এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বেয়াইন পর্ব-১১

0
302

#এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন
#পর্ব_১১
#লেখক_মোঃ_আঃ_আজিজ
.
কলেজের মধ্যে ঢুকতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো। আমি ভাবতেও পারি নাই কলেজে ঢুকেই প্রথমে এই মেয়েটার সম্মুখীন পরতে হবে😒। কারণ আমার সামনে রিয়া দাঁড়িয়ে আছে
আমি রিয়াকে দেখেও না দেখার মতো করে রিয়াকে পাশ কাটিয়ে যেতে লাগলাম। অমনি রিয়া,,,,,,,,,
রিয়া– ওই আজিজ দাঁড়াও।
আমি দাঁড়িয়ে গেলাম, আর রিয়া এক প্রকার দৌড়ে আমার কাছে চলে আসলো।
রিয়া– কেমন আছো আজিজ?
আমি– ভালো তুমি?
রিয়া– খুবই ভালো। আচ্ছা আজিজ শুনলাম তুমি নাকি জান্নাত কে বিয়ে করেছো?
আমি– হুম।
রিয়া– কাজ টা কি তুমি ঠিক করলে আজিজ?
আমি– মানে,, কি বলতে চাচ্ছো তুমি?
রিয়া– মানে কিছু না। আচ্ছা আজিজ একটা কথা বলো তো জান্নাত এর মধ্যে কি এমন পেলে যা আমার কাছে ছিলো না। জান্নাত তোমায় কি এমন সুখ দিতেছে যা আমি তোমায় দিতে পারতাম না? আমি কি তোমাকে জান্নাত এর থেকে বেশি আমি তোমায় সুখ দিতে পারতাম না।
আমি– রিয়া তুমি একটু বেশি বলে ফেলছো না?
রিয়া– বেশি বলিনি আজিজ! তুমি হয়তো যানো না এই কলেজের শুধু স্টুডেন্টরাই আমার জন্য পাগল না অনেক স্যারও আছে যারা আমার জন্য পাগল। আর আমি শুধুই তোমার জন্য পাগল।
আমি– ছিহ রিয়া তুমি কি সত্যি পাগল হয়ে গেলে নাকি কি বলো এগুলা?
রিয়া– হে হে আমি পাগল হয়ে গেছি। তোমার জন্য পাগল হয়ে গেছি। আচ্ছা তুমি চাইলেই পরিক্ষা করে নিতে পারো কার কাছে বেশি সুখ পাও তুমি আমার কাছে নাকি ওই জান্নাত এর কাছে। এসো আমার সাথে আসো কমন রুমে থেকে তোমাকে দেখিয়ে নিয়ে আসি কে বেশি সুখ দিতে পারে। ( বলেই রিয়া আমার হাত ধরে টানতে লাগলো। আমি রিয়ার হাতটা ছাড়িয়ে রিয়াকে একটা গালে থাপ্পড় মেরে বললাম)
আমি– ছিহ রিয়া তুমার মন অমানুষিকতা এত টা নিচ। তোমাকে আমি একটা ভালো মেয়ে মনে করে ছিলাম। কিন্তু তুমি?
রিয়া– তুমি আমাকে মারলে আজিজ? তুমি হয়তো যানো না আজিজ আমি যা চাই তাই পাই। দরকার পরলে জোর করে আদায় করে নেই আর যদি তাও না পাই তাহলে কাউকে পেতে দেই না।
আমি– হা হা হা এমন কমন ডাইলোগ সবাই দেয়, আমিও তোমাকে তার বেতিক্রম মনে করি না।
রিয়া– হুহ আমি কি জিনিস তুমি এখনো যানতে পারোনি আজিজ।
আমি– তুমি কি করতে চাচ্ছো?
রিয়া– wait and see.👿 ওহ sorry sorry তুমি তো বেশিক্ষণ দেখতেও পারবে না।
ওই তোরা কোথায় চলে আয়।
সাথে সাথে অনেক গুলা ছেলে এসে আমাকে চার দিক দিয়ে ঘিরে নিলো। তাদের সকলের হাতে হকিস্টিক আর স্টাম্প। কয়েক টা ছেলে কে দেখে চিনতে পারলাম ওর রিয়ার কাজিন হয়।
রিয়া– দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি তোরা তামাসা দেখবি নাকি কাজ শুরু করবি?
