এক খণ্ড কালো মেঘ পর্ব-১৮+১৯

0
229

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_১৮
#নিশাত_জাহান_নিশি

“কে বলেছে ওয়ান সাউডেড লাভ ছিল হ্যাঁ? কে বলেছে? রাদিফ ভাইয়াও আমাকে ভালোবাসত! আমি তার চোখে-মুখে আমার জন্য সেই অসম্ভব ভালোবাসা দেখেছিলাম। মাঝখান থেকে প্রিয়া এসে সব ঘেঁটে দিয়েছিল! জানিনা কেন রাদিফ ভাইয়া আমাকে ছেড়ে তখন প্রিয়ার কাছে চলে গিয়েছিল।”

অয়ন্তীর কঠোর হাতের অসম্ভব ভারী ঘু’ষি’টা যদিও রাফায়াতের বুকে তীব্র ব্যথার ঝড় তুলেছিল তবে এই মুহূর্তে রাফায়াতের কাছে তা পানি-ভাত মনে হলো! এরচেয়েও কঠিন ব্যথা সে অয়ন্তীকে হারানোর পর পেয়েছিল। এখনো সেই ব্যথার রেশ তার বুকে বাঁধে। কেমন খচখচ করে। শান্তি খুঁজে পায়না যেন কোনো কিছুতেই। যদি ভেতরটা চিঁড়ে দেখানো যেত তবে হয়ত অয়ন্তী বুঝতে পারত তার না থাকায় রাফায়াতের কতটা নিঠুর হাল হয়েছিল। ভেতর থেকে কতটা ভেঙে পড়েছিল সে। যদিও মাঝখানে খুবই অযাচিত একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল সে! তবে নিতান্ত বাধ্য হয়েই সেই সম্পর্কে জড়ানো তার। সেই সম্পর্কে না ছিল কোনো টান, না ছিল কোনো ভালোবাসা, না ছিল কোনো মিছে মায়া। শুধু ছিল বাধ্যবাধকতা! যা তার পরিবার থেকেই ছিল ঠিক করা! জোরপূর্বক ঠিক করা।

আচমকা-ই রাফায়াত হু হা শব্দে হেসে উঠল। অয়ন্তীর দিকে ঈষৎ ঝুঁকে তার বিবর্ণ মুখমণ্ডলে হেয়ালি দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। বিদ্রুপের স্বরে বলল,,

“সিরিয়াসলি অয়ন্তী তোমার মত বোকা মেয়েমানুষ আমি পৃথিবীতে দুইটা দেখি নাই! যে ছেলেটা একটা থার্ড পার্সনের জন্য তোমাকে এত ইজিলি ছেড়ে চলে গেছে আর তুমি কীনা আজও তাকে একইভাবে বিশ্বাস করে আসছ? ছেলেটা যে তোমার সাথে চিট করেছে তার কোনো আইডিয়া আছে তোমার? একটা বিশ্বাসঘা’ত’ক, চি’টা’র, ল’ম্প’ট ছেলের জন্য তুমি আজও কেঁদে যাচ্ছ অয়ন্তী? এত আবেগ কোত্থেকে আসে তোমার বলো তো?”

দম নেওয়ারও কিঞ্চিৎ সময় পেলোনা রাফায়াত। ইতোমধ্যেই অয়ন্তী এসে রাফায়াতের গলার টু’টি চে’পে ধরল! চোখদুটো অসম্ভব লাল করে সে কঠিন গলায় রাফায়াতকে শাসিয়ে বলল,,

“জিভ কেটে নিব আপনার বুঝেছেন? রাদিফ ভাইয়া সম্পর্কে যদি আর একটা বাজে কথা বলেছেন তো! উনি চি’টার হোক ল’ম্প’ট হোক কিংবা লা’য়ার হোক এতে আপনার কী হ্যাঁ? উনার কোনো খোঁজ আপনি দিতে পারবেন না আমাকে ডিরেক্টলি বলে দিয়েছেন তো। তো আর কী? এভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উনার সম্পর্কে বাজে কথা বলার তো কোনো মানে হয়না তাইনা?”

এক ঝটকায় রাফায়াত তার গলা থেকে অয়ন্তীর শক্ত হাতটা সরিয়ে নিলো। অয়ন্তীর সেই হাতটা পুনরায় সে প্যাঁচিয়ে ধরল! চোঁয়াল উঁচিয়ে বলল,,

“তাহলে অনিক সম্পর্কে কিছু বাজে কথা বলি হ্যাঁ? শুনবে তো তুমি? বলো শুনবে?”

