কারণে অকারণে সে পর্ব-২৯ এবং শেষ পর্ব

0
1038

#কারণে_অকারণে_সে
#অন্তিম_পর্ব
#লেখক:রিয়ান আহমেদ (ছদ্মনাম)
;
সৌরভের হাতে হাত কড়া লাগিয়ে কোর্টে তুলতে দেখে আরশির খুশিতে চোখে জল চলে এলো।একটা মাস হয়ে গেছে মিনুর মৃত্যুর অবশেষে সৌরভকে পাওয়া গেছে।আর কিছুদিন দেরী করলে হয়তো সৌরভকে পাওয়া যেতো না।সৌরভকে সীমান্ত থেকে আটক করা হয়েছে সে নকল পরিচয় পত্র বানিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিল কিন্তু পুলিশ অবশেষে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।সোশ্যাল মিডিয়ার অবশ্য একটা বড় অবদান আছে এতে।সৌরভের নামের ওয়ারেন্ট জারি করার সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছবি এবং কর্মকান্ড ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল।
সৌরভ যেখানে ছিল সেখানকার একটা হোটেলে খাবার খাচ্ছিল তখন একজন কাস্টমার ওকে চিনে ফেলে এরপর আর কি স্থানীয় পুলিশকে ফোন করে যারা তৎক্ষনাৎ এসে সৌরভকে আটক করে।আদালতের কাঠগড়ায় সৌরভকে দাঁড় করানো হয়।

