#ডাক্তার_মিস
পর্ব ৩২ ( অন্তিমপর্ব)
গত একটা মাস কেটে গেছে ঝড়ের গতিতে। কাগজপত্র প্রসেসিং, শিক্ষাছুটির আবেদন এসবের দৌড়াদৌড়িতে কেটে গেছে অনেকটা সময়। ঢাকায় যেতে হয়েছে বেশ কয়েকবার। পাসপোর্টের রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস পরিবর্তন করেছে জরুরী ভিত্তিতে। এর জন্য বেশ কয়েকদিন সময় লেগেছে। অবশ্য ফুল ফান্ডিং থাকায় ভিসা নিয়ে কোন জটিলতা হয় নি। প্লেনের টিকেট কাটাও হয়ে গেছে।
হাসপাতালের ছুটিটা এখনো ঝুলে আছে। কয়টা দিন আগে ছুটি পেলে পরিবারের সাথে কিছুটা সময় কাটাতে পারতো। প্রিয় মানুষটাকে নিয়ে হয়ত একান্তে ঘুরে ও আসতে পারতো চারপাঁচদিনের জন্য। সেটা সম্ভব হচ্ছেনা। বরং হাসপাতালে চাপ বেড়েছে। ডাক্তার আপা চলে যাবে শুনে অনেক রোগী আসছে যারা হয়ত আরো কয়দিন বাসায়ই অপেক্ষা করতো অন্য সময় হলে।
যেমন আজকের দিনটাই ধরা যাক। সকালে চেম্বারে আসার পর থেকে দশ মিনিটের জন্য নড়তে পারেনি বুশরা। ঘন্টাখানিক আগে একটা জরুরি ইমেইল এসেছে ইউনিভার্সিটি থেকে। পাঁচটা মিনিট সময় বের করে পড়ত্র পারে নি এখনো। বেলা বাজে তিনটা। ক্ষুধায় পেটের নাড়িভুড়ি বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে ওর। আরেক রোগী আসার ফাঁকে ইমেইলটাতে চোখ বুলাচ্ছিল বুশরা। দরজা নক হতে বললো,
“ভেতরে আসুন।”
রোগী এসে চেয়ারে বসতে বসতে বাকি ইমেইলটুকু ঝটপট পড়ে ফেললো বুশরা। ফোনের স্ক্রিনে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা অবস্থায় জিজ্ঞাসা করলো,
“কি সমস্যা হচ্ছে আপনার?”
“বুক ধড়ফড় করে।”
চকিতে সামনে তাকিয়ে বুশরা বললো,
“তুমি? এখন? এখানে?”
“বা রে শরীর খারাপ লাগলে ডাক্তারের কাছে আসবো না?”
এবার কিছুটা উদ্বিগ্ন হল মেয়েটা।
“সত্যি শরীর খারাপ লাগছে?”
“হুম খুউউব। মাথা ঘুরছে।”
“কি বলো?”
বুশরার চোখে মুখে উৎকন্ঠা। এবার রায়হান হেসে ফেললো।
“ক্ষুধা লাগছে খুব। আমি বসছি, তুমি রোগী দেখা শেষ করো।”
দুইতিনজন রোগী ছিল আর। বুশরা মনযোগ দিয়ে রোগী দেখছিল। আর রায়হান দেখছিল মনযোগী বুশরাকে। শেষমেশ রোগী দেখা শেষ করে বেরিয়ে পড়লো দুজনে। গঞ্জে একটা নতুন রেস্টুরেন্টে হয়েছে। সেখানকার গরুর মাংশ আর খিচুড়ি খুব নাম করেছে অল্প সময়েই। বাবুর্চির আদি বাড়ি সাতক্ষীরা। চুইঝাল বলে একটা মশলা নিয়ে আসে বাড়ি থেকে। তাই দিয়ে গরুর কশা মাংশ রান্না করে সে। রায়হান গত সপ্তাহে খেয়েছে। ঝাল ঝাল, কিন্তু খেতে বেশ। বুশরা ঝাল খেতে পছন্দ করে। তাছাড়া মেয়েটা সময় পাচ্ছেনা খুব একটা। প্রচন্ড খাটাখাটুনির মধ্যে আছে। বিকেলে এলোমেলো ঘোরাঘুরিও করা যাবে কিছুটা। তাই সবদিক চিন্তা করে ওকে হাইজ্যাক করে নিয়ে যাওয়া।
