গোধূলির শেষ আলো পর্ব ২৩+২৪

0
651

গোধূলির শেষ আলো?
পর্ব ২৩+২৪
Writer Tanishq Sheikh Tani

অন্যান্য রাত থেকে আজকের রাতটা ভালোই কাটছে তানিদের।কারন ঘরে পুরুষ মানুষ আছে।একটা ঘরের জন্য ঢালস্বরুপ পুরুষমানুষ।মেয়েরা যেমন একটা অন্ধকার ঘরে আলো আনে তেমনি পুরুষরা ঐ আলোটাকে শত ঝড় ঝাপটায় জ্বলতে সাহায্য করে।আগলে রাখে ঢাল হয়ে।দিনের বেলায় যতোই ভালো লাগুক রাত নামলেই ভয় ভয় কাজ করতো আশেপাশে বাড়িগুলো মিনিট দুয়েক দুরুত্বে থাকায়।রাতের নিস্তব্ধতায় মনে হতো লোকবসতি শূন্য কোনো বিরান জায়গায় তানি আর ওর শ্বাশুড়িই শুধু বাস করছে।কেউ এসে মেরে গেলেও বুঝি কারো টের পাওয়ার সাধ্য নাই।তানি ভেতরের রান্না ঘর থেকে বাচ্চার দুধ গরম করে বারান্দা দিয়ে আসতেই বাইরের ঘুটঘুটে অন্ধকার দেখে থম মেরে দাড়িয়ে থাকে।কি বিশ্রী অন্ধকার! তানির সাধ্য থাকলে এই ভয়ানক আঁধার কে সে কখনোই নিজের সামনে আসতে দিতো না।দূরে শিয়ালে গা ছমছমে ডাকে অন্ধকারে তাকানো তানি কিছুটা কেঁপে ওঠে।রাত ক্রমশ গাঢ় হয়ে আসছে।তানির মনে হচ্ছে দূরে কেউ কালো চাদরে আবৃত হয়ে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে তার দিকে।ঠিক যেন সুপারি গাছের মতো সোজা হয়ে। কোনো নড়াচড়া নেই গাছের মতো।গাছেরও জীবন আছে নড়াচড়া করতে না পারলেও সে সব বোঝে সব শোনে।এই মানুষটাও ঠিক তেমন।গাছ মানবের ভাবনা তানির মস্তিষ্ক জুড়ে দখল করার আগেই তানি মাথাটা ঝাকালো এপাশ ওপাশ।ঘুমে ঢুলঢুল করা চোখটা হাতে মুছে আবার তাকাতেই এতোক্ষনের উদ্ভট সব কল্পনা মুহুর্তে হাসির রেখা হয়ে ঠোঁটে ফুটলো।বাচ্চা জন্মদান পরবর্তী প্রসূতি মায়েদের কিছু সমস্যা দেখা দেয়।তানির মাঝেও তেমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।একা থাকলেই নানা উদ্ভট চিন্তা মাথায় ঘুর ঘুর করে।গ্রিলে হাত রেখে দাঁড়াতে ভয় লাগলেও আরো কিছুটা সামনে এগিয়ে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে একবার সামনের অন্ধকারে দাঁড়ানো সুউচ্চ সারি সারি সুপারি গাছ গুলোকে দেখলো তার পর আকাশের ছাই ছাই রংএর মেঘের মাঝে বৈদ্যুতিক বাল্বের মতো জ্বলা একটুকরো চাঁদকে দেখলো।এই চাঁদকে দেখলেই তানি ওর ভেতর সুতো কাটা বুড়িকে খোঁজে।যে নাকি চাঁদের মা।তানি ছোটবেলা দাদীর কাছে গল্প শুনেছিল চাঁদ আর সূর্য নাকি দু ভাই ছিল।একদিন এক বিয়ের দাওয়াতে দুভাই গেল মায়ের আশির্বাদ নিয়ে।সূর্য এতো এতো মজাদার খাবার দেখে মায়ের কথা ভুলে একাই সবটা খেয়ে নিল।কিন্তু চাঁদ! সে মায়ের জন্য সামান্য কিছু খাবার সাথে করে নিয়ে নিলো।বাড়ি ফিরতেই তাদের মা সূর্যের কাজে নারাজ হয়ে সূর্য কে অভিশাপ দিলো সে সারাজীবন জ্বলবে। সূর্য নাকি সেই থেকেই জ্বলছো।আর চাঁদ মায়ের আশির্বাদ পুষ্ট হয়ে স্নিগ্ধ ও শান্ত, ঠান্ডা রয়ে গেলো।দাদী জোস্না রাতে চাঁদের দিকে আঙুল তুলে বলেছিল”- ঐ দেখ তানি! ঐহানে চাঁদের বুড়ি চড়কি কাটে।কাটতিই থাকে।তানি দাদীর আঙুলের ইশারায় চাঁদের দিকে তাকিয়ে ছিল।অনেক্ষণ পর মনে হয়েছিল সত্যি একটা কুঁজো বুড়ি বসে বসে চড়কি কাটছে।এমন বিস্মিত জিনিস অবলোকন করতে পেরে ছোট্ট তানি খুশিতে চিৎকার করে বলেছিল”- দাদী আমি দেখছি। ঐ তো চাঁদের বুড়ি।দাদী আমিও যাবো ঐ খানে।নিয়ে চলেক না দাদী।
“- না লো বু! ও জায়গা যাওয়ার সাধ্যি আমাগের মতো মানুষির নাই।
“- ক্যা!