হাতটা ছাড়ানোর নূন্যতম বৃথা চেষ্টা করল না অয়ন্তী! মুখ চেপে ব্যথা সহ্য করল। অকপটে বলল,,

“আমি জানি অনিক ভাই বাজে! কথাবার্তার ছাঁট ভালো না তার। খুবই উগ্র মেজাজের আর ডানপিটে স্বভাবের উনি। তবে আপনার সাথে উনি কী বাজে কাজ করেছে আমি জানিনা। এক্ষেত্রে কিন্তু আপনিও কম যান না! দুজনই সমান। হয়ত কোনো ব্যাপার নিয়ে আপনাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া হয়েছে। যেহেতু অনিক ভাইয়াও চট্টগ্রাম থাকে।”

অয়ন্তীকে থামিয়ে দিলো রাফায়াত। হাতটাও ঝট করে ছেড়ে দিলো। মুখশ্রীতে তেজী ভাব ফুটিয়ে তটস্থ গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“অনিক তোমাকে ঠকাচ্ছে তুমি জানো?”

“মানে?”

“অন্য কারোর উডবির সাথে অনিকের ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল! শুধু তাই নয়, রিলেশন চলাকালীন সময়ে মেয়েটা প্রেগনেন্ট অবধি হয়েছিল! দিনের পর দিন তারা দুজন মিলে মনের দিক থেকে ভেঙে যাওয়া ঐ ছেলেটিকে আরও নিগূঢ়ভাবে ভেঙে দিচ্ছিল। এমনকি তার পরিবারকেও ইকুয়েলি ঠকাচ্ছিল!”

বিছানায় ধপ করে বসে পড়ল অয়ন্তী! মাথায় হাত চলে গেল তার। চোখে-মুখে প্রখর উৎকণ্ঠা ভাব। গলা শুকিয়ে পুরো কাঠ। অবিন্যস্ত দৃষ্টি ফেলে সে রাফায়াতের দিকে তাকালো। শুষ্ক গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“যা বলছেন আপনি সব সত্যি বলছেন তো?”

“হ্যাঁ সত্যি। আমি চাইলে মেয়েটির মেডিকেল রিপোর্টও তোমাকে দেখাতে পারি।”

“মেমেমেয়েটি কে?”

“এসব তোমাকে জানতে হবেনা! শুধু জেনে রাখো অনিক তোমার জন্য পার্ফেক্ট নয়৷ তাকে বিয়ে করার মত বোকামী তুমি করো না প্লিজ। আর তাকে যেভাবে অন্ধের মত বিশ্বাস করো না? সেই বিশ্বাস করাটাও আজকের পর থেকে ছেড়ে দাও! টাকা-পয়সা, সম্পত্তি, ব্যাংক-ব্যালেন্স, বিজনেস নিজেদেরটা এবার থেকে নিজেরাই বুঝে নাও।”

“তাহলে কী আমি ধরে নিব সেই ছেলেটা আপনি? আপনার উডবির সাথে এমন কিছু হয়েছিল?”

“হ্যাঁ ধরতেই পারো! আমি তো নিষেধ করছিনা তাইনা?”

“এমনি এমনি তো আমি সবকিছু বিশ্বাস করতে পারিনা মিস্টার রাফায়াত। কারণ, আপনাকে তো আমি চিনিই না! প্রুফ লাগবে আমার। আপনার উডবির সাথে আমি দেখা করতে চাই!”

অয়ন্তীর দিকে আরও দু’কদম হেঁটে এলো রাফায়াত। বিভৎস চাহনিতে অয়ন্তীর কান্না সিক্ত মুখমণ্ডলে তাকালো। কিছুক্ষণ সেই একই দৃষ্টিতেই তাকিয়ে রইল। অতঃপর অয়ন্তীর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সে ক্ষীণ কণ্ঠে বলল,,

“আমার গার্লফ্রেন্ডকে দেখলে তুমি সহ্য করতে পারবেনা! ম’রে যাওয়ার মত অনুভূতি হবে তোমার! তাই দেখা না করাটাই ভালো।”

“মানে? বুঝলাম না আপনার কথা?”