অবশ্য তাতে লাভই হয়েছে।অন্তত কিছুটা সময় একসাথে কাটানো গেল। বাসায় আত্মীয় স্বজনের আনাগোনা ইদানিং খুব। দুটো কথা বলারও সুযোগ পাওয়া যায় না। বাড়ির বউ চলে যাচ্ছে অনেকদিনের জন্য। দেখা করতে আসছে সবাই। এত ছোটাছুটির মধ্যে তাদেরকেও খুব বেশি সময় দিতে পারছে না বুশরা।
একে তো বিয়ের গন্ধ গা থেকে যাওয়ার আগেই বউ বিদেশ যাচ্ছে, তার উপর যাওয়ার আগে একটুখানি সময় স্বামীর বাড়ির মানুষদের দিচ্ছে না, এটা নিয়েও টুকটাক কথা হচ্ছে। তবে শিউলি বেগমের সচেতন তৎপরতায় সেসব কথা বুশরার কান পর্যন্ত পৌছায়নি। কেউ মনোক্ষুণ্ণ হোক আর যাই হোক যাওয়ার কালে মেয়েটা কোন বিরূপ মন্তব্য শুনুক এটা তিনি কোন মতেই চান না।
শেষ কয়েকটা দিন কাটলো কেনাকাটা গোছগাছে। যে মেয়ে বিয়ের কেনাকাটা নিজে করার ফুরসত পায়নি সে যে এখন খুব সময় পেয়েছে বিষয়টা এমন না। লিস্ট ধরে ধরে রায়হা৷ আর রুকুই কেনাকাটা করেছে বেশরভাগ। কাপড়চোপড় যেগুলো বুশরা না থাকলেই নয় সেগুলোতে থেকেছে ও। শেষ দুইদিন রাত জেগে লাগেজপত্র গুছিয়েছে। শিক্ষাছুটি শুরু হয়েছে যাওয়ার মাত্র দুইদিন আগে। এজন্য আরো বেশি তাড়াহুড়া হয়েছে সবকিছুতে।
যাওয়ার বেলা আজ মন খারাপ বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষের। এত অল্প সময়ে সকলের মন জয় করেছে মেয়েটা। কাল সারাদিন বাড়িতে ছিল বুশরা, উদ্দেশ্য, যাওয়ার আগে একটা দিন অন্তত পরিবারের সাথে কাটানো। অথচ সারাদিন, একের পর এক মানুষ এসেছে বাড়িতে। এদের সবাই বুশরার শুভাকাঙ্ক্ষী। সময়ে অসময়ে তাদের বা তাদের প্রিয়জনের রোগ, শোক, জরা কাটিয়ে ওঠার সংগী ছিল মেয়েটা। প্রাণভরে দোয়া করতে আর আবার তাড়াতাড়ি ফিরে আসার দাবী নিয়ে এসেছিল তারা। আর তাদের সাদরে আপ্যায়ন করেছেন, এ বাড়ির কর্তী, শিউলি বেগম। বিরক্তি নয়, বরং গর্বে বুক ভরব উঠেছে তার।
শিউলি বেগমের খুব ইচ্ছা ছিল ঢাকা বিমানবন্দর পর্যন্ত স্বামী, সন্তান নিয়ে সাথে যাবেন তিনি। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যা থেকে রায়হানের বাবার প্রেশার খুব বেড়েছে। এমতাবস্থায়, বুশরা কিছুতেই এতটা যাত্রাপথের ধকল নিতে দিবে না বাবাকে। রায়হান আর রুকুও সহমত। তাই ছেলেমেয়েদের বিদায় দিয়ে দাওয়ায় বসে আছেন দুই বুড়োবুড়ি। যাওয়ার বেলায় বহু আদেশ, নিষেধ, উপদেশের ফুলঝুরি ছড়িয়ে এখন চুপ হয়ে গেছেন শেখ বাড়ির কর্তী। স্ত্রীর নিঃশব্দ কান্না পাশে বসে টের পাচ্ছেন রুস্তম শেখ। স্ত্রীকে থামানোর জন্য আবেগী কন্ঠে বললেন,
“মায়ের কান্নায় ছেলেমেয়ের চলার পথ পিচ্ছিল হয় বউ।”
