খুব ভালোবাসি তোকে পর্ব-১৫

0
5299

#খুব_ভালোবাসি_তোকে
#লেখকঃ- Tamim
#পর্বঃ- ১৫ (প্রপোজাল একচেপ্ট)
,,
,,
,,
,,
সন্ধ্যাবেলায় তামিমের ঘুম ভাঙলে সে হাত-মুখ ধুয়ে ছাদে চলে আসে।। তামিম ছাদে এসে দাঁড়িয়ে আছে ঠিক এমন সময় নীলাও ছাদে আসলো আর এসেই তামিমের কাছে চলে আসলো।। তারপর নীলা তামিমকে এমন একটা কথা বললো যা শুনে তামিম অবাক হয়ে যায়।। কারণ নীলা বললো যে…

নীলাঃ আমি রাজি।।

তামিমঃ রাজি মানে.?

নীলাঃ বুঝনা নাকি.?

তামিমঃ বুঝিয়ে না বললে বুঝবো কি করে।।

নীলাঃ ওই যে ওইদিন তুমি আমায় প্রপোজ করেছিলে না, ওইটার কথাই বলছি আমি রাজি (হালকা লজ্জা পেয়ে)।।

তামিমঃ কিহ সত্যি.! তার মানে তুই ও (তামিমকে থামিয়ে)

নীলাঃ আরে আগে আমার পুরো কথা তো শুনবে নাকি।।

তামিমঃ এইখানে আর কি কথা আছে তুই তো রাজি আর (তামিমকে থামিয়ে)

নীলাঃ হে রাজি তবে আমার কিছু শর্ত আছে যা তোমাকে মানতে হবে।।

তামিমঃ কি শর্ত.?

নীলাঃ তাহলে শুন…
১, ভার্সিটি থেকে আমাকে নিয়ে আসার সময় প্রতিদিন ফুচকা খাওয়াতে হবে।।
২, আমি ছাড়া কখনো কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবা না আর ভুলেও কোনো মেয়ের দিকে তাকাতে পারবে না।।
৩, এখন থেকে আমাকে তুমি করে বলবে আর আমার সব কথা মেনে চলতে হবে।।
বাকিগুলো পরে বলবো এখন মনে পরছে না।। কি শর্তগুলো মানতে পারবে.?

তামিমঃ ওকে মহারানী আপনার শর্তগুলো আমি মেনে চলবো।।

নীলাঃ চল এবার দোলনায় গিয়ে বসি।।

তামিমঃ ওকে চল।।

তারপর তামিম আর নীলা দুজন ছাদের দোলনায় গিয়ে বসলো।।

তামিমঃ আচ্ছা তুই এতোদিন পর হঠাৎ আমার প্রপোজাল একচেপ্ট করলি কেন.? না মানে আমি যেদিন তোকে প্রপোজ করেছিলাম ওইদিনও তো একচেপ্ট করতে পারতি।। কিন্তু সেদিন না করে আজ করলি কেন.?

নীলাঃ এই তোমাকে না বললাম আমাকে তুমি করে বলতে তাহলে এখন তুই করে বলছ কেন.? (হালকা রেগে)

তামিমঃ না মানে সারাজীবন তো তুই করেই বলে এসেছি তাই হঠাৎ তুমি করে বলতে একটু আনইজি ফিল হচ্ছে।।

নীলাঃ রাখ তোমার আনইজি ফিল, তুমি যদি আমাকে তুই করে বল তাহলে আমিও তোমাকে আপনি করে বলবো, বলে দিলাম হু।।

তামিমঃ আচ্ছা ঠিক আছে তুমি করেই বলবো বাট এতোদিনের অভ্যাস তো সহজে ছাড়তে পারবো না।। যদি ভুল করে মুখ থেকে তুই শব্দটা বেরিয়ে যায় তাহলে রাগ করিস না প্লিজ।।

নীলাঃ আবার তুই

তামিমঃ এই সরি সরি আর এমন হবে না।।

নীলাঃ মনে থাকে যেন।।

তামিমঃ হুম এবার আমার প্রশ্নের উত্তরটা দে সরি দাও।।

নীলাঃ তখন তো তোমাকে আমি ভাইয়ের মতো দেখতাম তাই প্রথমে তোমার কথায় রাজি হতে পারি নি।। তারপর তুমি যখন আমার গালে হাত রেখে আমার চোখে চোখ রেখে বললে, তোমার চোখে তাকিয়ে ভালোবাসা খুজতে তখন আমি তোমার চোখে তাকিয়ে সত্যি ভালোবাসা খুজে পেয়েছিলাম।। কিন্তু তখন আমার মনে তোমার জন্য কোনো ফিলিংস ছিল না।।