সৌরভের বাবা তানভীর মাহমুদ জানেন তিনি ছেলেকে আর বাঁচাতে পারবেন না তবুও একজন ভালো এডভোকেট হায়ার করার বহু চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোনো ভালো এডভোকেট কেস নিতে চায় নি কারণ তারা জানে কেস তাদের হারতে হবে।তবুও একজনকে শেষ পর্যন্ত যোগাড় করা গেছে যে বলেছে সে চেষ্টা করবে তবে বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা দিতে হবে।তানভীর মাহমুদ রাজি কারণ তার একটামাত্র ছেলে ফাঁসি না হয়ে যদি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তখনও তার খুব একটা দুঃখ নেই অন্তত ছেলের লাশ তো আর নিজের কাঁধে বইতে হবে না।
সাভাশ নিজের পোশাকে তৈরি হয়ে আছে।সব প্রমাণ তৈরি তার কাছে।আরশি সাভাশের হাতের উপর হাত রেখে বলে,
“ওর সর্বোচ্চ শাস্তির যেন হয়।”
সাভাশ মুচকি হাসি শুধু।কিছু সময় পর ট্রায়াল শুরু হয়।সৌরভকে সাভাশ জিজ্ঞেস করে,
“তো মিস্টার সৌরভ আপনি আদালতের সময় নষ্ট না করে আগেই যদি নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিতেন তবে এখানে বসে থাকা সবাই খুশি হতো।”
সৌরভ রাগী গলায় বলল,
“জর্জ সাহেব আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাসানো হয়েছে।আমি আমার মামাতো বোনকে খুন করতে কেন যাবো?তাকে আমি নিজের বোনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতাম।”
সাভাশ জর্জের দিকে তাকিয়ে বলে,
“ইওর ওনার মিস্টার সৌরভ সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছে।সে মিনুকে নিজের বোন তো দূরে থাক মামাতো বোন পর্যন্ত মানতো না।তেরো বছরের নাবালিকা কিশোরী মিনুকে সৌরভ একদিন একা ঘরে রেপ করার চেষ্টা করেছে।”
সৌরভ চেঁচিয়ে বলল,
“এসব মিথ্যে কথা।আমি এমনটা করি নি মিনু মিথ্যা বলে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল।আমি যদি সত্যিই এমনটা করতাম তাহলে কোর্টে ও কেন কিছু বলে নি সেদিন?”
“কারণ সে ভেবেছিল তার মামা মামী কষ্ট পাবে একমাত্র মামাতো ভাইকে জেলে যেতে দেখে।সৌরভের বিরুদ্ধে সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের কেসের সেই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে একটি প্রমাণ আমি আদালতে পেশ করতে চাই।”
সাভাশ একটা রেকর্ডিং চালু করে যেটাতে মিনু সৌরভের করা আচরণের বিবরণ দিয়েছে।
সাভাশ রেকর্ডিং শেষ হলে বলে,
“ইওর ওনার এই রেকর্ডিংটা অনেক আগেই করে রাখা হয়েছিল কিন্তু মিনুর মতামত না থাকায় সেই কেসটাতে এটা আদালতে উপস্থাপন করা হয় নি।”
সৌরভ ইতোমধ্যেই ঘামতে শুরু করেছে।সে ভাবে নি এমন একটা রেকর্ডিং আছে।সাভাশ বলে,
“এবার বলুন মিস্টার সৌরভ আপনি মিনুকে কোন চোখে দেখতেন।”
সৌরভ আমতা আমতা করে বলে,
“হ্যা আমি ওর সঙ্গে কিছুটা বাজে আচরণ করেছিলাম কারণ তখন আমি নিজের জ্ঞানে ছিলাম না।”
“তাহলে কোথায় ছিলেন?না মানে নিজের জ্ঞানে তো পাগলরাই থাকে না কিন্তু আপনার মেডিকেল রিপোর্ট তো বলছে আপনি সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিষ্কের একছন মানুষ।”
“,,,,,,আমি সেদিন ড্রিংক করেছিলাম।”
“ও তার মানে আপনি নেশাও করেন।”
সাভাশ জর্জের দিকে তাকিয়ে বলে,
“ইউর ওনার আপনি অনুমতি দিলে আমি কিছু প্রমাণ আদালতে পেশ করতে চাই।”
জর্জ সাহেব বললেন,
“অনুমতি দেওয়া হলো।”
সাভাশ বাইকের নেম প্লেটটা সৌরভের সামনে ধরে বলল,
“এটা চিনতে পারছেন?”
“অদ্ভুত আমি এটা চিনবো না কেন এটা তো আমারই বাইকের নেমপ্লেট।”
সাভাশ হেসে বলল,
“এক্সেক্টলি!এটাই সেই বাইকের নেম প্লেট যেটা দিয়ে আপনি মিনুকে ধাক্কা মেরেছেন।”
সৌরভ দ্রুত বলল,
“না না আমি এই বাইক দিয়ে ধাক্কা মারি নি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।”
“না এটাই সত্যি কথা।আপনিই মিনুকে ধাক্কা মেরেছেন এবং এই বাইকটা দিয়ে।”
দুজনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়ে গেল।সৌরভ না করছে সাভাশ হ্যা হ্যা করছে।এক পর্যায়ে সৌরভ বলল,
“আমি নাদিমের বাইক দিয়ে মিনুকে ধাক্কা মেরেছিলাম তাহলে আমার বাইক,,,,,।”
সৌরভ আর কথাটা শেষ করতে পারে না।নিজের মুখে হাত দিয়ে ফেলে।সবাই হা করে তাকিয়ে আছে সৌরভের দিকে।সাভাশ বলল,
“ইওর ওনার সত্যি কথা কখনো লুকিয়ে থাকে না।”
সৌরভের পক্ষের এডভোকেট উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“ইওর ওনার এখানে কি বিতর্ক প্রতিযোগিতা চলছে?আমার বন্ধু সাভাশ আমার ক্লাইন্টকে বিভ্রান্ত করে এসব বলিয়েছেন।”
জর্জ সাহেব বললেন,
“আপনার কথার যৌক্তিকতা আমি খুজি পাচ্ছি না।মিনুর মৃত্যুটি প্রথমে একটি সাধারণ রোড এক্সিডেন্ট হিসেবে এতোটা সময় পর্যন্ত হয়তো ছিল তবে এখন আর নেই।”
সৌরভের এডভোকেট বলল,
“ইওর ওনার আমার ক্লাইন্টকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য মিস্টার সাভাশ কথার জালে ফেলেছেন।”

সব মিথ্যেকে হারিয়ে দিয়ে আজ অবশেষে মিনুর মৃত্যুর আসামীকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হলো।হয়তো মিনু এখন শুধুমাত্র একটি নাম হয়ে রয়ে গেছে এই পৃথিবীতে।তবে তার অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার জন্য যে দায়ী তাকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।সৌরভকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জেলের অন্ধকার ঘরে কাটাতে হবে পরিবার পরিজন ছাড়া।এই জীবনের চেয়ে কষ্টের হয়তো আর কিছুই হয় না।সৌরভকে পুলিশ ভ্যানে তোলার আগের মুহূর্তে তার মায়ের আহাজারি সবাই দেখেছে।সৌরভের আজ নিজের কাজের জন্য আফসোস হচ্ছে।ছোটবেলা থেকে এই পর্যন্ত মা বাবার সঙ্গে কাটানো সময়টা তার চোখে বার বার ভেসে উঠছে।আজ যদি মিনু থাকতো তাহলে সেও কি ভাইয়ের জন্য বুক ভাসিয়ে কান্না করতো? কথাটা ভাবার পরক্ষণেই সৌরভের মনে পড়ে মিনু না ফেরার দেশে চলে গেছে আর সেখানে তাকে পাঠিয়েছে সৌরভ নিজেই।
;
;
;
আরশি রাতে বিছানায় বসে মুখে হাত দিয়ে ভাবছে কিছু একটা।সাভাশ আরশির মাথায় নারিকেল তেল দিয়ে দিচ্ছে।আরশি বলল,
“সাভাশ সৌরভের ডেথ প্যানাল্টি হলো না কেন?সে তো খুন করেছে একজন নির্দোষকে।”
সাভাশ বলল,
“ডেথ প্যানাল্টি তখনই হয় যখন ভিক্টিম নিজের মুখে স্বীকার করে সে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে।সৌরভ বলেছে তার ইন্টেনশন মিনুকে হত্যা করার ছিল না সে শুধু চেয়েছিল মিনু আহত হয়ে কিছুদিন বিছানায় পড়ে থাকুক।কিন্তু মিনু মারা গেছে।সৌরভ বলেছে সে মিনুর উপর রেগে গিয়ে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারণ মিনুর কারণে তাকে নিজের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।তাই সকল কথার উপর ভিত্তি করে সৌরভকে ডেথ পেনাল্টি বা মৃত্যু দন্ড দেওয়া হয় নি বুঝলে?”