অয়ন্তীকে ডিঙিয়ে ব্যাগ থেকে খাবারের বক্সগুলো বের করল রাফায়াত। প্রসঙ্গ পাল্টে মলিন স্বরে বলল,,

“খাবারগুলো ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে খেয়ে নাও।”

জায়গা থেকে ওঠে এলো অয়ন্তী। খাবারের বক্সে থাকা রাফায়াতের হাতটা সে শক্তভাবে চেপে ধরল। রাফায়াত চোখ উঠিয়ে অয়ন্তীর দিকে তাকাতেই অয়ন্তী একরোঁখা গলায় বলল,,

“আপনার গার্লফ্রেন্ডকে আমি দেখতে চাই মিস্টার রাফায়াত। তার সাথে কথা না বললে আমি শিওর হতে পারবনা অনিক সম্পর্কে আপনি যা বলেছেন আদোতে সব সত্যি বলেছেন নাকি মিথ্যে বলেছেন।”

রাফায়াত তার রাগ শান্ত করল। অয়ন্তী যেভাবে জেদ ধরে বসে আছে তার শর্ত মেনে না নিলে এই মুহূর্তে সে কিছুই মুখে তুলতে চাইবেনা। এমনিতেও মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছেনা অয়ন্তীর। ক্ষুধায় তাড়নায় মুখটা কেমন নেতিয়ে পড়েছে। তাকানো যাচ্ছেনা এই চুপসে যাওয়ার মুখের দিকে। তাই রাফায়াত নরম স্বরে অয়ন্তীকে বলল,,

“ওকে। দেখা করাব নে। এখন খেয়ে নাও।”

রাফায়াতের মুখের কথা বিশ্বাস করে নিলো অয়ন্তী। ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে চলে গেল সে। পিছু ঘুরে পুনরায় সে কেমন যেন মন খারাপের দৃষ্টিতে রাফায়াতের দিকে তাকালো। ভরাট গলায় বলল,,

“আপনার কপালটাও হয়ত আমার মতই মিস্টার রাফায়াত। যাকে আমরা মন থেকে ভালোবেসেছি তারা প্রত্যেকে আমাদের মন থেকে ভেঙে দিয়েছে! ঠকিয়েছে তারা আমাদের। অন্য কারোর মিছে মায়ায় পরে তারা সত্যিকারের ভালোবাসাদের পায়ের তলায় পি’ষে দিয়েছে!”

চোখের কোণে রাশি রাশি জল নিয়ে অয়ন্তী ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। অয়ন্তীর যাওয়ার পথে রাফায়াত করুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। ভেতর থেকে কেমন যেন ফুঁপানোর আওয়াজ বের হয়ে এলো তার! নিচু গলায় সে বলল,,

“প্রিয়া আমার জন্য বাজি ছিল অয়ন্তী! মোটেও ভালোবাসা ছিলনা। আমি তখনও বুঝতে পারিনি অনিক কেন সেদিন এই অদ্ভুত বাজিটা আমার সাথে ধরেছিল! তোমার থেকে আমাকে আলাদা করার জন্যই অনিক সেদিন সিক্রেটলি বাজিটা ধরেছিল অয়ন্তী। যা কেউ কখনো জানতেও পারেনি! বিলিভ মি অয়ন্তী, আমি বুঝতে পারিনি শেষ অবধি যে এই বাজিতে আমি-ই দুদিক থেকে হেরে যাব! অনিকের সাথে আমার কীসের শত্রুতা ছিল তা আমি আজও ধরতে পারিনি অয়ন্তী। তবে কী বন্ধুদের বিশ্বাস করাটাই বোকামী?”

,
,

বাড়ির ড্রয়িংরুমে মাথা নুইয়ে বসে আছে প্রিয়া। তার আশেপাশে রাফায়াতের গোটা পরিবার এবং রাফায়াতের সব বন্ধুরাও রয়েছে। চঞ্চল আগে থেকেই সবাইকে বারণ করে রেখেছে রাফায়াত যে তার সাথে করে অয়ন্তীকে নিয়ে এসেছে এই খবরটা যেন প্রিয়ার কানে কোনোভাবেই না যায়! এতে রাফায়াতের ক্ষতি হতে পারে। চঞ্চলের কথা কোনো উজোড় ছাড়াই মেনে নিলো সবাই। এমন ভান ধরল যেন তারা এই বিষয়ে কিছুই জানেনা।

রাফায়াতকে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে উঠল প্রিয়ার চটপটা চোখ গুলো! এদিক-ওদিক সূক্ষ্মদৃষ্টি ফেলে প্রিয়া অবশেষে শায়লা মির্জার দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক হাসল। সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“খালামনি? রাফায়াত না এসেছিল? কোথায় সে?”

