঝি? নাকি এইভাবে সাজগোজ করে পরপুরুষ কে নিজের প্রতি আকর্ষিত করতে চায়ছো?”
-“শাফায়াতের কথায় সূরার কোমল হৃদয় ব্যথিত হলো। সে মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দিয়ে বললো, ছিঃ ছিঃ ! পুলিশ আমাকে এতো খারাপ মেয়ে মনে করে?আমি তো আরাব ভাইয়ার দিকে একনজর তাকিয়ে ও দেখি নি, সে দেখতে কেমন? অথচ পুলিশ কি না কি ভাবছে?”
-“সূরার থেকে রেসপন্স না পেয়ে শাফায়াত সুরার বাহু জোরে চেপে ধরে বললো, আমি কি বলছি কথা কানে যাচ্ছে না তোমার?
-“আমি তো সাজতে চাই নি সুন্দর ব্যাডা মানুষ।মা জোর করে সাজায় দিছে।বলছে আরাব ভাইয়ার সামনে পরিপাটি হয়ে যেতে।”
-” শাফায়াত সূরার হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের পকেট থেকে রুমাল বের করে সূরার গাল চেপে ধরে ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দেয়, চোখের কাজল এলোমেলো করে দিয়ে সূরার গা থেকে ওড়না ফ্লোরে ফেলে দিয়ে বললো, যে ওড়না পরপুরুষের সামনে মাথায় থাকে না ,সেই ওড়না গায়ে রাখার কি দরকার? আবার নিজের লম্বা চুলগুলো ছেড়ে সবাইকে দেখিয়ে বেড়াচ্ছো তোমার চুল কতো সুন্দর ,কতো লম্বা তাই না? তোমার এই চুল এক্ষুনি এই মুহূর্তে আমি কে’টে আর্মি ছাঁট দিয়ে দিবো। তারপর দেখবো তোমার নায়িকা সাজা আসে কোথা থেকে? কিভাবে ছেলেদের চুল দেখিয়ে বেড়াও?”
-” শাফায়াত এতো জোরে সূরার গাল চেপে ধরে যে ব্যাথায় সূরার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সে শাফায়াতের থেকে নিজকে ছাড়ানোর কোনো চেষ্টা’ই করে না। বরং প্রিয় মানুষ টার সান্নিধ্য পেয়ে তার ভালো লাগে।তার দেওয়া যন্ত্রণায় সূরার সুখ সুখ অনুভব হয়। তার হার্ট বিট বেড়ে যায়। মনের মধ্যে হাজারো সুখের প্রজাপতি উড়তে থাকে। সূরা দুহাতে আঁকড়ে ধরে শাফায়াত কে। প্রাণভরে তার গাঁয়ের মিষ্টি ঘ্রাণ শুঁকে নেয়। তার শক্তপোক্ত লেমশ বুকে অধর ছুঁয়ে দেয়। কিন্তু এতেও যেন শাফায়াতের রাগ কমে না। বরং বেড়ে যায়।সে নিজের আক্রোশ মেটাতে আঁকড়ে ধরে সূরার অধর। নিজের সমস্ত রাগ , ক্ষোভ , আক্রোশ মেটাতে থাকে সূরার কোমল অধর জোড়ায়।
চলবে ইনশাআল্লাহ।।
#এই_মন_তোমারি
#পর্ব_২১
#লেখনীতে_নুজাইফা_নূন
-” শাফায়াত এতো জোরে সূরার গাল চেপে ধরেছে যে ব্যাথায় সূরার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সে শাফায়াতের থেকে নিজকে ছাড়ানোর কোনো চেষ্টা’ই করে না। বরং প্রিয় মানুষ টার সান্নিধ্য পেয়ে তার ভালো লাগে।তার দেওয়া যন্ত্রণায় সূরার সুখ সুখ অনুভব হয়।তার হার্ট বিট বেড়ে যায়।মনের মধ্যে হাজারো সুখের প্রজাপতি উড়তে থাকে।সূরা দুহাতে আঁকড়ে ধরে শাফায়াত কে। প্রাণভরে তার গাঁয়ের মিষ্টি ঘ্রাণ শুঁকে নেয়।তার শক্তপোক্ত লোমশ বুকে অধর ছুঁয়ে দেয়। কিন্তু এতে ও যেনো শাফায়াতের রাগ কমে না। বরং বেড়ে যায়।সে নিজের আক্রোশ মেটাতে আঁকড়ে ধরে সূরার অধর। নিজের সমস্ত রাগ, ক্ষোভ, আক্রোশ মেটাতে থাকে সূরার কোমল অধর জোড়ায়।এক পর্যায়ে শাফায়াত যখন দেখলো সূরা সমস্ত ব্যাথা সহ্য করেও নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার কোনো চেষ্টা’ই করছে না , তখন সে সূরা কে ছেড়ে দিয়ে বললো,
-“নেক্সট টাইম যদি আবারো একই ভুল করো,তাহলে কিন্তু এর থেকেও খারাপ কিছু হবে তোমার সাথে। খারাপ কিছু মানে বুঝতে পেরেছো তো? শুধু আরাব কেনো কোনো পুরুষ মানুষের সামনেই তুমি সাজগোজ করে চুল ছেড়ে যাবে না। অনেক চেষ্টা করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পেরেছি যার কারণে তোমার লম্বা চুলগুলো এখনো কাটিনি। কিন্তু নেক্সট টাইম তোমাকে সেই সুযোগ আর দেওয়া হবে না। বুঝতে পেরেছো?”