আরশি মাথা নাড়ায়।কিছুক্ষণ পর আরশিকে বিনুনি করে দিয়ে সাভাশ বলে,
“দেখো কতো ভালো বিনুনি করতে পারি আমি।”
আরশি বলে,
“ভালোই তো মেয়ে হলে আপনিই ওর চুল বেঁধে দেবেন।”
“সমস্যা নেই।আমার মেয়ের সব কাজ আমিই করবো।দেখো আমার মেয়ে আমাকেই বেশি ভালোবাসবে।”
আরশি মুখ টিপে হেসে বলে,
“বাচ্চার খবর নেই উনি মেয়ে কতো ভালোবাসবে তাকে সেটাও ভেবে নিয়েছেন।”
“হয় নি কিন্তু ভবিষ্যতে তো হবে তাই না?”
আরশি এবার সিরিয়াস মুখ করে সাভাশের দিকে তাকায়।সাভাশের চোখে চোখ রেখে সাভাশের কোলে বসে তার হাত নিজের পেটের উপর রেখে বলে,
“সাভাশ আমারও মা হতে অনেক ইচ্ছে করে।আমিও চাই আপনার অস্তিত্ব আমার অস্তিত্বকে এই পৃথিবীতে আনতে।আমি আমাদের বেবিকে দশ মাস নিজের পেটে বড় করতে চাই।”
সাভাশ অবাক হয়ে আরশির দিকে তাকিয়ে বলে,
“কিন্তু এটা একটু জলদি না।তুমি এখনো ভার্সিটি শেষ করো নি।,,,,”
আরশি ধমকের সুরে বলে,
“কিসের জলদি? আমার ক্লাসের এক মেয়ের দুইটা বাচ্চা একটার বয়স চার আরেকটা ছয় মাস ও কি পড়াশুনা করে না? আমার বয়স এখন একুশ আপনার সাতাশ হবে সামনে।আমরা দুজনেই বাচ্চা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আর আমার ভার্সিটি বন্ধ হয়ে যাবে না বাবু এলে আপনি তো আছেনই যেদিন আমার জরুরী ক্লাস কিংবা পরীক্ষা থাকবে সেদিন আপনি,আম্মু, চাচী আম্মু কেউ একজন ওর খেয়াল রাখবে।আপনি পারবেন না রাত জেগে ওর কান্না থামাতে আমাকে সাহায্য করতে?”
সাভাশ মুচকি হেসে চোখের পলক ফেলে বলল,
“পারবো অবশ্যই পারবো।”
আরশি সাভাশের গাল টেনে ঠোঁটে কিস করে।সাভাশ ওর গালে হাত রেখে ওর ঠোঁটের ভাঁজে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।কিছুক্ষণ পর আরশিকে ছেড়ে বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলল,
“আজ থেকে এতোটা ভালোবাসা দেবো যে এক বছর শেষ হওয়ার আগে তোমার কোলে টুনি চলে আসবে।”
আরশি মুচকি হেসে বলে,
“দেখা টুনি হয় না কি টুনা।”
সাভাশ আরশি ধপ করে খাটের উপর ফেলে দিয়ে নিজের সম্পূর্ণ ভর আরশির উপর ছেড়ে দেয়।
(এরপরের ঘটনা আর বলতে পারলাম না।আমি আবার অত্যন্ত লাজুক স্বভাবের মানুষ🙄।)
;
;
;
তীব্রর আর পরীর আজ বিয়ে হয়েছে।বিয়েটা এতো জলদি হতো না যদি না পরীর দাদী মরার আগে নাতনির বিয়ে খাওয়ার বায়না করতো।বেশি বড় করে অনুষ্ঠান হয় নি কারণ পরীর দাদী অসুস্থ।তবুও নিজেদের আত্মীয় স্বজন আর তীব্রর আত্মীয় স্বজন মিলে প্রায় একশো জন মানুষের আয়োজন করা হয়েছে বাড়ির ছাদে।তীব্র আর পরীর কাগজে কলমে বিয়ের পর কবুল বলে ইসলাম মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন হলো।তীব্র কবুল বলেই উঠে দাঁড়ায়।সবাই বিস্মিত কন্ঠে বলে,
“এই তীব্র এভাবে উঠে দাঁড়ালে কেন?”
তীব্র যা বলল তা শুনে সবার অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা।তীব্র বলল,
“আমি দাদী শাশুড়ির কাছে যাচ্ছি তাকে ধন্যবাদ দিতে না হলে আমার শশুর তো আরো দুই মাস অপেক্ষা করাতো পরীর পরীক্ষার জন্য।শুধুমাত্র ওনার জন্য আমার বউকে এতো জলদি বাড়িতে নিতে পারছি তাই ধন্যবাদটা ওনার পাওনা।”
সবাই তীব্রর কথায় হা হয়ে আছে।তীব্র আর দেরী না করে পরীকে স্টেজে ফেলেই দাদী শাশুড়ির কাছে চলে যায় ধন্যবাদ জানাতে।

