#ছিলাম_তো_তোমারই_পাশে
#পর্ব_1
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida
আমারই সামনে একটা মেয়ে একটা ছেলেকে কষে চড় মারল।আর আমি তাদের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নখ খাচ্ছি এবং দেখছি।আজ ভালোবাসা দিবসে তাদের ব্রেক আপ হলো।ব্রেক আপটা আমার জন্য বড় বিষয় না।বিষয়টা হলো ব্রেক আপটা হয়েছে আমারই জন্য। জ্বি! আজ ভালোবাসা দিবসের দিন আমি একটা জুটি ব্রেক আপ করিয়ে দিলাম।
।
।
অতীত
ক্লাবের ডিসকো গানের বিটে মাথার মস্তক যেনো লাফ দিয়ে উঠছে।চাইলেও আর এখন এখান থেকে বের হতে পারবো না।এই অস্বস্থিকর পরিবেশে একটা লেমন জুস হাতে নিয়ে বসি আছি।বাকি সব ফ্রেন্ডরা ডান্স করছে।ওদের শরীরে এতো শক্তি যে কোথা থেকে আসে আল্লাহ মালুম।
আমি আস্থা খান।দেখতে বিশ্ব সুন্দরী মোটেও না।এক দেখায় ভালো লাগার মতো চেহারা হলেও।এক দেখায় ভালোবাসার মতো মেয়ে আমি না। ইউনিভার্সিটিতে ফার্স্ট ইয়ারে ফাইন্যান্স নিয়ে লেখা পড়া করছি।ইচ্ছে ছিলো চারুকলা নিয়ে পড়ার কিন্তু বাবার কথা পরিবারের বড়ো মেয়ে ব্যাবসার দেখা শুনা করবো তাই নিজের ইচ্ছে জলাঞ্জলি দিতে হলো।আসলে এইটাই এখন নিয়ম হয়ে গেছে বাবা মার ইচ্ছের আগে নিজের ইচ্ছে মাটি চাপা দিতে হয়।
তবে আজ আমরা কয়েজন ফ্রেন্ড মিলে ইউনিভার্সিটির কালচারাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে সেখানে ফার্স্ট হয়েছি।সেখানে আমি আমার চারুকলার ট্যালেন্টটা তুলে ধরতে পেরে খুব খুশী।তাই আজ আমরা ক্লাবে এসে পার্টি দিচ্ছি।যদিও ক্লাবের পরিবেশ আমার একদম ভালো লাগে না তবুও ক্যাপ্টেন হয়ে সবার আবদার তো রাখতেই হয়।তাই চলে আসলাম।সবাই নাচানাচি করছে আর আমি বসে বসে লেমন জুস গিলছি।
কিছুক্ষণ পর
আসু চল না গিয়ে নাচি।(আরশি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড)
নারে।আজ প্রোগ্রামে অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছি।শরীরে একটু শক্তিও নেই নাচার।(আমি জুসের গ্লাসে হাত বুলাতে বুলাতে)
আচ্ছা।তুই না নাচলে আমিও নাচবো না।
বলেই আরশি মুখ গোমড়া করে আমার পাশেই বসে পড়লো।
ভালো নাচতে হবে না।বেশি নাচলে পা ব্যাথা করবে।বুঝলি?বসে থাক আমার সাথে।(আমি গ্লাসে চুমুক দিয়ে)
দূর।আমি ভাবছিলাম আমি নাচবো না বললে তুই ইমোশনাল হয়ে বলবি “না না আমার জন্য নিজের নাচা বন্ধ করিস না,, চল তোর জন্য আজ আমি নাচবো।””(আরশি মুখ ফুলিয়ে)
দেখ এই ইমোশনাল পেরা আমার বাবা রোজ আমাকে দেয়। আই অ্যাম ইউজড টু ইট।(আমি বিরক্ত হয়ে)
আমি আর আরশি কথা বলছিলাম তখনই বাকি টিম আমার কাছে এসে বললো
আরে আমাদের ক্যাপ্টেন যদি না নাচে তাহলে কি আর হয়?(আকাশ আমার সিনিয়র আর আমাদের টিমের সদস্য)
