কারণে অকারণে সে পর্ব-১৪

0
558

#কারণে_অকারণে_সে
#পর্ব:১৪
#লেখক:রিয়ান আহমেদ (ছদ্মনাম)
;
অবশেষে নেহা সম্পর্ক ভেঙ্গে দেওয়ার সাতদিনের মাথায় তীব্রর পরিবার নেহার আর তীব্রর সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ে জানতে পারলো।আরশির মা এখন তীব্রদের বাসায়ই এসেছেন এই ব্যাপারে কথাবার্তা বলতে।

শবনম বেগম বিছানায় আধশোয়া হয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন।উনি দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বললেন,
“আয়েশারে আমার ছেলের সাথে এমনটা হবে আমি ভাবি নি।এইভাবে ঐ মেয়েটা কিভাবে বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে পারলো?”

গৃহকর্মী রেবেকা ঠান্ডা বেলের জুস নিয়ে রুমে ঢুকে।আয়েশা বেগম সেটা হাতে নিয়ে শবনম বেগমের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলেন,
“ভাবি তুমি এটা খেয়ে মাথা ঠান্ডা করো।দেখো টেনশনে ঘেমে তোমার অবস্থা কেমন হয়েছে।”

শবনম বেগম একটু জুস খেয়ে সেটা রেখে দিয়ে বলেন,
“টেনশন না করে কিভাবে থাকি বল?ওদের এংগেজমেন্ট হয়ে গেছে কদিন পর বিয়ে হওয়ার কথাও ছিল এমন একটা পর্যায়ে এসে মেয়েটা কিভাবে পারলো বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে।আমার ছেলেটার মুখটা আজ কিছুদিন যাবত কেমন শুকিয়ে গিয়েছিল আজ বুঝলাম এর কারণ।”

আয়েশা বেগম আশ্বাসের সুরে বললেন,
“আহা তুমি এতো করছো কেন আমরা তীব্র জন্য এর চেয়ে ভালো মেয়ে খুজে বের করব।”
শবনম বেগম বেগম বললেন,
“আর ভালো মেয়ে! ওই মেয়ে বিয়ে ভেঙে দিয়েছে বলে সবাই হয়তো ভাবছে আমার ছেলের কোনো সমস্যা আছে।আমাদের মান সম্মান সব ধুলোয় মিশে যাবে।,,আমি আগেই বুঝেছিলাম এই মেয়ে আমার ছেলের জন্য ঠিক না। যতই ভালো সাজার চেষ্টা করুক ও হচ্ছে উপর দিয়ে ঠিকঠাক ভিতর দিয়ে সদরঘাট।ঠিকই নিজের আসল রঙ দেখিয়ে দিয়েছে।”
আয়েশা বেগম বললেন,
“এসব ভুলভাল কথা ভেবো না।সবসময় ভালো কথা ভাবতে হয়।ঐ মেয়ে কি?ঐ মেয়ের চেয়ে হাজার গুন ভালো ফ্যামিলির মেয়ে তীব্রর জন্য খুঁজে আনবো আমরা।”

শবনম বেগম জবাব দেন না।তার মাথায় ঘুরছে অন্য এক কথা।সত্যি বলতে ওনার অনেক আগে থেকেই আরশিকে নিজের পুত্র বধু হিসেবে পছন্দ ছিল।কিন্তু স্বামী আর ছেলের পছন্দের উপরে সে আর কিছু বলতে পারে নি।আর তার উপর সম্পর্কের একটা ব্যাপার আছে।আরশির যদি বিয়ে ঠিক না হতো তাহলেও হয়তো তিনি এই ব্যাপারে আরেকবার ভাবতেন।কিন্তু এখন আর তা সম্ভব নয় কারণ আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাদে আরশির বিয়ে।শবনম বেগম দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে বলে,
“আরশি সাভাশের সাথে সুখে থাকুক তাই আমি চাই।তীব্র কখনো হয়তো আরশিকে যোগ্য সম্মান দিতে পারতো না।আর আরশিও হয়তো সুখী হতো পারতো না।উপরওয়ালা যা করে ভালোর জন্যই করে।তবুও একটা আফসোস আমার সারাজীবন থেকেই যাবে,,আরশির মতো একটা সোনার টুকরো মেয়েকে নিজের ঘরের লক্ষ্মী হিসেবে না পাওয়ার আফসোস।”