আরশি অবাক হয়ে গেছে তীব্রর আচরণে।তীব্রর কথাবার্তা শুনে আরশির মনে হচ্ছে তীব্র তার ছেলে রূপ।নিশ্চিত আরশি যদি ছেলে হতো তাহলে হয়তো এরকমই হতো।

পরী বাসর ঘরে বসে বসে আইসক্রিম খাচ্ছে।ব্যাপারটা অতি অদ্ভুত হলেও সত্য।তীব্র গালে দিয়ে পরীর দিকে তাকিয়ে আছে।পরী বলল,
“আপনি আইসক্রিম কেন খেতে দিলেন আমাকে?বাসর ঘরে কে আইসক্রিম খায়?”
তীব্র ঘোর লাগা কন্ঠে বলে,
“আমার বউ খাবে এতে কার বাপের কি।তুমি কিছুদিন আগে ভার্সিটি থেকে ফেরার সময় রাস্তায় যখন আইসক্রিম খাচ্ছিলে তখন তোমাকে খুব কিউট লাগছিল।তাই তোমার এই কিউট রূপটা দেখার জন্য আইসক্রিম খেতে হচ্ছে তোমাকে অবশ্য তুমি এমনিতেই অনেক কিউট।আমাদের বাবু দেখো একদম তোমার মতো কিউট হবে।”
পরী কথাটা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে উঠে।তীব্র খেয়াল করে পরীর নাকের উপর একটু আইসক্রিম লেগে আছে।তীব্র আঙ্গুল দিয়ে সেটা মুছে দিয়ে।পরীর কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর কপালে চুমু খেয়ে বলে,
“কখনো কাউকে এই কথাটা বলা হয় নি আজ বলছি।আমি আমার এই পরীর রাণীকে ভালোবাসি।”
পরী তীব্রর বুকে মাথা ঠেকিয়ে বলে,
“আমিও।”
তীব্র দুষ্টুমি করে বলে,
“আমিও কি?”
পরী তীব্রর বুকে কিল দিয়ে মৃদু হেসে বলে, “ভালোবাসি এই পাগল লোকটাকে।”
তীব্র জড়িয়ে ধরে তার জীবনের পরীকে।আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যই করেন তাই হয়তো পরী তার জীবনে এসেছে।যাকে ‘কারণে অকারণে সে’ ভালোবাসে।
;
;
;
;
“আরহাম তুই যে কি পাগলামি করিস না।এরকম সবুজ রঙ পড়ে কাউকে বিয়ে করতে দেখেছিস?”
আয়েশা বেগম রাগে গজগজ করে কথাটা বললেন।আরহাম কিছু বলে না উত্তরে।এখন মাকে সে কিভাবে বোঝাবে এই সবুজ রঙের শাড়ি পড়া ডাক্তার আরিয়ানাই যে তার মস্তিষ্কের নিউরণগুলো সব উল্টাপাল্টা করে দিয়েছে তাই এর গুরত্ব অনেক বেশি তার জীবনে।