-” সূরার চোখের পলক পড়লো না। নিষ্পলক চোখে তার সামনে থাকা রাগান্বিত মানুষ টার মুখশ্রীর দিকে চেয়ে থাকলো। শাফায়াত লক্ষ্য করলো সূরার ঠোঁট অনেকটা কে’টে গিয়ে ব্লিডিং হচ্ছে।যা দেখে শাফায়াতের বুক ধুক করে উঠলো। নিজের কাছেই নিজেকে বড্ড অচেনা লাগছে শাফায়াতের।সে কিভাবে পারলো বাচ্চা একটা মেয়ের সাথে এমন অমানুষের মতো আচরণ করতে? শাফায়াত আর কিছু ভাবতে পারে না।তার বুকে চিনচিনে ব্যথা অনুভব হয়।সে বুঝতে পারে এই গাইয়া মেয়েটা একটু একটু করে তার মন হরণ করে নিয়েছে।তার মনের মালকিন হয়ে উঠেছে।সে না চায়তেও এই গাইয়া বেয়াদব অ’স’ভ্য মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছে। মেয়েটা অন্য কারো হবে বা অন্য কেউ তার প্রশংসা করবে এটা সহ্য করতে পারে নি শাফায়াত। শাফায়াত এক পা এক পা করে এগিয়ে যায় সূরার দিকে।কোন কিছু না ভেবে আবারো সূরার অধরে নিজের অধর মিলিয়ে দেয়।পরম যত্নে শুষে নিতে থাকে সূরার অধরে লেগে থাকা র’ক্ত। বেশ কয়েক মিনিট পরে শাফায়াত সূরা কে ছেড়ে দেয়। ইউটিউব দেখে চুল খোঁপা করা শিখে সূরার চুল সুন্দর করে খোঁপা করে দিয়ে ফ্লোর থেকে সূরার ওড়না তুলে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বললো, এখন থেকে এভাবেই আরাবের সামনে যাবে। আর আরাব যদি কখনো তোমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে , তুমি সোজা তাকে বলে দিবে তুমি আমার বিয়ে করা বউ ।ওকে?”
-” সূরা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো।”
-” আরাব কি আমার থেকে ও সুন্দর?”
-” জানি না। আমি তো তার দিকে সেইভাবে তাকায় দেখি নি পুলিশ।”
-” এইতো গুড গার্ল।”
-” সূরা কিছু না বলে রুমের বাইরে আসার আগেই শাফায়াত সূরার হাত ধরে বললো, গাধা আমি মাথায় ঘোমটা দিয়ে যেতে বলেছি তারমানে এটা নয় যে তুমি এইভাবে তার সামনে চলে যাবে। শাফায়াত সূরা কে আয়নার সামনে নিয়ে এসে বললো, আয়নায় একবার তাকিয়ে দেখো নিজেকে কেমন পেত্মীর মতো লাগছে।আমি নিজেই আমার বউ দেখে ভয় পাচ্ছি।না জানি আরাবের কি অবস্থা হবে। ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে তারপর পড়তে যাও।আর হ্যাঁ পড়া শেষ হলে সোজা আমার রুমে চলে আসবে।আরাব যেগুলো পড়াবে সেগুলো আবার আমি তোমাকে দেখিয়ে দিবো। তাহলে দেখবে পড়া সহজ লাগবে তোমার কাছে।সবটা তাড়াতাড়ি নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারবে।”
-” ঠিক আছে পুলিশ।”
-” সূরা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখে শাফায়াত রুমে নেই।সূরা মাথায় ঘোমটা টেনে রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে শফিকুল দেওয়ান এর সাথে দেখা হয়। শফিকুল দেওয়ান রাগান্বিত হয়ে তাকিয়ে থাকে সূরার দিকে।যেন তার চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে সূরা একটু ভয় পেয়ে যায়।সে কি করবে বুঝতে না পেরে শফিকুল দেওয়ান এর পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ায় জন্য পা বাড়ানোর আগেই শফিকুল দেওয়ান বললো, দাঁড়াও মেয়ে।”
