#ছিলাম_তো_তোমারই_পাশে
#পর্ব_20
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida
।
।
আয়ুশ আসার পর থেকেই পায়চারি করে যাচ্ছে।অন্যদিকে আমি,আভি,,বাবা মা সবাই সোফায় বসে বসে ওর পায়চারি দেখছি।
কী ভাবে ও নিজেকে?কতো সাহস ও আমাকে না করে দেয়।দেখে নিবো আমি তোমাকে?(আয়ুশ পায়চারি করতে করতে)
অনেক হয়েছে।এখন আর পারছি না।
বলেই আভি উঠে আয়ুশ এর সামনে গেলো।গিয়েই ওকে দাড় করালো।
আরেক বার পায়চারি করলে খবর আছে।তুই এদিক থেকে ওদিক যাচ্ছিস।আর আমরাও এক বার এদিক তো একবার ওদিক তাকাতে তাকাতে নিজের ঘাড় ব্যাথা করে ফেলেছি।এখন বল কি হয়েছে?এতো রেগে আছিস কেনো?(আভি)
ভাই তোমার শালী কিন্তু খুব খারাপ।বলে দিলাম।(আয়ুশ)
আমার শালী?(আভি অবাক হয়ে)
ছায়া।(আমি সোফায় বসে)
একদম ঠিক।
বলেই আয়ুশ আমার সামনে এসে হাঁটু মুড়ে বসলো।
কী করে আমার বোন?(আমি অবাক হয়ে)
ভাবী তোমার বোন। ও একটা ছেলের সাথে চলে গেছে।(আয়ুশ)
কিঃ?(আমি আভি মা বাবা এক সাথে)
মানে
পরেই আয়ুশ আমাকে সব ঘটনা খুলে বললো।সব শুনে আমি হাসবো না কাদবো কিছুই বুঝতে পারছিনা।কিন্তু আভি,,মা,,বাবা ঠিকই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
তোমরা হাসছো কেনো?দেখো ভাবী আমি তোমাকে বলে দিচ্ছি তোমার বোনের লাগাম টেনে ধরো। নাহলে কিন্তু?(আয়ুশ)
নাহলে কি ভাই?তোর এত জ্বলে কেনো?(আভি আয়ুশ এর কাধে হাত দিয়ে)
আমি তো এমনি বললাম।ভাবীর বোন বলে আমার একটু টেনশন হয়।আর শত হলেও বাবার বন্ধুর মেয়ে বলে কথা।(আয়ুশ)
ভাইয়া। ও আকাশ ভাইয়ার সাথে গেছে এতে আমার কোনো সমস্যা নেই।আর এই নিয়ে তোমারও চিন্তা করার দরকার নেই।(আমি মুচকি হেসে)
আর তোকে আমার বন্ধুর মেয়ের চিন্তা করতে হবে না।তুই বরং যা যা নিয়ে এসেছিস ওই গুলো গাড়ি থেকে নামিয়ে জায়গা মত নিয়ে যা।(আদি)
জ্বি।বাবা আমার যা বলার বলে দিলাম।
বলেই আয়ুশ গাড়ির কাছে চলে গেলো।
সবাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।
পরেই মা কিচেনে চলে গেলো।
আসু মা।তুমি বরং ফ্রেশ হয়ে নাও।আভি তুইও যা।(আদি)
ঠিক আছে।আমার মনে হচ্ছে কিচেনের পর আমারও ফ্রেশ হতে হবে।(আমি)
হুম।আচ্ছা বাবা।মা একটু আসবে!(আভি চিৎকার করে)
কেনো?(সুমাইয়া কিচেন থেকে)
আমার কিছু কাপড় আমি খুঁজে পাচ্ছি না।আসার পর থেকে।তুমি একটু খুঁজে দিবে(আভি)
আমি আসতে পারবো না।রান্নার কাজ সম্পূর্ন পরে আছে।(সুমাইয়া রেগে)
একটুও তো মা।(আভি)
পরেই সুমাইয়া খুন্তি নিয়ে কিচেন থেকে বেরিয়ে আসলো।
বউ এনে দিয়েছি।এখন বউকে বল খুঁজে দিতে।বড়ো হয়ে গেছিস তবুও সারাক্ষণ মা মা করতে লজ্জা করে না।এইবার একটু মায়ের আঁচল ছেড়ে বউয়ের আঁচল ধর।না হলে এইটা দেখেছিস(খুন্তি দেখিয়ে)?এইটা দিয়ে তোকে আর তোর বউকে ঠিক করবো বলে দিলাম।(সুমাইয়া রেগে)