“- বড় হ তার পর বুঝবি। এহন বুঝবি না।
তানি দাদীর কথা বোঝার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও সেদিন যেমন বোঝে নি।আজও তেমন বোঝে নি।আজ আর চাঁদে বুড়ি দেখেনা তানি।আরেকবার চাঁদের বুড়িকে দেখে আবার সেই ছোট্ট বেলার মতো খুশিতে আত্নহারা হতে ইচ্ছা করে তানির।চাঁদের দিকে তাকিয়েই ছিল হঠাৎ কেমন বিশ্রী গন্ধ নাকে আসতেই শৈশবের মধুর ঘোর থেকে বাস্তবে ফিরে আসে।গা টা আবার ছম ছম করছে।এখানে এতোক্ষন দাড়িয়ে ছিল ভাবতেই মেরুদণ্ড বেয়ে শিরশিরানী ভাব বয়ে গেলো।তানি আবার পেছনে সরে আসলো। ঘরের সবার চোখে গভীর ঘুমের ছায়া। তানি জানে একটু পরই তার মেয়ে খিদের জন্য কান্না জুড়ে দেবে।তাইতো আগেভাগেই মেয়ের জন্য সব তৈরি করে রাখছে।মা হয়ে তানি এখন মেয়ের অনেক না বলা বিষয়ই আগাম টের পায়।এই বিষয়টাও মাঝে মাঝে তানিকে ভাবায়।দুধের ফিডার টা ভালো করে ঝাকাতে ঝাকাতে তানি ঘরে চলে গেলো।
তানি আরেকটু অপেক্ষা করলে হয়তো দেখতো গাছের আড়াল ছেড়ে একটু একটু করে হেঁটে সামনে আসছে তাজ।তানিকে ভেতরে যেতে দেখে দ্রুত এগিয়ে আসতেই নেশাগ্রস্ত নড়বড়ে শরীরের টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায় সামনের সুপারি গাছের গোড়ায়।মাথায় ও নাকে জখম হয়ে গেলেও তাজের তাতে বিন্দু মাত্র ব্যথা অনুভূত হয় না।মনে যার ব্যথা তার শরীরের ব্যথা একটু কমই লাগে।উঠে দাড়িয়ে তানির ঢুকে যাওয়া ঘরটার দিকে করুন দৃষ্টিতে চেয়ে আবার ফিরে যায় অন্ধকার নীড়ে।তাজ এখন আর ঘরে থাকে না।সারারাত খালিদদের বাড়ির সামনের সুপারি গাছের আড়ালে দাড়িয়ে তানিকে দেখে সকাল হয় নিজেদের বাড়ির সামনের পুকুর পাড়ের বাশের চটার বেঞ্চে।তারপর আবার ছোটে নজু মিয়ার হোটেলে।এই গায়ের এই একটা পাকা ঘরের দোকান।দিনে আলোয় যেটা খাবারের সাধারণ হোটেল মনে হলেও রাতে চলে অবৈধ কাজের আড্ডা আর মদের আসর।নজু মিয়া তাজের ছোট চাচা ও প্রভাবশালী লোক।সেই সুবাদে গায়ের লোক নজু মিয়ার এসব অসামাজিক কাজ দেখেও মুখ বুঝে চলে।ভাতিজা কে বশ করার মোক্ষম সুযোগ নজু মোটেও হাতছাড়া করতে চাই না।মদের নেশায় তাজের মাথাটা নষ্ট করে নিজের বিধবা বড় কন্যা সালমার সাথে তাজের বিয়ের বিষয়টা পাকাপোক্ত করতে চায় নজু।এ কারনে এ হোটেলে তাজের যত্নআত্তির অভাব হয় না।তাজ সকালে উঠে সোজা নজু চাচার হোটেলে চলে আসে।বাসি মুখে নজু চাচার হোটের একটা বেঞ্চে পা মেলে সামনে রাখা টেবিলটায় মাথা এলিয়ে বসে।
“- তাজ ভাই!
