#কথা_দিলাম ?
#পর্ব:১১
#নিশাত আহমেদ
.
.
সিয়ার কথা শুনে আকাশ ভাঙে আয়ানের মাথায়।
-“সিয়া,তুমি কি পাগল হয়ে গেছ?কী বলছ এসব?”
-“আমি ঠিকই বলছি আয়ান।আমার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তুমি আমাকে জোর করে বিয়ে করেছ।তাই ওটা মিথ্যে বিয়ে ছিল।আমি আরহানকে ভালোবাসি।আর আরহানকেই বিয়ে করবো।”
-“আরহান তোমাকে ব্ল্যাকমেল করেছে রাইট?আমি জানতাম।এই বিয়ে হবে না।”
-“হবে।বিয়ে আজই হবে।আরহান,আজ সন্ধ্যায় কাজি ডাক।আমাদের বিয়ে হবে।”
আয়ান পাগল হয়ে যাবে।কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগেই শান্ত হয়ে যায় সিয়ার চোখে চোখ পরতেই।সিয়ার চোখ ওকে ইশারা করছে।তারমানে যাই হচ্ছে তার পেছনে সিয়ার কোনো প্ল্যান আছে।চুপ হয়ে যায় আয়ান।এমন সময় বাড়িতে ঢোকে তিয়া।
-“শুনলাম সিয়া নাকি আরহানকে বিয়ে করছে।আয়ানের সখ মিটল?”
-“হ্যাঁ।মিটল।এবার তুমি চাইলে আয়ানকে বিয়ে করতে পারো।”
ভ্রু কুঁচকে সিয়ার দিকে তাকায় আয়ান।সিয়া চোখের ইশারায় ওকে আস্বস্ত করছে যা হচ্ছে হতে দাও।
-“বেশ।তুমি যখন ঠিক করেই নিয়েছ যে আরহানকে বিয়ে করবে তখন আমিও তিয়াকে বিয়ে করবো।আজই।একই কাজি আমাদের বিয়ে পরাবে।”
-“আমার কোনো সমস্যা নেই।”
তিয়ার খুশি আর ধরছে না।অবশেষে আয়ান ওর হতে চলেছে।”তাহলে আমি কাজি অফিসে খবর দিয়ে আসি।”বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় আরহান।তিয়াকেও তো আজ সারাদিন পার্লারে কাটাতে হবে।তাই ও বেরিয়ে যায়।আয়ান সিয়াকে টেনে রুমে নিয়ে যায়।দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।
-“কী বলছিলে তুমি?মাথা খারাপ হয়ে গেছে?”
-“কেন?ঠিকই তো বলেছি।তুমি আমাকে ভালোবাস?”
-“না।বাসি না।সেই জন্যই তো আমার বাচ্চার মা হতে যাচ্ছ তুমি।”
আয়ানের কথা শুনে হেসে দেয় সিয়া।
-“তুমি হাসছ?জানো আমার কী অবস্থা হয়েছিল তোমার কথা শুনে?মনে হচ্ছিল আমার সব শেষ।”
-“সরি।তোমার সাথে আলোচনা করার সুযোগ আরহান দিলে তো তোমাকে বলতাম।তোমাকে আমি এখন কিছুই বলব না।যা হচ্ছে মেনে নাও।আজ সন্ধ্যায় বিরাট একটা সারপ্রাইজ পাবে।”
-“কী সারপ্রাইজ?”
-“বললে সারপ্রাইজ থাকে নাকি?”
-“বলো না।”
-“উফফ!এত্ত অধৈর্য কেন তুমি?”
-“ধৈর্য্য ধরতে পারি।যদি…”
-“যদি?”
-“একটি কিস করো।”
-“আজকে না তোমার বিয়ে।অন্য একটা মেয়ের কাছ থেকে কিস চাইতে লজ্জা করছে না?”
-“ওর সাথে বিয়ে হবে।আর তোমার সাথে বিয়ে হয়ে গেছে।তাহলে?”
-“হুম।”
-“কী হুম?দাও।”
সিয়ার আর কী করার?এমন সুযোগ কি হাত ছাড়া করা যায়?
.
.
আরহান ব্যস্ত বিয়ের প্রস্তুতি নিতে।এমন সময় দিশার ফোন আসে ওর ফোনে।
-“আরহান,আমি জানি তুমি আমাকে ইস্যু করে সিয়াকে ব্ল্যাকমেল করেছ।কেন ওদের জীবন নষ্ট করছ তুমি?”
-“দিশা,আমি যা করছি সবার ভালোর জন্য করছি।আমার মেয়ে কেমন আছে?”
-“খবরদার,তোমার মেয়ে বলবে না।ওর বাবা হওয়ার যোগ্য নও তুমি।”
-“আচ্ছা বেশ।তোমার মেয়ে কেমন আছে?”
-“এত নির্লজ্জ তুমি?প্লিজ আরহান।সিয়া আর আয়ানের সুখ নষ্ট করো না।প্লিজ।”
-“দেখি তোমার রিকুয়েস্ট রাখা যায় কিনা।এখন বিয়ের কাজে একটু ব্যস্ত।পরে কথা হবে।বাই।”
-“হ্যালো।আরহান।আরহান আমার কথা শোনো।”
আরহান ফোন কেটে দেয়।সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে দিশার।কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না।
.
.
-“তুমি ভাবলে কী করে আয়ান যে আমার এই অবস্থায় আরহান আমাকে ব্ল্যাকমেল করবো আর আমি ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাব?এতটা অবিশ্বাস আমার প্রতি?”
-“তুমি এমনভাবে বললে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”
-“আরহান আমাকে অনেক ভালোবাসে।তাই আমি ওকে বিয়ে করবো।”
-“আবার কী উল্টাপাল্টা বকছ?”
-“ঠিকই বলছি।”
-“সিয়া,আই থিংক মা হওয়ার আনন্দে তোমার মাথার তারগুলা ছিঁড়ে গেছে।”
-“কী?আমি তারছিঁড়া?তুমি আমাকে পাগল বললে?লাইক সিরিয়ারলি?”
-“আহা,রাগ করছ কেন?তোমার কথা শুনে তাই মনে হচ্ছে।বলো না কী প্ল্যান।”
-“না,শুধু এটুকু জেনে রাখ যারা যারা অন্যায় করেছে প্রাপ্য শাস্তি তারা পাবে।”
-“হুম।বাট সাবধানে।তোমার যা হওয়ার হোক।আমার বাবুটার যেন কিছু না হয়।”
-“এখন আমিও পর হয়ে গেলাম তো?”
-“তুমি পর হতে যাবে কেন?তুমি তো আমার কলিজার টুকরা।”
-“হুম।বুঝি বুঝি।”
-“কী বোঝ?”
-“কিছু না।”
আয়ানের বুকে মাথা রাখে সিয়া।আয়ান ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।
.
.
বিয়ের প্রস্তুতি প্রায় শেষ।সন্ধ্যাও ঘনিয়ে আসছে।তিয়া তো পার্লারেই কাটালো সারাটাদিন।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচরাচ্ছে আরহান।মুখে বাঁকা হাসি।আজ অনেক বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে যার জন্য ও এতদিন ধরে অপেক্ষায় ছিল।
চলবে….