না মা আমি ওকে খুঁজে বের করে দিচ্ছি।আপনি বরং খুন্তি রান্নার কাজে ব্যাবহার করুন।
বলেই আমি আভিকে নিয়ে রুমে চলে আসি।
সুমাইয়া রাগী চোখে আদির দিকে তাকালো
আরে আমিও তো বেস্ত এই দেখো আয়ুশ এর সাথে জিনিস গুলো আনতে বলেই আদিও চলে গেলো বাহিরে।
সুমাইয়া দীর্ঘ শ্বাস ফেলে
এই বাড়িতে আমাকে ছাড়া কোনো কাজই হয় না।
বলেই কিচেনে চলে গেলো।
।
।
রুমে
আপনার মা তো আমার মায়ের কার্বন কপি।(আমি বেডে বসতে বসতে)
পৃথিবীর সব মা একই।বুঝলে?(আভি আলমারি খুলতে খুলতে)
আমি ভাবতে পারিনি উনার মত এত ভালো একজন শাশুড়ি পাবো।আর আদি আংকেলের মতো এতো ভালো শশুর।যাদের কাছ থেকে একদম আমি বাবা মায়ের আদর পাবো।(আমি মুচকি হেসে)
আভি আমার কথা শুনে কাজ থামিয়ে দিল
আস্থা।একটা কথা খারাপ লাগলেও জেনে থাকা প্রয়োজন তোমার।তুমি এই পরিবারকে অভ্যাসে পরিণত করো না।আমাদের সম্পর্ক কি হবে তা আমি নিজেও জানি না।তবে যাই হোক না কেনো আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।(আভি আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আমার গালে রেখে)
হুম।(আমি জোরপূর্বক হাসি)
পরেই আভি উঠে আবার আলমারিতে হাত দিলো
আভি আমি তো এই বাড়ির কোনো মানুষকে অভ্যাসে পরিণত করবো না।কিন্তু তুমি,,তোমাকে তো চাইলেও আমি আমার অভ্যাসে পরিণত করা থেকে নিজেকে আটকাতে পারছি না।কি হবে আমার যখন তুমি আমার অভ্যাস থেকে নেশায় পরিণত হবে?তোমায় আসক্ত হয়ে গেলি কি করবো আমি?(আমি আভির দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছি)
দূর।সত্যিই আমি একটা জিনিসও খুঁজে পাচ্ছি না।আর এখন মাকে বললে নির্ঘাত খুন্তি নিয়ে আমাকে মারতে আসবে।(আভি মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
আমি খুঁজে দিচ্ছি।কি খুঁজতে হবে বলো?(আমি উঠে)
আসলে আমার একটা বাদামী রঙের শার্ট ছিলো অনেক পছন্দের।কিন্তু খুঁজে পাচ্ছি না।(আভি)
আচ্ছা।দাড়াও আমি খুঁজে দিচ্ছি।
বলেই আমি আলমারিতে হাত দিলাম।
আভি আমি খুঁজতে খুঁজতে তুমি বরং ফ্রেশ হতে যাও।(আমি)
শিওর তো পারবে?(আভি)
হুম।পারবো।যাও তো এখন।(আমি)
ওকে।
বলেই আভি ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।
আর আমি শার্টটা খুঁজতে লাগলাম।
।
।
ওয়াশরুমে শাওয়ারের নিচে
আমি বলে তো দিলাম আস্থাকে এই পরিবারকে যেনো নিজের অভ্যাসে যেনো পরিণত না করে।কিন্তু আমি,,আমি কি করবো?আস্থা যে আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।আজকের কিচেনের ঘটনার পরে আমি এটাতো বুঝে গেছি ওর দিকে আমাকে কিছু একটা আকর্ষণ করছে। ও আমার অভ্যাস হলে সেই অভ্যাস কি এতো সহজে ছাড়া যাবে?ওকে কি আমি ছেড়ে দিতে পারবো?কিন্তু ধরে রাখবো কোন মুখে? স্বামীর অধিকার?আমি তো ওর স্বামী!আমি ওকে সেই অধিকারে আটকাবো!