তারপর তুমি যখন আমাকে বললে “কিছুদিন ভেবে দেখ তোর মন কি বলে” ওইদিনের পরেরদিন আমি ভার্সিটিতে গিয়ে আমার কয়েকটা বান্ধবীর সাথে এই বিষয়ে কথা বলি।। সবকিছু শোনার পর আমার এক বান্ধবী আমাকে একটা আইডিয়া দেয় আর বলে এই অনুযায়ী কাজ করতে, তাহলেই বুঝা যাবে তুমি আমাকে সত্যিই ভালোবাস কি না।।

তামিমঃ ওহহ আচ্ছা তা কি সেই আইডিয়া শুনি.?

নীলাঃ এই যে কয়েকদিন আমায় তোমার উপর নজর রাখতে হবে।। তুমি কি কর না কর সবকিছু আমাকে দেখে রাখতে হবে।।

তামিমঃ তা তুই কীভাবে আমার উপর নজর রাখলি শুনি.?

নীলাঃ তুমি অফিসে থাকাকালীন সময় বাদে বাকি সময় তোমার উপর নজর রেখেছি।।

তামিমঃ কিন্তু কীভাবে.?

নীলাঃ আমাকে ভার্সিটিতে দিয়ে আসা আর নিয়ে আসার সময় তো তোমার উপর নজর রাখতে হয়না কারণ ওইসময় আমাদের মধ্যে কেউ থাকে না।। কিন্তু রাতের খাবার খেয়ে যে তুমি তোমার রুমে চলে যাও আর তো বের হওনা।। তাই তুমি ঘুমিয়ে গেলে আমি প্রতিদিন লুকিয়ে লুকিয়ে তোমার রুমে যেতাম আর তোমার ফোনটা চেক করে দেখতাম সারাদিনে তুমি কার কার সাথে ফোনে কথা বলেছ বা চ্যাট করেছ😁।।

তামিমঃ এই এই তুই আমার ফোন চেক করতি মানে.! তুই আমার ফোনের পাসওয়ার্ড জানিস নাকি.? (কিছুটা অবাক হয়ে)

নীলাঃ যার নামে পাসওয়ার্ড সেই যদি না জানে তাহলে কি হয়.?

তামিমঃ তুই কীভাবে জানলি যে আমি তোর নামে পাসওয়ার্ড দিয়েছি.?

নীলাঃ প্রথমদিন ফোন চেক করতে গিয়ে দেখি ফোন লক করা তাই ভুলভাল কয়েকটা পাসওয়ার্ড মেরে দেখলাম লক খুলে কি না।। কিন্তু লক যখন খুলতে পারছিলাম না তখন হঠাৎ একটা কথা মাথায় আসলো যে, তুমি যখন আমাকে ভালোই বাস তাহলে পাসওয়ার্ড টাও নিশ্চিত আমার নামেই দিয়ে রাখবে।। কারণ অনেকেই তো আজকাল তার ভালোবাসার মানুষটার নাম ফোনের পাসওয়ার্ড বা ফেসবুক পাসওয়ার্ড ইত্যাদিতে দিয়ে থাকে।। তাই আমিও আমার নাম দিয়ে একবার ট্রাই করে দেখলাম লক খুলে কি না।।

তামিমঃ তারপর দেখলি লক খুলে গেছে আর এটাও জেনে গেলি যে ফোনের পাসওয়ার্ড কি।। এরপর থেকে প্রতিদিন আমি ঘুমিয়ে গেলে তুই আমার রুমে এসে আমার ফোন চেক করে যাস।। তাইতো বলি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে রুমের দরজাটা অর্ধেক খোলা পাই কেন, যেখানে আমি ভিতর থেকে দরজা লক না করে পুরোপুরি বন্ধ করে ঘুমাতাম।। আর ঘুম থেকে উঠে রুমের মধ্যে তোর শরীরের বডি স্প্রের ঘ্রাণ পাই কেন।।

নীলাঃ তারপরও তুমি বুঝতে পারলে না যে কেউ একজন প্রতিদিন তোমার রুমে আসে।।

তামিমঃ এখন তো বুঝতে পেরেছি।।

নীলাঃ এখন বুঝলে কি আর না বুঝলে কি।। এখন থেকে আর লুকিয়ে লুকিয়ে তোমার রুমে যাব নাকি, গেলে দেখিয়েই যাব হু।।

তামিমঃ আমার রুমে গেলে তুই আর সকাল না হওয়ার আগ পর্যন্ত ফিরে আসতে পারবি.?