একটা ছেলে– না আপু কাজ শুরু করছি।
বলেই আমার পায়ের হাটুর গিরাতে একটা বারি মারলো। তাল সামলাতে না পেরে মাঠের মধ্যে পড়ে গেলাম।
রিয়া– কি হলো তোরা থামলি কেনো? ওর এমন অবস্থা করবি যাতে বুঝতে পারে এই রিয়ার কথা না মানলে কি হয়।
তারপর সবাই মিলে আমাকে মারতে লাগলো। ক্যম্পাসের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু কেউই এগিয়ে আসতে সাহস পাচ্ছে না। আমি যে ব্যথাতে বার বার চিৎকার করে উঠছি। মাগো ও মাগো। কিন্তু আমার চিৎকার সবার কানে পৌঁছালেও কেউ যেনো শুনতে পাচ্ছে না।
এতক্ষণ আমাকে মারতে দেখছিলো কলেজের ছোট ভাই রাফি। তাই রাফি তারাতাড়ি করে বুলবুল রে ফোন দেয়।
রাফি– হ্যালো বুলবুল ভাইয়া?(কান্না মাখা কন্ঠে)
বুলবুল– হা রাফি বল। রাফি কি হয়েছে তোর কন্ঠ এমন শোনা যাচ্ছে কেন?
রাফি– বুলবুল ভাইয়া,,,,, আজিজ ভাইয়াকে রিয়া আপুর কাজিনরা ( আর বলতে পারে না রাফি। রাফি যেনো হাউমাউ করে কান্না করে দিলো)
বুলবুল– আজিজ? কি হয়েছে আজিজ এর তুই এখন কোথায়? আর আজিজ কি তোর কাছেই আছে? কি হলো বলছিস না কেনো?
রাফি– কলেজ ক্যম্পাসে( তারপর রাফি বুলবুল কে সব কিছু খুলে বলে)
বুলবুল– তুই কিছু চিন্তা করিস না ভাই আমি আসছি। তুই রাহাত সুমন আর আমাদের ক্লাবের সকল কে খবর দে আমি আসছি।
বুলবুল এক প্রকার পাগলের মতো দৌড় দিতে লাগলো। রাফি এদিকে রাহাত, সুমন আর তাদের ক্লাবের সকলকে খবর দিয়ে দেন।
সকলে ছুটে চলে আসে কলেজে। এসে দেখে আজিজ জ্ঞান হারিয়ে মাঠের মধ্যে পরে আছে। তবুও রিয়ার কাজিন রা আজিজ কে মেরেই যাচ্ছে।
বুলবুল দের দেখে রিয়া পালিয়ে যেতে লাগলে তাদের কলেজের আসিয়া নামের একটা মেয়ে রিয়াকে ধরে ফেলে। আর সাথে তার বান্ধবীরাও। এদিকে বুলবুল সুমন রাহাত ও তাদের বন্ধুরা রিয়ার কাজিন দের উরা ধুরা মারতে থাকে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ চলে আসে সেখানে এবং সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে রিয়া ও তার কাজিন দের ধরে নিয়ে যায়।
এদিকে জ্ঞান হারিয়ে মাঠের মধ্যে পরে আছে আজিজ। তার মাথায় আঘাত করার কারনে মাথা দিয়ে প্রচন্ড পরিমানের রক্ত বের হচ্ছে।
বুলবুলরা তারাতাড়ি করে আজিজকে হসপিটাল এ নিয়ে যায়। তারপর আজিজ এর বাড়িতে তার ভাবীর নাম্বার ফোন করে বুলবুল।
ভাবী– হ্যালো কে বলছেন?
বুলবুল– ভাবী আমি বুলবুল আজিজ এর বন্ধু।( কথা যেনো বলতেই পারছে না বুলবুল কান্নার কারনে)
ভাবী– হে কও হয়েছে তোমার কাদছো কেনো?