দুহাতে চোখের পানি মোছেন তিনি। সন্তানের অমঙ্গল তো কোন মা ই চায় না। আলতো করে স্ত্রীর হাত ধরে রাখেন পাশের মানুষটা।
গঞ্জ থেকে ঢাকাগামী বাসে উঠেছে ওরা তিন জন। দেশ ট্রাভেলস এর এসি বাস। এক সারিতে তিনটা টিকেট কাটা। দুই বান্ধবী দুটো জানালার পাশের সিট দখল করে বসেছে। লাগেজ বাংকারে দিয়ে এসে বুশরার পাশের ফাঁকা সিটটাত্র বসেছে রায়হান।
রুকু সবসময় বলতো যে ওর এই বন্ধবী টি সারা রাত জার্নি করলেও দুচোখের পাতা এক করেনা। সটান হয়ে বসে থাকে। আর যাত্রাযনিত বমি আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে। অথচ আজ রায়হান খেয়াল করলো মেয়েটা গুটিশুটি মেরে ওর বামহাত আকড়ে ধরে কাঁধে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছে।
রায়হানেরও চোখ বুজে এসেছিল। হঠাত ঘুম ভেঙে মনে হলো ওর শার্টের হাতাটা ভেজা ভেজা। টের পেলো, মেয়েটা মোটেও ঘুমাচ্ছে না। বরং অশ্রুজলে গঙাযমুনা বইয়ে দিচ্ছে। কান্না জিনিসটা সংক্রামক কি না কে জানে। নাহলে এই বদ্ধ বাসের মধ্যে রায়হানের চোখে বালির কুচি পড়লো কি করে?
ঢাকায় ওরা যখন পৌঁছালো তখন সূর্য ডুবি ডুবি করছে। বুশরার ফ্লাইট রাত বারোটার। এয়ারপোর্টের কাছে একটা হোটেলে আগে থেকেই রুম বুকিং দেওয়া ছিল।
হোটেল রুমে গিয়ে একটা লম্বা গোসল দিল বুশরা। এ কয়দিন খুব শক্ত থাকার চেষ্ঠা করলেও আজ বিদায়বেলা খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। অথচ বছরখানেক আগেও ও ভাবেনি এ দেশ ছেড়ে যেতে এত কষ্ট হবে। ও খুব চেয়েছিল যাওয়ার আগে অন্তত দুইচারটা দিন একান্তে কাটাবে রায়হানের সাথে, হয়ত কোন গহীন পাহাড়ের ঢালে, বা নিঃসঙ্গ সমুদ্রতীরে। হাতে হাত রেখে হেটে যাবে বহুদূর। কিন্তু সময় হলো না। জীবনের এই ছোট ছোট চাওয়াগুলো পূরণ করা মাঝে মাঝে এত কঠিন কেন? ভাবে বুশরা। মাথার উপরের শাওয়ার থেকে ফোটায় ফোটায় পড়া পানির ধারা মিশে যায় দুগাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া অমুল্য মুক্তাদানার সাথে।
বাথরুমের দরজায় রায়হানের করাঘাতে ধ্যান ভাঙে ওর। ভেজা পোশাক বদলে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে। ভেজা চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই মেয়েটার।
“এত সময় ধরে গোসল করলে ঠান্ডা লেগে যাবে না? ”
এ প্রশ্নের উত্তর দিল না বুশরা। অবশ্য প্রশ্ন কানে গেলে তবে তো উত্তরের প্রশ্ন আসে।
“কিছু একটা বলছি আমি। আর চুল মোছ নি কেন?”
বুশরা কোন উত্তর না দিয়ে ধীরপায়ে এগিয়ে এলো আরো দুই কদম। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো সামনের মানুষটাকে। ভেজা চুলে আবারও ভিজে যাচ্ছে রায়হানের ঘামে ভেজা শার্টটা।
“কিছু বলো না প্লিজ।”
“আচ্ছা!”