নীলাঃ পারবো না কেন অবশ্যই পারবো।।

তামিমঃ ওকে তাহলে আজ রাতে আমার রুমে আসিস তখন বুঝবি মজা।।

নীলাঃ ওকে আসবো, এবার নিচে চল অন্ধকার হয়ে আসছে তো।।

তামিমঃ আচ্ছা চল।।

নীলাঃ আবার তুই (রেগে গিয়ে)।।

তামিমঃ আরে এতোদিনের অভ্যাস

নীলাঃ রাখ তোমার অভ্যাস, আর একবার যদি তুই করে বলেছ তাহলে আমি আর তোমার সাথে কথাই বলবো না।।

তামিমঃ আচ্ছা ঠিক আছে আর তুই করে বলবো না।।

নীলাঃ মনে থাকে যেন এবার চল।।

তারপর তামিম আর নীলা দুজনেই ছাদ থেকে নেমে নিচে চলে আসলো আর যার যার রুমে চলে গেল।।

তামিমের মনে যেন আজ খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে।। নীলা তার প্রপোজাল একচেপ্ট করেছে এই কারণেই সে আজ এতো খুশি।। তামিম ভাবতেও পারেনি যে নীলা এতো সহজে তার প্রপোজাল একচেপ্ট করে নিবে।। এবার শুধু আর একটা কাজ করলেই সে নীলাকে সারাজীবনের জন্য জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে যাবে।। সেই কাজটা হলো তাদের এই সম্পর্কের ব্যাপারে বাড়ির লোকদেরকে জানানো আর বিয়ে পর্যন্ত এই সম্পর্কটাকে নিয়ে যাওয়া।।

দেখতে দেখতে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে আসলো।। ওইদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে সবাই যার যার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।। তামিমও খাবার খেয়ে রুমে আসলো কিন্তু ঘুমালো না, বসে বসে নীলার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো, কখন নীলা আসবে এই চিন্তায়।। দেখতে দেখতে রাত ১১ঃ৩০ বেজে গেল কিন্তু নীলার আসার কোনো নাম নেই।। তামিম এবার বুঝতে পারলো যে নীলা আজ আসবে না।। কেন আসবে না এটাও সে ভালো করেই বুঝতে পেরেছে।।

তারপরও তামিম নীলার জন্য আরও ১০ মিনিট অপেক্ষা করলো কিন্তু নীলা আসলো না।। তামিম এবার আর বসে না থেকে রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।।

–এবার কোথায় পালাবে জানপাখি.? কাল রাতে তো তুমি ভয়ে রুমেই আসনি, কিন্তু এখন যেহেতু এসেছ তাহলে এতো সহজে তোমায় ছাড়ছি না (কথাগুলো বলেই তামিম নীলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো)।।

নীলাঃ আহ্ ভাইয়া কি করছ ছাড় আমার লাগছে তো (নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে)।।

তামিমঃ ওই ভাইয়া কি হে.? তুই না আমাকে ভালোবাসিস তাহলে ভাইয়া বললি কেন.? শুন এখন থেকে নো ভাইয়া, অনলি সাইয়া মানে বাবু, সোনা, কলিজা এইসব বলে ডাকবি, মনে থাকবে.?

নীলাঃ তাহলে তুমিও আমায় তুই না বলে তুমি করে বলবে।। তাহলেই আমি তোমার কথা শুনবো, নাহলে আমিও তোমায় ভাইয়া বলে ডাকবো।।

তামিমঃ কতোবার বলবো যে এতোদিনের অভ্যাস তাই ভুল করে তুই শব্দটা বেরিয়ে যায় আর (তামিমকে থামিয়ে)

নীলাঃ তো আমারও একই অবস্থা, সারাজীবন তোমাকে ভাইয়া বলে ডেকে এসেছি তাই এখন আমি এইসব নামে তোমায় ডাকতে পারবো না।।

তামিমঃ তাহলে আজ তোকে আর ছাড়ছি না, এইভাবেই সারাদিন জড়িয়ে ধরে থাকবো (আরও ভালো করে জড়িয়ে ধরে)।।

নীলাঃ উফফ প্লিজ ছাড় আমি সত্যি ব্যাথা পাচ্ছি।।

তামিমঃ না জানপাখি তোমাকে তো ছাড়া যাবে না।। সেই ৫ বছর আগে একবার তোমায় জড়িয়ে ধরেছিলাম আর আজ তোমায় এতো সহজেই ছেড়ে দিব.? ভাবলে কি করে হুম.?