তীব্র নিজের ঘরের বারান্দায় গিয়ে বসে।তার আজ সবকিছুই অগোছালো মনে হচ্ছে।দুপুর তিনটা বাজে কিন্তু এখনো গোসল হয় নি তার।তীব্র বারান্দার গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়।গাছগুলোর অবস্থা শোচনীয়।পানির তৃষ্ণায় তারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে।তীব্রর মনে পড়ে প্রায় গত পাঁচদিন যাবত সে গাছে পানি দেয় না।তীব্র বিদ্রূপাত্মক হাসি দিয়ে বলে,
“আরশি তুই আমাকে অগোছালো করে দিয়ে চলে গেছিস।আমার বারান্দায় এসে প্রতিদিন গাছে পানি দেয়ার দায়িত্বটা তোরই ছিল।,,,গাছগুলো পানির অভাবে এখনো মরে নি এটাই অনেক বেশি, ছাদে থাকলে তো সেই কবেই মরে যেতো।ওরা বোধহয় তোর অপেক্ষায়ই আছে তুই ওদের পানি দিতে কি আর আসবি না?হুম আসবি না।কারণ গাছের মালিকের ওপর তোর চরম রাগ চরম ঘৃণা।”

তীব্র সিদ্ধান্ত নেয় গাছে সে পানি দেবে না।সে নিজেই যেহেতু গোসল করে নি তাই তার গাছের গোসল করার অধিকার নেই।তীব্র আকাশের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে।ঘন কালো মেঘে ঢাকা আকাশ এই বৃষ্টি নামলো বলে।বৃষ্টি শুরু হয় তীব্রর সাথে সাথে গাছগুলোও ভিজতে শুরু করে।শেষ পর্যন্ত গাছগুলো পানির সন্ধান পেল।তীব্র চোখ বুঝতেই চোখের সামনে ভেসে উঠে মিষ্টি একটা মুখ যা আর কারো না আরশির।আরশির সেদিন বলা সবগুলো কথা তীব্রর কানে বাজতে শুরু করে।তীব্র চোখ খুলে ফেলে।বড় একটা নিঃশ্বাস নিয়ে মুখের পানি মুছে বলে,
“আমি সত্যিই তোকে অনেক অসম্মান করেছিরে আরশি।আমি কখনো একবারের জন্যও ভেবে দেখি নি তোর এসব খারাপ লাগে কি না।আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি।”
পেছন থেকে কেউ একজন বলে উঠে,
“অনেক দেরী হয়ে গেছে তোমার নিজের ভুল বুঝতে।”
তীব্র ঘুরে দেখে তার মা দাঁড়িয়ে আছে।তীব্র উঠে দাঁড়ায় মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে এক দৃষ্টিতে।শবনম বেগম ছেলের হাতে তোয়ালে ধরিয়ে দিয়ে বলেন,
“থাকিতে কেউ নাহি বুঝে,
হারিয়ে গেলে সবাই খোঁজে।”
উনি কথাটা বলে আর দাঁড়ান না হনহন করে চলে যান।তীব্র নির্বাক হয়ে মায়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে।
;
;
আরশির বৃষ্টি দেখতে খুব ভালো লাগে কিন্তু ভিজতে ইচ্ছে করে না।কিছু দেখার মাঝেই উপভোগ করা যায় এটাই ওর ধারণা।তাছাড়া বৃষ্টিতে গোসল করলে ওর চুল ফুলে উঠে একটা বিশেষ সমস্যা আবার চশমা পড়ে ভিজাও সম্ভব না চশমা ঘোলা হয়ে যায়।

