এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বেয়াইন পর্ব-১৪ এবং শেষ পর্ব

0
1411

#এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন
#পর্ব_১৪_অন্তিম_পর্ব
#লেখক_মোঃ_আঃ_আজিজ
.
জান্নাত– ডাক্তার আমার বর?
ডাক্তার– সরি আমরা কিছু করতে পারলাম না। এই কথাটা এবার বলবো না। আলহামদুলিল্লাহ, অপারেশন সাকসেস ফুল। মি. আজিজ এখন সম্পুর্ন সুস্থ আছেন।
ডাক্তারের কথা শুনে সবার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসলো। তবে এটা কোনো দুঃখের পানি না এটা হলো আনন্দের পানি।
জান্নাত– আমি আমার বর কে দেখবো ডাক্তার সাহেব প্লিজ।
ডাক্তার– হুম অবশ্যই কেননা? তবে ওনাকে এখন ঘুমের মেডিসিন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে। সো এখন ওনাকে বিরক্ত না করাই আমার মনে হয় ভালো হবল।
জান্নাত– ধন্যবাদ ডাক্তার।
জান্নাত কথাটা বলেই আজিজ এর কেবিনের দিকে এগুতে লাগলো। হঠাৎ জান্নাত মাথায় হাত দিয়ে পরে যেতে লাগলে আপু তাকে ধরে ফেলে।
আপু– কি হলো তোর বোন এমন করছিস কেনো?
জান্নাত– আপু আমার কেমন যেনো মাথাটা ঘুরছে। বলেই জান্নাত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সবাই আবার জান্নাত কে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে। হুট করে মেয়েটার আবার কি হয়ে গেলো। জান্নাত কে একটা কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং ডাক্তুার জান্নাত কে ভালো ভাবে দেখার পর।
আম্মু– ডক্টর আমার মেয়েটার আবার কি হলো?
ডাক্তার– আন্টি আপনার বউ মার মহা অসুখ হয়েছে।
ডাক্তার এর কথায় সবাই ঘাবড়ে যায়।
আম্মু– কি বলছো তুমি,,,,।
বু্লবু্ল– কি বলছিস দোস্ত পাগল টাগল হয়ে গেলি নাকি তুই।
ডাক্তার– নাহ আমি একদম ঠিক আছি। এখন তুই যা মিষ্টি আনার ব্যবস্থা কর।
বুলবুল– তোর কি মাথা ঠিক আছে দোস্ত? এই বলছিস জান্নাত এর মহা অসুখ। এখন আবার বলছিস মিষ্টি আনতে,, কি বলছিস আমরা তো কিছুই বুঝতে পারতেসি না।
ডাক্তার– সরি দোস্ত তোদের সাথে মজা করলাম। আন্টি আপনি দাদিমা হতে চলেছেন। মানে জান্নাত মা হতে চলেছে।
ডাক্তার এর কথায় সবাই একসঙ্গে বলে উঠলো আলহামদুলিল্লাহ। সবাই অনেক খুশি।
বুলবুল– শালা এভাবে ভয় না দেখালেও পারতি। কতটা ভয় পেয়ে গেছিলাম। বাট ধন্যবাদ দোস্ত এক সাথে দুইটা খুশির সংবাদ দেবার জন্য।
আম্মু– বাবা তোমাকে যে কি ভাবে ধন্যবাদ দেব ভেবে পাচ্ছি না। প্রথমে আমার ছেলের সুস্থতার সংবাদ দিলে এখন আবার আরেকটা। আমি দাদিমা হতে চলেছি।
ডাক্তার– কি বলছেন আন্টি,, এটা আমার কর্তব্য। তাছাড়া আমি আজিজ কে নিজের ভাইয়ের মতোই দেখি। এতে ধন্যবাদ দেবার কি আছে?
***৬ ঘন্টা পড়ে***
আজিজ এখনো শুয়ে আছে। একবার জ্ঞান ফিরলেও তাকে আবারো ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে। জান্নাত শুয়ে আছে আজিজ এর বুকের ওপর মাথা রেখে। আজ জান্নাত যেনো পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি একজন সুখী। সে আজ একদম পরিপূর্ণ একটা নারী হিসেবে নিজেকে মনে করছে। কারন সে আবারও তার স্বামীকে ফিরে পেয়েছে তার সাথে সে মা হতে চলেছেন। জান্নাত আজিজ এর বুকের ওপর শুয়ে থেকে একটা শব্দ শুনতে পেলো আউউ।
জান্নাত আজিজ এর দিকে তাকিয়ে দেখে আজিজ মনে হয় বেথা পেয়েছে। তাই জান্নাত যেই উঠতে যাবে তখনই আজিজ জান্নাত কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
জান্নাত যেনো এটা কখনোই আশা করে নাই। জান্নাত আজিজ এর দিকে তাকিয়ে দেখে,,, আজিজ জান্নাত এর দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে।
আজিজ– আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছো?
আজিজ এর কথা শুনে জান্নাত যেনো নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না। তার বর তার সাথে আবার কথা বলছে। জান্নাত এর চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে লাগলো।
আজিজ– কি হলো বউ আমার সাথে কথা বলবে না?