নীলাঃ তার মানে তুমি ছাড়বে না তাইনা.?

তামিমঃ না সোনা।।

নীলাঃ ওকে আমিও দেখি তুমি আমায় না ছেড়ে কীভাবে থাক (বলেই তামিমের পেটের মধ্যে জোরে একটা চিমটি কাটলো)।।

ব্যাথা পেয়ে তামিম সাথে সাথে নীলাকে ছেড়ে দিল, আর এই সুযোগে নীলাও তামিমের থেকে একটু দূরে এসে দাড়ালো।।

তামিমঃ ও মা কি ব্যাথা, কাজটা তুই ঠিক করলি না নীলু (রাগে গজগজ করে)।।

নীলাঃ একদম ঠিক করেছি।। বিয়ের আগে নো জড়িয়ে ধরা এন্ড নো বাবু, সোনা ডাকা।।

তামিমঃ জড়িয়ে নাই বা ধরলাম বাট আদর করে তো বাবু, সোনা ডাকতেই পারিস।।

নীলাঃ হুম পারি তবে তুমি আমাকে তুমি করে বললেই এইসব নামে ডাকবো।।

তামিমঃ ওকে তোকে আজ থেকে তুমি করেই ডাকবো, আচ্ছা জানপাখি এবার একটু এদিকে আস তো কিছু কথা আছে।।

নীলাঃ সরি বাবু এখন তো আমি আসতে পারবো না।। যা বলার ওইখান থেকেই বল নাহলে আমি ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য রেডি হতে গেলাম।।

তামিমঃ আরে একটু এদিকে আস না (বলে আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠতে লাগলো)।।

তামিমের ব্যাপারটা নীলা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বেরিয়ে যায় আর যাওয়ার আগে বলে যায়, ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি নিচে চলে আস, আমাকে ভার্সিটিতে দিয়ে আসবে না নাকি.?

এতোক্ষণ ধরে কি হচ্ছে আপনারা হয়তো কেউ ভালো কিছু বুঝতে পারছেন না।। তাহলে একটু বুঝিয়ে বলি…

সকালবেলা নীলা তামিমকে নাস্তা করার জন্য ডাকতে এসে দেখলো তামিম বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।। তামিমকে ঘুমের মধ্যে দেখে নীলার মাথায় তখন একটা দুষ্টু বুদ্ধি আসে।। তারপর নীলা তামিমের কাছে গিয়ে তার চুল দিয়ে তামিমের নাকে আর কানের মধ্যে সুরসুরি দিতে থাকে।। তামিম তখন কিছুটা জাগ্রত ই ছিল আর যখন সে অনুভব করলো কেউ একজন তার নাকে কানে সুরসুরি দিচ্ছে তখন তার নাকে গিয়ে নীলার চুলের ঘ্রাণ পৌছালো।। এরপর তামিম হালকা চোখ মেলে যখন দেখলো তাকে সুরসুরি দেওয়া মানুষটা নীলা তখন সে হুট করে নীলাকে টান মেরে নিজের বুকের মধ্যে নিয়ে আসে আর নীলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।। এরপরের কাহিনি তো আপনারা জানেনই, এবার গল্পতে আসি।।

নীলা চলে যাওয়ার পর তামিমও বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নীল।। তারপর নাস্তা করার জন্য নিচে নেমে ডাইনিং টেবিলে এসে বসলো।। তামিমকে দেখে তার আম্মু এসে তাকে নাস্তা দিলেন আর সে খাওয়া শুরু করলো।। তামিমের নাস্তা খাওয়া শেষ হলে সে নীলাকে নিয়ে নীলার ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলো।। গাড়িতে তাদের মধ্যে আর কোনো কথা হলো না।।

কিছুক্ষণ পর গাড়ি এসে নীলার ভার্সিটির সামনে থামলো আর নীলা গাড়িতে থেকে বেরিয়ে ভার্সিটির ভিতরে চলে গেল।। নীলা চলে যাওয়ার পর তামিম আবার গাড়ি স্টার্ট দিয়ে সোজা অফিসে চলে আসলো।।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অফিসের কাজ করে তামিম আবার গাড়ি নিয়ে নীলার ভার্সিটিতে চলে আসলো।। কিছুক্ষণ নীলার জন্য গাড়িতে বসে অপেক্ষা করার পর নীলা ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসলো আর গাড়িতে এসে উঠে বসলো।। এরপর তামিম গাড়ি স্টার্ট দিয়ে নীলাকে নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিল।। কিন্তু অর্ধেক পথ আসতেই নীলা হঠাৎ তামিমকে বললো, গাড়ি থামাও আমি ফুচকা খাব।।