আরশি জানালায় হেলান দিয়ে বসে বসে ভুতের ছবি দেখছিল।কলিং বেলের শব্দ হয়।বাসায় সে ছাড়া আর কেউ নেই তাই আরশি মোবাইল রেখে খাট থেকে নামে তখনই ভীষণ জোরে একটা বাজ পড়ে।আরশি লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে যায়।বাজটা অনেক জোরেই পরেছে এতো জোরে যে আরশির বুক খুব জোরে টিপ টিপ করছে।আরশি চিল্লিয়ে বলে,
“আল্লাহ্ গো এটা কি ছিল?আ,,আমি ভয় পেয়ে গেছি।এতো জোরে বাজ পড়তে আমি কখনোই দেখি নি।আমার জীবনে শোনা সবচেয়ে শক্তিশালী শব্দ এটা।”

আরশির হঠাৎ আশেপাশের পরিবেশ ভয়ানক লাগতে শুরু করে না চাইতেও তার চোখ পাশের বাসার একটা রুমে চলে যায়।গতকাল তাদের প্রতিবেশীর বৃদ্ধ বাবা হঠাৎ মারা গিয়েছে ঐ রুমটাতেই তিনি থাকতেন।আরশি চোখ সরিয়ে নিয়ে আয়াতুল কুরসি পড়ে বুকে ফু দেয়।কলিং বেল এখনো বাজছে।আরশি জলদি জলদি সিড়ি দিয়ে নামে।দরজা ওপারের মানুষটা যদি চোরও হয় তাহলেও আরশি আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করবো।ভুতের হাতে মরার চেয়ে চোরের হাতে পড়া বেশি ভালো।চোরকে অন্তত মারা যাবে কারণ সে জীবিত মৃত ব্যক্তিকে তো আবার মারা সম্ভব না।

আরশি দরজা খুলতেই একটি মেয়ে তাকে জাপ্টে ধরে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে।আরশি নিজেকে কোনোমতে সামলে নিয়ে দাঁড়ায়।মেয়েটির চেহারা এখনো আরশি দেখে নি।সে মেয়েটিকে নিচের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সামনে দাঁড় করাতেই অবাক হয়ে বলে,
“মিনু তুমি!”
মিনু আরশিদের প্রতিবেশী।গতকাল যেই বৃদ্ধ লোকটা মারা গেছে তার নাতনি মিনু।
মিনু অনবরত ফুঁপিয়ে কেঁদে চলেছে কোনো কথি বলছে না।আরশি দেখে মিনুর পায়ে কোনো জুতা নেই গায়ে ওরনা পর্যন্ত নেই।কেমন বিধ্বস্ত একটা অবস্থা।আরশি মিনুর হাত ধরে সোফায় বসিয়ে বলে,
“কি হয়েছে কান্না করছো কেন?”
“পানি খাবো।”
আরশি কথা বাড়ায় না ডাইনিং রুম থেকে পানি এনে মিনুকে দেয়।মিনু পানি খেয়ে কিছুটা শান্ত হয়ে বলে,
“আপু আমাকে আজকের দিনটা তোমাদের বাসায় থাকতে দিবা।”
আরশি অবাক হয়ে বলল,
“কেন?কি হয়েছে?”
“,,,আপু আমাকে বাঁচাও প্লিজ।”
কথাটা বলে মিনু এক প্রকার আরশির পায়ের উপর পড়ে।আরশি মিনুকে ধরে উঠিয়ে বুঝিয়ে বলে,
“কি হয়েছে আমাকে খুলে বলো।আমি তোমাকে অবশ্যই বাঁচাবো কিন্তু কার থেকে বাঁচাতে হবে সেটা তো বলো।”
“আমার মামাতো ভাই সৌরভ।ও আমাকে ,, আমাকে রেপ করতে চায়।”
আরশির শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় কথাটা শুনে।ক্লাস এইটের বাচ্চা মেয়ে মিনু।মা মারা যাওয়ার পর মামার বাড়িতেই সে বড় হয়েছে।বলতে গেলে এটাই ওর একমাত্র পরিবার আর এই পরিবারেই ওর ভাই সমতুল্য ছেলেটা ওকে ধর্ষণ করতে চাইছে।ব্যাপারটা ভাবতেই আরশির গা ঘিনঘিন করে উঠে।কতো জঘন্য মানুষ হতে পারে।আরশি বলে,
“কি করেছে ও?”
মিতু মাথা নিচু করে বলে,
“ভাইয়া প্রায় অনেকদিন যাবতই আমাকে বাজে প্রস্তাব দিচ্ছিলো ইশারা ইঙ্গিতে।কিন্তু নানাভাইয়ের জন্য মুখে বলতে পারছিল না।আমি কাউকে বলতেও পারছিলাম না কারণ মামার বাসাটাই আমার শেষ আশ্রয়।কাল নানাভাইয়ের মারা যাওয়াটাই আজ আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।আজ মামী দুপুরে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে থাকাকালীন সৌরভ ভাই আমার ঘরে আসে।মামা তো অফিসেই।এরপর উনি আমাকে বাজে প্রস্তাব দেন।আমি রাজি না হওয়ার পর আমাকে জোরজবরদস্তি করতে থাকেন।এরপর হঠাৎ অনেক জোরে বাজ পড়ে।আল্লাহর রহমত ঐ বাজটা।সৌরভ ভাই ভয় পেয়ে আমার হাত ছেড়ে দিতেই আমি কোনোমতে এখানে পালিয়ে এসেছি।”