“- হু! কিডা?
“- আমি! সালমা।
“- ওও! যা তো পানি নিয়ে আয়।
সালমা আজ সুন্দর একটা জাম রঙের শাড়ি পড়েছে। সুন্দর করে চুল আচড়ে খোপাও করেছিল। যার জন্য সাঝ সকালে এতো সুন্দর করে সাজলো সেই তাজ একবারটি মাথা তুলে দেখলো না।মুখটা কালো করে এক জগ পানি নিয়ে আবার এসে দাঁড়ালো সালমা।
“- আনছি পানি।
“- নিয়ে আয়।তাজ মাথাটা ঝাঁকিয়ে সামনে হাটতে লাগলো।পিছু পিছু সালমাও
“- নে ঢাল।হাতটা কোচ পাতার মতো করে ঝুঁকে দাঁড়ালো তাজ।সালমা পানি ঢালে আর তাজকে দেখে।তাজ পানির ঝাপটায় মুখ ধুতে গিয়ে সালমার শাড়ির অনেকাংশই ভিজিয়ে ফেলে।মুখ ধুয়ে উঠে দাড়িয়ে সালমার আঁচলটা টেনে মুখ হাত মুছে হেটে আবার আগের জায়গায় গিয়ে বসে।
সালমা ভিজে শাড়ির দিকে তাকিয়ে চোখের জল ছেড়ে দেয়।চোখ মুছে ফিরে তাকাতেই দেখে তাজ স্থির দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে রুটি চাবাচ্ছে। সালমা আর না দাড়িয়ে চলে যায় বাড়িতে।
সকালের হালকা নাশতা সেড়ে ফয়েজ চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ফয়েজ এদিক ওদিক তাকিয়ে শুধু লিজা কে একনজর দেখার চেষ্টা করছে।কিন্তু পাচ্ছে না।আজ না দেখতে পেলে আর ১ বছরেও হয়তো পাবে না ফয়েজ।এতোদিনে লিজা যদি অন্য কারো হয়ে যায়।বুকটা হু হু করে ওঠে ফয়েজের।নিঃশ্বাস ভারি হতে থাকে।
“- কি রে চোরের মতো এদিক ওদিক কি খুঁজিস?
“-কককই কিছু না।ফয়েজ আশাও করে নি তানিকে এসময়।তানি কি বুঝে গেলো? লজ্জায় জিহ্বা আড়ষ্ট হয়ে যায় তাজের।
“- চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা যদি না পড় ধরা।তুই তো মোটেও চুরি বিদ্যায় পারদর্শী না।ধরা খেয়ে গেলি।হি! হি! হি!
“-তোরে কয়ছে! কে চোর? হু
“- আমার একমাত্র ভাই! ফয়েজ আহম্মদ
“- আন্দাজে।যা সর আমি বের হবো এখন।
“- কই যাস! দাড়া।কবে থেকে চলছে এসব? হুমম
“- কি কবে থেকে? সর তো।জ্বালাইস না
“- ভেবে দ্যাখ! আমাকে বললে আমিও তোদের এক করতে পারি।আচ্ছা থাক বলিস না।
“- এই শোন! শোন! ওকে তোর ভাবি বানিয়ে দে না।
“- আচ্ছা! তালি এই চলছে আমার ভাইয়ের অন্তরে অন্তরে।তা কবে থেকে চলছে তোদের ভালোবাসা বাসি।
“- তোদের না রে! শুধু আমার।লিজার দিক থেকে তো সাড়া শব্দ পাচ্ছি না।তোকে যেদিন উঠিয়ে আনলো এ বাড়ি ঐদিন লিজাকে প্রথম দেখি।তখন থেকেই পছন্দ করতাম।এখন তো সে পছন্দ ভালোবাসায় পরিণত হয়ে গেছে।কিছু কর না।
“- আচ্ছা ঠিক আছে! লিজাকে আমার ভাবি বানাতি হবে এই তো? এটা কোনো বিষয় হলো।কালই তোদের কাবিন করিয়ে দেবো গোপনে যা।
“- সত্যি? মজা করছিস না তো?