আভি!কি ভাবছিস?তুই না তুলিকে ভালোবাসিস!তাহলে আস্থার ব্যাপারে এইসব ভাবার কোনো কারণ নেই।আস্থাকে নিজের অভ্যাসে পরিণত করা বন্ধ কর।
বলেই আভি দেয়ালে ঘুষি মারলো।
তখনই আস্থা বাহিরে থেকে
আভি পেয়েছি তোমার শার্ট।সামনেই ছিলো তুমিই দেখতে পাও নি।আমি বরং তোমার বিছানায় রেখে গেলাম।এসে পড়ে নিও।আমি বরং গিয়ে নিজেও ফ্রেশ হয়ে নেই।
বলেই আমি যেতে নিবো তখনই আভি বলে উঠলো।
আস্থা!(আভি)
হুম!আরো কিছু খুঁজতে হবে?(আমি)
হুম।আমি হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে একটু খুঁজে দিও।(আভি বিড়বিড় করে)
কী বললে আমি শুনতে পায়নি আভি?(আমি)
কিছু না।তুমি বরং একটা কাজ কর।এখানেই থাকো।আমার রুমেই না হয় ফ্রেশ হও।(আভি চোখ বন্ধ করে)
হুম।ওকে।তোমার যদি কোনো সমস্যা হয় আমারও কোনো সমস্যা নেই।(আমি অবাক হয়ে)
শিট।আভি কি করছিস?ওর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছিস কিন্তু নিজেই ওকে নিজেকে কাছে এনে ফেলেছিস!(আভি)
।
।
ওয়াশরুম থেকে আভি বেরিয়ে নিজের ফোন দেখলো।এখন পর্যন্ত তুলি একটা ফোন বা ম্যাসেজও করে নি।হয়তো অভিমান করে আছে।কিন্তু আমি কি করবো?ওই ছিলো যে আমার উপর বিশ্বাস করে নি।আর ওই পরিস্থিতিতে আমার বিয়ে করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। যাই হোক এই সব কিছু ঠিক হলে তারপরেই না হয় তুলির সাথে কথা বলবো।আর এখন ফোন করে ওর সাথে আমার কোনো কথা হবে না বরং ঝগড়া হবে।শুধু শুধু ঝগড়া করে আর অবস্থা খারাপ করতে চাই না।
পরেই একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বেডের দিকে তাকিয়ে দেখলো আস্থা খুব সুন্দর করে ওর জামা কাপড় বিছানায় সাজিয়ে রেখেছে। তা দেখে আভি মনে মনে
আস্থা তুমি সত্যি আমার অভ্যাস হয়ে যাবে।
পরেই আভি তাকিয়ে দেখলো আস্থা বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।চুল গুলো ছেড়ে।হালকা বাতাস চুল গুলো ছেয়ে যাচ্ছে।আর আস্থা চোখ বন্ধ করে তা অনুভব করছে।আর অন্যদিকে আভি ওর দিকে তাকিয়ে ওকে অনুভব করতে ব্যাস্ত।
আস্থা হটাৎ করে পিছনে তাকাতেই দেখলো আভি নেশা নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। যেনো এই নজর অন্য কিছু বলছে।পরেই আস্থার হুশ ফিরল আভি খালি গায়ে আছে দেখে
আভি আপনি খালি গায়ে কেনো?(আস্থা চোখে হাত দিয়ে)
আরে কাপড় নেয়নি তাই।(আভি অবাক হয়ে)
আচ্ছা।আপনি কাপড় পরে নিন।আমি বরং ওয়াশরুমে ঢুকে যাই।
বলেই আমি ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লাম।
আভি মুচকি হেসে বলল
পাগলী একটা।
পরেই আভি সুমাইয়ার কাছ থেকে একটা শাড়ি এনে দিল।আর আস্থা তা পড়ে নিল।
।
।
বিকেলে
আস্থা গেস্ট রুমে বসে আছে।তখনই ছায়া,,আরশি আর পিয়ালী আসলো।
আসু।আমাদের আসু মনি কেমন আছিস?(পিয়ালী)
এইতো আলহাদুলিল্লাহ তোরা?(আমি ওদের জড়িয়ে ধরে)
আমরাও আলহাদুলিল্লাহ।(পিয়ালী)
কিন্তু আসু আমি কিন্তু ট্রিট চাই।(আরশি)