স্ত্রীর কথামত নিরবতাকে মেনে নিলো মানুষটা। নিজেও জড়িয়ে ধরলো আলতো করে।
কয়েকমিনিট পর বাধন আলগা করলো বুশরা৷ তবে রায়হান ধরে রাখলো আরও কিছুক্ষণ।
ঘড়ির কাঁটায় আটটা বাজার সংকেত দিতেই তড়িঘরি গোসলে চলে গেল রায়হান। বুশরাকে বলল তাড়াতাড়ি রেডি হতে। রুম সার্ভিসে খাবার চলে আসলো কিছুক্ষণের মধ্যেই। আসলো রুকাইয়াও। আরও আগে রেডি হলেও ইচ্ছা করে নিজের ঘরে থেকে গেছিলো মেয়েটা। যাওয়ার আগে অন্তত কিছুটা সময় ভাই ভাবী একান্তে কথা বলুক, এই চিন্তা করে।
কোনমতে খাওয়াদাওয়া করেই উবার কল করলো রায়হান। ঢাকা শহরের জ্যামের কোন ভরসা নেই। বিমানবন্দরে বসে নিশ্চিন্তে অপেক্ষা করা ভালো। উবারে আগে আগে গিয়ে সামনের সিটে বসলো রুকু। পেছনে বসলো রায়হান আর বুশরা। গাড়ি ছেড়ে দিল বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম। থেমে আছে সব গাড়ি। শুধু থেমে নেই ঘড়ির কাঁটা। চলছে দুরন্ত বেগে। আর তার সাথে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাশাপাশি বসে থাকা দুটো মানুষের হৃদস্পন্দন। গাড়ির স্পিকারে লো ভলিউমে বাজছে বাংলা গান।
কিছুক্ষন থেকে যাও, যেও না এখনি..
তোমাকে দু’চোখ ভোরে, দেখার আরো যে বাকি..
কাছে এসে, জড়িয়ে ধরা বাকি..
ভালোবাসি, তোমাকে বলা বাকি..
যত ব্যাথা তোমার নিজের করা বাকি..
এ জীবন তোমার নামে করা বাকি….
যখনি তুমি কাছে-
সময় কাটে হেসে, লাগে জানালা তুমি..
বদ্ধ এই মনে বিষণ্ণতা কেটে যায়, তোমারি ছোঁয়ায়..
যে ছোঁয়ায় আমার আরও চাওয়া বাকি..
একি সাথে ,সকাল দেখা বাকি..
সাগর তরে মিলে ভেজা বাকি..
যত কথা তোমার বলার শুনা বাকি..
এ জীবন তোমার নামে করা বাকি…
রাঙ্গালে তুমি আবার-
ভালবাসায় মৃত প্রায় হৃদয়টাকে..
দেখালে স্বপ্ন সেসব
হয়নি সাহস কখনো দেখার আগে..
ছড়িয়ে দিলে আলো, ছিল আধারে যত..
তুমি এসে, তুমি হেসে…
পেয়ে তোমাকে এত, অপেক্ষা শেষে বলো..
আড়াল চোখে, করি কি করে?
এখনোত, হাতে ধরা বাকি..
একি সাথে বিকেল হাটা বাকি..
চোখে চোখে, কথা বোঝা বাকি..
এ জীবন তোমার…. এ জীবন তোমার….
এ জীবন তোমার নামে করা বাকি…..