না না।আকাশ আমার এমনি ভালো লাগছে না প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে।আমি নাচানাচি করবো না।(আমি মাথায় হাত দিয়ে)
আচ্ছা।সত্যিই আজ আস্থা প্রচুর খেটেছে।ওকে আর জোর করা উচিত না।(পিয়ালী আমার আরেকজন বন্ধু)
কিন্তু পিয়া ক্যাপ্টেন ছাড়া সেলিব্রেট কেমন ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে।(আকাশ হতাশা নিয়ে)
তাহলে চলো বরং ট্রুথ অর ডেয়ার গেম খেলি?(আরশি এক্সসাইটেড হয়ে)
আচ্ছা।এইটাই ভালো হবে চলো চলো।(পিয়ালী)
এতে তো আর কোনো প্রব্লেম নেই আপনার ক্যাপ্টেন সাহেবা।(আকাশ)
না।কোনো প্রব্লেম নেই।(আমি মুচকি হেসে)
তাহলে চলো সবাই গোল করে বসি।(আকাশ)
চলো চলো।(সবাই)
পরেই আমরা যেই বারো জন ছিলাম সেই বারো জন গোল হয়ে বসলাম।বোতল ঘুরানো হলো সাথে সাথে খেলাও শুরু হলো। একে একে সবাই ট্রুথ অর ডেয়ার নিতে শুরু করলো।এক সময় আমার পালা আসলো
ক্যাপ্টেন এখন তুমি কি নিবে?(আকাশ হাতের তালু ঘষতে ঘষতে)
কি নিবে?অবশ্যই ডেয়ার।আমাদের আসু তো কখনো মিথ্যা কথা বলে না। তা তো আমরা জানি কিন্তু ওর সাহস সম্পর্কে আমাদের অজানা।তাই এখন ওর সাহস পরীক্ষা করার পালা।(আরশি আমাকে বলার সুযোগ না দিয়েই নিজে বলতে শুরু করলো)
তোকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড বানিয়েছি এতেই তো নিজের সাহসের পরিচয় দিয়েছি।(আমি দাঁত চেপে চেপে)
সরি আসু।(আরশি কাচুমাচু হয়ে)
সরি টু মাই লাইফ।এখন দাও কি ডেয়ার দিবে!(আমি জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)
আস্থা তোর পিছনে একটা ছেলে আছে খুব হ্যান্ডসাম।অনেক ক্ষন ধরে লক্ষ্য করছি। কারো জন্য মনে হয় অপেক্ষা করছে।এখন তোর কাজ হচ্ছে এই ছেলের কাছে গিয়ে এমন ভাব করবি যেনো তুই ওর গার্ল ফ্রেন্ড।(পিয়ালী আমাকে পিছন দিকে ইশারা করে)
ব্যাস এইটুকু?(আমি ভাব নিয়ে)
আরে দাড়াও।তোমার ওর কাছে গিয়ে বলতে হবে তোমার আর ওর তিন বছরের সম্পর্ক।তুমি ওর বাচ্চার মা হতে চলেছ।এখন ও কি করে পারে তোমাকে ব্যবহার করার পর ছেড়ে দিতে।এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে।(আকাশ)
এইটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে।এতো মিথ্যা কথা আমি কেনো বলবো?তোরা জানিস আমি মিথ্যা কথা বলি না আর বলা পছন্দ করিও না।আমি এইটা করতে পারবো না সরি।(আমি ভ্রু কুঁচকে)
আসু।এইটা তো জাস্ট একটা মজা।পড়ে উনাকে বলে দিবি জে এইটা ডেয়ার ছিলো।তাহলে তো সব মিটে যাবে।(আরশি)
তবুও,,,
কোনো তবুও না।
পরেই সবার জোরাজুরিতে রাজি হয়ে গেলাম।
একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে ছেলেটার দিকে পিছন ফিরে তাকালাম