আরহাম আজ সবুজ শেরওয়ানি পড়েছে আর আরিয়ানা সবুজ শাড়ি দুজনকেই অসাধারণ লাগছে।আরহাম আর আরিয়ানা পাশাপাশি স্টেজে বসে আছে।আরিয়ানা বলল,
“আরহাম তোমার কি মনে হয় ডাক্তার আরিয়ানা তোমার মনের রোগ ভালো করে দিয়েছে?”
আরহাম হেসে বলে,
“উহুঁ সে একটা রোগ ভালো করে দিয়ে আরেকটা রোগের রোগী বানিয়ে দিয়েছে আমাকে।এখন সেই রোগে আরো বেশি আক্রান্ত হতে চাই আমি তাই তো তাকে পার্মানেন্টলি নিজের ঘরের রাণী করে নিয়ে যাচ্ছি।”
আরিয়ানা কথাটা শুনে মিটমিট করে হেসে বলে,
“বাহ্ আমার বর তো ভালোই সাহিত্যিক হয়ে গেছে।”
আরহাম উত্তরে বলল,
“সবটাই আপনার ভালোবাসার জাদু ডক্টর ম্যাম।”
এনারা দুজন এতোদিন কাগজে কলমে ডাক্তার পেশেন্ট হলেও আজ তারা কাগজে কলমে স্বামী স্ত্রী হতে যাচ্ছে ইহকাল এবং পরকালের জন্য।

আরিয়ানার বিদায় বেলা হঠাৎ একটা বড় ঘটনা ঘটে যায় আরশি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে।সাভাশ আরশিকে কোলে তুলে হোটেলের একটা বেডরুমে নিয়ে যায়। সবাই বেশ চিন্তিত আরশির কি হয়েছে এটা নিয়ে।

রুমের ভিতরে পিন ড্রপ সাইলেন্স।আরশিকে ডক্টর দেখছে।রুমের ভেতরে আরিয়ানা, সাভাশ আর কয়েকজন মহিলা।বাইরে আরহাম , রিজা আহসান বেশ চিন্তিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ডাক্তার সাহেবা আরশির চেক আপ করে বললেন,
“সমস্যা নেই দুই একদিন বিয়ের জন্য বেশি ছুটোছুটি করার কারণে এমন হয়েছে।তাছাড়া এ সময়ে একটু উইকনেস থাকতেই পারে।ভবিষ্যতে খেয়াল রাখবেন প্রথম কয়েক মাস বেশ খেয়াল রাখতে হবে খাওয়া দাওয়া সহ সবকিছুর।”
আরিয়ানা খুশি হয়ে রুমের বাইরে চলে যায়।সাভাশ বুঝতে পারে না খুশির কি হলো।সে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে,
“এ সময় মানে?আমার ওয়াইফের কি হয়েছে।”
ডাক্তার মুচকি হেসে বললেন,
“আপনি বাবা হতে চলেছেন।”
সাভাশের চোখ বড় বড় হয়ে যায় যেন পলক ফেলতে ভুলে গেছে।আরহাম খুশি হয়ে রুমে ঢুকে সাভাশকে জড়িয়ে ধরে বলে,
“অভিনন্দন সাভাশ আমি মামা হতে চলেছি।”
আরিয়ানা খুশি হয়ে বলল,
“আর আমি ফুফু।”
আরহাম মাথা নাড়িয়ে বলল,
“ফুফু হবে কেন?তুমি মামী হবে।”
“না আমি ফুফুই হবো।”
আভাস রুমে ঢুকে ভ্রূ কুঁচকে সবার হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,
“কি ব্যাপার?ভাবী অসুস্থ আর তোমরা হাসাহাসি করছো কেন?”
আরিয়ানা বলল,
“আরে আভাস তুই চাচ্চু হবি যা মিষ্টি নিয়ে আয়।”
আভাস কথাটা শুনে খুশি হয়ে সাভাশকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিষ্টি আনতে দৌড় দেয়।
আরশি চোখ খুলে উঠে বসতেই সাভাশ আর অপেক্ষা না করেই আরশিকে জড়িয়ে ধরে একপ্রকার চেঁচিয়ে বলে,
“My cutie we are pregnant”
আরশি প্রথমে বুঝতে পারে না কথার অর্থ কিন্তু পরক্ষণে বুঝতে পেরে বেশ লজ্জা পায়।সাভাশ আর আরশিকে এভাবে দেখে সবাই বেরিয়ে যায়।তীব্র আর পরীও এসেছিল তারাও বেশ খুশি এমন একটা সংবাদ শুনে।তীব্র যাওয়ার আগে বলে যায়,
“আরু তোর ছেলে তোর মতো আজব হলে আমার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেবো।”
পরী কথাটা শুনে আর দেরী করে না এক প্রকার হিরহির করে টেনে নিয়ে চলে যায় তীব্রকে।লোকটা ওকে লজ্জার সাগরে ফেলে দিল।
তীব্র বাইরে এসে বলল,
“নেক্সট আমরা।”
পরী ধমক দিয়ে বলল,
“চুপ!”
;
;
;
,,,,,,,,নয় মাস পর,,,,,,,,