গলা ঝেড়ে কাশলেন শায়লা মির্জা। পায়ের উপর থেকে পা তুলে তিনি সোজা হয়ে বসলেন। কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই তিনি সাধাসিধা গলায় বললেন,,

“আর বলিস না প্রিয়া। ছেলেটা এসেই যেন কোথায় একটা বের হয়ে গেল। কিছু বলেও গেলনা। হয়ত কোনো কাজে বের হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে।”

“আমি আর হোস্টেলে থাকব না খালামনি! ভাবছি আবারও এই বাড়িতে শিফট হয়ে যাব। কিছুদিন বাদেই তো রাফায়াতের সাথে আমার বিয়ে! তাই ভাবছি এখন থেকেই এই বাড়িতে থাকি। কী বলো তুমি?”

ক্ষণিকের মধ্যেই যেন খুশি হয়ে গেলেন শায়লা মির্জা! আহ্লাদে আটখানা হয়ে বললেন,,

“আমিতো সেই কবে থেকেই এটাই চাইছিলাম প্রিয়া। তুই-ই তো সেদিন জোর করে হোস্টেলে শিফট হয়ে গেলি। ভালোই হলো বল? এবার থেকে তুই আবারও আমাদের সাথে থাকবি। আর কোনো এক্সট্রা টেনশান থাকবেনা আমার তোকে নিয়ে।”

সাপের পাঁচ পা যেন দেখে গেল প্রিয়া! চিন্তিত চঞ্চলের দিকে সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। অট্ট হেসে ইশারায় বুঝালো,,

“রাফায়াতের থেকে কেউ তাকে আলাদা করতে পারবেনা!”

শুকনো ঢোঁক গিলল চঞ্চল। কখন সে রাফায়াতকে খবরটা জানাবে সেই চিন্তায় ব্যাকুল হয়ে উঠল। চঞ্চলের সংকুচিত মুখমণ্ডলের তাকিয়ে প্রিয়া বেশ বুঝতে পারল চঞ্চল ঠিক কোন দুঃশ্চিন্তায় এতটা উদগ্রীব হয়ে আছে! মিসেস শায়লা মির্জা তো এতদিন পর উনার ছোটো বোনের মেয়েকে কাছে পেয়ে খুশিতে প্রায় আত্নহারা হয়ে গেছেন! প্রিয়া হলো মিসেস শায়লা মির্জার ছোটো বোনের মেয়ে। প্রিয়ার যখন পাঁচ বছর বয়স তখন তার বাবা একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। সেই খবরটা শোনার সাথে সাথেই প্রিয়ার মা হার্ট স্ট্রোক করেন! সেই থেকেই প্রিয়া মিসেস শায়লা মির্জার কাছে কোলে-পিঠে হয়ে মানুষ হয়েছে। প্রিয়ার থাকা, খাওয়া, পড়ালেখার যাবতীয় খরচ এমন কী ভরণ পোষণের দায়িত্বও তিনি একা সামলাচ্ছেন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ির সবার সাথে খাবার দাবার খেয়ে প্রিয়া দ্রুত পায়ে হেঁটে তার রুমের দিকে রওনা হলো। মূলত খাবার খাওয়ার মাঝখানেই তার ফোনে একই নাম্বার থেকে প্রায় অনেকগুলো কল চলে এসেছিল। সবার সামনে সেই কলটি কোনোভাবেই তুলতে পারছিলনা প্রিয়া! সে কারণেই বস্তুত এত দ্রুত কদমে তার রুমের দিকে হেঁটে যাওয়া। রুমে ঢুকেই দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলো প্রিয়া। পাগল পাগল হয়ে সামনের ছোটো ছোটো চুলগুলো পেছনের দিকে ঠেলে দিলো। মুখশ্রীতে কেমন যেন রাগী ভাব ফুটিয়ে তুলল। তটস্থ গলায় কলটা তুলে বলল,,

“হ্যাঁ বলো? কী সমস্যা তোমার হ্যাঁ? এতবার কল করছিলে কেন?”

ফোনের ঐ প্রান্ত থেকে অনিক রাগে ফোঁস করে উঠল! হিং’স্র বা’ঘের ন্যায় আ’ক্রমনাত্নক অবস্থা তার। হাতে থাকা বি’য়া’রের বোতলটি সে টেবিলের উপর আছাড় মে’রে ভাঙল! তেজস্ক্রিয় গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“রাফায়াত কোথায় বল?”

“একবার বলেছি না? রাফায়াতের কোনো খোঁজ আমি তোমাকে দিতে পারব না? কানে যায়নি কথাটা? নতুন করে আবার বলতে হবে?”