রায়হান শক্ত করে হাতটা ধরে রাখে বুশরার। আসলেই তো কত কিছু করা বাকি এই এক জীবনে। আজ এই মুহুর্তে খুব স্বার্থপর হতে ইচ্ছা করে ওর। দোয়া করতে ইচ্ছা করছে খুব, যেন আজকের এই জ্যাম অনন্ত হোক। মনের অযাচিত ইচ্ছাটা ধরা পরে যাওয়ার ভয়ে ভুলেও চোখে চোখ রাখেনা বুশরার। পুরো সময়টা একটাও কথা বলে না কেউ। আস্তে আস্তে দৃষ্টিসীমার মধ্যে আসে বিমানবন্দর। আরেকটু দেরি হলে হয়তো প্লেন মিস হয়ে যেতো।
গাড়ি থেকে নামার পর একটার পর একটা উপদেশ দয়ে যাচ্ছে রুকু। উত্তরে শুধু হু হা করছে বুশরা। রায়হানও নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে। যেন শব্দেরা সব বন্দী, খাঁচায়।
লাগেজ নিয়ে বোর্ডিং পাসের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আগে রায়হান শুধু ছোট্ট করে বলে,
“ভালো থেকো।”
উত্তরে কিছু বলতে পারেনা বুশরা। কান্নারা দলা পাকিয়ে আটকে থাকে গলার মধ্যে। কাঁচের দরজাটা পার হওয়ার আগে আরেকবার শুনতে পায় প্রিয় কন্ঠটা,
“বুশরা,… চিঠি দিও।”
ফোন, ফেইসবুক, ইমেইল, হোয়াটসআপের যুগে চিঠির কথা আচমকা কেন বলল নিজেও জানেনা রায়হান। ঘুরে তাকায় বুশরা। শক্তমনের মানুষটার চোখ কি ছলছল করছে? নাকি ওর মনের ভুল? থমকে দাঁড়ায়। মনে হয় সব ছেড়েছুড়ে ছুটে বেরিয়ে যায় এখান থেকে। বড় ডিগ্রী, স্কলারশিপ, ক্যারিয়ার, সব তুচ্ছ মনে হয়। ঠিক তখন ওপাশের মানুষটা ইশারায় সাহস যোগায়। চোখ রাঙায় দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করার জন্য। হাত নেড়ে বিদায় জানায়। প্রাণভরে শ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যায় বুশরা। সব দ্বিধা, দ্বন্দ্ব, মায়া, টান সযত্নে বাক্সবন্দি করে রেখে এগিয়ে যায় গন্তব্যের দিকে, ভীষণ তাড়া ওর। ফিরতে হবে যে। তাড়াতাড়ি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
প্রিয় পাঠক, অনেক ধন্যবাদ আমার মত অধম গল্পকারের গল্প অধীর আগ্রহে পড়ার জন্য, সুচিন্তিত মতামত প্রকাশের জন্য, অকপটে আমার লেখাকে গ্রহন করার জন্য। লেখালেখি শুরু করেছিলাম শখের বসে, কি পাবো, কি হারাবো হিসেব করে নয়। কিন্তু যা পেয়েছি তা অমূল্য। আপনাদের ভালবাসায় আমি সিক্ত। সিক্ত আমার গল্পের প্রিয় চরিত্রগুলোও। যে সমর্থন আপনারা করেছেন ওদেরকে তা আমার এক্সপেকটেশনের বাইরে। গল্পটার সমাপ্তি চিন্তা করেছিলাম ওদের বিয়ে পর্যন্ত। নামটাও সেজন্য ছিল ডাক্তার মিস। কিন্তু লিখতে শুরু করার পর কিভাবে যেন বিয়ে পার করেও বহুদূর চলে এসেছি। বিয়ের পরের ঘটনাগুলো আমার প্লটের একেবারেই বাইরে। গল্প তার প্রয়োজনে প্লট পরিবর্তন করে নিয়েছে। আমিও সতঃস্ফুর্তভাবে সমর্থন দিয়েছি সেই পরিবর্তনে। কিন্তু এ পর্যায়ে এসে #ডাক্তার__মিস গল্পের সমাপ্তি টানা প্রয়োজন মনে করছি। তবে বুশরা, আর রায়হানের গল্পটা এখানেই শেষ নয়, বরং শুরু। ভালবাসা বাকি আছে এখনো। সে গল্প নাহয় আবার কোন একদিন। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন। রিভিউ কন্টেস্ট শুরু হবে আগামীকাল থেকে। বিস্তারিত জানার জন্য গল্পকথা – Hasin Rehana গ্রুপে চোখ রাখুন। পরিশেষে বিশ্ব নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানাই সকল বুশরাদের, তাদের যোগ্য অর্ধাঙ্গ, রায়হানদের এবং যেকোন অবস্থায় ঢাল হয়ে থাকা পরিবারের সদস্যদের। দোয়া করি সবাইকে পাশে নিয়ে, তারা এগিয়ে যাক, বহুদূর।
আর হ্যাঁ, গল্প সম্পর্কে আপনার মুল্যবান মন্তব্য করতে ভুলবেন না যেন।
ধন্যবাদ।
ইতি,
Hasin ড়েহানা
ডাক্তার মিস সিজন ২ “ভালবাসা বাকি আছে” গল্পটি পড়তে লেখাটির উপর ক্লিক করুন।