(ভাবীর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো জান্নাত)
জান্নাত– কে ফোন করেছে রে আপু?
ভাবী– বুলবুল।
জান্নাত– দে দেখি আমাকে দে ফোন টা।
হ্যালো বুলবুল ভাইয়া কি হয়েছে কাদছেন কেনো?
বুলবুল– জান্নাত আজিজ কে ওরা (বলেই হাউমাউ করে আবারও কেদে দেয় বুলবুল) ( আজিজ এর নাম শুনেই জান্নাত এর গলা সুখিয়ে জায়)
জান্নাত– ভাইয়া আজিজ এর কি হয়েছে বলুন প্লিজ কাদবেন না ভাইয়া বলুন প্লিজ। (ভয়ে ভয়ে)
বুলবুল– (সব কিছু খুলে বলেন)
জান্নাত বুলবুল এর কথা শুনে হাতে থেকে ফোন টা পরে যায় এবং এক চিৎকার দিয়ে সাথে সাথে ফ্লোরে পরে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। জান্নাত এর চিৎকার শুনে বাড়ির সবাই একত্রিত হয়ে যায়
ভাবী+আপু– জান্নাতুল এই জান্নাত কি হলো তোর কথা বল? ( তারপর আপু ফোনটা কানে নিয়ে)
আপু– বুলবুল ভাই আমার কি হয়েছে ভাই?
বুলবুল– ভাবী আজিজ কে ( সব খুলে বলে)
আজিজ এর ভাই– কি হয়ে জান্নাত এর?
আম্মু– কি হলো বউ মা কথা বলো।
আপু– সব খুলে বলার পর কেউ আর এক মূহুর্তও দেরি করে না। জান্নাতে অজ্ঞান অবস্থাতেই তাদের সাথে করে হসপিটালএ নিয়ে যায়।
আজিজকে আইসিইউতে চিকিৎসায় করা হচ্ছে। জান্নাত এরও জ্ঞান ফিরে এসেছে। জান্নাত হসপিটালের এক কোনে বসে কন্না করে যাচ্ছে। জান্নাত যেনো পাগল হয়ে গেছে কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছে না।
সবাই অধিক আগ্রহ নিয়ে পাই চারি করে যাচ্ছে কখন ডাক্তার বের হয়। প্রায় ঘন্টা খানিক পড়ে ডাক্তার বেরিয়ে আসলো। জান্নাত ডাক্তারকে দেখে দৌড়ে তার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরলো। জান্নাত এর সাথে রাহাত বুলবুল সুমন ও আজিজ এর পরিবারের সবাই ডাক্তার কে ঘিরে নিলো।
জান্নাত– ডাক্তার আমার বর টা কেমন আছেন ডাক্তার। ও ভালো আছে তো ডাক্তার। আমার বর টার কিছুই হয় নাই তাই না ডাক্তার। বলুন ডাক্তার বলুন। (পাগলের মতো হাউমাউ করে কান্না করতে করতে)
ডাক্তার– আসলে আমরা,,,,,,, (ডাক্তারের কথা থামিয়ে দিয়ে জান্নান)
জান্নাত– কি আাসলে আসলে করছেন। বলুন না ডাক্তার আমার আজিজ এর কিছুই হয় নাই বলুন। (জান্নাত ছোট বাচ্চা দের মত এমন ভাবে আবদার করছে যেনো ডাক্তার মুখে বললেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে) ডাক্তার বুলবুল এর সামনে আসে। ডাক্তার বুলবুলের ছোট বেলার বন্ধু।
বুলবুল– কি হলো দোস্ত কথা বলছিস না কেনো
ডাক্তার– আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি রে দোস্ত কিন্তু কিছু করতে পারলাম না। আজিজ কে খুব খারাপ ভাবে মারা হয়েছে। ওর হাত পায়ের শিরায় শিরায় বেশি মারা হয়েছে। আর সব থেকে যেটা খারাপ হয়েছে তা হলো মাথায় বারি মারার কারনল ওর মস্তিষ্কতে সজোরে আঘাত হেনেছে।
ডাক্তারের কথা শুনে জান্নাত আবারো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,?
বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।