আরশির লেভার পেইন উঠেছে সে রাতে এমন অসহ্য ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে সাভাশের চুল টেনে ধরে।সাভাশ লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠে বসে।এই কয়েক মাসে যেই রাত গুলো আরশি ঘুমাতে পারে নি সেই রাতগুলোতে সাভাশও ঘুমাতে পারে নি হয় আরশি বসে বসে বাচ্চার কি নাম রাখবে তা নিয়ে গল্প করেছে না হলে বিনা কারণে কান্না করেছে বা ঝগড়া করেছে সাভাশের সাথে।সাভাশ মানিয়ে নিয়েছে এসবে।একজন মানুষ তাকে বাবা ডাক শোনানোর জন্য এতো কষ্ট করতে পারলে সেও তো একটু কষ্ট করতে পারে এই সময়টা তার জন্য সহজ করতে।
সাভাশ উঠে বসতেই আরশি চোখ মুখ কুঁচকে বলে,
“আই থিংক ওয়াটার ব্রোক করেছে।”
“ওহ মাই গড।”
সাভাশ জলদি নিজের মা চাচীকে ডেকে এনে আরশির পাশে বসিয়ে দিয়ে জিনিসপত্র গোছাতে শুরু করে গাড়িতে রেখে আসে।এরপর এসে আরশিকে কোলে তুলে নেয়।প্রেগনেন্সির সময়টায় আরশিকে যেন বার বার সিঁড়ি বেয়ে উঠতে না হয় তার প্রথম তলায় ওরা কয়েক মাসের জন্য শিফ্ট করেছে।

আরশিকে লেভার রুমে নেয়া হচ্ছে।আরশি যাওয়ার আগে সাভাশের হাত টেনে ধরে বলল,
“আমি সুইট মাশরুম সস স্যুপ খাবো সেটা অর্ডার দিয়ে রাখুন।”
সাভাশ মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে।এমন কথা একমাত্র আরশিই বলতে পারে এমন একটা মুহুর্তে।তাসনিম বেগম আরশির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“মা একদম শান্ত থাকবি।দেখবি সব ঠিকমতো হবে টেনশন করবি না একদম।”
আরশি লম্বা শ্বাস নিয়ে বলে,
“আ,,আমি শান্ত আছি আপনি সাভাশকে বলুন টেনশন না করতে।”
তাসনিম বেগম তাকিয়ে দেখেন আসলেই সাভাশের টেনশন বেশি।সাভাশ ফুঁপিয়ে কেঁদে চলেছে অনেকক্ষণ যাবত।
তখনই আরশির বাবার বাড়ির লোকজন এলো।
আরহাম তো বাচ্চাদের মতো কান্না করছে বোনের জন্য আর আরিয়ানা ওকে শান্তনা দিচ্ছে।আয়েশা বেগম মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ কাদলেন এরপর বললেন,
“মা সাহস রাখবি বেশি ভয় পাস না।”
আরশি বুঝতে পারে এখানে সে’ই একমাত্র ব্যক্তি যে চিল মুডে আছে বাদ বাকি সবার তো টেনশনে জান যায় যায় অবস্থা।