তুই শুধরানোর মানুষ না।(আমি মুচকি হেসে)
না।এইবার কিন্তু আমিও আরশি আপুর পক্ষে।(ছায়া)
আমিও।বিয়ে যখন হয়েছে ট্রিট কিন্তু চাইই।(পিয়ালী)
বাহ!এখন দল হয়ে ট্রিট নিবে।ওকে কোনো সমস্যা নেই ট্রিট নিবি তো নিবি।(আমি মুচকি হেসে)
এইতো আমাদের আসু।
বলেই আবার সবাই আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
হয়েছে হয়েছে।ভালোবাসা।(আমি)
আসু তুই খুশি তো?(আরশি আমার গালে হাত দিয়ে)
হুম।(আমি মাথা নেড়ে)
তাহলে আমরাও খুশি!(পিয়ালী)
আচ্ছা।আকাশ ভাইয়া আসে নি!(আমি)
না।ভাইয়ার কি কেনো কাজ পড়েছে উনি একটু পরে আসবে।(আরশি)
ও আচ্ছা।(আমি)
হুম।হয়েছে।এখন আমি আর পিয়ালী গিয়ে তোদের বাসর ঘর সাজিয়ে আসি।ছায়া তুমি তোমার বোনের সাথে একটু কথা বলো।(আরশি)
ওকে।(ছায়া)
আমিও মুচকি হাসি দিলাম।
পরেই আরশি আর পিয়ালী চলে গেলো।
মা বাবা এসেছে?(আমি নিচের দিকে তাকিয়ে)
হুম।নিচে আছে।তুই যদি রেগে যাস এই জন্য উপরে আসে নি।(ছায়া)
আমি চুপ করে বসে আছি।মুখে অভিমান নিয়ে।
আসুপি।তুই কি এখনও রেগে আছিস?(ছায়া আমার কাছে বসে)
বাদ দে।এখন বল আমার কাপড় চোপড় এনেছিস?(আমি)
হুম।আভি ভাইয়া প্রথম রাগ করেছিলো। কেনো তোমার কাপড় চোপড় এনেছি।পড়ে উনাকে আদি আঙ্কেল বুঝিয়েছে।এখন সেই সুট কেস আভি ভাইয়ার রুমে দিয়ে এসেছি(ছায়া)
আভিও না।আচ্ছা ভালো কথা।আয়ুশ এর সাথে কি হয়েছে?আমি তো গন্ডগোলের কারণে কিছুই জানতে পারি নি।(আমি)
পরেই ছায়া আমাকে সব খুলে বললো।সব শুনে আমায় আয়ুশ এর উপর অনেক রাগ হলো।আবার অনেক খুশিও হলেও কারণ ওর কারণে আমার ছায়া আজ একটু হলেও প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে।আমি চাই না কখনও ছায়া আমার ছায়া ধরে বাঁচুক।কিন্তু ওর জীবনে আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিলো।এখন আয়ুশ এর কারণে ও একটু আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলো।এখন আর আমার ওকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
আসুপি!(ছায়া)
হুম?(আমি)
আকাশ ভাইয়া আজ আমাকে প্রপোজ করছে!(ছায়া)
কিহ?(আমি অবাক হয়ে)
হুম!আজ যখন উনার বাইক দিয়ে বাসায় ফিরছিলাম তখন উনি আমায় প্রপোজ করছে!(ছায়া)
তুই কি বলেছিস?(আমি)
আমি কিছু বলিনি!সময় চেয়েছি!(ছায়া)
ওহহ।(আমি)
আমি এখন কি করবো আপু?(ছায়া)
আকাশ ভাইয়া ভালো ছেলে।ভেবে দেখতে পারিস!আমি এই ব্যাপারে তোকে সাহায্য করতে পারবো না।কারণ এটা সম্পূর্ন তোর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।(আমি ছায়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
হুম।(ছায়া আমাকে জড়িয়ে ধরলো)
আমি ছায়াকে জড়িয়ে ধরলাম।আমাদের কিসমত যেনো এক সুতোয় বাঁধা।এদিকে আমি কাউকে চাওয়ার আগেই কারো স্ত্রী হয়ে গেলাম। আর ছায়া কাউকে চাওয়ার আগেই কষ্ট পেয়ে গেলো।জানিনা এই সব কবে শেষ হবে?কবে আমরা দুইবোন একটু সুখে থাকতে পারবো?