তাকাতেই এক দফা ক্রাশ খেয়ে গেলাম।আমি কখনো কোনো ছেলের উপর ক্রাশ খাই নি।কিন্তু এই ছেলের দিকে তাকাতেই আমি হা হয়ে গেলাম।
বাদামি রঙের টিশার্টএর উপর কালো রঙের জ্যাকেট,, ব্লু জিন্স,, হাতে কালো রঙের একটা ঘড়ি,,মুখে খোঁচা দাড়ি পুরাই কিলার লুক।
কিরে আসু ক্রাশ খেলি?(আরশি আমাকে খোঁচা মেরে)
ভুলেও না।আস্থা খান কোনো দিন কারো উপর ক্রাশ খায় না।বুঝলি ইডিয়ট মেয়ে।
বলেই গেলাম উনার দিকে।
এক্সকিউজ মি।(আমি এক গাল হাসি দিয়ে)
ছেলেটা আমাকে দেখেও না দেখার ভান করলো।
আমার হাসি হাওয়া হয়ে উড়ে গেলো।আমার অল্পতেই রাগ উঠে যায় তার উপর ছেলের এই কান্ড দেখেই আমার মনে মনে প্রচন্ড রাগ হতে শুরু করলো।কোনো মতে নিজেকে সংযত করলাম।
এইযে শুনছেন।(আমি আবারও উনার কাছে গিয়ে)
গেট লস্ট।(ছেলেটা রুডলি ভাবে)
কি?(আমি অবাক হয়ে)
কথা কানে যায় না বলছি তো দূর হোন আমার চোখের সামনে থেকে ইডিয়ট।(ছেলেটা আবারও রুড হয়ে)
আমাকে ইডিয়ট বলা।(আমি মনে মনে প্রচন্ড রেগে আছি)
।
।
অন্যদিকে
আমার মনে হচ্ছে আস্থা নির্ঘাত ছেলেটার মাথা ফাটিয়ে ছাড়বে।(আরশি নখ কামড়াতে লাগলো)
আস্থার কিন্তু প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।দেখ ওর হাত ও কি করে মুষ্টি বদ্ধ করে রেখেছে।(পিয়ালী কাপতে কাপতে)
আজ এই ছেলের কপালে শনি বিরাজ করছে।(আকাশ মাথায় হাত দিয়ে)
।
।
আমি আপনার সাথে শুধু একটু কথা বলতে এসেছি।আর আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন।কোনো অপরিচিত মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় আপনি কি জানেন না?(আমি কঠিন গলায়)
তোমার মত থার্ড ক্লাস মেয়েদের আমার চেনা আছে।(ছেলেটা রীতিমত আমাকে অপমান করে দিলো)
শেষ আজ আস্থাকে কেউ আটকাতে পারবে না। ও এই ছেলের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে।(আরশি মাথায় হাত দিয়ে)
কিছুক্ষণ পর মডার্ন ছোটো ড্রেস পরে একটা মেয়ে ক্লাবে ঢুকলো।মেয়েটা অত্যন্ত সুন্দরী যদিও মুখে তিন চার স্তর আটা ময়দা হবে তবুও দেখতে খুব সুন্দর। দেখেই বুঝা যাচ্ছে মেয়েটা এই ছেলেটার গার্ল ফ্রেন্ড যার জন্য উনি এতক্ষন অপেক্ষা করছেন।আর আমাকে থার্ড ক্লাস বলে অপমান করছে।দাড়াও দেখাচ্ছি তোমাকে আস্থা কি জিনিস!
কেমন আছো বেবি?তোমাকে কতো মিস করছি জানো।(মেয়েটা ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে)
আমিও বেবি।তুমি জানো তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকা আমার কি কষ্টের?(ছেলেটা মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে)
উনাদের এই প্রেমেলাপ দেখে আমার বমি করতে ইচ্ছে করছে।মানুষ এতো নেকামি কি করে করতে পারে? যাই হোক এখন আমার বদলা নেওয়ার পালা।শুরু হয়ে যা আস্থা,,,