“- আরে সত্যি! কাল মা বলছিল তোর কথা।লিজার বাবাকেও নাকি বলেছে তোর কথা।এখন যখন তোর একটা সরকারি চাকরি হয়েছে তাই মা তোদের বিয়ের কথাটা আব্বাকে জানাতে বললো।আমি বলেছি আপনি মামাকে আসতে বলুন আজ।আমি ভাই আর আব্বার সাথে কথা বলবানে।
ফয়েজ খুশিতে দাড়িয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।বোনকে অনেক্ষণ জড়িয়ে ধরে কাঁদে। তানি আর ফয়েজ বাড়ি গিয়ে মা বাবাকে রাজি করিয়ে নিয়ে আসে ।রাতে লিজার বাবা, কাকা,ফুপুর উপস্থিতি ও দু পরিবারের সম্মতিতে গোপনে কাবিনও হয়ে যায়।কারন আর্মিতে বিয়ের পারমিশন লাগে যেটা ফয়েজের নাই কিন্তু লিজাকেও সে ছাড়তে নারাজ তাই এই রিস্ক নিতে হলো।লিজা লালটুকটুকে শাড়ি পড়ে খাটে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে।ফয়েজ সাদা পাঞ্জাবি পড়ে দরজা লাগিয়ে এসে বসে।
“- বিয়াইন দেখলেন তো চরে বউ দখল করে নিলাম।ঘরও বাধবো। এখন তো ভালোবাসতেই হবে।
“-জোর নাকি?
“- না! অধিকার
“- ভালো কথা জানেন আপনি।আপনার সাথে কথা বলে জিতা সম্ভব না।
“- ভালো ভালোওবাসতে পারি। ভালোবেসেও আমার সাথে জিতে উঠতে পারবেন না।চান তো থ্রিলার দেখাতে পারি দেখবেন?
ফয়েজ দুষ্টু হেসে কাছে ঝুঁকতেই লিজা ফয়েজের বুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
“- এতো তাড়া কিসের শুনি?৪বছর পরে আসুন তারপর।
“- এতো অপেক্ষা আবার দ্বারা সম্ভব না।একবছর পরে এসেই শুভ কাজটা সেড়ে ফেলবো।ততদিন আমার ভালোবাসা আমানত হিসেবে থাক।দেখবো আপনার আমানতদারীতা কেমন?
“- পরীক্ষা নিচ্ছেন?
“- না! ভালোবাসা অর্পন করে গেলাম তো তাই ভয় হয়।
“- বিশ্বাসই ভালোবাসার খুঁটি। আপনি বিশ্বাস করলেই আমি আমার আমানতদারীতা দেখাতে পারি।
“- করলাম বিশ্বাস! আপনার হাতটা একটু ধরতে পারি?
“- পারেন এক শর্তে। যদি আপনি আপনি করা বন্ধ করেন।
“-হা!হা!হা! আচ্ছা। তোমার হাতটা আমি কোনোদিন ছাড়তে চাই না লিজা।এভাবেই ইহকাল পরকাল হাতে হাত রেখে চলতে চাই।অনেক ভালোবাসি লিজা।অনেক ভালোবাসাও চাই তোমার কাছ থেকে।দেবে তো?
“- হুমম।
অনেকরাত দুজন একসাথে পাশাপাশি বসে গল্প করলো।রাত গভীর হতেই ফয়েজ লিজার কোলে মাথা রেখে ভবিষ্যত জীবনের ছক আকতে লাগলো।লিজা বিমুগ্ধ নয়নে শুধু শুনে গেলো স্বামীর কথা।তানির ঘরে তানির মা শ্বাশুড়ি বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। মামা আর আব্বা বারান্দায় বিছানা পেতে শুয়েছে।তানির ঘুম আসছে না।তানির কেন যেন মনের ভেতরটা শূন্য শূন্য লাগছে।খালিদ আবার কেমন কেমন হয়ে যাচ্ছে। দুদিন কেটে গেলো আজ এক দুবার শ্বাশুড়ি আর আব্বা ও মামার সাথে শুধু কথা বলেছিল বিয়ের বিষয় নিয়ে।তানি অনেক চাইছিল খালিদ একটিবার তানির সাথে কথা বলুক।কিন্তু বললো না।সারাদিন মোবাইল হাতে নিয়েই ঘুরেছে তবুও একটা কল দেয় নি খালিদ। তানির এখন খুব ইচ্ছা করছে খালিদের সাথে কথা বলতে।তানি পা টিপে টিপে ছাঁদের সিড়িতে উঠে আসলো।খালিদের নাম্বারে কল দিতেই ব্যস্ত পেলো।দু মিনিট পর আবার দিলো।আবারও ব্যস্ত। তানির বুকটা হঠাৎ ধুকপুক শুরু করলো অজানা দুশ্চিন্তা গ্রাস করতে লাগলো তানিকে।সিড়ির ভাঁজে বসে মোবাইলটা মুঠ করে ধরতেই ভাইব্রেট হলো।তানির অশ্রুসজল চোখে খুশি চিকচিক করে।মোবাইল রিসিভ করতেই সেই খুশি নিমিষেই বিলীন হলো।
গোধূলির শেষ আলো?