“ফর দ্যা গড সেইক প্রিয়া। আমার মাথাটা আর গরম করিসনা। এমনিতেই আমি অয়ন্তীর কোনো খোঁজ-খবর পাচ্ছিনা। মেয়েটা কোথায় আছে, কী করছে, কার সাথে আছে কিছুই জানিনা। টোটালী পাগল পাগল লাগছে আমার। টেনশানে মাথাটা ফেটে যাচ্ছে। এখন যদি অয়ন্তীর বদলে তোকে বা রাফায়াতকে সামনে পাইনা? তবে কিন্তু ডিরেক্ট তোদের আমি খু”ন করে ফেলব!”

#চলবে…?

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_১৯
#নিশাত_জাহান_নিশি

“ফর দ্যা গড সেইক প্রিয়া। আমার মাথাটা আর গরম করিসনা। এমনিতেই আমি অয়ন্তীর কোনো খোঁজ-খবর পাচ্ছিনা। মেয়েটা কোথায় আছে, কী করছে, কার সাথে আছে কিছুই জানিনা। টোটালী পাগল পাগল লাগছে আমার। টেনশানে মাথাটা ফেটে যাচ্ছে। এখন যদি অয়ন্তীর বদলে তোকে বা রাফায়াতকে সামনে পাইনা? তবে কিন্তু ডিরেক্ট তোদের আমি খু”ন করে ফেলব!”

মুহূর্তেই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠল প্রিয়া। অনিকের দুঃসাহস সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা আছে তার। তবে এই সংকটাপন্ন মুহূর্তে নিজেকে শক্ত রাখাই শ্রেয় মনে হলো তার। বিপদের সময় নিজেকে পুরোপুরি শান্ত রাখাই হলো বিপদ থেকে উদ্ধারের মহাঅস্ত্র। বুদ্ধিমানের কাজও বটে। মনে সাংঘাতিক ভয় থাকা সত্ত্বেও প্রিয়া শক্ত গলায় বলল,,

“শুনো অনিক। তুমি আমাকে যতই হুমকি-ধমকি দাও না কেন আমি আর তোমার ঝুলিতে যেতে রাজি নই! অনেক হয়েছে তোমার কথা শুনে আমার পরিবারের ক্ষতি করা। আমার রাফায়াতের ক্ষতি করা! উপরন্তু নিজের ক্ষতিটাও এলাহিভাবে করা। তবে আর নয়। সবকিছুর একটা লিমিট থাকে। আমরা কেউ সেই লিমিটের বাইরে যেতে পারিনা।”

“ভাইরে ভাই। খুব বড়ো বড়ো কথা শিখে গেছিস না? চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলা শিখেছিস? লিমিট বুঝাতে এসেছিস তুই আমাকে হ্যাঁ? লিমিট বুঝাতে এসেছিস? ভুলে গেছিস তুই হ্যাঁ? আমার বাচ্চার মা হতে চলেছিলি তুই? বিয়ের আগে-ই একটা ছেলের সাথে ফিজিক্যালি হয়েছিলি? সেই মেডিকেল রিপোর্টটাও কিন্তু এখনো আমার হাতেই আছে! সত্যিটা ফাঁস করতে কিন্তু আমার খুব বেশী একটা সময় লাগবেনা। এই যে পরিবার নিয়ে এত বড়ো বড়ো কথা বলছিস। আবার কী যেন বললি? ওহ্ হ্যাঁ তোর রাফায়াত! তো তোর ঐ রাফায়াতকে দেখাব নাকি তোর প্রেগনেন্সির অরিজিনাল রিপোর্টটা? হাতে ধরিয়ে বলব দেখ তোর উডবির রংলীলা? বল দেখাব?”

মনের মধ্যে চেপে থাকা দুঃসহ আতঙ্ক আর বেশিক্ষণ চেপে রাখতে পারলনা প্রিয়া। অশ্রুসজল চোখে সে ওড়নার আঁচল চেপে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। অসহায় গলায় বলল,,

“আমার এত বড়ো ক্ষতি করোনা অনিক প্লিজ। এমনিতেও তুমি আমার অনেক বড়ো ক্ষতি করে দিয়েছ। আমি জানিনা তখন আমার কী হয়েছিল। কেন আমি তোমার কথার জালে ফেঁসেছিলাম! প্লিজ এবার তুমি আমায় শেষবারের মত রক্ষা করো প্লিজ। রাফায়াত এবং আমার পরিবারের কেউ যেন এই প্রেগনেন্সির ব্যাপারটা না জানে প্লিজ! দয়া করো আমাকে অনিক। দয়া করো।”

পৈশাচিক হাসল অনিক। স্বার্থসিদ্ধি হলো তার। প্রিয়া-ই হলো এখন তার গুটির মোক্ষম চাল। রাফায়াতকে নুয়াতে হলে প্রিয়া-ই হবে তার দলভারী করার জন্য যথেষ্ট! লাইটার দ্বারা হাতে থাকা সিগারেটটি ধরালো অনিক। বেশ খোশ মেজাজে সিগারেটটিতে দীর্ঘ একটি ফুঁক দিয়ে বলল,,

“ওকে ফাইন। তাহলে বল রাফায়াত কোথায়? বাড়িতে ফিরেছে সে?”