আমিও ছেলেটার হাত ধরে বললাম
এই মেয়ের জন্য তুমি আমাকে অস্বীকার করছো?(আমি কাদতে কাদতে)
আরশি,,আকাশ আর পিয়ালী অবাক।
আজ আস্থা এই ছেলের ব্রেক আপ করিয়েই ছাড়বে।(আরশি অবাক হয়ে)
আমারও তাই মনে হয়।(আকাশ গালে হাত দিয়ে দেখছে)
চুপ চাপ দেখো।(পিয়ালী)
বাকি সবাই আমার নাটক উপভোগ করছে।
এই মেয়ে কি বলছে বেবি?(মেয়েটা রেগে)
তোমার বেবি আমাকে তার বেবির মা বানিয়ে চলে গেছে এখন আমি আমার এই বেবিকে নিয়ে কি করবো?তুমি তোমার বেবিকে বলো আমার বেবিকে যেনো সে মেনে নেয়!(আমি নেকা কান্না করতে করতে)
হোয়াট?(মেয়েটা রাগে)
এই মেয়ে কি বলছো তুমি এসব?তোমাকে তো আমি চিনই না।(ছেলেটা চিৎকার করে)
তিন বছর ধরে আমার সাথে আছো।আর আজ বলছো আমাকে চিনোই না।বাহ!মানুষ কতো সুন্দর করে মিথ্যা কথা বলে।(আমি টিস্যু দিয়ে নিজের চোখ মুছতে মুছতে)
তিন বছরের সম্পর্ক?তাহলে আমাদের ছয় বছরের সম্পর্ক কি ছিলো?(মেয়েটা প্রচন্ড রেগে গেছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে)
ধোঁকা।(আমি মাঝ খানে ঢুকে)
Shut up।(ছেলেটা আমার উপর চিৎকার দিয়ে)
You shut up,, I hate you,,তোমার সাহস কি করে হলো আমাকে ধোঁকা দেয়ার।তুমি আমাকে ধোঁকা দিয়েছো??।আজকের পর থেকে তোমার আর আমার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।(মেয়েটা কাদতে কাদতে)
খুব ভালো।(আমি হাত তালি দিয়ে)
তুমি চুপ করবে?(ছেলেটা আবারও আমার উপর চিৎকার করে)
তুমি চুপ করে আমার কথা শোন।আমাদের মধ্যে যা ছিলো সব শেষ।we broke up।
বলেই মেয়েটা ছেলেটাকে ঠাস করে কষিয়ে একটা চড় মারল। মেরেই সেখান থেকে চলে গেলো।
।
।
বর্তমান
আমি নখ কামড়াচ্ছি।
দেখো তুমি আমাদের ছয় বছরের সম্পর্ক কি করে দিলে?(ছেলেটা)
ছয় মিনিটে ভেঙ্গে দিলাম।(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
তোমাকে তো আমি,,,
বলেই ছেলেটা আমার গলা টিপতে আসলো তখনই আমি বলে উঠলাম
আমাকে কিছু করার আগে নিজের গার্লফ্রেন্ডকে আটকান।এখনও কিছু হতে পারে।যদি আপনার কথা শুনে।(আমি কোনো মতে নিজেকে উনার হাত থেকে বাঁচিয়ে)
তোমাকে আমি দেখে নিবো।
বলেই ছেলেটি মেয়েটির পিছু পিছু চলে গেলো।
।
।
আমি দৌড়ে আমার গ্রুপের কাছে এসে
আসু তুই তো ছেলেটার ব্রেক আপ করিয়ে দিলি।(আরশি হাসতে হাসতে)
থ্যাংকস টু ইউ অল।(আমি দাত চেপে চেপে)
রাগ করিস না।(পিয়ালী আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে)
আকাশ তাড়াতাড়ি তোমার বাইক দিয়ে আমাকে দিয়ে আসো।না হলে এক বার যদি এই ছেলে আমাকে হাতের কাছে পায় তাহলে না জানি আমার কি হাল করে?(আমি ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে)
ওকে চলো!