পর্ব ২৪
Writer Tanishq Sheikh Tani

মানুষের মন বড় অদ্ভুত জিনিস।কখন কি চাই?কি না চাই বোঝা মুশকিল।খালিদ আজকাল আল্লাহ কালাম ভুলে জাহান নামক চোরাবালিতে একটু একটু করে ডুবছে।খালিদ ফিরতে চেয়েও জাহানের মোহ থেকে নিজেকে ফেরাতে পারছে না।পাপের কি দূর্বোধ্য মোহ! তানির বাচ্চা হওয়ার কথা শুনে খালিদ জাহান কে অনেক শক্ত ও কটু কথা শুনিয়েছিল।জাহানকে বলেছিল আর কোনোদিন জাহান যেন খালিদ কে কল না করে।জাহান অপমানে কেঁদে ভাসিয়েছিল মোবাইলে।তাতে খালিদের খারাপ লাগলেও খালিদ জাহানের সাথে আসন্ন সম্পর্ক চুকিয়েছিল।এরপর প্রায় দুতিন মাস জাহানের সাথে আর কথাবার্তা হয়নি খালিদের।মনে মনে জাহানের জন্য কেমন একটা দূর্বলতা অনুভব করতো।জাহান যে মোটেও সুবিধার না তা জেনেও মন ঐদিক পানেই ছুটতে চাইতো।কেন এমন করতো জানে না?হয়তো তানির কাছে চাওয়া ভালোবাসা গুলো জাহান দিচ্ছিলো তাই! মানুষ ভিন্ন হলেও চাওয়াটা তো পূরণ হলো খালিদের।এইরকম ভালোবাসা, কেয়ারই তো আশা করেছিল খালিদ।চেয়েছিল কেউ বুঝুক। খালিদের চেয়েও বেশি খালিদকে কেউ জানুক।সেই কেউটা তানি হোক এটাই হয়তো একসময় কাম্য ছিল। কিন্তু সময়ের পালাবদলে মনও যে বদলে যায়।মানুষও কারনে অকারনে বদলে যায়। আজ যাকে সামনে পেয়ে মনে হচ্ছে তাকে ছাড়া বাঁচা বুঝি মরার সামিল। কাল হয়তো তার সামনে থাকাটাই মরার মতো যন্ত্রণা দায়ক মনে হয়।খালিদ একসময় জাহানকে ভুলে যেতে চাইলো।নিজের কাজে অনুতপ্ত হয়ে তানির কাছে আবার ফিরে গেলো।কিন্তু এই ফেরা যে না ফেরার সামিল।মন যে তার ভিন্ন স্রোতের নেশায় পড়েছে।সহজে কি নেশা কাটে?সব মানুষই জীবনের একটা পর্যায়ে এসে পিছলে যায়।খালিদও নিজের নফসের কামনায় পিছলে গেলো।তানিকে ধোকা দেবে না দেবে না ভেবেও দিয়েই বসলো ধোকা।তানি বাচ্চাকে সামলাতে গিয়ে খালিদকে সময় দিতে পারলো না।সেই না পাওয়ার তৃষ্ণা খালিদ আবার জাহানের কাছ থেকে মেটাতে লাগলো।স্ত্রীর কর্ম, ত্যাগ সমস্ত ভুলে স্ত্রীকেই দায়ী করলো অপ্রাপ্তির দোষে। এখন রোজ সময় অসময় জাহানের সাথে রসালাপে কাটে।কোনো কোনো দিন খালিদ ভুলেই যায় সে যে বিবাহিত এক সন্তানের জনকও।জাহানের সাথে বহুদিনের আকাঙ্ক্ষিত প্রেমালাপে নিজেকে প্রেমিক পুরুষ ভাবা শুরু করে।জাহান ছাড়া সব কিছুই তার কাছে অসহ্য বিরক্তিকর। একমাত্র জাহানই জাহান মধুময়।সেই মধুময়তার মাঝে ব্যাঘাত ঘটাতেই তানির উপর চটে যায় খালিদ।যে স্ত্রী তার ঔরসজাত সন্তানকে একটু একটু করে নিজের রক্ত খাইয়ে, সকল স্বাধ স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে বড় করলো। সেই স্ত্রীকে আজ বড্ড সেকেলে আর জীবনে বিঁধে থাকা বেলের কাটা মনে হয়।আজ আর গলা দিয়ে মধু ঝড়ে না একসময়ের প্রিয়তমার জন্য। আজ রুক্ষ কর্কশ ভাষা বের হয় এই বেঢপ,অল্পশিক্ষিত গ্রাম্য মেয়ের গলা শুনে শুনে।
“- রাত কতো বাজে হ্যাঁ! ফোন দিসো কেন?এখনও ঘুমাও না।যাও ঘুমাও গিয়ে
“- এমন করে কথা বলছেন ক্যা।
“- কেমন করে বললাম?