-” ব্যাস সূরার পা থরথর করে কাঁপতে থাকে।সে এই মানুষ টাকে অনেক ভয় পায়।তার ভয় আরো বাড়িয়ে দিতে শফিকুল দেওয়ান এসে বললো, তুমি শাফির রুমে কি করছিলে?তোমাকে না বলেছি তুমি শাফির আশেপাশে থাকবে না।তোমার জন্য আমার আর নাজমার সম্পর্ক খারাপ হয়েছে।এখন তুমি আবার চায়ছো আমার বিজনেস ও খারাপ হোক। আমার ফ্রেন্ডের মেয়ে তরী এই বাড়ির বউ হয়ে এলে আমি কোটিপতি হয়ে যাবো। তখন আর নাজমার মুখে দিনরাত খোঁটা শুনতে হবে না।তোমাকে আবারো বলছি তুমি শাফির থেকে দূরে দূরে থাকবে।মেয়েরা হচ্ছে আস্ত ছলনাময়ী। তুমি ছলনা করে একবার যদি আমার ছেলেটাকে নিজের বশে নিয়ে যাও , তাহলে আমার এতো দিনের সব পরিশ্রম ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমার ছেলে হারাবে রাজকন্যা , আর আমি হারাবো রাজত্ব।তোমাকে যেনো আর কখনো শাফির আশেপাশে না দেখি।তাহলে কিন্তু কাকা বলে ডাকার জন্য সেলিম কে এই ধরণীতে পাবে না তুমি।আর আমার কথা শুনে চললে অনেক অনেক টাকা পাবে তুমি।তবে এই ব্যাপারে কেউ যেন কিছু জানতে না পারে। কথাটা মাথায় রেখো।’
-” সূরা ভাবতেও পারে নি শফিকুল দেওয়ান এতোটা নোংরা মনের।সে চোখের পানি মুছে বললো, আমি গরীব হতে পারি। কিন্তু লোভী না আব্বা।আপনি যা বলবেন আমি তাই শুনবো আব্বা। তবু ও আপনি আমার কাকার কোনো ক্ষতি করবেন না দয়া করে।বাবার পরে সেলিম কাকা আমাকে বাবার আদর স্নেহ ভালবাসা দিয়ে বড় করেছে।আমি এক বাবা হারায়ছি , অন্য জন কে আমি হারাতে পারবো না আব্বা।”
-” এইতো লাইনে আসছো মেয়ে। যখন সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠে তখন ঠিক এভাবেই আঙ্গুল বাঁকা করতে হয়। আর কয়েক মাস পরে তোমাদের বিয়ের ছয় মাস পূর্ণ হবে। তুমি শাফি কে ডিভোর্স দিয়ে এই বাড়ি থেকে চিরদিনের জন্য চলে যাবে।তোমার ছায়াও যেন শাফি দেখতে না পায়। আমি তরী কে এই বাড়ির বউ করে নিয়ে আসবো।তরী’ই এই বাড়ির যোগ্য বউ।”
-” ডিভোর্সের কথা শুনে বুকটা খা খা করে উঠে সূরার।সে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে শফিকুল দেওয়ান এর পা জড়িয়ে ধরে বললো, এমন টা বলবেন না আব্বা। পুলিশ কে বড্ড ভালোবাসি আমি।তাকে ছাড়া নিজের অস্তিত্ব কল্পনা ও করতে পারি না।আমি তাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না আব্বা।আপনি দয়া করে এই বাড়ি থেকে আমাকে তাড়িয়ে দিবেন না আব্বা। দরকার হয় আমি কাজের লোক হয়ে এই বাড়ির এই কোণে পড়ে থাকবো। তবুও পুলিশ কে ছেড়ে যাওয়ার কথা বলবেন না আব্বা। আমি ম’রে যাবো তাকে ছাড়া।”
-” সূরার চোখের পানিতে মন ভেজে না শফিকুল দেওয়ান এর।তিনি কিছু না বলে সূরার থেকে জোর করে নিজের পা ছাড়িয়ে নিয়ে নিজের রুমে চলে যান।”
চলবে ইনশাআল্লাহ।।