বলেই আকাশ বাইক নিতে নিচে চলে গেলো।
ওকে।খোদা হাফেজ আসু।(আরশি)
খোদা হাফেজ সবাই।
বলেই আমি বেরিয়ে পড়লাম।
আকাশ বাইক চালাচ্ছে
আস্থা আজ যা করেছো তা সত্যিই অবিশ্বাস্য।(আকাশ হাসতে হাসতে)
আমিও বিশ্বাস করতে পারিনি।কিন্তু ওই ছেলেরই দোষ।উনিই আমার মাথায় রাগ উঠিয়ে দিয়েছে।আমার মাথা ঠিক ছিলো না এখন মনে হচ্ছে কাজটা ঠিক করিনি।একটা সম্পর্ক ভেঙ্গে দেয়া ঠিক হয় নি আমার।(আমি মনমরা হয়ে)
চিন্তা করো না।ওদের ছয় বছরের সম্পর্ক এতো সহজে বোধ হয় ভাঙবে না।ঠিক হয়ে যাবে।(আকাশ)
ঠিক হলেই ভালো।নাহলে আমারই খারাপ লাগবে।(আমি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)
।
।
কিছুক্ষণ পর
আস্থা এসে পড়েছি।(আকাশ)
ও হ্যা। চলো আমি এখন আসি।(আমি বাইক থেকে নেমে)
ওকে আস্থা এখন আর ওইসব নিয়ে চিন্তা করো না।(আকাশ)
হুম।(আমি মাথা নেড়ে)
তাহলে আমি যাই।(আকাশ)
সাবধানে যেও।(আমি)
হুম।
বলেই আকাশ চলে গেলো।
।
।
এখন চিন্তার বিষয় বাড়িতে আবার সেই চোরের মতো ঢুকতে হবে।
কী দিন এসে পড়ল রে!নিজের বাড়িতে নিজেই চোরের মতো ঢুকছি।(আমি দেয়াল টপকে)
পরেই একটা পেয়ারা গাছ বেয়ে দুতলায় উঠলাম।
আমাদের বাড়িটা দুতলা। আমার রুম দুতলায় আর রুমের জানালা পযন্ত একটা পেয়ারা গাছ রয়েছে। লেট নাইট বাসায় আসলে এইভাবেই আসি আমি।এইটা আমার সিক্রেট রাস্তা।
পেয়ারা গাছের ঢালে বসে বসে রুমের জানালা খোলার জন্য টোকা দিচ্ছি
কিছুক্ষণ পরেই ছায়া দরজা খুলে দিলো
আসুপি।একদিন দেখবি তোর জন্য আমাকেও মা বাবা এই বাড়ির বাহিরে বের করে দিলো।(ছায়া আমার ছোটো বোন আমার থাকে দুবছরের ছোটো।দেখতে বিশ্ব সুন্দরী।এইবার কলেজে উঠলো)
কথা কম কাজ বেশি
এখন আমায় টান দেখি।(আমি ছায়ার দিকে হাত বাড়িয়ে)
ছায়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমাকে টেনে রুমে ঢোকালো।
বাবা মা কিছু জিজ্ঞেস করেছে?(আমি রুমে ঢুকে)
তুই জানিস আমাদের বাবা কেমন?(ছায়া একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে দেয়ালে হেলান দিয়ে)
হিটলারের শশুর।(আমি বিরক্ত হয়ে বেডে বসে)
তারমানে তোর জামাই হিটলার হবে?(ছায়া হাসতে হাসতে)
দূর না।আমার লাইফে একটাই হিটলার যথেষ্ট।এখন বল কি ভাবে সামাল দিলি?(আমি)
তা আমি দিয়েছি একভাবে। আসুপী তুই ফ্রেশ হয়ে আয়।আর আমি লেখাটা শেষ করে ফেলি তারপর ঘুমাতে ঘুমাতে বলবো।
বলেই ছায়া টেবিলে বসলো।
আবার কি রোমান্টিক গল্প লিখেছিস?(আমি ছায়ার টেবিলের কাছে গিয়ে)
হুম।(ছায়া মাথা নেড়ে)
কী যে পাস এই রোমান্টিক লিখে আমি বুঝি না?। মানে সত্যিই সত্যিই একটা মানুষ আসবে যাকে ভালোবেসে বুদ্ধি অর্ধেক লোপ পেয়ে যাবে।আর এমন মানুষ খুঁজতে খুঁজতে বাকি যেইটুকু বুদ্ধি ছিলো তাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সত্যিই কি এমন মানুষ পাওয়া যায় যাকে মন উজাড় করে ভালোবাসা যায়?তুই বল কোথায় খুজবো তাকে?(আমি পায়চারি করতে করতে)
ছায়া উঠে আমার কাছে এসে আমার কাঁধে হাত রেখে আমার সাথে সাথে পায়চারি করতে করতে বললো
আসুপি তুই যখন কাউকে ভালোবেসে ফেলবি তখন সে নিজেই তোর কাছে এসে বলবে
“”খুঁজেছিলে তো আমাকে সেই উচুঁ পাহাড়ে
আকাশের হাজার তারার মাঝে
ছিলাম তো তোমারই পাশে
একবারও কি চিনতে চেয়েছিলে ছিলে আমাকে?””
বুঝলে আপুনি?
বলেই ছায়া আবার টেবিলে বসে পড়লো।
আর আমি সেখানেই দাড়িয়ে ভাবছি
কী বললো এইটা ছায়া?
সত্যিই কি ভালোবাসার মানুষ আমাদের পাশেই থাকে?আমাদেরই চিনে নিতে হয়?
।
চলবে।