“- আপনি যেন কেমন হয়ে গেছেন। আগের মতো করে ভালোবাসেন না আমারে।সুন্দর করে কথাও কন না।
“- আদিখ্যেতা করো না তো রাত দুপুরে। এক বাচ্চার মা হয়ে গেছো তাও প্রেমভাব যায় না।যাও গিয়ে শুয়ে পড়ো।আমার কাজ আছে।
“- একটু কথা বলি না।আপনার কি ইচ্ছা করে না আমার সাথে কথা কইতে?
“- তোমার সময় আছে নাকি আমার জন্য? আমার সাথে কথা বলতে চাও তুমি? আমার সাথের লোকরা তাদের বউদের সাথে কতো প্রেমের গল্প করে।আর তুমি? সারাদিন আছো এই নিয়ে সেই নিয়ে।থাকো ওসবই নিয়ে।আমার সাথে কথার বলার দরকার নাই।আমারও এসব আর ভালো লাগে না।
“-আমি কি ইচ্ছা করে আপনার সাথে কথা বলি না কন? বাবু কে নিয়ে!
“- হয়ছে! আর অজুহাত দেওয়া লাগবে না।বাবুর কাছেই যাও।রাখছি।
তানি কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না।তার আগেই খালিদ মোবাইল কানেকশন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে আবার জাহানের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
“- কে কল করেছিল জান!
“- ঐ অফিস থেকে জরুরি কল এসেছিল।আচ্ছা বাদ দাও তো।আজ মজা দেবে না সোনা।
“- হুমম।তা আর বলতে।হোয়াটস অ্যাপ অন করো।
খালিদের সাথে এমন কথা, চিত্র বিচিত্র দেখাদেখি ভোর পর্যন্ত চলে।
তানি সিঁড়িতে বসেই ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো। বাবা মা যেমন সন্তানের মতিগতি সব বুঝে যায়।একজন স্ত্রীও স্বামীর আচার আচরণে তার লুকায়িত গোপন খবর বুঝে যায়।তানিও কিছুটা বুঝতে পারছে।বুঝতে পারছে তার সুখের ঘরে ভাঙন শুরু হচ্ছে।তার ভালোবাসার স্বামীটার ভালোবাসায় সে আর নেই।আজরাতে আর চোখে ঘুম এলো না।নানা চিন্তায় মাথাটায় যন্ত্রণা শুরু হচ্ছে। মনে হলো একটু ঘুমের রাজ্যে গেলে হয়তো শান্তি মিলতো।ঘুমন্ত মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে চোখের জল ফেলে।
“- শুনুন মি. আদিল! আমি জানি আপনি নির্দোষ তবুও আপনাকে সপ্তাহে একবার হলেও এখানে এসে হাজিরা দিতে হবে।হ্যাঁ আপনার জন্য আমি এইটুকু উপকার করতে পারি যে আপনার পরিবারের অন্য কেউ আর এর মধ্যে জড়াবে না।কিন্তু আপনাকে যে নিয়ম করে আসতেই হবে।
“- জ্বী ধন্যবাদ ম্যাডাম।অসংখ্য ধন্যবাদ। কিন্তু ম্যাডাম আমি যেহেতু জব করি। তাই ওখানে এ নিয়ে সমস্যা হবে এখানে আসা যাওয়ায়। যদি এই ঝামেলাটা মিটিয়ে ফেলা যেত?