জান্নাত– চুপ করে আছে।
আজিজ– ঠিক আছে তুমি যখন আমার সাথে কথাই বলবে না তাহলে আমি যেমন ছিলাম আবার তেমনিই হয়ে যাবো।
এই বার মেয়ে টাকে থামায় কে? আজিজ এর কথা শুনে জান্নাত আজিজ কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কেদে দিলো।
জান্নাত– আমাকে কষ্ট দিয়ে তুমি খুবই মজা পা-ও তাই না? তোমাকে এভাবে দেখে আমার এত দিন কতটা কষ্ট হয়েছে যানো তুমি? তবু্ও আমি নিজের মনো বল হারায়নি। আমি জানতাম আমার বর টা একদিন ঠিকই সুস্থ হয়ে উঠবে। এ কয়দিনে একটা বারের জন্যও তোমাকে আমার চোখের আরাল করিনি। আর একবার আমাকে ছেড়ে যাবার কথা ভাবলে না আমি নিজেই তোমার হাত পা ভেঙে দিবো এই বলে রাখলাম।
আমি– আমার বউ টা আমাকে এতটা ভালোবাসে?
জান্নাত– হুম, নিজের থেকেও বেশি। তোমার যদি কিছু হয়ে যেতো তাহলে আমি নিজেই চলে যেতাম ওই না ফেরার দেশে।
আমি– চুপ একদম চুপ। আমার এই পেত্নী টা থাকতে আমার কেউ কি কিছু করতে পারবে নাকি। আর আমি থাকতে আর আমার এই পেত্নী বউ টাকে কিছুই হতে দেব নারে। খুব বেশি যে ভালোবাসি আমার এই বউ টাকে।(শক্ত করে জরিয়ে ধরে)
জান্নাত– হয়েছে হয়েছে আর নেকামি করতে হবল না। এত দিন আমাকে কষ্ট দিয়ে এখন আসছে ইনি ভালোবাসা দেখাতে। হুহ্। ছাড়তো আবার বেথা পাবে তুমি।
আমি– নাহ পাবো না। আমি আমার বউ টাকে কত দিন হলো আদর করি না। কিন্তু আজ আর ছাড়ছি না।
কিছুক্ষণ চুপ থাকার পড়ে।
জান্নাত– বর (আমার বুকে মাথা রেখে)
আমি– উহহ।
জান্নাত– এই বর?
আমি– কি?
জান্নাত– এই বর শোনো না
আমি– হুব বউ শুনছি তো বলো না?
জান্নাত– তুমি কি হতে চলেছো জানো?
আমি– কিহ হতে চলেছি?
জান্নাত– তুমি বাবা হতে চলেছো আর আমি মা।
আমি– কিহহহহহহহহহহহহ সত্যি বলছো তুমি?
(জান্নাত কে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে)
জান্নাত– ধুর মিথ্যা বলতে যাবো কেনো। (লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকিয়ে)
আমি– আমি বাবা হবো আলহামদুলিল্লাহ। জান্নাত তুমি আমাকে সব থেকে খুশির সংবাদ দিলে আজ।
জান্নাত– তো এখব আমার পাওনা আমাকে বুঝিয়ে দাও।
আমি– কি চাও শুধু বলো?
জান্নাত– আপাতত এখন তোমার ঠোঁট টা হলেই হবে। আর বাকি গুলো পরে আমি নিজেই আদায় করে নিবো।
আমি– বাধা দিয়েছে কে? তোমার জিনিস তুমি বুঝে নাও।
জান্নাত– হুম আমার জিনিস আমি নেবোই তো (বলেই জান্নাত আমার ঠোঁট টা তার নিজের দখলে করে নিলো। আমি যে একজন অসুস্থ ব্যক্তি সে দিকে যেনো জান্নাত এর খেয়ালই নেই। সে নিজের মতো করে আমর ঠোঁট গুলো তার নরম কোমল ঠোঁট দিয়ে আদর করেই যাচ্ছে। এ ভালোবাসা যেনো শেষ হবারই নয়। অনেক দিনের জমানো তো তাই একটু আরকি) ছাড়ার পরে
আমি– উফফ আমি কিন্তু অসুস্থ। এতক্ষণ কেউ চুমু দেয় নাকি একটা অসুস্থ ব্যক্তি কে?
জান্নাত– ওহহহ সরি সরি। রাগ করলে নাকি।
আসো আদর করে তোমার রাগ টা ভাঙিয়ে দেই। বলে আবারো আমার ঠোঁটে তার ঠোঁট গুলো ডুবিয়ে দিলো। মেয়েটার যেনো চুমু খেয়ে তৃপ্তি হচ্ছেই না। আর মনেও হয় না আজ তার তৃপ্তি হবে বা আমাকে ছাড়বে। তাই আমিও জান্নাত এর তালে তাল মিলিয়ে দিলাম। এখন আমরা এক অজানা সুখের সাগরে ভেসে চলেছি। তাই আপনাদের আর আমরা কষ্ট দিলাম না কেমন।
(সমাপ্ত হবার নয় এই ভালোবাসা)
পুরো গল্পটা কেমন হয়েছে জানি না। তারপরও আপনারা আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন। তার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। আর পুরো গল্পটা কেমন হয়েছে প্লিজ কষ্ট করে জানাবেন।
ধন্যবাদ