আরশি বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।যেই ছেলেটা এই বাচ্চা মেয়েটাকে শেষ করে দিতে চাইছিল।সেই ছেলেটাকেই ও ভাই বলে সম্বোধন করছে।’ভাই’ এই শব্দটার আদৌ কি যোগ্য ঐ মানুষটা?নাহ্!কোনো জানোয়ার কখনো কারো ভাই হতে পারে না।ভাই তো এমন একজন মানুষ যে নিজের ভাই বোনকে পৃথিবীর সব বিপদ থেকে রক্ষা করে।
আরশি মিনুকে তার রুমে নিয়ে গিয়ে বসায়।কিছুক্ষণ পর আয়েশা বেগম আসেন বাড়িতে।মেয়ের কাছে সব শুনে তিনি রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।আয়েশা বেগম বলেন,
“ঐ ছেলেটা যে বাজে তা আমি জানতাম এতোটা জঘন্য তা আমি বুঝতে পারি নি।মিনু তো ওর ছোট বোন হয়।ছোটবেলা থেকে ওদের বাড়িতেই বড় হয়েছে।কিভাবে পারলো ঐ বাচ্চা মেয়েটার সাথে এমন করতে?সবাই বলে মেয়েরা ঘরের বাইরে সেফ নেই কিন্তু এই কথাটা ভুল আসল কথা হলো মেয়েরা ঘরে বাইরে কোথাও সেফ নেই।এমন হাজারো মিনু প্রতিদিন ঘরে বাইরে সব জায়গায় নিপীড়িত হচ্ছে।এদের আওয়াজ দাবিয়ে দেওয়া হয় হাজারো প্রশ্নের মাঝে।মানুষ ভিক্টিমকে প্রশ্নগুলো এমনভাবে করে যে মনে হয় ভিক্টিম নিজেই অপরাধটা অপরাধীকে করতে বলেছে।সৌরভের নামে আগামীকালকেই আমরা মামলা করবো।এই কুকুরটা ঘুরে বেড়ালে আরো কতো মেয়ের সর্বনাশ করবে কে জানে।তুই মিনুকে বলবি ভয় পেতে না আমরা আছি।”
আরশির নিজের মায়ের প্রতি গর্ববোধ হয়।সত্যিই পৃথিবীর সব মায়েরা বেস্ট। আরশি মাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
“আম্মাজান তোমাকে ভালোবাসি অনেক বেশি।”
আয়েশা বেগম হাসেন মেয়ের কথায়।
;
;
;
;
সাভাশের কাছে লোক এসেছে।লোকটার নাম তানভীর মাহমুদ।লোকটা বলল,
“স্যার আপনাকে একটা ক্যাস লড়তে হবে আমার ছেলেকে ডিফেন্স করে।”
সাভাশ ভ্রূ কুঁচকে বলল,
“আপনার ছেলেকে কোন অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে?”
“sexual harassment এর ক্যাস।আসলে স্যার বুঝতেই পারছেন উঠতি বয়সের বাচ্চা ভুল একটু আধটু হয়েই যায়।”
“সরি আমি কেস নেবো না।”
“আমি আপনাকে ডাবল পে করবো স্যার।আপনি চাইলে এর বেশিও করতে পারি।”
“আপনাকে আমাকে আমার এতোদিনে যত কামাই করেছি সেই টাকা দিলেও আমি এই কেস নেবো না।বাই দ্য ওয়ে আপনার ছেলের বয়স কত?
” উনিশ বছর হয়েছে।”