অনেক হয়েছে সেন্টি কথা বার্তা।এখন চলো নিচে যাই।(ছায়া)
হুম।চল।
বলেই আমরা নিচে চলে গেলাম।
।
।
নিচে আভি আর বাবা খুব হেসে হেসে কথা বলছে।তাদের দেখে যে কেউই বলবে মেয়ের জামাই আর শশুরের কি ভালো সম্পর্ক!সবার মুখেই হাসি রয়েছে।
অন্যদিকে আমি বাবাকে দেখে রাগে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।বাবা বুঝতে পেরেছে এখনও আমি রেগে আছি।তাই উনিও একটু অ্যাক্টিং করতে শুরু করলো
আদি। তোর ছেলের বউকে বলতো।এখনও রাগ কমে নি?(জিসান)
বাবাকে(আদি) বলতে হবে না।আমিই বলছি কমে নি আমার রাগ। হয়েছে?(আমি রেগে)
রাগ করে লাভ নেই।কয়েকদিন পরই কোম্পানি জয়েন্ট করতে হবে।(জিসান ভ্রু কুঁচকে)
করবো না।তোমার কোম্পানি তুমি দেখো!(আমি মুখ ফুলিয়ে)
তুই তো যাবি তোর বাপ শুদ্ধু যাবে।(জিসান)
আমি তো তাই বলছি।বাপ যাবে!আমি না(আমি)
আমরা আরো একটু তর্ক বিতর্ক করবো কিন্তু বাবা(আদি) আটকে বললো
হয়েছে হয়েছে।তোদের আর ঝগড়া করিস না।(আদি)
আদি ভাই।করতে দিন।এটাই ওদের ভালোবাসা।(কলি হাসতে হাসতে)
বাবা আমার কাছে এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে
এই ঝগড়াই মিস করছিলি তাই না মা?(জিসান)
আমি আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না।
বাবাকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম।
বাবা তোমাকে খুব মিস করেছি।(আমি কাদতে কাদতে)
আমিও তোকে অনেক মিস করছি।তুই তো আমার জান।আমাকে মাফ করে দিস মা।(জিসান)
ওইসব বাদ দাও।তোমাকে মাফ করবো ওতো বড়ো আমি এখনও হয়ে উঠিনি।মাফ করার দায়িত্ব তোমার।ভুল করার দায়িত্ব শুধু আমার।(আমি)
এদিকে কিন্তু মাও আছে। মারও কিন্তু কলিজা তুই!(কলি অভিমানী কন্ঠে)
তুমিও এসো মা।(আমি মার দিকে হাত বাড়িয়ে)
পরেই আমি বাবা আর মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
তখনই আবার ছায়া অভিমানী কন্ঠে বলে উঠলো
হুম।একজনের জান তো একজনের কলিজা।আমি তো কিছুই না।আজ কনফার্ম হয়ে গেলো আমাকে কুড়িয়ে এনেছে।
আয় তুইও আয়।(বাবা)
পরেই আমরা পরিবারের সবাই মিলে একসাথে সবাইকে জড়িয়ে ধরলাম।
।
।
অন্যদিকে
আমাদের এই মিল দেখে আভি ওর বাবাকে আর আয়ুশ ওর মাকে জড়িয়ে ধরলো।
সত্যিই জীবনের সব যুদ্ধ জয় করা যায় যদি সেই যুদ্ধে পরিবার পাশে থাকে।আর আমরা সত্যিই অনেক ভাগ্যবান আমাদের এমন একটা পরিবার আছে।
।
।
পরেই আমরা সবাই মিলে কথা বলছিলাম তখনই
বাবা(আদি)আমার কানে ফিসফিস করে বললো
মা তুই খুশি তো?(আদি)
হুম।বাবা। থ্যাঙ্ক ইউ।আমার পরিবারকে এনেছেন বলে।(আমি মুচকি হেসে)
আমি আনি নি।ওই যে(আভিকে দেখিয়ে)ওই লোকের আইডিয়া ছিলো।(আদি)
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি বাবার দিকে!
হুম।যখন কাল রাত তুই সারা রাস্তা কাদতে কাদতে আসলি।তখনই আভি বুঝতে পারলো তোর জন্য তোর পরিবার হচ্ছে প্রাণ।তাই তো আমাকে রাতে বললো যে করেই হোক তোর পরিবারকে যেনো এইবাড়িতে নিয়ে আসি।তাই তো আজ এতো আয়োজন।(আদি)
আমি অবাক হয়ে আভির দিকে তাকিয়ে আছি।কি অদ্ভুত এই লোকটা!আমার না বলা কথা কতো সহজে বুঝে গেছে।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলাম।আভি ও আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলো।
।
।
চলবে,,,^_^