“- একটু ধৈর্য ধরুন।আমি অবশ্যই আপনার জন্য কিছু একটা করবো।আপনি এখন আসুন।
“- আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম।আদিলের আজ অনেক খুশি লাগছে।মুনিয়া ওকে সাহায্য করেছে।ওর কষ্ট বুঝেছে।এ কদিনে মুনিয়ার আশেপাশে থাকতে পেরেই খুশি আদিল।সামনাসামনি মুনিয়ার দিকে তাকিয়েও কথা বলতে জড়তা লাগে।দূরে গেলে আবার আফসোস হয় আড়চোখের দেখাটা যদি সরাসরি দেখা যেতো।ঐ হালকা ঘন জোড়া ভ্রুর নিচে ডাগর ডাগর দুটি চোখের মায়ার টানে হৃদপিণ্ডটা যেন প্রচন্ড রকম ধুকপুকানি শুরু করে।বিছানায় শুয়ে কিংবা চা খেতে খেতে আনমনেই হেসে যেতো এসব লজ্জা রাঙা হওয়া মুহুর্ত মনে পড়লে।দিন ফুরিয়ে রাত আবার রাত ফুরিয়ে দিনে ঢাললো।এমনি করে সুখ দুঃখ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে এগিয়ে চলতে লাগলো জীবন।শীতের পাতা সবে উত্তরের বাতাসে ঝরে ঝরে পড়ছে একটা দুটো করে।তানি বাইরের রান্নাঘরের চুলাটা কাদামাটি দিয়ে লেপছে।আড়চোখে এক বৎসর বয়সের মেয়ে কায়েনাত কে গুটি গুটি পায়ে উঠোন জুড়ে হাঁটতে দেখে মনে মনে প্রশান্তির শ্বাস নিলো।মেয়ে গুটি গুটি পায়ে আধো আধো বুলিতে যখন মা! মা! বলে তানি ভুলে যায় খালিদের দেওয়া ধোঁকা।মানুষের পরিবর্তন কতোটা নির্মম হতে পারে তা এখন মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারে তানি।স্বামী পরনারীতে আসক্ত এটা জানার পরও তানি কাওকে নিজের অন্তর্জ্বালা বলতে পারছে না।পারছে না স্বামীকে আবার আপন করতে।লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা হয়।এ বাঁচা যে বাঁচা নয় মরার সামিল।এই বাচ্চা মেয়েটার টানেই তানি মরণকে ভুলে বাঁচছে।যখন ভালোবাসা বোঝে নি তখন ঠিকই খালিদের ভালোবাসা পেয়েছিল। আজ সব বুঝেও সব হারালো।খালিদকে আজকাল একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করে তানির।কেন? কোন দোষে এমন শাস্তি দিলো সে তানিকে? অবুঝ হওয়ার দোষে নাকি তাকে ভালোবাসার দোষে।কিন্তু করবে না তানি।কোনোদিন করবে না।সে তো ছোট্ট কায়েনাত নয়?অবুঝ তানিও নয়।দুনিয়ার সমস্ত পাপ পূন্য তার জানা।তানির ভাবনার রেশ কাটলো শ্বাশুড়ির ধেড়ে গলায় বলা কথায়,,
“- এ বউ! মন কই তোর? নাতনী আমার বাগানে চলে যায় দেখিস নে।
“-লেপতে লেপতে এদিকেই মনোযোগ ছিল তাই খেয়াল করি নেই।
“- কতো নাটক তোগের? আমরাও তো সংসার করছি।ছাওয়াল পাল পালছি। তোগের মতো এমন বেভুল কোনোদিন ছিলাম না।আমার তো ভয়ই করে নাতনী রে তোর কাছে দিয়ে গেলি।
তানি শ্বাশুড়ির কথা গায়ে না লাগিয়ে লেপাটা শেষ করে কলপাড় গিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে মেয়ের ধুলোমাখা হাত মুখ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করলো।
“- তোর মামা শ্বশুর মোবাইল করেছিল।কাল লিজার ছোট ভাইটার মুসলমানি। দাওয়াত দিলো।
“- কখন যাবেন?
“- আমি গিলিই তো তুই কাম কাজ ফেলায়ে বসে থাকতি পারিস।শোন!বড় জোড় দুইদিন থাকবানে। তোর জ্বালায় কোনোখানে যাইয়ে বেড়াবো সে কপাল কি আর আমার আছে? আল্লাহ কি একটা বউ দিলো? কিছুতিই শান্তি পাই নে।আমার নাতনীর যদি কিছু হইছে তোর একদিন কি আমার একদিন।
“- হুমম।
“- হুমম।কি! কেমন বউ হইছিস যে স্বামী কন্ট্রোল থাকে না।মেয়ে দেখে রাখতি পারিস নে। লিজা রে দ্যাখ তোর ভাই লুকাইয়ে হলিও একবার ওর সাথে দিনে কথা কয়।বউ হতি হয় লিজার মতো।স্বামী বানতি জানিস না আবার বউ হইছিস।আজ কয়দিন হলো খালিদ ফোন করে না ক তো কতি পারিস নাকি?