“উনিশ বছরের ছেলে কখনো বাচ্চা হয় না আর বাচ্চারা কখনো মা জাতিকে অসম্মান করা তো দূরের কথা তাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করার আগে একশবার ভাবে।,,আপনার ছেলে আজ জেল থেকে বের হয়ে আগামীকাল হয়তো কোনো মেয়ের জীবন শেষ করবে।আর তার জন্য দায়ী হবে কে জানেন?আপনি।নিজের সন্তানকে সঠিক শিক্ষা যেহেতু দিতে পারেন নি তাই এখন আপনার কাছে তাকে শাস্তি পেতে দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।আপনি আসতে পারেন।”
তানভীর মাহমুদ বেরিয়ে আসেন সাভাশের কেবিন থেকে।সাভাশ এই শহরের সেরা এডভোকেটদের মধ্যে একজন কিভাবে হয়েছে তা উনি বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারছেন।সাভাশ অন্যায়কারীর জন্য কেস লড়ে না সেটা হাজার কোটি টাকার বিনিময়েই হোক না কেন।সাভাশের কাছে অন্যায় সবসময় অন্যায়ই থাকে।
;
মিনু কোর্টে কিছু বলতে না পারায় সৌরভকে নির্দোষ হিসেবে ধরে নেয়া হয়।আরশি ভাবতেও পারে নি মিনু এভাবে সৌরভকে ছেড়ে দেবে।কোর্ট রুম থেকে বেরিয়ে আরশি মিনুকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে মিনু কান্না করতে করতে বলে,
“আপু আমি পারবো না এমনটা করতে।মামা মামি আমাকে ছোটবেলা থেকে বড় করেছে আমি তাদের এতো বড় সর্বনাশ করতে পারবো না।আর যাইহোক তারা আমাকে কখনো অবহেলা করে নি।”
আরশি অবাক হয় এতো দয়া!কেউ সত্যিই বলেছে নারীর শরীর দয়া দিয়ে তৈরি।তানভীর মাহমুদ আর ওনার স্ত্রী আরিফা মিনুর কাছে এসে দাঁড়ান।আরিফা বেগম কেঁদে কেটে বললেন,
“মা আমাদের মাফ করে দিস।আমরা কখনোই বুঝতে পারি নি সৌরভ তোর সঙ্গে এমনটা করবে।ওকে আমরা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি আজ থেকে তুই আমাদের একমাত্র মেয়ে আর কেউ নেই আমাদের।”
এরপর মিনুও কান্নাকাটি করলো।ম্যালো ড্রামা হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত মিনু আরশির পরিবারকে বলল,
“আমি মামা মামির কাছে ফিরতে চাই।”

আরশির পরিবার কিছু বলতে চেয়েও পারলো না।যেখানে মিনু নিজেই যেতে চাইছে সেখানে তারা কি করতে পারে।তাই অবশেষে মিনু নিজের মামা মামির সঙ্গেই চলে যায়।

আরশি হতবাক হয়ে বসে আছে।টেবিলের ল্যাম্প একবার জ্বালাচ্ছে আরেকবার বন্ধ করছে সে।মিনুর জন্য তার ভয় হচ্ছে।মেয়েটা অনেক সরল তার এই সরলতাটা যেন কেউ তার দুর্বলতা না ভেবে নেয়।
;
#চলবে!