এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বেয়াইন পর্ব-০৭

0
301

#এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন
#পর্ব_৭
#লেখক_মোঃ_আঃ_আজিজ
.
খালাম্মা– কিহ তোমরা বিয়ে করে নিলে আর আমাকে জানালে না?
জান্নাত — খালামুনি আমরা যে বিয়ে করেছি এটা কেউ জানেনা। এমন কি আমাদের এখনো বাসর টাও হয় নাই😒 কত শখ ছিলো আমার বর টার সাথে বাসর করবো তা এখনো হয়ে ওঠেনি। (কান্না ভেজা কন্ঠে)
(মাইয়ায় বলে কি,,,,? এখানে আবার বাসর কোই থেকে আসলো। কি করতে চাচ্ছে জান্নাত আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না। প্রথমে বিয়ে না করেই আমার বউ হয়ে গেলো আর এখন বলছে বাসর এর কথা। আল্লাহ রক্ষা করুন আমায়। কোথায় যে ফেঁসে যাচ্ছি নিজেও তো বুঝতে পারছি না😞😭)
খালাম্মা– কি তোরা যে বিয়ে করেছিস বাড়িতে কেউ যানে না?
জান্নাত– না গো খালামুনি কেউ যানে না। আজিজ বললো খালামুনি নাকি অনেক ভালো। আর তোমার কাছে আসলে নাকি তুমি সব কিছুর সমাধান করে দিবে। তাই তো তোমার কাছে আমরা চলে আসলাম।
খালাম্মা– তোরা চিন্তা করিস না আমি সব ঠিক করে দেবো। আর আজিজ তুই বিয়ে করবি আমাকে একবার বলতে পারতি। আমি কি না করতাম নাকি রে বাবা? তুই জানিস না তোর খালামুনি তোকে কতটা ভালোবাসে। আমার কতটা ইচ্ছে ছিল তোর বিয়ের কাজ আমি নিজে হাতে করবো তা তুই করতে দিলি না।
আমি– খালামুনি তুমি কি এখন আমাদের কথা শুনাবে নাকি ভিতরে ডুকতে দিবে?
আর আলিফ কে তো দেখছি না ও কোথায় ( আলিফ আমার খালাতো ভাই এর নাম)
খালাম্মা– ওহে ভিতরে আয়। আর তোর ভাই তো কলেজে গেছে। তোরা আলিফ এর রুমে গিয়ে বসে বিশ্রাম নে আমি ততক্ষণে তোদের রুম টা গুছিয়ে নেই কেমন।
আমি– ঠিক আছে খালামুনি। আর আলিফ আসলে আমার কাছে পাঠিয়ে দিও।
খালাম্মা– হুম। বাবা তোর ফোন টা দিয়ে যা তো আলিফ কে ফোন দিয়ে তারাতাড়ি আসতে বলি।
খালামুনিকে ফোন টা দিয়ে আলিফের রুমে দুজনে চলে আসলাম। তারপর আমি,,,,,,
আমি– ওই তোমার মতলব টা কি বলোতো। তোমার ভাবসাব মোটেও সুবিধার মনে হচ্ছে না আমার কাছে।( রাগী ভাবে)
জান্নাত– কেনো জানু,,,, তোমার কি মনে হচ্ছে। আর আমার বর টা কি রাগ করলো নাকি?
আমি– আমি মোটেও তোমার বর নই।
জান্নাত– তো তুমি আমার কে হুম?
আমি– কেউ না।
জান্নাত– সত্যি আমি তোমার কেউ না?😒
আমি–
জান্নাত– কি হলো চুপ করে গেলে কেনো বলো। সত্যি আমি তোমার কেউ না? ( বলেই জান্নাত আমার কাছে আসতে লাগলো)
আমি– এই কি করছো। কাছে আসবে না। দুরে থাকো বলছি।
জান্নাত– কাছে আসবো,,,, তুমি কি করবে হুম কি করবে?
আমি– আমি কিন্তু চেঁচাবো।
জান্নাত– চিল্লাও চিল্লাও যত পারো চিল্লাতে পারো। ( মুচকি হেসে)
আমি– এই নাহ না না।( ধুর ছাই কে শোনে কার কথা। জান্নাত আমার মাথা দু পাশে ধরে চার ঠোঁট এক করে দিলো।)
জান্নাত– এখন বলো আমি তোমার কে? ( ঠোঁট মুছতে মুছতে)
আমি– কাজ টা কিন্তু তুমি ঠিক করলে না।
জান্নাত– ওই কুত্তা তোরে আমি কি বলি আর তুই কি বলিস।
আমি– ধুর ভাল্লাগে না যাও তো ফ্রেশ হয়ে এসো আগে।
জান্নাত– হুম জাইতেছি। তারপর কিন্তু বলতেই হবে আমি তোমার কে। নইলে এইবার তোমার ঠোঁট একদম ছিড়ে ফেলবো😍😍
বলেই জান্নাত চলে গেলো। আর আমি ভাবছি কি করতে চাচ্ছে এই মেয়েটা। ভাবতে ভাবতে আলিফ চলে আসলো। আর,,,,
আলিফ– কিরে ভাইয়া আসবো?
দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি আলিফ হাতে কিছু শপিং ব্যগ।
আমি– আরে আলিফ তুই। আয় আয় আর এটাতো তোরই রুম। তুই আসবি আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেনো?
আলিফ– হুম আমার রুম। কিন্তু ভাইয়া রুমে তো তুমি একা নেই সাথে ভাবীও আছে তাই না। আর ভাইয়া এইটা তুমি একেবারেই ঠিক করলে না।
আমি– কি ঠিক করলাম নারে ভই?
আলিফ– এই যে বিয়ে করলে না জানিয়ে।
আমি– ( তোরে কি ভাবে জানাবো রে ভাই? আমি নিজেই জানতাম না যে আমি বিয়ে করেছি তুই কেমনে জানবি😞😒)মনে মনে ।
আলিফ— কিরে ভাইয়া কথা বলো না কেনো। কি ভাবো?
আমি– আগে জানাই নাই তো কি হয়েছে এখন তো জানলি তাই না।
আলিফ– হুম। না-ও এই গুলো নাও আর তারাতাড়ি এগুলো পড়ে বাহিরে আসো।
আমি– কি এগুলো?
আলিফ– তোমার জন্য পাঞ্জাবি আর ভাবীর জন্য বেনারসি।
আমি– কিন্তু এগুলা কেনো( অবাক হয়ে)
আলিফ– আম্মু বল্লো তোমাকে নাকি বর বেশে দেখবে তাই। তারাতাড়ি চেঞ্জ করে চলে এসো।
আর এই নাও তোমার ফোন আম্মু দিলো।
আমি– হুম রেখে যা।
কিছুক্ষণ পড়ে জান্নাত বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসলো তারপ,,
জান্নাত– কার সাথে কথা বললে গো এতক্ষণ?
আমি– আলিফ আসছিলো এগুলো দেবার জন্য (ব্যগ গুলো দেখিয়ে)
জান্নাত– কি এগুলো?
আমি– খুলে দেখো।
জান্নাত–(খোলার পড়ে) wow খুব সুন্দর এগুলো কি আমাদের জন্য?
আমি– হুম।
জান্নাত– আমার খুব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু এগুলো কিসের জন্য?
আমি– ( সব কিছু খুলে বল্লাম কি জন্য)
তারপর দুজন রেডি হয়ে বাহিরে আসলাম। বাহিরে বের হয়ে যা দেখলাম।
একজন মুরুব্বি লোক খাতা কলম নিয়ে বসে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কাজী হবে হয়তো। কিন্তু কেনো?
খালাম্মা– আয় তোরা এখানে বস?
আমি– খালামুনি উনি কে? ( লোকটাকে দেখিয়ে)
খালাম্মা– উনি তো কাজী সাহেব। তোদের আবার বিয়ে দেবার জন্য নিয়ে আসলাম আলিফ কে দিয়ে। আমার অনেক দিনের শখ ছিলো তোর বিয়ে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দিবো।
আমি জান্নাতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মেয়েটাও মনে হয় এই কথাটা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। মুখটা একদম ফেকাসে হয়ে গেছে সাথে আমারও একি অবস্থা😭।
আমি– কি বলো তুমি খালামুনি? আমরা তো একবার বিয়ে করেছিই তাহলে আবার কেনো?😟
খালাম্মা– তোকে বললাম না তোর বিয়ে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দিতে চেয়েছি। আর তোর আবার বিয়ে করতে সমস্যা টা কোথায় হা? অন্য কাউকে তো আর তোকে বিয়ে করতে বলছি না। তোর বউকেই তো বিয়ে করতে বলছি। বাবা তুই আমার জন্য এইটুকু করতে পারবি না?
আমি–( জান্নাত এর দিকে তাকিয়ে) জান্নাত তুমিতো কিছু বলো এখন খালামুনিকে?
জান্নাত– আমি আর কি বলবো বলো? খালামুনিতো আর বেশি কিছু আবদার করে নাই তাই-না। খালামুনি আমরা রাজি।🙈 (লজ্জা মাখা মুখে)
খালাম্মা– আলহামদুলিল্লাহ😍 কাজী সাহেব আপনি বিয়ের কাজ শুরু করুন☺
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। কি থেকে কি হয়ে যাচ্ছে? এখন খালামুনিকেও সত্য টা বলতে পারবো না। কারণ সে খুব কষ্ট পাবে। কি করবো এখন আমি। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে কবুল বলে দিয়েছি।
অবশেষে জান্নাত আর আমার বিয়ে টা হয়ে গেলো।
**রাত ১০টা**
বাসরঘর,,,, জান্নাত বসে আছে বাসর ঘরের মধ্যে।
আমি দরজা টা খুলে ঘরের মধ্যে ডুকলাম। ডুকে যা দেখালম তা হলো,,,,,,,
পরের পর্বে☺☺☺
চলবে,,,,,,,?
বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।