“- তিনদিন।কেউ যদি কথা বলতে না চাই। তারে জোড় করে কেমনে বলাবো কন আপনি?মুখটা শক্ত করে অভিমান জড়ানো গলায় বলে।
“-জোড় করে কেমনে বলাবো! এই তুই না মেয়েজাত! তোর রূপযৌবন কিসির জন্যি দিসে আল্লাহ? স্বামী রে রূপ যৌবন, প্রেমের কথা দিয়ে ভুলোতি পারিস নে তালি তো তুই বউ নামের কলঙ্ক।বেচারা খালিদ আমার! বউ কি জিনিস? বউয়ের ভালোবাসা কি জিনিস বুঝলোই না।
“- কে কয় বুঝলো না।আপনার ছেলে সব বুঝে বসে আছে আর আপনি,,
তানির কথা শেষ হওয়ার আগেই খাদিজা জোড়ে একটা চড় বসিয়ে দেয় তানির গালে।ছোট্ট কায়েনাত মায়ের গালে হাত দেওয়া করুন মুখটা দেখে ফুঁপিয়ে কেদে ওঠে।
“- বদ ছেরি! মরিস নে ক্যা তুই।মর! কতো বড় সাহস আমার ওমন সোনার টুকরো চরিত্রবান ছাওয়ালরে খারাপ কয়।তুই খারাপ।তোর চৌদ্দগুষ্টি খারাপ।হারামজাদি।দে আমার নাতনী রে।ওলে বু আমার! কান্দিস না।ফোন দিক তোর বাপ! সব কবো।খাওয়ায়ে খাওয়ায়ে কাল সাপ পুষতেছে।
তানি গালে হাত দিয়ে দাঁত কামড়ে অশ্রু নিবারন করে ছাঁদে কাপড় আনতে উঠে যায়।ছাঁদে কাপড় তুলতে তুলতেই চোখ বেয়ে নোনাজল গড়িয়ে পড়ে।মুছেও এ জলের গতি কমানো যায় না।ঘরে এসে বাথরুমে ঢুকে কলটা ছেড়ে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।
তাজ আজকাল বেপরোয়ার চরম পর্যায়ে চলে গেছে।চারিত্রিক অর্ধঃপতন থেকে শুরু করে মারামারি,খুন, জবরদস্তি সব বিনা সংকোচে করে যাচ্ছে।কথায় আছে না বাপ কা ব্যাটা সিপাহি কা ঘোড়া।তাজও তাই হলো।রক্ত একই দিকে বহমান হলো।বংশের ধারা যে ভিন্ন বাঁকে যায় না তা তাজ আরেকবার প্রমাণ করলো।আজকাল তাজের রাতের সঙ্গী সালমা।রাত হলেই তাজ সালমার ঘরের কড়া নাড়ে মদের নেশায় ঢুলঢুল হয়ে।আজও এসেছে।
“- এই সালমা! সালমা।
সালমা সবে মাত্র লিপিস্টিক আলতা মেখে কাজল চোখে দিচ্ছিল তখনি তাজের গলার স্বরে একচোখে কাজল না দিয়েই দৌড়ে দরজা খুলতে গেলো।
“-তুমি আইছো?
“- চক্ষে দেহিস না! সর! সালমাকে সামনে থেকে সরিয়ে বিছানায় থপ করে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লো। সালমা আস্তে করে পাশে বসে তাজের মাথায় হাত দিতেই তাজ বিছানায় ফেলে সালমার উপর উঠে বসে।যে কাজে এসেছিল সে কাজের আর দেরি করে না।সালমাও বাঁধা দেয় না। তবে মনের কোনে সূক্ষ্ম অভিমান জন্মে তাজের উপর।এতো সুন্দর করে সাজলেও তাজ কোনোদিন সালমার প্রশংসা করলো না।তবুও সালমা সাজে।আশায় থাকে একদিন তাজ বলবে।সালমা চাই একবার শুধু তাজ বলুক “- সালমা তোরে আজ পরির মতো লাগছে।এই পরিটারেই আমার চাই।
ব্যস তাতেই সালমার জনম ধন্য হতো।
পাশের ঘরে তাজ কে আসতে দেখে নজু মিয়ার বউ পানের বাটা খুলে স্বামীর জন্য পান সাজাতে সাজাতে বললেন,
“- হ্যাগো সালমার বাপ! আর কতোদিন এমন চলবি? এইবার বিয়ে ডা পরায় দাও।মেয়ে যদি পেট বাধায় বসে তহন তো মুশকিলে পড়বান।
“- হুমম! আমিও তাই ভাবছি।দেহি কাইল ই কথা কবানে তাজের সাথে।দাও তুমি এক খিলি পান দাও।
“- নাও! তাজ আবার না টা করবি নে তো?
“- এতো সোজা নেহি।করেই দেহুক।আর তাছাড়া দেহো না কেমন রাত হলিই এনে চলে আসে।এট্টা টান পড়ে গেছে বুঝলে?এই টানেই সালমারে বিয়ে করবি দেহো।
“- তাই যানি হয়। মাইয়েডা আমার বড় খারাপ দিন দ্যাখছে।এহন যদি এট্টু সুখ কপালে জোটে।
“- ও নিয়ে তুমি চিন্তে করো না।নজু মিয়া এতো কাঁচা গুটি খেলে না।আমার জামাই তো তাজই হবি দেহে।

চলবে,,,
চলবে,,,