“বাড়ি এসে দেখিনি তাকে। জানিনা কোথায় গেছে।”

“আই গেস অয়ন্তী রাফায়াতের সাথেই আছে!”

“মানে?”

“রাফায়াত ঢাকায় ছিল এতদিন! কেন তুই জানতিস না ই’স্টু’পিট? রাফায়াতের জন্য এখন পাগল পাগল হয়ে যাচ্ছিস। দরদ উতলে উতলে পড়ছে তোর। ভালোবাসা ফানুস হয়ে উড়ছে! অথচ এতগুলো দিন যে সে কোথায় ছিল তার খবর রাখিসনি? শুন তবে গ’বেট! রাফায়াত ঢাকায় এসেছিল মানেই তার অয়ন্তীর সাথে দেখা হয়েছিল। আর সুযোগ বুঝে তখনই সে অয়ন্তীকে নিয়ে পালিয়েছে। পুরোনো ভালোবাসা আবারও তাজা হয়ে উঠেছে তাদের। এদের দুজনকে সামনে পেলে না? আমি তাদের ঘাড় থেকে গলা আলাদা করব।”

“এসব তুমি কী বলছ অনিক? শিওর হয়ে বলছ তো?”

“শিওর না হয়ে অনিক কোনো কথা বলেনা ই’ডি’য়ট। ঢাকায় তোদের রিলেটিভ আছে জানতিস না? অয়ন্তীর ফ্রেন্ড আলিজাদের বাড়িতে-ই রাফায়াত ঘাপটি মেরে লুকিয়ে ছিল। আর আলিজার খালাতো বোন-ই হলো তোদের রায়হান ভাইয়ার বউ! মাথামোটা স্ক্রা’উ’ন্ডে’ল কোথাকার।”

মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল প্রিয়ার। অয়ন্তী রাফায়াতের সাথেই আছে তা ভাবতেই যেন প্রিয়ার দম বন্ধ হয়ে আসার মত অনুভূতি হলো! মাথাটা কেমন যেন ঘুরে আসছিল তার। ঝট করে কলটি কেটে দিলো সে। ফোনটা বিছানার উপর ছুড়ে মেরে অলক্ষুণে চোখের জল মুছতে মুছতে চঞ্চলের রুমের দিকে অগ্রসর হলো। রাফায়াতের খোঁজ সে যেকোনো মূল্যেই হোক খুঁজে বের করবে। চঞ্চলকে শাসিয়ে হলেও। জিদ্দি ভাব নিয়ে প্রিয়া চঞ্চলের রুমের দরজাটি খুলতেই দেখতে পেল চঞ্চল ফোন হাতে নিয়ে কেমন ঝিম খিঁচে বসে আছে৷ হয়তো কারো নাম্বারে ডায়াল করছে! প্রিয়াকে দেখা মাত্রই চঞ্চল তাড়াহুড়ো করে তার ফোনটি হাত থেকে পাশে রেখে দিলো৷ ক্ষণিকের মধ্যেই সে বসা থেকে ওঠে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। ভ্রু যুগল খরতরভাবে কুঁচকালো। এই অসময়ে প্রিয়ার উপস্থিতি তার বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ালো। রাশভারী গলায় সে প্রশ্ন ছুড়ল,,

“কী ব্যাপার প্রিয়া? তুমি?”

চক্ষুশূল দৃষ্টিতে প্রিয়া চঞ্চলের দিকে তাকালো। চোখের আগুনে ভস্ম করে দিতে চাইল চঞ্চলকে। নাক টেনে কঠিন গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“রাফায়াত কোথায় বলো?”

“কী আশ্চর্য! আমি কীভাবে জানব রাফায়াত কোথায়? সে কী যাওয়ার আগে বলে কয়ে যায় নাকি কোথায় যায়? এই ব্যাপারে তো আমার চেয়ে বরং তোমারই ভালো জানার কথা তাইনা?”

“আমার মন বলছে তুমি জানো রাফায়াত কোথায়! প্লিজ বলো চঞ্চল? রাফায়াত কোথায়?”

“কী আশ্চর্য! বললাম তো আমি জানিনা রাফায়াত কোথায়। জানলে নিশ্চয়ই এতক্ষণে তোমাকে বলে দিতাম।”

“তোমাকে বিশ্বাস করার মত বোকামী আমি করতে চাইনা চঞ্চল। প্লিজ বলো রাফায়াত কোথায়?”