তামিমঃ দেখ নীলু এইসব বাহিরের ফুচকা ভালো নয়, আমি তোমাকে রেস্টুরেন্ট থেকে

নীলাঃ না আমি এইখানের ফুচকাই খাব।। আর এটা কিন্তু আমার শর্ত ছিল যে তুমি আমাকে প্রতিদিন ভার্সিটি থেকে নিয়ে আসার সময় ফুচকা খাওয়াবে।। তুমি যদি এখন আমায় ফুচকা না খাওয়ায় তাহলে তোমার সাথে আর কথা নাই হু (গাল ফুলিয়ে)।।

তামিমঃ ওরে আমার জান পাখিটা রাগ করেছ বুঝি.? আচ্ছা ঠিক আছে চল তোমাকে ফুচকা খাওয়াব।।

নীলাঃ হুম তাড়াতাড়ি চল (বলেই গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে ফুচকার দোকানের কাছে চলে আসলো)।।

তামিমও গাড়িটা এক জায়গায় পার্ক করে নীলার পিছনে পিছনে ওই ফুচকার দোকানে চলে আসলো।। এরপর তামিম একটা চেয়ার টেনে নীলার পাশে বসে পরলো।। তামিম জানে সে আসার আগেই নীলা ফুচকার অর্ডার দিয়ে দিয়েছে তাই সে কিছু না বলে চুপটি মেরে বসে আছে।।

প্রায় ৫ মিনিট পর ফুচকাওয়ালা এক প্লেট ফুচকা বানিয়ে নীলার হাতে এনে দিল।। নীলা আর কোনোকিছু না ভেবে গপগপ করে ফুচকা খাওয়া শুরু করলো।। তামিম যে তার পাশে বসে আছে সেদিকে নীলার কোনো খেয়ালই নেই, সে তার মতো করে ফুচকা খেয়েই যাচ্ছে।। এক প্লেট খাওয়া শেষ হলে দোকানদার নীলার হাতে আরেক প্লেট ফুচকা দিয়ে গেল।। তামিম বুঝতে পারলো নীলা আগেই কয়েক প্লেট ফুচকার অর্ডার দিয়ে দিয়েছিল।। তামিম এবারও চুপ করে বসে থেকে নীলার খাওয়া দেখতে লাগলো।। কি সুন্দর করে বাচ্চাদের মতো খাচ্ছে নীলা।। খেতে খেতে নাক-মুখ লাল হয়েগেছে, চোখ থেকে হালকা হালকা পানিও পরছে।।

তারপরও নীলা নাক টেনে টেনে ফুচকা খেয়ে যাচ্ছে।। কিন্তু হঠাৎ ঘটলো এক বিপত্তি।। খাওয়ার মধ্যেই নীলা হঠাৎ পানি, পানি বলে চিল্লাতে শুরু করলো।। নীলার চিল্লানো শুনে তামিম বুঝতে পারলো নীলার ঝাল লেগেছে তাই সে দোকানদারকে বললো এক গ্লাস পানি দিতে।।

তামিমঃ মামা তাড়াতাড়ি এক গ্লাস পানি দেন (অস্থির হয়ে)।।

মামাঃ পানি তো নাই বাজান, আপনারা একটু বসেন আমি এক্ষুণি পানি নিয়ে আসছি (বলেই একটা মগ হাতে নিয়ে দৌড়ে কোথায় যেন চলে গেল)।।

এদিকে নীলা এবার কান্না করে পানি পানি বলে চিল্লাতে শুরু করলো যা দেখে তামিম আরও অস্থির হয়ে পরে।। তামিম এখন কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।। এদিকে ফুচকাওয়ালাকেও আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না।। হঠাৎ তামিমের চোখে পরলো পাশে একটা দোকান রয়েছে।। দোকানে নিশ্চয়ই পানি রয়েছে এটা ভেবে তামিম বসা থেকে উঠে দাড়ালো আর সামনের দিকে পা বাড়ালো।। কিন্তু তামিম এক পা এগোনোর আগেই পিছন থেকে নীলা তামিমের হাত টেনে ধরে তাকে টান মেরে তার সিটে বসিয়ে দেয়।। এরপর নীলা তামিমের একদম কাছে এসে তার গালে হাত রেখে তামিমের ঠোঁটের মধ্যে তার ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।। নীলার এমন কাজে তামিম পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে ওইখানেই রোবটের মতো হয়ে বসে রইলো।।
.
.
.
.
.
Loading…….