আরশিকে লেবার রুমে নেওয়ার তিন ঘন্টা পর সবাই বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পায়।ডাক্তার সাদা তোয়ালেতে পেঁচানো এক নবজাতককে নিয়ে বের হয়ে হাসি মুখ বলেন,
“মিস্টার সাভাশ আপনার খুব মিষ্টি একটা মেয়ে হয়েছে।”
সাভাশ বলে,
“আমার আরু,,সে কেমন আছে?”
“সে ভালো আছে বাবুকে একবার কোলে নিয়ে চুমু খেয়েছে এখন ঘুমাচ্ছে।”
সাভাশ কাঁপা কাঁপা হাতে বাচ্চা কোলে নেয়।চোখ খুলে এখনো বাচ্চাটা ঠিকমতো তাকাতে পারে নি কিন্তু সাভাশ ঠিকই বুঝে ফেলেছে বাচ্চা নিজের মায়ের মতো চোখ পেয়েছে।সাভাশ বাচ্চাটাকে বুকে জড়িয়ে নেয়।এক এক করে সবাই কোলে নেয়।সকাল সাতটায় আভাস আর সাদমান চৌধুরি আসেন হসপিটালে হাতে পুরো হসপিটালে বিতরণ করার জন্য মিষ্টি তাদের হাতে।সাভাশ বাচ্চাকে কোলে নিয়ে কেবিনের সোফায় বসে আছে আরশির এখনো ঘুম ভাঙ্গে নি।বাবা আর ভাইকে ভেতরে ঢুকতে দেখে সাভাশ বলে,
“দেখো আম্মু কে এসেছে তোমার সাথে দেখা করতে?চাচ্চু আর দাদুভাই এয়ারপোর্ট থেকে একেবারে হসপিটালে চলে এসেছে আমার আম্মুটাকে দেখতে।তাই না?”
সাদমান চৌধুরি বলেন,
“কই আমার নাতনিকে দে।চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ছুটে এলাম ওকে দেখবো বলে।”
আভাস বলে,
“আরিব্বাস আমি নেবো না?আমার ভাতিজীকে আমি আগে নেবো।”
তাসনিম বেগম ধমকে বললেন,
“এমন চিল্লাচিল্লি করো না আরশি ঘুমিয়ে আছে।,,দুজনেই কোলে নিতে পারবে বাবুকে।বাবু চলে যাচ্ছে না তাই ঝগড়া করো না।”
দুজনে এবার শান্ত হয়।সাভাশের কাছ থেকে বাবুকে নিতে চাইলে সাভাশ বলে,
“আগে দুজনে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো মতো হাত ধুয়ে এসো।আমার আম্মুর গায়ে জীবাণু লাগবে।”
দুজনেই এক প্রকার দৌড়ে চলে যায়।কে আগে বাবু কোলে নেবে এমন একটা প্রতিযোগিতা।
সবাই তাদের কান্ডে হেসে দেয়।
আরশির জ্ঞান ফিরতেই সে বলে,
“কোথায় আমার বাবু কোথায়?”
আরিয়ানা পাশে বসে বলে,
“ননদিনী তোমার বাবু এখানেই আছে।”
সাভাশ উঠে এসে বাবুকে আরশির বুকের উপর দেয়।আর সাথে সাথে বাচ্চার কান্না শুরু।
আরহাম হেসে বলে,
“আমার ভাগ্নি তো বাবা পাগল হবে।বাবার কোল থেকে নামতেই কান্না শুরু।”
কিছুক্ষণের মাঝেই কান্না বন্ধ হয়ে যায় বাচ্চার।আরশি বাবুর দিকে তাকিয়ে হেসে বলে,
“একদম সাভাশের মতো হয়েছে চেহারা শুধু চোখটা আমার মতো।আমি তো ভেবেছিলাম আমার কার্বন কপি হবে।”
সাভাশ আরশির কপালের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বলে,
“কিছু খাবে?”
“নাহ্ খেতে ইচ্ছে করছে না ওকে দেখেই মনটা ভড়ে গেছে।মা হওয়ার সুখের কাছে এই পৃথিবীর কিছুই বড় হতে পারে না হয়তো।”
;
;
আজ বাবুর দুইদিন এবং তাকে বাসায় আনা হয়েছে।আরশি আর সাভাশ বাচ্চার নাম রাখতে ব্যস্ত।শেষ পর্যন্ত বাবুর নাম ঠিক ‘আইরিন চৌধুরি সানা’ সাভাশের নামের থেকে এসেছে সানা আর আরশির পুরো নাম আয়নুর আহসান আরশি থেকে আইরিন এসেছে।

সাভাশ ছাদে বসেছিল একা একা আরশি ঘরে বাবুকে খাওয়াচ্ছে।হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন ‘ভো’ করে উঠলো হঠাৎ শব্দ হওয়ায় সাভাশ একটু কেঁপে উঠেলো তবে ভয় পেল না।আরশি সাভাশের পাশে বলতেই সাভাশ বলল,
” আরু তুমি এই অবস্থায় এখানে কেন আসলে কষ্ট করে।চলো তোমাকে ঘরে দিয়ে আসি সানা ঘরে একা।”
আরশি মাথা না বোধক নাড়িয়ে বলল,
“আম্মু আর চাচী ওর সঙ্গে বসে আছে।আমি কি পাগল অতোটুকু মেয়েকে একা রেখে আসবো?”
সাভাশ আর কিছু বলে না।আরশি সাভাশের বাম হাত জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রেখে বলে,
“জানেন আমার পাশে বসা লোকটাকে এতো কেন ভালোবাসি?”
“জানি না তো বলো আমি শুনি।”
“কারণে অকারণে সে আমাকে ভালোবেসেছে।কখনো আমার পাগলামিগুলো তাকে অস্বস্তি দেয় নি।সব সময় মুখে হাসি ফুটিয়ে রেখেছে আর আমাকেও হাসিয়েছে।আমিও ওনাকে অকারণে অকারণে ভালোবাসি আর সবসময় তাকে এভাবেই নিজের পাশে চাই।”
“আর আমি সবসময় আমার পাগল বউটাকে নিজের পাশে চাই যে চশমা পড়তে কোনোদিন ভুলে গেলেও আমাকে ভালোবাসতে ভুলবে না।প্রচন্ড ভালোবাসি তোমাকে মাই বিগ কিউটি।”
আরশি ভ্রু কুঁচকে বলল,
“বিগ কিউটি?”
সাভাশ হেসে পেছন থেকে আরশির পিঠ জড়িয়ে ধরে বলল,
“ছোট কিউটি তো ঘরে ঘুমাচ্ছে।তাই তার মা বাবা ছাদে বসে একটু প্রেমালাপ করছে।”
“তাই।”
“হুম।”