চঞ্চল তার নিজস্ব স্বভাবে ফিরে এলো! নরম কোমল ভাব ছেড়ে কঠোর ভাবে পরিণত হলো। পুরুষদের রাগলে আবার পরিস্থিতি তরতর করে বিগড়াতে থাকে। পরিস্থিতি বুঝে চঞ্চল রাগী গলায় চ্যাঁচিয়ে বলল,,

“লিমিট ক্রস করো না প্রিয়া। বয়সে আমি তোমার বড়ো হই। বড়দের সম্মান করতে শিখো। তাছাড়া তোমার এই দুঃসাহস দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছিনা। চো’রে’র মায়ের বড়ো গলা। কথাটা আজ সত্যিই প্রমাণিত হলো।”

দম্ভ ভেঙে গেলো প্রিয়ার! রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে সে মাথা নুইয়ে নিলো। হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁত গিজগিজিয়ে বলল,,

“ওকে ফাইন। বলতে হবেনা। আমি নিজেই খুঁজে বের করব রাফায়াতকে।”

“ওকে। দেট’স ইউর চয়েস।”

হনহনিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল প্রিয়া। স্বস্তির শ্বাস ফেলল চঞ্চল। রাফায়াতের কাছে এতক্ষণে হয়ত খবরটা পৌঁছে গেছে। কারণ মেসেজটা অনেক আগেই সিন হয়ে গেছে। এবার শুরু হবে রাফায়াতের নতুন খেলা!

_____________________________________

খাওয়াদাওয়ার পালা শেষ হতেই রাফায়াত অয়ন্তীকে ফ্লাটে রেখে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। প্রিয়ার ক্লাস নেওয়ার জন্য প্রস্তুত সে! ভাগে পেলেই প্রিয়ার পাখা একটা একটা করে ছাঁটাই করবে সে। অনিকও তার বিপরীত নয়। যদিও অনিক এখন চট্টগ্রাম আসার পাত্র নয়! তবে কিছুদিন পরেই কলেজ যখন নতুনভাবে আহবায়ক নির্বাচন হবে তখন নিশ্চয়ই অনিক না এসে পারবেনা! রা’জ’নীতির খাতিরে তাকে গুহা থেকে বের হয়ে আসতে-ই হবে।

শার্টটা গাঁয়ে জড়িয়ে রাফায়াত বিছানার এক কোণায় জীর্ণ-শীর্ণ হয়ে বসে থাকা অয়ন্তীর দিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। মাথা নুইয়ে নির্জীব অবস্থায় বসে আছে অয়ন্তী। এই বন্দি জীবন তার বড্ড নিরান্দন ঠেকছে। হাত-পা বাঁধা বাঁধা লাগছে।বেঁচে থাকার সমস্ত তৃপ্তি হারিয়ে ফেলছে। শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলতেও তার বাঁধছে৷ বাবা-মায়ের কথা ভীষণ মনে পড়ছে তার। না জানি তারা অয়ন্তীর শোকে কতটা কাতর হয়ে আছে। খাওয়াদাওয়া করছে তো ঠিকমত? সময় মত ঔষধপত্র নিচ্ছে? ঘুম নিদ্রা হয়ত নাকি? ভাবতেই অয়ন্তীর চোখ থেকে দু’ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল। দূর থেকে দাঁড়িয়ে রাফায়াত সবটা দেখছিল৷ অয়ন্তীর অবস্থাটা যদিও সে বুঝতে পারছিল তবে এই মুহূর্তে তার কিছুই করার নেই! ভবিষ্যতকে নিশ্চিত করার জন্য এই অস্বস্তিকর বর্তমানকে তার মেনে নিতেই হবে। দীর্ঘশ্বাস ফেলল রাফায়াত। অতি সাবধানে পা ফেলে অয়ন্তীর মুখোমুখি দাঁড়ালো। শান্ত গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“কী? বাবা-মায়ের কথা মনে পড়ছে?”

অশ্রুসিক্ত চোখে অয়ন্তী রাফায়াতের দিকে তাকালো। এই পর্যায়ে এসে সে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল! হৃদয় নিংড়ানো সমস্ত বেদনা বাইরে প্রকাশ করল। অসহায় গলায় বলল,,

“আমাকে একটা বার সুযোগ দিবেন প্লিজ? বাবা-মায়ের সাথে কথা বলার? বেশি না ব্যস এইটুকুনিই বলব আমি ভালো আছি। আমাকে নিয়ে যেন তারা কোনো টেনশান না করে।”

অয়ন্তীর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো রাফায়াত।প্যান্টের পকেটে দু’হাত গুজে ভাবশূণ্য ভঙ্গিতে দাঁড়ালো। না চাইতেও নির্দয় গলায় বলল,,

“সরি টু সে অয়ন্তী। ইট’স টোটালী ইম্পসিবল! কজ অনিক এখন ঢাকাতেই আছে।তোমার বাবা-মায়ের সাথেই আছে। আমরা তাদের সাথে কানেক্ট হতে গেলেই অনিক আমাদের ক্যাচ করে ফেলবে। হীতে বিপরীত হবে এতে। অনিককে আগে ঢাকায় আসতে দাও। তার থেকে সব হিসাব নিকাশ বুঝে নিতে দাও। এরপর খেলা হবে।”

হেঁচকি তুলে কেঁদে অয়ন্তী বিছানায় অন্যপাশ হয়ে শুয়ে পড়ল। এই মুহূর্তে তার কাঁদতে কাঁদতে ম’রে যেতে ইচ্ছে করছে। এত যন্ত্রণা আর প্রাণে সইছে না তার। চাইলেই মন মত কিছু করা যাচ্ছেনা। অহেতুক রেস্ট্রিকশানের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। হঠাৎ গলা ঝাঁকিয়ে উঠল রাফায়াত। এই অসময়ে সে একটা হাস্যকার প্রশ্ন ছুড়ল অয়ন্তীর দিকে! সোজাসাপ্টা গলায় বলল,,

“আচ্ছা। তুমি বিয়ে করবে আমাকে?”

শোয়া থেকে লাফিয়ে উঠল অয়ন্তী। বিস্ফোরিত দৃষ্টি ফেলল রাফায়াতের দিকে। হতবাক না হয়ে পারলনা সে! লোকটার কী মাথা টাথা নষ্ট হয়ে গেছে? কীসব যা তা বলছে সে? শুকনো ঢোঁক গিলল অয়ন্তী। কাঠ কাঠ গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“মানে?”

বিভৎস অয়ন্তীর দিকে খানিক ঝুঁকে এলো রাফায়াত। স্নিগ্ধ চাহনি তার। চোখ ফেরানো দায় এই নেশাধরা চাহনি থেকে! অয়ন্তী যদিও ডুবে যাচ্ছিল সেই নেশাভরা চোখে তবুও সে সন্তপর্ণে নিজের বেহায়াপনাকে সামলে নিলো। রাফায়াতের মুখশ্রীতে যদিও মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ছিল তবুও সে খরখরে গলায় পুনরায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“কেন বুঝো নি? আবার রিপিট করতে হবে?”

“আমাকে বিয়ে করবেন মানে?”

“তোমার পারমিশন চাইছি জাস্ট। বিয়ে করবে কী-না বলো?”

“আর ইউ মেড মিস্টার রাফায়াত? ভাবলেন কী করে আমি আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হব?”

“কেন? আমার মধ্যে কী খারাপ আছে? বিয়ে করা যায়না আমাকে?”

“না যায়না! আপনার সবটাই খারাপ!”

“রাদিফ হলে ঠিকই বিয়ে করতে তাইনা?”

“তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখেনা?”

অয়ন্তীর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো রাফায়াত। অয়ন্তীর সামনে কঠিন ভাব নিলেও পিছু ঘুরে সে স্মিত হাসল! নাক ঘঁষে বিড়বিড়িয়ে বলল,,

“তুমি হয়ত জানোনা মিস লঙ্কা! তোমাকে বিয়ে করার সময় ঘনিয়ে এসেছে আমার! রাদিফের শরীরে থাকা এই রাফায়াতকেই বিয়ে করবে তুমি। অনিক নামের কালো ছায়া তখন আমাদের জীবন থেকে সরে যাবে অয়ন্তী। নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”

_________________________________

সোফার এক কোণায় ঠেসেঠুসে বসে আছে প্রিয়া। মুখশ্রীতে তার প্রখর আতঙ্কের ছাপ। কেমন যেন আড়চোখে সে তার দৃষ্টির সম্মুখে হাতে মোটা বেল্ট নিয়ে বসে থাকা রাফায়াতের দিকে বিভ্রান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে! ম’রে যাচ্ছে যাচ্ছে অবস্থা তার! রাফায়াতও নাছোড়বান্দা। হাতে থাকা বেল্টটি সে বারংবার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্রিয়াকে অতিশয় ভয়ঙ্কর কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে!

#চলবে…?