_____________________ #সমাপ্ত ______________
(ভালোবাসা কোনো কিছুই দেখে না।যাকে আমরা ভালোবাসি তার দোষ গুন সবটা নিয়েই ভালোবাসি যেমন: সাভাশ – আরশি,আরিয়ানা -আরহাম, পরী – তীব্র।আমি এই গল্পটাকে ফানিভাবে উপস্থাপন করেছি সবার কাছে প্রথম থেকেই কারণ আমার ভালো লাগে মানুষকে হাসাতে।আরশি একজন অতি বর্বর বা savage প্রকৃতির মানুষ যেটা অনেকেরই পছন্দ না কিন্তু সাভাশ নামক ছেলেটা আরশির এই আচরণগুলিতেই মুগ্ধ হয়েছে এবং নিজের ভালোবাসা দিয়ে আরশিকেও তাকে ভালোবাসতে বাধ্য করেছে।আপনাদের অনেকের মতে আরশির ব্যবহার অনেক খারাপ তাই সে সাভাশের ভালোবাসা ডিজার্ভ করে না।কিন্তু এই গল্পের মূল উদ্দেশ্যই ছিল সবাইকে এটা বোঝানো ভালোবাসার কোনো কারণ দরকার হয় না যে ভালোবাসে ‘কারণে অকারণে সে’ ভালোবাসে।সাভাশ আরশির জীবনে তেমনই একজন মানুষ।এবার আসি নামের ব্যাপারটাতে।সাভাশের নামটা একটা তুর্কি শব্দ ‘savaş’ থেকে এসেছে যার অর্থ ‘Battle’ বা যুদ্ধ।এই নামটা আমি বলতে গেলে একটা তুর্কি নাটক থেকেই প্রথম শুনেছি কিন্তু গল্পের নায়কের নাম এটা দেবো তা ভাবি নি আমার প্রথমে চিন্তা ভাবনা ছিল নায়কের নাম হবে ‘আভাস’ মানে সাভাশের ভাই।আমি আভাসের নামের সিমিলার একটা নাম খুঁজছিলাম নায়কের ভাইয়ের নাম দেওয়ার জন্য তখনই সাভাশ নামটা চোখে পড়ে।এরপর আর কি নায়কের নাম সাভাশ হয়ে যায়।আর আয়নুর আহসান আরশি এই নামের অর্ধেকটা তুর্কি আর অর্ধেকটা আরবি।আরহাম নাম আরশির সঙ্গে মিলিয়ে রেখেছি।আরিয়ানা নামটার রহস্য তেমন কিছুই না জাস্ট তখন মাথায় শুধু এই নামটাই এসেছিল। তীব্র আর পরী নামটা নিয়েও তেমন ভাবি নি।অনেক কিছু বলেছি গল্প সম্পর্কে এবার নিজের সম্পর্কে বলি আমার আসল নাম রিয়ান আহমেদ না এটা আমার ছদ্মনাম সেই প্রথম থেকেই শুধু সেটা প্রকাশ করেছি এই গল্পে।গল্পটার সমাপ্তিতে কেউ কষ্ট পেলে আমি দুঃখিত।এই পৃথিবীতে যা শুরু হয়েছে তার সমাপ্তি ঘটবে এটা চিরন্তন সত্য।আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ যারা গল্পটার সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন এবং গল্পটাকে নিজেদের অসম্ভব ভালোবাসা দিয়েছেন।আপনাদের পছন্দের চরিত্র কে এবং কেন?তা অবশ্যই বলবেন এবং গল্প সম্পর্কে মূল্যবান মতামত দেবেন আশা করছি।সবাইকে আল্লাহ্ হাফেজ😊।)